চারদিকে নদীবেষ্টিত ছোট একটি দ্বীপ ঘেরা বেড়িবাঁধে। এর ভেতরে রয়েছে হাজার হাজার বিঘা কৃষিজমি। লোনাপানি তুলে সেখানে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে রপ্তানিযোগ্য চিংড়ি। লবণের আধিক্যে জন্মায় না কোনো খাদ্যশস্য, চাষ হয় না মিঠাপানির মাছও। দ্বীপটিতে নেই সুপেয় পানির ব্যবস্থা, যাতায়াতের ভালো রাস্তা। জমি থাকলেও ব্যবস্থাপনার অভাবে নিরন্ন হচ্ছেন ওই এলাকার কৃষকরা।
খুলনা শহর থেকে সড়ক পথে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে দ্বীপ এলাকাটি পাইকগাছা উপজেলার ঘ্যাংরাইল, গুনখালী ও শিবসা নদীর মোহনায় অবস্থিত। সেখানে লতা ও দেলুটি ইউনিয়নের মধুখালী, জোকারহুলা, রাধানগর, দিঘলিয়া, চকরিবকরি, জিরবুনিয়া, মাইনকিয়া, হানিরাবাদ, গোয়াসোবা, বাইনচাপরা, রেখামারি ও আসামনগর গ্রামের প্রায় ১৭ হাজার মানুষের বসবাস।
বিগত শতাব্দীর ৬০-এর দশকে দেশের উপকূলীয় এলাকার উন্নয়নে কোস্টাল এমব্যাংকমেন্ট প্রজেক্টের (সিইপি) আওতায় প্রবর্তন করা হয় পোল্ডার ব্যবস্থা। এ প্রকল্পের আওতায় দ্বীপটির পরিধিতে নির্মাণ করা হয় মাটির বেড়িবাঁধ।
চিহ্নিত করা হয় ২০ নম্বর পোল্ডার হিসেবে। উদ্দেশ্য ছিল কৃষিক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন করা। জোয়ারের লবণাক্ত পানি বিল ও বসতি এলাকায় প্রবেশ করতে না দেয়া, জলোচ্ছ্বাস ও বন্যা থেকে সেখানকার জনগোষ্ঠীকে রক্ষা করা। ফলে পরের ১৫ থেকে ২০ বছর ওই এলাকায় কৃষি উৎপাদন বেড়ে যায় কয়েক গুণ।
কৃষকদের ভাগ্যে সেই আশীর্বাদ খুব স্থায়ী হয়নি। আশির দশকে শুরু হয় বেড়িবাঁধ কেটে লোনাপানি তোলার কারবার। এলাকার প্রভাবশালীরা ওই এলাকায় শুরু করে চিংড়ি চাষ। ক্রমাগত লোনাপানির প্রাদুর্ভাবে এলাকায় দ্রুতই আসে বড়সড় পরিবর্তন, নষ্ট হয় পরিবেশ।
সবুজ গাছপালা, ফসল কয়েক বছরের মধ্যেই বিলীন হয়ে যায় লোনাপানিতে। এমনকি খাবারের পানির জন্য সেখানে হাহাকার চলতে থাকে। কয়েক দশক কেটে গেলেও তার উন্নতি হয়নি।
বিশাল এলাকাজুড়ে থাকা সেই বেড়িবাঁধ রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। তাদের কাছে অসংখ্য অভিযোগ গেলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি সংস্থাটি।
এলাকার হানিরাবাদ গ্রামে দেখা হয় ষাটোর্ধ্ব সোবহান তালুকদারের সঙ্গে। ক্ষেতে লোনাপানি তোলার কথা জানতে চাইলে তিনি অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন। পানিতে নেমে দেখিয়ে দেন কীভাবে প্রভাবশালীরা বেড়িবাঁধ কেটে মোটা পাইপ বসিয়ে লোনাপানি তুলছেন চিংড়ি ঘেরে।
চোখ মুছতে মুছতে সোবহান বলেন, ‘বড় বড় ঘেরের চিংড়ি চাষিরা জোর করে আমার জমি কেড়ে নিয়েছে। জমি উদ্ধার করতে না পেরে আমি আদালতে মামলা করেছি। লোনাপানি তোলা বন্ধের দাবিতে যত আন্দোলন হয়েছে, সব কটিতে সক্রিয় ছিলাম।
‘অনেকবার ঘের মালিকদের অপমানের শিকার হয়েছি। কিছুদিন আগেই এক ঘের মালিক বাজারের ওপর সবার সামনে আমার পা ভেঙে দেয়ার হুমকি দেয়। আমার ঘরের পাশে নালা কেটে তারা লবণ পানি তোলে।’
তিনি বলেন, ‘বর্ষায় জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যায় বাড়ি। কিছু বলতে গেলে আসে প্রাণনাশের হুমকি, গুমের ভয়। আমার দুই ছেলেকে এখানে রাখি না। ফ্যাসাদ এড়াতে তাদের অন্য জায়গায় পাঠিয়ে দিয়েছি।’
কৃষিজমিতে লোনাপানি উত্তোলনবিরোধী স্থানীয় আন্দোলনকর্মী হরিচাঁদ সরকার প্রায় পুরোটা সময় ছিলেন প্রতিবেদকের সঙ্গে। কিছু দূরে এগোতেই তিনি দেখিয়ে দেন বিশালাকৃতির একটি চিংড়ি ঘের। স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাতক্ষীরার বিঞ্চুনাথ ঘোষ প্রায় ২ হাজার বিঘার বেশি জমির ওই ঘেরের মালিক।
পাউবোর বাঁধ বেয়ে এগোতে এগোতে একের পর এক চোখে পড়ে সেই ঘেরের পানি উত্তোলনের দৃশ্য। বাঁধ খুঁড়ে ৮ থেকে ১০ হাত গভীরে বসানো হয়েছে কাঠের তৈরি বক্স। পাটা দিয়ে বক্স থেকে নদীর পানি তোলা নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।
এখন শুকনা মৌসুম। কিছুদিন আগে ঘেরের মাছ আহরণ শেষ হয়েছে। বাগদা চিংড়ির পোনা ছাড়ার সময় পার হচ্ছে। তাই ঘেরের নিয়ন্ত্রকরাও এ সময়ে ব্যস্ত লোনাপানি তুলতে। জোয়ারের সময়ে বক্সের পাটা খুলে পানি তোলা হচ্ছে। ভাটার সময়ে সে পাটা বন্ধ করে লবণ পানি আটকে রাখা হয়।
দীর্ঘ বাঁধ পরিদর্শনে চোখে পড়ে এমন বড় বড় ঘেরের শত শত পানি উত্তোলন ব্যবস্থা। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ওই এলাকার বড় বড় ঘেরগুলোর মালিক সবাই শহরে থাকেন। তাদের বিরুদ্ধে হাজার হাজার বিঘা কৃষিজমি দখলের অভিযোগ রয়েছে। অনেকে ইজারা নিলেও ঠিকমতো টাকা পরিশোধ করেন না এমন অভিযোগও অনেক।
স্থানীয় এক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, নিজেদের জমি কৃষকরা দখল নিতে চাইলে প্রভাবশালীরা তাদের ‘মাস্তান বাহিনী’ পাঠিয়ে হয়রানি-মারধর করেন। হাটে-বাজারে শুরু হয় হেনস্তা। অনেকে আবার বাড়িতে গিয়ে গুমের ভয় দেখান।
কৃষক হাসেম ঢালী বলেন, এলাকার উন্নয়ন না হওয়ায় অনেকে শহরমুখী হয়েছেন। তাদের জমি বড় ঘেরের মালিকরা ইজারা নেন। সেখানে লোনাপানি তুলে চিংড়ি চাষ করেন। লভ্যাংশের টাকা পান ঘেরের মালিকরা, তারাও থাকেন শহরে। আমাদের এলাকায় চাষাবাদের টাকা চলে যায় শহরে। আর অবহেলিত হয়ে থাকি আমরা। আমাদের গ্রামে কাজ নেই, ভালো রাস্তা নেই, ক্ষেতে ফসল নেই, শুধু আছে লবণ পানি।’
দ্বীপবেষ্টিত এলাকাটিতে রয়েছে অসংখ্য ছোট-বড় খাল। বর্ষার পানি সেসব খাল দিয়ে নামানোর জন্য আছে বেড়িবাঁধের ওপর পাউবোর স্লুইস গেট। অথচ সেই স্লুইচ গেট এখন নিয়ন্ত্রণ করেন ঘেরের মালিকরা। তারা সেগুলো দিয়ে জোয়ারের লোনাপানি তুলে নেন ঘেরে।
কৃষকরা জানান, স্থানীয়দের আন্দোলনের পর গেটের দায়িত্ব পাউবো বুঝিয়ে নিলেও এখনও প্রভাবশালীরা রাতে সেসব কপাট খুলে ঘেরে তোলেন লোনাপানি।
দেলুটি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রিপন কুমার মণ্ডল জানান, বর্তমানে ২০ নম্বর পোল্ডারের চারপাশে শত শত অবৈধ পাইপ ও জলকপাট তৈরি করা হয়েছে। গত বছর পাউবো থেকে সেগুলো শনাক্ত করে উচ্ছেদের জন্য সংশ্লিষ্টদের চিঠিও দিয়েছে, মাইকিং করে তা সরানোর নির্দেশ দিলেও সরাননি ঘের মালিকরা।
কৃষকরা চিংড়ি ঘেরের বিরোধী না। তারা লবণ পানির বিরোধিতা করেন। আমরাও চাচ্ছি এলাকা লবণমুক্ত হোক।
২০ নম্বর পোল্ডারের লতা ইউনিয়নের মধ্যে ২০০ বিঘার ঘের রয়েছে অজিয়ার রহমানের। এলাকাবাসীর অভিযোগের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘ঘের থাকায় মানুষ চিংড়ির ব্যবসা করতে পারছেন। আবার সেখানে ধানও চাষ করছেন। অল্প কিছু মানুষ, যাদের জমি নেই, তারাই ঘেরের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। একসময় ঘের করতে গিয়ে জোরজুলুম চলেছে, এখন সেটা নেই। ঘেরের মালিকরা নিজেদের জমির পাশাপাশি হয়তো অল্প কিছু জমি ইজারা নেন।’
খুলনা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলম বলেন, ‘ওই এলাকায় আমরা লবণ পানি তুলতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছি। বেড়িবাঁধ ছিদ্র না করতে বারবার মাইকিং করেছি। আমাদের চেষ্টার ত্রুটি নেই।’
খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য আক্তারুজ্জামান বাবু বলেন, ‘কৃষকরা চিংড়ি ঘেরের বিরোধী না। তারা লবণ পানির বিরোধিতা করেন। আমরাও চাচ্ছি এলাকা লবণমুক্ত হোক।’
উচ্চ আদালতের আদেশের বাস্তবায়ন নেই
২০০৯ সালে ঘূর্ণিঝড় আইলায় উপকূলীয় অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষতি হয়। ২০১০ সালে উপকূলীয় পাঁচ জেলায় অপরিকল্পিতভাবে চিংড়ির চাষ বন্ধ করতে উচ্চ আদালতে রিট করে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)। যার মধ্যে ছিল খুলনার নামও। প্রাথমিক শুনানি শেষে কৃষিজমিতে লবণ পানি ঢুকিয়ে চিংড়ি চাষ সীমিত রাখার আদেশ দেয় আদালত। ২০১২ সালে একই আদেশ বহাল রেখে দেয়া হয় চূড়ান্ত রায়। হাইকোর্টের সে রায় উপেক্ষা করে ২০ নম্বর পোল্ডারে এখনও করা হচ্ছে চিংড়ির চাষ। এতে ২৭ হাজার বিঘা জমির কৃষিব্যবস্থা শেষ হয়ে গেছে।’
হাইকোর্টের সে আদেশ লঙ্ঘিত হওয়ায় সম্প্রতি প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নোটিশ করেছেন বেলার আইনজীবী এস হাসানুল রানা। নোটিশে তিনি বলছেন, লবণের কবল থেকে কৃষিজমি বাঁচাতে উচ্চ আদালতের রায় আছে, প্রধানমন্ত্রীর সুস্পষ্ট নির্দেশনাও আছে। তা সত্ত্বেও ২০ নম্বর পোল্ডারের কৃষিজমি রক্ষায় উদ্যোগ না নেয়া গ্রহণযোগ্য নয়। এটা প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পরিপন্থি ও আদালত অবমাননার শামিল।’
এ বিষয়ে বেলার খুলনা বিভাগীয় সমন্বয়কারী মাহফুজুর রহমান বলেন, কৃষিজমিতে অপরিকল্পিতভাবে চিংড়ি চাষ বন্ধ করতে আদালতের চূড়ান্ত রায়ের পর খুলনার দাকোপ উপজেলার ৩২ নম্বর পোল্ডারে চাষ বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু অন্য এলাকায় কৃষিজমিতে লোনাপানি তুলে ঠিকই চিংড়ি চাষ হচ্ছে। আসলে আদালতের ওই আদেশ পালনে ব্যবস্থা নিতে অনীহা রয়েছে স্থানীয় প্রশাসনের।’
দেলুটি ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, লবণ পানির ঘের বন্ধ করতে ইউনিয়ন পরিষদে স্থায়ীয় ৮০ শতাংশ মানুষ আবেদন করেছিল। এরপর চলতি বছরে পরিষদ থেকে রেজ্যুলেশন করে ঘের বন্ধ করতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে আবেদন করা হয়।
পাইকগাছা উপজেলার ইউএনও মমতাজ বেগম বলেন, ‘এলাকার মানুষ লবণ পানির ঘের বন্ধ করতে জোটবদ্ধ হয়েছেন, তাই ঘেরমালিক ও তাদের নিয়ে কয়েক দফা বৈঠক করা হয়েছে। কোনো পক্ষই ছাড় দিতে রাজি নয়। এমন পরিস্থিতিতে কীভাবে সমস্যার সমাধান করা যায়, সে ব্যাপারে নতুন করে পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।’
আরও পড়ুন:অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের পর নিরাপত্তাহীনতায় পুনরায় বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময় গারো পাহাড় সীমান্তে মানব পাচারকারী চক্রের দুই সদস্যসহ ৭ জনকে আটক করেছে বিজিবি।
সোমবার (২৫ আগস্ট) সকাল পৌণে সাতটার দিকে শেরপুরের ঝিনাইগাতি উপজেলার নকশি সীমান্ত পথে নকশি ক্যাম্পের টহলরত বজিবি সদস্যরা তাদের আটক করে বিকেলে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
বিষয়টি ২৬ আগষ্ট সকালে বিজিবি পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়।
আটককৃতরা হলো মানব পাচারকারী চক্রের সদস্য নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বুরুঙ্গা গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে রমজান আলী (২৪) ও আসমত আলীর ছেলে রাসেল (১৬)। আটক অনুপ্রবেশকারীরা হলো, নড়াইল জেলার কালিয়া থানার বোমবাঘ গ্রামের শামীম শেখ (২৩), আফসানা খানম (২২), রুমা বেগম (৩২), মিলিনা বিশ্বাস (২৮) ও তিন বছর বয়সী শিশু কাশেম বিশ্বাস।
বিজিবি এক প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানায়, মাথাপিছু ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে গত ২৩ আগস্ট রাতের আধারে নালিতাবাড়ীর সীমান্ত এলাকা দিয়ে অবৈধ পথে নারী এবং শিশুসহ ৫ বাংলাদেশীকে ভারতে পাঠায় মানব পাচারকারী রমজান আলী ও রাসেল। কিন্তু ভারতীয় পুলিশের তৎপরতায় নিরাপত্তাহীনতায় পড়ে এ পাঁচ বাংলাদেশী। এ কারণে ২৫ আগষ্ট সোমবার সকাল পৌণে সাতটার দিকে ঝিনাইগাতির নকশি সীমান্তের কালিমন্দির এলাকা দিয়ে পুনরায় তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এসময় টহলরত বিজিবি সদস্যরা টের পেয়ে সবাইকে আটক করে। পরে মানব পাচারে জড়িত দুইজনের বিরুদ্ধে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে এবং অন্য ৫ জনের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের অপরাধে নালিতাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করা হয় এবং সবাইকে নালিতাবাড়ী থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ময়মনসিংহ বিজিবি’র ৩৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মেহেদী হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিজিবির পক্ষ থেকে এ ধরনের অভিযান চলমান থাকবে।
ঝালকাঠিতে গ্রাহকদের চাহিদা বিবেচনায় এনে ব্রান্ডশপ লোটো ও লি কুপার প্রতিষ্ঠানটি তাদের ১৩২তম ফ্লাগশিপ আউটলেট উদ্বোধন করেছে।
এক্সপ্রেস লেদার প্রোডাক্ট লিঃ এর ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর কাজী জাভেদ ইসলাম সহ কোম্পানির অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের সাথে নিয়ে ফিতা কেটে আউটলেটটি উদ্বোধন করেন ঝালকাঠির পুলিশ সুপার উজ্জ্বল কুমার রায়।
পৌর শহরের সাধনার মোড়ে মঙ্গলবার ২৬ আগষ্ট সকাল ১০টায় লোটো ও লি কুপারের ফ্ল্যাগশিপ আউটলেটদ্বয়ের শুভ উদ্বোধন আনুষ্ঠানে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন পর্যায়ের গ্রাহক ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
ঝালকাঠিতে কোম্পানীর এ যাত্রার প্রথম দিনে স্থানীয় ফ্যাশন সচেতন তরুণ তরুণীরা তাদের পছন্দের পন্য কালেকশন বেছে নিতে ভীর জমায়।
কোম্পানীর পক্ষ থেকে জানানো হয় প্রথম তিনদিনের প্রতিদিন প্রথম ৩০ জন পাবেন ৫০% ছাড়, ২য় ৩০ জন পাবেন ৪০% ছাড়, ৩য় ৩০ জন পাবেন ৩০% ছাড়, ৪র্থ ৩০ জন পাবেন ২০% ছাড় এবং তৎপরবর্তী সকল কাস্টমার পাবেন ১০% ছাড়। এই বিশেষ ছাড় ২৬শে আগষ্ট থেকে শুরু হয়ে ২৮ তারিখ পর্যন্ত চলমান থাকবে
নওগাঁয় সপ্তম শ্রেণীর এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে আটক রেখে ধর্ষণ মামলায় আ: সালাম (৩৮) নামে এক আসামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
রোববার (২৪ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে নওগাঁর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মেহেদী হাসান তালুকদার এ রায় দেন।
যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আ: সালাম সদর উপজেলার বর্ষাইল মধ্যপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ভিকটিম ওই শিক্ষার্থীর পরিবার পত্নীতলা উপজেলায় ভাড়া থাকতেন। ভাঙ্গারী ব্যবসার সুবাদে আসামী আ: সালামও পাশাপাশি একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। ভিকটিম মাদ্রাসায় যাওয়া আসার পথে আ: সালাম বিভিন্ন সময় কু-প্রস্তাব দিতো এবং রাস্তাঘাটে বিরক্ত করতো। বিষয়টি জানাজানি হলে আসামী আ: সালাম ওই ভিকটিমের পরিবারকে গালিগালাজ ও ভয়ভীতি দেখাতো। এরই একপর্যায়ে ২০২২ সালের ১১ জুলাই বিকেল তিনটার দিকে আসামী আ: সালাম একটি বাজার এলাকা থেকে ওই শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে নওগাঁ সদর উপজেলার ভবানীপুর দক্ষিন পাড়া গ্রামের মোজাফ্ফর রহমানের ভাড়া বাড়িতে আটক রেখে একাধিকবার ধর্ষণ করে। বিষয়টি বুঝতে পেরে ওই শিক্ষার্থীর বাবা পত্নীতলা থানায় অভিযোগ করলে র্যাব ওই বাড়ি থেকে আসামিকে গ্রেফতার ও মেয়েকে উদ্ধার করে। পরে তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে ঘটনার সত্যতা থাকায় আসামী আ: সালামসহ চার জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। আদালত ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহন শেষে আজ আ: সালামকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়। বাকি আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় তাদেরকে খালাস দেওয়া হয়।
মামলার এ রায়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রেজাউল করিম সন্তোষ প্রকাশ করেন। আসামী পক্ষের আইনজীবী ফাহমিদা কুলসুম উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানান।
জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার রায়কালী ইউনিয়নের বালুকাপাড়া গ্রামে রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়ে পুনরায় তাকে বিয়ে করায় এক দম্পতিকে দেড় বছর ধরে 'সমাজচ্যুত' করে রাখা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এ বিষয়ে নালিশ দেওয়ার জের ধরে পেটানো হয় দিনমজুর আব্দুল জলিল প্রামানিককে। প্রতিপক্ষের লোকজনের মারধরে এতে তার বাম হাতের হাঁড় ভেঙে গেছে।
এঘটনায় তিনি একটি থানায় অভিযোগ করেছেন। গত মঙ্গলবার রাতে সেটি মামলাটি হিসেবে রের্কড করা হয়। তবে মামলার এজাহারে সমাজচ্যুত করে রাখার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি।
সরেজমিনে বালুকাপাড়া গ্রামে গিয়ে আব্দুল জলিলকে ১৮ মাস ধরে সমাজচ্যুত করে রাখার তথ্য জানা গেছে। আব্দুল জলিলের সমাজচ্যুত করার ঘটনাটি স্থানীয় রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রশীদ মন্ডলও অবগত আছেন। তিনি দুই পক্ষকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকেও সমাজচ্যুত করে রাখার বিষয়টি সমাধান করতে পারেনি।
গ্রামবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পারিবারিক কলহের কারণে আব্দুল জলিল প্রামানিক রাগের মাথায় তার স্ত্রীকে তালাক দেন। এঘটনার ২৯ দিন পর তিনি আবারও স্ত্রীকে বিয়ে করেন। এ ঘটনায় গ্রাম্য মাতব্বরেরা ক্ষুব্ধ হয়ে আব্দুল জলিল প্রামানিকের পরিবারকে সমাজচ্যুত করে রাখেন। সেই সময় জলিল প্রামানিক বিষয়টি আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)কে জানান। ইউএনও রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মণ্ডলকে বিষয়টি সমাধানের দায়িত্ব দেন। ইউপি চেয়ারম্যান উভয়পক্ষকে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে বৈঠকে বসেছিলেন। তবে কার্যত কোন কোনো সমাধান করতে পারেননি। এতে গ্রাম্য মাতব্বরেরা আব্দুল জলিলের ওপর আরও ক্ষুব্ধ হন। সমাজচ্যুত করে রাখা আব্দুল জলিল গত ১৫ আগস্ট রাত আটটার দিকে গ্রামের মসজিদের দিকে রওনা হন। এসময় মাতব্বরেরা তাকে দুই দফায় প্রচন্ড মারধর করেন। এতে তার বাম হাতের হাঁড় ভেঙে যায়। তিনি চিকিৎসা নিয়ে থানায় আট জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
বালুকাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আজিজুল ইসলাম বলেন, দেড় বছর আগে আব্দুল জলিল তার স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। কয়েক দিন পর আবার সংসার শুরু করেন। এনিয়ে গ্রামের মাতব্বরেরা আব্দুল জলিল প্রামানিককে সমাজচ্যুত করেন। এনিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় বৃদ্ধা লুৎফন নেছা বলেন, আমি কাজ করতে পারিনি। আব্দুল জলিলের বউ আমার বাড়িতে এসে জবাই করা মুরগির তরকারি রান্না করে দিয়েছিল। আমি জলিলের বাড়িতে গিয়ে এক বাটি মুরগির মাংসের তরকারি দিয়ে এসেছি। এতে আমাকেও সমাজচ্যুত করার হুমকি দিয়েছিল।
বালুকাপাড়া গ্রামের মোড়ের দোকানি হাফিজার রহমান বলেন, বউকে তালাক দেওয়ার ঘটনায় আব্দুল জলিল প্রামানিককে গ্রামের মাতব্বরেরা সমাজচ্যুত করেছেন। আব্দুল জলিল গ্রামের সামাজিক কোন কর্মকান্ডে অংশ নিতে দেয় না।
আব্দুল জলিল প্রামানিক বলেন, আমি রাগের মাথায় স্ত্রী তালাক দিয়েছিলাম। ২৯ দিন পর আবার বিয়ে পড়ে নিয়েছি। একারণে গ্রামের মাতব্বর রকি খান, মিল্টন খাঁ, আবু সুফিয়ানসহ আরও ১০-১২ জন আমাকে সমাজচ্যুত করেছেন। রাগের মাথায় স্ত্রীক। তালাক দিলে পুনরায় বিয়ে করা যাবে ঢাকার একজন মুফতির মতামত নিয়ে আসার পরও তারা মানেনি। তারা বলছে হিল্লা বিয়ে ছাড়া আমার বিয়ে বৈধ হবে না। তারা আমাকে দীর্ঘ দেড় বছর ধরে গ্রামের মসজিদে নামাজ আদায়ে করতে ও জানাজায় শরিক হতে বা দেননি। মিলাদ মাহফিল দাওয়াত দেওয়ার মাতব্বরদের চাপে পর ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এমনকি গ্রামের কারও জমিতে দিনমজুরি কাজও করতে পারব না বলে লোকজন জানিয়ে দেন। একারণে কেউ আমাকে কাজে নেয় না। সমাজচ্যুত করার জের ধরে মসজিদে যাওয়ার সময় মাতব্বরদের একাংশের লোকজন আমাকে মেরে হাত ভেঙে দিয়েছেন।
গ্রামের মাতব্বদের একজন মো. মিল্টন খাঁ। তিনি আব্দুল জলিলের দায়ের করা মামলার দুই নম্বর আসামি। তাকে তার বাড়িতে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আব্দুল জলিল সমাজ বিরোধী কাজ করেছেন। একারণে গ্রামের লোকজন তাকে সমাজচ্যুত করেছেন। আব্দুল জলিল সমাজ বিরোধী কি কাজ করেছেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আব্দুল জলিল তার স্ত্রীকে তালাক দিয়ে আবার স্ত্রীকে নিয়েছেন। এটা সমাজ বিরোধী কাজ।
আক্কেলপুর রায়কালী ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মন্ডল বলেন, আব্দুল জলিল মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। তিনি রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। এঘটনায় গ্রামের মাতব্বরেরা আব্দুল জলিলকে সমাজচ্যুত করেন। আব্দুল জলিল ইউএনও স্যারের কাছে অভিযোগ দিয়েছিলেন। ইউএনও স্যার আমাকে ঘটনাটি সমাধানের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। উভয়পক্ষকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে বৈঠক করেছি। আব্দুল জলিল যেন সামাজিকভাবে মিশতে পারে সেটি বলেছি। সমাজচ্যুতের ঘটনার জের ধরে আব্দুল জলিলকে মারধর করা হয়েছে। এতে তার বাম হাত ভেঙেছে বলে জেনেছি।
আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, আব্দুল জলিল প্রামানিক থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছিলেন। অভিযোগটি তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় সেটি মামলা হিসেবে রের্কড করা হয়েছে। আসামি আট জনের মধ্যে ইতিমধ্যে আদালত থেকে পাঁচজন আসামি জামিন নিয়েছেন, অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে ২৭,২৪৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে। বিগত ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের একই মাসে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ছিল ২১,৯১৬ কোটি টাকা। জুলাই-২০২৫ মাসে বিগত জুলাই-২০২৪ মাসের তুলনায় ৫,৩৩৩ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। জুলাই ২০২৫ মাসে রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২৪.৩৩%।
জুলাই’২৫ মাসে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক থেকে। এ খাত থেকে আদায় হয়েছে ১১,৩৫২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায়ের পরিমান ছিল ৮,৫৭১ কোটি টাকা। জুলাই ২০২৫ মাসে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ৩২.৪৫%।
আয়কর ও ভ্রমন কর খাতে জুলাই’২৫ মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৬,২৯৫ কোটি টাকা যা জুলাই’২০২৪ মাসের একই খাতে আদায়কৃত ৫,১৭৫ কোটি টাকার চাইতে ১,১২০ কোটি টাকা বেশি। আয়কর ও ভ্রমন করের ক্ষেত্রে জুলাই ২০২৫ মাসের আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২১.৬৫%।
২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে আমদানি ও রপ্তানি খাতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৯,৬০২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায় ছিল ৮,১৭০ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধির হার ১৭.৫২%।
রাজস্ব আদায়ের এ ধারা ভবিষ্যতে অব্যাহত রাখার জন্য আয়কর, মূল্য সংযোজন কর এবং কাস্টমস শুল্ক-কর আদায়ে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারিদের প্রচেষ্টা আরো জোরদার করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নানাবিধ কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
সম্মানিত করদাতাগণ আইনের যথাযথ পরিপালন নিশ্চিত করে যথাযথ পরিমান কর পরিশোধের মাধ্যমে দেশ গড়ার কাজের অন্যতম অংশীদার হবেন মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশাবাদী।
কুমিল্লা নাঙ্গলকোটে ইউপি সদস্য আলাউদ্দিনকে বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামিকে ঢাকার হাতিরঝিল রেল মগবাজার রেলগেট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। শুক্রবার দিনগত রাতে অভিযানটি শেষ করে র্যাব।
গ্রেফতারকৃত আসামী শেখ ফরিদ (৪৫) নাঙ্গলকোট উপজেলার বক্সগঞ্জ আলীয়ারা গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে।
শনিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে কুমিল্লা অশোকতলা এলাকায় র্যাব অফিসে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন
র্যাব ১১ এর কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাদমান ইবনে আলম।
মেজর সাদমান জানান, নাঙ্গলকোটের আলিয়ারা গ্রামে দুই পরিবারের মধ্যে বংশপরম্পরায় একটি বিরোধ চলে আসছিল। গেল গেল ২৫ জুলাই গরুর ঘাস খাওয়া কে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
সেদিন দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৫ জন গুলিবিদ্ধসহ ২৫ জন আহত হয়।
এ ঘটনার রেশ ধরে গেলো ৩ আগস্ট দুপুরে আলিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা আলাউদ্দিন তার চাচাতো ভাইয়ের জানাজার নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা তাকে একটি সিএনজিতে তুলে নিয়ে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে।
পরে এ ঘটনায় ৫ আগস্ট নিহতের ছেলে বাদী হয়ে নাঙ্গলকোট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বিপদসীমা অতিক্রম করায় নির্ধারিত সময়ের আগেই খোলা হয়েছে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সব জলকপাট। সোমবার (৫ আগস্ট) রাত ১২টা ২ মিনিটে হঠাৎ পানি বাড়তে থাকায় জরুরি ভিত্তিতে কেন্দ্রের ১৬টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়।
কর্ণফুলি পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানান, রাতে লেকের পানির উচ্চতা ১০৮.০৫ ফুট ছুঁয়ে গেলে বিপদসীমা অতিক্রম করে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলি নদীতে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, “প্রথমে সোমবার (৪ আগস্ট) বিকেল ৩টায় পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা পরের দিন মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জলকপাট খোলার ঘোষণা দিয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ অতিরিক্ত পানি প্রবাহের কারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই সোমবার রাতেই জলকপাট খুলে দিতে হয়। তবে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
তিনি আরও জানান, কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট বর্তমানে সচল রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে আরও ৩২ হাজার কিউসেক পানি লেক থেকে কর্ণফুলিতে গিয়ে পড়ছে। সবমিলিয়ে পানি নিঃসরণের হার এখন প্রতি সেকেন্ডে ৪১ হাজার কিউসেক।
ভাটি এলাকার জনসাধারণের উদ্দেশে তিনি বলেন, “পানি প্রবাহ বাড়লেও আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে, এবং প্রয়োজনে আমরা আগেভাগেই ব্যবস্থা নেব।”
স্থানীয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও এ বিষয়ে আগেই অবহিত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন কর্তৃপক্ষ।
মন্তব্য