আজগর মিয়া বাদাম বেচেন। কর্মস্থল কারওয়ান বাজারে। নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে চার সদস্যের সংসারে পুষ্টিকর খাবার কেনা কঠিন হয়ে পড়েছে। খরচ কমাতে তিনি একটি কৌশল নিয়েছেন। ডিমের দোকানে গিয়ে খোঁজ করেন ভাঙাগুলোর। তাতে দাম কিছুটা কম পড়ে। কিন্তু সেই ডিম খাওয়া যায়।
জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে, এ নিয়ে আজগরের দুশ্চিন্তার অভাব নেই। এর মধ্যে সরকারের আরেক ঘোষণা তার কপালে চিন্তার ভাঁজ বাড়িয়ে দিয়েছে। তিনি শুনেছেন, খোলা তেল আর বিক্রি হবে না, কিনতে হবে বোতল।
বোতলজাত সয়াবিন তেল সর্বনিম্ন ৫০০ মিলিলিটারের আছে। তবে এক লিটারের কমে পাওয়া যায় কমই। আবার এক লিটারের যত দাম, এই বোতলের দাম আরও বেশি।
তেলের দাম বাড়তে বাড়তে এখন লিটারে ১৬৮ টাকা, তবে গত কয়েক দিনে এই দামে সব জায়গায় তেল মিলছে না। ১৯০ থেকে ২০০ টাকাও কিনতে হচ্ছে রান্নার উপকরণটি।
প্রশ্ন হলো ৫০০ মিলিলিটারের তেলের বোতল যদি ৯০ বা ১০০ টাকায় গিয়ে ঠেকে, তাহলে আজগরের কী হবে।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘সারা দিন বাদাম বেইচ্যা পাই হাজার-বারো শ ট্যাকা। লাভ থাকে ৩০০ থাইক্যা ৪০০। মাইয়া-পোলা লইয়া চারজনের সংসার চালাইতে অবস্থা শেষ। ডিমের হালিও ৪০। হের লাইগ্যা ভাঙা ডিম কিনি ৩০ ট্যাকা দিয়া। আমাগো মতো মানুষরা ২০০ টাকা দিয়া এক লিটার কিনব কেমনে?’
গত দুই দশকে দেশে দারিদ্র্য পরিস্থিতির উন্নতি হলেও দুই বছরের করোনা হঠাৎ করেই ঘটিয়েছে ছন্দঃপতন। দারিদ্র্যের হার যতটা ছিল, আয় কমে যাওয়ায় করোনা তা অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছে। অতি দারিদ্র্যের হার করোনার আগেই ছিল ১০ দশমিক ০৫ শতাংশ। সেটি এখন কতটা বেড়েছে, তার নেই হিসাব।
আগের হিসাবেই বলা যায়, মরজিনার মতো পরিস্থিতিতে পড়বে অন্তত এক কোটি ৭০ লাখ মানুষ।
গত বুধবার বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি জানিয়েছেন, চলতি বছরের ৩১ মের পর থেকে খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হবে না। ৩১ ডিসেম্বরের পর থেকে খোলা পামওয়েল বিক্রিও বন্ধ হবে। এসব তেল বোতলে বিক্রি করতে হবে।
২০ টাকার তেল কিনতে মরজিনার পাঁচ চক্কর
কারওয়ান বাজার থেকে সবজি কুড়িয়ে এনে তেজগাঁও রেললাইনের পাশেই বিক্রি করেন এক মরজিনা বেগম (ছদ্মনাম)। স্বামী নেই, মেয়ে ও নাতি-নাতনিসহ ৪ জনের সংসার। ১০ থেকে ২০ টাকার ছোট ছোট ভাগে সবজি বিক্রির আয় দিয়েই সংসার চলে।
তার মেয়েও সবজি বিক্রি করেন। তবে দুই দিন ধরেই নাতনির জ্বর, যে কারণে মেয়ে কদিন ধরে বাজারে আসতে পারছেন না।
দুজন মিলে যে আয় করা যেত, একা তা করা যায়নি। দুর্মূল্যের বাজারে আয় কমে যাওয়ায় যারপরনাই বিপাকে পড়া ৫০ পেরোনো মরজিনা রান্নার তেল কিনতে গিয়ে পড়লেন বিপাকে।
সকাল থেকে দুপর পর্যন্ত ছোট্ট শিশিতে করে ১০০ গ্রাম তেল কিনতে বিজয় সরণি তেজগাঁও ফ্লাইওভারের নিচে দোকানে ঘুরেছেন পাঁচ দফা। কিন্তু পাননি। দোকানি তাকে বলছেন, তেল নেই, এলেই তেল দেয়া হবে।
মরজিনার মতো তেলের দোকানি আয়েশার ব্যবসার পরিধি খুবই ছোট। তিনি কারওয়ান বাজার থেকে বোতল বা ছোট কনটেইনারে করে তেল আনেন। ১০০ বা ২০০ মিলিলিটারের ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করেন।
এই বাজারটি গরিব মানুষের বাজার হিসেবে পরিচিত। সম্প্রতি এই বাজারটি ব্যাপক আলোচনায় এসেছে ছোট ছোট ভাগে পণ্য বিক্রির জন্য। এখানে তেল বিক্রি হয় সর্বনিম্ন ১০০ গ্রামে, সবজি ছোট ছোট ভাগায়, একেকটির দাম ১০ থেকে ২০ টাকা, গুঁড়া মসলাও পাওয়া যায় এমন ১০ থেকে ২০ টাকায়।
স্বল্প আয়ের, বিশেষ করে বস্তিবাসী এই বাজারের নিয়মিত ক্রেতা।
আয়েশা কেন বারবার মরজিনাকে ফিরিয়েছেন? সেখানে আসলে তার হাত ছিল না। তিনি নিজেও কারওয়ান বাজারে গিয়ে খোলা তেল পাননি। পরে ৫ লিটারের একটি বোতল কিনে তা কেটে এক পুঁটলিতে ১০০ গ্রাম তুলে দিলেন মরজিনার হাতে।
যদি ৫০০ মিলি বা এক লিটার তেল কিনতে হয় একবারে, তাহলে মরজিনার কী হবে? তার তো একসঙ্গে ২০ টাকা জোগাড় করাই কঠিন।
রেলওয়ে বাজারের ক্রেতা বেসরকারি চাকরিজীবী আফজাল বলেন, ‘আমি ১০ থেকে ২০ টাকার তেল কিনি না। কিন্তু এখানে কয়েক হাজার মানুষ আছে, যারা এক ছটাক-এক পোয়া এবং ভাগে বিক্রি সবজি-মাছ কিনে নিয়ে সংসার চালায়। আমাদেরই এক লিটার তেল কিনতে তিনবার মানিব্যাগের দিকে তাকাতে হয়। তারা কী করে এক লিটার তেল কিনবে ২০০ টাকা দিয়ে?’
কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) চেয়ারম্যান গোলাম রহমান বলেন, ‘সরকার স্বাস্থ্যের দিক বিবেচনা করে হয়তো খোলা তেল বিক্রি বন্ধ করতে বলেছে। তবে সেটা কতটা কার্যকর করা যাবে তা প্রশ্নসাপেক্ষ। কারণ অনেক মানুষ আছে যাদের এক লিটার কেনার সামর্থ্য নেই। এদের কথা চিন্তা করে যদি বোতল ছোট করতে হয়, তাহলে তো দাম আরও বেশি পড়বে।’
২০ টাকার তেলের জন্য হাহাকার
বৃহস্পতিবার দুপরে সেই আলোচিত গরিবের বাজারে গিয়ে দেখা যায়, সামনে অনেক পণ্যের পুঁটলি নিয়ে বসে আছেন দোকানিরা। তবে এর মধ্যে তেলের পুঁটলি নেই।
জানতে চাইলে দোকানি তাসলিমা বেগম বলেন, ‘দুই দিন ধইরা খোলা তেল কিনতে পাই না। হের লাইগ্যা বেচাও বন্ধ রাখছি। মানুষরা আইয়া ফিইরা যাইতাছে। ভালা লাগতাছে না।
‘বোতল ভাঙলে (বোতলজাত তেল) দামও বেশি পড়ব। আবার বেচাকেনাও কম। এক বোতল আনবার টাকাও নাই।’
তিনি বলেন, ‘এখানো (এখানে) তেল বেচা অয় কেজিতে। কিন্তু বোতল তো লিটারে। হের লাইগ্যা হিসাব রাখাও কষ্টের। আগে খোলা তেল ১৫০ টাকায় লিটার আনলে কেজি পড়ত ১৮০ টাকা। এখন বোতল আনলে লিটার রিকশা ভাড়াসহ ১৯০ টাকা পড়ে। ২১০ টাকা কেজি বেচন লাগব। এক ছটাক ২০ টাকা বেচতে অয়। তাইলে তো লস।’
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় যা বলছে
সব তেল বোতলে ভরে বিক্রি হলে আজগর মিয়া বা মরজিনারা কীভাবে তেল কিনবেন- এমন প্রশ্নে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে বর্তমান সর্বনিম্ন হাফ লিটারের বোতল থেকে আরও ছোট প্যাকেট করা হবে। সরকার এক লিটারের দাম নির্ধারণ করে দিবে, সে অনুপাতে ছোট প্যাকেটগুলোর এমআরপি লেখা থাকবে। তার বেশি দামে কেউ বিক্রি করতে পারবে না।’
তার মতে, এভাবে বাজারজাত হলে ছোট বোতলগুলো গরিব মানুষ সহজেই কিনতে পারবে।’
এই কর্মকর্তা মনে করেন, তাছাড়া প্যাকেট ও এমআরপি না থাকায় এখন বোতলের চেয়ে খোলা তেল বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।
তবে বোতলের আকার ছোট হলে তার দাম বেশি পড়ে- এটা নানা পণ্যের ক্ষেত্রেই দেখা গেছে।
তেলের ক্ষেত্রেও এটা দেখা গেছে নানা সময়। যে সময় এক লিটার সয়াবিন তেলের দাম ৯০ টাকা ছিল, সে সময় ৫০০ মিলিলিটারের দাম ছিল ৫০ টাকা।
রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি মিল্ক ভিটার এক লিটার দুধের দাম ৭৫ টাকা হলেও ৫০০ মিলিলিটার হলে দাম হয় ৪০ টাকা। ২৫০ মিলিলিটার নিলে দাম হয় ২৫ টাকা।
অর্থাৎ গরিব মানুষের জন্য ছোট বোতলের তেল আনা হলে সেগুলোর দাম আনুপাতিক হারে বেশি পড়তে পারে।
আরও পড়ুন:দুর্গাপূজা সামনে রেখে দেশের শীর্ষ ফ্যাশন ব্র্যান্ডগুলোর একটি টুয়েলভ (Twelve) উন্মোচন করেছে তাদের সমৃদ্ধ Puja Collection 2025। এ বছর শুধু পোশাকের নকশা ও বৈচিত্র্যেই নয়, প্রচারণাতেও এসেছে অভিনবত্ব। টুয়েলভ প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিতে ব্যবহার করেছে AI-জেনারেটেড অনলাইন ভিডিও কমার্শিয়াল (AI OVC), যা ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
ব্র্যান্ড কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে তৈরি এই বিজ্ঞাপন কন্টেন্ট ফ্যাশনপ্রেমী গ্রাহকদের সামনে কালেকশনের সারমর্ম তুলে ধরছে একেবারেই নতুনভাবে। ফলে টুয়েলভ কেবল একটি পোশাক ব্র্যান্ড নয়, বরং ফ্যাশনে প্রযুক্তি ব্যবহারের পথিকৃৎ হিসেবেও নিজেদের অবস্থান দৃঢ় করছে।
ট্রেন্ড আর ট্র্যাডিশনের মিলন
টুয়েলভের পূজা কালেকশনে এ বছর সমন্বিত হয়েছে সমকালীন ট্রেন্ড ও বাঙালির শিকড়-গাঁথা ঐতিহ্য। নারী, পুরুষ ও শিশুসহ সব বয়সী ও রুচির গ্রাহকদের জন্য আলাদা আলাদা রেঞ্জ থাকলেও আরাম, নিখুঁত ফিট ও ডিজাইনের নিখাদ শৈল্পিকতার আলোকে এগুলোকে এক সুতোয় গেঁথেছে টুয়েলভ।
পোশাকগুলোতে ব্যবহৃত হয়েছে কটন, মিক্সড কটন, ব্লেন্ডেড সিল্ক, জর্জেটসহ আরামদায়ক নানা ফ্যাব্রিক। পাশাপাশি ডিজিটাল প্রিন্ট, স্ক্রিন প্রিন্ট, সূক্ষ্ম এমব্রয়ডারি, সিকুইন ও কারচুপির মতো বড়সর ডিজাইনের কাজ এনে দিয়েছে বাড়তি আভিজাত্য।
নারী-পুরুষ-শিশুর জন্য বৈচিত্র্যময় আয়োজন
কালেকশনের নারীদের ক্যাটাগরিতে রয়েছে ৩ পিস, ২ পিস, গাউন, কুর্তি, টপ, শারারা বটম ও ওড়না। প্রতিটি পোশাকেই সমসাময়িক কাট ও ফিটের পাশাপাশি রয়েছে উৎসবের আবহ।
পুরুষদের জন্য এসেছে বেসিক ও এমব্রয়ডারি পাঞ্জাবির পাশাপাশি রেডিমেড ধুতি, যা বিশেষভাবে জনপ্রিয়তা পাওয়ার প্রত্যাশা করছে ব্র্যান্ডটি। কারণ ঐতিহ্যবাহী ধুতি পরতে ঝামেলার কারণে অনেকেই তা এড়িয়ে যান; এবার টুয়েলভের রেডিমেড ধুতি উৎসবে এনে দেবে সহজ সমাধান।
শিশুদের জন্য রয়েছে বয়েজ পাঞ্জাবি এবং গার্লস ২ পিস ও ফ্রক। একই ডিজাইন ও রংয়ের মিল রাখা হয়েছে শিশুদের পোশাকে, যাতে পরিবারসহ সহজেই তৈরি হয় কমপ্লিমেন্টারি লুক।
ফ্যামিলি কম্বো: একসঙ্গে উৎসবের রঙ
টুয়েলভ বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে ফ্যামিলি কম্বো কালেকশন-এ। একই মোটিফ ও রঙে নারী, পুরুষ ও শিশুদের জন্য পোশাক রাখা হয়েছে, যা পরিবারকে উৎসবে এনে দেবে ভিন্ন মাত্রার ঐক্য ও আনন্দ। বর্তমান সময়ে গ্রুপ বা পারিবারিক ফ্যাশন ট্রেন্ডকে মাথায় রেখে এই উদ্যোগ নিয়েছে ব্র্যান্ডটি।
প্রযুক্তির সংযোজন: AI OVC
এবারের পূজা কালেকশনের সবচেয়ে বড় আলোচ্য বিষয় হচ্ছে AI OVC। বাংলাদেশে এটাই প্রথমবার, যখন কোনো ফ্যাশন ব্র্যান্ড তাদের ক্যাম্পেইনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দ্বারা তৈরি ভিডিও কন্টেন্ট ব্যবহার করেছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, এই উদ্যোগ বিজ্ঞাপন প্রক্রিয়াকে করেছে দ্রুততর, ব্যয়সাশ্রয়ী ও আরও আকর্ষণীয়।
ভিডিওগুলো টুয়েলভের ফেসবুক, ইউটিউবসহ সব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিয়মিত দেখা যাচ্ছে। ফলে অনলাইনে ব্র্যান্ডের উপস্থিতি যেমন জোরদার হয়েছে, তেমনি গ্রাহকরাও পাচ্ছেন নতুন ধরণের ভিজ্যুয়াল অভিজ্ঞতা।
গ্রাহকদের জন্য উন্মুক্ত
দেশব্যাপী সব টুয়েলভ আউটলেটে ইতোমধ্যেই পাওয়া যাচ্ছে Puja Collection 2025। গ্রাহকরা নিকটস্থ শোরুমে এসে ট্রাই করে নিতে পারবেন নিজেদের পছন্দের আউটফিট। এছাড়া অনলাইনে পুরো কালেকশন দেখতে পাবেন www.twelvebd.com ওয়েবসাইটে।
শেষকথা
ফ্যাশন জগতে প্রযুক্তির সংযোজনকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেল টুয়েলভের এবারের পূজা কালেকশন। ট্রেন্ড আর ট্র্যাডিশনের সমন্বয়ে সমৃদ্ধ পোশাক লাইনআপের সঙ্গে AI-ভিত্তিক ভিজ্যুয়াল স্টোরিটেলিং নিঃসন্দেহে দেশীয় ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিকে দিয়েছে ভিন্নমাত্রার উদ্ভাবন। এবারের পূজা তাই শুধু রঙিন পোশাকেই নয়, ফ্যাশনের প্রযুক্তি-নবায়নেও হয়ে উঠছে বিশেষ সৌন্দর্যের অধিকারী।
১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তারিখে ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসি. এর নবগঠিত পরিচালনা পর্ষদের ৫৬তম সভা ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়, গুলশান-১, ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সম্মানিত চেয়ারম্যান জনাব মুঃ ফরীদ উদ্দীন আহমদ। সভায় পর্ষদের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান জনাব মোঃ হুমায়ুন কবীর, নিরীক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান জনাব শেখ জাহিদুল ইসলাম, এফসিএ, স্বতন্ত্র পরিচালক ড. শহিদুল ইসলাম জাহীদ, জনাব মোহাম্মদ সাইফুল আলম এবং ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও জনাব মোঃ হুমায়ুন কবির উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব মোহাম্মদ ইকবাল এবং জনাব মিজানুর রহমান কার্যপোলক্ষ্যে সভায় যোগদান করেন। সভায় ব্যাংকের ব্যবসা সম্প্রসারণ ও গ্রাহকসেবার মান বৃদ্ধিকল্পে ইস্যুভিত্তিক বিশদ পর্যালোচনান্তে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
কাতারে বসবাসরত বাংলাদেশি কমিউনিটির জন্য দেশে থাকা প্রিয়জনের কাছে রেমিটেন্স পাঠানো আরও সহজ ও স্বাচ্ছন্দ্যময় করতে স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ করলো কাতারের শীর্ষস্থানীয় আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান গালফ এক্সচেঞ্জ এবং বাংলাদেশের বৃহত্তম মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশ।
এই পার্টনারশিপের মাধ্যমে কাতারে থাকা বাংলাদেশি প্রবাসীরা সরাসরি দেশে থাকা প্রিয়জনের বিকাশ ওয়ালেটে রেমিটেন্স পাঠাতে পারবেন। ফলে, পরিবারের প্রয়োজনে যেকোনো সময়ই তাৎক্ষণিক টাকা পাঠাতে পারবেন তাঁরা। তাদের পাঠানো রেমিটেন্স বাংলাদেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকে নিষ্পত্তি হয়ে বিকাশ-এর নিরাপদ ডিজিটাল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সরাসরি প্রিয়জনের হাতে পৌঁছে যাবে মুহূর্তেই। ভালো বিনিময় হার, দ্রুত টাকা পৌঁছানোর নিশ্চয়তা এবং সহজে ব্যবহারের সুবিধা থাকায় এটি প্রবাসী ও তাদের প্রিয়জন – উভয়ের জন্যই নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হবে।
সম্প্রতি, কাতারের রাজধানী দোহায় গালফ এক্সচেঞ্জ-এর প্রধান কার্যালয়ে এ বিষয়ে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এসময় গালফ এক্সচেঞ্জ এর চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার আহমাদ আলী আল-সারাফ, বিকাশ-এর চিফ কমার্শিয়াল অফিসার আলী আহম্মেদ সহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আহমাদ আলী আল-সারাফ বলেন, “বিকাশ-এর মতো বিশ্বস্ত ও বহুল ব্যবহৃত প্ল্যাটফর্মের সাথে যুক্ত হয়ে আমরা আমাদের বাংলাদেশি গ্রাহকদের জন্য দেশে টাকা পাঠানোর আরও দ্রুত, নিরাপদ ও সুবিধাজনক উপায় এনেছি। এর মাধ্যমে উদ্ভাবনী ও গ্রাহককেন্দ্রিক আর্থিক সেবা দেয়ার আমাদের প্রতিশ্রুতি আরও শক্তিশালী হলো।”
বিকাশ-এর চিফ কমার্শিয়াল অফিসার আলী আহম্মেদ বলেন, “গালফ এক্সচেঞ্জ-এর সঙ্গে এই পার্টনারশিপ বিশ্বব্যাপী আমাদের রেমিট্যান্স নেটওয়ার্ককে আরও শক্তিশালী করবে। আমরা চাই, বিদেশে থাকা লাখো বাংলাদেশি যেন আরও সহজে আর্থিক সেবা গ্রহণ করতে পারেন। এই নতুন রেমিটেন্স চ্যানেলের ফলে তাদের পাঠানো টাকা মুহূর্তেই পৌঁছে যাবে পরিবারের কাছে, যা শুধু তাদের পরিবারকে সাহায্যই করবে না, বরং দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”
সিলেটের হাওর অঞ্চল সুনামগঞ্জে পাঁচ’শ পরিবারের দারিদ্র্য বিমোচন সহায়তায় যৌথ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে হেলেন কেলার ইন্টারন্যাশনাল ও মেটলাইফ ফাউন্ডেশন। এই উদ্যোগের মাধ্যমে দারিদ্র্য মোকাবিলায় পরিবারগুলোকে আয় বাড়ানোর কাজে প্রশিক্ষণ ও সহায়তা প্রদান করা হবে।
এই প্রকল্পে অংশ নেওয়া পরিবারগুলোকে গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগি পালন, সেলাই, মাছ চাষ, ক্ষুদ্র ব্যবসা, নৌকা ও জাল দিয়ে মাছ ধরা এবং বাণিজ্যিকভাবে সবজি চাষের মত কাজের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে যেন তারা নিজেরাই এ থেকে আয় করে স্বাবলম্বী হতে পারে।
এ উদ্যোগ সম্পর্কে হেলেন কেলার ইন্টারন্যাশনালের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, “দারিদ্র পীড়িত মানুষদের পাশে দাঁড়ানো এবং সমাজে দীর্ঘমেয়াদে ইতিবাচক প্রভাব তৈরি করাই আমাদের মূল লক্ষ্য। মেটলাইফ ফাউন্ডেশনের সাথে যৌথ উদ্যোগে পাঁচ শ’ পরিবারের জীবনে পরিবর্তন আনার এই উদ্যোগ, আমাদের সে লক্ষ্য পূরণে বড় একটি সুযোগ ও শক্তিশালী যৌথ প্রয়াসের প্রতিফলন।”
মেটলাইফ বাংলাদেশের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা আলা আহমদ বলেন, “মেটলাইফ ফাউন্ডেশনের তহবিলের মাধ্যমে আমরা এমন প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারছি, যা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রার টেকসই উন্নয়নে অবদান রাখছে। এই প্রকল্প শুধু পাঁচ’শ পরিবারের ক্ষমতায়নেই সহায়তা করবে না, একইসাথে জাতীয় অর্থনীতিতেও ইতিবাচক অবদান রাখবে।”
বাংলাদেশে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি, আর্থিক সক্ষমতা ও পরিবেশ রক্ষায় সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে মেটলাইফ ফাউন্ডেশন। কৌশলগত অংশীদারিত্বের মাধ্যমে এ ফাউন্ডেশন দেশের পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠীর জন্য প্রয়োজনীয় সেবা ও অর্থনৈতিক সুযোগ সম্প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে, যা একটি সহনশীল ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ তৈরিতে অবদান রাখছে।
প্রাইম ব্যাংক পিএলসি দেশের শীর্ষস্থানীয় কর্পোরেট রিয়েলস্টেট প্রতিষ্ঠান এবিবিসি রিয়ের এস্টেট লিমিটেড-এর সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারিত্বে যুক্ত হয়েছে। এই সহযোগিতার মাধ্যমে প্রাইম ব্যাংকের গ্রাহকরা প্রিমিয়াম আবাসন সল্যুশন উপভোগ করতে পারবেন। সম্প্রতি রাজধানীর গুলশানে ব্যাংকের কর্পোরেট অফিসে আয়োজিত এক আনুষ্ঠানিক চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়।
চুক্তির আওতায় প্রাইম ব্যাংকের গ্রাহকরা আবাসন চাহিদা মেটাতে এবিসি রিয়েল এস্টেট লিমিটেড থেকে আকর্ষণীয় সুবিধা ও কাস্টমাইজড অফার উপভোগ করবেন।
চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন প্রাইম ব্যাংক পিএলসি-এর ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর এম. নাজিম এ. চৌধুরী এবং এবিসি রিয়েল এস্টেট লিমিটেড-এর ডিরেক্টর সৌগত ঘোষ। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রাইম ব্যাংকের ইভিপি ও হেড অব কার্ডস এবং রিটেইল অ্যাসেট জোয়াদ্দার তানভীর ফায়সাল এবং এবিসি রিয়েল এস্টেট লিমিটেড-এর জেনারেল ম্যানেজার, সেলস মোহাম্মদ জাকির হোসেন।
শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি এর কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) কর্মসূচীর অংশ হিসেবে, সমাজের সুবিধা বঞ্চিত গরীব ও অসহায় মানুষদের আশ্রয় প্রদানের লক্ষ্যে নাটোরের লালপুুরে নির্মাণাধীন গ্রিন ভ্যালী ওল্ড এজ হোম এন্ড অরফানেজ-কে ব্যাংকের সিএসআর তহবিল থেকে ৫.০০ (পাঁচ) লক্ষ টাকার আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়েছে। ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ইং তারিখে শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকের করপোরেট প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব মোসলেহ্ উদ্দীন আহমেদ গ্রিন ভ্যালী ওল্ড এজ হোম এন্ড অরফানেজ এর সভাপতি মো: আলমগীর কবীর এর নিকট উক্ত অনুদানের চেক প্রদান করেন। উক্ত চেক প্রদানকালে অন্যান্যদের মধ্যে ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম. এম. সাইফুল ইসলাম, ব্যাংকের এসএভিপি মো: জাকির হোসেন এবং ব্যাংকের জনসংযোগ বিভাগ ও ব্যাংক ফাউন্ডেশনের ইনচার্জ কে. এম. হারুনুর রশীদ উপস্থিত ছিলেন।
নাটোরের লালপুরে নির্মাণাধীন এই গ্রিন ভ্যালী ওল্ড এজ হোম এন্ড অরফানেজে সমাজের সুবিধা বঞ্চিত এতিম ও অসহায় লোকজন বসবাস করবে। দুই একর জমির উপর নির্মিত হতে যাচ্ছে এই গ্রিন ভ্যালী ওল্ড এজ হোম এন্ড অরফানেজ, যেখানে সব ধরণের আধুনিক সুযোগ সুবিধা থাকবে। এই গ্রিন ভ্যালী ওল্ড এজ হোম এন্ড অরফানেজে শুধুমাত্র আশ্রয় কেন্দ্র নয়, তার পাশাপাশি এটি পরিণত হবে একটি শিক্ষা কেন্দ্রে, যেখানে বৃদ্ধরা অসহায় এতিম বাচ্চাদের আদর যত্নে বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষা প্রদান করবেন। উপর্যুক্ত শিক্ষা ও দক্ষ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সমাজের আশ্রিত ও সুবিধা বঞ্চিত ছোট ছেলেমেয়েরা একদিন সমাজে যোগ্য মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে বলে আশা পোষণ করছে প্রতিষ্ঠানটির কর্তৃপক্ষ।
দেশের শীর্ষস্থানীয় ডিজিটাল বিনোদন প্ল্যাটফর্ম বাংলালিংকের টফি এর ব্যবহারকারীদের জন্য সাবস্ক্রিপশন কেনাকে আরও সুবিধাজনক করার লক্ষ্যে নতুন পেমেন্ট অপশন চালু করেছে। এখন থেকে বাংলালিংকের গ্রাহকেরা তাদের মোবাইল ব্যালেন্স দিয়ে সহজেই টফি সাবস্ক্রিপশন কিনতে পারবেন। নতুন এই পদ্ধতি সাবস্ক্রিপশন প্রক্রিয়াকে আরও সহজ ও ঝামেলামুক্ত করবে।
নতুন এই ফিচারটি গ্রাহকদের জন্য পুরো প্রক্রিয়াটিকে করেছে আরও সহজ। টফির সকল ব্যবহারকারী লাইভ স্পোর্টস, টেলিভিশনের অনুষ্ঠান, সিনেমা ও এক্সক্লুসিভ কনটেন্টের বিশাল সংগ্রহ সহজেই তাদের মোবাইল ব্যালেন্স দিয়ে কিনে উপভোগ করতে পারবেন।
এ বিষয়ে বাংলালিংকের চিফ ডিজিটাল অফিসার গোলাম কিবরিয়া বলেন, “বাংলালিংকে আমরা ব্যবহারকারীদের জন্য ডিজিটাল বিনোদন আরও সহজলভ্য এবং সুবিধাজনক করে তুলতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছি। মোবাইল ব্যালেন্স দিয়ে সাবস্ক্রিপশনের মাধ্যমে এখন টফি ব্যবহারকারীরা মাত্র কয়েকটি ক্লিকেই, যেকোনো সময়, যেকোনো জায়গায় প্রিমিয়াম কনটেন্ট উপভোগ করতে পারবেন। এ সুবিধা যে শুধুমাত্র ব্যবহারকারীদের স্বাচ্ছন্দ্য বৃদ্ধি করবে, তা-ই নয়; পাশাপাশি, এর মাধ্যমে কোটি মানুষ আরও সহজে বিনোদন ও শিক্ষামূলক কনটেন্ট উপভোগ করতে পারবেন। টফি বাংলাদেশের সবচেয়ে সহজলভ্য ডিজিটাল বিনোদন প্ল্যাটফর্ম; এবং এ পদক্ষেপ ব্যবহারকারীদের জন্য আনন্দ, শিক্ষা ও বিনোদনের সুযোগ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে দেশের ডিজিটাল যাত্রার অংশ হিসেবে আমাদের ধারাবাহিক প্রতিশ্রুতিরই প্রতিফলন।”
বিনোদনের সুযোগ তৈরির বাইরেও, এ উদ্যোগ ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তি ত্বরান্বিত করার ক্ষেত্রে বাংলালিংকের বিস্তৃত লক্ষ্যের প্রতিফলন। যেকোন সময়, যেকোন জায়গা থেকে মানসম্পন্ন কনটেন্ট উপভোগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে কনটেন্টের গণতান্ত্রায়নের লক্ষ্য নিয়ে টফি ব্যবহারকারীদের শুধুমাত্র বিনোদনই নয়, পাশাপাশি জ্ঞান, তথ্য ও শিক্ষামূলক কনটেন্ট উপভোগেরও সুযোগ তৈরি করছে, যা তাদের প্রতিদিনের জীবনকে সমৃদ্ধ করে তুলতে ভূমিকা রাখছে। বাংলালিংকের এসব উদ্যোগ ডিজিটাল বৈষম্য দূর করার পাশাপাশি ব্যক্তি ও কমিউনিটির ক্ষমতায়নে ভূমিকা রাখছে এবং ডিজিটাল অর্থনীতিতে তাদের সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের সুযোগ বৃদ্ধিতে অবদান রাখছে।
মন্তব্য