গাজীপুরের টঙ্গীর একটি বাড়িতে মাদক উদ্ধারের অভিযানে যান টঙ্গী পূর্ব থানার ৩ এসআই। আতাউর রহমান মৃধা নামের এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে তারা কয়েক বোতল ফেনসিডিল জব্দ করেন। তবে আটক করা যায়নি কাউকে।
এ ঘটনা গত ২৭ ফেব্রুয়ারির। অথচ গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত থানায় ওই অভিযানের তথ্য রেকর্ড করা হয়নি। নিয়ম অনুযায়ী এ ধরনের অভিযানে আসামি গ্রেপ্তার না হলেও থানায় সাধারণ ডায়েরি করে জব্দ করা মালামালের তালিকাসহ তা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে পাঠাতে হয়। এ অভিযানের ক্ষেত্রে সেটাও করা হয়নি। অবশ্য একে স্রেফ ‘ছোট ঘটনা’ হিসেবে দাবি করছেন থানার ওসি।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, আতাউরের সঙ্গে ঘটনাস্থলেই আর্থিক লেনদেন হয় ওই ৩ এসআইয়ের। এ কারণে থানায় রেকর্ডভুক্ত করা হয়নি অভিযানের তথ্য।
অভিযানে যাওয়ার ও ফেনসিডিল জব্দের বিষয়টি স্বীকার করেছেন থানার এসআই আশিকুল হক রোনাল্ড, এসআই লিটন শরিফ ও এসআই মো. রাজিব। তবে থানায় সেটি রেকর্ড না করার কারণ জানতে চাইলে তারা সুস্পষ্ট কোনো জবাব দেননি।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার (টঙ্গী জোন) পিযুষ কুমার দে জানান, এ ধরনের কোনো অভিযান হয়েছে বলে কোনো তথ্য তার কাছেও নেই।
সেদিনের অভিযানের একটি সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ নিউজবাংলার হাতে এসেছে। ক্যামেরাটি লাগানো আতাউরের পাশের বাড়ির বাইরে। সেই ফুটেজের সূত্র ধরেই অভিযান ও জব্দ করা ফেনসিডিল গায়েব হওয়ার বিষয়টি জানতে পারেন নিউজবাংলার প্রতিবেদক।
ওই ফুটেজে দেখা যায়, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি রাত পৌনে ১১টার দিকে টঙ্গীর বনমালা সড়কের টিভিএস গোডাউনের পাশে আতাউরের বাড়িতে প্রবেশ করেন এসআই আশিকুল ও লিটন।
এর কিছুক্ষণ পরই ভেতর থেকে এক যুবককে দৌড়ে পালাতে দেখা যায়। তাকে ধাওয়া করতে দেখা যায় এসআই আশিকুল ও লিটনকে। কিছু সময় পর তারা ওই যুবককে ছাড়াই ফিরে আসেন, ওই বাড়িতে ঢোকেন। মোটরসাইকেলে করে সেখানে পৌঁছান আরেক ব্যক্তি। তিনিও ওই বাড়িতে প্রবেশ করেন।
এরপর ভেতর থেকে একটি বড় ব্যাগ কাঁধে নিয়ে বের হন সেই ব্যক্তি। তখন ৩-৪ জন কনস্টেবল নিয়ে সেখানে হাজির হন থানার আরেক এসআই রাজিব। ওই ব্যক্তিসহ পুলিশ সদস্যরা এদিক-ওদিক ঘোরাঘুরি করে কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর বড় ব্যাগটি কাঁধে নিয়েই মোটরসাইকেলে ঘটনাস্থল ত্যাগ করতে দেখা যায় সেই ব্যক্তিকে।
ওই বাড়ির আশপাশের লোকজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সেই ব্যক্তির নাম আল-আমিন। তিনি এসআই আশিকের ব্যক্তিগত সোর্স ও ড্রাইভার।
আতাউরের প্রতিবেশীরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ওই রাতে পুলিশের লোকজন আতাউরের বাড়ি থেকে ব্যাগ নিয়ে বের হয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলেন। তাদের জানান, ওই বাড়ি থেকে ব্যাগভর্তি ফেনসিডিল পাওয়া গেছে।
আতাউরের বাড়ির সামনেই মুদির দোকান মো. বাবুলের।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ওই রাতে একদল পুলিশকে দৌড়াতে দেখেছি। তখন আশপাশের অনেক লোক জড়ো হয়ে গিয়েছিল। আমি তখন আমার দোকানেই বসা ছিলাম।
‘পরে পুলিশ বাড়ি থেকে বের হয়ে ফেনসিডিল উদ্ধারের বিষয়টি উপস্থিত সবাইকে জানায়। একটা সাদা কাগজে কয়েকজনের নাম-ঠিকানাও লিখে নেয় পুলিশ।’
আতাউরের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিবেশীরা জানান, এলাকায় তিনি ফেনসিডিল কারবারি হিসেবে পরিচিত। তার বিরুদ্ধে বছর দুয়েক আগে পুলিশ সদস্যদের মারধরসহ একাধিক মামলা আছে বলেও দাবি তাদের।
প্রতিবেশীদের কাছ থেকে আতাউরের মোবাইল ফোন নম্বর নিয়ে কল দেয় নিউজবাংলার প্রতিবেদক। তবে তিনি অভিযানের বিষয়ে কিছু জানেন না বলে দাবি করেন।
তিনি বলেন, ‘কই আমি তো এমন কিছু শুনি নাই... রাতে আমি বাসায় ছিলাম না... কোনো ফেনসিডিল উদ্ধারের কথা তো আমাদের কেউ বলে নাই।
‘ওই এলাকায় তো সব সময়ই পুলিশ আসে... পুলিশকে তো জেরা করা যায় না কেন গেছে।’ সে বাড়ির অন্য বাসিন্দারাও ওই রাতের ঘটনা প্রসঙ্গে মুখ খুলতে রাজি হননি।
তাদের (ওই ৩ এসআইয়ের) পদ্ধতিগত ভুল হয়েছে, তবে অনৈতিক কোনো কিছুর প্রমাণ আমি কিন্তু পাইনি... খবর আসছে একটা চালান আসছে, বাট কিছু ডিস্ট্রিবিউট হয়ে গেছে আগেই, এ জন্য কিছু ইনফরমেশন গ্যাপ হয়ে গেছে... এরা বিষয়টি হালকাভাবে নিছে, ইমম্যাচিউরডলি নিয়েছে... এ বিষয়টা এলে কখনও ছোট ঘটনা বড় হয়ে যায়...।
পুলিশের সোর্স আল-আমিনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলেন নিউজবাংলার প্রতিবেদক। প্রথমে তিনি অভিযানে অংশ নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন। প্রসঙ্গ এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টাও করেন।
তবে একপর্যায়ে স্বীকার করে বলেন, ‘ওই রাতে আশিক স্যার ফোন করে আমাকে ঘটনাস্থলে ডেকে নেন। পরে এসআই লিটন শরিফ স্যার একটি ব্যাগ আমার হাতে তুলে দেন।’
ব্যাগে কী ছিল? আল-আমিন বলেন, ‘বই-খাতা ছিল ব্যাগে। ওই রাতেই থানায় এনে লিটন স্যারের কাছে দিয়েছি। এখন সেটা কোথায় আছে জানি না।’
মাদক উদ্ধারের বিষয়টি জানা নেই বলে দাবি করেন তিনি।
আল-আমিন নিজেকে এসআই আশিকের গাড়িচালক বলেই পরিচয় দেন।
টঙ্গী পূর্ব থানায় বৃহস্পতিবার এই অভিযানের বিষয়ে খোঁজ করতে গিয়ে জানা যায়, অভিযুক্ত মাদক কারবারি আতাউরের নামে ২০১৯ সালে একটি মামলা করেছিলেন তৎকালীন এসআই মো. জহুরুল। মোবাইল ফোনে নিউজবাংলাকে এ বিষয়টি তিনি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, পুলিশের ওপর হামলার মামলা ছিল সেটি। তবে বিস্তারিত তথ্য তিনি মনে করতে পারছেন না।
ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার অনুমতি বা জিডি না করে থানার ডিউটি অফিসার অভিযান করতে পারেন না। অভিযানে যাওয়া এবং ফিরে আসার বিষয়েও একই নিয়ম।
থানায় গিয়ে আরও জানা যায়, অভিযানের সেই রাতে থানার ডিউটি অফিসার ছিলেন এসআই লিটন। অথচ নিয়ম অনুযায়ী ডিউটি অফিসারকে অভিযানে যেতে হলে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আগে থেকে জানাতে হয়।
অভিযান প্রসঙ্গে জানতে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে এসআই আশিকুল বলেন, ‘ওই রাতে আতাউরের বাড়ি থেকে নয়, তার একটি অফিসে পরিত্যক্ত ঘরে ১১ বোতল ফেনসিডিল পাওয়া গেছে। সেগুলো জব্দ তালিকা করা হয়েছে। আসামি না পাওয়ায় মামলা করা যায় নাই।’
এসআই লিটন দাবি করেন, তিনি ওসিকে জানিয়েই অভিযানে গিয়েছিলেন। তবে তিনি বলেন, ‘ফেরার পর জিডি করি নাই, এটা আমার ভুল হয়েছে।’
ফেনসিডিলের বোতলগুলো থানাতেই আছে দাবি করে এসআই লিটন বলেন, ‘ভুলে সেগুলো রেকর্ডভুক্ত করিনি।’
অন্যদিকে এসআই রাজিব বলেন, ‘আমি অন্য জায়গায় ছিলাম। এসআই আশিকুল ও লিটনের ফোন পেয়ে ওই রাতে ঘটনাস্থলে গেছিলাম। ততক্ষণে তারা বের হয়ে গেছিল।
‘মামলা, জিডি বা জব্দের বিষয়ে তারাই (আশিকুল ও লিটন) ভালো বলতে পারবেন।’
অভিযানের পর ওই ৩ এসআইয়ের জিডি না করার বিষয়টি স্বীকার করেছেন ওসি জাবেদ মাসুদ। তিনি বলেন, ‘তাদের (ওই ৩ এসআইয়ের) পদ্ধতিগত ভুল হয়েছে, তবে অনৈতিক কোনো কিছুর প্রমাণ আমি কিন্তু পাইনি... খবর আসছে একটা চালান আসছে, বাট কিছু ডিস্ট্রিবিউট হয়ে গেছে আগেই, এ জন্য কিছু ইনফরমেশন গ্যাপ হয়ে গেছে... এরা বিষয়টা হালকাভাবে নিছে, ইমম্যাচিউরডলি নিয়েছে... এ বিষয়টা এলে কখনও ছোট ঘটনা বড় হয়ে যায়...।’
তিনি আরও বলেন, ‘আসামিকে ধরতে অভিযান চলছে, অনৈতিক কিছু হয়ে থাকলে আমি ব্যবস্থা নেব, তবে এমন কিছু হয় নাই।’
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার (টঙ্গী জোন) পিযুষ কুমার দে বলেন, ‘ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার অনুমতি বা জিডি না করে থানার ডিউটি অফিসার অভিযান করতে পারেন না। অভিযানে যাওয়া এবং ফিরে আসার বিষয়েও একই নিয়ম। তবে গত ২৭ ফেব্রুয়ারির ওই অভিযান সম্পর্কে আমি অবগত নই।’
তিনি আরও বলেন, ‘কারও বাসায় মাদক পাওয়া গেলে কাউকে আটক করা না গেলেও বাড়ির লোকের নামে মামলা হবে। কোনো কিছু জব্দ হলে থানায় জিডিও হবে। এটাই নিয়ম।'
আরও পড়ুন:জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে ২৭,২৪৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে। বিগত ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের একই মাসে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ছিল ২১,৯১৬ কোটি টাকা। জুলাই-২০২৫ মাসে বিগত জুলাই-২০২৪ মাসের তুলনায় ৫,৩৩৩ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। জুলাই ২০২৫ মাসে রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২৪.৩৩%।
জুলাই’২৫ মাসে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক থেকে। এ খাত থেকে আদায় হয়েছে ১১,৩৫২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায়ের পরিমান ছিল ৮,৫৭১ কোটি টাকা। জুলাই ২০২৫ মাসে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ৩২.৪৫%।
আয়কর ও ভ্রমন কর খাতে জুলাই’২৫ মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৬,২৯৫ কোটি টাকা যা জুলাই’২০২৪ মাসের একই খাতে আদায়কৃত ৫,১৭৫ কোটি টাকার চাইতে ১,১২০ কোটি টাকা বেশি। আয়কর ও ভ্রমন করের ক্ষেত্রে জুলাই ২০২৫ মাসের আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২১.৬৫%।
২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে আমদানি ও রপ্তানি খাতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৯,৬০২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায় ছিল ৮,১৭০ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধির হার ১৭.৫২%।
রাজস্ব আদায়ের এ ধারা ভবিষ্যতে অব্যাহত রাখার জন্য আয়কর, মূল্য সংযোজন কর এবং কাস্টমস শুল্ক-কর আদায়ে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারিদের প্রচেষ্টা আরো জোরদার করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নানাবিধ কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
সম্মানিত করদাতাগণ আইনের যথাযথ পরিপালন নিশ্চিত করে যথাযথ পরিমান কর পরিশোধের মাধ্যমে দেশ গড়ার কাজের অন্যতম অংশীদার হবেন মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশাবাদী।
কুমিল্লা নাঙ্গলকোটে ইউপি সদস্য আলাউদ্দিনকে বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামিকে ঢাকার হাতিরঝিল রেল মগবাজার রেলগেট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। শুক্রবার দিনগত রাতে অভিযানটি শেষ করে র্যাব।
গ্রেফতারকৃত আসামী শেখ ফরিদ (৪৫) নাঙ্গলকোট উপজেলার বক্সগঞ্জ আলীয়ারা গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে।
শনিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে কুমিল্লা অশোকতলা এলাকায় র্যাব অফিসে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন
র্যাব ১১ এর কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাদমান ইবনে আলম।
মেজর সাদমান জানান, নাঙ্গলকোটের আলিয়ারা গ্রামে দুই পরিবারের মধ্যে বংশপরম্পরায় একটি বিরোধ চলে আসছিল। গেল গেল ২৫ জুলাই গরুর ঘাস খাওয়া কে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
সেদিন দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৫ জন গুলিবিদ্ধসহ ২৫ জন আহত হয়।
এ ঘটনার রেশ ধরে গেলো ৩ আগস্ট দুপুরে আলিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা আলাউদ্দিন তার চাচাতো ভাইয়ের জানাজার নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা তাকে একটি সিএনজিতে তুলে নিয়ে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে।
পরে এ ঘটনায় ৫ আগস্ট নিহতের ছেলে বাদী হয়ে নাঙ্গলকোট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বিপদসীমা অতিক্রম করায় নির্ধারিত সময়ের আগেই খোলা হয়েছে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সব জলকপাট। সোমবার (৫ আগস্ট) রাত ১২টা ২ মিনিটে হঠাৎ পানি বাড়তে থাকায় জরুরি ভিত্তিতে কেন্দ্রের ১৬টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়।
কর্ণফুলি পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানান, রাতে লেকের পানির উচ্চতা ১০৮.০৫ ফুট ছুঁয়ে গেলে বিপদসীমা অতিক্রম করে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলি নদীতে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, “প্রথমে সোমবার (৪ আগস্ট) বিকেল ৩টায় পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা পরের দিন মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জলকপাট খোলার ঘোষণা দিয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ অতিরিক্ত পানি প্রবাহের কারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই সোমবার রাতেই জলকপাট খুলে দিতে হয়। তবে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
তিনি আরও জানান, কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট বর্তমানে সচল রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে আরও ৩২ হাজার কিউসেক পানি লেক থেকে কর্ণফুলিতে গিয়ে পড়ছে। সবমিলিয়ে পানি নিঃসরণের হার এখন প্রতি সেকেন্ডে ৪১ হাজার কিউসেক।
ভাটি এলাকার জনসাধারণের উদ্দেশে তিনি বলেন, “পানি প্রবাহ বাড়লেও আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে, এবং প্রয়োজনে আমরা আগেভাগেই ব্যবস্থা নেব।”
স্থানীয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও এ বিষয়ে আগেই অবহিত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন কর্তৃপক্ষ।
গাজীপুরের কালীগঞ্জে ‘জুলাই পুনর্জাগরণ’ অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে শপথ গ্রহণ করেছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দেশব্যাপী আয়োজিত ‘লাখো কণ্ঠে শপথ পাঠ’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে কালীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
শনিবার (২৬ জুলাই) সকালে উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে এক ভাবগম্ভীর পরিবেশে এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে জুলাই মাসে নিহত শহীদদের স্মরণে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। মোনাজাতে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং দেশের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য প্রার্থনা করা হয়।
উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই শপথ পাঠ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তনিমা আফ্রাদ। তিনি উপস্থিত সকলকে শপথ বাক্য পাঠ করান। দেশের সংবিধান ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখা, দুর্নীতি ও সামাজিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো এবং দেশ গঠনে আত্মনিয়োগ করার অঙ্গীকার করেন অংশগ্রহণকারীরা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইউএনও তনিমা আফ্রাদ বলেন, "জুলাই পুনর্জাগরণ কেবল একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়, এটি আমাদের চেতনার বাতিঘর। সেই শহীদদের আত্মত্যাগ থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের নতুন প্রজন্মকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে হবে। আজকের এই সম্মিলিত শপথ হোক দেশ ও মানুষের কল্যাণে নিজেদের উৎসর্গ করার একটি নতুন অঙ্গীকার। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী থেকে শুরু করে সাধারণ নাগরিক পর্যন্ত সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে পারে।"
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাসনিম উর্মি, কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলাউদ্দিন, উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা নেতৃবৃন্দ সহ উপজেলায় কর্মরত গণমাধ্যম কর্মীবৃন্দ।
বক্তারা জুলাইয়ের শহীদদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করে বলেন, তাদের দেখানো পথ অনুসরণ করে দেশের উন্নয়নে একযোগে কাজ করতে হবে। উপজেলা প্রশাসনের এই সফল আয়োজনে সর্বস্তরের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানটিকে এক নতুন মাত্রা দেয়। এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানটি কালীগঞ্জের মানুষের মধ্যে দেশ ও সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধ এবং নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করবে বলে আশা প্রকাশ করেন আয়োজকরা।
ফেনীতে বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। এর সঙ্গে দেখা দিয়েছে নতুন এক আতঙ্ক। বন্যার কবল থেকে রক্ষা পেতে মানুষের বাড়িঘরে আশ্রয় নিয়েছিল নানা প্রজাতির সাপ। এখন ঘরে ফিরলেও সাপ আতঙ্ক বিরাজ করছে স্থানীয়দের মাঝে। এরই মধ্যে পরশুরামে বিষধর সাপের কামড়ে রোকেয়া আক্তার রিনা (৫০) নামে এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার (১১ জুলাই) বিকাল ৫টার দিকে ফেনীর পরশুরামের পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত রিনা পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামের শফিকুল ইসলাম শহীদের স্ত্রী। তার এক ছেলে দুই মেয়ে রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, বন্যার পানি শুকিয়ে গেলে রান্না করার জন্য রান্নাঘরে গেলে সেখানে একটি অজ্ঞাত বিষধর সাপ রিনাকে কামড় দেয়। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এরপর ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের স্বামী শফিকুল ইসলাম জানান, শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে রিনা রান্না ঘরে যায়। এ সময় রান্নাঘরের একটি গর্ত থেকে বিষধর একটি সাপ বের হয়ে তার পায়ে কামড় দেয়। তার চিৎকার শুনে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্রেক্স নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার কোনো চিকিৎসা না হওয়ায় ফেনী সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাক্তার রেদোয়ান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, হাসপাতালে আনার আগেই ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছিল।
টানা ৩ দিনের বৃষ্টিতে বেনাপোল বন্দর এলাকায় জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বন্দর অভ্যন্তরের অনেক স্থানে হাটু পানি জমায় মারাত্বক ভাবে ব্যহত হচ্ছে পণ্য খালাস প্রক্রিয়া। যানবাহন ও নিরাপত্তাকর্মীদের চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়ায় বন্দরের ৯.১২.১৫.১৬ ও ১৮ নম্বর সেড থেকে লোড আনলোড বন্ধ হয়ে আছে।
ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই বন্দরে হাটু পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে থাকে। কয়েক বছর ধরে এ দূর্ভোগ হলেও নজর নাই বন্দর কর্তৃপক্ষের। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছেন, রেলকর্তৃপক্ষ কালভাট না রেখে মাটি ভরাট করায় পানি নিষ্কাসনে বাধা গ্রুস্থ্য হচ্ছে।
তবে এসব শেড ও ওপেন ইয়ার্ড অধিকাংশই দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে তৈরী হয়নি। বন্দর সড়কের উচ্চতার চেয়ে পণ্যগারগুলো নিচু হওয়ায় একটু বৃষ্টিপাত বেশি হলে পানি নিষ্কাষনের অভাবে পণ্যগার ও ইয়াডে জলবদ্ধতা তৈরী হয়। এতে পানিতে ভিজে যেমন পণ্যের গুনগত মান নষ্ট হয় তেমনি চলাচলের বিঘ্ন ঘটছে। তবে আজ সকাল থেকে সেচ যন্ত্র চালিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
বেনাপোল বন্দর পরিচালক শামিম হোসেন জানান, বন্দরের জলবদ্ধতা প্রতি বছরে তৈরী হয়। বিশেষ করে রেল বিভাগ কালভাট না রেখে মাটি ভরাট করায় সমস্যার সন্মুখিন হতে হচ্ছে। বন্দরের পানি নিষ্কাসন ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে পড়েছে। তবে দ্রুত এ অবস্থা কাটিয়ে তুলতে পাশ্ববর্তী হাওড়ের সাথে বন্দরের ড্রেন তৈরীর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রেরক: রাশেদুর রহমান রাশু, বেনাপোল যশোর ।
কক্সবাজারের চকরিয়ায় গত রোববার (৬ জুলাই) মালুমঘাট বাজার থেকে পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে এক যুবক পালিয়ে যায়। পালিয়ে যাওয়া সে যুবক সাজ্জাদ হোসেন (২০) কে কক্সবাজারের ডিবি পুলিশ কলাতলীর একটি আবাসিক হোটেল থেকে আটক করে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দিবাগত রাত তিনটায় কক্সবাজারের একটি আবাসিক হোটেল (ওয়ার্ল্ড বিচ রিসোর্ট) অভিযান পরিচালনা করে কক্সবাজারের ডিবি পুলিশ। রাত প্রায় তিনটায় নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ওই হোটেলের একটি কক্ষ থেকে তাকে আটক করা হয়।
চকরিয়া থানা পুলিশের বিশেষ নজরদারি ও কক্সবাজারের গোয়েন্দা পুলিশের শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে আসামি সাজ্জাদ হোসেন কে আটক করতে সক্ষম হয় কক্সবাজার ডিবি পুলিশ।
এবিষয়ে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, পলাতক আসামি সাজ্জাদ কে কক্সবাজার ডিবি পুলিশ আটক করেছে। প্রাথমিকভাবে সদর মডেল থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর চকরিয়া থানায় নিয়ে আসা হবে। তার বিরুদ্ধে একটি পুলিশ এসল্ট মামলা করা হয়েছে।
মন্তব্য