তপ্ত দুপুর, মাথার ওপর সূর্যের তীর্যক রশ্মি। অসহ্য দাবদাহের মধ্যে কংক্রিট ভর্তি কড়াই মাথায় নিয়ে ছুঁটছেন জুলেখা বেগম। আগারগাঁও সড়কে রাস্তা সংস্কারের জন্য এই কংক্রিট দরকার। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কাজ করে মেলে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। বলেন, কোনো রকমে বেঁচে থাকতেই এমন হাড়ভাঙ্গা খাটুনি। স্বামী আছে, কিন্তু অক্ষম। তাই সংসারের হাল ধরেছেন।
সংসারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তি নারী– এমন উদাহরণ এখন ভুরি ভুরি।
এক সময় নারীদের ঘর থেকে বের হওয়াই কঠিন ছিল। এখন বদলে গেছে চিত্র। পেশাজীবনের নিম্ন থেকে উচ্চ সব পর্যায়ে এখন নারীর পদচারণা। পুরুষের সঙ্গে সমান তালে এগিয়ে চলেছে নারী। অর্থনীতিতে বাড়ছে নারীর অংশগ্রহণ। বাণিজ্য, উৎপাদন, কর্মক্ষেত্র, শিক্ষা– সব ক্ষেত্রে অদম্য নারী।
তবে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ এখনও ব্যাপক আকারে হচ্ছে না। অধিকাংশ নারী অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কাজ করেন। প্রাতিষ্ঠানিক খাতের মধ্যে রপ্তানিমুখী ও পোশাক শিল্পে নারীর কাজ করার ব্যাপক সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এখানে নারীর কর্মসংস্থান বেড়েছে।’
‘অন্যান্য দেশের তুলনায় আমাদের দেশে মজুরি বৈষম্য কমেছে। কিন্তু নারীর কর্মক্ষেত্র এখনও নির্দিষ্ট কিছু গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ। কারণ, চাকরি ক্ষেত্রে প্রযুক্তির কারণে নারীকে বাড়তি প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। নারীরা যথেষ্ঠ প্রশিক্ষণের সুযোগ পান না। ফলে তারা পিছিয়ে পড়েন।’
তবে নারীর এ অংশগ্রহণ বেড়েছে বলে মনে হলেও পুরুষের সঙ্গে সমান তালে কর্মক্ষেত্রে নারী এখনও অবস্থান গড়ে তুলতে পারছে না বলে মনে করেন তিনি। তার মতে, যারা কাজ করছেন, তারাও পিছিয়ে আছেন। উচ্চপদে নারী নেই বললেই চলে। নারীর অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি হলেও যথাযথভাবে কাজের সুযোগ তৈরি হয়নি। ফলে বেকারের সংখ্যাও বাড়ছে। গ্রাজুয়েট করা বেকার নারী প্রায় ৪৮ শতাংশ।
তিনি আরও বলেন, ‘অন্যান্য দেশের তুলনায় আমাদের দেশে মজুরি বৈষম্য কমেছে। কিন্তু নারীর কর্মক্ষেত্র এখনও নির্দিষ্ট কিছু গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ। কারণ, চাকরি ক্ষেত্রে প্রযুক্তির কারণে নারীকে বাড়তি প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। নারীরা যথেষ্ঠ প্রশিক্ষণের সুযোগ পান না। ফলে তারা পিছিয়ে পড়েন।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও বেসরকারি সংস্থা সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) গবেষণা পরিচালক ড. সায়মা হক বিদিশা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শ্রমবাজারে নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে এট ঠিক। কিন্তু সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়, পরিচালক, বড় ধরনের উচ্চপদে নারীর অবস্থান এখনও অনেক কম। কর্মক্ষেত্রে নারীর এ অগ্রগতিকে টেকসই করতে হবে। কর্মপরিবেশ আরও নিরাপদ করতে হবে। এ জন্য বাল্যবিয়ে বন্ধ, উচ্চশিক্ষায় নারীর অংশগ্রহণ বাড়ানো জরুরি।
বিবিএসের সর্বশেষ ২০১৬-১৭ সালের শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী দেশে কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী ৬ কোটি ৩৫ লাখ। তাদের মধ্যে কাজ করেন ৬ কোটি ৮ লাখ। আর আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) ২০১৯ সালের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণের হার ৩৮ শতাংশ।
সংসারের নিয়ন্ত্রক নারী
সংসার কে চালায়! সচরাচর এর উত্তর পুরুষ। কিন্তু সংসারের নারীর নিয়ন্ত্রণ বাড়ছে। কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সংসারের হাল ধরার প্রবণতাও এখন বেশি।
শিক্ষা গ্রহণের পরই একজন নারী কর্মক্ষেত্রে যোগ দিতে পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন। পুরুষের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকেও যাচ্ছেন নারীরা। ফলে বিয়ের আগে বা বিয়ের পরেও কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণের প্রবণতা বাড়ছে। সংসারের হাল ধরছেন নারী।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিউলী আক্তার বলেন, ‘স্বামীর একার আয়ে সংসার হয়তো কোনো রকমে চালিয়ে নেয়া যেত। আমি চাকরি করাতে সংসারে স্বচ্ছলতা এসেছে। এ কারণে সংসারে আমাদের গুরুত্ব সমান সমান।’
একটি পোশাক কারখানায় কর্মরত সাজিদা পারভিন বলেন, ‘এমনও হয়েছে করোনার মধ্যে স্বামীর চাকরি চলে গেছে। কিন্তু আমার চাকরি ছিল। তখন সংসারের হাল আমিই ধরেছি। অভাব বুঝতে পারি নাই।’
সোনালী ব্যাংকে কর্মরত এলিজা ফেরদৌস বলেন, ‘দুজন চাকরি করছি বলেই করোনার মধ্যে টিকে থাকতে পেরেছি। কারণ আমার স্বামী বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরি করে। করোনায় তার বেতন কমে যায়। কিন্তু আমিও চাকরি করি দেখে দুই সন্তান নিয়ে এখনও চলতে পারছি।’
বাংলাদেশ বিমানে কর্মরত কৃষ্ণা সাধু বলেন, ‘করোনার মধ্যে বিমানে কর্মরতদের ক্ষতি একটু বেশি। আমার স্বামীও একই সেক্টরে চাকরি করেন। ২০২০ সালে তো প্রায় বছরজুড়ে অধিকাংশ দেশে ফ্লাইট বন্ধ ছিল। ফলে বেতনও কমিয়ে দেয় কর্তৃপক্ষ। এর আগে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে একটা ফ্লাট কিনেছি। একজনের আয়ের টাকা ব্যাংকের কিস্তিতেই চলে যায়। তারপর মেয়েদের পড়ালেখার খরচ তো আছেই। দুজন চাকরি করি বলে টিকে আছি।’
এশিয়ান সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্টের (এসিডি) জরিপ অনুযায়ী দেশের মোট ৪২ লাখ ২০ হাজার পোশাক শ্রমিকের মধ্যে নারীর সংখ্যা ২৪ লাখ ৯৮ হাজার। এই খাতে নিয়োজিত নারী কর্মী দেশের শিল্পখাতে নিয়োজিত মোট নারী কর্মীর ৭০ ভাগ।
জিডিপিতে নারী
মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) নারীর অবদান প্রায় ২০ শতাংশ। ২০২০ সালের এক গবেষণায় এমন তথ্য দিয়েছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।
সংস্থাটি বলছে, সংসারের ভেতর ও বাইরের কাজের মূল্য যোগ করলে নারীর অবদান বেড়ে দাঁড়াবে ৪৮ ভাগ। এর অর্থ হলো, দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে নারী-পুরুষের অবদান সমান সমান।
শ্রম ক্ষেত্রে নারী
শ্রম বাজারে বাড়ছে নারীর অংশগ্রহণ। বিবিএস-এর তথ্য অনুযায়ী, কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণের হার ৩৩ দশমিক ৫ ভাগ।
বলা হচ্ছে, ১৯৭৪ সালে সদ্যস্বাধীন দেশে কর্মক্ষেত্রে নারীর অবদান ছিল মাত্র ৪ ভাগ। এই হার ১৯৮০ সালের দিকে হয় ৮ ভাগ। এবং ২০০০ সালে এটি বেড়ে হয় ২৩ দশমিক ৯ শতাংশ। সেটি ২০১০ সালে বেড়ে হয়েছে ৩৬ ভাগ।
বিবিএসের সর্বশেষ ২০১৬-১৭ সালের শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী দেশে কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী ৬ কোটি ৩৫ লাখ। আর তাদের মধ্যে কাজ করেন ৬ কোটি ৮ লাখ।
এদিকে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) ২০১৯ সালের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণের হার ৩৮ শতাংশ।
পোশাক শিল্প
বলা যায়, পোশাক খাতের নিয়ন্ত্রক নারী শ্রমিক। দেশের রপ্তানি আয়ের ৮০ শতাংশেরও বেশি পোশাক শিল্পখাত থেকে আসে। মোট পোশাক কর্মীর প্রায় ৫৪ শতাংশ নারী।
এশিয়ান সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্টের (এসিডি) জরিপ অনুযায়ী দেশের মোট ৪২ লাখ ২০ হাজার পোশাক শ্রমিকের মধ্যে নারীর সংখ্যা ২৪ লাখ ৯৮ হাজার। এই খাতে নিয়োজিত নারী কর্মী দেশের শিল্পখাতে নিয়োজিত মোট নারী কর্মীর ৭০ ভাগ।
কৃষিখাতেও নারীর আধিক্য
কৃষিই অর্থনীতির প্রাণ। সেই কৃষি খাতেও বাড়ছে নারীর সম্পৃক্ততা।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের তথ্য অনুযায়ী, দেশে মোট কর্মক্ষম নারীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক নিয়োজিত কৃষিকাজে– ৭১ দশমিক ৫ ভাগ।
বিবিএসের ২০১৮ সালের তথ্য মতে, দেশে কৃষি খাতে নিয়োজিত ৯০ লাখ ১১ হাজার নারী।
চা শিল্প
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ চা বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, দেশে চা বাগানের সংখ্যা ১৫৮টি। এসব বাগানে কাজ করেন ১ লাখ ৪০ হাজার ১৮৪ জন শ্রমিক।
এসব শ্রমিকের মধ্যে পুরুষ ৬৯ হাজার ৪১৫ এবং নারী ৭০ হাজার ৭৬৯ অর্থাৎ নারী শ্রমিকের সংখ্যা পুরুষ শ্রমিক থেকে ১ হাজার ৩৫৪ জন বেশি।
সেবা খাত
সেবা খাতে কর্মরত আছে ৩৭ লাখ নারী। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ২০১৯ সালের তথ্যে উঠে এসেছে এমন পরিসংখ্যান।
গৃহ ও অভিবাসী শ্রমিক
দেশে গৃহস্থালি কাজের সাথে জড়িত মোট শ্রমিক সংখ্যা ১৩ লাখ। তবে সাধারণ ধারণামতে দেশে বর্তমানে গৃহকর্মে নিয়োজিত আছে ২০ লাখেরও বেশি শ্রমিক। এদের ৮০ শতাংশই নারী এবং শিশু। ২০১৬-২০১৭ সালের শ্রমশক্তি জরিপে উঠে এসেছে এমন তথ্য।
জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য অনুযায়ী, ১৯৯১ সাল থেকে ২০২২ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত শ্রমিক হয়ে কাজের জন্য বিদেশে গেছেন ১ লাখ ৪৫৬ জন নারী।
উচ্চপদে নারী
সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও ব্যবস্থাপনার গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে বাড়ছে নারীর অংশগ্রহণ।
২০২১ সালের মার্চ পর্যন্ত দেশে মোট উপজেলার সংখ্যা ছিল ৪৬০টি। এসব জায়গায়, উপজেলা নির্বাহী অফিসার পদে নারীরা কর্মরত ছিলেন চার ভাগের এক ভাগ।
বর্তমানে জেলা প্রশাসক পদেও দায়িত্ব পালন করছেন অনেক নারী। আর সচিব বা সমমর্যাদার পদে আছেন ১০ জনের বেশি নারী। অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন নারীরা।
দেশের বিচার বিভাগেও নারীদের অবস্থান সংহত হচ্ছে। পুলিশ বাহিনীতে বাড়ছে নারীর আধিক্য। এ সংস্থায় মোট নারী সদস্যের সংখ্যা ১৫ হাজার ১৬৩ জন।
পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাবে, দেশে ছোট-বড় মিলিয়ে শিল্পকারখানাগুলোতে ৫৪ লাখ ৬৫ হাজার ১৬২ শ্রমিক কাজ করেন। এদের ৫৬ শতাংশের কিছু বেশি পুরুষ এবং প্রায় ৪৪ শতাংশ নারী।
বড় শিল্পে নারী
বড় আকারের শিল্পকারখানায় পুরুষ শ্রমিকের তুলনায় এখন নারী শ্রমিকের সংখ্যাই বেশি। এ ধরনের কারখানার শ্রমিকদের প্রায় ৫৫ শতাংশ নারী। পাশাপাশি শিল্পকারখানার মোট স্থায়ী শ্রমিকের মধ্যে নারীর হার ৬৩ ভাগ।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সাম্প্রতিক ‘সার্ভে অব ম্যানুফ্যাকচারিং ইন্ডাস্ট্রিজ (এসএমআই)' জরিপে এ তথ্য উঠে তুলে ধরা হয়েছে।
পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাবে, দেশে ছোট-বড় মিলিয়ে শিল্পকারখানাগুলোতে ৫৪ লাখ ৬৫ হাজার ১৬২ শ্রমিক কাজ করেন। এদের ৫৬ শতাংশের কিছু বেশি পুরুষ এবং প্রায় ৪৪ শতাংশ নারী।
জরিপে দেখা যায়, শিল্পকারখানাগুলোর মধ্যে ৩৬ দশমিক ৩৮ শতাংশ অতিক্ষুদ্র, ৫০ দশমিক ৫৪ শতাংশ ক্ষুদ্র, ৬ দশমিক ৮৯ শতাংশ মাঝারি এবং ৬ দশমিক ১৯ শতাংশ বড় আকারের প্রতিষ্ঠান।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, সারা দেশে দেশীয় মাছের সংকট প্রকট হয়ে উঠছে। এই সংকট নিরসনে উন্মুক্ত জলাশয়ের কোন বিকল্প নাই। সরকার দেশের নদ-নদীতে মাছের অভয়ারণ্য তৈরি করতে কার্যক্রম গ্রহণ করছে।
উপদেষ্টা আজ সকালে কুড়িগ্রামে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান,নারী কৃষক এবং স্হানীয় এনজিও প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। জেলা প্রশাসন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর আলোচনা সভার আয়োজন করে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, বন্যায় নদীগুলোতে পলি পরার কারণে নাব্যতা হ্রাস, পানি দূষণ, চায়না জাল ব্যবহার ও ইলেকট্রিক শর্ট দিয়ে মাছ কারণে দিনদিন মাছের পরিমাণ কমছে। জোরালো অভিযান চালিয়ে এসব অবৈধ মাছ ধরার যন্ত্রপাতি উদ্ধার করতে হবে। অভিযান চলমান রাখতে নদীগুলোতে স্পীড বোটের ব্যবহার করা হবে।
চরাঞ্চলের মানুষের জীবনমান প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, যোগাযোগ ব্যবস্থার অপ্রতুলতার কারণে তারা সরকারি অনেক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এছাড়া তিনি প্রতিটি মন্ত্রণালয়কে এই অঞ্চলের মানুষের জন্য বিশেষ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের আহ্বান জানান।
খামারিদের উৎপাদিত দুধ সংরক্ষণ বিষয়ে প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, যথাযথ সংগ্রহ ও সংরক্ষণের অভাবে খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তাই এই অঞ্চলে চিলিং সেন্টার স্থাপনের প্রকল্প গ্রহণ করা হবে।
জুলাই যোদ্ধাদের আত্মত্যাগ প্রসঙ্গে বলেন, জুলাই যোদ্ধাগণ অনেকে জীবন উৎসর্গ করেছেন আবার অনেকে পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। তাদের এই ঋণ ভুলবার নয়। এজন্য তিনি সরকারি ও এনজিওর উদ্যোগে তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে আহ্বান জানান।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক সিফাত মেহনাজের সভাপতিত্বে আরো উপস্হিত ছিলেন সিভিল সার্জন ডা. স্বপন কুমার বিশ্বাস, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোক্তাদির খান, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. হাবিবুর রহমান, কৃষি সম্প্রসারণের অতিরিক্ত উপপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ রানাসহ জেলা প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
এরপর উপদেষ্টা কুড়িগ্রাম সদরের পাঁচগাছি ইউনিয়নের ছড়ারপাড় গ্রামে নারী কৃষকের বাড়ি পরিদর্শন করেন।
সরকার দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীকে প্রেস কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে মনোনীত করেছে। বৃহস্পতিবার তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপসচিব খাদিজা তাহের ববির সই করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘প্রেস কাউন্সিলের ৫ নম্বর ক্রমিকের প্রতিনিধি নিউএজ পত্রিকার সম্পাদক নুরুল কবীর পদত্যাগ করায় তার পরিবর্তে সংবাদপত্র ও সংবাদ সংস্থার সম্পাদক সমিতির প্রতিনিধি হিসেবে দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীকে প্রেস কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে মনোনয়ন প্রদান করা হলো।’
বর্তমান কাউন্সিলের অবশিষ্ট মেয়াদের জন্য এ মনোনয়ন কার্যকর থাকবে। জনস্বার্থে জারিকৃত এ প্রজ্ঞাপন অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।
প্রেস কাউন্সিলের বর্তমান চেয়ারম্যান বিচারপতি একেএম আব্দুল হাকিম, সচিব (উপসচিব) মো. আব্দুস সবুর।
এছাড়া ১২ জন সদস্য হচ্ছেন—১. বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, ২. ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি মিস দৌলত আকতার মালা, ৩. ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম, ৪. ডেইলি স্টারের সম্পাদক ও প্রকাশক মাহফুজ আনাম, ৫. দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, ৬. দৈনিক বণিক বার্তার প্রকাশক ও সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ, ৭. দ্য ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ, ৮. দৈনিক পূর্বকোণের সম্পাদক ডা. রমিজ উদ্দিন চৌধুরী, ৯. নিউজপেপার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (নোয়ার) উপদেষ্টা আখতার হোসেন খান, ১০. বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম, ১১. বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সচিব ড. মো. ফখরুল ইসলাম এবং ১২. বার কাউন্সিলের ভাইস-চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদীন।
অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী মিয়া শাহবাজ শরিফের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। পাকিস্তানের ইসলামাবাদে পিএম হাউসে উভয়ের এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।
বৃহস্পতিবার ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ধর্ম উপদেষ্টা ও তার প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানিয়ে পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক এবং সখ্যের বন্ধনে আবদ্ধ। এ সম্পর্ক আগামী দিনগুলোতে আরও জোরদার হবে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নিউইয়র্ক ও কায়রোতে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে অনুষ্ঠিত বৈঠকের কথা উল্লেখ করে দূরদর্শী নেতৃত্ব এবং দারিদ্র্য দূরীকরণে তার অবদানের প্রশংসা করেন। এছাড়া তিনি পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সম্পর্ককে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে প্রধান উপদেষ্টার আকাঙ্ক্ষাকে সাধুবাদ জানান।
এদিকে ধর্ম উপদেষ্টা বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের একটি পত্র পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন।
পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রীকে লেখা এ পত্রে প্রধান উপদেষ্টা পাকিস্তানে নজিরবিহীন বন্যায় সে দেশের সরকার ও জনগণের প্রতি গভীর সহমর্মিতা ও আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং ভয়াবহ এ দুর্যোগে নিহতদের পরিবার ও ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
এ পত্রে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, কঠিন এ সময়ে বাংলাদেশের জনগণ পাকিস্তানের ভ্রাতৃপ্রতিম জনগণের পাশে রয়েছে। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আপনার সুদক্ষ নেতৃত্বে পাকিস্তানের জনগণ তাদের অসাধারণ ধৈর্য ও সহনশীলতার মাধ্যমে এ চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করবে। প্রয়োজনে ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রমে বাংলাদেশ সর্বাত্মক সহযোগিতা ও সহায়তা প্রদানে প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।
সাক্ষাৎকালে ঢাকা ও করাচীর মধ্যে সরাসরি বিমান চলাচল দ্রুত পুনঃস্থাপনের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করা হয়। এছাড়া কৃষি, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, ধর্মতত্ত্ব ও চিকিৎসা বিষয়ে উভয়দেশের শিক্ষার্থী বিনিময়ে বৃত্তি প্রদানের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার, প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ, ধর্মবিষয়ক ও আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি মন্ত্রী সরদার ইউসুফ খান, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী আতা তারার, ইসলামাবাদে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. ইকবাল হোসেন খান, উপদেষ্টার একান্ত সচিব ছাদেক আহমদ ও শরীফ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের প্রভাষক মুফতি জাহিদ হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পুলিশের একটি স্বাধীন তদন্ত সার্ভিস গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আজ বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস সভাপতিত্ব করেন।
পরে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘উপদেষ্টা পরিষদ সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশের একটি স্বাধীন তদন্ত সার্ভিস গঠন করা হবে, যাতে কোনো রাজনৈতিক বা অন্য কোনো প্রভাব ছাড়াই তদন্ত সম্পন্ন করা যায়।’ এর পাশাপাশি পুলিশের ভেতরে অভ্যন্তরীণ অভিযোগ যাচাইয়ের জন্য একটি কমিশন গঠনের বিষয়েও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ‘এই দুই সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য আইন মন্ত্রণালয় কাজ করবে। এ কাজে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, আদিলুর রহমান খান এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখশ চৌধুরী যুক্ত থাকবেন।’
সভায় স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করার বিষয়েও গুরুত্ব দেওয়া হয়। প্রেস সচিব বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা বারবার জোর দিয়েছেন যে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও ক্ষমতায়িত করতে হবে। ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশন যেন নিজস্ব তহবিল সংগ্রহ ও স্বচ্ছভাবে পরিচালনা করতে পারে সে বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
স্বাস্থ্য খাত নিয়েও সভায় আলোচনা হয়। শফিকুল আলম জানান, ‘কিছু মেডিকেল কলেজে যোগ্য শিক্ষকের সংকট রয়েছে। তাই অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের পরামর্শক বা অন্যভাবে সম্পৃক্ত করে শিক্ষা কার্যক্রমের মান উন্নত করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।’
নেপালে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের বিষয়েও সভায় আলোকপাত করা হয়। প্রেস সচিব বলেন, ‘নেপালে অবস্থানরত বাংলাদেশিরা ভালো আছেন, দূতাবাস তাদের দেখভাল করছে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর বিশেষ ফ্লাইটে জাতীয় ফুটবল দলকে দেশে আনার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’
এ বৈঠক প্রসঙ্গে শফিকুল আলম আরও বলেন, ‘আজকের বৈঠকের প্রতিটি সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের অর্থনীতি, শাসনব্যবস্থা ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমাদের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করবে।’
ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
ক্যাডার কর্মকর্তাদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণের মেয়াদ ছয় মাস থেকে কমিয়ে চার মাস করা হয়েছে। এর মধ্যে তিন মাস প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে এবং এক মাস মাঠপর্যায়ে ওরিয়েন্টেশন ও গ্রাম সংযুক্তি অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
আজ বুধবার প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে জাতীয় প্রশিক্ষণ কাউন্সিলের নবম সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোখলেস উর রহমান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান উপস্থিত ছিলেন।
সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, কর্মকর্তাদের মাস্টার্স ও পিএইচডি কোর্সে ভর্তির সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৪৫ থেকে বাড়িয়ে ৪৭ বছর করা হবে। পিএইচডি কোর্সে অধ্যয়নকালে প্রতি বছর তত্ত্বাবধায়কের অগ্রগতিমূলক প্রত্যয়ন মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে, অন্যথায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বেতন বন্ধ রাখা হবে।
সভায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সরকারি যত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আছে সেগুলোর ওপর মূল্যায়ন করতে হবে। কী ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, প্রশিক্ষণের ধরন-মান ইত্যাদির মানদণ্ড নির্ধারণ করে ক্যাটাগরিভিত্তিক প্রতিটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রকে র্যাংকিং করতে হবে এবং নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘একটি স্বাধীন ইউনিট গঠন করতে হবে। তারা সমস্ত গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ওপর পদ্ধতিগতভাবে, স্বাধীনভাবে মূল্যায়ন করবে। গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর সামগ্রিক দর্শন জানতে হবে। সেগুলো সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে কি না দেখতে হবে। সরকারি কর্মকর্তারা যারা বিদেশ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছেন তাদের তথ্য সেখানে থাকবে।’
সভায় সঞ্জীবনী প্রশিক্ষণের নাম পরিবর্তন করে ‘দক্ষতা নবায়ন প্রশিক্ষণ’ করার সিদ্ধান্ত হয়। এ প্রশিক্ষণ হালনাগাদকৃত কারিক্যুলামে মাঠপর্যায়ে সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে আয়োজন করা হবে। এছাড়া উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে কর্মকর্তারা আংশিক বৃত্তিপ্রাপ্ত হলেও প্রেষণ অনুমোদন করা যাবে।
কর্মচারীদের সততা ও নৈতিকতা বিকাশ এবং দুর্নীতি বিরোধী মনোভাব তৈরিতে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কোর্সে সদ্গুণ, নৈতিকতা, আচরণবিজ্ঞান ও আচরণবিধি অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়। পাশাপাশি প্রশিক্ষণ ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলোর সার্বিক মূল্যায়ন এবং প্রশিক্ষণ বিষয়ক সিদ্ধান্ত গ্রহণের লক্ষ্যে গবেষণা, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদকে সভাপতি করে একটি নির্বাহী কমিটি (ইসিএনটিসি) গঠন করা হয়।
জাতীয় লেখক ফোরাম আয়োজিত সাপ্তাহিক সাহিত্য আড্ডা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজধানীর ধানমন্ডিতে হওয়া এ সাহিত্য আড্ডায় উপস্থিত ছিলেন সংগঠেনর সভাপতি ড. দেওয়ান আযাদ রহমান, মহাসচিব কবি-কথাসাহিত্যিক জাহাঙ্গীর হোসাইন এবং উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য মো. আবদুল মান্নানসহ বাংলাদেশের খ্যাতিমান লেখকরা। অনুষ্ঠানটি একটি সাধারণ প্রাণবন্ত আড্ডার মধ্যেই শুরু হয়। অনুষ্ঠানটি ৩টি পর্বে সাজানো হয়েছে। প্রতি পর্বে চারজন কবিকে মঞ্চে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তারা তাদের গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য এবং কবিতা পাঠ করেছেন। পুরো অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেছেন কবি-কথা সাহিত্যিক জাহাঙ্গীর হোসাইন।
শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি পরিশোধের জন্য সরকার প্রদত্ত সুদমুক্ত ঋণ যথাসময়ে ফেরত না দিলে সংশ্লিষ্ট শিল্প কারখানার মালিকদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
বুধবার সচিবালয়ে আয়োজিত এক সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব, ব্যাংকিং ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধি, বিজিএমইএ-এর সভাপতি এবং সংশ্লিষ্ট ঋণগ্রহীতা কারখানার মালিকদের নিয়ে এ সভার আয়োজন করা হয়।
ড. এম সাখাওয়াত হোসেন জানান, বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকরা শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় শ্রম অসন্তোষ নিরসনের লক্ষ্যে সরকার বার্ডস গ্রুপ, টিএনজেড গ্রুপ, বেক্সিমকো গ্রুপ, ডার্ড গ্রুপ, নায়াগ্রা টেক্সটাইলস লিমিটেড, রোয়ার ফ্যাশন লিমিটেড, মাহমুদ জিন্স লিমিটেড, স্টাইল ক্রাফট লিমিটেড এবং গোল্ডস্টার গার্মেন্টস লিমিটেডকে অর্থ বিভাগ এবং কেন্দ্রীয় তহবিল, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে সুদমুক্ত ঋণ প্রদান করে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণ চুক্তির আওতায় উক্ত অর্থ পরিশোধ করছেন না।
তিনি বলেন, তাদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর অবস্থানে যাবে। তাদের পাসপোর্ট জব্দের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
ইতোমধ্যে কয়েকজন পলাতক মালিকের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তিনি পলাতক মালিক ও প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের পাসপোর্ট স্থগিত রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশনা দেন।
উপদেষ্টা বলেন, "এই ঋণের টাকা শ্রমিকের টাকা এবং জনগণের ট্যাক্সের টাকা। এ টাকা আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে।"
তিনি বলেন, এই ক্ষেত্রে কোনোরকম ছাড় দেওয়া হবে না।
তিনি সংশ্লিষ্ট শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিক ও প্রতিনিধিদের সংশ্লিষ্ট লিয়েন ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা করে প্রতিষ্ঠানের জমি, কারখানা, যন্ত্রপাতি বিক্রি করে হলেও ডিসেম্বর মাসের মধ্যে ঋণের সকল টাকা পরিশোধ করতে বলেন।
এ বিষয়ে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ-কে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য