× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
12 murders in 12 days in Bandarban
google_news print-icon

বান্দরবানে ১০ দিনে ১২ খুন

বান্দরবানে-১০-দিনে-১২-খুন
শান্তিচুক্তির পরও এ জেলায় ভ্রাতৃঘাতী সংঘাত ছিল না। সারা বছর পর্যটকমুখর এ জেলায় সম্প্রতি ও শান্তির সুবাতাস বইলেও হঠাৎ করেই যেন তাতে ছন্দপতন। গত ১০ দিনে এ জেলায় ১২টি খুনের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় প্রাণ হারানো সবাই পাহাড়ি জনগোষ্ঠী ও সশস্ত্র সংগঠনের সদস্য।

তিন পার্বত্য জেলার মধ্যে অপেক্ষাকৃত শান্তির জনপদ হিসেবে বিবেচনা করা হয় বান্দরবান জেলাকে। বছরজুড়ে রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়িতে পাহাড়ি সশস্ত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে সংঘাত লেগে থাকলেও বান্দরবান ছিল তার বিপরীত।

শান্তিচুক্তির পরও এ জেলায় ভ্রাতৃঘাতী সংঘাত ছিল না। সারা বছর পর্যটকমুখর এ জেলায় সম্প্রতি ও শান্তির সুবাতাস বইলেও হঠাৎ করেই যেন তাতে ছন্দপতন। গত ১০ দিনে এ জেলায় ১২টি খুনের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় প্রাণ হারানো সবাই পাহাড়ি জনগোষ্ঠী ও সশস্ত্র সংগঠনের সদস্য।

এসব ঘটনায় বান্দরবানজুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। হুমকির মুখে পড়েছে জননিরাপত্তা। এ নিয়ে কোনো প্রতিবাদ ও সরাসরি মন্তব্য করতেও নারাজ সংশ্লিষ্টরা। তবে পুলিশ বলছে, সশস্ত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে সংঘাত সীমাবদ্ধ। এসবের সঙ্গে সাধারণ মানুষ যুক্ত নয়। তাদের প্রত্যক্ষ হুমকি ও হামলাও করছে না। যদিও জেলার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে প্রভাব ফেলছে এসব ঘটনা।

সর্বশেষ শনিবার বিকেলে রোয়াঙ্গছড়িতে জনসংহতি সমিতি-সন্তু লারমা (জেএসএস ) ও মগ লিবারেশন পার্টির সদস্যদের মধ্যে গোলাগুলিতে চারজন নিহত হয়েছেন। এক দিন পর তাদের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

তবে ওই দিন (শনিবার) দুপুরে হত্যার শিকার জেএসএস কমান্ডার উনুমং মার্মার মরদেহ এখনও পায়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাকে অপহরণ করে গুলি করে হত্যা করা হয়।

এসব ঘটনা সাধারণ মানুষের জন্য উদ্বেগের না হলেও আমাদের জন্য উদ্বেগের। আধিপত্যের জেরেই জেএসএস ও মগ লিবারেশন পার্টির মধ্যে সংঘর্ষ। দুর্গম এলাকায় তাদের অবস্থান। ফলে ঘটনার পর আমরা খবরগুলো পাই। আমাদের লোকবল মাত্র ২ হাজার ৫০০। অনেক চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করতে হয়। এর পরও আমরা জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কাজ করে যাচ্ছি


এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে রোয়াংছড়ির নোয়াপতং ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড আলেচুপাড়ার পাহাড়ি ঝিরি থেকে এক নারীর গলা কাটা দেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে শ্যামল তঞ্চঙ্গ্যা নামে একজনকে আটক করা হয়। পুলিশ বলছে, শনিবার আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন শ্যামল। জবানবন্দিতে তিনি বলেন, ওই নারীকে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যার পর ধর্ষণ করেছেন তিনি।


বান্দরবানে ১০ দিনে ১২ খুন


২৬ ফেব্রুয়ারি একই উপজেলার সদর ইউনিয়নের নতুনপাড়া এলাকায় মংসিং শৈ মারমা নামে এক যুবককে গুলি করে হত্যা করা হয়। স্থানীয়দের বরাতে ওসি জানান, মংসিং শৈ মারমা গোসল করার জন্য বাড়ির পাশের টিউবওয়েলে গেলে সাত-আটজন অস্ত্রধারী তাকে ব্রাশফায়ার করে। মংসিং জেএসএসের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

এ ঘটনার দুদিন আগে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রুমার গালেঙ্গ্যা ইউনিয়নের আবুপাড়ায় পাড়াপ্রধান লক্কুই ম্রো এবং তার চার ছেলে নুক্কুই ম্রো, লেং নি ম্রো, মেনু ওয়াই ম্রো ও রিং রাও ম্রোকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। জুমচাষের জমি নিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে পাড়াপ্রধান লক্কুই ম্রোর বিরোধের জেরেই ওই হত্যাকাণ্ড বলে পুলিশ জানিয়েছিল।

বান্দরবান এমন সংঘাতময় ছিল না। বান্দরবান এখন অনেক উত্তপ্ত। এটি নিয়ে আমরা সবাই শঙ্কিত। প্রশাসন কিছু না করলে আমরা প্রতিবাদ করেও কোনো লাভ হবে না। মানুষ এখন নীরবে কাঁদে। আমি অন্য সময় মাঠে নেমে প্রতিবাদ করি। কিন্তু এবার মাঠে নামছি না, কারণ আমি নিজেই নিজেকে নিয়ে উদ্বিগ্ন ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি

এ ছাড়া গত মাসের শুরুতে বান্দরবানে সেনাবাহিনীর একটি টহল দলের সদস্যদের সঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি বা জেএসএসের সদস্যদের গোলাগুলির ঘটনায় এক সেনাসদস্যসহ মোট চারজন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর।

শান্তির জনপদ হঠাৎ কেন অশান্ত- এসব নিয়ে নিউজবাংলার সঙ্গে কথা হয় বান্দরবান জেলার পুলিশ সুপার জেরিন আখতারের। তিনি বলেন, ‘বান্দরবানের পরিস্থিতি একেক সময় একেক রকম হয়। পাহাড়ে গ্রুপগুলোর মধ্যে দ্বন্দ্ব আছে। জনসাধারণের সঙ্গে তাদের কোনো সংঘর্ষ ও হুমকির ঘটনা কিন্তু ঘটছে না। তাদের নিজেদের নিজেদের মধ্যে সংঘাতের ঘটনা ঘটছে।

‘এসব ঘটনা সাধারণ মানুষের জন্য উদ্বেগের না হলেও আমাদের জন্য উদ্বেগের। আধিপত্যের জেরেই জেএসএস ও মগ লিবারেশন পার্টির মধ্যে সংঘর্ষ। দুর্গম এলাকায় তাদের অবস্থান। ফলে ঘটনার পর আমরা খবরগুলো পাই। আমাদের লোকবল মাত্র ২ হাজার ৫০০। অনেক চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করতে হয়। এর পরও আমরা জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কাজ করে যাচ্ছি।’

জেলার প্রধান পুলিশ কর্মকর্তা দাবি করছেন স্থানীয়রা উদ্বিগ্ন নয়। তবে এটি মানতে রাজি নন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) বান্দরবান জেলার সভাপতি ডনাই প্রু নেলী।


বান্দরবানে ১০ দিনে ১২ খুন


তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বান্দরবান এমন সংঘাতময় ছিল না। বান্দরবান এখন অনেক উত্তপ্ত। এটি নিয়ে আমরা সবাই শঙ্কিত। প্রশাসন কিছু না করলে আমরা প্রতিবাদ করেও কোনো লাভ হবে না। মানুষ এখন নীরবে কাঁদে। আমি অন্য সময় মাঠে নেমে প্রতিবাদ করি। কিন্তু এবার মাঠে নামছি না, কারণ আমি নিজেই নিজেকে নিয়ে উদ্বিগ্ন ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’

বান্দরবানে দীর্ঘদিন পর্যটন খাত নিয়ে কাজ করছেন অপু নজরুল। তিনি জানান, সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর কারণে পর্যটকদের মধ্যে বিরূপ ধারণা তৈরি হবে। যার প্রভাব পড়বে জেলার পর্যটনশিল্পে। তিনি বলেন, ‘বান্দরবান অন্য দুই পার্বত্য জেলা থেকে অনেক শান্ত। তবে পাহাড়ি সশস্ত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে সংঘাতের কারণে বান্দরবান ঘুরতে আসা নিয়ে পর্যটকদের মধ্যে মনস্তাত্ত্বিক বাধা কাজ করবে।’

রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়িতে সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন জনসংহতি সমিতি-জেএসএসের পাশাপাশি সংস্কারপন্থি জেএসএস এবং ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) সক্রিয় রয়েছে। ইউপিডিএফ ভেঙে গড়া গণতান্ত্রিক ইউপিডিএফসহ অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন সংগঠনের কমবেশি তৎপরতা থাকলেও বান্দরবানে এখনও আধিপত্য বিস্তার করে আছে মূলধারার জেএসএস। এ ছাড়া রয়েছে জেএসএস-সংস্কারপন্থি ও মগ লিবারেশন পার্টি (এমএলপি)।

তিন বছর আগেও বান্দরবান ছিল সংঘাতমুক্ত এলাকা। মগ পার্টির উত্থানের পর থেকে পরিস্থিতি বদলে যেতে শুরু করে। শুরু হয় সংঘাত, হানাহানি। এই মগ পার্টি মূলত মিয়ানমারের আরাকান লিবারেল পার্টি (এএলপি) দলছুট কয়েকজন নেতাকে নিয়ে গঠিত হয়েছে। বান্দরবানের রোয়াংছড়ি, রুমা ও সদরের আংশিক এলাকাজুড়ে রয়েছে এদের শক্তিশালী অবস্থান।

আরও পড়ুন:
বান্দরবানে গোলাগুলিতে নিহত ৪
বান্দরবানে ১০ দিনে ৮ খুন
গোপালগঞ্জে নির্বাচনি সংঘাত, ৩ জনকে কুপিয়ে জখম
গোলাগুলিতে থাকার অভিযোগ অস্বীকার জেএসএসের
বান্দরবানে গোলাগুলিতে সেনা সদস্যসহ চারজন নিহত

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
A coordinator of the killing of a BCL leader in Jabi was acquitted

জাবিতে ছাত্রলীগ নেতা হত্যা, এক সমন্বয়ককে অব্যাহতি

জাবিতে ছাত্রলীগ নেতা হত্যা, এক সমন্বয়ককে অব্যাহতি আহসান লাবিব। ছবি: সংগৃহীত
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘটিত সহিংসতায় অংশগ্রহণের অভিযোগ থাকায় আহসান লাবিবকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হচ্ছে। সুষ্ঠু তদন্ত শেষ না হওয়ার আগ পর্যন্ত এই অব্যাহতি বহাল থাকবে।’

সহিংসতায় অংশগ্রহণের অভিযোগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আহসান লাবিবকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিবৃতির নিচে লেখা ছিল- ‘বার্তা প্রেরক, সমন্বয়কবৃন্দ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়’।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘটিত সহিংসতায় অংশগ্রহণের অভিযোগ থাকায় আহসান লাবিবকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হচ্ছে। সুষ্ঠু তদন্ত শেষ না হওয়ার আগ পর্যন্ত এই অব্যাহতি বহাল থাকবে।

তদন্ত সাপেক্ষে দোষী সাব্যস্ত হলে তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আহ্বান জানাচ্ছে।’

আহসান লাবিব জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী।

আরও পড়ুন:
ছাত্রলীগ নেতা শামীম ‘হত্যা’র প্রতিবাদে জাবিতে বিক্ষোভ

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Amendment of notification of Chhatra League leaders leaving the hall
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

ছাত্রলীগ নেত্রীদের হলত্যাগের বিজ্ঞপ্তি সংশোধন

ছাত্রলীগ নেত্রীদের হলত্যাগের বিজ্ঞপ্তি সংশোধন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হল। ফাইল ছবি
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হলে ছাত্রলীগের পদধারী শিক্ষার্থীদের হলত্যাগের নির্দেশ দেয়া বিজ্ঞপ্তি সমালোচনার মুখে সংশোধন করেছেন প্রাধ্যক্ষ। নতুন বিজ্ঞপ্তিতে তিনি উল্লেখ করেছেন, নিপীড়নে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের হলত্যাগ করতে হবে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হলে ছাত্রলীগের পদধারী শিক্ষার্থীদের হলত্যাগের নির্দেশ দেয়া বিজ্ঞপ্তি সংশোধন করেছেন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক লাভলী নাহার। নতুন বিজ্ঞপ্তিতে তিনি উল্লেখ করেছেন, নিপীড়নে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগ করতে হবে।

বৃহস্পতিবার বিকেলে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর সমালোচনার মুখে তিনি আগের নোটিশ প্রত্যাহার করে নতুন বিজ্ঞপ্তি দেন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘অত্র হলের নিপীড়নে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, তাদের আগামী ১৯.০৯.২০২৪ তারিখ রাত ৮টার আগে হল ত্যাগ করার নির্দেশ দেয়া হল। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

এর আগে গত ১৪ সেপ্টেম্বর ওই হলে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আদেশক্রমে জানানো যাচ্ছে যে, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হলের ছাত্রী নিপীড়ক ও ছাত্রলীগের পোস্টেড (পদধারী) নেত্রীবৃন্দকে আগামীকাল (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টার মধ্যে হলত্যাগ করার নির্দেশ দেওয়া হলো।’

নোটিশ জারির পর ছাত্রলীগ নেত্রীদের কক্ষে গিয়ে তাদেরকে বের হতে বলেন প্রাধ্যক্ষ। নির্দেশ অমান্য করলে পুলিশ দিয়ে হল থেকে বের করে দেয়ার হুমকিও দেন তিনি। এ অবস্থায় বিপাকে পড়েছেন আবাসিক ছাত্রলীগ নেত্রীরা।

তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, এ ধরনের কোনো আদেশ দেয়া হয়নি। আবাসিক হলগুলোতে শৃঙ্খলা ফেরাতে হলে অবস্থানরত শুধু অনাবাসিক ও অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম শেষ হওয়া শিক্ষার্থীদের হলত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে হলের একাধিক বৈধ আবাসিক ছাত্রলীগ নেত্রী বলেন, ‘আমরা হলের বৈধ আবাসিক শিক্ষার্থী। আমাদের বিরুদ্ধে তো কোনো লিখিত অভিযোগ নেই। তাহলে আমাদেরকে কেন হলত্যাগের নির্দেশ দেয়া হবে? আমাদের অনেকেরই সামনে পরীক্ষা। কারও কারও পরীক্ষা চলমান। এ অবস্থায় হল প্রাধ্যক্ষ কক্ষে এসে নেমে যাওয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছেন। অন্যথায় আমাদেরকে পুলিশ দিয়ে নামিয়ে দেবেন।’

এ বিষয়ে প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক লাভলী নাহার বলেন, ‘অনেক ছাত্রলীগ নেত্রী ছিলেন যারা শিক্ষার্থী নিপীড়নের সঙ্গে জড়িত। আমরা তাদেরকে নেমে যেতে বলেছি, সব ছাত্রলীগ নেত্রীকে নয়। অনেকের বিরুদ্ধেই অভিযোগ আছে। আমরা তাদেরকে সাময়িকভাবে নেমে যেতে বলেছি। অভিযোগগুলো দ্রুত তদন্ত করে আমরা সমাধানমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ভুল প্রমাণ হবে, তারা তাদের আসন ফিরে পাবে।’

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আদেশক্রমে নোটিশ জারি করার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটা হল প্রশাসনেরই সিদ্ধান্ত। ভুল করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন লেখা হয়েছে। তবে আমি একটি সংশোধিত নোটিশ দিয়েছি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, ‘আমি প্রাধ্যক্ষ পরিষদের যে যে মিটিংয়ে উপস্থিত ছিলাম সেই মিটিংগুলোতে এ ধরনের (ছাত্রলীগের পদধারীদের হলত্যাগ) কোনো আলাপ হয়নি।’

আরও পড়ুন:
রাজশাহীতে রাবি ছাত্রলীগের সাবেক নেতাকে পিটিয়ে হত্যা
রাবির নতুন প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান
রাবির ২৫তম উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব
রাবিতে আবারও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৭ সদস্যের কমিটি  
যৌথ অভিযানে চার ঘণ্টা পর মুক্ত রাবি উপাচার্য

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Allegation of embezzlement of crores of rupees against head teacher in Kishoreganj

কিশোরগঞ্জে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

কিশোরগঞ্জে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ বিপদ ভঞ্জন বণিক কিশোরগঞ্জ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। কোলাজ: নিউজবাংলা
ব্যাংক স্টেটমেন্ট উদ্ধৃত করে স্কুলের একটি সূত্র জানায়, ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত প্রধান শিক্ষক ব্যাংক থেকে তুলেছেন তিন কোটি ৩৪ লাখ টাকা। এর মধ্যে শিক্ষকদের বেতন-ভাতা বাবদ প্রায় দেড় কোটি টাকা ছাড়া বাকি টাকা তিনি কী করেছেন, সে বিষয়ে শিক্ষকদের কেউ কিছু জানেন না।

কিশোরগঞ্জ শহরের ঐতিহ্যবাহী একটি স্কুলের সাবেক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে, তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ওই শিক্ষকের দাবি, তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার।

অভিযুক্ত এ শিক্ষকের নাম বিপদ ভঞ্জন বণিক। তিনি কিশোরগঞ্জ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পর শিক্ষার্থীরা বিপদ ভঞ্জনের অপসারণ দাবিতে আন্দোলনে নামেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৮ আগস্ট সাময়িক বরখাস্ত করা হয় তাকে।

এর আগে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ উল্লেখ করে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করে শিক্ষার্থীরা।

লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, শুধু চলতি শিক্ষাবর্ষেই শিক্ষার্থীদের ভর্তি ফরম বাবদ প্রায় সাড়ে সাত লাখ টাকা এবং একই সময়ে বিধিবহির্ভূতভাবে ষষ্ঠ শ্রেণিতে নরসুন্দা নামের নতুন শাখা খুলে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন প্রধান শিক্ষক।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে শ্রেণি শিক্ষকদের মাধ্যমে সেন্ট্রাল রসিদের মাধ্যমে আদায় করা প্রায় ১২ লাখ টাকা, যা ব্যাংকে জমা দেননি প্রধান শিক্ষক। বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতিজনিত জরিমানার টাকা প্রধান শিক্ষক নিজেই নিয়ে গেছেন।

অভিযোগে বলা হয়, স্কুলের জায়গায় দোকানপাট নির্মাণ করে অতিরিক্ত ব্যয় দেখিয়েও টাকা আত্মসাৎ করেছেন প্রধান শিক্ষক। এ ছাড়া একটি প্রতিষ্ঠানের দেয়া ৫০ লাখ টাকার ব্যাংকের স্থায়ী আমানতের লভ্যাংশ ২০১৬ সাল থেকে গরিব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দ থাকলেও এখন পর্যন্ত কেউ এর সুফল পায়নি।

ব্যাংক স্টেটমেন্ট উদ্ধৃত করে স্কুলের একটি সূত্র জানায়, ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত প্রধান শিক্ষক ব্যাংক থেকে তুলেছেন তিন কোটি ৩৪ লাখ টাকা। এর মধ্যে শিক্ষকদের বেতন-ভাতা বাবদ প্রায় দেড় কোটি টাকা ছাড়া বাকি টাকা তিনি কী করেছেন, সে বিষয়ে শিক্ষকদের কেউ কিছু জানেন না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্কুলের একাধিক শিক্ষক অভিযোগ করেন, প্রায় সব খাত থেকেই প্রধান শিক্ষক অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। শুধু তাই নয়, ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমেও অনেক টাকা তিনি পকেটস্থ করেছেন।

তাদের অভিযোগ, প্রধান শিক্ষক শুধু দুর্নীতিই করেননি, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসদাচরণও করেন। এ অবস্থায় তাকে আর কেউ চায় না।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক বিপদ ভঞ্জন বণিকের মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার।

আরও পড়ুন:
মিঠামইনে পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু
অস্থায়ী ভিত্তিতে সরকারি প্রাথমিকে ২০৮ প্রধান শিক্ষক নিয়োগ
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে বৃক্ষরোপণ 
বিলে মাছ ধরতে গিয়ে বজ্রপাতে দুজন নিহত 
প্রত্যয় স্কিম: বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীদের নাম প্রত্যাহার অনুমোদন

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Case against 36 people including Kubis former VC Proctor

কুবির সাবেক ভিসি-প্রক্টরসহ ৩৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা

কুবির সাবেক ভিসি-প্রক্টরসহ ৩৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা
কুমিল্লায় শিক্ষার্থীদের ওপর ১১ জুলাইয়ের হামলার ঘটনায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দায়ের হওয়া এই মামলায় ৩৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৫০-৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন ও সাবেক প্রক্টর ড. কাজী ওমর সিদ্দিকীসহ ৩৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের ওপর ১১ জুলাইয়ের হামলার ঘটনায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দায়ের হওয়া এই মামলায় অজ্ঞাতনামা ৫০-৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

বুধবার রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয় দেয়া মো. সাখাওয়াত হোসেন কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানায় এই মামলা করেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, হুকুমমতে বেআইনি জনতাবদ্ধে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করে সাধারণ জখম করা এবং ককটেল বিস্ফোরণ করে ত্রাস ও আতঙ্ক সৃষ্টির অপরাধে এই মামলা করা হয়েছে।

এই মামলায় সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএফএম আবদুল মঈন ছাড়াও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট চারজন শিক্ষকের নাম রয়েছে। তারা হলেন- সাবেক প্রক্টর ও ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. কাজী ওমর সিদ্দিকী, আইকিউএসি’র পরিচালক অধ্যাপক ড. রশিদুল ইসলাম শেখ, সহকারী প্রক্টর ও মার্কেটিং বিভাগের প্রভাষক আবু উবাইদা রাহিদ এবং সহকারী প্রক্টর ও নৃবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক অমিত দত্ত। তাদের মধ্যে অধ্যাপক ড. রশিদুল ইসলাম শেখ ১১ জুলাই ভারতে অবস্থান করছিলেন বলে জানা গেছে।

এছাড়া এই মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নামও রয়েছে। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন- কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা পরিষদের সভাপতি ডেপুটি রেজিস্ট্রার মো. জাকির হোসেন, সেকশন অফিসার রেজাউল ইসলাম মাজেদ, বিল্লাল হোসেন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী পরিষদের সভাপতি জসিম উদ্দিন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্লানিং দপ্তরের কম্পিউটার অপারেটর মো মহসিন, আইকিউএসি’র অফিস সহকারী কাম ডাটা প্রসেসর মো. জসিম, হিসাব বিভাগের অফিস সহকারী কাম ডাটা প্রসেসর মো. ফখরুল ইসলাম, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা প্রহরী মিজানুর রহমান প্রমুখ।

এই মামলায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের অনেক নেতাকর্মীকেও বিবাদী করা হয়েছে।

বাদী সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘সমন্বয়কদের সিদ্ধান্তক্রমে আমি মামলা দায়ের করেছি।’

এ ব্যাপারে সাবেক প্রক্টর ড. কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, ‘আমি মামলার বিষয়টি জানতে পেরেছি। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই এ মামলা দেয়া হয়েছে। মামলার বিষয়ে আমি আইনি পদক্ষেপ নেব।’

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস এম আরিফুর রহমান বলেন, ‘৩৬ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ৫০-৬০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি মামলা হয়েছে। বিষয়টির তদন্ত চলছে। এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানীত শিক্ষকদের নামও রয়েছে। আমাদের ঊধ্বর্তন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা মোতাবেক তদন্ত করা হবে।’

এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ফোনকলে তাকে পাওয়া যায়নি।

আরও পড়ুন:
মামলায় শুধু দোষীদের নাম দিন: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
আরেক হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হলো সাবেক বিচারক মানিককে
বৈদেশিক মুদ্রা আইনের মামলায় ৫ দিনের রিমান্ডে সালমান ও আনিসুল
সাবেক তিন সিইসি ও কমিশনারদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা
৮৩ মিলিয়ন ডলার পাচারের অভিযোগে সালমানের নামে ১৭ মামলা

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Three more universities got new vice chancellors

নতুন উপাচার্য পেল আরও তিন বিশ্ববিদ্যালয়

নতুন উপাচার্য পেল আরও তিন বিশ্ববিদ্যালয় বাঁ থেকে- অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভুঁইয়া, অধ্যাপক ড. এস এম হাসান তালুকদার ও অধ্যাপক ড. মো. শামছুল আলম। কোলাজ: নিউজবাংলা
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভুঁইয়া, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক ড. এস এম হাসান তালুকদার ও ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক ড. মো. শামছুল আলমকে উপাচার্য নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

আরও তিনটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ দিয়েছে সরকার। সেগুলো হলো- বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় ও ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়।

বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ থেকে জারি করা পৃথক প্রজ্ঞাপনে তাদের নিয়োগ দেয়া হয়।

রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে তিনটি প্রজ্ঞাপনে সই করেছেন উপ-সচিব মো. শাহীনুর ইসলাম।

প্রজ্ঞাপনের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভুঁইয়া। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির অ্যানিমেল ব্রিডিং অ্যান্ড জেনেটিক্স বিভাগের অধ্যাপক। আগামী চার বছরের জন্য তাকে ভিসি পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তবে রাষ্ট্রপতি ও আচার্য প্রয়োজনে যে কোনো সময় তার নিয়োগ বাতিল করতে পারবেন।

সিরাজগঞ্জের রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য পদে নিয়োগ পেয়েছেন অধ্যাপক ড. এস এম হাসান তালুকদার। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক। প্রেষণে আগামী চার বছরের জন্য তাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

এছাড়া ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন অধ্যাপক ড. মো. শামছুল আলম। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক। তাকে প্রেষণে চার বছরের জন্য উপাচার্য পদে নিয়োগ দিয়েছে সরকার।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর শিক্ষার্থীদের রোষের মুখে পড়েন রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগ পাওয়া দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যরা। অনেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন। অনেকে আবার শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ-আল্টিমেটামের মুখে পদত্যাগ করেন।

ফলে দেশের ৪৫টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যশূন্য হয়ে পড়ে। এতে স্থবির হয়ে পড়ে উচ্চশিক্ষা কার্যক্রম। সেই স্থবিরতা কাটাতে অন্তর্বর্তী সরকার পর্যায়ক্রমে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ দিচ্ছে।

প্রথমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাময়িকভাবে উপাচার্য নিয়োগ দেয়া হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে রাজশাহী, জাহাঙ্গীরনগর, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়েও সাময়িকভাবে উপাচার্য নিয়োগ করা হয়। সে ধারাবাহিকতায় জগন্নাথ, জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম, শেরেবাংলা কৃষি, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, বেগম রোকেয়া, মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ আরও কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ দিয়েছে সরকার।

এখনও ২০টির বেশি বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যশূন্য। সেগুলোতেও উপাচার্য নিয়োগে কাজ করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

আরও পড়ুন:
রাবির ২৫তম উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব
নতুন উপাচার্য পেল পাঁচ বিশ্ববিদ্যালয়
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত হলেন লুৎফে সিদ্দিকী
বিএসএমএমইউর প্রো-ভিসি হলেন লিভার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহীনুল
ঢাবির নতুন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) সায়েমা হক

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Protest against the killing of Chhatra League leader Shamim in Jabi

ছাত্রলীগ নেতা শামীম ‘হত্যা’র প্রতিবাদে জাবিতে বিক্ষোভ

ছাত্রলীগ নেতা শামীম ‘হত্যা’র প্রতিবাদে জাবিতে বিক্ষোভ জাবি ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম মোল্লাকে হত্যার অভিযোগে বৃহস্পতিবার ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেন। কোলাজ: নিউজবাংলা
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, ‘প্রক্টর অফিসে জিজ্ঞাসাবাদের সময় তাকে আশঙ্কাজনক মনে হয়নি। এমনকি তিনি নিজে হেঁটে পুলিশের গাড়িতে উঠেছেন। এরকম আসামিকে হসপিটালে নিয়ে যাওয়ার পথে মারা যাওয়ার বিষয়টি রহস্যজনক।’

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম আহমেদ ওরফে শামীম মোল্লাকে হত্যার অভিযোগ এনে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিচার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল করেন তারা। মিছিলটি শহীদ মিনার চত্বর থেকে শুরু হয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

সমাবেশে বক্তারা তিনটি দাবি তুলে ধরেন। তা হলো- শামীম মোল্লা হত্যায় জড়িতদের বিচার করতে হবে, স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে ১৫ ও ১৭ জুলাই শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বাদী হয়ে মামলা করতে হবে এবং ক্যাম্পাসে ছাত্র-শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রাজনীতি বন্ধ করতে হবে।

সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আরিফ সোহেল বলেন, ‘শামীম মোল্লা সন্ত্রাসী ছিলেন। ১৫ জুলাই হামলায় নেতৃত্ব দিয়েছেন। তবে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা কোনোভাবেই কাম্য নয়। ছাত্রলীগের ট্যাগ দিয়ে মারধর করার জন্য আমার ভাইয়েরা-বোনেরা জীবন দেয় নাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘তিনি (শামীম) মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত ছিলেন। তার সাথে জড়িত ক্যাম্পাসের কিছু নাম তিনি বলেছেন। তাকে মারলে কার লাভ হতো, কার ক্ষতি হতো– এই বিষয়গুলো খতিয়ে দেখার অবকাশ আছে। আমরা এর সাথে জড়িত সবার শাস্তির দাবি করছি।’

সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী জাহিদুর রহমান বলেন, ‘যারা লাশের রাজনীতির সাথে জড়িত তারা গতকাল (বুধবার) এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। গত ১৫ জুলাই ও ১৭ জুলাই হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কোনো আইনি পদক্ষেপ না নেয়ার ফল গতকালের হত্যাকাণ্ড। বর্তমান প্রশাসনের দূর্বলতাই এই হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী।’

তিনি আরও বলেন, ‘শামীম মোল্লাকে আটক ও মারধরের ঘটনায় একটি বিশেষ দলের লোকজনকে দেখা গেছে৷ প্রক্টর অফিস কেন তাদেরকে ঢুকতে দেয়া হলো? কেন এই অছাত্ররা এখনও ক্যাম্পাসে আসে? নতুন প্রশাসনকে এর জবাবদিহি করতে হবে। সেই সাথে এর পেছনে বৃহৎ কোনো ষড়যন্ত্র আছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে হবে।’

এর আগে শামীম মোল্লার মৃত্যুকে ‘বিচারবহির্ভূত হত্যা’ উল্লেখ করে বিক্ষোভ মিছিল করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী। বুধবার রাত ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকা থেকে এই বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে যায়। সেখানে উপাচার্যের কাছে দোষীদের শাস্তির দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।

সেখানে অর্থনীতি বিভাগের ৪৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী প্রাপ্তি তাপসী বলেন, ‘আমাদের ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের একজন সাবেক নেতাকে দুদফায় গণপিটুনি দেয়ার পর তার মৃত্যু হয়। বিচারবহির্ভূত যেকোনো হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে আমরা। কেউ যদি অপরাধ করে তাহলে তাকে রাষ্ট্রীয় আইনে শাস্তি দেয়া হোক।’

বুধবার বিকেলে ক্যাম্পাসে একদল শিক্ষার্থী ছাত্রলীগের সাবেক নেতা শামীম আহমেদ ওরফে শামীম মোল্লাকে পিটিয়ে আহত করেন। শামীম জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এবং আশুলিয়া ইউনিয়নের কাঠগড়া এলাকার মোল্লাবাড়ীর ইয়াজ উদ্দিন মোল্লার ছেলে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বুধবার বিকেলে শামীম বিশ্ববিদ্যালয়ের জয়বাংলা ফটকসংলগ্ন একটি দোকানে অবস্থান করছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী সেখানে গিয়ে তাকে আটক করে মারধর করেন। খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে নিরাপত্তাকর্মীদের সহায়তায় তাকে নিরাপত্তা শাখায় নিয়ে যায়। পরে প্রক্টরিয়াল টিমের খবরে আশুলিয়া থানা-পুলিশের একটি দল নিরাপত্তা শাখায় আসে। এ সময় পুলিশ ও প্রক্টরিয়াল টিম শামীমকে ১৫ জুলাই রাতে উপাচার্যের বাসভবনে হামলার ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। পরে তাকে আশুলিয়া থানা-পুলিশে সোপর্দ করা হয়।

আহত শামীমকে সাভারের গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে বুধবার রাত ১০টার দিকে সেখানে তিনি মারা যান বলে জানিয়েছেন আশুলিয়া থানার পরিদর্শক মো. আবু বকর সিদ্দিক।

ওই হাসপাতালের চিকিৎসক সেলিমুজ্জামান বলেন, ‘তাকে পৌনে ১০টার দিকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। পরীক্ষা করে জানতে পারি, উনি মারা গেছেন। মূলত উনি আগেই মারা গিয়েছিলেন।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, ‘প্রক্টর অফিসে জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় তাকে আশঙ্কাজনক মনে হয়নি। এমনকি তিনি নিজে হেঁটে পুলিশের গাড়িতে উঠেছেন। এরকম আসামিকে হসপিটালে নিয়ে যাওয়ার পথে মারা যাওয়ার বিষয়টি রহস্যজনক।’

আরও পড়ুন:
ঢাবির হলে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা তদন্তে কমিটি
ঢাবির হলে চোর সন্দেহে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় হচ্ছে মামলা  
জাবিতে দুই উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ নিয়োগ
রাজশাহীতে রাবি ছাত্রলীগের সাবেক নেতাকে পিটিয়ে হত্যা

মন্তব্য

বাংলাদেশ
In Meherpur 4 days of rain caused crop damage of about 5 thousand hectares 

মেহেরপুরে ৪ দিনের বৃষ্টিতে প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি 

মেহেরপুরে ৪ দিনের বৃষ্টিতে প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি  মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ছাতিয়ান মাঠে বৃষ্টিতে ফসলের অবস্থা। কোলাজ: নিউজবাংলা
গাংনী উপজেলার কৃষক মামুন আলী বলেন, ‘আমার চার বিঘা জমিতে মরিচের আবাদ ছিল। গাছগুলো থেকে কেবল সপ্তাহখানেক হবে মরিচ সংগ্রহ করা শুরু করেছি। এমন সময় টানা চার দিনের বৃষ্টিতে জমিতে পানি জমে গাছের গোড়া সব ডুবে গেছে।’

মেহেরপুরে টানা চার দিন বৃষ্টি শেষে রৌদ্রোজ্জ্বল আবহওয়ায় দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাওয়া মাঠের ফসল।

জেলায় অনেক ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গিয়েছিল। পানি কমে যাওয়ায় বতর্মানে দেখা মিলেছে জমিতে থাকা ফসলের, যার অধিকাংশই নষ্ট হয়ে গেছে।

বৃষ্টিতে জেলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে উঠতি সবজির।

কৃষকরা জমি থেকে পানি বের করে, কীটনাশক ও ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করে ফসল রক্ষার্থে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, তবে তেমন একটা সুফল মিলছে না।

মেহেরপুরের তিনটি উপজেলার বিভিন্ন মাঠে গিয়ে দেখা যায়, পানিতে নুয়ে পড়েছে ধানক্ষেত, ভেঙে পড়েছে কলা, পেঁপে, করলা, চিচিঙ্গা, শসা, ওল, লাউয়ের গাছ। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে কাঁচামরিচ, মাসকলাই ও গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের।

কৃষকদের ভাষ্য, উঠতি বাঁধাকপি, ফুলকপি, মরিচের ক্ষেত থেকে পানি নেমে গেলেও রোদ ওঠার সঙ্গে সঙ্গে পচন ধরার আশঙ্কা রয়েছে। এ সবজিগুলো আর ঘরে উত্তোলন করতে পারবেন কি না, তা নিয়ে শঙ্কায় আছেন তারা। এতে বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়তে হবে।

জমি থেকে পানি বের করে কীটনাশক ও ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করে ফসল বাঁচানোর চেষ্টা করছেন অধিকাংশ কৃষক। তারপরও চিন্তার ভাঁজ তাদের কপালে।

কৃষকরা ফসল বাঁচাতে কতটুকু সফল হবেন, তা নিয়ে রয়েছে শঙ্কা। আবার রয়েছে ফলন বিপর্যয়ের শঙ্কা।

জেলা কৃষি বিভাগের প্রাথমিক ধারণা, মেহেরপুর জেলায় ৪২ হাজার হেক্টর ফসলি জমির মধ্যে চার হাজার ৮৭২ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

গাংনী উপজেলার কৃষক মামুন আলী বলেন, ‘আমার চার বিঘা জমিতে মরিচের আবাদ ছিল। গাছগুলো থেকে কেবল সপ্তাহখানেক হবে মরিচ সংগ্রহ করা শুরু করেছি। এমন সময় টানা চার দিনের বৃষ্টিতে জমিতে পানি জমে গাছের গোড়া সব ডুবে গেছে।

‘আর গত দুই দিন বৃষ্টি বন্ধ হয়েছে ঠিকই, তবে জমির অধিকাংশ গাছ মরে যেতে শুরু করেছে। এখন যে অবস্থা জমির তিন ভাগ গাছ মরে যাবে।’

আরেক কৃষক আবদুস সালাম বলেন, ‘এক বিঘা জমিতে ফুলকপির চাষ করেছিলাম। সপ্তাহ দেড়েকের মধ‍্যেই কপি বাজারে তুলতে পারতাম। অথচ টানা বৃষ্টিতে কপির জমিতে পানি জমে যাওয়ায় সব গাছ নিস্তেজ হয়ে মরতে শুরু করেছে।’

কলাচাষি কামাল হোসেন বলেন, ‘আমার চাষিদের কাছ থেকে ২০ বিঘা কলার বাগান কেনা আছে। টানা চার দিনের বৃষ্টির সাথে বাতাস থাকায় গাছের গোড়া নরম হয়ে বাতাসে সব গাছ নুয়ে পড়েছে মাটিতে। ফলে এ বছর লোকসানে পড়তে হবে।’

ধানচাষি গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘আমি ধান কেটে জমিতেই সারিবদ্ধ করে রাখছিলাম। জমির অর্ধেক ধান কাটা হয়েছে। এমন সময় শুরু হয় বৃষ্টি, যা চলে টানা চার দিন।

‘জমিতে পানি জমায় সব ধান তলিয়ে যায়। এখন পানি নামলেও ধানের সব গাছ বের হয়ে গেছে।’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মেহেরপুর জেলার উপপরিচালক বিজয় কৃষ্ণ হালদার জানান, দুই-তিন দিন পর ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা সম্ভব হবে।

জমি থেকে পানি বের করে দেয়ার পরামর্শের পাশাপাশি এ সময়ে ক্ষেতে সার ও কীটনাশক প্রয়োগ না করার পরামর্শ এ কর্মকর্তার।

এ অঞ্চলের আবহওয়ার তথ‍্য নির্ণয়কারী চুয়াডাঙ্গা আবহওয়া অফিসের কর্মকর্তা রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘এ অঞ্চলে বিগত চার দিনে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ২৩৮ মিলিমিটার, তবে আগামী দুই-এক দিনে আপাতত বৃষ্টির কোনো সম্ভাবনা নেই।’

আরও পড়ুন:
দেশের কোথাও কোথাও অতি ভারি বৃষ্টির আভাস
বৃষ্টি: কক্সবাজারে তিন মরদেহ উদ্ধার, ৭০ জেলে নিখোঁজ
গাংনীতে সাপের দংশনে স্কুলছাত্রের মৃত্যু 
হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে সব বিভাগে
ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টি হতে পারে ৬ বিভাগে

মন্তব্য

p
উপরে