× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
The cost of learning to swim abroad is not even 50 crores
google_news print-icon

বিদেশ সফর সাঁতার শিখতে না, খরচও ৫০ কোটি নয়

বিদেশ-সফর-সাঁতার-শিখতে-না-খরচও-৫০-কোটি-নয়
পানিতে ডুবে যাওয়া ঠেকানো শিশুর বিকাশে ভারতে আঙ্গনওয়াড়ি মডেলের আওতায় দিবাযত্নকেন্দ্র। সেখানেই প্রশিক্ষণ নেবেন ১৬ বাংলাদেশি কর্মকর্তা। ছবি: সংগৃহীত
গোটা প্রকল্পটি ২৭১ কোটি টাকার। বিদেশে প্রশিক্ষণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩০ লাখ টাকা, ভারতে যাবেন ১৬ কর্মকর্তা। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব নার্গিস খানম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ভারতে আরও আগে থেকেই ব্লুমবার্গের অর্থায়নেই একটা মডেল রয়েছে, যার নাম আঙ্গনওয়াড়ি মডেল বা উঠান মডেল। এখানে ছোট একটি এলাকার পরিবারগুলো মিলে কারও উঠানে শিশু দিবাযত্নকেন্দ্র পরিচালনা করে। এই মডেল কীভাবে কাজ করছে, কী কী সুবিধা-অসুবিধা রয়েছে ইত্যাদি দেখতে যাবেন কর্মকর্তারা।’

নদী-খাল-বিল-পুকুরে দেশে বছরে ১৪ থেকে ১৫ হাজার শিশুর মৃত্যু হয়। এই মৃত্যু ঠেকাতে শিশুদের সাঁতার শেখানোসহ একটি বড় প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার, যাতে গড়ে তোলা হবে আট হাজারের বেশি শিশু দিবাযত্নকেন্দ্র। প্রতি কেন্দ্রে ২৫ জন শিশুকে রেখে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা ও বিনোদনের ব্যবস্থাও থাকবে।

শিশুদের সাঁতার শেখানো হবে পুকুরে। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন পুকুরকেই বেছে নেয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। দিবাযত্নকেন্দ্রগুলো হবে গ্রামে বাড়ির উঠানে।

কীভাবে শিশুদের নিরাপদে এসব কেন্দ্রে রাখা যায়, তার একটি মডেল প্রকল্প আছে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে। সেই অভিজ্ঞতা হাতে-কলমে শিখতে সরকার ১৬ জন কর্মকর্তাকে পাঠাবে দেশটিতে। প্রশিক্ষণ শেষে বাংলাদেশে ফিরে এ প্রকল্পের একটি মডেল তৈরি করবেন তারা। পাশাপাশি শিশু দিবাযত্নকেন্দ্র যারা পরিচালনা করবেন, তাদের প্রশিক্ষণ হবে দেশে।

দেশে যত শিশুর মৃত্যু হয়, তার মধ্যে প্রধান কারণ নিউমোনিয়া। দ্বিতীয় অবস্থানেই আছে পানিতে ডুবে মৃত্যু। প্রতিদিন এভাবে গড়ে মারা যায় ৪০ শিশু, যাদের বেশির ভাগের বয়স ১০ বছরের নিচে। বছর শেষে সংখ্যাটি দাঁড়ায় ১৪-১৫ হাজার।

সরকার মনে করে, উপযুক্ত ব্যবস্থাপনা ও সাঁতার শিখিয়ে এ মৃত্যু ৮৮ শতাংশ পর্যন্ত কমানো সম্ভব। তাই বেশি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার শিশুদের সাঁতার শেখানোর পাশাপাশি তাদের দিনের একটা সময় শিশু দিবাযত্নকেন্দ্রে রাখার চিন্তা করা হয়।

এই প্রকল্পে শিশুদের সাঁতার শেখানো আসলে দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ। প্রথম পর্যায়ে দুই থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত তিন বছর শিশুদের দিবাযত্নকেন্দ্রে রেখে তার শৈশবের প্রারম্ভিক বিকাশের সুযোগ করে দেয়া। সেখানে নিরাপদে থাকার পাশাপাশি তার বিনোদন ও পুষ্টি নিশ্চিত করার ব্যবস্থা থাকবে। সাঁতার শেখানো হবে ছয় বছর থেকে ১০ বছর পর্যন্ত।

মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব নার্গিস খানম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গ্রামের বাচ্চাদের সুরক্ষায় আমরা নতুন একটি মডেল করতে যাচ্ছি। কারণ যার শিশু মারা যায়, সেই বোঝে কী কষ্ট। ব্লুমবার্গ ও আরএনএলআই থাকবে এ প্রকল্পে, তারা দেখাশোনা করবে। তাই এটি একটি আদর্শ প্রকল্পই হবে।’

কতজনকে প্রশিক্ষণ, খরচ কত

গোটা প্রকল্পটি ২৭১ কোটি টাকার। এ জন্য বিদেশে প্রশিক্ষণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩০ লাখ টাকা। সেখানে যাবেন মোট ১৬ জন কর্মকর্তা। অর্থাৎ একেকজন কর্মকর্তার পেছনে ব্যয় হবে ১ লাখ ৮৭ হাজার ৫০০ টাকা।

ভবিষ্যতে বিদেশে কোথাও সেমিনার বা এই ধরনের আয়োজনে অংশ নিতে হয়, সে জন্যও বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২০ লাখ টাকা।

প্রশিক্ষণের ব্যয় আরও বেশি, মোট ১১ কোটি টাকা। এই ব্যয়ের প্রায় সবটাই হবে দেশে। এই প্রশিক্ষণে শিশুদের সাঁতার শেখানো ছাড়াও থাকবে দিবাযত্নকেন্দ্রে তাদের সঙ্গে আচরণ কেমন হবে, সেটি শেখানো।

এই প্রকল্পে শিশুদের সাঁতার শেখানো আসলে দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ। প্রথম পর্যায়ে দুই থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত তিন বছর শিশুদের দিবাযত্নকেন্দ্রে রেখে তার শৈশবের প্রারম্ভিক বিকাশের সুযোগ করে দেয়া। সেখানে নিরাপদে থাকার পাশাপাশি তার বিনোদন ও পুষ্টি নিশ্চিত করার ব্যবস্থা থাকবে। সাঁতার শেখানো হবে ছয় বছর থেকে ১০ বছর পর্যন্ত।

ভারতের মডেল শিখে এসে ১৬ কর্মকর্তা দেশে প্রশিক্ষণ দেবেন ৬২৪ জনকে। এরা পরে প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করবেন। তারা ১৬ হাজার মাকে প্রশিক্ষণ দেবেন, যারা দিবাযত্নকেন্দ্রে শিশুদের দেখভাল করবেন।

আর শিশুদের সাঁতার শেখাবেন যে ১ হাজার ৬০০ জন, তাদের প্রশিক্ষণ দেবেন সাঁতারুরা।

সম্প্রতি একটি গণমাধ্যমে এই প্রকল্প নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর সামাজিক মাধ্যমে তোলপাড় চলছে। সাঁতার শেখাতে কেন বিদেশে পাঠাতে হবে- এমন প্রশ্ন তুলছে হাজার হাজার মানুষ। আর সেই প্রতিবেদনে বিদেশে প্রশিক্ষণের ব্যয় ৫০ কোটি টাকা উল্লেখ করার পর এই প্রশ্ন আরও বড় হয়েছে।

বিদেশে প্রশিক্ষণের ব্যয় ৩০ লাখ টাকা। তবে সামগ্রিক ব্যয় আরও বেশি, মোট ১১ কোটি টাকা। এর প্রায় সবটাই হবে দেশে। এই প্রশিক্ষণের শিশুদের সাঁতার শেখানো ছাড়াও থাকবে দিবাযত্নকেন্দ্রে তাদের সঙ্গে আচরণ কেমন হবে, সেটি শেখানো। ভারতের মডেল শিখে এসে ১৬ কর্মকর্তা দেশে প্রশিক্ষণ দেবেন ৬২৪ জনকে। এরা পরে প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করবেন। তারা ১৬ হাজার মাকে প্রশিক্ষণ দেবেন, যারা দিবাযত্নকেন্দ্রে শিশুদের দেখভাল করবেন। আর শিশুদের সাঁতার শেখাবেন যে ১ হাজার ৬০০ জন, তাদের প্রশিক্ষণ দেবেন সাঁতারুরা।

পরিকল্পনা কমিশনের আর্থসামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য নাসিমা বেগমকে উদ্ধৃত করে একটি গণমাধ্যম লিখেছে, ‘দুইটি টিমে ৮ জন করে ১৬ জন কর্মকর্তা বিদেশ যাবেন। এর জন্য ব্যয় হবে ৩০ কোটি টাকা।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাকে মিড কোড করা হয়েছে। এমনটি আমি বলিনি।…আমি যা বলিনি তা লিখবে কেন? বক্তব্য লেখার সময় আরও সংযত হয়ে লেখা উচিত। তবে এ নিয়ে আর কথা বলতে চাই না।’

কেন ভারতে প্রশিক্ষণ

প্রশিক্ষণের জন্য ভারতকে বেছে নেয়ার কারণ দুটি। প্রথমত, প্রতিবেশী দেশ হওয়ায় সেখানে খরচ অনেক কম। দ্বিতীয়ত, সেখানে এই ধরনের একটি পরীক্ষিত মডেল রয়েছে।

মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব নার্গিস খানম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ভারতে আরও আগে থেকেই ব্লুমবার্গের অর্থায়নেই একটা মডেল রয়েছে, যার নাম আঙ্গনওয়াড়ি মডেল বা উঠান মডেল। এখানে ছোট একটি এলাকার পরিবারগুলো মিলে কারও উঠানে শিশু দিবাযত্নকেন্দ্র পরিচালনা করে। এই মডেল কীভাবে কাজ করছে, কী কী সুবিধা-অসুবিধা রয়েছে ইত্যাদি দেখতে যাবেন কর্মকর্তারা।’

পরিকল্পনা কমিশনের আর্থসামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য নাসিমা বেগম বলেন, ‘চাইল্ড কেয়ারের বিষয়টিতে কর্মকর্তাদের বাস্তব অভিজ্ঞতা নিতে এই বিদেশ সফরের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। শিশুদের কীভাবে ডে-কেয়ারে রেখে সুন্দর লাইফ দেয়া যায়, সেটাই দেখতে যাবেন তারা। কারণ আমরা অনেকেই শিশুদের সঙ্গে যে আচরণ করি, তেমনটি করা উচিত না। তাদের শারীরিক, মানসিক ও বুদ্ধিভিত্তিক বিকাশের জন্য সুন্দর ও উপযুক্ত ব্যবহার করতে হবে।’

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, পানিতে ডুবে মৃত্যু রোধে তিনটি কৌশল সবচেয়ে কার্যকর। এক. পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য নিরাপদ ও সাশ্রয়ী শিশু-যত্নের ব্যবস্থা করা। দুই. সুরক্ষা ও নিরাপত্তায় জোর দিয়ে ৬-১০ বছরের শিশুদের সাঁতার শিক্ষার ব্যবস্থা করা। তিন. শিশুদের নিরাপত্তাঝুঁকি এবং তা হ্রাস করার পদ্ধতি সম্পর্কে জনসাধারণ, মা-বাবা ও অভিভাবকদের সচেতনতা বৃদ্ধি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তিনটি প্রতিরোধ কৌশলই অন্তর্ভুক্ত করে ১৬টি জেলায় ৪৫টি উপজেলায় এই প্রকল্প পরিচালনা করা হবে।

প্রকল্পের বিস্তারিত

প্রকল্পটির নাম ‘সমাজভিত্তিক সমন্বিত শিশু দিবাযত্নকেন্দ্রের মাধ্যমে শিশুর প্রারম্ভিক বিকাশ ও সুরক্ষা এবং শিশুর সাঁতার সুবিধা প্রদান’। এটি মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প, যেটির বাস্তবায়ন করবে শিশু একাডেমি।

এতে শিশুদের সাঁতার শেখানোর জন্য দেশে প্রায় দেড় হাজার প্রশিক্ষক তৈরি করা হবে। পাশাপাশি প্রায় আট হাজার দিবাযত্নকেন্দ্রও তৈরি করা হবে।

একেকটি দিবাযত্নকেন্দ্রে দিনে রাখা হবে ২৫টি শিশুকে। তাদের দেখভালের মূল দায়িত্বে থাকবেন সেই শিশুদের মায়েদের মধ্য থেকে দুজন। এ দুজনকে দেয়া হবে বিশেষ প্রশিক্ষণ, দেয়া হবে ভাতাও।

গত মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে। ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে কার্যক্রমের আওতায় আসবে সাড়ে পাঁচ লাখেরও বেশি শিশু।

এই প্রকল্পের অর্থিক সহায়তা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রোপিজ ও যুক্তরাজ্যভিত্তিক রয়্যাল ন্যাশনাল লাইফবোট ইনস্টিটিউট (আরএনএলআই)।

মন্ত্রণালয় বলছে, দেশে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকে দেড় থেকে ১০ বছরের শিশুরা। এর মধ্যে বেশি শিশু মারা যায় দেড় থেকে দুই বছরে। কারণ এ সময় তারা হাঁটাচলা শেখে, চোখের পলকে এদিক-সেদিক চলে যায়। এ জন্য শিশুদের বয়সকে দুই ভাগ করে তাদের আলাদা ব্যবস্থাপনায় আনা হবে।

প্রকল্পটির নাম ‘সমাজভিত্তিক সমন্বিত শিশু দিবাযত্নকেন্দ্রের মাধ্যমে শিশুর প্রারম্ভিক বিকাশ ও সুরক্ষা এবং শিশুর সাঁতার সুবিধা প্রদান’। এটি মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প, যেটির বাস্তবায়ন করবে শিশু একাডেমি। এতে শিশুদের সাঁতার শেখানোর জন্য দেশে প্রায় দেড় হাজার প্রশিক্ষক তৈরি করা হবে। পাশাপাশি প্রায় আট হাজার দিবাযত্নকেন্দ্রও তৈরি করা হবে।

এর মধ্যে এক থেকে পাঁচ বছরের শিশুদের দিবাযত্ন কেন্দ্রে পরিচর্যায় রাখা হবে। এতে তারা পানিতে পড়ার ঝুঁকি থেকে যেমন বাঁচবে, তেমনি বাঁচবে অন্যান্য আঘাত ও আঘাতজনিত মৃত্যু থেকে।

আর পাঁচ থেকে ১০ বছর বয়সের শিশুরা একটু বড়। তারা স্কুলসহ অন্যান্য কাজে বাইরে যাবেই। তাই তাদের সাঁতার শিখিয়ে সুরক্ষা দেয়া হবে। এতে তাদের মৃত্যুঝুঁকি অনেক কমে আসবে।

মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় যুগ্ম সচিব (পরিকল্পনা) নার্গিস খানম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘অনেক সময় দেখা যায়, মায়েরা বাসায় কাজ করছে, তখন শিশু হেঁটে ঘরের বাইরে গিয়ে পুকুর বা ডোবায় পড়ে যায়। কর্মজীবী মায়েদের শিশুদের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটে। এ জন্য সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তাদের গ্রামীণ পরিবেশেই দিবাযত্নকেন্দ্রে রাখা হবে। তাদের দেখাশোনার জন্যও মানুষ থাকবে, আবার সবার সঙ্গে মিশে শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশও ঘটবে।’

কেমন হবে দিবাযত্নকেন্দ্রগুলো

নার্গিস খানম জানান, এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে গ্রাম এলাকায় কাজ করা এনজিওগুলোর মাধ্যমে। দিবাযত্নগুলো হবে একেবারেই কমিউনিটিভিত্তিক। স্বেচ্ছা অংশগ্রহণের ভিত্তিতে কারও উঠান বা বাসাকে বেছে নেয়া হবে।

শিশুদের জন্য খেলনার ব্যবস্থা থাকবে সেখানে। গ্রামের শিশুরা যেসব উপকরণ দিয়ে খেলে, সেগুলোই রাখা হবে সেখানে। সেবাদানকারীরা বাচ্চাদের সঙ্গে খেলবেন, গান করবেন, তাদের শৈশবের বিকাশে সাহায্য করবেন।

নার্গিস খানম বলেন, ‘কোনো মা-বাবা হয়তো মাঠে কাজ করছেন, ঘরের কাজ করছেন। কিন্তু তার বাচ্চা আর ঝুঁকিতে থাকল না। পরিচিত বাচ্চাদের সঙ্গে খেলেই বড় হবে সে।’

কেবল সময় কাটানো বা নিরাপদে রাখা নয় নয়, শিশুদের পুষ্টি নিশ্চিতেও এই প্রকল্প ভূমিকা রাখবে বলে জানান তিনি। বলেন, ‘বাচ্চার সুন্দর বিকাশের জন্য কীভাবে তার সঙ্গে আচরণ করতে হবে, তাদের সুষম খাবার কেমন হবে, তা নিয়েও মায়েদের সঙ্গে সেশন থাকবে।’

দিবাযত্নগুলো হবে একেবারেই কমিউনিটিভিত্তিক। স্বেচ্ছা অংশগ্রহণের ভিত্তিতে কারও উঠান বা বাসাকে বেছে নেয়া হবে। শিশুদের জন্য খেলনার ব্যবস্থা থাকবে সেখানে। গ্রামের শিশুরা যেসব উপকরণ দিয়ে খেলে, সেগুলোই রাখা হবে সেখানে। সেবাদানকারীরা বাচ্চাদের সঙ্গে খেলবেন, গান করবেন, তাদের শৈশবের বিকাশে সাহায্য করবেন।

সাঁতার শেখানো ও শিশু দিবাযত্নকেন্দ্র কেন প্রয়োজন

বাংলাদেশ ডেমোগ্রাফিক অ্যান্ড হেলথ সার্ভে ২০১৭-এর তথ্য বলছে, বাংলাদেশে প্রতি বছর নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ২৪ হাজার ৩০০টি শিশুর মৃত্যু হয়। এর পরেই রয়েছে পানিতে পড়ে মৃত্যুর সমস্যা।

২০১৬ সালে করা সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চ বাংলাদেশের (সিআইপিআরবি) জরিপের তথ্য অনুযায়ী, বছরে প্রায় ১৪ হাজার ৪৩৮টি শিশু পানিতে ডুবে মারা যায়। দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা ৪০ জনের মতো।

যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০ সালের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, পানিতে ডুবে মৃত্যুর শতকরা ৮৮ ভাগ পর্যন্ত প্রতিরোধ করা সম্ভব।

২০১৬ সালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর পরিচালিত বাংলাদেশ স্বাস্থ্য ও দুর্ঘটনা সমীক্ষা বলছে, বাংলাদেশের পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুরা সবচেয়ে বড় ঝুঁকিতে। এই মৃত্যুর ঘটনাগুলো ঘটে বাড়ির ২০ মিটারের মধ্যে জলাধারে এবং দিনের প্রথমভাগে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, পানিতে ডুবে মৃত্যু রোধে তিনটি কৌশল সবচেয়ে কার্যকর। এক. পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য নিরাপদ ও সাশ্রয়ী শিশু-যত্নের ব্যবস্থা করা। দুই. সুরক্ষা ও নিরাপত্তায় জোর দিয়ে ৬-১০ বছরের শিশুদের সাঁতার শিক্ষার ব্যবস্থা করা। তিন. শিশুদের নিরাপত্তাঝুঁকি এবং তা হ্রাস করার পদ্ধতি সম্পর্কে জনসাধারণ, মা-বাবা ও অভিভাবকদের সচেতনতা বৃদ্ধি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তিনটি প্রতিরোধ কৌশলই অন্তর্ভুক্ত করে ১৬টি জেলায় ৪৫টি উপজেলায় এই প্রকল্প পরিচালনা করা হবে। সবচেয়ে বেশি শিশুর মৃত্যু হয়, এমন উপজেলাগুলোই বেছে নেয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন:
খেলতে গিয়ে ছাদ থেকে পড়ে শিশুর মৃত্যু
কেরানীগঞ্জে ছাদ থেকে পড়ে শিশুর মৃত্যু
বালতির পানিতে পড়ে শিশুর মৃত্যু
রাঙ্গাবালীতে পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
Another 120 people from Libya have been brought back home

লিবিয়া থেকে আরও ১২৩ জনকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে

লিবিয়া থেকে আরও ১২৩ জনকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে

লিবিয়া থেকে স্বেচ্ছায় দেশে ফেরার আগ্রহ প্রকাশ করা আরও ১২৩ অনিবন্ধিত বাংলাদেশি নাগরিককে গতকাল বৃহস্পতিবার দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এসব বাংলাদেশির সবাই বুরাক এয়ারের একটি বিশেষ চার্টার্ড ফ্লাইটে (ইউজেড ০২২২) সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান।

উল্লেখ্য, প্রত্যাগতদের অধিকাংশই মানবপাচারের শিকার। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে, ত্রিপোলিতে বাংলাদেশ দূতাবাস, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) সমন্বিত উদ্যোগে প্রত্যাবাসন কার্যক্রমটি বাস্তবায়িত হয়েছে।

দেশে ফেরার পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং আইওএম-এর প্রতিনিধিরা তাদের স্বাগত জানান ।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অধিকাংশ বাংলাদেশি সমুদ্রপথে ইউরোপে পৌঁছানোর উদ্দেশে অনিবন্ধিতভাবে লিবিয়ায় প্রবেশ করেছিলেন। লিবিয়ায় অবস্থানকালে তাদের অনেকেই মানব পাচারকারীদের দ্বারা অপহরণ ও নির্যাতনের শিকার হন।

সরকারি কর্মকর্তারা এসব অভিবাসীকে পরামর্শ দেন, যেন তারা অন্যদের এই ধরনের বিপজ্জনক ও অবৈধ পথে বিদেশ গমনের ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন করেন এবং ভবিষ্যতে এমন যাত্রা থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেন।

পুনর্বাসন সহায়তার অংশ হিসেবে আইওএম প্রত্যেককে নগদ ৬ হাজার টাকা, জরুরি খাদ্য সহায়তা, প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা এবং প্রয়োজনে অস্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা করেছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, বর্তমানে লিবিয়ার বিভিন্ন বন্দিশিবিরে আটক থাকা অন্যান্য বাংলাদেশির নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের কাজ চলছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ত্রিপোলিতে বাংলাদেশ দূতাবাস, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং আইওএম যৌথভাবে এ বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছে।

মন্তব্য

তদন্ত কমিশনের সংবাদ সম্মেলন

গুমের শিকার ব‍্যক্তিদের চার ধরনের পরিণতি হতো

গুমের শিকার ব‍্যক্তিদের চার ধরনের পরিণতি হতো

রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই গুম করা হতো বলে জানিয়েছেন গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিটির সভাপতি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী। গুমের শিকার ব্যক্তিদের সম্ভাব্য ৪ ধরনের পরিণতি হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানে সংবাদ সম্মেলনে গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিটির সভাপতি এসব তথ্য জানান। কমিশনে দাখিল করা অভিযোগ বিশ্লেষণে এসব তথ্য দেন তিনি।

তিনি বলেন, গুমের শিকার ব্যক্তিদের সম্ভাব্য যে ৪ ধরনের পরিণতি হয়েছে, তা হলো: ১. গুমের শিকার ব্যক্তিকে হত্যা করা। ২. বিচারের আগেই মিডিয়ার সামনে উপস্থাপন করে জঙ্গি তকমা দিয়ে বাংলাদেশেই বিচারাধীন বা নতুন ফৌজদারি মামলায় গ্রেফতার দেখানো।৩. তাকে সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাঠিয়ে সে দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের মাধ্যমে গ্রেপ্তারের ব্যবস্থা করা। ৪. ভাগ্য সুপ্রসন্ন হলে, অল্পসংখ্যক ক্ষেত্রে মামলা না দিয়ে ছেড়ে দেওয়া।

গুম কমিশনের ২য় অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন গত ৪ জুন প্রধান উপদেষ্টা বরাবর জমা দেওয়ার পর আজ দুপুরে রাজধানীর গুলশানে গুম সংক্রান্ত কমিশন অফ ইনকোয়ারির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মইনুল ইসলাম চৌধুরী এ সব কথা বলেন।

গুম কমিশনের সভাপতি বলেন, বিগত কর্তৃত্ববাদী সরকারের আমলে বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি এবং ভিন্ন মতাবলম্বীদের বিরুদ্ধে পদ্ধতিগত দমননীতির অংশ হিসেবে গুমকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল।

তিনি বলেন, ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পরেও বহু অপরাধী ও তাদের শুভাকাঙ্ক্ষীরা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার কেন্দ্রে থাকায় অনেক জোরালো প্রমাণ ও নিদর্শন ধ্বংস, অনেক ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক অসহযোগিতা, সাক্ষীদের ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ নানারকম ভীতিকর ও আতঙ্কজনক পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। তবুও বহু ভুক্তভোগী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাদের অভিযোগ ও অভিজ্ঞতা জানিয়েছেন। তারা দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বিস্তারিতভাবে সে কাহিনি তুলে ধরেছেন।

গুম সংক্রান্ত কমিশন অফ ইনকোয়ারির সভাপতি আরো বলেন, বিগত সরকারের শাসনামলে গুম একটি সুশৃঙ্খল ও প্রাতিষ্ঠানিক রূপে ‘জঙ্গিবাদবিরোধী’ অভিযানের ছায়াতলে ইসলামি উগ্রবাদের হুমকিকে ব্যবহার করে রাজনৈতিক ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করা, আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন ও শাসন দীর্ঘায়িত করার উদ্দেশে পরিচালিত হয়েছিল। ভুক্তভোগীদের মধ্যে ছিলেন- মেধাবী শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক কর্মী ও সাংবাদিক থেকে সাধারণ জনগণ।

মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, এ প্রক্রিয়ায় তারা ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থাকে অস্ত্র বানিয়েছিল। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও নিরাপত্তা বাহিনীকে রাজনৈতিক প্রভাবাধীন করে এবং নির্যাতন ও গোপন আটকের সংস্কৃতি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে চালু করেছিল। এমনকি সাধারণ নাগরিকদের বেআইনি পন্থায় বারবার ভারতীয় বাহিনীর হাতেও তুলে দেওয়া হয়েছিল।

কমিশন অফ ইনকোয়ারি অ্যাক্টের ধারা ১০ এ(১) ও (২) অনুযায়ী কমিশনে দাখিলকৃত ১৩১টি অভিযোগের বিষয়ে আইন মোতাবেক জিডি রেকর্ডপূর্বক ভিকটিমদের সন্ধান ও উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য পুলিশ মহাপরিদর্শক বরাবর প্রেরণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, গোপন আটক কেন্দ্রের অস্তিত্ব এখন আর অস্বীকার করা যায় না। সকল ক্ষেত্রেই ভুক্তভোগীরা প্রায় একই ধরনের প্রক্রিয়ার শিকার হয়েছেন। পদ্ধতিগত নির্যাতন, সন্ত্রাসী হিসেবে প্রচার, একই ধরনের আইন অনুযায়ী অভিযোগ দায়ের ও একই ধরনের ভাষায় বর্ণনা। বিভিন্ন পটভূমি থেকে আসা ব্যক্তিদের অভিজ্ঞতার এই সামঞ্জস্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যকে স্পষ্ট করে।

তিনি বলেন, প্রতিবেদনে ১৯ শতাংশ ফেরত না আসা ১২ জন ভিকটিমের বিষয়ে অগ্রগতি তুলে ধরেছি, যাদের বিষয়ে প্রাথমিকভাবে অনুসন্ধান সম্পন্ন হয়েছে। তাদের গুমের জন্য কারা দায়ী, তা প্রাথমিকভাবে আমরা শনাক্ত করতে পেরেছি। চলমান অনুসন্ধানের স্বার্থে এই মুহূর্তে এর চেয়ে বেশি প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে না।

ফিরে না আসা ভিকটিমদের বিষয়ে অপরাধী ও গুমের অপরাধ সংঘটনের স্থানসহ নানাবিধ বিষয়ে তথ্যের ঘাটতি বা পুরোনো কললিস্ট না পাওয়াসহ নানারকম বিলম্বঘটিত প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হলেও কমিশন আন্তরিকতার সঙ্গে অনুসন্ধান কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।

প্রতিবেদনে কমিশন সন্ত্রাসবিরোধী যে সব মামলায় অপব্যবহার হয়েছে, তা ন্যায় বিচারের মানদণ্ড বিবেচনায় নিয়ে দ্রুত নিষ্পত্তির ব্যবস্থা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতনের সঙ্গে আলোচনার প্রেক্ষিতে মালয়েশিয়া-ইন্দোনেশিয়ার মতো উপযুক্ত কাউন্টার টেরোরিজম মেথড বের করার জন্য দুটি সুপারিশ করা হয়।

এ সময় গুম সংক্রান্ত কমিশন অফ ইনকোয়ারির সদস্য অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত বিচারক মো. ফরিদ আহমেদ শিবলী, মানবাধিকার কর্মী নূর খান, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কমিশনের সদস্য নাবিলা ইদ্রিস, মানবাধিকার কর্মী ও কমিশনের সদস্য সাজ্জাদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The accused in the murder case

আদালত থেকে পালাল হত্যা মামলার আসামি

আদালত থেকে পালাল হত্যা মামলার আসামি

ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের এজলাস থেকে হাজতখানায় নেওয়ার পথে পুলিশকে মারধর করে পালিয়েছেন হত্যা মামলার এক আসামি।

আসামি শরিফুল ইসলাম (২২) দিনাজপুর জেলার নবাবগঞ্জ থানার হরিপুর গ্রামের মৃত শফিক আহম্মেদের ছেলে। তিনি রাজধানীর খিলগাঁও থানার জিসান হোসেন (১৪) হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি। মামলাটি বর্তমানে সাক্ষ্যগ্রহণের পর্যায়ে রয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১ টার পর সংশ্লিষ্ট আদালতের দায়িত্বে থাকা পুলিশ কনস্টেবল শহিদুল্লাহকে মারধর করে ছুটে পালিয়ে যান আসামি শরিফুল। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের হাজতখানার ইনচার্জ এসআই রিপন।

তিনি বলেন, আসামিকে আদালত থেকে হাজতখানায় নেওয়ার সময় পুলিশকে আঘাত করে তিনি পালিয়ে যায় আসামি শহিদুল।

ডিএমপির প্রসিকিশন বিভাগের এডিসি মাইন উদ্দিন বলেন, আসামির হাতে হাতকড়া পরানো ছিল। তিনি ধাতব কিছু দিয়ে হাতকড়া ঢিলা করে কৌশলে খুলে ফেলে। পরে পুলিশ কনস্টেবলের হাতে আঘাত করে পালিয়ে যায়।

তিনি বলেন, আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি। কোতোয়ালি থানাকে জানানো হয়েছে আসামিকে গ্রেপ্তারের জন্য। তার বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলমান।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The 5th Annual Senate Meeting in the BUP

বিইউপিতে ১৭তম বার্ষিক সিনেট সভা অনুষ্ঠিত

বিইউপিতে ১৭তম বার্ষিক সিনেট সভা অনুষ্ঠিত

১৯ জুন ২০২৫ তারিখে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি) এর ১৭তম বার্ষিক সিনেট সভা বিইউপির বিজয় অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিইউপির উপাচার্য ও সিনেট চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মোঃ মাহ্বুব-উল আলম, বিএসপি, এনডিসি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি, এমফিল, পিএইচডি।

সভার শুরুতে বিইউপির উপাচার্য ও সিনেট চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মোঃ মাহ্বুব-উল আলম বিদায়ী সদস্যদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং নবনিযুক্ত সদস্যদের স্বাগত জানান। পরে বিইউপির ট্রেজারার এয়ার কমডোর মোঃ রেজা এমদাদ খান, জিইউপি, বিইউপি, এনডিসি, পিএসসি, জিডি(পি), ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট ১৩৪ কোটি ৮ লক্ষ টাকা ও ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের ১৩৪ কোটি ৯৭ লক্ষ টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন।

সিনেট সদস্যগণ ট্রেজারার এর বক্তৃতার ওপর আলোচনা করেন এবং সর্বসম্মতিক্রমে বাজেট প্রস্তাব অনুমোদন করেন। এছাড়াও সিনেট সভায় ১৭তম বার্ষিক প্রতিবেদন উপস্থাপিত ও সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদিত হয়। ১৭তম বার্ষিক সিনেট সভাটি সার্বিকভাবে সঞ্চালনা করেন বিইউপির রেজিস্ট্রার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ রাব্বি আহসান, এনডিসি, পিএসসি।

সভায় সিনেট চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মাহ্বুব তাঁর বক্তব্যে বলেন, বিইউপি বয়সে নবীন হলেও এর শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও গবেষকগণের বিভিন্ন প্রতিযোগিতা, সেমিনার, ওয়ার্কশপ ও গবেষণা ভিত্তিক কার্যক্রমের অর্জনসমূহ জাতীয় আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সুনাম বয়ে আনছে। যুগোপযোগী শিক্ষা প্রদান, গবেষণা ও উদ্ভাবনী কার্যক্রমে বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নিত হওয়ার লক্ষ্যে অত্র বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক একটি সুনির্দিষ্ট Academic Strategic Plan –২০৫০ প্রণয়ন করা হয়েছে।

Academic Strategic Plan এর মাধ্যমে পাঠ্যক্রমের আধুনিক মান নির্ধারণ, Outcome Based Education (OBE) কারিকুলাম প্রনয়ণ, গবেষণা, উদ্ভাবন, প্রকাশনা ও গবেষণা সহায়তার সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

মাননীয় উপাচার্য সকলকে অবহিত করেন যে বিইউপি’র গবেষণাভিত্তিক অগ্রযাত্রায় BUP Research Centre (BRC) অংঙ্গীভূত ফ্যাকাল্টি ও অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠানসমূহে গবেষণা, উদ্ভাবন ও পরামর্শমূলক কার্যক্রমে গতিশীলতা আনার লক্ষ্যে কাজ করছে। 'Inspiring Innovation for Advancing Knowledge' শ্লোগানকে ধারণ করে, BUP Research Centre, গবেষকদের মানসম্মত গবেষণায় উৎসাহ দিচ্ছে এবং শিল্প-প্রতিষ্ঠান ও একাডেমিয়ার মধ্যে সংযোগ স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

এছাড়াও তিনি উল্লেখ করেন, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গবেষকদের গবেষণালব্ধ জ্ঞান প্রসারের উদ্দেশ্যে বিইউপি থেকে ৫টি জার্নাল প্রতিবছর নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে যা সকলের মাঝে সমাদৃত। সিনেট চেয়ারম্যান আরও উল্লেখ করেন যে, শিক্ষার্থীদের শিক্ষার পাশাপাশি একজন সুশৃঙ্খল, নৈতিকতা সম্পন্ন সু-নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বিইউপি বদ্ধপরিকর এবং সে লক্ষ্যে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের চারিত্রিক গুণাবলি ও আত্মিক উন্নয়নের লক্ষ্যে সকল প্রোগ্রামের পাঠ্যক্রমে নৈতিক শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে Need Based Education - কেও গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা হচ্ছে। তিনি বলেন যে, আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষার্থীদের মানসম্মত কারিকুলাম ও শিক্ষা পরিবেশের পাশাপাশি বৈচিত্র‍্যময় সাংস্কৃতিক সান্নিধ্যের গুরুত্বকে সামনে রেখে বিইউপি'তে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া, নবপ্রজন্মের মধ্যে নৈতিক মূল্যবোধ, সততা, চরিত্র গঠন ও সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা এবং দেশপ্রেম জাগ্রত করতে পড়াশোনার পাশাপাশি বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য, জাতীয় দিবসগুলোর তাৎপর্য ও মাহাত্ম্য তুলে ধরে বিইউপি’র বিভিন্ন আলোচনা সভা, সিম্পোজিয়াম, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজনের কথা উল্লেখ করেন।

এই সিনেট সভায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ সশস্ত্রবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং বিইউপির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
BNP does not support the electoral college in the presidential election

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ইলেকট্রোরাল কলেজব্যবস্থা সমর্থন করে না বিএনপি

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ইলেকট্রোরাল কলেজব্যবস্থা সমর্থন করে না বিএনপি

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রস্তাবিত ইলেকট্রোরাল কলেজব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করেছে বিএনপি। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘জনগণের ভোটাধিকার হরণে এই ব্যবস্থাকে আরেকটি ছলচাতুরী হিসেবে দেখা হচ্ছে।’

গতকাল বুধবার বিকালে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য কমিশনের যে প্রস্তাব তাতে একটা ইলেক্টোরাল কলেজ করা হবে। এবং প্রায় ওনাদের ভাষ্য অনুযায়ী ৭০ হাজারের মতো ভোটার থাকবে। ইউনিয়ন পর্যায় থেকে শুরু করে স্থানীয় সরকার পর্যায়ের প্রতিনিধিগণ এখানে ভোটার হবেন। এবং রাষ্ট্রপতিকে সৎ, দক্ষ ও অভিজ্ঞ একজন ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেওয়ার জন্য ওখানে প্রস্তাব করা হয়েছে।

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠনের প্রস্তাবে আগের মতোই একমত নয় বিএনপি।

এই কাউন্সিলের জবাবদিহি না থাকায় সমর্থন করে না বিএনপি। এই কাউন্সিলে আরেকটি ভারসাম্যহীন অবস্থা তৈরি হবে বলে মনে করি আমরা।’

স্বাধীন বিচারব্যবস্থার দাবি জানিয়ে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘স্বাধীন বিচারব্যবস্থা হলে ভারসাম্যহীনতা দূর হবে, ফ্যাসিবাদ দমন করবে। প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য, অন্য সাংবিধানিক পদ, সংস্থা স্বাধীন করতে পারলে সমস্যা থাকবে না।’

বিএনপি মনে করে সুশাসন নিশ্চিত করতে ন্যায়পাল করা যেতে পারে। বিদ্যমান ব্যবস্থা বজায় রেখে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ হলে তাদের যোগ করা যেতে পারে, বলেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন আইন সংশোধন করা যেতে পারে। জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। বিএনপি মনে করে, দুদক ও মানবাধিকার কমিশনের মতো প্রতিষ্ঠান শক্তিশালী করতে বিদ্যমান আইনগুলো সংস্কারের প্রয়োজন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Bhawal Chandipur Agrakhola road is like a death

ভাওয়াল-চন্ডিপুর-অগ্রখোলা সড়ক যেন মরণফাঁদ

চরম দুর্ভোগে এলাকাবাসী   
ভাওয়াল-চন্ডিপুর-অগ্রখোলা সড়ক যেন মরণফাঁদ

কেরানীগঞ্জের শাক্তা ও তারানগর ইউনিয়নের বুক চিরে চলা ভাওয়াল-চন্ডিপুর-অগ্রখোলা সড়কের বেহাল দশায় নিত্যদিন ভোগান্তিতে পড়ছে হাজারো মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে সড়কজুড়ে এখন গর্ত আর ধুলাবালি। সামান্য বৃষ্টিতে কাদায় যানবাহন আটকে যায়, আর শুকনো মৌসুমে উড়ে ধূলোর ঝড়।

রাস্তাটির বেহাল অবস্থার কারণে প্রায় প্রতিদিনই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন পথচারী ও যানবাহনের চালকরা। ছোট-বড় গর্তে হোঁচট খেয়ে পড়ে আহত হন অনেক পথচারী। অন্যদিকে, যানবাহন চলাচলের অযোগ্য এই সড়কে প্রতিনিয়তই নষ্ট হয়ে পড়ে ভ্যান, অটোরিকশা, ট্রাকসহ বিভিন্ন গাড়ি। আকিজ ফাউন্ডেশন স্কুল, মেকাইল মাদ্রাসা ও অগ্রখোলা কমিউনিটি হাসপাতালের সামনের অবস্থা এতটাই খারাপ যে মাঝে মাঝেই উল্টে যায় যাত্রী বোঝাই যানবাহন ।

সড়কের করুণ অবস্থার কারণে অনেক চালক ও পথচারী এখন পাশের বেলনা, কলাতিয়া ও নয়াবাজার হয়ে বিকল্প রাস্তায় যাতায়াত করছেন। এতে সময়, অর্থ ও দুর্ভোগ বাড়ছে।

এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন কেরানীগঞ্জ ছাড়াও নবাবগঞ্জ, দোহার, সিরাজদিখানসহ দক্ষিণবঙ্গের হাজার হাজার মানুষ মোহাম্মদপুর হয়ে রাজধানীতে প্রবেশ করে। অথচ বছরের পর বছর ধরে অবহেলায় পড়ে আছে সড়কটি।

স্থানীয় বাসিন্দা কবির হোসেন বলেন, ‘রাস্তাটার অবস্থা এমন যে, অটোরিকশা সিএনজিতে ওঠা মানেই কোমর ভাঙা। মাঝে মাঝেই যানবাহন পড়ে মানুষ আহত হয়। স্কুলের বাচ্চারা পর্যন্ত ভয়ে এই রাস্তায় যেতে চায় না। কোন এমপি-মন্ত্রী একবার এই রাস্তা দিয়ে গেলে বুঝত কষ্টটা কেমন।

একই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পণ্যবাহী ট্রাকচালক রাকিব হাওলাদার। তিনি বলেন, একবার গর্তে পড়লে গাড়ির যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে যায়। ট্রাকে থাকা জিনিসপত্র পড়ে যায়, এভাবে থাকলে এই রাস্তা দিয়ে আর চলাচল করা সম্ভব নয়। এটি দ্রুত সংস্কার করা উচিত।

এ বিষয়ে কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ বলেন, সড়কটি ইতোমধ্যে ডিপিপিতে অনুমোদন পেয়েছে। তাই এখন সংস্কার করা হচ্ছেনা। বছরের শেষ দিকে ২০ ফুট প্রশস্ত করে এবং আরও শক্তিশালী করে কাজ শুরু হবে। তখন রাস্তাটি আরো টেকসই হবে।

এদিকে এলাকাবাসীর দাবি, সংস্কার কাজ শুরুর আগ পর্যন্ত অন্তত গর্ত ভরাট করে সাময়িক চলাচলের উপযোগী করে তুলতে হবে। নইলে প্রতিদিন দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Twenty four bucks the family of four runs a family of four

আড়াইশ টাকা আয়ে চারজনের সংসার চালায় কিশোর তোফাজ্জল!

আড়াইশ টাকা আয়ে চারজনের সংসার চালায় কিশোর তোফাজ্জল!

একটা ভাঙাচোরা বাইসাইকেলই তার ভরসা। এ সাইকেল চালিয়ে ১৫ কিলোমিটার দুরের দুর্গম খাসিয়া পল্লীতে কাজ করে দুই-আড়াইশ টাকা রোজগার করে কিশোর তোফাজ্জল (১৪)। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী ৯নং ইসলামপুর ইউনিয়নের কাঁঠালকান্দী গ্রামের আলী আহমেদ (৬৫) এর ছেলে তোফাজ্জল হোসেন। পরিবারে সে একমাত্র উপার্জনক্ষম। বাবা হার্টের রোগী, বোন আয়েশা খাতুন (২৫) মানসিক ভারসাম্যহীন আর বয়োবৃদ্ধ দাদী সমিতা বিবি (৮২) দীর্ঘদিন ধরে শয্যাশায়ী।

তোফাজ্জল কান্নাজড়িত কন্ঠে এ প্রতিবেদককে বলেন, প্রতিদিনি সকালে ভাঙাচোরা একটি সাইকেল নিয়ে ১৫ কিলোমিটার দুরের খাসিয়া পল্লীতে কাজে যাই। সন্ধ্যায় ফিরি। যা রোজগার হয়, দুবেলাও খেতে পাইনা। এ দুনিয়ায় আল্লাহ ছাড়া আমাদের আর কেউ নাই। প্রতিবেশী ফজল মিয়া, আবু শহীদ এ পরিবারের দুরাবস্থার কথা জানিয়ে বলেন, প্রকৃতই তারা খুব অসহায় ও মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। তিনজনই অসুস্থ। মাঝে মধ্যে আমরা যতটা সম্ভব সহযোগিতা করার চেষ্টা করি।

সরেজমিন তোফাজ্জলদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সরকারি আবাসন প্রকল্পের ছোট্ট একটি ঘরে মেঝেয় জীর্ণ-শীর্ণ কাঁথায় শুয়ে আছেন সমিতা বিবি। অপুষ্টি আর ক্ষুধার যন্ত্রণায় ক্লান্ত। ঠিকমতো কথা বলতে পারছেন না। যা বললেন বোঝা গেলো, ডালভাত খেয়ে ঈদের দিন পার করেছি। ক্ষিদের জ্বালায় রাতে ঘুম আসে না। একরত্তি নাতি আর কিইবা করবে। তবু যা করছে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া। চাল ডাল আনলে ওষুধ আনতে পারে না। তবু প্রায়ই অনাহারে থাকতে হয়। ঈদে চান্দে প্রতিবেশীরা কেউ খাবার দেয়, কেউ সামান্য টাকা-পয়সা দেয়। এইভাবেই টিকে আছি।

স্থানীয়দের সহযোগিতাই একমাত্র ভরসা। মানুষের সাহায্যে দুমুঠো ভাত খেতে পারেন, যদি কেউ সাহায্যে না করে তাহলে না খেয়েই থাকতে হয়। তার বিলাপে চোখে জল চলে আসে। এ যেন দারিদ্র্যের এক করুণ চিত্র। এই অসহায় নারীর জীবন কাটছে অভাব আর কষ্টে। পা ভেঙে এক বছর ধরে শয্যাশায়ী। ছেলে আলী আহমেদও হার্টের রোগী। কোন কাজকর্ম করতে পারেন না। তাই ১৩/১৪ বছরের নাতি তোফাজ্জলের কাঁধেই সংসারের ভার। দুর্গম খাসিয়া পুঞ্জিতে কাজ করে দিনে আয় করে দুই-আড়াইশ টাকা মাত্র। এ টাকায় দুবেলা খাবার যোগানোই মুশকিল। তার ওপর অসুস্থ দাদি, বাবা আর মরার উপর খাঁড়ার ঘা মানসিক প্রতিবন্ধী বড় বোন আয়েশা খাতুন।

ইসলামপুর ইউনিয়নের স্থানীয় ইউপি সদস্য ফারুক আহমেদ জানান, একসময় তাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই ছিলো না। কয়েক বছর আগে সরকারি আবাসন প্রকল্পের মাধ্যমে এ পরিবারের জন্য একটি ঘরের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোফাজ্জলদের দুরাবস্থা জেনে অনেকে খাদ্য সামগ্রী দিয়ে তাদের সহায়তা করছেন। তবে বয়োবৃদ্ধ সমিতা বিবি ও মানসিক প্রতিবন্ধী আয়েশা খাতুনের সুচিকিৎসা ও তোফাজ্জলদের আত্মনির্ভরশীল হওয়ার ব্যবস্থা জরুরি।

মন্তব্য

p
উপরে