সুনামগঞ্জে পুলিশের হেফাজতে নির্যাতনে যার মৃত্যুর অভিযোগ নিয়ে তোলপাড়, সেই উজির মিয়ার বাড়ি ফেরার পর তার একটি ভিডিও এসেছে নিউজবাংলার হাতে।
এতে দেখা যায় মধ্যবয়সী উজিরের হাঁটুর নিচে মাংসপেশি, ঊরু, পিঠে কালসিটে অসংখ্য দাগ। মাথাতেও বেশ কিছু দাগ রয়েছে, যেগুলো মারধরের কারণে হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিছানায় শুয়ে থাকা উজিরের হাত ক্রমাগত কাঁপছিল।
স্বজনরা জানিয়েছেন, বাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়ার সময়ই উজিরকে বেধড়ক পেটানো হয়েছিল। তার সঙ্গে গ্রেপ্তার হওয়া দুজন জানিয়েছেন, থানায় গামছা দিয়ে বেঁধে, পরে ঝুলিয়ে ব্যাপক মারধর করা হয়। একপর্যায়ে অজ্ঞান হয়ে গেলে উজিরসহ তিনজনকে পাঠানো হয় হাসপাতালে।
উজিরের সঙ্গে পুলিশের এক উপপরিদর্শকের পূর্ববিরোধের বিষয়টিও সামনে এসেছে।
সুনামগঞ্জে গরু চুরির মামলায় সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে ৯ ফেব্রুয়ারি উজির মিয়াকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওই দিন তার সঙ্গে গ্রেপ্তার করে থানায় নেয়া হয় আরও তিনজনকে।
উজির মিয়ার সঙ্গে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন একই এলাকার শহীদ ইসলাম, আক্তার মিয়া ও শামীম মিয়া। তাদের মধ্যে উজির, শহীদ ও আক্তার ১১ ফেব্রুয়ারি জামিনে ছাড়া পান।
জামিনে মুক্তির ১১ দিনের মাথায় ‘চিরমুক্তি’ হয় উজিরের। মৃত্যুর পর স্বজনরা অভিযোগ করতে থাকেন, থানায় নির্যাতনের কারণে মারা গেছেন তিনি। তবে পুলিশ এই অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করে, জামিনের ১১ দিন পর কারও মৃত্যু হলে তাদের ওপর কোনো অভিযোগ আসতে পারে না।
গরু চুরির অভিযোগে ১৪ জানুয়ারি শান্তিগঞ্জ থানায় একটি মামলা হয়। এই মামলায় গ্রেপ্তারের পরদিন ১০ ফেব্রুয়ারি জামিনে মুক্তি পান। এর ১১ দিন পর অর্থাৎ ২১ ফেব্রুয়ারি সোমবার হাসপাতালে মারা যান উজির মিয়া।
মৃত্যুর পর ঘটেছে আরও নানা ঘটনা। মরদেহ নিয়ে পুলিশ সদস্যদের বিচারের দাবিতে মিছিল ও সড়ক অবরোধ করেছে এলাকাবাসী। সে সময় দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আনোয়ার উজ জামানকে বহনকারী একটি গাড়ি উজির মিয়ার লাশ চাপা দিয়ে যায়। এই ঘটনায় এলাকায় এখনও ব্যাপক ক্ষোভ রয়েছে।
এর মধ্যে উজির মিয়ার বাড়ি ফেরার দিন তার ভিডিওটি আসার পর শান্তিগঞ্জ উপজেলার পাগলা ইউনিয়নের শত্রুমর্দন এলাকায় গিয়ে জানা যায় নানা তথ্য।
সঙ্গে গ্রেপ্তার দুজনের অভিযোগ
উজির মিয়ার সঙ্গে গ্রেপ্তার শহীদ ইসলাম জানালেন, থানায় তাদেরকে পেটানো হয়েছে নির্মমভাবে। তিনি বলেন, ‘ওই দিন রাতে প্রথমে আক্তাররে, পরে উজির ভাইরে, তিন নম্বর আমারে ধরছে। কোনো জিজ্ঞাসা নাই, ধরিয়া সঙ্গে সঙ্গে বার করছে আমারে। তারার (পুলিশের) কাছে কোনো ডকুমেন্ট কোনো কিছু নাই। নিয়া আমারে সিএনজিত তুলছে। দুইটা থাপ্পড় মারছে। আর খালি কয়, মাল কই। আমি তো ইতা জানি না। ঘটনা কিরা (কী) বুঝছিও না।
‘থানায় নিয়া আমারে মারিয়া জিকাইলো (জিজ্ঞাসা করে) উজির মিয়াকে চিনি কি না। আমি বললাম, চিনি তো। আমার আগের বাড়ির সম্মানই মানুষ বড় ভাই।
‘এই কথা শুনিয়া উজির ভাইরে তারা অন্য রুম নিয়া বানা (পিটানো) দিছে। পরে আমার সামনে আনিয়া হেন্ডকাপ পরাইয়া লুঙ্গির কাচা করে প্রথমে সারা শরীরও মারছে। পরে পায়ের তলায়। এর পরে আমারেও বাঁধছে। বেঁধে পায়ের তলে মারছে।’
উজিরের সঙ্গে জামিন পাওয়া আক্তার মিয়াও বললেন একই কথা। তিনি বলেন, ‘আমি রাতে দোকানেই ঘুমাই। ওই দিন রাতে আমার দোকান বন্ধ করিয়া ঘুমাই গেছি। দুইজন আইয়া আমার টিনে বাড়ি দিয়া (দিয়ে) সিগারেট চাইল। কইলাম ইটা (সিগারেট) দিতে পারতাম না। মেচ (ম্যাচ) দিরাম (দিতে) কইছি (পারব)। ইকান (এটা) কইতেই (বলতেই) মারি দিসে লাথ দোকান। বাঁশের খারা (খুঁটি) একটা ভাঙি গেছে। পরে আমার মুখো দুইটা টুশি (ঘুষি) দিসে।
‘থানায় নিয়ে প্রথমে তাকেও (উজির) মারধর করা হয়। পরে এসআই দেবাশীষ তাকে বাধ্য করেন উজির মিয়াকে এই চুরির মামলায় গডফাদার বলার জন্য।’
আক্তার বলেন, ‘আমাকে মারার পর দেবাশীষ দারগা খালি কইন (জিজ্ঞাসা করেন) উজির ভাইরে চিনিনি। আমি কইছি গরু চুর (চোর) শামীম, তার সঙ্গে আরও অনেকজন আছে। ইকান (এটা) কইতে (বলতে) তারা আমারে আবার ঝুলায়া মাইর শুরু করছে। পরে আমি বেহুঁশ অবস্থায় খালি মাথা নাড়াইছি। হু কইছি।’
আক্তার মিয়া বলেন, ‘সবার মধ্যে উজির মিয়াকেই সবচেয়ে বেশি মারা হইছে। ঝুলাইয়া মুখ-চোখ গামছা দিয়া বাধিয়া (বেঁধে) মারছোইন (মারছে)। তারা আমারে কইছে, তানরে (তাকে) গডফাদার কইতাম (বলতে)।’
তিন ঘণ্টা ধরে মারধরে উজির মিয়া জ্ঞান হারান বলে জানান আক্তার। তিনি বলেন, ‘উজিরের অবস্থা বেগতিক দেখে রাত প্রায় সাড়ে তিনটা নাগাদ পুলিশের গাড়িতে করি সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়।’
আক্তার বলেন, ‘আমরারে ডাক্তারে কইছে, কিচ্ছু অইছে না, ঠিক অই যাইব। আর উজির ভাইরে বলে একটা ইনজেকশন দিলে ঠিক অই যাইব। ইকান শুনছি পরে আমরারে নিয়া আইচ্ছে।’
সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক রফিকুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ওই রাতে তাকে (উজির) হাসপাতালে নিয়ে আসার পর বমি হচ্ছিল, মাথা ঘুরাচ্ছিল। শরীর ছিল দুর্বল। পরে ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়।’
শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন দেখেছেন কি না- এমন প্রশ্নে সেই চিকিৎসক বলেন, ‘না, আমি এমন কিছু দেখি না। শরীর খুব দুর্বল দেখেছি।
নাম নেই এজাহারে
গরু চুরির মামলার বাদী উপজেলার দরগাপাশা ইউনিয়নের আমরিয়া গ্রামের নুর উদ্দিন। তিনি মামলায় ৮ জনের নাম উল্লেখ করেন। এজাহারে ৩ থেকে ৪ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। মামলায় উজিরের নাম ছিল না।
এজাহারে বাদী যে মোবাইল নম্বর দিয়েছেন তা ব্যবহার করেন মামলার ৪ নম্বর সাক্ষী মতছির আলী। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘নুর উদ্দিনের নিজের মোবাইল নেই। তাই হয়তো আমার নম্বর দিয়েছেন।’
নুর উদ্দিন বাড়ি থেকে দূরে অবস্থান করছেন জানিয়ে বাদীর সঙ্গে আলাপ করিয়ে দিতে অস্বীকার করেন।
‘মারধর করা হয়েছে বাড়িতেও’
উজির মিয়াকে আটকে শান্তিগঞ্জ থানার এসআই দেবাশীষ সূত্রধর, এসআই পার্ডন কুমার সিংহ ও এএসআই আক্তারুজ্জামানের নেতৃত্বে প্রায় ২০ জনের একটি দল অংশ নেয়।
চাচাতো বোন শাবানা আক্তার ঘটনার সময় উপস্থিত ছিলেন। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রাত সাড়ে ১২টার দিকে প্রায় ২০ জন পুলিশ বাড়িতে আসে। আমার ভাই (উজির মিয়া) দরজা খুলতেই তারা ভাইরে দিসে মাইর। এরপর ডান হাতে আরেকটা মাইর দিয়ে ভাইয়ের কলারও ধরিয়া টানিয়া বাইরে নিসে।’
উজির এ সময় নিজেকে নিরপরাধ দাবি করেন। সে সময় পুলিশ তার দুই হাঁটুতে লাঠি দিয়ে আঘাত ও গালাগালি করে বলে জানান শাবানা।
তিনি বলেন, ‘আমারে ফালাইয়া টানিয়া আমার ভাইটারে নিয়া নিসে। বাড়ি থেকে মারতে মারতেই আমার ভাইরে থানায় নিয়ে গেছে। সেখানেও মারছে। পুলিশের নির্যাতনেই আমার ভাই মারা গেছইন। আমার ভাইরে যারা মারছে, তারার ফাঁসি চাই।’
উজিরের ছোট ভাই ডালিম মিয়া বলেন, ‘পুলিশ আইয়া আমার ভাইরে প্রথমে মাথাত মারছে। পরে দুই হাতও মারছে। তারা কয়, আমার ভাই নাকি চোর। যে আসল চোর তারে লগে লইয়া অভিযানে আইছিল পুলিশ। তারে পুলিশের জ্যাকেট আর জুতা লাগাইয়া আনছিল।’
ভাতিজা বাছির তালুকদার বলেন, ‘চাচারে ঘর থেকে বের হতেই মারধর করে পুলিশ। পরে থানায় নিয়ে টানা তিন ঘণ্টা মারধর করে।’
পূর্বশত্রুতার অভিযোগ
উজির মিয়াকে নির্যাতনের জন্য শান্তিগঞ্জ থানার তিন পুলিশ সদস্যকে অভিযুক্ত করা হচ্ছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন এসআই দেবাশীষ সূত্রধর।
উজিরের পরিবারের সদস্যরা জানান, ২০১৭ সালে পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য রঞ্জিত সূত্রধরের সঙ্গে মারামারি হয়েছিল উজির মিয়ার। এসআই দেবাশীষ সেই রঞ্জিতের আত্মীয়।
উজিরের ভাই ডালিম মিয়া বলেন, ‘দেবাশীষ আমার ভাইরে থানায় মারছে আর কইছে- তুই রঞ্জিতরে মারছিলে না, তরে এমন মাইর দিমু তুই সাত দিনের ভিতরে মরবে।’
রঞ্জিত সূত্রধর পূর্ববিরোধ প্রসঙ্গে বলেন, ‘২০১৭ সালে উজির মিয়া আক্রমণ করেছিল। তা দুবছর পরই মিটমাট হয়ে গেছে। তাদের বাড়িতে এখন আমার আসা-যাওয়া আছে। তার সাথে আমার বিরোধ ছিল না। এসআই দেবাশীষ আমার তালোই ঘরের ভাইর ভাগনা হয়।’
উজির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘উজির মিয়ার বিরুদ্ধে কখনই চুরির অভিযোগ শুনিনি। কোনো মামলাও তার বিরুদ্ধে ছিল না। তার মৃত্যুর জন্য দায়ীদের বিচার আমিও চাই।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে এস আই দেবাশীষ সূত্রধরের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি তা ধরেননি। পরে এসএমএস করা হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি।
এলাকাবাসী যা বলছেন
শত্রুবর্ধন গ্রামের লোকজন জোর দিয়েই বলেছেন, উজির চুরি করার মতো লোক নন।
স্থানীয় বাসিন্দা শামীম মিয়া বলেন, ‘উজির মিয়া প্রতিবাদী আছিল। যখন গ্রামও একটানা চুরি হওয়া শুরু হইছিল তাইন একলা ইটার প্রতিবাদ করছুইন। আমরা গ্রামবাসী সবরে এক করিয়া তাইন পুলিশরে জানাইছলা, মানুষটা ভালা আছিল। তেমন কোনো শত্রু আছিল না।’
গ্রামের আয়না মিয়া বলেন, ‘এই পরিবারের কেউরে কোনো দিন চুরি করতে দেখছি না। তারা খুব শান্ত পরিবার। আর উজির তো দেশেই আইলো না ৬-৭ বছর আগে। পরে দেশো আইয়া ঘর আর ক্ষেতকৃষি লইয়া ব্যস্ত আছিল।’
প্রশাসনের তদন্ত কত দূর
উজির মিয়ার মৃত্যুর অভিযোগ তদন্তে একটি কমিটি করেছে পুলিশ।
জেলা পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, ‘ঘটনায় কারও গাফিলতি বা উসকানি আছে কি না তা খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। কমিটিতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইদ আনোয়ারকে প্রধান করা হয়েছে। তিন কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।’
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মুক্তাদির হোসেন বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি ছুটিতে ছিলাম। তাই বিস্তারিত জানি না। তবে যে ঘটনা ঘটেছে, তা দুঃখজনক। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছি।’
এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছে জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর হোসেনের সই করা অফিস আদেশে মঙ্গলবার এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আনোয়ার উল হালিমকে প্রধান করে গঠিত কমিটিতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জয়নাল আবেদিন ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ের একজন চিকিৎসককে রাখা হয়েছে। ২৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আনোয়ার উল হালিম নিউজবাংলাকে জানান, কমিটি মঙ্গলবার থেকেই কাজ শুরু করছে।
তবে এখন পর্যন্ত কী তথ্য পাওয়া গেল, সে বিষয়ে না প্রশাসনের, না পুলিশের তদন্ত দলের কেউ কোনো তথ্য দিতে রাজি হননি।
আরও পড়ুন:অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের পর নিরাপত্তাহীনতায় পুনরায় বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময় গারো পাহাড় সীমান্তে মানব পাচারকারী চক্রের দুই সদস্যসহ ৭ জনকে আটক করেছে বিজিবি।
সোমবার (২৫ আগস্ট) সকাল পৌণে সাতটার দিকে শেরপুরের ঝিনাইগাতি উপজেলার নকশি সীমান্ত পথে নকশি ক্যাম্পের টহলরত বজিবি সদস্যরা তাদের আটক করে বিকেলে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
বিষয়টি ২৬ আগষ্ট সকালে বিজিবি পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়।
আটককৃতরা হলো মানব পাচারকারী চক্রের সদস্য নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বুরুঙ্গা গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে রমজান আলী (২৪) ও আসমত আলীর ছেলে রাসেল (১৬)। আটক অনুপ্রবেশকারীরা হলো, নড়াইল জেলার কালিয়া থানার বোমবাঘ গ্রামের শামীম শেখ (২৩), আফসানা খানম (২২), রুমা বেগম (৩২), মিলিনা বিশ্বাস (২৮) ও তিন বছর বয়সী শিশু কাশেম বিশ্বাস।
বিজিবি এক প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানায়, মাথাপিছু ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে গত ২৩ আগস্ট রাতের আধারে নালিতাবাড়ীর সীমান্ত এলাকা দিয়ে অবৈধ পথে নারী এবং শিশুসহ ৫ বাংলাদেশীকে ভারতে পাঠায় মানব পাচারকারী রমজান আলী ও রাসেল। কিন্তু ভারতীয় পুলিশের তৎপরতায় নিরাপত্তাহীনতায় পড়ে এ পাঁচ বাংলাদেশী। এ কারণে ২৫ আগষ্ট সোমবার সকাল পৌণে সাতটার দিকে ঝিনাইগাতির নকশি সীমান্তের কালিমন্দির এলাকা দিয়ে পুনরায় তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এসময় টহলরত বিজিবি সদস্যরা টের পেয়ে সবাইকে আটক করে। পরে মানব পাচারে জড়িত দুইজনের বিরুদ্ধে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে এবং অন্য ৫ জনের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের অপরাধে নালিতাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করা হয় এবং সবাইকে নালিতাবাড়ী থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ময়মনসিংহ বিজিবি’র ৩৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মেহেদী হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিজিবির পক্ষ থেকে এ ধরনের অভিযান চলমান থাকবে।
ঝালকাঠিতে গ্রাহকদের চাহিদা বিবেচনায় এনে ব্রান্ডশপ লোটো ও লি কুপার প্রতিষ্ঠানটি তাদের ১৩২তম ফ্লাগশিপ আউটলেট উদ্বোধন করেছে।
এক্সপ্রেস লেদার প্রোডাক্ট লিঃ এর ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর কাজী জাভেদ ইসলাম সহ কোম্পানির অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের সাথে নিয়ে ফিতা কেটে আউটলেটটি উদ্বোধন করেন ঝালকাঠির পুলিশ সুপার উজ্জ্বল কুমার রায়।
পৌর শহরের সাধনার মোড়ে মঙ্গলবার ২৬ আগষ্ট সকাল ১০টায় লোটো ও লি কুপারের ফ্ল্যাগশিপ আউটলেটদ্বয়ের শুভ উদ্বোধন আনুষ্ঠানে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন পর্যায়ের গ্রাহক ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
ঝালকাঠিতে কোম্পানীর এ যাত্রার প্রথম দিনে স্থানীয় ফ্যাশন সচেতন তরুণ তরুণীরা তাদের পছন্দের পন্য কালেকশন বেছে নিতে ভীর জমায়।
কোম্পানীর পক্ষ থেকে জানানো হয় প্রথম তিনদিনের প্রতিদিন প্রথম ৩০ জন পাবেন ৫০% ছাড়, ২য় ৩০ জন পাবেন ৪০% ছাড়, ৩য় ৩০ জন পাবেন ৩০% ছাড়, ৪র্থ ৩০ জন পাবেন ২০% ছাড় এবং তৎপরবর্তী সকল কাস্টমার পাবেন ১০% ছাড়। এই বিশেষ ছাড় ২৬শে আগষ্ট থেকে শুরু হয়ে ২৮ তারিখ পর্যন্ত চলমান থাকবে
নওগাঁয় সপ্তম শ্রেণীর এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে আটক রেখে ধর্ষণ মামলায় আ: সালাম (৩৮) নামে এক আসামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
রোববার (২৪ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে নওগাঁর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মেহেদী হাসান তালুকদার এ রায় দেন।
যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আ: সালাম সদর উপজেলার বর্ষাইল মধ্যপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ভিকটিম ওই শিক্ষার্থীর পরিবার পত্নীতলা উপজেলায় ভাড়া থাকতেন। ভাঙ্গারী ব্যবসার সুবাদে আসামী আ: সালামও পাশাপাশি একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। ভিকটিম মাদ্রাসায় যাওয়া আসার পথে আ: সালাম বিভিন্ন সময় কু-প্রস্তাব দিতো এবং রাস্তাঘাটে বিরক্ত করতো। বিষয়টি জানাজানি হলে আসামী আ: সালাম ওই ভিকটিমের পরিবারকে গালিগালাজ ও ভয়ভীতি দেখাতো। এরই একপর্যায়ে ২০২২ সালের ১১ জুলাই বিকেল তিনটার দিকে আসামী আ: সালাম একটি বাজার এলাকা থেকে ওই শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে নওগাঁ সদর উপজেলার ভবানীপুর দক্ষিন পাড়া গ্রামের মোজাফ্ফর রহমানের ভাড়া বাড়িতে আটক রেখে একাধিকবার ধর্ষণ করে। বিষয়টি বুঝতে পেরে ওই শিক্ষার্থীর বাবা পত্নীতলা থানায় অভিযোগ করলে র্যাব ওই বাড়ি থেকে আসামিকে গ্রেফতার ও মেয়েকে উদ্ধার করে। পরে তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে ঘটনার সত্যতা থাকায় আসামী আ: সালামসহ চার জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। আদালত ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহন শেষে আজ আ: সালামকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়। বাকি আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় তাদেরকে খালাস দেওয়া হয়।
মামলার এ রায়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রেজাউল করিম সন্তোষ প্রকাশ করেন। আসামী পক্ষের আইনজীবী ফাহমিদা কুলসুম উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানান।
জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার রায়কালী ইউনিয়নের বালুকাপাড়া গ্রামে রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়ে পুনরায় তাকে বিয়ে করায় এক দম্পতিকে দেড় বছর ধরে 'সমাজচ্যুত' করে রাখা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এ বিষয়ে নালিশ দেওয়ার জের ধরে পেটানো হয় দিনমজুর আব্দুল জলিল প্রামানিককে। প্রতিপক্ষের লোকজনের মারধরে এতে তার বাম হাতের হাঁড় ভেঙে গেছে।
এঘটনায় তিনি একটি থানায় অভিযোগ করেছেন। গত মঙ্গলবার রাতে সেটি মামলাটি হিসেবে রের্কড করা হয়। তবে মামলার এজাহারে সমাজচ্যুত করে রাখার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি।
সরেজমিনে বালুকাপাড়া গ্রামে গিয়ে আব্দুল জলিলকে ১৮ মাস ধরে সমাজচ্যুত করে রাখার তথ্য জানা গেছে। আব্দুল জলিলের সমাজচ্যুত করার ঘটনাটি স্থানীয় রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রশীদ মন্ডলও অবগত আছেন। তিনি দুই পক্ষকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকেও সমাজচ্যুত করে রাখার বিষয়টি সমাধান করতে পারেনি।
গ্রামবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পারিবারিক কলহের কারণে আব্দুল জলিল প্রামানিক রাগের মাথায় তার স্ত্রীকে তালাক দেন। এঘটনার ২৯ দিন পর তিনি আবারও স্ত্রীকে বিয়ে করেন। এ ঘটনায় গ্রাম্য মাতব্বরেরা ক্ষুব্ধ হয়ে আব্দুল জলিল প্রামানিকের পরিবারকে সমাজচ্যুত করে রাখেন। সেই সময় জলিল প্রামানিক বিষয়টি আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)কে জানান। ইউএনও রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মণ্ডলকে বিষয়টি সমাধানের দায়িত্ব দেন। ইউপি চেয়ারম্যান উভয়পক্ষকে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে বৈঠকে বসেছিলেন। তবে কার্যত কোন কোনো সমাধান করতে পারেননি। এতে গ্রাম্য মাতব্বরেরা আব্দুল জলিলের ওপর আরও ক্ষুব্ধ হন। সমাজচ্যুত করে রাখা আব্দুল জলিল গত ১৫ আগস্ট রাত আটটার দিকে গ্রামের মসজিদের দিকে রওনা হন। এসময় মাতব্বরেরা তাকে দুই দফায় প্রচন্ড মারধর করেন। এতে তার বাম হাতের হাঁড় ভেঙে যায়। তিনি চিকিৎসা নিয়ে থানায় আট জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
বালুকাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আজিজুল ইসলাম বলেন, দেড় বছর আগে আব্দুল জলিল তার স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। কয়েক দিন পর আবার সংসার শুরু করেন। এনিয়ে গ্রামের মাতব্বরেরা আব্দুল জলিল প্রামানিককে সমাজচ্যুত করেন। এনিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় বৃদ্ধা লুৎফন নেছা বলেন, আমি কাজ করতে পারিনি। আব্দুল জলিলের বউ আমার বাড়িতে এসে জবাই করা মুরগির তরকারি রান্না করে দিয়েছিল। আমি জলিলের বাড়িতে গিয়ে এক বাটি মুরগির মাংসের তরকারি দিয়ে এসেছি। এতে আমাকেও সমাজচ্যুত করার হুমকি দিয়েছিল।
বালুকাপাড়া গ্রামের মোড়ের দোকানি হাফিজার রহমান বলেন, বউকে তালাক দেওয়ার ঘটনায় আব্দুল জলিল প্রামানিককে গ্রামের মাতব্বরেরা সমাজচ্যুত করেছেন। আব্দুল জলিল গ্রামের সামাজিক কোন কর্মকান্ডে অংশ নিতে দেয় না।
আব্দুল জলিল প্রামানিক বলেন, আমি রাগের মাথায় স্ত্রী তালাক দিয়েছিলাম। ২৯ দিন পর আবার বিয়ে পড়ে নিয়েছি। একারণে গ্রামের মাতব্বর রকি খান, মিল্টন খাঁ, আবু সুফিয়ানসহ আরও ১০-১২ জন আমাকে সমাজচ্যুত করেছেন। রাগের মাথায় স্ত্রীক। তালাক দিলে পুনরায় বিয়ে করা যাবে ঢাকার একজন মুফতির মতামত নিয়ে আসার পরও তারা মানেনি। তারা বলছে হিল্লা বিয়ে ছাড়া আমার বিয়ে বৈধ হবে না। তারা আমাকে দীর্ঘ দেড় বছর ধরে গ্রামের মসজিদে নামাজ আদায়ে করতে ও জানাজায় শরিক হতে বা দেননি। মিলাদ মাহফিল দাওয়াত দেওয়ার মাতব্বরদের চাপে পর ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এমনকি গ্রামের কারও জমিতে দিনমজুরি কাজও করতে পারব না বলে লোকজন জানিয়ে দেন। একারণে কেউ আমাকে কাজে নেয় না। সমাজচ্যুত করার জের ধরে মসজিদে যাওয়ার সময় মাতব্বরদের একাংশের লোকজন আমাকে মেরে হাত ভেঙে দিয়েছেন।
গ্রামের মাতব্বদের একজন মো. মিল্টন খাঁ। তিনি আব্দুল জলিলের দায়ের করা মামলার দুই নম্বর আসামি। তাকে তার বাড়িতে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আব্দুল জলিল সমাজ বিরোধী কাজ করেছেন। একারণে গ্রামের লোকজন তাকে সমাজচ্যুত করেছেন। আব্দুল জলিল সমাজ বিরোধী কি কাজ করেছেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আব্দুল জলিল তার স্ত্রীকে তালাক দিয়ে আবার স্ত্রীকে নিয়েছেন। এটা সমাজ বিরোধী কাজ।
আক্কেলপুর রায়কালী ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মন্ডল বলেন, আব্দুল জলিল মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। তিনি রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। এঘটনায় গ্রামের মাতব্বরেরা আব্দুল জলিলকে সমাজচ্যুত করেন। আব্দুল জলিল ইউএনও স্যারের কাছে অভিযোগ দিয়েছিলেন। ইউএনও স্যার আমাকে ঘটনাটি সমাধানের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। উভয়পক্ষকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে বৈঠক করেছি। আব্দুল জলিল যেন সামাজিকভাবে মিশতে পারে সেটি বলেছি। সমাজচ্যুতের ঘটনার জের ধরে আব্দুল জলিলকে মারধর করা হয়েছে। এতে তার বাম হাত ভেঙেছে বলে জেনেছি।
আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, আব্দুল জলিল প্রামানিক থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছিলেন। অভিযোগটি তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় সেটি মামলা হিসেবে রের্কড করা হয়েছে। আসামি আট জনের মধ্যে ইতিমধ্যে আদালত থেকে পাঁচজন আসামি জামিন নিয়েছেন, অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে ২৭,২৪৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে। বিগত ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের একই মাসে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ছিল ২১,৯১৬ কোটি টাকা। জুলাই-২০২৫ মাসে বিগত জুলাই-২০২৪ মাসের তুলনায় ৫,৩৩৩ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। জুলাই ২০২৫ মাসে রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২৪.৩৩%।
জুলাই’২৫ মাসে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক থেকে। এ খাত থেকে আদায় হয়েছে ১১,৩৫২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায়ের পরিমান ছিল ৮,৫৭১ কোটি টাকা। জুলাই ২০২৫ মাসে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ৩২.৪৫%।
আয়কর ও ভ্রমন কর খাতে জুলাই’২৫ মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৬,২৯৫ কোটি টাকা যা জুলাই’২০২৪ মাসের একই খাতে আদায়কৃত ৫,১৭৫ কোটি টাকার চাইতে ১,১২০ কোটি টাকা বেশি। আয়কর ও ভ্রমন করের ক্ষেত্রে জুলাই ২০২৫ মাসের আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২১.৬৫%।
২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে আমদানি ও রপ্তানি খাতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৯,৬০২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায় ছিল ৮,১৭০ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধির হার ১৭.৫২%।
রাজস্ব আদায়ের এ ধারা ভবিষ্যতে অব্যাহত রাখার জন্য আয়কর, মূল্য সংযোজন কর এবং কাস্টমস শুল্ক-কর আদায়ে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারিদের প্রচেষ্টা আরো জোরদার করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নানাবিধ কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
সম্মানিত করদাতাগণ আইনের যথাযথ পরিপালন নিশ্চিত করে যথাযথ পরিমান কর পরিশোধের মাধ্যমে দেশ গড়ার কাজের অন্যতম অংশীদার হবেন মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশাবাদী।
কুমিল্লা নাঙ্গলকোটে ইউপি সদস্য আলাউদ্দিনকে বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামিকে ঢাকার হাতিরঝিল রেল মগবাজার রেলগেট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। শুক্রবার দিনগত রাতে অভিযানটি শেষ করে র্যাব।
গ্রেফতারকৃত আসামী শেখ ফরিদ (৪৫) নাঙ্গলকোট উপজেলার বক্সগঞ্জ আলীয়ারা গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে।
শনিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে কুমিল্লা অশোকতলা এলাকায় র্যাব অফিসে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন
র্যাব ১১ এর কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাদমান ইবনে আলম।
মেজর সাদমান জানান, নাঙ্গলকোটের আলিয়ারা গ্রামে দুই পরিবারের মধ্যে বংশপরম্পরায় একটি বিরোধ চলে আসছিল। গেল গেল ২৫ জুলাই গরুর ঘাস খাওয়া কে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
সেদিন দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৫ জন গুলিবিদ্ধসহ ২৫ জন আহত হয়।
এ ঘটনার রেশ ধরে গেলো ৩ আগস্ট দুপুরে আলিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা আলাউদ্দিন তার চাচাতো ভাইয়ের জানাজার নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা তাকে একটি সিএনজিতে তুলে নিয়ে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে।
পরে এ ঘটনায় ৫ আগস্ট নিহতের ছেলে বাদী হয়ে নাঙ্গলকোট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বিপদসীমা অতিক্রম করায় নির্ধারিত সময়ের আগেই খোলা হয়েছে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সব জলকপাট। সোমবার (৫ আগস্ট) রাত ১২টা ২ মিনিটে হঠাৎ পানি বাড়তে থাকায় জরুরি ভিত্তিতে কেন্দ্রের ১৬টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়।
কর্ণফুলি পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানান, রাতে লেকের পানির উচ্চতা ১০৮.০৫ ফুট ছুঁয়ে গেলে বিপদসীমা অতিক্রম করে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলি নদীতে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, “প্রথমে সোমবার (৪ আগস্ট) বিকেল ৩টায় পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা পরের দিন মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জলকপাট খোলার ঘোষণা দিয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ অতিরিক্ত পানি প্রবাহের কারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই সোমবার রাতেই জলকপাট খুলে দিতে হয়। তবে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
তিনি আরও জানান, কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট বর্তমানে সচল রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে আরও ৩২ হাজার কিউসেক পানি লেক থেকে কর্ণফুলিতে গিয়ে পড়ছে। সবমিলিয়ে পানি নিঃসরণের হার এখন প্রতি সেকেন্ডে ৪১ হাজার কিউসেক।
ভাটি এলাকার জনসাধারণের উদ্দেশে তিনি বলেন, “পানি প্রবাহ বাড়লেও আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে, এবং প্রয়োজনে আমরা আগেভাগেই ব্যবস্থা নেব।”
স্থানীয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও এ বিষয়ে আগেই অবহিত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন কর্তৃপক্ষ।
মন্তব্য