ছিলেন সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি। ওয়ান-ইলেভেনের পটপরিবর্তনে হারিয়েছেন সে পদ, এরপর খেটেছেন জেলও। একসময় নিজ দলেই কোণঠাসা হয়ে পড়েন আরিফুল হক চৌধুরী।
খাদের কিনার থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে টানা দুইবার সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। পরে হয়েছেন দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। তবু আরিফুল হক চৌধুরীর সঙ্গে সিলেট বিএনপি নেতাদের দূরত্ব ঘোচেনি, বরং আরিফ এখনও নেতাদের কাছে অনেকটাই ‘ব্রাত্য’।
নেতাদের উপেক্ষা থাকলেও আরিফুল হক চৌধুরীর চোখ এবার সিলেট বিএনপির সভাপতির পদে। প্রায় আড়াই বছর পর হতে যাওয়া সম্মেলনে জেলা বিএনপির শীর্ষস্থানেই এখন নজর এই নেতার।
চলতি মাসের প্রথম দিকেই জেলা বিএনপির সম্মেলন হওয়ার কথা। এরই মধ্যে বেশির ভাগ ইউনিট কমিটির সম্মেলন শেষ করেছে আহ্বায়ক কমিটি। এখন চলছে জেলা কমিটির সম্মেলন প্রস্তুতি।
জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হতে আগ্রহী প্রার্থীরা কয়েক দিন ধরেই তোড়জোড় শুরু করেছেন। কাউন্সিলরদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন তারা।
অবশ্য শীর্ষ দুই পদের জন্য এত দিন যাদের নাম শোনা গিয়েছিল, তাদের মধ্যে ছিলেন না আরিফুল হক চৌধুরী, বরং সিলেট মহানগর বিএনপির রাজনীতিতেই সক্রিয় ছিলেন আরিফ। সেই তালিকায় শেষ সময়ে এসে যুক্ত হয়েছে সিলেট সিটি মেয়রের নাম। জেলা বিএনপির সভাপতি হতে তিনি তৎপরতা শুরু করেছেন বলেও জানা গেছে।
আরিফুল হক চৌধুরীর সভাপতি প্রার্থী হওয়ার খবরে সিলেটে বিএনপির রাজনীতিতে দেখা দিয়েছে নতুন হিসাব-নিকাশ। দলটির বহুধাবিভক্ত রাজনীতিতে উত্তাপও ছড়াচ্ছে আরিফের প্রার্থিতা।
জেলার সভাপতি পদে প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে আরিফুল হক চৌধুরী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি প্রার্থী হব, বাকিটা দলের নেতা ও কাউন্সিলররা বিবেচনা করবেন। এই মুহূর্তে এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে চাই না।’
আরিফের প্রার্থিতা প্রসঙ্গে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও আগামী কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী আব্দুল আহাদ খান জামাল বলেন, ‘তার সভাপতি প্রার্থী হওয়া একটি বড় চমক। এখনো আমরা বুঝতে পারছি না, তিনি আসলেই প্রার্থী হবেন কি না। কারণ তিনি জেলার রাজনীতিতে কখনোই সক্রিয় ছিলেন না। অবশ্য শুনতে পাচ্ছি, তিনি প্রার্থী হওয়ার জন্য বিভিন্ন কাউন্সিলরদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন।’
বিএনপি আমলের সাবেক অর্থমন্ত্রী প্রয়াত এম সাইফুর রহমানের হাত ধরে রাজীতিতে উত্থান আরিফুল হক চৌধুরীর। সাইফুর রহমান তাকে বলতেন ‘ডিপলোমেটিক লিডার’। রাজনীতিতে এই ‘ডিপলোমেটিক ক্যারিশমা’ অনেকবারই দেখিয়েছেন আরিফ।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি- দুই দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে তার দূরত্ব। তার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ নেতাদের অভিযোগ, তিনি সরকারের কাছ থেকে সুবিধা নিয়ে সরকারের বিরোধিতা করেন। মেয়র আরিফকে ‘বর্জনের’ ঘোষণাও দিয়েছে সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ।
এদিকে নিজ দল বিএনপি নেতাদের অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে আরিফের বিরুদ্ধে। তাদের অভিযোগ, আরিফ নিজ দলকে এড়িয়ে সরকারের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখেন। দুঃসময়েও বিএনপির কর্মসূচিতে পাওয়া যায় না তাকে।
এসব অভিযোগ সত্ত্বেও টানা দুইবার বিএনপির মনোনয়নে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন আরিফ। দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতেও ঠাঁই পেয়েছেন।
সিলেট আওয়ামী লীগের দুই নেতা সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এবং বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গেও বিশেষ সখ্য রয়েছে আরিফুল হক চৌধুরীর।
জেলা বিএনপির কাছে নিষ্ক্রিয় থাকা মেয়র আরিফ সম্প্রতি হঠাৎ করেই বিএনপির বিভিন্ন কর্মসূচিতে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। গত রোববার সিলেট নগর বিএনপির একটি ওয়ার্ড কমিটির গঠনের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তিনি।
অন্যান্য সময়ে প্রকাশ্যে সরকারের বিরুদ্ধাচরণ এড়িয়ে চলা মেয়র আরিফ রোববারের অনুষ্ঠানে বলেন, আওয়ামী লীগের অত্যাচারে দেশের জনগণ অতিষ্ঠ।
সোমবার দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে সিলেট মহানগর বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশেও অতিথি ছিলেন আরিফুল হক।
সিলেট জেলা বিএনপির সূত্রে জানা গেছে, জেলার অধীন ১৮টি ইউনিটের মধ্যে ১৫টির কাউন্সিল শেষ হয়েছে। বাকি ৩ ইউনিটের কাউন্সিলও দ্রুতই শেষ হবে। মার্চের প্রথম সপ্তাহেই জেলা কমিটির সম্মেলনের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।
জেলার নেতারা জানান, কমিটির শীর্ষ পাঁচ পদের নেতৃত্ব নির্বাচিত হবে কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোটে। এতে ৯০ জন কাউন্সিলর ভোট দেবেন।
আরিফুল হক চৌধুরী ছাড়াও সাবেক সভাপতি আবুল কাহের শামীম, যুবদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সহসভাপতি আবদুল কাইয়ূম চৌধুরী ও মহানগর মুক্তিযোদ্ধা দলের আহ্বায়ক আবদুর রাজ্জাক জেলা বিএনপির সভাপতি পদে প্রার্থী হতে পারেন বলে জানা গেছে।
সাধারণ সম্পাদক পদে সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান আহমদ ও আবদুল আহাদ খান জামাল, জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি এম এ মান্নান ও ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা কামরুল হাসান শাহীনের নাম শোনা যাচ্ছে প্রার্থী হিসেবে।
সভাপতি পদে প্রার্থী হওয়া প্রসঙ্গে আবুল কাহের শামীম বলেন, ‘সভাপতি পদে নির্বাচনের জন্য নেতা-কর্মীদের চাপ আছে। নেতা-কর্মীদের প্রত্যাশা পূরণ, খালেদা জিয়ার মুক্তি, তারেক রহমানকে দেশে ফেরানো ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন নিশ্চিতের আন্দোলন জোরদার করতে আমি জেলা বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব পুনরায় নিতে আগ্রহী।’
আরিফুল হকের প্রার্থী হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক দল। এখানে যে কেউ প্রার্থী হতে পারেন। কারা দলের জন্য নিবেদিত, দলের দুঃসময়ে মাঠে ছিলেন তা কাউন্সিলররা বিবেচনা করবেন।’
২০১৯ সালের ২ অক্টোবর সিলেট জেলা বিএনপির মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ভেঙে কেন্দ্র থেকে ঘোষণা করা হয় আহ্বায়ক কমিটি। কামরুল হুদা জায়গীরদারকে আহ্বায়ক করে গঠিত কমিটিকে তিন মাসের মধ্যে সম্মেলনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের কথা বলা হয়েছিল। তিন মাসের এই কমিটি প্রায় আড়াই বছর পার করে দিয়েছে।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘পিআর পদ্ধতির আন্দোলনের লক্ষ্যই হচ্ছে নির্বাচনকে বিলম্বিত করা, এটা জনগণ গ্রহণ করবে না।’
তিনি বলেন, ‘কয়েকটি রাজনৈতিক দল পিআর পদ্ধতি নিয়ে কথা বলছে এবং আপনারা দেখেছেন এটার জন্য তারা আন্দোলনও করছে। এর একটাই লক্ষ্য তা হচ্ছে, নির্বাচনকে বিলম্বিত করা। জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার যে প্রক্রিয়া সেই প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করা।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘পিআর পদ্ধতি এই দেশের মানুষ গ্রহণ করবে না। আমাদের দলের পক্ষ থেকে তো আমরা স্পষ্ট করে বলেছি, এখনো বলছি, জনগণই এই পদ্ধতি গ্রহণ করবে না, চাপিয়ে দেওয়া কোনো কিছু এদেশের মানুষ গ্রহণ করবে না।’
গতকাল রোববার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ের মিলনায়তনে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির উদ্যোগে ডেমোক্র্যাটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ মনির দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় বিএনপির মহাসচিব এই শঙ্কা প্রকাশ করেন।
বিএনপি মহাসচিব আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কমিটমেন্ট হলো ২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেই এই নির্বাচন হবে। আমরা সেটাই দেখতে চাই। জনগণ নির্বাচন দেখতে চায় এবং সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরে যেতে চায় এবং গণতন্ত্রের মধ্য দিয়েই জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষাগুলো পূরণ করতে চায়।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমরা জানি যে নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনে যেকোন দল জয়ী হতে পারে জনগণের ইচ্ছার উপর দিয়ে। কিন্তু সেই দলকেই জনগণ বেছে নেবে, যে দল পরীক্ষিত অতীতে যারা পরীক্ষা দিয়েছে অর্থাৎ সরকারে ছিল কাজ করেছে। যেই দল মানুষকে আশার আলো দেখিয়েছে, যেই দল অন্ধকার থেকে আলোতে টেনে নিয়ে এসেছে।’
শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানই এই দেশে প্রথম সংবিধানে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম সংযোজন করেছিলেন, তিনিই প্রথম এই দেশের সংবিধানে আল্লাহর উপর অবিচল আস্থা ও বিশ্বাস কথাটি রেখেছিলেন।
এখন কিছু দল সেগুলোকে বিকৃত করে বিভিন্নভাবে এই বিএনপিকে চিত্রায়িত করার চেষ্টা করছে।’
তিনি বলেন, ‘যারা বয়স কম তারা জানে না, যাদের বয়স একটু বেশি তারা দেখেছেন ১৯৭৫ সাল নভেম্বর কী অবস্থার প্রেক্ষিতে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে এই দেশের মানুষ সেই ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে বেরিয়ে এসে সম্পূর্ণভাবে নিজেদের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য নতুন করে তখন স্বনির্ভর বাংলাদেশ তৈরি করার কাজে ঝাপিয়ে পড়েছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঠিক একইভাবে আজকে আবার আমরা সবাই এক হয়েছি আমাদের নেতা তারেক রহমানের নেতৃত্বে। আমরা অবশ্যই বাংলাদেশকে আবার একটা স্বনির্ভর, আত্মমর্যাদা সম্পন্ন দেশ হিসেবে বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড় করাব, এমন বাংলাদেশই নির্মাণ করতে চাই।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অনেক ষড়যন্ত্র আছে, চক্রান্ত আছে। সমস্ত ষড়যন্ত্র চক্রান্তকে পরাজিত করবার শক্তি বাংলাদেশের মানুষের আছে।’
সামনে কঠিন পরীক্ষা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সামনে কঠিন পরীক্ষা অপেক্ষা করছে। প্রতিদিন আপনাদের এই ইউটিউব, টেলিভিশন, সোশ্যাল মিডিয়া এগুলোতে বিভিন্ন রকম মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।’ আমার বিশ্বাস আপনারা এখান থেকে সঠিক তথ্যটি বেছে নিতে পারবেন। এই দেশের মানুষ কখনো ভুল করে না, সবসময় সঠিক পথে এগিয়ে যায়। শান্তিপূর্ণভাবে আমরা সেই প্রক্রিয়ার মধ্যে যেতে চাই।
যেখানে একটি নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণ তার আস্থা প্রকাশ করবে এবং তাদের একটা পার্লামেন্ট ও তাদের সরকার বেছে নেবে। আপনাদের আবার অনুরোধ করব যে, সুযোগ আমরা পেয়েছি বাংলাদেশকে নতুন করে একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলবার সেই সুযোগ যেন আমরা না হারাই।’
একাত্তর মুছে ফেলা যাবে না উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কিছু সংখ্যক মানুষ চেষ্টা করে আমাদের ১৯৭১ সালের ইতিহাসকে ভুলিয়ে দিতে। এটাও সবসময় মাথায় রাখতে হবে যে, একাত্তরে যুদ্ধ হয়েছিল বলেই আমরা স্বাধীন হয়েছিলাম, স্বাধীন হয়েছিলাম বলেই আজকে আমরা নতুন রাষ্ট্রের নতুন চিন্তা করতে পারছি, স্বাধীন হয়েছিলাম বলেই কিন্তু আমরা আজকে এই বাংলাদেশকে বাংলাদেশের মানুষের অবস্থার পরিবর্তন করবার যে সংগ্রাম সেই সংগ্রামে অংশ নিতে পারছি।’
তিনি বলেন, ‘তখন আমরা যুবক ছিলাম, লড়াই করেছি, যুদ্ধ করেছি। আমাদের মধ্যে এখানে অনেকে আছেন যারা সেই যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন, পরবর্তীকালে গণতান্ত্রিক আন্দোলনগুলোতে অংশ নিয়েছেন, এই চব্বিশের আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন, আমরা সবাই এই যুদ্ধগুলোতে অংশ নিয়েছি। শুধু একটা লক্ষ্য আমরা বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থেই একটি গণতান্ত্রিক সমৃদ্ধ একটা বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। সেই কথাটি মাথায় রেখে সকলে যেন সামনের দিকে এগিয়ে যাই।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বয়স এক বছর পার হয়েছে, এই ১৪ মাসে রাতারাতি আলাদিনের চেরাগের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে একটা খুব সুন্দর বানিয়ে ফেলবে এই আশা জনগণ করে না এই সরকারের কাছ থেকে। কিন্তু প্রক্রিয়ার শুরুটা চায়... চায় যে সেই প্রক্রিয়া শুরু হোক যে প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আমরা একটা নতুন বাংলাদেশ দেখতে পাব।’
তিনি বলেন, ‘আপনারা ইতোমধ্যে দেখেছেন, যে তারেক রহমান একটা সাক্ষাৎকার দিয়েছে বিবিসিতে।
সেখানে তিনি এই প্রশ্নগুলো তুলে ধরেছেন এবং কিভাবে তিনি দেশের সমস্যার সমাধান করতে চান সেই সমস্যাগুলো তিনি তুলে ধরেছেন। ফিন্যাশনাল টাইমসেও তিনি একইভাবে কথাগুলো বলেছেন।’
বেকার সমস্যাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে বিদ্যমান সমস্যা সমাধানে বিএনপি ইতোমধ্যে কমিটি গঠন করে কাজ শুরু করেছে এবং ‘অনেক কাজ সম্পন্ন’ করে রাখা হয়েছে বলেও জানান বিএনপি মহাসচিব।
ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফার সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় জাগপার খন্দকার লুফুর রহমান, গণদলের এটিএম গোলাম মাওলা চৌধুরী, সাম্যবাদী সৈয়দ নুরুল ইসলাম, বাংলাদেশ ন্যাপের এমএন শাওন সাদিকী বক্তব্য রাখেন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, পিআর পদ্ধতি এ দেশের মানুষ গ্রহণ করবে না। চাপিয়ে দেয়া কোনকিছু এদেশের মানুষ গ্রহণ করে না।
রোববার দুপুর ১২টার দিকে ডিআরইউ মিলনায়তনে এক 'স্মরণসভা'য় তিনি এসব কথা বলেন। ডেমোক্রেটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন মনির দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এ স্মরণসভা আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট।
তিনি বলেন, বিএনপি বিরুদ্ধে অপ্রচার চলছে, বিএনপি নাকি সংস্কার চায় না। বিএনপি সংস্কারের পক্ষে। আপনারা অপ্রচারে কান দিবেন না।
মির্জা ফখরুল বলেন, পিআর পদ্ধতির বিষয়ে জনগণ বোঝে না, সেই পদ্ধতি নিয়ে কয়েকটি দল আন্দোলন করছে। এর কারণ হচ্ছে নির্বাচন বিলম্বিত করা, জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করা।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামির কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য আলহাজ শাহজাহান চৌধুরী বলেছেন, রাজনীতির নামে বিভাজন সৃষ্টি করে ইসলামী আন্দোলনের অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করার অপচেষ্টা আজও চলছে। তিনি আরো বলেন, যারা রাজনীতির নামে বিভাজন তৈরি করতে চায়, তারা দেশ ও জাতির শত্রু, সর্বোপরি তারা ইসলামের শত্রু। মুসলিম উম্মাহর ঐক্যই ইসলামের শক্তি—এই সত্যকে হৃদয়ে ধারণ করে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। কোনো ষড়যন্ত্রে কর্ণপাত না করে ইসলামী শক্তিকে ক্ষমতায় প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সবাইকে আত্মনিয়োগ করতে হবে। শনিবার দুপুরে পুটিবিলা ইউনিয়ন জামায়াতের উদ্যোগে আয়োজিত সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথা বলেন তিনি।
ইউনিয়ন জামায়াতের আমীর মো. নাজিম উদ্দীনের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মাওলানা আইয়ুব সাবেরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সেন্টার দায়িত্বশীলদের সুধী সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা জামায়াতের আমীর আনোয়ারুল আলম চৌধুরী।
সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, লোহাগাড়া উপজেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক আসাদুল্লাহ ইসলামাবাদী, বটতলী শহর জামায়াতের আমীর অধ্যাপক জালাল আহমদ, কলাউজান ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাওলানা মো. ইদ্রিস, লোহাগাড়া উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান নুরুল আফসার, সাবেক ছাত্রনেতা বজলুর রহমান, অ্যাডভোকেট আবুল মোজাফফর আহমদ, মাওলানা রফিক আহমদ ও মো. শাহজাহান মুন্সী।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে আনোয়ারুল আলম চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামি একটি নিয়মতান্ত্রিক ইসলামী সংগঠন। এ সংগঠনের কর্মীরা শৃঙ্খলা, ত্যাগ ও আদর্শের প্রতীক। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াতের কর্মীরা সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করে ইসলামী শক্তিকে ক্ষমতায় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ চালিয়ে যাবে—এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরে যাওয়ার জন্য একটা সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। গণতন্ত্র ফেরানোর একমাত্র পথ সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচন। গণতন্ত্রের জন্য আর বিকল্প কোনো পথ নেই। কয়েকজন মিলে আইন করলে গণতন্ত্র হয় না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউটে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, যতই সংস্কার করি, বুদ্ধিজীবী মিলে কৌশল আবিষ্কার করার চেষ্টা করি কিন্তু নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা না করা পর্যন্ত গণতন্ত্রে ফিরে যেতে পারবো না।
স্বৈরাচারবিরোধী গণআন্দোলনে শহীদ নাজিরউদ্দিন জেহাদের শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। আলোচনা সভায় ফখরুল আরও বলেন, বাংলাদেশের মানুষই গণতন্ত্রকামী, স্বাধীনতাকামী। তারা বারবার লড়াই করেছে, সংগ্রাম করেছে, রক্ত দিয়েছে স্বাধীনতার জন্য। দুর্ভাগ্য হচ্ছে সেই লড়াইয়ে মানুষ বারবার হোঁচট খেয়েছে। যতবার হোঁচট খেয়েছে ততবার উঠে দাঁড়িয়েছে এবং আন্দোলন ও সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে বিজয় অর্জন করেছে।
হাসিনাকে শুধু ‘হাসিনা’ বললে একটু সম্মান দেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, মনস্টার হাসিনা দেশের সব কিছুকে তছনছ করে দিয়েছে। দেশের বিচার ব্যবস্থা, প্রশাসন, নির্বাচন ব্যবস্থা, আমাদের অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ব্যবস্থা সব জায়গায় সে তছনছ করে দিয়েছে।
ফখরুল বলেন, কিছু কিছু মানুষ বা সংগঠন জুলাই আন্দোলনকে নিজেদের আন্দোলন বলে দাবি করেন। গণতন্ত্রের জন্য বিএনপি সমগ্র সময় ধরে লড়াই করেছে।
সভাপতির বক্তব্যে শহীদ জেহাদ স্মৃতি পরিষদের সভাপতি ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান ৯০–এর গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতি স্মরণ করে বলেন, জিয়া পরিবার তখনও জনগণের পাশে ছিল, এখনো আছে। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তারেক রহমান সোচ্চার ছিলেন, আছেন। যারা ‘পিআর’ পদ্ধতির কথা বলে, তারা আসলে নির্বাচন চায় না, গণতন্ত্রও চায় না। তিনি বলেন, আমাদের আগে বাংলাদেশ, না দিল্লি, না পিন্ডি; সবার আগে বাংলাদেশ।
সভায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকনসহ দলের বিভিন্ন স্তরের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয় নির্বাচনের আগে এখন পর্যন্ত ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ)’ নিশ্চিত হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। এ জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদেরও দায়ি করেছেন তিনি।
গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজের পর ঢাকায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে গণমিছিলের আগে এক সমাবেশে বক্তব্যে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন গোলাম পরওয়ার। পাঁচ দফা দাবি আদায়ে এ কর্মসূচির আয়োজন করে জামায়াতের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখা।
গোলাম পরওয়ার বলেন, কোনো বিশেষ দলের প্রতি দুর্বল হয়ে, কারও চাপে মাথা নত করে প্রশাসনে কোনো দলের পছন্দের লোককে বেছে বেছে পদায়ন করে নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা অব্যাহত আছে। ওসি, ডিসি, ইউএনও, আমলা, এমনকি অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের মধ্যে অনেকের ভূমিকা এখনো জাতির সামনে প্রশ্নবিদ্ধ।
উপদেষ্টাদের মধ্যে কাদের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ, সে নাম প্রকাশ করেননি মিয়া গোলাম পরওয়ার।
আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের আগে ছোট-বড় সব দল যেন সমান সুযোগ পায়, তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল।
সংখ্যানুপাতিক বা পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘এখন জনগণ পিআর পদ্ধতির পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে। এই পদ্ধতি সম্পর্কে ভিন্নমত পোষণ করার অধিকার আছে। কিন্তু দেশের অন্যতম রাজনৈতিক দলের ঘোষিত কর্মসূচি সম্পর্কে, এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করার অধিকার কারও নেই।’
১৫ অক্টোবর জুলাই সনদে স্বাক্ষরের আগে পিআর পদ্ধতির বিষয়টি চূড়ান্ত করতে অন্তর্বর্তী সরকার ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রতি আহ্বান জানান পরওয়ার।
যেসব সংস্কারের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে, সেগুলো জুলাই সনদে অন্তর্ভুক্তির পাশাপাশি গণভোটের মধ্যে পিআর প্রস্তাবও যুক্ত রাখার দাবি জানান তিনি।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, জনগণ যদি পিআর পদ্ধতির পক্ষে মতামত দেয়, সব দলকে সেটা মানতে হবে। জনগণ বিপক্ষে মত দিলে জামায়াত পিআরের দাবি থেকে সরে আসবে।
জাতীয় ঐক্য তৈরির স্বার্থে জামায়াত ‘বেশ কিছু’ সংস্কার প্রস্তাবে ছাড় দিয়েছে দাবি করে পরওয়ার বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের স্বপ্ন পূরণে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে মানবিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে। কোনো ব্যক্তি বা দলীয় স্বার্থে যেন ঐক্যের প্রচেষ্টায় বিঘ্ন না ঘটে।’
বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘জুলাই সনদকে ইতিবাচকভাবে দেখছে বিএনপি।’
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর চন্দ্রিমা উদ্যানে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সমাধিতে এগ্রিকালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (অ্যাব) নবগঠিত কমিটির পক্ষ থেকে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও ফাতেহা পাঠ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, আগামী ১৫ অক্টোবর স্বাক্ষরিত হতে যাওয়া জুলাই সনদকে বিএনপি ইতিবাচকভাবে দেখছে। রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনার মাধ্যমে নির্ধারিত সময়ের আগেই এই সনদের বিষয়ে একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রে বিশ্বাস করলে আলোচনার মাধ্যমে একটি যৌক্তিক সিদ্ধান্তে আসা সম্ভব। আমরা আশাবাদী, জুলাই সনদ নিয়ে একটি ইতিবাচক রাজনৈতিক সমঝোতা হবে।’
এ সময় তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাম্প্রতিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে দেয়া বক্তব্য নিয়েও কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘তারেক রহমান দীর্ঘ ১৭ বছর পর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বক্তব্য রেখেছেন। তার কথার মধ্যে কোনো দলীয় পক্ষপাত ছিল না। তিনি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ধ্বংস চাননি, বরং ঐক্যের বার্তা দিয়েছেন। যেসব ব্যক্তি অপরাধ করেছেন বা নির্যাতন চালিয়েছেন; আইনসঙ্গত উপায়ে তাদের বিচারের কথা বলেছেন তিনি।’
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, তারেক রহমানের বক্তব্য বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায়, সেখানে জাতীয় ঐক্যের আহ্বানই মুখ্য। দেশের সিভিল সোসাইটি, অভিজাত সমাজ ও সাধারণ মানুষের মধ্যে তার এই বক্তব্য ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে।
কৃষি খাতের প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফার মধ্যে কৃষি কাজের উপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। দেশের কৃষকরা আজ তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না। এ বিষয়ে এগ্রিকালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশকে (এ্যাব) কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে।
তিনি জানান, অ্যাব এমন একটি নীতিমালা প্রণয়ন করবে, যাতে কৃষকদের স্বার্থরক্ষা হয় এবং দেশের জনগণ উপকৃত হয়। ‘এই দিকনির্দেশনা ও প্রেরণা আমাদের দলীয় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছ থেকেই এসেছে’, যোগ করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন নবগঠিত এ্যাবের আহ্বায়ক কৃষিবিদ কামরুজ্জামান এবং সদস্য সচিব কৃষিবিদ শাহাদাৎ হোসেন বিপ্লব।
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে মাহমুদুর রহমান মান্না, জোনায়েদ সাকি, হাসনাত কাইয়ূম, সাইফুল হকসহ ১২০ জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে বাম ও প্রগতিশীল ঘরানার ছয়টি রাজনৈতিক দলের মোর্চা ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন মঞ্চের সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ূম। পর্যায়ক্রমে ৩০০ আসনের বাকি আসনগুলোতেও প্রার্থীদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হবে বলে জানান তিনি।
গণতন্ত্র মঞ্চের ছয়টি দলের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বগুড়া-২ আসনে, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ূম কিশোরগঞ্জ-৫ আসনে, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক ঢাকা-৮ আসনে, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ আসনে, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি তানিয়া রব লক্ষ্মীপুর-৪ আসনে, সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন ফেনী-৩ আসনে এবং ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলুকে জামালপুর-৫ আসনের জন্য মনোনীত করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ূম। স্বাগত বক্তব্যে তিনি বলেন, গণতন্ত্র মঞ্চের ছয় দলের এ পর্যন্ত চার শতাধিক প্রার্থীর আবেদন জমা পড়েছে। আরও অনেকে আগ্রহ জানিয়েছেন। প্রার্থিতা বাছাই ও সমন্বয় কমিটি আবেদনগুলো পর্যালোচনা ও সমন্বয়ের কাজ করছে। একই আসনে একাধিক প্রার্থীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ধারাবাহিকভাবে দলগুলোর মধ্যে আলোচনার ভিত্তিতে সমন্বয়কাজ চলমান রয়েছে।
আগামী জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে হাসনাত কাইয়ূম বলেন, গণতন্ত্র মঞ্চ এর আগে এককভাবে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছিল। এর পাশাপাশি মঞ্চ সম্প্রসারণের আলাপ চলমান রয়েছে। এমনকি অন্য কোনো জোটের সঙ্গে ঐক্য বা নির্বাচনী সমঝোতার সম্ভাবনাও রয়েছে। দেশকে ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্ত করে জনগণের মালিকানা ও জনগণের কাছে জবাবদিহির রাষ্ট্রকাঠামো গড়তে যাঁরা সর্বোচ্চ সচেতন হবেন, তাদের সঙ্গে গণতন্ত্র মঞ্চের ঐক্য হবে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন মাহমুদুর রহমান মান্না, সাইফুল হক, জোনায়েদ সাকি, ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, তানিয়া রব, শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ৮ আগস্ট জেএসডি, নাগরিক ঐক্য, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, ভাসানী অনুসারী পরিষদ, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন ও গণঅধিকার পরিষদ মিলে ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’ নামে জোট গঠন করে। পরে গণঅধিকার পরিষদ এই জোট থেকে বেরিয়ে যায়।
মন্তব্য