চাঁদপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি অধিগ্রহণের টাকা ছাড় নিয়ে সেলিম খানের রিটের শুনানি শেষে রায়ের জন্য ২০ এপ্রিল দিন ঠিক করে দিয়েছে হাইকোর্ট।
এ বিষয়ে সব পক্ষের শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার বিচারপতি আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি ইকবাল কবিরের হাইকোর্ট বেঞ্চ রায়ের এ দিন ঠিক করে।
এর আগে বুধবার সেলিম খানের অস্বাভাবিক দরে জমি কেনার বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত দিয়ে যুক্তি তুলে ধরে রাষ্ট্রপক্ষ।
শুনানি শেষে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অধিগ্রহণ করা জমির যে মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে, তার বিরুদ্ধে সেলিম খান হাইকোর্টে মামলা করেন। সেই দাবির বিরুদ্ধে আমরা রাষ্ট্রপক্ষে বক্তব্য তুলে ধরি। তিনি যে জায়গা কিনেছেন, তা ২০২০ সালে।
‘ছেলে-মেয়েদের নামে একই সালের জুন মাসে তিনি যে জমি কিনেছেন, তার দাম ৯৮ হাজার টাকা। অথচ একই বছরের একই মাসে ও একই দামে মাত্র চার/পাঁচ দিনের ব্যবধানে তিনি তার জমির দাম দেখিয়েছেন ২ লাখ টাকা। আবার তারও কয়েক দিনের ব্যবধানে ক্রয় করা জমির দাম ৩ লাখ টাকা দেখানো হয়েছে। মূলত সরকারের থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অপচেষ্টা করেছেন তিনি।’
অ্যাটর্নি জেনারেল আরও বলেন, ‘আমরা আদালতকে আরও বলেছি, জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে পার্শ্ববর্তী জমির ১২ মাসের মূল্যের সঙ্গে তুলনা করে দাম নির্ধারণ হবে। সরকার সেটি করেছে। ফলে উপরোক্ত কারণে তার মামলাটি চলে না।
‘এ ছাড়াও তিনি কিছু জাল দলিল আদালতে দাখিল করেছেন, যেখানে তিনি দেখিয়েছেন, তার জমি ক্রয় ২০১৯ সালের, কিন্তু প্ল্যান পাস করা ২০১৮ সালে। আমাদের কাছে মনে হয়েছে, সরকারি অর্থ আত্মসাতের উদ্দেশ্যে তিনি এসব প্রচেষ্টা চালিয়েছেন।’
চাঁদপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য জমি অধিগ্রহণে দলিল জালিয়াতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ ওঠে সেলিম খানের বিরুদ্ধে।
দেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৩১ হাজার ৬২০ কোটি টাকা। এর মধ্যে
চলতি বছরের প্রথম তিন মাসেই (জানুয়ারি-মার্চ) বেড়েছে ১১ হাজার কোটি টাকা।
রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্যে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
এর আগে ২০২২ সালের ডিসেম্বর প্রান্তিক শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছিল ১ লাখ ২০ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা।
গত বছরের মার্চে ব্যাংকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ১৩ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা। সে হিসাবে এক বছরে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১৮ হাজার ১৮০ কোটি টাকা।
ব্যাংক খাতে মোট ঋণের ৮ দশমিক ৮০ শতাংশই বর্তমানে খেলাপি। এর মধ্যে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোতে রয়েছে ৫৭ হাজার ৯৫৯ কোটি টাকা বা ১৯ দশমিক ৮৭ শতাংশ। এছাড়া বেসরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৬৫ হাজার ৮৮৯ কোটি টাকা বা ৫ দশমিক ৯৬ শতাংশ।
অন্যদিকে বিদেশি ব্যাংকগুলোর তিন হাজার ৪২ কোটি টাকা বা ৪ দশমিক ৯০ শতাংশ ঋণ খেলাপি। আর সরকারি মালিকানাধীন বিশেষায়িত তিনটি ব্যাংকের মোট ঋণের ১২ দশমিক ৮০ শতাংশ বা ৪ হাজার ৭৩২ কোটি টাকা বর্তমানে খেলাপি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, ব্যাংকগুলো এখন নিজেরাই নিজেদের ঋণ পুনঃতফসিল করছে। ফলে ব্যাংক নিজেই খেলাপি ঋণ কমিয়ে দেখানোর সুযোগ পাচ্ছে। তাই খেলাপি ঋণের এ তথ্য প্রকৃত চিত্র নয়। বাস্তবে খেলাপি ঋণ আরও বেশি হতে পারে। অনেক ব্যাংক ঋণ আদায় করতে না পেরে তারল্য-সংকটে ভুগছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মার্চে খেলাপি ঋণ দেয়ায় অনেক ব্যাংক দেরি করেছে। বিশেষ করে খেলাপি ঋণ কমানোর ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো কাজ করছে। ফলে বাস্তবে খেলাপি ঋণ এর চেয়েও বেশি।
এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে খেলাপি ঋণ ১ লাখ ৩১ হাজার ৬২০ কোটি টাকা হলেও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাবে তা প্রায় ৩ লাখ কোটি টাকা। কারণ, আইএমএফ পুনঃতফসিল ও পুনর্গঠন করা ঋণ, সন্দেহজনক ঋণ ও আদালতের আদেশে খেলাপি স্থগিতাদেশ থাকা ঋণকেও খেলাপি দেখানোর পক্ষে।
সরকার আইএমএফের কাছে বাজেট সহায়তা হিসেবে ৪৫০ কোটি ডলার ঋণ চাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে সংস্থাটির ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল আলোচনার জন্য বাংলাদেশ সফর করে। তার অংশ হিসেবে আইএমএফের মিশন প্রধান রাহুল আনন্দের নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধি দল খেলাপি ঋণ কমাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নেয়া পদক্ষেপ সম্পর্কে জানতে চেয়েছিল।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে একাধিক বৈঠকে দেশের ব্যাংক খাত নিয়ে নানা পরামর্শ দেয় আইএমএফ। সে সময় খেলাপি ঋণকে ব্যাংক খাতের অন্যতম সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কি না সে বিষয়েও জানতে চায় বহুজাতিক ঋণদাতা সংস্থাটি। ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনার তাগিদ দেয় আন্তর্জাতিক সংস্থাটি।
ব্যাংকের মতো আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতেও খেলাপি ঋণের পরিমাণ বাড়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, ‘বিতরণ করা এসব ঋণের বেশিরভাগই অসৎ উপায় অবলম্বন করে দেয়া হয়েছে। এমন লোকদের ঋণ দেয়া হয়েছে, যারা পরবর্তী সময়ে এসব টাকা আর পরিশোধ করছে না।
‘আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদ এসব ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে জড়িত থাকে। এসব ঋণ এখন আর ফেরত আসছে না। ফলে আর্থিক প্রতিষ্ঠানে দিন দিন খেলাপি ঋণের পরিমাণ বাড়ছে। আর্থিক খাত দুর্বল হওয়ার কারণে খেলাপি ঋণ বাড়ছে।’
তিনি বলেন, ‘গত কয়েক বছরে আর্থিক খাতে নানা রকম কেলেঙ্কারি সংঘটিত হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এসব খেলাপি ঋণের বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে। যেসব বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কঠোর পদক্ষেপ নেয়া জরুরি, সেসব বিষয়ে তারা এড়িয়ে যায়।’
আহসান মনসুর বলেন, ‘যারা ভালো কাজ করে তাদেরকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক শাস্তি দেয়। আর যারা খারাপ কাজ করে তাদের বিষয়ে কোনো কঠোর পদক্ষেপ নেয় না।’
আরও পড়ুন:স্থানীয় সরকারের সিটি নির্বাচন সুষ্ঠু করতে তফসিল ঘোষণার পর থেকেই নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন কমিশন। এবার তফসিল ঘোষণার পর থেকেই আচরণবিধি পালন নিশ্চিত করাতে কার্যকরী পদক্ষেপ নেয় সাংবিধানিক এ সংস্থা। তফসিল ঘোষণার পর এবারই বরিশালে প্রথম প্রস্তুতিমূলক একটি সভায় আয়োজন করে বর্তমান কমিশন। সে সভায় আইন-শৃঙখলা বাহিনীকে নির্বাচনী আচরণবিধি যাতে লঙ্গন না হয় সেক্ষেত্রে মোড়ে মোড়ে চেকপোস্ট বসানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন নির্বাচন কমিশনার মো. আহসান হাবিব খান।
অন্যদিকে তফসিল ঘোষণার পরপরই প্রার্থীরা মরিয়া হয়ে ওঠেন ভোটের মাঠে। প্রচারণা শুরু আগেই যে যার ক্ষমতা প্রদর্শন, মিছিল, শোভাযাত্রা করেন। আচরণবিধি ভঙ্গের দায়ে বরিশালের চরোমানাই পীরের ভাই ও বরিশাল সিটির ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়র প্রার্থী সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়জুল করীমকে। পাশাপাশি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরকেও সর্তক করেছে কমিশন।
সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ অনুযায়ী গত ৯ মে থেকে ২৬ মে পর্যন্ত ২৬ লাখের বেশি টাকা জরিমানা আদায় করেছে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ। ৭২টি চেকপোস্টের মাধ্যমে এই অর্থ জরিমানা আদায় করা হয়। গত ১৭ দিনে ১২৮২ টি মামলা হয় যাতে ৮০০ গাড়ি আটক করা হয়।
নির্বাচন কমিশনার মো. আহসান হাবিন খান নিউজবাংলাকে এ বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, ১২৮২ মামলা থেকে জরিমানা আদায় করা হয় ১০ লাখ ৯৪ হাজার টাকা। আটক থেকে জরিমানা আদায় করা হয় ১৪ লাখ ৪৮ হাজার ৫০০ টাকা। সব মিলিয়ে ২৬ লাখ ৪২ হাজার ৫০০ টাকা আদায় করে পুলিশ। সবচেয়ে বেশি মামলা করা হয় মোটরসাইকেলে। ১ হাজার ১ টি মোটরসাইকেলে মামলার পাশাপাশি ১৪৪ মোটরসাইকেল আটক করা হয়।
মূলত সড়ক পরিবহনের আইণ অমান্য করায় এসব মোটরযানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়।
আরও পড়ুন:গাজীপুরে সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি), সরকারসহ সব পক্ষের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে রোববার এক প্রশ্নের জবাবে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ জাতীয় নির্বাচনের স্বার্থে নতুন ভিসা নীতির ঘোষণা করেন।
এ নীতির আওতায় গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়া ব্যাহত করার জন্য দায়ী যেকোনো বাংলাদেশির ভিসার ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারবে যুক্তরাষ্ট্র।
গত ২৫ মে কোনো ধরনের সহিংসতা ছাড়াই গাজীপুর সিটির ভোট হয়। স্থানীয় সরকারের এ ভোটে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতির প্রভাব পড়েছে বলে মনে করছে বিরোধী বিভিন্ন দলের নেতাসহ অনেক নাগরিক।
যুক্তরাষ্ট্রের এমন নীতির পর নির্বাচন কমিশন থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করা হয়নি, তবে রোববার এ বিষয়ে মুখ খোলেন কমিশনার আলমগীর।
সরকারের কাছ থেকে নির্বাচন কমিশনের কাছে কখনোই চাপ আসেনি দাবি করে কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, ‘নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে হয় ৪৫ দিন আগে থেকে। যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি কী হয়েছে তা আমাদের জানা নেই। আমরা পড়ারও সুযোগ পাইনি, নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম।
‘ভিসা নীতির সাথে গাজীপুরে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পর্কিত নয়। নির্বাচনে আইন মেনে না চললে তিনি যেই হোন না কেন, ইসি ব্যবস্থা নেবে।’
নির্বাচনে যারা আসবেন, তাদের সবার জন্য নির্বাচন কমিশন সমান সুযোগ নিশ্চিত করবে জানিয়ে এই কমিশনার বলেন, ‘ভোটাররাও যেন ভোট দিতে পারে, তা নিশ্চিত করা হবে। গাজীপুরের মতোই আসন্ন সব নির্বাচন সুষ্ঠু করবে ইসি। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যা যা করার সবকিছুই করা হবে।’
সমালোচকরা সবসময়ই সমালোচনা করেন বলে মনে করেন এ কমিশনার।
তিনি বলেন, ‘গাজীপুরে সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নির্বাচন কমিশন, সরকারসহ সব পক্ষের ভাবমূর্তি ভালো হয়েছে। বিদেশিরা কী চাইল, সেটা নির্বাচন কমিশনের কাছে গুরুত্বপূর্ণ না। সংবিধান ও আইন অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন কাজ করে ও ভবিষ্যতেও করবে।’
ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটের ফল প্রকাশে বিলম্ব হওয়ার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘বড় সিটি করপোরেশন। এ ছাড়াও অনেক প্রার্থী ছিলেন। তাই নির্বাচনে ফলাফল দিতে সময় লেগেছে, তবে সংসদ নির্বাচনে ফলাফল দিতে এত সময় লাগবে না।
‘কারণ, সংসদ নির্বাচনে কোনো কাউন্সিলর পদপ্রার্থী থাকবে না। এ ছাড়া প্রায় চারটা সংসদীয় আসনের সমান গাজীপুর সিটি করপোরেশন। বড় হওয়াতেই মূলত ফলাফল প্রকাশে সময় বেশি লেগেছে।’
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব দল অংশগ্রহণ করবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত কোনো নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করে নাই। তাই আমরা বলতে পারি না আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে সব দল অংশগ্রহণ করবে, কিন্তু আমরা সব দলকে বলব নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য।’
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ পুলিশের প্রত্যেক সদস্যকে আরও জনবান্ধব হওয়ার তাগিদ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
রোববার দুপুরে বঙ্গভবনে পুলিশপ্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ তাগিদ দেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘পুলিশ সদস্যদের কাজ যাতে জনবান্ধব হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। পুলিশকে জনগণের বন্ধু হিসেবে কাজ করতে হবে।’
জনস্বার্থে বিভিন্ন মামলা নিষ্পত্তিতে যথাসম্ভব তাড়াতাড়ি তদন্ত প্রতিবেদন জমারও নির্দেশ দেন রাষ্ট্রপ্রধান।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশের ফলে সাইবার ক্রাইম বৃদ্ধি পাচ্ছে। সাইবার ক্রাইম মোকাবিলায় পুলিশের প্রতিটি সদস্যকে প্রযুক্তি জ্ঞানে প্রশিক্ষিত করে গড়ে তুলতে হবে।’
রাষ্ট্রপতি সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ দমনে পুলিশের ভূমিকার প্রশংসা করেন। তিনি ভবিষ্যতেও এ তৎপরতা অব্যাহত রাখার পরামর্শ দেন।
সাক্ষাৎকালে রাষ্ট্রপতিকে বাংলাদেশ পুলিশের সার্বিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত করেন আইজিপি।
ওই সময় রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব সম্পদ বড়ুয়া, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাহউদ্দিন ইসলাম, প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন এবং সচিব (সংযুক্ত) মো. ওয়াহিদুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:বিশ্বব্যাপী অস্ত্র প্রতিযোগিতায় যে অর্থ ব্যয় হচ্ছে, তা কেন ক্ষুধার্ত মানুষের পেছনে খরচ করা যাচ্ছে না, সে প্রশ্ন তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জুলিও কুরি শান্তি পদক প্রাপ্তির ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন উপলক্ষে রোববার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ প্রশ্ন তোলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে দেয়া বক্তব্যে সরকারপ্রধান শান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতির পিতার অবদান তুলে ধরেন।
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘“জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সারাটা জীবন শান্তির সাধনায় নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন। তিনি সবসময় বলতেন, আমি কোট করছি, ‘আমি চাই শান্তি। শান্তিই আমার কাম্য। ঘন, ঘোর, নিকষ কালো মেঘ দূর করে, দুর্যোগের ঘনঘটার অবসান ঘটিয়ে শান্ত, নীল আকাশের বুকে একঝাঁক শ্বেত কপোত উড়ে বেড়াক। আর সেই সাথে অশান্ত বিশ্বে নেমে আসুক শান্তির মহাময় প্রলেপ।’”
সরকারপ্রধান বলেন, ‘ছাত্রজীবন থেকেই তিনি (বঙ্গবন্ধু) নির্যাতিত মানুষের পাশে ছিলেন। সেই ৪৩ সালের দুর্ভিক্ষে দুর্ভিক্ষপীড়িত মানুষের পাশে ছিলেন ছাত্র শেখ মুজিব। ১৯৪৫ সালে দাঙ্গার সময় নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেই দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে তিনি দাঁড়িয়েছিলেন। সবসময় তিনি শান্তির পথেই ছিলেন এবং শান্তির কথাই তিনি বলে গেছেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি বারবার গ্রেপ্তার হয়েছেন মানুষের কথা বলতে যেয়ে। আমাদের মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকার যখন কেড়ে নেয়ার চেষ্টা করা হলো, তার প্রতিবাদ করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের অধিকার আদায়ের কথা বলতে গেছেন, গ্রেপ্তার হয়েছেন। শোষণ, বঞ্চনা থেকে মানুষকে মুক্তির কথা বলতে গেছেন, গ্রেপ্তার হয়েছেন।’
জাতির পিতার প্রসঙ্গে তার কন্যা আরও বলেন, “বারবার তিনি বন্দি হয়েছেন। তারই নেতৃত্বে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। স্বাধীনতা অর্জনের পর ৮ জানুয়ারি, ১৯৭২ সালে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর বন্দিখানা থেকে মুক্তি পেয়ে তিনি যখন লন্ডনে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন, তখন তিনি ঘোষণা করেছিলেন একই কথা, ‘সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারও সাথে বৈরিতা নয়।’ সেই নীতিতেই আমি বিশ্বাস করি।”
বিশ্বব্যাপী শান্তি প্রতিষ্ঠার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে সারা বিশ্বব্যাপী যে অবস্থা আমরা দেখছি, সেখানে আমরা চাই শান্তির মাধ্যমে, আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হোক। আমরা তো করেছি। পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি আমরা করেছি আলোচনার মাধ্যমে। প্রতিবেশী দেশ ভারতের সাথে ছিটমহল বিনিময় করেছি আমরা আলোচনার মাধ্যমে। তাহলে কেন আজকে এই অস্ত্র প্রতিযোগিতা?
‘অস্ত্র প্রতিযোগিতায় যে অর্থ ব্যয় হচ্ছে, সেই অর্থ কেন ব্যয় হয় না ক্ষুধার্ত শিশুদের জন্য, ক্ষুধার্ত মানুষের জন্য? যেখানে অস্ত্র প্রতিযোগিতার কারণে হাজার হাজার শিশু, নারী মানবেতর জীবনযাপন করছে সারা বিশ্বব্যাপী। আমরা আশ্রয় দিয়েছি রোহিঙ্গাদের। তারাও নির্যাতনের শিকার হয়েছিল। মনে পড়েছিল একাত্তর সালের কথা। তাই তাদেরকে আমরা আশ্রয় দিয়েছি।’
আরও পড়ুন:সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি রোববার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে এমন বার্তা দিয়েছে।
পূর্বাভাসে সিনপটিক অবস্থা নিয়ে বলা হয়, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে।
দিনভর আবহাওয়া কেমন থাকবে, তা নিয়ে জানানো হয়, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
তাপমাত্রার বিষয়ে পূর্বাভাসে জানানো হয়, সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে।
তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সাধারণত গরমও বাড়ে।
ঢাকায় বাতাসের গতি ও দিক নিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, দক্ষিণ/দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়ার গতিবেগ ঘণ্টায় ৮ থেকে ১২ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে।
ঢাকায় রোববার সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে সূর্য অস্ত যাবে জানিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, সোমবার ঢাকায় সূর্যোদয় ৫টা ১২ মিনিটে।
পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার অবস্থা নিয়ে বলা হয়, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে মৃদু তাপপ্রবাহ বা দাবদাহের সম্ভাবনা রয়েছে।
আরও পড়ুন:বেইজিংয়ের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (বিআরআই) আওতায় এই অঞ্চলে সংযোগ স্থাপনে অবদান রাখার বিষয়টি আলোচনা করেছে বাংলাদেশ ও চীন।
শনিবার ঢাকায় দ্বাদশ ফরেন অফিস কনসালটেশনে (এফওসি) মিলিত হয়ে দুই দেশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা এ আলোচনা করেন।
বিআরআইয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক সংযোগে অবদান রাখতেও আগ্রহ দেখিয়েছে দুপক্ষ। এ সময় অনলাইনে জুয়া ও মাদক পাচারের মতো উদীয়মান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সক্ষমতা তৈরিতে বাংলাদেশকে সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে চীন। এ ছাড়া রোহিঙ্গা সংকটসহ বহুপক্ষীয় আঞ্চলিক বিষয়েও আলোচনা হয়।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় আয়োজিত বৈঠকে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন ও চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভাইস মিনিস্টার সুন ওয়েইডং নিজ নিজ দেশের প্রতিনিধিত্ব করেন। বৈঠকের পর কোনো পক্ষই সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেনি।
পরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠায়। এতে বলা হয়, দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান প্রতিরক্ষা সহযোগিতায় সন্তোষ প্রকাশ করে নিয়মিত কর্মকর্তা পর্যায়ের আলোচনা এবং বিশেষ প্রশিক্ষণ কর্মসূচির সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, বৈঠকে চীনা ভাইস মিনিস্টার সুন ওয়েইডং ১০ বছর পর বাংলাদেশ সফর করছেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের নেতৃত্বে এ দেশের অভাবনীয় উন্নয়ন অর্জন হয়েছে বলে মুগ্ধতা প্রকাশ করেন। দুই দেশের প্রতিনিধিদল পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ের পাশাপাশি বহুপক্ষীয় ফোরামে সহযোগিতার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করে। ‘এক চীননীতি’তে অব্যাহত সমর্থনের জন্য বাংলাদেশের প্রতি তাদের কৃতজ্ঞতা পুনর্ব্যক্ত করেছে চীন। সাম্প্রতিকালে দুই দেশের মধ্যে উচ্চপর্যায়ের রাজনৈতিক সফর বিনিময়ের দুই দেশের মধ্যে কৌশলগত অংশীদারত্বকে আরও গভীর করেছে বলে উল্লেখ করে দেশটির প্রতিনিধিদল।
মন্ত্রণালয় আরও জানায়, বৈঠকে রোহিঙ্গা সংকটসহ অন্যান্য বহুপক্ষীয় ও আঞ্চলিক বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়। বাংলাদেশ থেকে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের দ্রুত, নিরাপদ, টেকসই এবং স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসনের সুবিধার্থে সহায়তা পুনর্ব্যক্ত করেছে চীন।
রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসন বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের পাশাপাশি সমগ্র অঞ্চলের জন্য উপকারী হবে বলে মনে করেন চীনের ভাইস মিনিস্টার। তিনি পাইলট প্রজেক্টের প্রথম ব্যাচের প্রত্যাবাসনের সুবিধার্থে দুই দেশের প্রতিনিধিদের মিয়ানমারে গিয়ে পরিস্থিতি দেখে আসা এবং বাংলাদেশে এসে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলার উদ্যোগের প্রশংসা করেছে চীনের প্রতিনিধিদল।
বৈঠকে কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলায় চীনের টিকা সহায়তার জন্য বাংলাদেশ আবারও ধন্যবাদ জানায়। দুই পক্ষ বাংলাদেশের বিভিন্ন অবকাঠামো প্রকল্পের অগ্রগতি পর্যালোচনা করে। এ সময় কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু টানেল এবং পদ্মা সেতু রেল সংযোগের মতো মেগা প্রকল্পের আসন্ন উদ্বোধনকে স্বাগত জানায় চীন। বৈঠকে বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ খাতে কয়েকটি অতিরিক্ত প্রকল্প প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করা হয়। এ ছাড়া গত বছর ১ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হওয়া ৯৮ শতাংশ পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা ব্যবহার করে চীনে রপ্তানি বাড়ানোর বিষয়ে বেইজিংয়ের সহযোগিতা চায় বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের গ্রীষ্মকালীন ফল বিশেষ করে আম, কাঁঠাল, পেয়ারা এবং হিমায়িত খাবার আমদানিতে আগ্রহ প্রকাশ করে চীন। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে চীনের সঙ্গে বিদ্যমান বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতা কমাতে শুল্কমুক্ত বাণিজ্য সুবিধার আওতায় শাকসবজি, ওষুধ, কাঁচা চামড়া, ফুটওয়্যার, পোশাক ইত্যাদি রপ্তানি আইটেম অন্তর্ভুক্ত করার অনুরোধ জানানো হয়।
চীনের ভাইস মিনিস্টার চট্টগ্রামে চীনা বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে তার দেশের কোম্পানিগুলোকে বিনিয়োগে উৎসাহিত করার আশ্বাস দেন। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ঢাকা-গুয়াংজু সরাসরি ফ্লাইট পুনরায় চালুর জন্য চীনের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সময়মতো আলোচনার পরামর্শ দেন। বিশেষ করে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ভিসা-সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে দুই পক্ষ নিয়মিত কনস্যুলার পরামর্শ চালু করতে সম্মত হয়েছে। ডিজিটাল প্রযুক্তি এবং বায়োটেকনোলজিতে উদ্ভাবনের বিষয়ে চীনের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ।
বৈঠকে দুই পক্ষ চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের পৃষ্ঠপোষকতায় দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক সংযোগ বাড়াতে আগ্রহ প্রকাশ করে। উভয়পক্ষ বিদ্যমান প্রতিরক্ষা সহযোগিতা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে। একই সঙ্গে নিয়মিত স্টাফ পর্যায়ের আলোচনা ও বিশেষ প্রশিক্ষণ কর্মসূচির সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হয়। ঘূর্ণিঝড় ও বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় আবহাওয়া স্যাটেলাইটের তথ্য শেয়ার করার জন্য বাংলাদেশ চীনকে ধন্যবাদ জানায়।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য