‘আমরা চাইরডা মানুষ প্রতিবন্ধী। মায় বিছানায় পইড়া রইছে। কয়ডা দিন খাইয়া না খাইয়া রইছি। আব্বায় আমাগো দিকে চাইয়া গাঙ্গে নামছে। আইজগা ছাইড়া দ্যান স্যার। আমরা মইরা গেলেও আর কোনো দিন আব্বারে গাঙ্গে যাইতে দিমু না। নইলে আমাগোরেও লইয়া যান স্যার, আমরাও যামু।’
ভ্রাম্যমাণ আদালতে কাঁদতে কাঁদতে কথাগুলো বলছিল সিদ্দিক মাঝির চার প্রতিবন্ধী সন্তান। ভোলা সদর উপজেলার কাঁচিয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড বেড়িবাঁধ এলাকার বাসিন্দা তারা।
মেঘনার পাড়ে এমন আকুতি কেবল সিদ্দিক মাঝির সন্তানদের নয়। একইভাবে কান্নায় ভেঙে পড়ে ইলিশা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ভাংতিরখাল এলাকার নুরুল হক মাঝির পাঁচ মেয়ে। সবার বড় মেয়েটি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘স্যার, বাড়ির ছোড ছোড বইনগুলা ভাতের লাইগা কান্দে। আইজ দুই দিন ঘরে ভাত নাই। খিদার জ্বালায় আমরা চুপ থাকতে পারলেও ছোড বইনেরা তো থাকতে পারে না। তাগো মুহের দিকে চাইয়া বাবায় নদীত নামছে। আমাগোরে কোনো ভাই নাই। আইজ মাইয়া না অইয়া যদি পোলা অইতাম তয় কামাই কইরা সংসার চালাইতাম।’
সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে শনিবার ভোরে মাছ ধরতে মেঘনা নদীতে নামায় সিদ্দিক মাঝি, নুরুল হক মাঝিসহ ৩৪ জেলেকে আটক করে মৎস্য বিভাগ। ধনিয়া তুলাতুলী মাছঘাট এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালতে বিচার চলাকালে তাদের সন্তানরা কেঁদে কেঁদে পরিবারের অসহায়ত্বের কথা জানায়।
আটক সিদ্দিক মাঝি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাড়িত দুই মাইয়া, এক পোলা আর মাইয়ার জামাইডা প্রতিবন্ধী। বউডা প্যারালাইসিস হইয়া বিছানায় পইড়া রইছে। ছয়জনের সংসার চলে আমার এই ছোড জাল সাবারে। বউডার পিছে প্রতিদিন প্রায় ৫০০ টাকার ওষুধ লাগে। এনজিও থেকে লোন নিয়া জাল সাবার করছি। প্রতি সপ্তাহে এনজিওর স্যারেরা আইয়া টাকা চায়। প্রতিবন্ধী পোলাইনডি না খাইয়া থাহে। এনজিও লোনের টাকা ও পোলাইনের দিকে চাইয়া কোনো কূলকিনারা না পাইয়া গাঙ্গে নামছি।’
একইভাবে নুরুল হক মাঝি বলেন, ‘পাঁচ মাইয়ার মইধ্যে বড়ডারে মহাজনের তোনে টাকা ধার লইয়া যৌতুক দিয়া বিয়া দিছি। এহন ওই টাকার লাইগা মহাজন তাগাদা দিতাছে। নদীত গেলে আমাগো পেট চলে। নদীত যদি না যাইতে পারি তাইলে পেট চালামু কেমনে। আমার ঘরে কামাই করার মতো আর কেউ নাই। অন্য কোনো কাম জানি না। বড় ঠ্যাকা ঠেইকা নদীত নামছি। এখন স্যারেরা ধইরা লইয়া আইছে।’
জেলা মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, মৎস্য বিভাগের দুটি টিম শনিবার সকালে অভিযান চালিয়ে মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে ৩৪ জনকে আটক করে। তাদের মধ্যে ভোলা সদরে ২৯ জন ও চরফ্যাশনে পাঁচজন রয়েছেন। জব্দ করা হয়েছে ২০ কেজি ইলিশ ও ১০ হাজার মিটার কারেন্ট জাল। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সালেহ আহমেদ ১৬ জেলেকে ২০ দিন করে জেল ও ১৩ জেলেকে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করেন। পাশাপাশি জব্দকৃত জাল পুড়িয়ে দেয়া হয়। আর মাছ স্থানীয় মাদ্রাসা ও এতিমখানায় বিতরণ করা হয়।
মৎস্য বিভাগ জানায়, এ নিয়ে পাঁচ দিনে জেলায় মোট ৯৫ জেলেকে আটক করা হয়েছে। পাশাপাশি লক্ষাধিক মিটার অবৈধ কারেন্ট জাল, ৩৫টি অবৈধ বিহুন্দি জাল ও ৩০০ কেজি মাছ জব্দ করা হয়েছে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম আজহারুল ইসলাম জানান, উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর ১৯০ কিলোমিটার এলাকায় ইলিশের অভয়াশ্রমে মার্চ-এপ্রিল দুই মাস ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে সরকার। এর অংশ হিসেবে ভোলা জেলা মৎস্য বিভাগের অভিযান চলছে।
মৎস্য বিভাগের নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে পৃথক দুটি টিম মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে অভিযান চালায়। এ সময় মেঘনার কাঠির মাথা, ইলিশা ও তুলাতলী থেকে ২৯ জন এবং চরফ্যাশনের তেঁতুলিয়া থেকে পাঁচজনকে আটক করা হয়।
আরও পড়ুন:কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার গাঙ্গাটিয়া জমিদার বাড়িতে ডাকাত আতঙ্ক বিরাজ করছে।
অজ্ঞাত মুখোশধারীরা গত রবিবার রাতের বেলায় জমিদার বাড়ির পুরোহিতকে ধরে নিয়ে জঙ্গলে বেঁধে রাখে। টাকা-পয়সা এবং জমিদারেরও খোঁজ করে তারা।
এমন পরিস্থিতিতে ডাকাত আতঙ্কে রয়েছেন বাড়ির লোকজন।
মুখোশধারীরা ঘণ্টা তিনেক ধরে বাড়িটির বিভিন্ন কক্ষ ও আশপাশে তল্লাশি চালানোর কয়েকটি সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ এসেছে এ প্রতিবেদকের হাতে।
এতে দেখা যায়, রবিবার রাত ১০টা ৩৮ মিনিটে জমিদার বাড়ির পুরোহিত বাদল ভট্টাচার্য ও তার স্ত্রী নেলী চক্রবর্তী ঘর থেকে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই প্রথমে দুজন মুখোশধারী ধরে জঙ্গলে নিয়ে যায়। সেখানে গাছের সঙ্গে পুরোহিতকে বেঁধে ফেলে।
জমিদার বাড়ির পুরোহিত বাদল ভট্টাচার্য বলেন, ‘রাতে ঘুমানোর আগে স্ত্রীকে নিয়ে বের হয়েছিলাম। এর মধ্যেই দুজন মুখোশধারী আমাদেরকে ধরে বাড়ির পাশে জঙ্গলে নিয়ে গাছের সাথে বেঁধে রাখে। এ সময় মুখোশধারীরা জমিদার কোন ঘরে জানতে চায়। সিন্দুকের খোঁজও চায় তারা।
‘বাড়ির তিন তলায় ওঠার চেষ্টাও করে। ঘণ্টা তিনেক ধরে বাড়িটির বিভিন্ন কক্ষ ও আশেপাশে তল্লাশি চালায়।’
বাড়ির কেয়ারটেকার স্বপন সাহা বলেন, ‘দীর্ঘদিন যাবত জমিদার বাড়িতে চাকরি করছি। দেশের বিভিন্ন জায়গার লোকজন এখানে ঘুরতে আসেন। পুরো বাড়ি তাদের ঘুরে দেখানোর পাশাপাশি বিভিন্নভাবে তাদের সহযোগিতা করি।
‘কিন্তু অতীতে এমন ঘটনা কখনও ঘটেনি। এই ঘটনার পর থেকে বাড়ির লোকজন আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে।’
কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের গাঙ্গাটিয়া জমিদার বাড়িটিতে জমিদারের একমাত্র শেষ বংশধর মানবেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী চৌধুরী বসবাস করছেন। নিঃসন্তান ব্যক্তিটির স্ত্রী কিছুদিন আগে লোকান্তরিত হন। বাড়িটিতে বর্তমানে তিনি ছাড়া কয়েকজন কর্মচারী ও পুরোহিত অবস্থান করছেন।
গত ২ ফেব্রুয়ারি রাতে বাড়িটিতে অজ্ঞাত কয়েকজন মুখোশধারী হানা দেয়। বাড়ির সিসিটিভি ফুটেজে চারজনকে দেখা যায়।
বাড়ির মালিক মানবেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী চৌধুরী বলেন, ‘মুখোশধারীরা হয়তো ধনদৌলত নিতে কিংবা আটকে রেখে টাকা-পয়সা দাবি করতে চেয়েছিল। তবে বাড়ির লোকজন সজাগ হয়ে যাওয়ার মুখোশধারীরা সেটা করতে পারেনি।’
জানতে চাইলে হোসেনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মারুফ হোসেন বলেন, ‘ঘটনাটি শুনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আরও পড়ুন:আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের গ্রামের বাড়িতে ভাঙচুর করেছেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের বড় রাজাপুর গ্রামের মিয়া বাড়িতে বৃহস্পতিবার দুপুর একটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
এর আগে সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল যে, বেলা ১১টায় হামলা করা হবে। এতে লেখা হয়, ‘নোয়াখালীর বিপ্লবীরা, বুলডোজার নিয়ে প্রস্তুত থাকুন। মার্চ টু কাউয়া কাদেরের বাড়ি! আজ বেলা ১১টা।’
সকাল থেকে সাংবাদিকরা বাড়ির সামনে অবস্থান করেন। বিভিন্ন স্থান থেকে উৎসুক লোকজন বাড়িটি দেখতে আসেন।
ওই সময় বিক্ষুব্ধদের কাউকে বাড়ির ছাদ, বাড়ির ভেতর, আবার কাউকে বাড়ির সামনে অবস্থান করতে দেখা যায়। তাদের ‘কাউয়া’ ‘কাউয়া’সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায়।
তারা বাড়ির বিভিন্ন আসবাবপত্র, ছাদের রেলিং ও সামনে থাকা পোড়া একটা গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বাড়িতে ওবায়দুল কাদেরের নিজস্ব কোনো ঘর নেই। যেটি আছে, সেটি তার ছোট ভাই বসুরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র কাদের মির্জার।
বিক্ষুব্ধ ছাত্রদের একজন বলেন, “সারা দেশে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও উসকানিমূলক বক্তব্যের জন্য দায়ী আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। আজ সেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটছে। সবাই ‘কাউয়া’, ‘কাউয়া’ স্লোগান দিচ্ছে।”
এ বিষয়ে জানতে কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী মো. ফৌজুল আজিমকে কল করে পাওয়া যায়নি।
এর আগে গত বছরের ৫ আগস্ট বিকেলে একই বাড়িতে হামলা করে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। ওই সময় বাড়ির পাঁচটি ঘরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন:নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলায় ফজলুর রহমান নামের এক ব্যক্তিকে হত্যার দায়ে পাঁচ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
আদালত তাদের ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে ছয় মাসের বিনাশ্রম ও ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেন।
এ মামলায় আরও ১১ আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক ফেরদৌস ওয়াহিদ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে এ রায় দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সৈকত ইলিয়াস কবির।
ভুক্তভোগী ফজলুর রহমান রাইগাঁ গ্রামের প্রয়াত ইউনুস আলীর ছেলে।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন রাইগাঁ গ্রামের শহীদুল ইসলাম (৫০), আবদুস সালাম (৬০), আবুল কালাম আজাদ (৫৫), আশরাফ (৪৫) ও আতুরা গ্রামের ইব্রাহিম (৬০)।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০০৭ সালের ২৪ এপ্রিল দুপুরে মহাদেবপুর উপজেলার রাইগাঁ গ্রামে আবদুস সাত্তারের জমির পাশে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে ১৮ থেকে ২০ জন ফজলুর রহমানকে এলোপাতাড়ি মারধর করেন। এতে ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় তার।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সৈকত ইলিয়াস কবির জানান, ঘটনার দিনই ভুক্তভোগীর স্ত্রী শাহনাজ বেগম বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা করলে পুলিশ এ ঘটনার তদন্ত করে ১৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়। পরে সিআইডি আবার তদন্ত করে ১৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় আদালতে।
তিনি আরও জানান, দীর্ঘদিন ধরে চলা এ মামলার ২২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে ১৯ আসামির মধ্যে পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন বিচারক। বাকি ১১ আসামিকে খালাস দেওয়া হয়। আর তিন আসামি রায়ের আগেই মারা যায়।
আরও পড়ুন:সিলেটের এমএজি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজাহ ফেরত দুই যাত্রীর লাগেজ তল্লাশি করে সাড়ে ১৭ কেজি স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়েছে।
স্বর্ণের বার ও পিণ্ডগুলো যাত্রীদের লাগেজে করে আনা ফ্যানের ভেতরে ছিল।
জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই) ও কাস্টমস কর্মকর্তারা বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে স্বর্ণের এ চালান জব্দ করেন।
ওই সময় সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজাহ থেকে আসা দুই যাত্রী আফতাব উদ্দিন (৩৬) ও সাঈদ আহমদকে (২৪) আটক করা হয়।
এসব তথ্য নিশ্চিত করে ওসমানী বিমানবন্দরের পরিচালক হাফিজ আহমদ জানান, আটককৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
অভিযান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, বৃহস্পতিবার সকালে শারজাহ থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে অবতরণ করে। ওই সময় দুই যাত্রীর আচরণ সন্দেহজনক হলে তাদের লাগেজ তল্লাশি করেন সংশ্লিষ্টরা।
তল্লাশিকালে যাত্রীদ্বয়ের লাগেজের ভেতর ফ্যানের মধ্যে কৌশলে রাখা সোনার ১২০টি বার ও গোলাকার চারটি স্বর্ণপিণ্ড উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধারকৃত সোনার ওজন প্রায় সাড়ে ১৭ কেজি বলে বিমানবন্দর সূত্র জানিয়েছে।
আরও পড়ুন:বিনা নোটিশে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ, বগুড়ার আকস্মিক উচ্ছেদ অভিযানের প্রতিবাদে ‘বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ডিলার্স, ডিস্ট্রিবিউটর্স, এজেন্টস এবং পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন, রাজশাহী বিভাগ’ সব পেট্রল পাম্প বন্ধ রেখে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট পালন করছে।
এ ধর্মঘটে বুধবার সকাল ৮টা থেকে নওগাঁর সব পেট্রল পাম্প বন্ধ রয়েছে, যার ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহন চালকরা।
কী বলছেন ভুক্তভোগীরা
যানবাহন না পেয়ে ভোগান্তিতে পড়েন অফিসগামী লোকজনও। তাদের একজন বেসরকারি সিম কোম্পানির কর্মী আল-আমিন।
তিনি বলেন, ‘বাসা থেকে সকাল সাড়ে আটটায় মোটরসাইকেল নিয়ে অফিসে যাওয়ার পথে তেল শেষ হয়ে যায়। বাধ্য হয়ে আধা কিলোমিটার ঠেলে নওগাঁ শহরের মুক্তির মোড় পেট্রল পাম্পে নিয়ে আসি।
‘পাম্প বন্ধ থাকায় আবার ঠেলে নিয়ে চলে যেতে হয়। হঠাৎ করে এমন সিদ্ধান্ত ঠিক নয়। আমাদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।’
আবদুল মান্নান নামের এক বাইকচালক বলেন, ‘আমি জানতাম না পেট্রল পাম্প মালিকদের ধর্মঘট চলছে। পেট্রল পাম্পে এসে দেখি পাম্প বন্ধ। তেল দেওয়া হচ্ছে না।
‘এখন তেল ছাড়া আমরা কীভাবে চলি? আগে জানানো হলে তাও সেভাবে ব্যবস্থা নেওয়া যেত।’
নওগাঁ শহরের মুক্তির মোড়ে অবস্থিত মেসার্স সাকিব ফিলিং স্টেশনের ম্যানেজার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘অনেকেই অফিসগামী মোটরসাইকেল আরোহী ও জ্বালানিচালিত বিভিন্ন যানবাহনগুলো পাম্পে এসে বন্ধ থাকায় ফিরে যেতে হচ্ছে। এতে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে যানবাহন চালকদের। দ্রুত এ সমস্যার সমাধান চান যানবাহন চালকরাও।
‘বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ডিলার্স, ডিস্ট্রিবিউটর্স, এজেন্টস এবং পেট্রল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন, রাজশাহী বিভাগ’ সকল পেট্রোল পাম্প বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন। তাই আমাদেরও বন্ধ রাখতে হয়েছে।’
প্রেক্ষাপট
পেট্রল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন, রাজশাহীর নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার-বগুড়া আঞ্চলিক মহাসড়কে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে সওজ বগুড়া। ওই সময় সান্তাহারের হামিম ফিলিং স্টেশন ও আনিকা ফিলিং স্টেশনে তেলের মিটার উচ্ছেদ করা হয়।
তারা জানান, পূর্বঘোষণা, নোটিশ বা আনুষ্ঠানিক চিঠি না দিয়ে এ উচ্ছেদ অভিযানের প্রতিবাদে ‘বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ডিলার্স, ডিস্ট্রিবিউটর্স, এজেন্টস এবং পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন, রাজশাহী বিভাগ’ সব পেট্রল পাম্প বন্ধ রেখে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট পালন করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:পুলিশের গাড়ি থেকে ছিনিয়ে নেওয়া পাবনার সুজানগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল ওহাবকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সুজানগর উপজেলার ভায়না ইউনিয়নে বুধবার সকাল পৌনে আটটার দিকে অভিযান চালিয়ে নিজ গ্রাম মথুরাপুর বটতলার আনসার সরকারের বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আবদুল ওহাব সুজানগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাবেক চেয়ারম্যান এবং সাবেক পৌর মেয়র।
গত জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় হওয়া একাধিক মামলার পলাতক আসামি ছিলেন তিনি।
গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে সুজানগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সকাল পৌনে আটটার দিকে অভিযান চালিয়ে আবদুল ওহাবসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে এই ঘটনায় আরও ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, পুলিশের কাছ থেকে ছিনতাই হওয়ার পর নিজ দলের নেতা-কর্মীদের মামলা-হামলা থেকে বাঁচতে আবদুল ওহাব নিজ থেকে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এরপর পুলিশের সঙ্গে কথা অনুযায়ী নিজ এলাকায় ফজর নামাজের পর আত্মসমর্পণ করলে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসে।
এর আগে ২ ফেব্রুয়ারি বিকেলে নিজ এলাকা সুজানগর পৌরসভার মথুরাপুর হাই স্কুলের মাঠে আবদুল ওহাবকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারের পরপরই ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে পুলিশের গাড়ির ওপর হামলা করে গাড়ি থেকে আবদুল ওহাবকে ছিনিয়ে নেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।
এ ঘটনায় পুলিশের আটজন সদস্য আহত হয়েছিলেন।
ঘটনার পরের দিন ৬৪ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ২০০ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়। সে সময় অভিযান চালিয়ে ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এ ঘটনায় বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীরা পৃথক বিক্ষোভ মিছিল করেন।
আরও পড়ুন:রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে নিখোঁজ এক স্কুলছাত্রীকে নওগাঁ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
নওগাঁ শহরের আরজি মধ্যপাড়া থেকে মঙ্গলবার বিকেলে তাকে উদ্ধার করে পুলিশ ও র্যাব।
উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন নওগাঁ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম সিদ্দিকী।
ওসি জানান, ঢাকা থেকে ওই স্কুলছাত্রীর নিখোঁজের একটি তথ্য তাদের কাছে আসে। তার নওগাঁয় অবস্থানের তথ্যের ভিত্তিতে আরজি নওগাঁ মধ্যপাড়া এলাকায় কথিত প্রেমিকের বাসায় অভিযান চালানো হয়। পরে সেই যুবকের বাবাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করার পরে তিনি স্বীকার করেন, কিশোরী তাদের কাছে রয়েছে।
তিনি আরও জানান, যুবকের বাড়ির পাশের একটি বাড়ি থেকে কিশোরী ও যুবককে আটক করে পুলিশ ও র্যাব-৫। এরপর র্যাব-৫ জয়পুরহাট ক্যাম্পে দুজনকে নেওয়া হয়।
ওসি আরও জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসায় কিশোরী জানায়, টিকটকের সুবাদে তাদের দুজনের পরিচয় হয়। তাদের আরও জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে।
মন্তব্য