মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানকে বলা হয় জীববৈচিত্র্যের আধার। ১ হাজার ২৫০ হেক্টরের এ বনে রয়েছে বিরল ও বিপন্ন প্রজাতির অনেক উদ্ভিদ ও প্রাণী। দেশের মধ্যে শুধু এখানেই রয়েছে আফ্রিকান টিকওক গাছ। আছে বিশ্বব্যাপী মহাবিপন্ন চীনা বনরুইসহ অনেক বিপন্ন প্রাণী।
তবে অব্যবস্থাপনা, বনের জমি দখল, অপরিকল্পিত পর্যটনকেন্দ্র, বনের ভেতর দিয়ে যাওয়া সড়ক ও রেলপথের কারণে ঝুঁকিতে পড়েছে এখানকার উদ্ভিদ ও প্রাণী। এ অবস্থা চলতে থাকলে এ বনটিই হুমকিতে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।
বিরল উদ্ভিদ ও মহাবিপন্ন প্রাণীর আভাস
লাউয়াছড়া বনে রয়েছে বিশ্বব্যাপী মহাবিপন্ন অনেক প্রাণী। এর মধ্যে অন্যতম চশমাপরা হনুমান ও বনরুই। যুক্তরাষ্ট্রের ডেল্টা স্টেট ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক ড. এ এইচ এম আলি রেজা ২০১০ সালে লাউয়াছড়ায় গবেষণা চালিয়ে ৪৫ প্রজাতির সরীসৃপ এবং ১৫ প্রজাতির উভচর প্রাণীর সন্ধান পান।
এরপর ২০১১ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত এখানে গবেষণা চালায় ক্রিয়েটিভ কনজারভেশন অ্যালায়েন্স নামের একটি সংগঠন। বন বিভাগের সহযোগিতায় এ গবেষণায় লাউয়াছড়ায় ৫১ প্রজাতির সরীসৃপ এবং ২০ প্রজাতির উভচর প্রাণী পাওয়া যায়। নতুন পাওয়া এই ১১ প্রজাতির প্রাণীর অস্তিত্ব বাংলাদেশেই নতুন বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।
সবশেষ গবেষণা দলের প্রধান শাহারিয়ার রহমান সিজার বলেন, ‘আমরা বনে নতুন অনেক প্রাণী পেয়েছি। দীর্ঘ সময় নিয়ে প্রতিটি প্রজাতিকে স্বচক্ষে দেখে, যাবতীয় তথ্য নিয়ে আলাদাভাবে শনাক্ত করেছি।’
নিউজবাংলাকে তিনি জানান, লাউয়াছড়ায় উভচর প্রাণীদের মধ্যে ১৯ প্রজাতির ব্যাঙ ও এক প্রজাতির সিসিলিয়ান জাতীয় প্রাণী পাওয়া গেছে। আর সরীসৃপ শ্রেণির মধ্যে পাওয়া গেছে ২ প্রজাতির কচ্ছপ, ১৪ প্রজাতির টিকটিকিজাতীয় (২ প্রজাতির গুইসাপসহ) এবং ৩৫ প্রজাতির সাপ। এই প্রজাতিগুলোর মধ্যে রাজগোখরা, অজগর ও পাহাড়ি হলুদ কচ্ছপ ইতোমধ্যে মহাবিপন্ন বা বিপন্ন তালিকায় রয়েছে।
অন্যদিকে চিকিলা, বাইবুন গেছো ব্যাঙ, বিথের সাপের মতো প্রজাতিও লাউয়াছড়ায় পাওয়া গেছে। এগুলো প্রকৃতি সংরক্ষণের জন্য আন্তর্জাতিক ইউনিয়নের (আইইউসিএন) লাল তালিকায় রয়েছে।
বানর গবেষক তানভির আহমেদ নিউজবাংলাকে জানান, বাংলাদেশের মোট ১০ প্রজাতির বানরের মধ্যে ছয় প্রজাতিই লাউয়াছড়া বনে পাওয়া যায়। এর মধ্যে উল্লুক, চশমাপরা হনুমান ও লজ্জাবতী বানর বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এরা পৃথিবীব্যাপী বিলুপ্তির ঝুঁকিতে রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে প্রায় ৪০টি উল্লুক এবং কমপক্ষে ১২৯টি চশমাপরা হনুমান রয়েছে। লজ্জাবতী বানরও রয়েছে অনেক। লাউয়াছড়ার মতো ছোট বনে যতগুলো বানরজাতীয় প্রাণী রয়েছে, দেশের অন্য অনেক বনেই তা নেই।’
এ ছাড়া এই বনে ১৬৭ প্রজাতির উদ্ভিদের সন্ধান পেয়েছেন গবেষকরা। এর মধ্যে আফ্রিকান টিকওক গাছ দেশের মধ্যে শুধু এই বনেই পাওয়া যায়।
জানা গেছে, ১৯৩০ সালে এক ব্রিটিশ কর্মকর্তা লাউয়াছড়ায় টিকওক গাছের কয়েকটি চারা রোপণ করেন। এর মধ্যে দুটি গাছ টিকে ছিল। ২০০৬ সালে একটি গাছ ঝড়ে উপড়ে যায়। বর্তমানে জীবিত থাকা গাছটির উচ্চতা ১৫০ ফুট উঁচু।
আফ্রিকান টিকওক গাছের কাঠ ড্রামস ও কফিন বানাতে ব্যবহৃত হয়। ভেষজ ঔষধি গাছ হিসেবে আফ্রিকায় এর পাতা ও বাকলের ব্যবহার রয়েছে। এ গাছের কষ এক ধরনের অ্যান্টি-টিউমার এজেন্ট হিসেবে কাজ করে।
গবেষক রফিকুল হায়দার বলেন, ‘টিকওক খুবই বিরল প্রজাতির গাছ। এটি অনেক উপকারী। আমি গাছের টিস্যু সংগ্রহ করেছি। টিস্যু থেকে চারা তৈরির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’
হারিয়ে যাচ্ছে
লাউয়াছড়ায় একদিকে যেমন নতুন প্রজাতির প্রাণীর সন্ধান পাওয়া গেছে, অন্যদিকে পুরোনো অনেক প্রজাতি হারিয়েও গেছে।
গবেষকরা জানান, উদ্যানের ভেতরের ছড়া এবং ঝিরিপথগুলো ভরাট হয়ে যাচ্ছে। ঝিরিপথ দিয়ে আশপাশের বিভিন্ন চা বাগানে ব্যবহৃত কীটনাশক এসে মিশে যায়। ফলে এখানকার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অনেক প্রাণী হারিয়ে যাচ্ছে।
প্রায় পাঁচ বছর ধরে লাউয়াছড়ায় বন্যপ্রাণী নিয়ে গবেষণা ও সংরক্ষণের কাজ করছেন হাসান আল-রাজী ও মার্জান মারিয়া দম্পতি। তারা জানান, বনের ভেতরের ছড়া ও ঝিরিগুলো শুকিয়ে যাওয়ার কারণে অনেক প্রাণী হারিয়ে যাচ্ছে, বিশেষত পানির ওপর নির্ভরশীল প্রাণীগুলো।
তারা বলেন, চা বাগানের কীটনাশকের কারণেও অনেক ছোট কীটপতঙ্গ হারিয়ে গেছে। বনের মধ্যে যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে এবং প্রাণীদের আবাসস্থল নষ্ট হয়েছে, তাতে আগামী ১০-১৫ বছরে বেশ কিছু প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে যাবে।
আবাসন ও খাদ্যসংকট
অব্যাহতভাবে দখলের কারণে লাউয়াছড়ায় কমছে বনের জমি। অন্যদিকে গাছ চুরির কারণেও কমে আসছে বনাঞ্চলের পরিমাণ। গাছ কমায় বন্যপ্রাণীদের আবাসন ও খাদ্যসংকট দেখা দিয়েছে। যার কারণে প্রায়ই লোকালয়ে চলে আসে বন্যপ্রাণী। এ ছাড়া বন্যপ্রাণী শিকারের ঘটনাও ঘটছে নিয়মিত। এর মধ্যে হরিণ এবং শূকর শিকারের ঘটনাই বেশি ঘটে।
শ্রীমঙ্গলের বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশন পরিচালক সজল দেব বলেন, ‘লাউয়াছড়ার আশপাশের লোকালয় থেকে গত ১০ বছরে আমরা ৪৫০টি প্রাণী উদ্ধার করেছি। মূলত খাদ্যসংকটের কারণেই প্রাণীগুলো বন থেকে বের হয়ে যাচ্ছে।’
গবেষক সাবিত হাসান বলেন, ‘লাউয়াছড়া উদ্যানে বেশ কিছু কেব্লের ফাঁদ দেখেছি, যেগুলো মোটরসাইকেলের ব্রেক এবং ক্লাস দিয়ে তৈরি। এগুলো দিয়ে মূলত হরিণ ধরার জন্য ফাঁদ পাতা হয়। কোনো প্রাণী পানি খাওয়ার জন্য গেলে সেই ফাঁদে আটকা পড়ে।’
নিউজবাংলাকে লাউয়াছড়া বন ও জীববৈচিত্র্য রক্ষা আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক সামছুল হক বলেন, ‘লাউয়াছড়ার আশপাশে বনভূমি এবং চা বাগান থাকায় প্রায়ই বন্যপ্রাণীরা এসব এলাকায় যায়; যেখানে শিকারিরা ফাঁদ পেতে রাখে। বিশেষ করে ডলুছড়া, ছনকলা, ফুলবাড়িয়া চাবাগান এলাকায় শিকার বেশি হয়ে হয়।’
তা বন্ধ না করতে পারলে লাউয়াছড়ার অস্তিত্বই সংকটে পড়তে পারে বলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মুনতাসির আকাশ। ‘থাইল্যান্ডে আমাদের চেয়ে কয়েক গুণ সমৃদ্ধ একটি বন ছিল। কিন্তু শুধু কেবল দিয়ে শিকার করার কারণে সেই বনে এখন প্রাণী নেই। লাউয়াছড়ায় একই কাজ করা হচ্ছে।’
মৃত্যুফাঁদ সড়ক-রেলপথ
লাউয়াছড়া বনের ভেতর দিয়ে গেছে সাড়ে ছয় কিলোমিটারের সড়কপথ। এ ছাড়া রেলপথ রয়েছে প্রায় আট কিলোমিটার। এই দুই পথে প্রতিদিন প্রাণ হারাচ্ছে প্রাণী।
স্থানীয়রা জানান, চলাচলের সময় হঠাৎ করে সামনে চলে আসা যানবাহনের আলোয় প্রাণীরা হতভম্ব হয়ে পড়ে। তখন দ্রুতগামী গাড়ির ধাক্কায় অনেক প্রাণী মারা যায়। বনের ভেতর থেকে সড়ক ও রেলপথ সরানোর জন্য দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানানো হলেও তা বাস্তবায়নের দেখা নেই।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম বলেন, ‘আমরা বনের ভেতরের সড়ক বন্ধ করার দাবি জানিয়েছিলাম, অথচ এই সড়ককে আরও বড় করা হয়েছে। ফলে গাড়ির গতি বেড়েছে। এতে প্রাণী মৃত্যুর হার বেড়েছে।’
সড়ক ও রেলপথে প্রতিদিন কী পরিমাণ প্রাণী মারা যায় এ নিয়ে সাম্প্রতিক কোনো গবেষণা নেই। তবে পুরোনো কিছু গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, প্রতিদিন অন্তত তিনটি প্রাণী মারা যায়। এর মধ্যে বেশির ভাগই সরীসৃপ ও উভচর প্রাণী।
লাউয়াছড়ায় সড়ক ও রেলপথে প্রাণীর মৃত্যু নিয়ে গবেষণা করে ক্রিয়েটিভ কনজারভেশন অ্যালায়েন্স। তাদের গবেষণাপত্রটি প্রকাশ হয় ২০১৩ সালে। ১৪ মাসে তারা লাউয়াছড়ার ৫০৩টি প্রাণীর মরদেহ খুঁজে পায়। যেগুলো প্রাণ হারিয়েছে শুধু সড়ক দুর্ঘটনায়।
নিউজবাংলাকে এই দলের গবেষক শাহারিয়ার সিজার বলেন, ‘মৃত প্রাণীর বেশির ভাগেরই দেহ পাওয়া যায় না, কারণ শিয়ালসহ কিছু প্রাণী মরদেহগুলো খেয়ে ফেলে।’
তিনি আরও বলেন, ‘গবেষণা সাত বছর আগে হলেও এখনও সেই অবস্থার পরিবর্তন হয়নি। এখনও প্রতিদিন গড়ে তিনটি প্রাণী মারা যাচ্ছে সড়ক ও রেলপথে।’
২০১৭-এর সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থীরা একই বিষয়ে একটি গবেষণা করেন। সেই দলের সদস্য মো. সালাহউদ্দীন বলেন, ‘আমরা এক দিনেই বনে ১৬৫টি প্রাণীর মরদেহ খুঁজে পেয়েছি।’
প্রাণীর মৃত্যুরোধে লাউয়াছড়ার বাইরে দিয়ে বিকল্প সড়ক ও রেলপথ তৈরির প্রয়োজনীয়তা জানিয়ে বন্যপ্রাণী গবেষক তানভির আহমেদ বলেন, ‘তার আগে সড়কে ঘন স্পিড ব্রেকার তৈরি করতে হবে। রেললাইনের ওপর রশি দিয়ে তৈরি করা সেতুর কার্যকারিতাও পরীক্ষা করতে হবে।’
পর্যটকও যখন সমস্যা
লাউয়াছড়ার নতুন সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে পর্যটন। ১৯৯৬ সালে এটিকে জাতীয় উদ্যান ঘোষণার পর থেকেই এখানে পর্যটক সমাগম বেড়েছে। দিনে পাঁচ হাজারের অধিক পর্যটকও ঢুকছেন বনটিতে। পর্যটকদের চাপেও বন ছেড়ে পালাচ্ছে প্রাণী। এ ছাড়া উদ্যানের আশপাশে গড়ে ওঠা বিভিন্ন রিসোর্টের উচ্চশব্দের কারণেও হুমকিতে পড়েছে এখানকার প্রাণীগুলো।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মনিরুল এইচ খান বলেন, ‘উচ্চশব্দ ও আতঙ্কের কারণে বন্যপ্রাণীদের প্রজনন ক্ষমতা কমে যায়। অতিমাত্রায় পর্যটকদের উপস্থিতির কারণেও অনেক প্রাণী বন ছেড়ে চলে যায়।’
কী ভাবছে বন বিভাগ
উদ্যানে দুর্ঘটনায় প্রাণীর মৃত্যু ও শিকার ঠেকাতে বিভিন্ন উদ্যোগের কথা জানিয়েছেন বিভাগীয় বন র্কমকর্তা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা গাছ চুরির ব্যাপারে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছি। লাউয়াছড়া এবং আশপাশে মারা যাওয়া প্রাণীর ডাটাবেস সংরক্ষণ শুরু করেছি। লাউয়াছড়ার গেটে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করেছি।
‘পর্যটকদের জন্য নির্দিষ্ট সীমানা করে দিতে এবং উদ্যানের ভেতর থেকে পর্যটন স্থান একপাশে সরিয়ে নিতে একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। পর্যটকের চাপ কমিয়ে তাদের শৃঙ্খলার মধ্যে আনারও চেষ্টা চলছে।’
এই বন কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘বনের ভেতর থেকে সড়ক সরানো এবং ট্রেনের গতি সীমিত করার প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। বনের উভয় পাশে দুটি চেকপোস্ট বসবে, যাতে বনের ভেতর গাড়ি প্রবেশ করলে তার গতি নিয়ন্ত্রিত থাকে।’
আরও পড়ুন:অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের পর নিরাপত্তাহীনতায় পুনরায় বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময় গারো পাহাড় সীমান্তে মানব পাচারকারী চক্রের দুই সদস্যসহ ৭ জনকে আটক করেছে বিজিবি।
সোমবার (২৫ আগস্ট) সকাল পৌণে সাতটার দিকে শেরপুরের ঝিনাইগাতি উপজেলার নকশি সীমান্ত পথে নকশি ক্যাম্পের টহলরত বজিবি সদস্যরা তাদের আটক করে বিকেলে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
বিষয়টি ২৬ আগষ্ট সকালে বিজিবি পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়।
আটককৃতরা হলো মানব পাচারকারী চক্রের সদস্য নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বুরুঙ্গা গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে রমজান আলী (২৪) ও আসমত আলীর ছেলে রাসেল (১৬)। আটক অনুপ্রবেশকারীরা হলো, নড়াইল জেলার কালিয়া থানার বোমবাঘ গ্রামের শামীম শেখ (২৩), আফসানা খানম (২২), রুমা বেগম (৩২), মিলিনা বিশ্বাস (২৮) ও তিন বছর বয়সী শিশু কাশেম বিশ্বাস।
বিজিবি এক প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানায়, মাথাপিছু ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে গত ২৩ আগস্ট রাতের আধারে নালিতাবাড়ীর সীমান্ত এলাকা দিয়ে অবৈধ পথে নারী এবং শিশুসহ ৫ বাংলাদেশীকে ভারতে পাঠায় মানব পাচারকারী রমজান আলী ও রাসেল। কিন্তু ভারতীয় পুলিশের তৎপরতায় নিরাপত্তাহীনতায় পড়ে এ পাঁচ বাংলাদেশী। এ কারণে ২৫ আগষ্ট সোমবার সকাল পৌণে সাতটার দিকে ঝিনাইগাতির নকশি সীমান্তের কালিমন্দির এলাকা দিয়ে পুনরায় তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এসময় টহলরত বিজিবি সদস্যরা টের পেয়ে সবাইকে আটক করে। পরে মানব পাচারে জড়িত দুইজনের বিরুদ্ধে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে এবং অন্য ৫ জনের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের অপরাধে নালিতাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করা হয় এবং সবাইকে নালিতাবাড়ী থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ময়মনসিংহ বিজিবি’র ৩৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মেহেদী হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিজিবির পক্ষ থেকে এ ধরনের অভিযান চলমান থাকবে।
ঝালকাঠিতে গ্রাহকদের চাহিদা বিবেচনায় এনে ব্রান্ডশপ লোটো ও লি কুপার প্রতিষ্ঠানটি তাদের ১৩২তম ফ্লাগশিপ আউটলেট উদ্বোধন করেছে।
এক্সপ্রেস লেদার প্রোডাক্ট লিঃ এর ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর কাজী জাভেদ ইসলাম সহ কোম্পানির অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের সাথে নিয়ে ফিতা কেটে আউটলেটটি উদ্বোধন করেন ঝালকাঠির পুলিশ সুপার উজ্জ্বল কুমার রায়।
পৌর শহরের সাধনার মোড়ে মঙ্গলবার ২৬ আগষ্ট সকাল ১০টায় লোটো ও লি কুপারের ফ্ল্যাগশিপ আউটলেটদ্বয়ের শুভ উদ্বোধন আনুষ্ঠানে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন পর্যায়ের গ্রাহক ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
ঝালকাঠিতে কোম্পানীর এ যাত্রার প্রথম দিনে স্থানীয় ফ্যাশন সচেতন তরুণ তরুণীরা তাদের পছন্দের পন্য কালেকশন বেছে নিতে ভীর জমায়।
কোম্পানীর পক্ষ থেকে জানানো হয় প্রথম তিনদিনের প্রতিদিন প্রথম ৩০ জন পাবেন ৫০% ছাড়, ২য় ৩০ জন পাবেন ৪০% ছাড়, ৩য় ৩০ জন পাবেন ৩০% ছাড়, ৪র্থ ৩০ জন পাবেন ২০% ছাড় এবং তৎপরবর্তী সকল কাস্টমার পাবেন ১০% ছাড়। এই বিশেষ ছাড় ২৬শে আগষ্ট থেকে শুরু হয়ে ২৮ তারিখ পর্যন্ত চলমান থাকবে
নওগাঁয় সপ্তম শ্রেণীর এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে আটক রেখে ধর্ষণ মামলায় আ: সালাম (৩৮) নামে এক আসামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
রোববার (২৪ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে নওগাঁর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মেহেদী হাসান তালুকদার এ রায় দেন।
যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আ: সালাম সদর উপজেলার বর্ষাইল মধ্যপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ভিকটিম ওই শিক্ষার্থীর পরিবার পত্নীতলা উপজেলায় ভাড়া থাকতেন। ভাঙ্গারী ব্যবসার সুবাদে আসামী আ: সালামও পাশাপাশি একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। ভিকটিম মাদ্রাসায় যাওয়া আসার পথে আ: সালাম বিভিন্ন সময় কু-প্রস্তাব দিতো এবং রাস্তাঘাটে বিরক্ত করতো। বিষয়টি জানাজানি হলে আসামী আ: সালাম ওই ভিকটিমের পরিবারকে গালিগালাজ ও ভয়ভীতি দেখাতো। এরই একপর্যায়ে ২০২২ সালের ১১ জুলাই বিকেল তিনটার দিকে আসামী আ: সালাম একটি বাজার এলাকা থেকে ওই শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে নওগাঁ সদর উপজেলার ভবানীপুর দক্ষিন পাড়া গ্রামের মোজাফ্ফর রহমানের ভাড়া বাড়িতে আটক রেখে একাধিকবার ধর্ষণ করে। বিষয়টি বুঝতে পেরে ওই শিক্ষার্থীর বাবা পত্নীতলা থানায় অভিযোগ করলে র্যাব ওই বাড়ি থেকে আসামিকে গ্রেফতার ও মেয়েকে উদ্ধার করে। পরে তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে ঘটনার সত্যতা থাকায় আসামী আ: সালামসহ চার জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। আদালত ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহন শেষে আজ আ: সালামকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়। বাকি আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় তাদেরকে খালাস দেওয়া হয়।
মামলার এ রায়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রেজাউল করিম সন্তোষ প্রকাশ করেন। আসামী পক্ষের আইনজীবী ফাহমিদা কুলসুম উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানান।
জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার রায়কালী ইউনিয়নের বালুকাপাড়া গ্রামে রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়ে পুনরায় তাকে বিয়ে করায় এক দম্পতিকে দেড় বছর ধরে 'সমাজচ্যুত' করে রাখা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এ বিষয়ে নালিশ দেওয়ার জের ধরে পেটানো হয় দিনমজুর আব্দুল জলিল প্রামানিককে। প্রতিপক্ষের লোকজনের মারধরে এতে তার বাম হাতের হাঁড় ভেঙে গেছে।
এঘটনায় তিনি একটি থানায় অভিযোগ করেছেন। গত মঙ্গলবার রাতে সেটি মামলাটি হিসেবে রের্কড করা হয়। তবে মামলার এজাহারে সমাজচ্যুত করে রাখার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি।
সরেজমিনে বালুকাপাড়া গ্রামে গিয়ে আব্দুল জলিলকে ১৮ মাস ধরে সমাজচ্যুত করে রাখার তথ্য জানা গেছে। আব্দুল জলিলের সমাজচ্যুত করার ঘটনাটি স্থানীয় রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রশীদ মন্ডলও অবগত আছেন। তিনি দুই পক্ষকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকেও সমাজচ্যুত করে রাখার বিষয়টি সমাধান করতে পারেনি।
গ্রামবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পারিবারিক কলহের কারণে আব্দুল জলিল প্রামানিক রাগের মাথায় তার স্ত্রীকে তালাক দেন। এঘটনার ২৯ দিন পর তিনি আবারও স্ত্রীকে বিয়ে করেন। এ ঘটনায় গ্রাম্য মাতব্বরেরা ক্ষুব্ধ হয়ে আব্দুল জলিল প্রামানিকের পরিবারকে সমাজচ্যুত করে রাখেন। সেই সময় জলিল প্রামানিক বিষয়টি আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)কে জানান। ইউএনও রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মণ্ডলকে বিষয়টি সমাধানের দায়িত্ব দেন। ইউপি চেয়ারম্যান উভয়পক্ষকে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে বৈঠকে বসেছিলেন। তবে কার্যত কোন কোনো সমাধান করতে পারেননি। এতে গ্রাম্য মাতব্বরেরা আব্দুল জলিলের ওপর আরও ক্ষুব্ধ হন। সমাজচ্যুত করে রাখা আব্দুল জলিল গত ১৫ আগস্ট রাত আটটার দিকে গ্রামের মসজিদের দিকে রওনা হন। এসময় মাতব্বরেরা তাকে দুই দফায় প্রচন্ড মারধর করেন। এতে তার বাম হাতের হাঁড় ভেঙে যায়। তিনি চিকিৎসা নিয়ে থানায় আট জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
বালুকাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আজিজুল ইসলাম বলেন, দেড় বছর আগে আব্দুল জলিল তার স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। কয়েক দিন পর আবার সংসার শুরু করেন। এনিয়ে গ্রামের মাতব্বরেরা আব্দুল জলিল প্রামানিককে সমাজচ্যুত করেন। এনিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় বৃদ্ধা লুৎফন নেছা বলেন, আমি কাজ করতে পারিনি। আব্দুল জলিলের বউ আমার বাড়িতে এসে জবাই করা মুরগির তরকারি রান্না করে দিয়েছিল। আমি জলিলের বাড়িতে গিয়ে এক বাটি মুরগির মাংসের তরকারি দিয়ে এসেছি। এতে আমাকেও সমাজচ্যুত করার হুমকি দিয়েছিল।
বালুকাপাড়া গ্রামের মোড়ের দোকানি হাফিজার রহমান বলেন, বউকে তালাক দেওয়ার ঘটনায় আব্দুল জলিল প্রামানিককে গ্রামের মাতব্বরেরা সমাজচ্যুত করেছেন। আব্দুল জলিল গ্রামের সামাজিক কোন কর্মকান্ডে অংশ নিতে দেয় না।
আব্দুল জলিল প্রামানিক বলেন, আমি রাগের মাথায় স্ত্রী তালাক দিয়েছিলাম। ২৯ দিন পর আবার বিয়ে পড়ে নিয়েছি। একারণে গ্রামের মাতব্বর রকি খান, মিল্টন খাঁ, আবু সুফিয়ানসহ আরও ১০-১২ জন আমাকে সমাজচ্যুত করেছেন। রাগের মাথায় স্ত্রীক। তালাক দিলে পুনরায় বিয়ে করা যাবে ঢাকার একজন মুফতির মতামত নিয়ে আসার পরও তারা মানেনি। তারা বলছে হিল্লা বিয়ে ছাড়া আমার বিয়ে বৈধ হবে না। তারা আমাকে দীর্ঘ দেড় বছর ধরে গ্রামের মসজিদে নামাজ আদায়ে করতে ও জানাজায় শরিক হতে বা দেননি। মিলাদ মাহফিল দাওয়াত দেওয়ার মাতব্বরদের চাপে পর ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এমনকি গ্রামের কারও জমিতে দিনমজুরি কাজও করতে পারব না বলে লোকজন জানিয়ে দেন। একারণে কেউ আমাকে কাজে নেয় না। সমাজচ্যুত করার জের ধরে মসজিদে যাওয়ার সময় মাতব্বরদের একাংশের লোকজন আমাকে মেরে হাত ভেঙে দিয়েছেন।
গ্রামের মাতব্বদের একজন মো. মিল্টন খাঁ। তিনি আব্দুল জলিলের দায়ের করা মামলার দুই নম্বর আসামি। তাকে তার বাড়িতে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আব্দুল জলিল সমাজ বিরোধী কাজ করেছেন। একারণে গ্রামের লোকজন তাকে সমাজচ্যুত করেছেন। আব্দুল জলিল সমাজ বিরোধী কি কাজ করেছেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আব্দুল জলিল তার স্ত্রীকে তালাক দিয়ে আবার স্ত্রীকে নিয়েছেন। এটা সমাজ বিরোধী কাজ।
আক্কেলপুর রায়কালী ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মন্ডল বলেন, আব্দুল জলিল মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। তিনি রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। এঘটনায় গ্রামের মাতব্বরেরা আব্দুল জলিলকে সমাজচ্যুত করেন। আব্দুল জলিল ইউএনও স্যারের কাছে অভিযোগ দিয়েছিলেন। ইউএনও স্যার আমাকে ঘটনাটি সমাধানের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। উভয়পক্ষকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে বৈঠক করেছি। আব্দুল জলিল যেন সামাজিকভাবে মিশতে পারে সেটি বলেছি। সমাজচ্যুতের ঘটনার জের ধরে আব্দুল জলিলকে মারধর করা হয়েছে। এতে তার বাম হাত ভেঙেছে বলে জেনেছি।
আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, আব্দুল জলিল প্রামানিক থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছিলেন। অভিযোগটি তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় সেটি মামলা হিসেবে রের্কড করা হয়েছে। আসামি আট জনের মধ্যে ইতিমধ্যে আদালত থেকে পাঁচজন আসামি জামিন নিয়েছেন, অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে ২৭,২৪৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে। বিগত ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের একই মাসে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ছিল ২১,৯১৬ কোটি টাকা। জুলাই-২০২৫ মাসে বিগত জুলাই-২০২৪ মাসের তুলনায় ৫,৩৩৩ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। জুলাই ২০২৫ মাসে রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২৪.৩৩%।
জুলাই’২৫ মাসে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক থেকে। এ খাত থেকে আদায় হয়েছে ১১,৩৫২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায়ের পরিমান ছিল ৮,৫৭১ কোটি টাকা। জুলাই ২০২৫ মাসে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ৩২.৪৫%।
আয়কর ও ভ্রমন কর খাতে জুলাই’২৫ মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৬,২৯৫ কোটি টাকা যা জুলাই’২০২৪ মাসের একই খাতে আদায়কৃত ৫,১৭৫ কোটি টাকার চাইতে ১,১২০ কোটি টাকা বেশি। আয়কর ও ভ্রমন করের ক্ষেত্রে জুলাই ২০২৫ মাসের আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২১.৬৫%।
২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে আমদানি ও রপ্তানি খাতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৯,৬০২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায় ছিল ৮,১৭০ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধির হার ১৭.৫২%।
রাজস্ব আদায়ের এ ধারা ভবিষ্যতে অব্যাহত রাখার জন্য আয়কর, মূল্য সংযোজন কর এবং কাস্টমস শুল্ক-কর আদায়ে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারিদের প্রচেষ্টা আরো জোরদার করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নানাবিধ কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
সম্মানিত করদাতাগণ আইনের যথাযথ পরিপালন নিশ্চিত করে যথাযথ পরিমান কর পরিশোধের মাধ্যমে দেশ গড়ার কাজের অন্যতম অংশীদার হবেন মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশাবাদী।
কুমিল্লা নাঙ্গলকোটে ইউপি সদস্য আলাউদ্দিনকে বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামিকে ঢাকার হাতিরঝিল রেল মগবাজার রেলগেট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। শুক্রবার দিনগত রাতে অভিযানটি শেষ করে র্যাব।
গ্রেফতারকৃত আসামী শেখ ফরিদ (৪৫) নাঙ্গলকোট উপজেলার বক্সগঞ্জ আলীয়ারা গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে।
শনিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে কুমিল্লা অশোকতলা এলাকায় র্যাব অফিসে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন
র্যাব ১১ এর কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাদমান ইবনে আলম।
মেজর সাদমান জানান, নাঙ্গলকোটের আলিয়ারা গ্রামে দুই পরিবারের মধ্যে বংশপরম্পরায় একটি বিরোধ চলে আসছিল। গেল গেল ২৫ জুলাই গরুর ঘাস খাওয়া কে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
সেদিন দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৫ জন গুলিবিদ্ধসহ ২৫ জন আহত হয়।
এ ঘটনার রেশ ধরে গেলো ৩ আগস্ট দুপুরে আলিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা আলাউদ্দিন তার চাচাতো ভাইয়ের জানাজার নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা তাকে একটি সিএনজিতে তুলে নিয়ে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে।
পরে এ ঘটনায় ৫ আগস্ট নিহতের ছেলে বাদী হয়ে নাঙ্গলকোট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বিপদসীমা অতিক্রম করায় নির্ধারিত সময়ের আগেই খোলা হয়েছে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সব জলকপাট। সোমবার (৫ আগস্ট) রাত ১২টা ২ মিনিটে হঠাৎ পানি বাড়তে থাকায় জরুরি ভিত্তিতে কেন্দ্রের ১৬টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়।
কর্ণফুলি পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানান, রাতে লেকের পানির উচ্চতা ১০৮.০৫ ফুট ছুঁয়ে গেলে বিপদসীমা অতিক্রম করে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলি নদীতে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, “প্রথমে সোমবার (৪ আগস্ট) বিকেল ৩টায় পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা পরের দিন মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জলকপাট খোলার ঘোষণা দিয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ অতিরিক্ত পানি প্রবাহের কারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই সোমবার রাতেই জলকপাট খুলে দিতে হয়। তবে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
তিনি আরও জানান, কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট বর্তমানে সচল রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে আরও ৩২ হাজার কিউসেক পানি লেক থেকে কর্ণফুলিতে গিয়ে পড়ছে। সবমিলিয়ে পানি নিঃসরণের হার এখন প্রতি সেকেন্ডে ৪১ হাজার কিউসেক।
ভাটি এলাকার জনসাধারণের উদ্দেশে তিনি বলেন, “পানি প্রবাহ বাড়লেও আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে, এবং প্রয়োজনে আমরা আগেভাগেই ব্যবস্থা নেব।”
স্থানীয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও এ বিষয়ে আগেই অবহিত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন কর্তৃপক্ষ।
মন্তব্য