পাশের দেশ মিয়ানমারের সঙ্গে বৈধভাবে লবণের ব্যবসা চালিয়ে আসছিলেন কক্সবাজারের সোনাদিয়ার জসিম উদ্দিন ওরফে জসিম। এই বৈধ ব্যবসার আড়ালে তিনি মূলত করতেন মাদক কারবার।
৭ বছর ধরে জসিম নিয়মিত মিয়ানমার থেকে ইয়াবার চালান এনে বাংলাদেশে বিক্রি করছিলেন। গত এক বছর হলো ইয়াবার পাশাপাশি অবৈধ মাদক ক্রিস্টাল মেথ বা আইসের কারবারও শুরু করেন তিনি। সে লক্ষ্যে জসিম গড়ে তোলেন নিজস্ব সিন্ডিকেট।
এই সিন্ডিকেটের হোতা জসিম উদ্দিন ও তার পাঁচ সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। সেই সঙ্গে জব্দ করা হয়েছে সবচেয়ে বড় আইসের চালান।
জসিম উদ্দিন ছাড়া অন্য চারজন হলেন মকসুদ মিয়া, রিয়াজ উদ্দিন, শাহিন আলম ও সামছুল আলম।
মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া থেকে বুধবার রাতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। ওই সময় অবৈধ মাদক আইসের (ক্রিস্টাল মেথ) ১২ কেজির চালান, ১ লাখ ইয়াবা বড়ি, ৪ হাজার ৬০০ চেতনানাশক ইনজেকশন, দুটি বিদেশি পিস্তল, ৯টি গুলি, দুটি টর্চলাইট, বার্মিজ সিম কার্ড, ১ লাখ ৬৪ হাজার টাকা ও ১ লাখ বার্মিজ মুদ্রা এবং ৫টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।
ব্রিফিংয়ে কী জানাল র্যাব
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা মিয়ানমারের মাদক চক্রের যোগসাজশে দেশে অবৈধ আইস কারবারের সঙ্গে জড়িত। জসিমের নেতৃত্বে এই মাদক সিন্ডিকেটের কার্যক্রম পরিচালিত হয়। দেশে এই চক্রের সদস্য সংখ্যা ১২ থেকে ১৫।
আল মঈন জানান, চক্রের সদস্যরা মূলত সোনাদিয়াকেন্দ্রিক মাদক চোরাকারবারি। ঢাকা, মুন্সিগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, বরিশাল এলাকায় বিভিন্ন কৌশলে মিয়ানমার থেকে নিয়ে আসা অবৈধ মাদক ক্রিস্টাল আইস ও ইয়াবা সরবরাহ করেন তারা। নৌপথ ব্যবহার করে বিভিন্ন কৌশলে পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমার থেকে মাদক নিয়ে আসতেন চক্রের সদস্যরা।
র্যাবের এ কর্মকর্তা জানান, জসিম উদ্দিন অনেক বছর ধরে পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমারের সঙ্গে লবণের বৈধ ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। বেশি মুনাফার লোভে তিনি মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে যান। ৭ বছর ধরে তিনি মাদক চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত।
তিনি জানান, জসিম লবণ ব্যবসার আড়ালে প্রথমে ইয়াবা পাচার শুরু করেন। দেশে চাহিদা তৈরি হওয়ায় গত এক বছর হলো মাদক আইসের চালান আনা শুরু করেন তিনি।
র্যাবের মুখপাত্র বলেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপের দক্ষিণে গভীর সমুদ্রে ট্রলারের মাধ্যমে মিয়ানমারের মাদক চক্রের সদস্যরা বাংলাদেশের এই চক্রের কাছে ইয়াবা ও আইসের চালান হস্তান্তর করে। সাগরপথে মাদকের চালান গ্রহণ ও নিরাপদস্থলে পৌঁছানোর জন্য এ চক্রের সদস্যরা প্রায় ২০ থেকে ২৫ দিন জেলের ছদ্মবেশে গভীর সমুদ্রে অবস্থান করে থাকেন। মালামাল গ্রহণের পর সুবিধাজনক সময়ে তারা সোনাদিয়া দ্বীপে চলে আসেন।
পরে ইয়াবা ও আইসের চালানগুলো সোনাদিয়া ও মহেশখালী দ্বীপে জসিমের বিভিন্ন লবণের গুদামে লুকিয়ে রাখা হয়। এরপর সুবিধাজনক সময়ে চক্রটি সোনাদিয়া থেকে দুটি বোটের মাধ্যমে নোয়াখালীর হাতিয়াতে ক্রিস্টাল আইস ও ইয়াবার চালান নিয়ে আসতেন। এভাবে বহনকৃত মাদকের চালান হাতিয়ায় পৌঁছালে চক্রটির হাতিয়ার সদস্যদের তত্ত্বাবধানে সংরক্ষণ করা হয়।
র্যাবের ভাষ্য, চক্রের সদস্যরা ইঞ্জিনচালিত নৌকায় মেঘনা নদী হয়ে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়াসহ ঢাকার আশপাশে অথবা সুবিধাজনক স্থানে পৌঁছাতেন। ঢাকা ছাড়াও তারা বরিশাল, পটুয়াখালী অঞ্চলে মাদক সরবরাহ করতেন।
মাদকের চালান মুন্সিগঞ্জে পৌঁছানোর পর রাজধানীর একটি চক্র আইস ও ইয়াবার চালান গ্রহণ করে এবং সড়কপথে বিভিন্ন মাধ্যমে কৌশলে মুন্সিগঞ্জ থেকে ঢাকায় নিয়ে আসে। নৌপথে মাদক পরিবহনে তারা বিভিন্ন নিরাপত্তা ও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে।
র্যাবের কর্মকর্তা খন্দকার আল মঈন জানান, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দেয়ার জন্য চক্রটি দুটি বোট ব্যবহার করে থাকে। সামনের বোটকে নজরদারি করতে ব্যবহার করা হতো। পেছনের বোটটিতে মাদক বহন করা হতো। মোবাইল অথবা টর্চলাইট সিগন্যালের মাধ্যমে উভয় বোটের সদস্যরা নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করতেন।
পথে নজরদারিতে নিয়োজিত স্কর্ট বোট আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি টের পেলে সামনের বোট থেকে পেছনের মাদকবাহী বোটকে সংকেত দিত। সংকেত পেয়ে মাদকবাহী বোটকে সরিয়ে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যেতেন চক্রের সদস্যরা। পরে আবার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তারা মাদকের চালান নিয়ে রওনা দিতেন।
র্যাবের দাবি, গ্রেপ্তার শাহীন আলম জসিমের অন্যতম প্রধান সহযোগী। তিনি নৌপথে মাদক পরিবহনের মূল দায়িত্ব পালন করতেন। তার সঙ্গে সামসু ও মকসুদ মাদক বহন ও নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করতেন। আর রিয়াজ উদ্দিন মাদক পরিবহনে নজরদারির জন্য স্কর্ট বোট থেকে দায়িত্ব পালন করতেন।
বাহিনীটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, শাহীনের বিরুদ্ধে মহেশখালী থানায় মানব পাচার ও মারামারিসংক্রান্ত দুটি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তার অপর সদস্য শামছুল আলমের বিরুদ্ধে মহেশখালী থানায় অস্ত্র ও মারামারিসংক্রান্ত তিনটি মামলা রয়েছে। মকসুদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও ডাকাতিসংক্রান্ত ছয়টি মামলা রয়েছে।
খন্দকার আল মঈন বলেন, অন্যান্য মাদকের সঙ্গে অবৈধভাবে চেতনানাশক সিডাকটিভ ইনজেকশন মিয়ানমার থেকে নিয়ে আসত জসিমের সিন্ডিকেট। সেগুলো তারা দেশে ফার্মেসিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিক্রি করত। এসব প্রতিষ্ঠান ও ফার্মেসি সম্পর্কে খোঁজ নিচ্ছে র্যাব গোয়েন্দারা।
আরও পড়ুন:রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে গত দুই দিনে ২ হাজার ২৪৬টি মামলা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ।
এছাড়াও অভিযানকালে ৩২২টি গাড়ি ডাম্পিং ও ৯৯টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে।
ডিএমপি’র মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, সোমবার ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে এসব মামলা করে।
ঢাকা মহানগর এলাকায় ট্রাফিক শৃঙ্খলা রক্ষায় ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
ঢাকা মহানগরীতে দরিদ্র ও অসচ্ছল মানুষের জন্য ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে করে টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু হয়েছে আজ সকাল থেকে।
ঢাকার সচিবালয়ের সামনে থেকে শুরু করে যাত্রাবাড়ী, বাড্ডা, ধোলাইপাড়, ধোলাইখাল, রামপুরাসহ বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে করে টিসিবির পণ্য বিক্রি করছেন নির্বাচিত ডিলাররা।
প্রতিটি ট্রাক থেকে দরিদ্র একটি পরিবার ২ কেজি ভোজ্যতেল, ১ কেজি চিনি ও ২ কেজি মসুর ডাল ন্যায্য মূল্যে কিনতে পারছেন।
টিসিবির উপ পরিচালক মো. শাহাদাত হোসেন সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, স্বল্প আয়ের মানুষের সুবিধার্থে সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) উদ্যোগে রোববার থেকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পণ্য বিক্রির কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। ভর্তুকি মূল্যে রাজধানীতে ৬০টি ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে এসব পণ্য বিক্রি করা হবে। পণ্যগুলো হল ভোজ্যতেল, চিনি ও মসুর ডাল।
জানা যায়, ঢাকা মহানগরীতে আজ থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৩০ দিন (শুক্রবার ছাড়া) টিসিবির পণ্য বিক্রি করা হবে।
এছাড়া চট্টগ্রাম মহানগরীতে ২৫টি, গাজীপুর মহানগরীতে ৬টি, কুমিল্লা মহানগরীতে ৩টি এবং ঢাকা জেলায় ৮টি, কুমিল্লা জেলায় ১২টি, ফরিদপুর জেলায় ৪টি, পটুয়াখালী জেলায় ৫টি ও বাগেরহাট জেলায় ৫টি ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে আজ থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ১৯ দিন (শুক্রবার ছাড়া) পণ্য বিক্রি করা হবে।
দৈনিক প্রতিটি ট্রাক থেকে ৫শ’ জন সাধারণ মানুষের কাছে সাশ্রয়ী মূল্যে এসব পণ্য বিক্রি করা হবে। একজন ভোক্তা একসঙ্গে সর্বোচ্চ ২ লিটার ভোজ্যতেল, ১ কেজি চিনি ও ২ কেজি মসুর ডাল কিনতে পারবেন। ভোজ্যতেল ২ লিটার ২৩০ টাকা, চিনি ১ কেজি ৮০ টাকা এবং মসুর ডাল ২ কেজি ১৪০ টাকায় বিক্রি করা হবে। যে কোনো ভোক্তা ট্রাক থেকে পণ্য ক্রয় করতে পারবেন।
উল্লেখ্য, স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ডধারী পরিবারের মধ্যে ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির পণ্য বিক্রির কার্যক্রম চলমান রয়েছে। নিয়মিত কার্যক্রমের পাশাপাশি এসব পণ্য বিক্রি করা হবে।
ঢাকার বসুন্ধরা সিটি শপিং মলে অভিযান চালিয়ে ধাক্কামারা চক্রের দুই সক্রিয় সদস্যকে শুক্রবার বিকেলে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও থানা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন জুথী আক্তার শ্রাবন্তী ওরফে যুথী আক্তার জ্যোতি ওরফে লিমা আক্তার (২২) এবং শাহনাজ বেগম (৪২)।
ডিএমপির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে রোববার এ তথ্য জানানো হয়।
গত শুক্রবার বিকাল আনুমানিক ৫টার দিকে তেজগাঁও থানাধীন বসুন্ধরা সিটি শপিং মলে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, আসামিরা বসুন্ধরা সিটি শপিং মলের সপ্তম তলার লিফটের সামনে কৌশলে এক নারীকে ধাক্কা মেরে তার ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে নগদ ৪০ হাজার টাকা চুরি করে। এ সময় সন্দেহ হলে তিনি তার ব্যাগ পরীক্ষা করে টাকা খোয়া যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হন। এরপর ভুক্তভোগী ও তার স্বামী চিৎকার দিলে শপিং মলের নিরাপত্তা প্রহরীরা এগিয়ে আসেন। তাদের সহায়তায় ওই দুই নারীকে আটক করা হয়। তবে তাদের সঙ্গে থাকা অপর দু’জন কৌশলে পালিয়ে যান।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত আরও দুই নারী ভুক্তভোগী জানান, তাদের যথাক্রমে এক লাখ টাকা ও ৪.৫ গ্রাম ওজনের একটি স্বর্ণের টিকলি (মূল্য আনুমানিক ৬৪ হাজার ৫০০ টাকা) এবং ১০ হাজার টাকা চুরি হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা চুরির কথা স্বীকার করেছে।
তেজগাঁও থানা পুলিশ ও নারী পুলিশের সহায়তায় আসামি যুথী আক্তারের ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে চুরি হওয়া নগদ এক লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং স্বর্ণের টিকলি উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, যুথী আক্তার আন্তঃজেলা পকেটমার চক্রের নেতা। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১৪টি মামলা রয়েছে।
এ ঘটনায় তেজগাঁও থানায় মামলা করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানানো হয়।
রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে ২ হাজার ১৭২টি মামলা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ।
এছাড়াও অভিযানকালে ২৮৩টি গাড়ি ডাম্পিং ও ৭৫টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে।
ডিএমপি’র মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, বুধবার ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে এসব মামলা করা হয়।
ঢাকা মহানগর এলাকায় ট্রাফিক শৃঙ্খলা রক্ষায় ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
রাজধানী ঢাকার বস্তির শিশুদের দেহে নীরব ঘাতক সিসার বিপজ্জনক মাত্রার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এসব শিশুদের ৯৮ শতাংশের দেহে প্রতি ডেসিলিটার রক্তে ৬৭ মাইক্রোগ্রাম সিসা শনাক্ত করা হয়েছে।
আইসিডিডিআরবির (আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ) এক গবেষণায় এ চিত্র উঠে এসেছে। গতকাল বুধবার আইসিডিডিআরবির সম্মেলনকক্ষে এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এ গবেষণার ফল প্রকাশ করা হয়।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রে সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) শিশুদের দেহে প্রতি লিটারে ৩৫ মাইক্রোগ্রামের উপস্থিতিকে উদ্বেগজনক মাত্রা বলে বিবেচনা করে। তবে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে সিসার কোনো নিরাপদ মাত্রা নেই। সিসার যেকোনো মাত্রাই শিশুর জন্য ক্ষতিকর।
আইসিডিডিআরবি ২০২২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত রাজধানী ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে থাকা বস্তির শিশুদের ওপর গবেষণাটি পরিচালনা করা হয়। ওই গবেষণায় ২ থেকে ৪ বছর বয়সী ৫০০ শিশুর রক্তের নমুনা নেওয়া হয়।
আইসিডিডিআরবির অ্যাসিস্ট্যান্ট সায়েন্টিস্ট ডা. জেসমিন সুলতানা জানান, এসব শিশুর রক্তে প্রতি ডেসিলিটারে ৬৭ মাইক্রোগ্রাম সিসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। তবে তাদের মধ্যে অর্ধেকের শরীরের এই মাত্রা ছিল ৬৭ মাইক্রোগ্রামের বেশি। গবেষণায় দেখা যায়, সিসা পোড়ানো, গলানো বা রিসাইক্লিংয়ের (পুনঃচক্র) মতো কাজগুলো যেখানে হয়, সেসব এলাকার শিশুদের মধ্যে সিসায় আক্রান্ত হওয়ার হার বেশি।
উদাহরণ দিয়ে এই চিকিৎসক বলেন, গবেষণায় চিহ্নিত সিসানির্ভর শিল্পস্থাপনার এক কিলোমিটারের মধ্যে বসবাসকারী শিশুদের রক্তে সিসার মাত্রা ছিল পাঁচ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বে বসবাসকারী শিশুদের তুলনায় ৪৩% বেশি। সিসার অন্যান্য উৎসের মধ্যে রয়েছে ঘরের ভেতর ধূমপান, দূষিত ধূলিকণা, সিসাযুক্ত প্রসাধনসামগ্রী ও রান্নার পাত্র।
এই আলোচনা সভা থেকে লেড-অ্যাসিড ব্যাটারি বানানো বা রিসাইক্লিং করার কারখানা বা স্থান, অথবা যেসব কারখানা বা স্থাপনায় সিসা গলানো বা পোড়ানো হয়, এমন সিসানির্ভর শিল্পস্থাপনাগুলোর বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। কারণ, এসব প্রতিষ্ঠান সরিয়ে নিলে বা দূষণ কমানোর ব্যবস্থা নিলে সেসব এলাকার শিশুদের সিসা দূষণ থেকে বাঁচানো সম্ভব।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন আইসিডিডিআরবির রিসার্চ ট্রেইনি ডা. সানজিদা তাপসি আদিবা। স্বাগত বক্তব্য দেন আইসিডিডিআরবির হেলথ সিস্টেম অ্যান্ড পপুলেশন স্টাডিজ ডিভিশনের জ্যেষ্ঠ পরিচালক ড. সারাহ স্যালওয়ে।
রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে ১২ হাজার পিস ইয়াবা ও ইয়াবা পরিবহনে ব্যবহৃত বাসসহ দুই মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা-বিভাগ (ডিবি)। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, মো. বাবু মিয়া (৩৬) ও মো. রাকিবুল হাসান (২৮)। ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, সোমবার ডিবি-মতিঝিল বিভাগ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কতিপয় মাদক কারবারি একটি যাত্রীবাহী বাসে বিপুল পরিমাণ ইয়াবাসহ যাত্রাবাড়ীর আসমা আলী সিএনজি রিওয়েলিং অ্যান্ড ওয়ার্কশপ লি. এর পূর্ব পাশে হামজা বডিবিল্ডারের সামনে অবস্থান করছে বলে জানতে পারে।
পরে দুপুর পৌনে ৩ টার দিকে অভিযান চালিয়ে ইয়াবা পরিবহনে ব্যবহৃত একটি বাসসহ বাবু ও রাকিবুলকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে ১২ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।
এতে আরও বলা হয়, গ্রেফতারকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দীর্ঘদিন যাবৎ কক্সবাজার সীমান্ত এলাকা থেকে ইয়াবা সংগ্রহ করে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন মাদক কারবারিদের কাছে বিক্রি করত বলে স্বীকার করে।
রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ৩ হাজার ১৯২টি মামলা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ।
এছাড়াও অভিযানকালে ২৬৭টি গাড়ি ডাম্পিং ও ৮৪টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে।
ডিএমপি’র মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, বুধবার ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে এসব মামলা করা হয়।
ঢাকা মহানগর এলাকায় ট্রাফিক শৃঙ্খলা রক্ষায় ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
মন্তব্য