উদ্ভাবনের পর ছয় বছর পেরিয়েছে, এখনও বাণিজ্যিকভাবে বাজারে আসেনি পাট থেকে তৈরি পলিথিন ব্যাগ, যার নাম দেয়া হয়েছে ‘সোনালি ব্যাগ’।
পরিবেশবান্ধব এই ব্যাগের বাণিজ্যিক উৎপাদনের জন্য একটি পাইলট প্রকল্প নেয়া হয়েছিল। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে অনেক আগেই। ব্যাগের সীমিত উৎপাদন সম্ভব হয়েছে কেবল। এই অবস্থায় প্রকল্পের সময় আরও এক বছর বাড়ানো হয়; সে মেয়াদও শেষ হয়েছে বছরখানেক আগে।
কিন্তু সোনালি ব্যাগ বাজারে আসবে কবে? আদৌ কি তা আসবে? এ ব্যাপারে বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের (বিজেএমসি) কোনো কর্মকর্তা নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছেন না।
এ পরিস্থিতিতে ৬ মার্চ রোববার পালিত হচ্ছে জাতীয় পাট দিবস। ‘সোনালি আঁশের সোনার দেশ, পরিবেশবান্ধব বাংলাদেশ’- এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে এবার পালিত হচ্ছে দিবসটি।
নির্ভরযোগ্য বিকল্পের অভাবে বাজার সয়লাব নিষিদ্ধ পলিথিনে। মাঝে হাতে ঝুলিয়ে ব্যবহার উপযোগী পলিথিন ব্যাগ বন্ধ ছিল। এখন সেই ব্যাগও বাজারে ফেরত এসেছে। কাঁচাবাজার, মুদি দোকান, শপিং মল, চেইন শপ—সব জায়গায় পলিথিনের ব্যবহার বাড়ছে। পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর এই পণ্য নিয়ন্ত্রণে মাঝে মাঝে অভিযান চালানো হয়, কিন্তু তাতে পলিথিনের ব্যবহার কমেনি।
বাংলাদেশে পলিথিন নিষিদ্ধ হয় ২০০২ সালে। পরিবেশবিদরা বলছেন, আইনের প্রয়োগ ও বাস্তবায়নের ব্যর্থতার কারণেই পলিথিন থেকে মুক্তি মিলছে না। শুধু বাংলাদেশ নয়, পলিথিন নিয়ে চিন্তিত সারা বিশ্ব। প্রতিদিন লাখ লাখ টন পলিব্যাগ ব্যবহৃত হচ্ছে, বর্জ্য হিসেবে তা পরিবেশ দূষণ করছে।
এই পরিস্থিতিতে সারা বিশ্বের জন্যই ক্ষতিকর পলিথিনের নির্ভরযোগ্য বিকল্প ভাবা হয়েছিল পাটের তৈরি পচনশীল সোনালি ব্যাগকে। এটি উদ্ভাবন করেন বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের (বিজেএমসি) বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা মোবারক আহমেদ খান, ২০১৬ সালে। এটি একটি সেলুলোজভিত্তিক বায়োডিগ্রেডেবল বায়োপ্লাস্টিক, যা প্লাস্টিক ব্যাগের বিকল্প। পাট থেকে সেলুলোজ সংগ্রহ করে তা দিয়ে এ ব্যাগ তৈরি করা হয়। এটি দেখতে সাধারণ পলিথিনের মতোই, তবে তা পচনশীল।
বাণিজ্যিকভাবে বাজারে আসার আগেই ‘সোনালি ব্যাগ’ দেশে-বিদেশে সাড়া ফেলেছিল। ব্যাগটি বাজারজাত করতে ২০১৮ সালে একটি পাইলট প্রকল্প নেওয়া হয়। তবে সেই ব্যাগ ছয় বছরেও বাণিজ্যিকভাবে বাজারে আনা যায়নি।
ঢাকার ডেমরার শীতলক্ষ্যা নদীর পশ্চিম তীরে সরকারি পাটকল লতিফ বাওয়ানী জুট মিল। সেখানেই সোনালি ব্যাগ তৈরির কারখানা। ২০১৯ সালের ৭ এপ্রিল বাংলাদেশ জলবায়ু ট্রাস্ট ফান্ড থেকে ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয় এই ব্যাগ উৎপাদনের জন্য। ওই টাকা দিয়ে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও রাসায়নিক দ্রব্য কেনা হয়েছে। বর্তমানে হাজারখানেক সোনালি ব্যাগ উৎপাদিত হচ্ছে প্রতিদিন। প্রতিটি ব্যাগ ১০ টাকা দামে শুধু মতিঝিলে অবস্থিত বিজেএমসির কার্যালয় থেকে কেনা যায়। এ ছাড়া বিভিন্ন দূতাবাসে নমুনা হিসেবে পাঠানো হয় এ ব্যাগ।
চার বছর আগে বাংলাদেশি বিজ্ঞানী মোবারক আহমেদ খান জানিয়েছিলেন, পৃষ্ঠপোষকতা পেলে তিনি খুব দ্রুতই এ ব্যাগের বাণিজ্যিক উৎপাদনে যেতে পারবেন। কিন্তু সেই পৃষ্ঠপোষকতা মেলেনি, তাই বাজারজাত করাও সম্ভব হচ্ছে না।
উদ্ভাবক মোবারক আহমেদ এখন বলছেন, সোনালি ব্যাগ বাজারজাত করতে আরও ৩৫০ থেকে ৪০০ কোটি টাকা প্রয়োজন। সরকারের কাছে এই টাকা চেয়ে আবেদনও করা হয়েছে। পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোক্তাও খুঁজছেন তিনি।
বিজেএমসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাণিজ্যিকভাবে সোনালি ব্যাগ বাজারে আনার ক্ষেত্রে মূল জটিলতা এখন একটি স্বয়ংক্রিয় (অটোমেটেড) ব্যাগ সিলিং মেশিন কেনা; আর দরকার বড় আকারের অর্থায়ন।
মোবারক আহমেদ খান শনিবার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পাইলট প্রকল্পে টার্গেট ছিল এক লাখ ব্যাগ উৎপাদন করা। তা সম্ভব হয়নি স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে ব্যাগ সিলিং মেশিনের অভাবে। এখন ২৪ ঘণ্টা যন্ত্র চালিয়ে ৯০ হাজার ব্যাগ উৎপাদন করা যায়। বেসরকারি উদ্যোক্তারা যদি বিনিয়োগ করেন, তাহলে এটা আরও দ্রুত বাণিজ্যিক আকারে করা সম্ভব হবে।’
তিনি বলেন, ‘এই ব্যাগ বাণিজ্যিকভাবে বাজারে আনার জন্য যা যা করা লাগে, সরকারি অর্থায়ন থেকে শুরু করে বেসরকারি উদ্যোক্তা– কোনো কিছুতেই বাধা নেই। আমরা এখন সেমি আকারে (মাঝারি) বাজারজাত করার জন্য ১৫ থেকে ২০ টন উৎপাদনের লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছি। আর এ জন্যই প্রয়োজন ৩৫০ থেকে ৪০০ কোটি টাকা।’
সরকারের কাছে অর্থ চেয়েছেন কি না, জানতে চাইলে এই বিজ্ঞানী বলেন, ‘চাওয়া হয়েছে। সরকারের সদিচ্ছার ঘাটতি নেই। সরকারও বুঝেছে, বিদেশে সোনালি ব্যাগের চাহিদা অনেক। কিন্তু কেন টাকাটা দিচ্ছে না, সেটাই বুঝতে পারছি না।
‘বাণিজ্যিকভাবে সোনালি ব্যাগ বাজারে আনার জন্য একটি স্বয়ংক্রিয় (অটোমেটেড) ব্যাগ সিলিং মেশিন কেনার জন্য চীনে অর্ডার দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেটা আসলেই হবে না, পুরোদমে উৎপাদনের জন্য আরও অর্থের প্রয়োজন। আমার এখন মনে হচ্ছে, বেসরকারি খাত বিনিয়োগ না করলে সোনালি ব্যাগ বাজারে আনা কঠিন হয়ে পড়বে।’
মোবারক আহমেদ বলেন, ‘পরিবেশের বিষয়টি মাথায় রেখে সারা বিশ্বে পাটের তৈরি সোনালি ব্যাগের প্রচুর চাহিদা দেখা দিয়েছে। আমরা যদি বিপুল বিনিয়োগের মাধ্যমে এই ব্যাগ উৎপাদন করতে পারতাম, তাহলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে তৈরি পোশাকের মতো বিশ্ববাজারের বড় বাজার দখল করতে পারতাম। এদিকে সবাই কেন মনোযোগ দিচ্ছে না, সেটাই আমি বুঝতে পারছি না।’
সোনালি ব্যাগের বাণিজ্যিক উৎপাদনের বিষয়ে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর মোবাইলে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। এসএমএস পাঠালেও কোনো উত্তর দেননি।
বাজার সয়লাব পলিথিনে
শনিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, শেওড়াপড়া, শান্তিনগর বাজার, হাতিরপুল বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পাটজাত মোড়কের বদলে প্লাস্টিক বা পলিথিনের বস্তায় আটা, ময়দা, চিনি, ডাল, আদা, রসুন বাজারজাত করা হচ্ছে। তবে কিছু চালের দোকানে পাটের বস্তা ব্যবহার করতে দেখা গেছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, পলিথিনের কারণে পরিবেশের ক্ষতি হোক, তারা তা চান না। কিন্তু পলিথিনের মতো সহজলভ্য কোনো পণ্য বাজারে নেই।
শেওড়াপাড়া বাজারে কথা হয় চাকরিজীবী লতিফুর রহমানের সঙ্গে। তার হাতে হাতওয়ালা পলিব্যাগে কমলা। পলিথিনের দিকে ইঙ্গিত করতেই বললেন, ‘দোকানদার দিলে কী করব। চারদিকেই তো পলিথিন আর পলিথিন। বন্ধ করার ব্যবস্থা তো দেখি না।’
একই প্রশ্ন করা হলে শেওড়াপাড়া বাজারের মাছ বিক্রেতা শিপন বলেন, ‘কী করব, পলিথিন ছাড়া তো অন্য কিছুতে মাছ ভরে ওজন করা যায় না।’
দৈনিক পলিথিনের হিসাব
২০০২ সালে দেশে পলিথিন নিষিদ্ধের পর বিকল্প হিসেবে সে সময় কাগজের ঠোঙার ব্যবহার কিছুটা বেড়েছিল। কিন্তু পলিথিনের চাপে টিকতে পারেনি কাগজের ঠোঙাও। সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশও ২০ বছর ধরে পলিথিন দূষণ নিয়ে চিন্তিত। ঢাকার জলাবদ্ধতার অন্যতম কারণ হিসেবে পলিথিনকে চিহ্নিত করা হয়। কিন্তু এসব নিয়ে কেবল আলোচনাই সার।
বাংলাদেশে প্রতিদিন কী পরিমাণে পলিথিন উৎপাদিত ও ব্যবহৃত হয় এবং শেষে বর্জ্য হিসেবে নালা-নর্দমা, খালবিলে কী পরিমাণ জমা হয়– এ নিয়ে সরকারি কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য বা হিসাব পাওয়া যায়নি। তবে বিশ্বের ১৯৩টি দেশের প্ল্যাটফর্ম আর্থ ডে নেটওয়ার্কের ২০১৮ সালে করা ওই তালিকায় পলিথিন ও প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপাদনে সারা বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান দশম। প্রথমে আছে চীন, ভারত ১২তম অবস্থানে, পাকিস্তান ১৫তম ও মিয়ানমার ১৭তম অবস্থানে আছে।
‘প্লাস্টিক পলিউশন প্রিমিয়ার অ্যান্ড অ্যাকশন টুলকিট’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, যথাযথ ব্যবস্থাপনার অভাবে বাংলাদেশে প্রতি বছর ৭ লাখ ৯০ হাজার টন পলিথিন বর্জ্য জমা হয়। বাংলাদেশে একজন মানুষ দৈনিক ৪৩০ গ্রাম বর্জ্য তৈরি করে থাকে। এর মধ্যে ৮ শতাংশ তথা প্রায় ৩৫ গ্রাম প্লাস্টিক বর্জ্য। অর্থাৎ বছরে একজন মানুষ প্রায় ১৩ কেজি প্লাস্টিক বর্জ্য তৈরি করে।
ডেনমার্কের কোপেনহেগেনভিত্তিক সংস্থা ‘দ্য ওয়ার্ল্ড কাউন্টস’ বলছে, বিশ্বে প্রতি বছর পাঁচ লাখ কোটি পিস পলিথিন ব্যাগ ব্যবহৃত হয়। এর মাত্র ১ শতাংশ পুনর্ব্যবহারের জন্য প্রক্রিয়াজাত করা হয়; আর সমুদ্রে ফেলা হয় ১০ শতাংশ। এসব পলিব্যাগ ১০০ বছরেও পচে না, মাটির সঙ্গে মেশে না। ওই সংস্থার গতকাল সন্ধ্যার হিসাব বলছে, এ পর্যন্ত সারা বিশ্বে ৭৬ হাজার ৪৭৩ কোটি পিস পলিব্যাগ উৎপাদিত হয়েছে।
উদ্যোগ, অগ্রগতি নেই
২০১৫ সালে আওয়ামী লীগ সরকার বাজারে পলিথিন ব্যাগের ব্যবহার কমাতে আবারও উদ্যোগ নেয়। বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সে বছর ও ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে ধান, চাল, ভুট্টা, সার, চিনিসহ ১৯টি পণ্যের মোড়ক হিসেবে প্লাস্টিক বা পলিথিন ব্যবহার নিষিদ্ধ করে। তখন কিছু অভিযানও চালানো হয়। কিন্তু জনবল ও তদারকির অভাবে অভিযানের ধারাবাহিকতা রক্ষা করা হয়নি। ফলে সরকারের সে উদ্যোগের সুফল আর মেলেনি।
পলিথিন বন্ধে ২০১৫ সালের আগস্ট থেকে ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ২ হাজার ৮৭১টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়েছে। এসব অভিযানে মামলা করে ১০৪ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড এবং ২০ কোটি ৬০ লাখ ৯৩ হাজার ৬৮০ টাকা জরিমানা করা হয়। অভিযানগুলোতে ১ হাজার ২৩৬ টন পলিথিন ও প্লাস্টিকের দানা জব্দ করা হয়।
দরকার রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত
২০২০ সালের শুরুতে উচ্চ আদালত পলিথিন এবং একবার ব্যবহার উপযোগী প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার বন্ধের ব্যবস্থা নিতে এক বছর সময় বেঁধে দেন। ২০২১ সালের ৫ জানুয়ারি পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা ছিল। অধিদপ্তর আরও কিছুদিন সময় চেয়ে নেয় এবং ১০ ফেব্রুয়ারি তা আদালতে জমা দেয়। বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতিসহ (বেলা) ১১টি সংগঠনের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২০ সালের ৬ জানুয়ারি আদালত ওই আদেশ দেয়।
পলিথিন ঠেকাতে করণীয় জানতে চাইলে বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘লোকদেখানো ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করলে লাভ হবে না। নিয়মিত বাজার তদারকি, পলিথিনের বিকল্প বাজারে আনা, আইনের নিয়মিত প্রয়োগ ও শাস্তি নিশ্চিত করা– এই চার পদক্ষেপ দিয়েই পলিথিন বন্ধ করা সম্ভব। পাশাপাশি মানুষকে বোঝাতে হবে, পলিথিনের ক্ষতি কতটা গভীর।’
৫৫তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বুধবার সকালে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি সকাল ৬টা ১১ মিনিটে স্মৃতিসৌধের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
ওই সময় তিনি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে কয়েক মিনিট নীরবতা পালন করেন।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর একটি চৌকস দল তাকে রাষ্ট্রীয় সালাম জানায়। ওই সময়ে বিউগলে করুণ সুর বাজানো হয়।
শ্রদ্ধা নিবেদনকালে প্রধান বিচারপতি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টারা, তিন বাহিনীর প্রধান, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিদেশি কূটনীতিক এবং উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে প্রধান উপদেষ্টা স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেন।
পরে সর্বস্তরের জনগণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য জাতীয় স্মৃতিসৌধ উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন:চলতি বছরের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে একটি স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাষ্ট্রীয় অতিথিভবন যমুনায় এ ডাকটিকিট অবমুক্ত করা হয়।
এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব ড. মুশফিকুর রহমান ও ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এসএম শাহাবুদ্দিন।
প্রধান উপদেষ্টার গণমাধ্যম শাখা থেকে এমন তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতীয় পর্যায়ে নিজ নিজ ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সাত বিশিষ্ট ব্যক্তির হাতে ‘স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২৫’ তুলে দিয়েছেন।
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মঙ্গলবার সকালে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে দেশের সর্বোচ্চ জাতীয় বেসামরিক এ পুরস্কার প্রদান করেন তিনি।
এবার স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম (মরণোত্তর), সাহিত্যে মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ (মরণোত্তর), সংস্কৃতিতে নভেরা আহমেদ (মরণোত্তর), সমাজসেবায় স্যার ফজলে হাসান আবেদ (মরণোত্তর), মুক্তিযুদ্ধ ও সংস্কৃতিতে মোহাম্মদ মাহবুবুল হক খান ওরফে আজম খান (মরণোত্তর), শিক্ষা ও গবেষণায় বদরুদ্দীন মোহাম্মদ উমর এবং প্রতিবাদী তারুণ্যে আবরার ফাহাদ (মরণোত্তর)।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আবদুর রশীদ পুরস্কার বিতরণ পর্বটি সঞ্চালনা করেন। তিনি পুরস্কার বিজয়ীদের সাইটেশন পাঠ করেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস মঙ্গলবার স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২৫ তুলে দেবেন।
ওই দিন সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এ পুরস্কার দেওয়া হবে।
তথ্য অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে সাতজন বিশিষ্ট ব্যক্তি ২০২৫ সালের স্বাধীনতা পুরস্কার পাচ্ছেন।
গত ১১ মার্চ রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ পুরস্কারের জন্য মনোনীতদের তালিকার প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
যেসব ব্যক্তি এবার স্বাধীনতা পুরুস্কার পাচ্ছেন তারা হলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম (মরণোত্তর), সাহিত্যে মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ (মরণোত্তর), সংস্কৃতিতে নভেরা আহমেদ (মরণোত্তর), সমাজসেবায় স্যার ফজলে হাসান আবেদ (মরণোত্তর), মুক্তিযুদ্ধ ও সংস্কৃতিতে মোহাম্মদ মাহবুবুল হক খান ওরফে আজম খান (মরণোত্তর), শিক্ষা ও গবেষণায় বদরুদ্দীন মোহাম্মদ উমর এবং প্রতিবাদী তারুণ্যে আবরার ফাহাদ (মরণোত্তর)।
আরও পড়ুন:ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ৩ এপ্রিল নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. কামরুজ্জামান রবিবার যে প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেন, তাতে বলা হয়, ‘সরকার আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে ৩ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি ঘোষণা করল। ছুটিকালীন সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে।
‘তবে জরুরি পরিষেবা, যেমন: বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ও অন্যান্য জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, বন্দরসমূহের কার্যক্রম, পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট, ডাক সেবা এবং এ সংশ্লিষ্ট সেবা কাজে নিয়োজিত যানবাহন ও কর্মীগণ এই ছুটির আওতা বহির্ভূত থাকবে।’
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, ‘হাসপাতাল ও জরুরি সেবা এবং এ সেবার সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মীরা এই ছুটির আওতা-বহির্ভূত থাকবে। চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত চিকিৎসক ও কর্মীরা এবং ওষুধসহ চিকিৎসা সরঞ্জামাদি বহনকারী যানবাহন ও কর্মীগণ এই ছুটির আওতা বহির্ভূত থাকবে।
‘জরুরি কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত অফিসসমূহ এই ছুটির আওতা বহির্ভূত থাকবে। ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু রাখার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবে। আদালতের কার্যক্রমের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবেন।’
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, নারীর ক্ষমতায়নে সবার আগে পরিবার থেকে নারীকে সাহস দিতে হবে। যেকোনো সংকটে নারীর পাশে ঢাল হয়ে থাকতে হবে।
তিনি বলেন, পরিবার পাশে না থাকলে রাষ্ট্রের পক্ষে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়ে। পরিবার নারীকে সাহস দিলে রাষ্ট্রও নারীর পাশে থেকে সাহস জোগাতে পারে।
উপদেষ্টা বলেন, ‘নারীর প্রতিবন্ধকতা কখনও শেষ হয় না। সমাজে একটা গোষ্ঠী আছে, যারা নারীকে ক্ষমতায়িত করতে চায় না। দুর্বল নারীকে যত পছন্দ করে, সবলচিত্তের নারীকে তারা পছন্দ করে না। এটাই বাস্তবতা।’
আন্তর্জাতিক নারী দিবসকে (৮ মার্চ) সামনে রেখে জাতীয় বার্তা সংস্থা বাসসকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাতকারে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এসব কথা বলেন।
এবারের নারী দিবসের প্রতিপাদ্য ‘অধিকার, সমতা, ক্ষমতায়ন: নারী ও কন্যার উন্নয়ন’।
উপদেষ্টা বলেন, ‘একজন নারীকে দক্ষ ও যোগ্য করে গড়ে তোলা হলে সে দেশের কাজে ভূমিকা রাখতে পারে। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্র ও পরিবারের পাশাপাশি সমাজেরও দায় রয়েছে। নারীর চলার পথ পুরুষের পাশাপাশি নির্বিঘ্ন ও নির্ভরতার হতে হবে।’
তিনি বলেন, “নারী এখন যে অবস্থানে রয়েছে, সে অবস্থানে থেকে নারী বলে বিতর্কিত নয়, কাজে সে বিতর্কিত হোক, অদক্ষ বলে বিতর্কিত হোক, শুধু নারী বলেই ভূল, নারী বলেই অদক্ষ, এ কথাটা বলা যাবে না। আমি বলব ‘স্কাই ইজ দ্য লিমিট।
“তাই তার চিন্তার গন্ডিটাকে তার পারিপার্শ্বিকতার নেতিবাচক মনোভাবে আটকে না রেখে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে তাদের পাশে নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। অভিভাবককে বুঝতে হবে, ছেলে ও মেয়ে দুজনই পরিবারের সম্পদ। পরিবারের উচিত নারীকে ক্ষমতায়িত করা।”
আরও পড়ুন:চলতি বছর ব্যতিক্রমী কিছু মানুষ ও প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
এ বছর কারা ও কতজন এ পুরস্কার পাচ্ছেন, তা জানাননি উপদেষ্টা।
সচিবালয়ে রবিবার স্বাধীনতা পুরস্কার সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক শেষে তিনি উল্লিখিত বক্তব্য দেন।
উপদেষ্টা বলেন, কমিটি কিছু নাম সুপারিশ করেছে। চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য নামের তালিকা প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে পাঠানো হবে।
দেশের জন্য অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এ বছর ব্যতিক্রমী কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
ওই সময়ে উপস্থিত আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, এর আগে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়ার ক্ষেত্রে দলগত ও গোষ্ঠীগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতো। র্যাবের মতো বিতর্কিত প্রতিষ্ঠানকেও দেশের সর্বোচ্চ এ পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল।
এ বছর ১০ জনের কম ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য