মাস খানেক পরই রমজান। তার আগেই বাজারে শুরু হয়ে গেছে ভোজ্যতেলের ভূতুরে সংকট। দাম বাড়ানোর অনুমতি না পেয়ে বাজারে সরবরাহ কমিয়ে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আর খুচরা ব্যবসায়ীরা ঠিকই ভোক্তাদের কাছ থেকে বেশি টাকা আদায় করছে।
খুচরা বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাহিদামতো তেল পাওয়া যাচ্ছে না। পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, মিল থেকে সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে না।
মিল মালিকরা এই অভিযোগ স্বীকার না করলেও তেলের দামের বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে বুকিং কমিয়ে দেয়ার কথা জানাচ্ছেন।
এই পরিস্থিতিতে তেল ব্যবসায়ী ও ব্যবসায়ী নেতাদেরকে মন্ত্রণালয়ে ডেকেছে সরকার। তেলের মজুত নিয়ে কোনো কারসাজি হচ্ছে কি না, সেটি খতিয়ে দেখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাকে কাজে লাগানোর কথা বলছেন সরকারি কর্মকর্তারা। বলছেন, কারসাজির প্রমাণ মিললে মজুত জব্দ হবে, নেয়া হবে আইনি ব্যবস্থা।
ভোজ্যতেল ব্যবসায়ীরা ১ মার্চ থেকে লিটারে সয়াবিন তেলের দাম ১২ টাকা বাড়ানোর চেষ্টা করেছিল। তবে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, রোজার আগে দাম বাড়বে না। তিনি আন্তর্জাতিক বাজারের বাড়তি দামের উত্তাপ সহ্য করতে ব্যবসায়ীদের পরামর্শ দেন।
মন্ত্রীর এই বক্তব্যে ভোক্তাদের মধ্যে কিছুটা হলেও স্বস্তি এলেও বাজারের পরিস্থিতি স্বাভাবিক নয়।
বাণিজ্যমন্ত্রী না করলেও বেড়ে গেছে দাম
রাজধানীর কাওরান বাজার, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, সেগুনবাগিচা ও রামপুরা বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, গত তিন-চার দিনে খুচরা বাজারে খোলা সয়াবিন তেলের দাম ২০ টাকা বেড়েছে এবং প্রতি লিটার তেল বিক্রি হচ্ছে ১৯৫ থেকে ২০০ টাকায়। বোতলজাত সয়াবিন তেলের দামও আগের চেয়ে বাড়িয়ে ১৭০ টাকা থেকে ১৮০ টাকায় উঠেছে। দোকানিরা আগে সংরক্ষিত তেলও চড়া দামে বিক্রি করছেন।
অর্থাৎ সরকার সয়াবিন তেলের বাড়তি দরের বিষয়টি অনুমোদন না করলেও ভোক্তাদেরকে ঠিকই তা পরিশোধ করতে হচ্ছে।
সরবরাহের ঘাটতি
খুচরা বিক্রেতারা দাবি করছেন, চাহিদা অনুযায়ী তারা তেল পাচ্ছেন না। ১০ ড্রাম চাইল মিলছে দুই ড্রাম। পাইকাররা বলছেন, ৫০ ড্রামের জায়গায় পাচ্ছেন ২০ ড্রাম।
পরিবেশকরা বলছেন, মিলগুলো সাপ্লাই দিচ্ছে না। আবার মিলাররা বলছেন, মিলগটে কোনো গাড়ি অপেক্ষমান নেই, সব ডিও তারা সময়মত সরবরাহ দিচ্ছেন। কোনো গাড়িই তেল ভর্তি ছাড়া খালি ফিরছে না। অপরদিকে ক্রেতারা তেল কিনতে গেলেই গুনতে হচ্ছে বাড়তি দাম।
রামপুরা কাঁচাবাজারের মুদি দোকানি মফিজুল হক বলেন, ‘পাইকারি বাজারে কোনো ভোজ্যতেল পাওয়া যায় না; বোতলজাত তেলের সরবরাহও বন্ধ। তাই দাম বাড়ছে।’
সেগুনবাগিচা কিচেন মার্কেটের একাধিক ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, অর্ডার দিয়েও তারা সময় মতো তেল পাচ্ছেন না।
শান্তিনগরের কাঁচাবাজারের পাইকারি বিক্রেতা মো. হুমায়ুন বলেন, ‘সব কোম্পানি গত কয়েকদিন ধরে তেল সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। আমরা ক্রেতাদের কিছু ব্যাখ্যা করতে পারি না এবং সরবরাহ কেন বিঘ্নিত হচ্ছে তার কারণও বুঝতে পারি না।’
সোনালী ট্রেডার্সের মালিক ও ভোজ্যতেলের পাইকারি ব্যবসায়ী আব্দুল কাশেম বলেন, ‘কোম্পানিগুলো নতুন অর্ডার নিচ্ছে না এবং পণ্য ডেলিভারিও করছে না। যার কারণে বাজারে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। গত সপ্তাহ থেকে মিলের গেটে কোনো তেল পাওয়া যাচ্ছে না। এখন দোকানে সংরক্ষিত তেলও ফুরিয়ে যাচ্ছে।’
স্বীকার করছেন না সরবরাহকারীরা
বাজারে ভোজ্যতেলের সরবরাহ সংকটের বিষয়টি সরাসরি স্বীকার করেননি বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও টিকে গ্রুপের পরিচালক মোস্তফা হায়দার।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা অব্যাহতভাবে বিক্রি করে যাচ্ছি। ডেলিভারি পাচ্ছে আমাদের ডিলাররা। যা ডিও আসতেছে, যে কয়টি গাড়ি আসছে তার সবই তেল ভর্তি যাচ্ছে।’
তবে ভোজ্যতেলের বাজার যে স্বাভাবিক নয়, সেটি তার কথায় উঠে এসেছে। তিনি বলেন, ‘বাজার তো এখন চড়া। কখন কী হয় এমন একটা আশঙ্কা তো আছেই। এ কারণে কার কী অবস্থা সেটি বলতে পারব না, আমি আমাদের কথা বলতে পারি, নতুন বুকিং দেয়ার সাহস হচ্ছে না। আবার এটাও সত্য, আগের মতো খুব যে মাল বুক করেছি তা-ও না। একটু সাবধানে করছি।’
সরবরাহ সংকট প্রসঙ্গে সিটি গ্রুপের পরিচালক (অর্থ) বিশ্বজিৎ সাহা নিউজবাংলাকে জানান, অভ্যন্তরীণ বাজারে তীর ব্যান্ডের সয়াবিন তেলের পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে।
বৈঠক ডেকেছে সরকার
ভোজ্যতেল নিয়ে এই পরিস্থিতিতে সরকার ব্যবসায়ীদেরকে বৈঠকে ডেকেছে।
বুধবার বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির সভাপতিত্বে মন্ত্রণালয়ে হতে যাওয়া সেই বৈঠকে খাতসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী প্রতিনিধি ছাড়াও এফবিসিসিআই, কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, গোয়েন্দা শাখার সদস্য, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং অন্যান্য সরকারি সংস্থার প্রতিনিধিদের আসতে বলা হয়েছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, বৈঠকে ভোজ্যতেলসহ সব ধরনের নিত্যপণ্যের চাহিদা নিরূপণ, অভ্যন্তরীণ উৎপাদন, আমদানির পরিমাণ, মজুদ পর্যালোচনা করা হবে।
এছাড়া গত দুই মাসে কারা কোন পণ্যের কী পরিমাণ এলসি খোলেছে, কী পরিমাণ বন্দরে প্রবেশ করেছে এবং কতটা নিষ্পত্তি হয়েছে, তার কতটা বাজারে প্রবেশ করেছে তা গভীরভাবে খতিয়ে দেখা হবে।
বৈঠকের পর বাজার মনিটরিং জোরদারের পাশাপাশি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী দায়ী প্রতিষ্ঠানগুলোকে লক্ষ্য করে অভিযান চালানো হবে।
আমরা কঠোর হব: অতিরিক্ত সচিব
বাজারে এ ধরনের ভূতুরে পরিস্থিতির নেপথ্যে কারা রয়েছে -তা বের করতে এবার হার্ডলাইনে যাচ্ছে সরকার। এজন্য বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মজুত, সরবরাহ ও বিক্রির সংগ্রহকৃত নথি ও রেকর্ড খতিয়ে দেখার পর অভিযুক্ত মিলার, ডিলার, পাইকার কিংবা খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানের সংগ্রহ থাকা ভোজ্যতেল জব্দ করার কথাও ভাবা হচ্ছে। নেয়া হতে পারে আরও কঠোর পদক্ষেপও।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য ও আমদানি) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সরবরাহ চেইনে সমস্যা কোথায়? মিলার না, ডিলার? পাইকাররা না খুচরা বিক্রেতা? এখন তো একজন আরেকজনের কথা বলে এড়িয়ে যাচ্ছে, এখন আর সেই কথা বলার সময় নেই। খুব শিগগির আমরা অ্যাকশনে যাচ্ছি।
‘বাস্তবে সাপ্লাই চেইনে কারা কী সমস্যা করছে, তা খুঁজে বের করা হবে। এ কারণে বুধবার সব সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এবং নিয়ন্ত্রক এজেন্সিগুলোকে ডাকা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা মিলার বা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর শেষ দুই মজুত রেকর্ড চেক করব। এর থেকে তারা কবে কী পরিমাণ বাজারে ছেড়েছে, আগে কেন ছেড়েছে-এখন কেন ছাড়ছে না তা খতিয়ে দেখব। কারা কোথায় কী ধরনের কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে, কাদের মজুতে কী পরিমাণ তেল রয়েছে বের করা হবে। আমরা এখন হার্ডলাইনে রয়েছি। দোষী প্রমাণিত হলে দায়ী সব প্রতিষ্ঠানগুলোকে আমরা সিজ করে ফেলব।’
তেলের দাম বাড়ানোর চেষ্টা
সবশেষ ৬ ফেব্রুয়ারি সরকার বোতলজাত সয়াবিন তেলের খুচরা মূল্য লিটার প্রতি ১৬০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৬৮ টাকা করে। খোলা সয়াবিন তেলের দাম ১৪৩ টাকা এবং পাম তেলের লিটার প্রতি ১৩৩ টাকা নির্ধারণ করে দেয়। কিন্তু সরকার নির্ধারিত দাম এখন কেউ মানছে না।
উল্টো আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধির সাথে সঙ্গতি রেখে, বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনারস অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন গত রোববার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনে প্রতিলিটার ভোজ্যতেলের দাম আরও ১২ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে। তারা বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ১৮০ টাকা নির্ধারণ করার কথা জানায়।
নতুন দাম মার্চের প্রথম দিন থেকেই থেকেই কার্যকর করার কথা জানানো হয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা না করেই।
তবে ফেব্রুয়ারির শেষ দিন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি জানান, তারা তেলের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবে না করে দিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক বাজার লাগামহীন
অয়েল ওয়ার্ল্ড, ইউএস ডিপার্টমেন্ট অফ এগ্রিকালচার এবং ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের মতে, এ বছর আন্তর্জাতিক বাজারে পাম অয়েল ও সয়াবিন তেলের দাম গত বছরের তুলনায় ৩৩.৪৬ শতাংশ এবং ৩৪.৯০ শতাংশ বেড়েছে।
দেশের বাজারেও সয়াবিন তেলের দাম এক বছরে প্রায় সমপরিমাণ বেড়েছে।
ব্যবসায়ীরা দাবি করছে, সবশেষ যখন দাম বাড়ানো হয়, সেই তেল আন্তর্জাতিক বাজার থেকে কেনা হয়েছে, এখন দাম অনেক বেশি।
কোন যুক্তিতে দাম বাড়াতে চাইছেন- জানতে চাইলে দেশে ভোজ্যতেল বিপণনে সবচেয়ে শীর্ষস্থানীয় কোম্পানি সিটি গ্রুপের পরিচালক (অর্থ) বিশ্বজিৎ সাহা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘লিটারে ১৬৮ টাকায় যে তেল আমরা বিক্রি করছি, সেটির আন্তর্জাতিক বাজার ছিল টনপ্রতি এক হাজার ৩০০ ডলার। এখন যে তেল আমরা বাজারে ছাড়তে যাচ্ছি, সেটি এক হাজার ৪২০ ডলারের। আগামী এক থেকে দেড় মাস পর আন্তর্জাতিক বাজারে কোথায় গিয়ে ঠেকে, সেটি আমরা এখনই বলতে পারছি না। কিন্তু এক হাজার ৭০০ ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে পূর্বাভাস আছে। তখন পরিস্থিতি কী হবে, তা জানি না।’
আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি টন সয়াবিন তেল বর্তমানে ১ হাজার ৫১৫ ডলারে বিক্রি হচ্ছে, যা কয়েক মাস আগেও আগে ছিল ১ হাজার ১২৩ ডলার। পামওয়েলের দর ১ হাজার ১৯ ডলার থেকে ১ হাজার ৩৬০ ডলার হয়েছে।
২০২১ সালে বিশ্ব বাজারে সয়াবিন তেলের সর্বোচ্চ দাম ১ হাজার ৫৬৮ ডলার উঠেছিল।
আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের বড় সরবরাহকারী দেশ হলো ইন্দোনেশিয়া। বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে দেশটি এখন পাম তেল রপ্তানিতে সংরক্ষণ নীতি অনুসরণ করছে। তারা নিজ দেশের নাগরিক ভোক্তাদের সুরক্ষায় চাহিদার ১৫ শতাংশ অতিরিক্ত রিজার্ভ রাখছে। ফলে তেলের বৈশ্বিক সাপ্লাই চেইনেও বিলম্ব হচ্ছে। এসবের প্রভাব পড়ছে দেশের বাজারেও।
আরও পড়ুন:এপনিক ফাউন্ডেশনের আইএসআইএফ এশিয়া প্রোগ্রামের মর্যাদাপূর্ণ অনুদান অর্জনের মাধ্যমে বাংলাদেশের সাইবার নিরাপত্তা খাতে এক নতুন অধ্যায় শুরু করতে যাচ্ছে টিম ফিনিক্স গ্রুপ। এই অনুদানের সহায়তায় সংস্থাটি বাংলাদেশের সাইবার নিরাপত্তা খাতকে রূপান্তরিত করার এক অগ্রণী উদ্যোগ ‘সিকিউরনেট বিডি’ (SecureNet BD) চালু করতে যাচ্ছে।
এই প্রকল্পের আওতায় দেশে প্রথমবারের মতো গড়ে উঠবে সাইবার সিকিউরিটি সেন্টার অব এক্সিলেন্স (CCoE) এবং কমিউনিটি-নির্ভর সিকিউরিটি অপারেশনস সেন্টার (SOC) / কম্পিউটার সিকিউরিটি ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিম (CSIRT), যা হবে দেশের ডিজিটাল সক্ষমতা বৃদ্ধিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
বাংলাদেশে দ্রুত ডিজিটাল রূপান্তরের সঙ্গে সঙ্গে সাইবার হামলা এবং অনলাইন নিরাপত্তা হুমকির সংখ্যা ও জটিলতা অভূতপূর্ব হারে বাড়ছে। বিশেষত বড় শহরের বাইরে থাকা প্রতিষ্ঠান, এনজিও এবং কমিউনিটিগুলোতে নিরাপত্তা অবকাঠামো বা প্রশিক্ষণের সুযোগ সীমিত। এই প্রেক্ষাপটে সিকিউরনেট বিডি একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, সহযোগিতামূলক এবং কমিউনিটি-চালিত সাইবার নিরাপত্তার ব্যবস্থা গড়ে তুলবে।
এই উদ্যোগের মাধ্যমে দেশব্যাপী ১,০০০ এরও বেশি ব্যক্তিকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, যার মধ্যে নারীদের অংশগ্রহণ কমপক্ষে ৩০% নিশ্চিত করা হবে। এছাড়া তৈরি হবে আধুনিক সাইবার রেঞ্জ (Cyber Range), যা হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ, স্থানীয় গবেষণা এবং বাস্তব সাইবার প্রতিরক্ষা অনুশীলনের সুযোগ সৃষ্টি করবে। প্রকল্পের অংশ হিসেবে চালু হবে ফেলোশিপ ও মেন্টরশিপ প্রোগ্রাম, যা ভবিষ্যতের সাইবার নিরাপত্তা নেতৃত্ব গড়ে তুলবে। পাশাপাশি কমিউনিটি এসওসি/সিএসআইআরটি একাডেমিক প্রতিষ্ঠান, অলাভজনক সংস্থা এবং স্থানীয় সংগঠনগুলোকে সাইবার হুমকি মোকাবিলায় সহায়তা করবে।
টিম ফিনিক্স গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও চিফ অব রিসার্চ এ. এস. এম. শামীম রেজা বলেন, “এই প্রকল্প শুধু প্রযুক্তি নিয়ে নয়, বরং মানুষের ক্ষমতায়নের গল্প। বিশ্বমানের প্রশিক্ষণ ও কমিউনিটি-চালিত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে সিকিউরনেট বিডি সাইবার নিরাপত্তাকে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক, টেকসই এবং বাংলাদেশের বাস্তবতার সঙ্গে খাপ সামঞ্জস্যপূর্ণ করবে। আমাদের লক্ষ্য, ভবিষ্যৎমুখী কর্মশক্তি তৈরি করা এবং বাংলাদেশকে আঞ্চলিক সাইবার উদ্ভাবনের কেন্দ্রে রূপান্তর করা।”
সিকিউরনেট বিডি–এর এই দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ও প্রগতিশীল উদ্যোগ বাংলাদেশের সাইবার নিরাপত্তাকে আরও শক্তিশালী করবে এবং দেশটিকে দক্ষিণ এশিয়ায় কমিউনিটি-চালিত সাইবার নিরাপত্তার নেতৃত্ব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবে।
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভান্ডারী।
বাংলাদেশ সচিবালয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টার দপ্তরে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্প্রসারণ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভান্ডারী বলেন, নেপালে ১১টি জুট মিল রয়েছে। নেপালের জুট মিলগুলো তাদের চাহিদা পূরণে বাংলাদেশ থেকে কাঁচাপাট আমদানির ওপর নির্ভরশীল। সম্প্রতি বাংলাদেশ থেকে কাঁচাপাট রপ্তানি বন্ধ করায় মিলগুলো কিছুটা সমস্যায় পড়েছে। এ সময় তিনি বাংলাদেশ থেকে কাঁচাপাট রপ্তানির অনুমতি শিথিল করার আনুষ্ঠানিক অনুরোধ জানান।
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কাছে বাংলাদেশের পাটপণ্য ও কাঁচাপাটের চাহিদা রয়েছে। কাঁচাপাট রপ্তানি না করে বাংলাদেশ সেমি-ফিনিশড (আধা-প্রক্রিয়াজাত) পাটপণ্য রপ্তানি করতে চায়।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ উচ্চমানের ও পরিবেশবান্ধব সেমি-ফিনিশড পাটপণ্য উৎপাদন করছে। নেপাল এই পণ্যগুলো আমদানি করলে দুই দেশের বাণিজ্য ভলিউম বাড়বে এবং উভয় দেশই লাভবান হবে।
চীনা কোম্পানি অক্টোবর ৪১২৮ (বিডি) লিমিটেড চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে অবস্থিত বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে উচ্চ মানসম্পন্ন গার্মেন্ট উৎপাদনকারী একটি শিল্পপ্রতিষ্ঠান স্থাপনে ১৯.৭২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে।
এ লক্ষ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর বেপজা কমপ্লেক্সে বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা) এবং অক্টোবর ৪১২৮ (বিডি) লিমিটেডের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেনের উপস্থিতিতে বেপজার সদস্য (বিনিয়োগ উন্নয়ন) মো. আশরাফুল কবীর এবং অক্টোবর ৪১২৮ (বিডি) লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ তৌফিকুল আহসান নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। বেপজার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এই প্রতিষ্ঠানটি বার্ষিক ৩০ লাখ পিস স্কি, স্নো স্পোর্টস, হান্টিং ও মোটর রাইডার গিয়ার, ইনসুলেটেড শীতকালীন কোট, ডাউন জ্যাকেট ও প্যান্ট, রেইন গিয়ার, ওয়ার্কওয়্যার, রানিংওয়্যার, ইয়োগাওয়্যার, এবং ওয়াটার স্পোর্টসওয়্যার তৈরি করবে।
প্রতিষ্ঠানটিতে ২ হাজার ৭৮৮ জন বাংলাদেশি নাগরিকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সংস্থার নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলকে বিনিয়োগের গন্তব্য হিসেবে বেছে নেওয়ায় প্রতিষ্ঠানটিকে ধন্যবাদ জানান এবং সুষ্ঠু ব্যবসায়িক কার্যক্রম নিশ্চিত করতে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
অক্টোবর ৪১২৮ (বিডি) লিমিটেডসহ এ পর্যন্ত মোট ৪৯টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের লক্ষ্যে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। যাদের মোট প্রস্তাবিত বিনিয়োগ প্রায় ১.০৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে ৬টি প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে উৎপাদন শুরু করেছে। ক্রমাগত উন্নয়ন ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশের কারণে বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চল দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে আকর্ষণীয় বিনিয়োগ গন্তব্য হয়ে উঠেছে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বেপজার সদস্য (প্রকৌশল) আবদুল্লাহ আল মামুন, সদস্য (অর্থ) আ ন ম ফয়জুল হক, বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ এনামুল হক, নির্বাহী পরিচালক (জনসংযোগ) এ.এস.এম. আনোয়ার পারভেজ এবং অক্টোবর ৪১২৮ (বিডি) লিমিটেডের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈশ্বিক অর্থনীতির অনিশ্চয়তা, মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাত ও বিনিয়োগে ধীরগতির প্রবণতার মধ্যেও বাংলাদেশে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত সময়ে নিট এফডিআই প্রবাহ আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে ৬১ দশমিক ৫ শতাংশ।
গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) প্রকাশিত সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। সংস্থাটির মতে, এই প্রবৃদ্ধি প্রমাণ করে বিদেশি কোম্পানিগুলোর আস্থা বাংলাদেশের বাজারে বাড়ছে এবং তারা ব্যবসা সম্প্রসারণে আরও বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, দেশে কার্যরত লাভজনক বিদেশি কোম্পানিগুলো তাদের মুনাফার একটি বড় অংশ পুনরায় বিনিয়োগ করছে। পুনঃবিনিয়োগের পরিমাণও গত বছরের তুলনায় বেড়েছে ৬১ দশমিক ৫ শতাংশ। অর্থাৎ, বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো শুধু মুনাফা স্থানান্তর করছে না, বরং বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ভবিষ্যৎ সম্প্রসারণের সম্ভাবনা দেখেই নতুন বিনিয়োগে এগিয়ে আসছে।
বিশ্বব্যাপী নতুন মূলধনের (গ্রিনফিল্ড এফডিআই) প্রবাহ কমলেও বাংলাদেশে এ খাতে রেকর্ড হয়েছে ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি। পাশাপাশি বিদেশি মূল কোম্পানিগুলোর স্থানীয় ইউনিটগুলোতে অর্থায়ন বা ইন্টার-কোম্পানি ঋণের হার এক বছরে বেড়েছে ২২৯ শতাংশ।
শুধু ছয় মাস নয়, পুরো অর্থবছরের চিত্রও আশাব্যঞ্জক। জুলাই ২০২৪ থেকে জুন ২০২৫ অর্থবছরে নিট এফডিআই প্রবাহ আগের বছরের তুলনায় বেড়েছে ১৯ শতাংশেরও বেশি।
এদিকে, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত সময়ে দেশের পাঁচটি বিনিয়োগ উন্নয়ন সংস্থা- বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (বিডা), বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা), বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা), বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ (বিএইচটিপিএ) ও বিসিকের মাধ্যমে নিবন্ধিত হয়েছে প্রায় ৩ হাজার ৫০০ কোম্পানির মোট ১ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রস্তাবিত বিনিয়োগ। এর মধ্যে ৬৫ কোটি ডলারেরও বেশি এসেছে সরাসরি বিদেশি কোম্পানির পক্ষ থেকে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২১ সালে বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ৪৮৮ দশমিক ৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, ২০২২ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৬৭০ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলার, ২০২৩ সালে বৃদ্ধি পেয়ে হয় ৯২৪ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার, তবে ২০২৪ সালে কিছুটা কমে দাঁড়ায় ৬৭৬ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলারে। আর ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসেই এ বিনিয়োগ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯২ দশমিক ৯ মিলিয়ন ডলারে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বৈশ্বিক মন্দার মধ্যেও এই প্রবৃদ্ধি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও বিনিয়োগ পরিবেশের প্রতি বিদেশিদের আস্থার প্রতিফলন। তাদের মতে, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, অবকাঠামো উন্নয়ন ও দীর্ঘমেয়াদি নীতি সহায়তা অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশ আগামী বছরগুলোতে আরও বড় পরিসরে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে সক্ষম হবে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত ৫০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের পণ্য রপ্তানি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের রপ্তানি কমেছে ২০ শতাংশ। আর গত চার মাসে এই পতনের হার প্রায় ৪০ শতাংশে পৌঁছেছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
ভারত সরকারের তথ্য অনুযায়ী, ২৭ আগস্ট থেকে কার্যকর হওয়া নতুন শুল্ক কাঠামোর পুরোপুরি প্রভাব পড়েছে সেপ্টেম্বর মাসে। এই শুল্কের মধ্যে রয়েছে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বন্ধে ভারতের অস্বীকৃতির কারণে অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ জরিমানা।
দিল্লিভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভের (জিটিআরআই) সহ-প্রতিষ্ঠাতা অজয় শ্রীবাস্তব বলেন, শুল্ক বৃদ্ধির পর যুক্তরাষ্ট্র ভারতের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত বাজারে পরিণত হয়েছে।
জিটিআরআইয়ের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, শ্রমনির্ভর খাতগুলোর মধ্যে বস্ত্র, রত্ন ও গয়না, প্রকৌশলজাত পণ্য এবং রাসায়নিক খাত সবচেয়ে বড় ধাক্কা খেয়েছে। এসব খাতে রফতানি আয় ব্যাপকভাবে কমে গেছে।
মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের রপ্তানি ছিল ৮ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার। সেপ্টেম্বর নাগাদ তা নেমে আসে ৫ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারে। অর্থাৎ ৩৭ দশমিক ৫ শতাংশ হ্রাস পায়। পর পর চার মাস ধরে রপ্তানি কমতে থাকায় ভারতের বাণিজ্য ঘাটতিও বেড়েছে। সেপ্টেম্বরে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৩২ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার, যা গত ১৩ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।
তবে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও চীনের সঙ্গে বাণিজ্য বৃদ্ধি কিছুটা ভারসাম্য রক্ষা করেছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
দীর্ঘ বিরতির পর গত মাসে ভারত-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য আলোচনা আবার শুরু হয়। চলমান আলোচনার লক্ষ্য আগামী মাসের মধ্যে একটি প্রাথমিক বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন করা। একটি ভারতীয় প্রতিনিধি দল বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র সফরে রয়েছে।
বুধবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানান, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাকে আশ্বস্ত করেছেন যে ভারত রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করবে। ওয়াশিংটন মনে করছে, এর মাধ্যমে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে ক্রেমলিনের ওপর অর্থনৈতিক চাপ বাড়ানো সম্ভব হবে।
তবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জ্বালানি সহযোগিতা বাড়াতে আলোচনা চলছে। বর্তমান মার্কিন প্রশাসন এই সহযোগিতা গভীর করতে আগ্রহ দেখিয়েছে।
অবশ্য কৃষি ও দুগ্ধ খাতের বাজার প্রবেশাধিকার নিয়ে এখনও বড় ধরনের মতপার্থক্য রয়ে গেছে। বহু বছর ধরে ওয়াশিংটন ভারতের কৃষি খাতকে সম্ভাবনাময় বাজার হিসেবে দেখছে। কিন্তু নয়াদিল্লি খাদ্যনিরাপত্তা, কৃষকের জীবিকা ও অভ্যন্তরীণ বাজার রক্ষার কারণ দেখিয়ে এই খাতকে রক্ষা করে আসছে।
কিছু দিন আগেও যুক্তরাষ্ট্রই ছিল ভারতের বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার। ২০২৪ সালে দুই দেশের পারস্পরিক বাণিজ্য দাঁড়িয়েছিল ১৯০ বিলিয়ন ডলারে। ট্রাম্প ও মোদি দুজনই এই অঙ্ক ৫০০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্য ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু সাম্প্রতিক শুল্কযুদ্ধ সেই লক্ষ্যকে এখন গুরুতর চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে।
সর্বস্তরের জনগণকে ব্যাংকিং সেবা প্রদানের লক্ষ্যে শরীয়াহ্ ভিত্তিক ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসি’র রয়েছে বিভিন্ন মেয়াদি আকর্ষণীয় বিশেষ আমানত প্রকল্প। পরিবারের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইউনিয়ন ব্যাংকের যে কোন একটি আমানত প্রকল্প বেছে নেওয়ার জন্য ১৭৪ টি শাখা ও উপশাখায় আপনাকে স্বাগতম।
দি প্রিমিয়ার ব্যাংক পিএলসি ‘ইন্টিগ্রিটি ও এথিকস প্র্যাকটিস ইন ব্যাংকিং’ শীর্ষক এক গুরুত্বপূর্ণ কর্মশালার আয়োজন করে। সম্প্রতি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে লার্নিং অ্যান্ড ট্যালেন্ট ডেভেলপমেন্ট সেন্টারে (LTDC) এই কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয় ।
অনুষ্ঠানটি উদ্বোধন করেন দি প্রিমিয়ার ব্যাংক পিএলসি ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ আবু জাফর, এবং অনুষ্ঠানে অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্য প্রদান করেন ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সম্মানিত চেয়ারম্যান ডাঃ আরিফুর রহমান। তিনি টেকসই ব্যাংকিং ব্যবস্থায় সততা ও নৈতিকতার গুরুত্বের ওপর বিশেষভাবে আলোকপাত করেন।
কর্মশালার মূল লক্ষ্য ছিল ব্যাংকিং কার্যক্রমের প্রতিটি স্তরে নৈতিক মান, স্বচ্ছতা এবং উত্তম শাসননীতি প্রচার ও বাস্তবায়ন করা। প্রধান কার্যালয় এবং বিভিন্ন শাখার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন, যেখানে দৈনন্দিন ব্যাংকিং কার্যক্রমে সততা ও নৈতিক মূল্যবোধ বজায় রাখার বাস্তবসম্মত দিকগুলো আলোচিত হয়।
প্রযুক্তিগত অধিবেশনগুলো পরিচালনা করেন দি প্রিমিয়ার ব্যাংক পিএলসি স্বতন্ত্র পরিচালক এম. নুরুল আলম, এফসিএস, বাংলাদেশ ফিনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)-এর যুগ্ম পরিচালক মো. হাফিজুর রহমান খান, যুগ্ন পরিচালক, এবং বাংলালিংকের কমপ্লায়েন্স ডিরেক্টর মোহাম্মদ আদিল হোসেন, সিসিইপি। তাঁরা ব্যাংকিং খাতে নৈতিক সংস্কৃতি শক্তিশালীকরণ, নিয়ন্ত্রক সংস্থার বিধি মেনে চলা এবং দায়িত্বশীল ব্যবসায়িক আচরণ বিষয়ে মূল্যবান মতামত ও অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন।
মন্তব্য