ছোট থেকেই বই পড়তে ভালোবাসেন বগুড়ার খান্দার এলাকার বাসিন্দা জিয়াউল হক। নিজের সংগ্রহেও রয়েছে কয়েক শ বই। তবু ৬৭ বছর বয়সেও উডবার্ন সরকারি গ্রন্থাগারে নিয়মিত আসা-যাওয়া করছেন এই পাঠক। এখানকার সদস্যও তিনি।
জিয়াউল হক বলেন, ‘বগুড়ার উডবার্ন লাইব্রেরি অনেক পুরোনো, ঐতিহ্যবাহী ও সমৃদ্ধশালী পাঠাগার। এখানে ভ্রমণ ও পাখিবিষয়ক বইগুলো বেশি পড়ছি। একটা সময়ে আমার চাচাতো ভাইরাও এসেছেন। তাদের দেখে আমিও পাঠাগারমুখী হয়েছি।’
শুধু জিয়াউল হক নয়। পৌনে ২০০ বছরের পুরোনো উডবার্ন সরকারি লাইব্রেরি থেকে বই পড়ে আলোকিত বগুড়ার অসংখ্য মানুষ।
প্রায় সাড়ে ৪৮ হাজার বই ও পত্রিকা নিয়ে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের জন্য এই লাইব্রেরি বিদ্যাচর্চার জন্য অবারিত স্থান। প্রতি মাসে গড়ে দেড় হাজার পাঠক নিয়মিত এই সেবা নিয়ে আসছেন।
সরকারি আজিজুল হক কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী অমৃত কুমার মণ্ডল। তার বাড়ি নওগাঁর পত্নীতলায়। বগুড়ার সাতমাথা এলাকায় মেসে থাকেন। চাকরির জন্য পড়াশোনা করছেন।
তিনি বলেন, ‘উডবার্ন লাইব্রেরির পরিবেশ খুব সুন্দর। এখানে এসে অনেক উপকৃত হই। কারণ এখানে সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পড়াশোনা করতে পারি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি মূলত অ্যাকাডেমিক পড়ালেখা করি। পাশাপাশি এখানে কম্পিউটার ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। সেখানেও টাইপের চর্চা করতে পারি, যা দোকানে ব্যয়বহুল।’
আজিজুল হক কলেজের আরেক সাবেক শিক্ষার্থী লিপি আক্তার প্রতিদিন আসেন শেরপুর উপজেলা রানীরহাট এলাকা থেকে। তিনিও চাকরিপ্রত্যাশী হিসেবে গ্রন্থাগারের নিয়মিত পাঠক।
লিপি জানান, বাড়িতে পড়ালেখার তেমন পরিবেশ পাওয়া যায় না। এখানে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পড়া যায়। এ জন্য উডবার্ন সরকারি গ্রন্থাগারে আসা।
চাকরিপ্রত্যাশীদের বাইরে বিনোদনের জন্য বই পড়ার মতো পাঠক আগের থেকে কিছুটা কমেছে। এর কারণ হিসেবে বেশির ভাগই কিশোর-তরুণদের মোবাইলে বা ইন্টারনেটের প্রতি আগ্রহকে দায়ী করছেন পাঠক ও গ্রন্থাগারের কর্মকর্তারা।
জিয়াউল হক বলেন, ‘এখনকার ছেলেমেয়েরা বই পড়ার প্রতি উদাসীন। তারা মোবাইল, ল্যাপটপ নিয়েই ব্যস্ত থাকে। এ বিষয়ে সরকারকে আরও সচেতন হওয়া উচিত। যাতে তরুণরা বইয়ের প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠে।’
এর মাঝেও অনেক শিক্ষার্থীকে দেখা যায় প্রাতিষ্ঠানিক সিলেবাসের বাইরের বই পড়তে। গ্রন্থাগারে পাওয়া যায় এমন এক শিক্ষার্থীকে। নাম আশিক রহমান। তিনি বগুড়া সরকারি কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। প্রায় সাত মাস ধরে এই গ্রন্থাগারে আসছেন তিনি।
আশিক জানান, তার এক শিক্ষকের কাছ থেকে এই উডবার্ন গ্রন্থাগারের খোঁজ পান। এর পর থেকে আসা-যাওয়া শুরু। এখানে বিভিন্ন উপন্যাস ও ছোটগল্প পড়েন তিনি।
কী রয়েছে
পাঠাগারের কর্মকর্তারা জানান, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের তথ্য অনুযায়ী, সরকারি এ গ্রন্থাগারের রেজিস্টারভুক্ত বই রয়েছে ৪৮ হাজার ৩৯২টি। এর মধ্যে বাংলা বই রয়েছে ৪৪ হাজার ৪৫টি। ইংরেজি ৪ হাজার ২৭০টি এবং অন্যান্য আরও ৭৭টি বই রয়েছে পাঠাগারে।
এ ছাড়া দৈনিক বাংলা পত্রিকা ১০টি ও দৈনিক ইংরেজি একটি, বাংলা সাময়িকী আটটি, ইংরেজি সাময়িকী একটি নিয়মিত কেনা হয়।
এখানে প্রায় ৩০০ বছরের পুরোনো তিনটি পাণ্ডুলিপি রয়েছে। সেগুলো হলো পদ্মপুরান, গোবিন্দকথামৃত ও হিরণ্যকশিপুর। এগুলো কার মাধ্যমে এখানে এসেছে তার সঠিক তথ্য নেই।
পাঠক কেমন
জানুয়ারিতে ১ হাজার ৫৬০ জন পাঠাগারে বই ও পত্রিকা পড়েছেন। এর মধ্যে পুরুষ পাঠক ১ হাজার ৩৫৮ জন। আর নারী পাঠক ১৭৪ জন।
ফেব্রুয়ারিতে পাঠকের এই সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৫৩৭। এর মধ্যে পুরুষ ২ হাজার ১৩৯, নারী ৩৬২ ও শিশু ৩৬।
ধারে বা বই ইস্যু নেয়ার সদস্য রয়েছেন ৩৩১ জন, যারা নিয়মিত বই বাসায় নিয়ে পড়াশোনা করতে পারেন।
কী বলছেন লাইব্রেরির কর্মকর্তারা
উডবার্ন সরকারি গ্রন্থাগারের সহকারী লাইব্রেরিয়ান আমির হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশে যে কয়েকটি প্রাচীন লাইব্রেরি রয়েছে, তার মধ্যে উডবার্ন অন্যতম। প্রায় দেড় শ বছরের বেশি এই লাইব্রেরিতে অনেক পুরোনো ও রেফারেন্স বই এবং কিছু পাণ্ডুলিপি রয়েছে।
‘এমন প্রাচীন সংগ্রহ সাধারণত অন্য লাইব্রেরিতে নেই। এসব বইয়ের মাধ্যমে প্রতিদিন অসংখ্য পাঠক সেবা নিচ্ছেন। পাঠকের উপস্থিতি আগের চেয়ে ভালো। গবেষক, শিক্ষার্থী ও কবি-সাহিত্যিক এখানে সেবা নিয়ে থাকেন।’
আমির হোসেন আরও বলেন, ‘এই পাঠকসেবা আরও বাড়ানোর লক্ষ্যে আগামীতে দেশব্যাপী লাইব্রেরিগুলোকে ডিজিটাল করার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে দেশের ৭১টি জেলা ও উপজেলার লাইব্রেরি ডিজিটাল করা হবে।’
শুরু যেভাবে
বগুড়া শহরের কেন্দ্রবিন্দু এলাকার এডওয়ার্ড পৌর পার্কের পশ্চিম পাশে অবস্থিত উডবার্ন সরকারি গ্রন্থাগার। ২০০০ সালে ৪০ শতক জমির ওপর স্থাপন করা হয়েছে চারতলা ভবনের এই গ্রন্থাগার। তবে এটি একটি আধুনিক গ্রন্থাগার। এটির জন্মের ইতিহাস আরও পুরোনো।
লাইব্রেরির ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্যে জানা গেছে, পুরাতন উডবার্ন পাবলিক লাইব্রেরি ১৮৫৪ সালে জেলার খ্যাতনামা ব্যক্তিদের প্রচেষ্টা ও সহায়তায় রয়েল উডবার্ন পাবলিক লাইব্রেরি স্থাপন করেন।
প্রতিষ্ঠার কয়েক বছর পর বগুড়ার নবাব সৈয়দ আবদুস সোবহান চৌধুরী লাইব্রেরির জন্য একটি নতুন ভবন নির্মাণ করেন। ১৯০৮ সালে জে এন গুপ্ত জেলা কালেক্টর সে সময়ের বাংলার লেফটেন্যান্ট গভর্নর জন উডবার্নের নাম অনুসারে এই লাইব্রেরির নামকরণ করেন উডবার্ন পাবলিক লাইব্রেরি।
যেসব কবি-সাহিত্যিক এসেছিলেন
ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, ১৯৪৭ সালে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর বড় ভাই শরৎচন্দ্র বসু, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, কবি কিরণ শংকর দাসের মতো ব্যক্তিরা এসেছিলেন এই লাইব্রেরিতে।
সরকারীকরণ যেভাবে
সময়ের বিবর্তনে উডবার্ন পাবলিক লাইব্রেরির অবস্থা শোচনীয় হয়। পরে পাঠাগারটি সরকারীকরণের উদ্যোগ নেয়া হয়। ১৯৮৪ সালে স্থাপিত বগুড়া জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগারের সঙ্গে একীভূত করা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। ওই সময় পাঠাগারটি সে সময় ছিল শহরের শিববাটি এলাকায়।
১৯৯৬ সালের জুনে একটি আন্তমন্ত্রণালয় সভায় সবার সিদ্ধান্তে এই লাইব্রেরিকে সরকারি গ্রন্থাগার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এর পর থেকে এটির নাম হয় উডবার্ন সরকারি গ্রন্থাগার।
পরে পার্কের পশ্চিমে নির্ধারিত স্থানে নির্মাণ হয় ভবন। ২০০৪ সাল থেকে এই গ্রন্থাগার পুরোদমে চালু হয়।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন উডবার্ন সরকারি গ্রন্থাগারের লাইব্রেরি অ্যাসিসট্যান্ট আনিসুল হক। প্রায় ৩০ বছর ধরে তিনি গ্রন্থাগারে কর্মরত।
আনিসুল হক বলেন, ‘১৯৯৫-৯৬ সালের দিকে এসে পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে এই পাবলিক লাইব্রেরির অবস্থা খুব খারাপ হয়ে যায়। তখন ওই লাইব্রেরি ছিল পৌর পার্কের ভেতর। তাদের অনেক বই, আলমারি নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। পরে এটি সরকারীকরণ হওয়ার পর আমরা পুরোনো লাইব্রেরির বইগুলো নিয়ে আসি।’
লাইব্রেরি অ্যাসিসট্যান্ট আরও বলেন, ‘সে সময় অন্তত সাড়ে ৮ হাজার বই নতুন গ্রন্থাগারে আনা হয়। কিন্তু তাদের তালিকায় প্রায় ২৫ হাজার বই ছিল। যেগুলোর মধ্যে অনেক বই নিখোঁজ ছিল। এ ছাড়া প্রচুর বই একেবারে নষ্ট হয়ে যায়।’
সংকট
বিপুল বইয়ের সমাহারে সমৃদ্ধশালী এই লাইব্রেরিতে রয়েছে জনবল সংকট। উডবার্ন সরকারি গ্রন্থাগারে পদ রয়েছে ৯টি। এর বিপরীতে লাইব্রেরিতে কর্মরত তিনজন। সহকারী লাইব্রেরিয়ান, লাইব্রেরি অ্যাসিসট্যান্ট ও নৈশপ্রহরী।
সম্প্রতি রিডিং হল অ্যাসিসট্যান্ট হিসেবে লুৎফর রহমান নামে একজন এখানে কর্মরত। তবে তিনি সংযুক্তিতে এখানে কাজ করছেন। তার মূল কর্মস্থল রাজশাহীতে। আর আউটসোর্সিং হিসেবে বেশ কয়েক বছর ধরে কাজ করছেন রিপন মিয়া।
জ্যেষ্ঠ লাইব্রেরিয়ান, কম্পিউটার অপারেটর, টেকনিক্যাল অ্যাসিসট্যান্ট, বুকসর্টার, অফিস সহায়ক, চেকপোস্ট অ্যাসিসট্যান্ট পদ দীর্ঘদিন ধরে ফাঁকা রয়েছে।
লাইব্রেরি অ্যাসিসট্যান্ট বলেন, ‘উডবার্ন সরকারি গ্রন্থাগার হওয়া থেকেই এখানে জনবল সংকট রয়েছে। ওই পদের কাজগুলো আমরাই করে থাকি।’
সহকারী লাইব্রেরিয়ান আমির হোসেন বলেন, ‘প্রাচীন লাইব্রেরি হলেও এখানে পাঠকসেবা ঠিকমতো দেয়া যায় না। কারণ এখানে ৯টি পদের বিপরীতে তিনজন ব্যক্তি আছি। প্রায় সাড়ে ৩০০ সদস্য ও বিপুল বই থাকায় এই তিনজন নিয়ে পাঠকদের সেবা দেয়া কষ্টকর। এখানে জনবল বাড়ালে আমরা পাঠকদের আরও বেশি সেবা দিতে পারব।’
আরও পড়ুন:অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের পর নিরাপত্তাহীনতায় পুনরায় বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময় গারো পাহাড় সীমান্তে মানব পাচারকারী চক্রের দুই সদস্যসহ ৭ জনকে আটক করেছে বিজিবি।
সোমবার (২৫ আগস্ট) সকাল পৌণে সাতটার দিকে শেরপুরের ঝিনাইগাতি উপজেলার নকশি সীমান্ত পথে নকশি ক্যাম্পের টহলরত বজিবি সদস্যরা তাদের আটক করে বিকেলে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
বিষয়টি ২৬ আগষ্ট সকালে বিজিবি পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়।
আটককৃতরা হলো মানব পাচারকারী চক্রের সদস্য নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বুরুঙ্গা গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে রমজান আলী (২৪) ও আসমত আলীর ছেলে রাসেল (১৬)। আটক অনুপ্রবেশকারীরা হলো, নড়াইল জেলার কালিয়া থানার বোমবাঘ গ্রামের শামীম শেখ (২৩), আফসানা খানম (২২), রুমা বেগম (৩২), মিলিনা বিশ্বাস (২৮) ও তিন বছর বয়সী শিশু কাশেম বিশ্বাস।
বিজিবি এক প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানায়, মাথাপিছু ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে গত ২৩ আগস্ট রাতের আধারে নালিতাবাড়ীর সীমান্ত এলাকা দিয়ে অবৈধ পথে নারী এবং শিশুসহ ৫ বাংলাদেশীকে ভারতে পাঠায় মানব পাচারকারী রমজান আলী ও রাসেল। কিন্তু ভারতীয় পুলিশের তৎপরতায় নিরাপত্তাহীনতায় পড়ে এ পাঁচ বাংলাদেশী। এ কারণে ২৫ আগষ্ট সোমবার সকাল পৌণে সাতটার দিকে ঝিনাইগাতির নকশি সীমান্তের কালিমন্দির এলাকা দিয়ে পুনরায় তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এসময় টহলরত বিজিবি সদস্যরা টের পেয়ে সবাইকে আটক করে। পরে মানব পাচারে জড়িত দুইজনের বিরুদ্ধে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে এবং অন্য ৫ জনের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের অপরাধে নালিতাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করা হয় এবং সবাইকে নালিতাবাড়ী থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ময়মনসিংহ বিজিবি’র ৩৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মেহেদী হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিজিবির পক্ষ থেকে এ ধরনের অভিযান চলমান থাকবে।
ঝালকাঠিতে গ্রাহকদের চাহিদা বিবেচনায় এনে ব্রান্ডশপ লোটো ও লি কুপার প্রতিষ্ঠানটি তাদের ১৩২তম ফ্লাগশিপ আউটলেট উদ্বোধন করেছে।
এক্সপ্রেস লেদার প্রোডাক্ট লিঃ এর ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর কাজী জাভেদ ইসলাম সহ কোম্পানির অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের সাথে নিয়ে ফিতা কেটে আউটলেটটি উদ্বোধন করেন ঝালকাঠির পুলিশ সুপার উজ্জ্বল কুমার রায়।
পৌর শহরের সাধনার মোড়ে মঙ্গলবার ২৬ আগষ্ট সকাল ১০টায় লোটো ও লি কুপারের ফ্ল্যাগশিপ আউটলেটদ্বয়ের শুভ উদ্বোধন আনুষ্ঠানে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন পর্যায়ের গ্রাহক ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
ঝালকাঠিতে কোম্পানীর এ যাত্রার প্রথম দিনে স্থানীয় ফ্যাশন সচেতন তরুণ তরুণীরা তাদের পছন্দের পন্য কালেকশন বেছে নিতে ভীর জমায়।
কোম্পানীর পক্ষ থেকে জানানো হয় প্রথম তিনদিনের প্রতিদিন প্রথম ৩০ জন পাবেন ৫০% ছাড়, ২য় ৩০ জন পাবেন ৪০% ছাড়, ৩য় ৩০ জন পাবেন ৩০% ছাড়, ৪র্থ ৩০ জন পাবেন ২০% ছাড় এবং তৎপরবর্তী সকল কাস্টমার পাবেন ১০% ছাড়। এই বিশেষ ছাড় ২৬শে আগষ্ট থেকে শুরু হয়ে ২৮ তারিখ পর্যন্ত চলমান থাকবে
নওগাঁয় সপ্তম শ্রেণীর এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে আটক রেখে ধর্ষণ মামলায় আ: সালাম (৩৮) নামে এক আসামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
রোববার (২৪ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে নওগাঁর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মেহেদী হাসান তালুকদার এ রায় দেন।
যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আ: সালাম সদর উপজেলার বর্ষাইল মধ্যপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ভিকটিম ওই শিক্ষার্থীর পরিবার পত্নীতলা উপজেলায় ভাড়া থাকতেন। ভাঙ্গারী ব্যবসার সুবাদে আসামী আ: সালামও পাশাপাশি একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। ভিকটিম মাদ্রাসায় যাওয়া আসার পথে আ: সালাম বিভিন্ন সময় কু-প্রস্তাব দিতো এবং রাস্তাঘাটে বিরক্ত করতো। বিষয়টি জানাজানি হলে আসামী আ: সালাম ওই ভিকটিমের পরিবারকে গালিগালাজ ও ভয়ভীতি দেখাতো। এরই একপর্যায়ে ২০২২ সালের ১১ জুলাই বিকেল তিনটার দিকে আসামী আ: সালাম একটি বাজার এলাকা থেকে ওই শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে নওগাঁ সদর উপজেলার ভবানীপুর দক্ষিন পাড়া গ্রামের মোজাফ্ফর রহমানের ভাড়া বাড়িতে আটক রেখে একাধিকবার ধর্ষণ করে। বিষয়টি বুঝতে পেরে ওই শিক্ষার্থীর বাবা পত্নীতলা থানায় অভিযোগ করলে র্যাব ওই বাড়ি থেকে আসামিকে গ্রেফতার ও মেয়েকে উদ্ধার করে। পরে তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে ঘটনার সত্যতা থাকায় আসামী আ: সালামসহ চার জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। আদালত ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহন শেষে আজ আ: সালামকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়। বাকি আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় তাদেরকে খালাস দেওয়া হয়।
মামলার এ রায়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রেজাউল করিম সন্তোষ প্রকাশ করেন। আসামী পক্ষের আইনজীবী ফাহমিদা কুলসুম উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানান।
জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার রায়কালী ইউনিয়নের বালুকাপাড়া গ্রামে রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়ে পুনরায় তাকে বিয়ে করায় এক দম্পতিকে দেড় বছর ধরে 'সমাজচ্যুত' করে রাখা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এ বিষয়ে নালিশ দেওয়ার জের ধরে পেটানো হয় দিনমজুর আব্দুল জলিল প্রামানিককে। প্রতিপক্ষের লোকজনের মারধরে এতে তার বাম হাতের হাঁড় ভেঙে গেছে।
এঘটনায় তিনি একটি থানায় অভিযোগ করেছেন। গত মঙ্গলবার রাতে সেটি মামলাটি হিসেবে রের্কড করা হয়। তবে মামলার এজাহারে সমাজচ্যুত করে রাখার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি।
সরেজমিনে বালুকাপাড়া গ্রামে গিয়ে আব্দুল জলিলকে ১৮ মাস ধরে সমাজচ্যুত করে রাখার তথ্য জানা গেছে। আব্দুল জলিলের সমাজচ্যুত করার ঘটনাটি স্থানীয় রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রশীদ মন্ডলও অবগত আছেন। তিনি দুই পক্ষকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকেও সমাজচ্যুত করে রাখার বিষয়টি সমাধান করতে পারেনি।
গ্রামবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পারিবারিক কলহের কারণে আব্দুল জলিল প্রামানিক রাগের মাথায় তার স্ত্রীকে তালাক দেন। এঘটনার ২৯ দিন পর তিনি আবারও স্ত্রীকে বিয়ে করেন। এ ঘটনায় গ্রাম্য মাতব্বরেরা ক্ষুব্ধ হয়ে আব্দুল জলিল প্রামানিকের পরিবারকে সমাজচ্যুত করে রাখেন। সেই সময় জলিল প্রামানিক বিষয়টি আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)কে জানান। ইউএনও রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মণ্ডলকে বিষয়টি সমাধানের দায়িত্ব দেন। ইউপি চেয়ারম্যান উভয়পক্ষকে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে বৈঠকে বসেছিলেন। তবে কার্যত কোন কোনো সমাধান করতে পারেননি। এতে গ্রাম্য মাতব্বরেরা আব্দুল জলিলের ওপর আরও ক্ষুব্ধ হন। সমাজচ্যুত করে রাখা আব্দুল জলিল গত ১৫ আগস্ট রাত আটটার দিকে গ্রামের মসজিদের দিকে রওনা হন। এসময় মাতব্বরেরা তাকে দুই দফায় প্রচন্ড মারধর করেন। এতে তার বাম হাতের হাঁড় ভেঙে যায়। তিনি চিকিৎসা নিয়ে থানায় আট জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
বালুকাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আজিজুল ইসলাম বলেন, দেড় বছর আগে আব্দুল জলিল তার স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। কয়েক দিন পর আবার সংসার শুরু করেন। এনিয়ে গ্রামের মাতব্বরেরা আব্দুল জলিল প্রামানিককে সমাজচ্যুত করেন। এনিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় বৃদ্ধা লুৎফন নেছা বলেন, আমি কাজ করতে পারিনি। আব্দুল জলিলের বউ আমার বাড়িতে এসে জবাই করা মুরগির তরকারি রান্না করে দিয়েছিল। আমি জলিলের বাড়িতে গিয়ে এক বাটি মুরগির মাংসের তরকারি দিয়ে এসেছি। এতে আমাকেও সমাজচ্যুত করার হুমকি দিয়েছিল।
বালুকাপাড়া গ্রামের মোড়ের দোকানি হাফিজার রহমান বলেন, বউকে তালাক দেওয়ার ঘটনায় আব্দুল জলিল প্রামানিককে গ্রামের মাতব্বরেরা সমাজচ্যুত করেছেন। আব্দুল জলিল গ্রামের সামাজিক কোন কর্মকান্ডে অংশ নিতে দেয় না।
আব্দুল জলিল প্রামানিক বলেন, আমি রাগের মাথায় স্ত্রী তালাক দিয়েছিলাম। ২৯ দিন পর আবার বিয়ে পড়ে নিয়েছি। একারণে গ্রামের মাতব্বর রকি খান, মিল্টন খাঁ, আবু সুফিয়ানসহ আরও ১০-১২ জন আমাকে সমাজচ্যুত করেছেন। রাগের মাথায় স্ত্রীক। তালাক দিলে পুনরায় বিয়ে করা যাবে ঢাকার একজন মুফতির মতামত নিয়ে আসার পরও তারা মানেনি। তারা বলছে হিল্লা বিয়ে ছাড়া আমার বিয়ে বৈধ হবে না। তারা আমাকে দীর্ঘ দেড় বছর ধরে গ্রামের মসজিদে নামাজ আদায়ে করতে ও জানাজায় শরিক হতে বা দেননি। মিলাদ মাহফিল দাওয়াত দেওয়ার মাতব্বরদের চাপে পর ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এমনকি গ্রামের কারও জমিতে দিনমজুরি কাজও করতে পারব না বলে লোকজন জানিয়ে দেন। একারণে কেউ আমাকে কাজে নেয় না। সমাজচ্যুত করার জের ধরে মসজিদে যাওয়ার সময় মাতব্বরদের একাংশের লোকজন আমাকে মেরে হাত ভেঙে দিয়েছেন।
গ্রামের মাতব্বদের একজন মো. মিল্টন খাঁ। তিনি আব্দুল জলিলের দায়ের করা মামলার দুই নম্বর আসামি। তাকে তার বাড়িতে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আব্দুল জলিল সমাজ বিরোধী কাজ করেছেন। একারণে গ্রামের লোকজন তাকে সমাজচ্যুত করেছেন। আব্দুল জলিল সমাজ বিরোধী কি কাজ করেছেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আব্দুল জলিল তার স্ত্রীকে তালাক দিয়ে আবার স্ত্রীকে নিয়েছেন। এটা সমাজ বিরোধী কাজ।
আক্কেলপুর রায়কালী ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মন্ডল বলেন, আব্দুল জলিল মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। তিনি রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। এঘটনায় গ্রামের মাতব্বরেরা আব্দুল জলিলকে সমাজচ্যুত করেন। আব্দুল জলিল ইউএনও স্যারের কাছে অভিযোগ দিয়েছিলেন। ইউএনও স্যার আমাকে ঘটনাটি সমাধানের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। উভয়পক্ষকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে বৈঠক করেছি। আব্দুল জলিল যেন সামাজিকভাবে মিশতে পারে সেটি বলেছি। সমাজচ্যুতের ঘটনার জের ধরে আব্দুল জলিলকে মারধর করা হয়েছে। এতে তার বাম হাত ভেঙেছে বলে জেনেছি।
আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, আব্দুল জলিল প্রামানিক থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছিলেন। অভিযোগটি তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় সেটি মামলা হিসেবে রের্কড করা হয়েছে। আসামি আট জনের মধ্যে ইতিমধ্যে আদালত থেকে পাঁচজন আসামি জামিন নিয়েছেন, অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে ২৭,২৪৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে। বিগত ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের একই মাসে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ছিল ২১,৯১৬ কোটি টাকা। জুলাই-২০২৫ মাসে বিগত জুলাই-২০২৪ মাসের তুলনায় ৫,৩৩৩ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। জুলাই ২০২৫ মাসে রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২৪.৩৩%।
জুলাই’২৫ মাসে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক থেকে। এ খাত থেকে আদায় হয়েছে ১১,৩৫২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায়ের পরিমান ছিল ৮,৫৭১ কোটি টাকা। জুলাই ২০২৫ মাসে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ৩২.৪৫%।
আয়কর ও ভ্রমন কর খাতে জুলাই’২৫ মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৬,২৯৫ কোটি টাকা যা জুলাই’২০২৪ মাসের একই খাতে আদায়কৃত ৫,১৭৫ কোটি টাকার চাইতে ১,১২০ কোটি টাকা বেশি। আয়কর ও ভ্রমন করের ক্ষেত্রে জুলাই ২০২৫ মাসের আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২১.৬৫%।
২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে আমদানি ও রপ্তানি খাতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৯,৬০২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায় ছিল ৮,১৭০ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধির হার ১৭.৫২%।
রাজস্ব আদায়ের এ ধারা ভবিষ্যতে অব্যাহত রাখার জন্য আয়কর, মূল্য সংযোজন কর এবং কাস্টমস শুল্ক-কর আদায়ে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারিদের প্রচেষ্টা আরো জোরদার করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নানাবিধ কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
সম্মানিত করদাতাগণ আইনের যথাযথ পরিপালন নিশ্চিত করে যথাযথ পরিমান কর পরিশোধের মাধ্যমে দেশ গড়ার কাজের অন্যতম অংশীদার হবেন মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশাবাদী।
কুমিল্লা নাঙ্গলকোটে ইউপি সদস্য আলাউদ্দিনকে বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামিকে ঢাকার হাতিরঝিল রেল মগবাজার রেলগেট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। শুক্রবার দিনগত রাতে অভিযানটি শেষ করে র্যাব।
গ্রেফতারকৃত আসামী শেখ ফরিদ (৪৫) নাঙ্গলকোট উপজেলার বক্সগঞ্জ আলীয়ারা গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে।
শনিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে কুমিল্লা অশোকতলা এলাকায় র্যাব অফিসে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন
র্যাব ১১ এর কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাদমান ইবনে আলম।
মেজর সাদমান জানান, নাঙ্গলকোটের আলিয়ারা গ্রামে দুই পরিবারের মধ্যে বংশপরম্পরায় একটি বিরোধ চলে আসছিল। গেল গেল ২৫ জুলাই গরুর ঘাস খাওয়া কে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
সেদিন দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৫ জন গুলিবিদ্ধসহ ২৫ জন আহত হয়।
এ ঘটনার রেশ ধরে গেলো ৩ আগস্ট দুপুরে আলিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা আলাউদ্দিন তার চাচাতো ভাইয়ের জানাজার নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা তাকে একটি সিএনজিতে তুলে নিয়ে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে।
পরে এ ঘটনায় ৫ আগস্ট নিহতের ছেলে বাদী হয়ে নাঙ্গলকোট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বিপদসীমা অতিক্রম করায় নির্ধারিত সময়ের আগেই খোলা হয়েছে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সব জলকপাট। সোমবার (৫ আগস্ট) রাত ১২টা ২ মিনিটে হঠাৎ পানি বাড়তে থাকায় জরুরি ভিত্তিতে কেন্দ্রের ১৬টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়।
কর্ণফুলি পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানান, রাতে লেকের পানির উচ্চতা ১০৮.০৫ ফুট ছুঁয়ে গেলে বিপদসীমা অতিক্রম করে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলি নদীতে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, “প্রথমে সোমবার (৪ আগস্ট) বিকেল ৩টায় পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা পরের দিন মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জলকপাট খোলার ঘোষণা দিয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ অতিরিক্ত পানি প্রবাহের কারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই সোমবার রাতেই জলকপাট খুলে দিতে হয়। তবে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
তিনি আরও জানান, কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট বর্তমানে সচল রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে আরও ৩২ হাজার কিউসেক পানি লেক থেকে কর্ণফুলিতে গিয়ে পড়ছে। সবমিলিয়ে পানি নিঃসরণের হার এখন প্রতি সেকেন্ডে ৪১ হাজার কিউসেক।
ভাটি এলাকার জনসাধারণের উদ্দেশে তিনি বলেন, “পানি প্রবাহ বাড়লেও আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে, এবং প্রয়োজনে আমরা আগেভাগেই ব্যবস্থা নেব।”
স্থানীয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও এ বিষয়ে আগেই অবহিত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন কর্তৃপক্ষ।
মন্তব্য