× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
The ACC has 13 allegations against Sharif including abuse of power and corruption
google_news print-icon

দুর্নীতিসহ শরীফের বিরুদ্ধে দুদকের ১৩ অভিযোগ

দুর্নীতিসহ-শরীফের-বিরুদ্ধে-দুদকের-১৩-অভিযোগ
দুর্নীতি দমন কমিশনের চাকরিচ্যুত উপপরিচালক শরীফ উদ্দিন চৌধুরী। ছবি: নিউজবাংলা
শরীফের বিরুদ্ধে নামকাওয়াস্তে তদন্ত, দায়ীদের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণ করার মতো বিস্তারিত তথ্য তুলে না ধরা, অভিযানে জব্দ প্রায় এক কোটি টাকা কোষাগারে জমা না দিয়ে এক বছর নিজের কাছে রাখা, ভাই ও স্বজনকে প্রভাব খাটিয়ে চাকরি দেয়া, তদন্ত ও অনুসন্ধান চলাকালে সন্দেহভাজনদেরকে ডেকে এনে শারীরিকভাবে প্রহার করা, কমিশনের আদেশ অবজ্ঞার অভিযোগ আনা হয়।

শরীফ উদ্দিন চৌধুরীকে দুর্নীতি দমন কমিশনের উপপরিচালকের পদ থেকে অপসারণ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মধ্যে এই সিদ্ধান্ত নেয়ার পেছনে ১৩টি কারণ উল্লেখ করে বিস্তারিত বক্তব্য দিয়েছে দুর্নীতি নির্মূলে কাজ করা সংস্থাটি।

প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ায় চাকরিচ্যুতি- এমন অভিযোগকে ভিত্তিহীন উল্লেখ করে রোববার প্রায় আড়াই হাজার শব্দের একটি ব্যাখ্যা গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে তুলে ধরেছেন দুদক সচিব মাহাবুব হাসান।

তিনি বলেন, ‘অপসারণের আদেশ জারির পর থেকেই বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় বিষয়টি প্রচারিত হচ্ছে। মূলত একতরফা তথ্যের ভিত্তিতেই এই সংবাদসমূহ প্রচারিত হচ্ছে, যা প্রকৃত ঘটনার বিপরীত।’

দুর্নীতি চেষ্টার নানা ঘটনায় শরীফের প্রতিবেদন দেয়ার বিষয়ে বলা হয়, ‘দায়িত্ব পালন কালে, যে কোনো অভিযোগ অনুসন্ধান ও তদন্ত করে প্রতিবেদন দিবেন, এটাই স্বাভাবিক।’

‘গুরুত্বপূর্ণ বা কম গুরুত্বপূর্ণ যাই হোক না কেন, দুদকের অনুসন্ধান ও তদন্তের দায়িত্বপ্রাপ্ত সব কর্মচারীই নির্ভয়ে এবং নির্মোহভাবে দায়িত্বপালন করে থাকেন। কিন্তু জনাব মো. শরীফ উদ্দিনের মতন কোন অজুহাত তারা উত্থাপন করেন না।’

দুদকের ব্যাখ্যায় শরীফের বিরুদ্ধে নামকাওয়াস্তে তদন্ত, দায়ীদের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণ করার মতো বিস্তারিত তথ্য তুলে না ধরা, অভিযানে জব্দ প্রায় এক কোটি টাকা কোষাগারে জমা না দিয়ে এক বছর নিজের কাছে রাখা, ভাই ও স্বজনকে প্রভাব খাটিয়ে চাকরি দেয়া, তদন্ত ও অনুসন্ধান চলাকালে সন্দেহভাজনদেরকে ডেকে এনে শারীরিকভাবে প্রহার করা, কমিশনের আদেশ অবজ্ঞার অভিযোগ আনা হয়।

শরীফের নানা কর্মকাণ্ডে উচ্চ আদালতও অসন্তুষ্ট ছিল বলেও জানায় দুদক। একাধিক ঘটনা নিয়ে তদন্তের নির্দেশ এসেছে বলেও উল্লেখ আছে ব্যাখ্যায়। একটি ঘটনায় হাইকোর্ট শরীফের কর্মকাণ্ডকে ‘আরেক দুর্নীতি’ বলে উল্লেখ করেছে।

দুদক সচিব বলেন, এসব কার্যকলাপ অন্য কর্মচারীদের শৃঙ্খলার সঙ্গে দায়িত্ব পালনে নিরুৎসাহিত করতে পারে।

কক্সবাজার জেলার জমি অধিগ্রহণ বিষয়ে ২০২০ সালের ১০ মার্চ দুদকের চট্টগ্রাম কার্যালয়ে শরীফ উদ্দিন যে প্রতিবেদন দিয়েছেন, তাতে কমিশন বিধিমালা ২০০৭ এর বিধি-১০(৪) এর নির্দেশনা অনুসৃত হয়নি। প্রতিটি ঘটনায় কে, কখন, কীভাবে কী অপরাধ করেছে এবং অপরাধটি সংগঠনের সঙ্গে আসামিদের দায় সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করা হয়নি। আসামিদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত ক্রিমিনাল চার্জ সমর্থনে সাক্ষ্য প্রমাণাদি সুস্পষ্টকরণ করা হয়নি। যাদেরকে অভিযোগের দায় হতে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়েছে, তাদেরকে কেন অব্যাহতি প্রদান করা হবে, তার ব্যাখ্যা প্রতিবেদনে প্রতিফলিত হয়নি। এছাড়াও অনেক ত্রুটি বিচ্যুতি ও দায়সাড়া গোছের প্রতিবেদনের কারণে কমিশন কর্তৃক তা বিবেচিত হয়নি। পরে দুই সদস্যের টিম গঠন করে মামলাটির পুনঃতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।

গত ১৬ ফেব্রুয়ারি শরীফকে চাকরি থেকে অপসারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি হয়। এরপর দুদকের কর্মকর্তা থাকাকালে নানা আলোচিত দুর্নীতির চেষ্টার অভিযোগের বিষয়ে তার তদন্তের বিষয়টি সামনে আসে। তিনি প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ায় চাকরিচ্যুতির শিকার হয়েছেন- এমন অভিযোগ জোরাল হয়ে উঠে।

দুর্নীতি ও সুশাসন নিয়ে কাজ করা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ- টিআইবি এক বিবৃতিতে শরীফকে অপসারণের পেছনে কারণ জানতে চায়। বিএনপি অভিযোগ করে, দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ায় তাকে চাকরি থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে।

এর মধ্যে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি দুদক সচিব গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, শরীফের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ আছে। তবে সেগুলো প্রকাশ্যে বলা হবে না। এর তিন দিন পর বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিল সংস্থাটি।

শরীফ উদ্দিন নিউজবাংলাকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে অভিযোগ করেছেন, প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ায় তিনি রোষানলের শিকার হয়েছেন।

কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের সাবেক এমডি আইয়ুব খান চৌধুরীর বিরুদ্ধে হত্যার হুমকি দেয়া ও ‘চাকরি খেয়ে দেয়ার’ হুমকি দেয়ার অভিযোগও করেছেন শরীফ উদ্দিন।

শরীফ উদ্দিন ২০১৭ সালে কর্ণফুলী গ্যাসের বিভিন্ন অভিযোগের তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার পর কেডিসিএল কর্তৃপক্ষকে তার আপন ছোট ভাই শিহাব উদ্দিন সবুজকে কোনো বিজ্ঞাপন ছাড়াই ২০১৮ সালের ১ আগস্ট ডাটা এন্ট্রি অপারেটর পদে চাকরি দেন। বর্তমানে আইটি ডিপার্টমেন্টে কর্মরত আছেন। এরপর ভাইয়ের চাকরি স্থায়ী বরতে সবাইকে চাপ দিচ্ছিলেন। তিনি সেখানে তার আত্মীয় মুহাম্মদ শাহাব উদ্দিনকে জাল সনদের মাধ্যমে ড্রাইভার পদে চাকরি দিয়েছেন। এ নিয়ে এখন তদন্ত চলছে।

গত ৩০ জানুয়ারি এ বিষয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয় চট্টগ্রামের খুলশী থানায়। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সন্তোষ কুমার চাকমা নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন, শরীফের বাসায় আইয়ুব খান চৌধুরীর যাওয়ার বিষয়টি সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে। তবে তিনি হুমকি দিয়েছেন, এমন সিদ্ধান্তে এসে তদন্ত এখনও শেষ করা যায়নি। ‍

এ বিষয়ে দুদক সচিব বলেন, শরীফ যে সাধারণ ডায়েরি করেছেন, সে বিষয়ে তিনি কাউকে জানাননি। পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ দেখে তাকে দাপ্তরিক কোনো ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজন আছে কি না জানতে চাওয়া হয়। কিন্তু তিনি কর্তৃপক্ষের কোনো সহযোগিতা নেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেননি। হুমকি দেয়া হলে কমিশন ব্যবস্থা নিতে পারত।

দুদকের যে ১৩ অভিযোগ

১. শরীফ উদ্দিন কোনো অনুসন্ধান বা তদন্তের দায়িত্ব পাওয়া মাত্র দুদকের অনুসন্ধান তদন্ত নির্দেশিকা অনুসরণ না করে নিজের খেয়ালখুশি মতো কাজ করতেন।

২. অনুসন্ধান বা তদন্তের সময় অভিযোগের সাথে সরাসরি সংশ্লিষ্ট নয়, এরকম বহু ব্যক্তিকে নোটিশ করে বা টেলিফোনে ডেকে এনে তাদের হয়রানি করতেন, যার প্রমাণ রয়েছে।

৩. অনুসন্ধান তদন্তের স্বার্থে ব্যাংক হিসাব স্থগিতের প্রয়োজন হলে তার সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি রয়েছে। কমিশনের সম্মতিতে আদালতের আদেশেই কেবল এটা করা যায়। শরীফ উদ্দিন এই নিয়মের তোয়াক্বা করতেন না এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাতেনও না।

৪. তিনি দুদকের চট্টগ্রাম-কর্মরত থাকাকালে আদালতের অনুমতি ছাড়া স্যোস্যাল ইসলামী ব্যাংকের, কক্সবাজার শাখার হিসাব নম্বর ০৩৯৫৩১০০১৭১৮১ স্থগিত করেন। এই বেআইনি কার্যকলাপকে চ্যালেঞ্জ করে বেলায়েত হোসেন নামে একজন হাইকোর্টে রিট করেন। গত ২৭ জুন এক আদেশে এই ব্যাংক হিসাব স্থগিতের আদেশকে এখতিয়ারবহির্ভূত উল্লেখ করে।

তার (শরীফ) ধরনের কার্যকলাপ ক্ষমতার অপব্যবহার, কর্তব্যে অবহেলা, অসদাচরণ অদক্ষতার পর্যায়ে পড়ে।

কমিশনকে পাস কাটিয়ে এবং আদালতের অনুমতি ছাড়া লিখিতভাবে ২৫টি মৌখিকভাবে ৮টিসহ মোট ৩৩টি ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছেন শরীফ।

এক নিকটাত্মীয়কে প্রভাব খাটিয়ে নিয়ম বহির্ভুতভাবে কর্ণফুলী গ্যাসে চাকরি দেয়া, অবৈধ অর্থ উপার্জন, অনুসন্ধানের নামে অভিযোগে সংশ্লেষ না থাকা সত্ত্বেও বিভিন্ন ব্যক্তিকে নোটিশ প্রদান করে ডেকে এনে হয়রানি করা ও অর্থ আদায় করা, প্রভাব খাটিয়ে নিজের শাশুড়ির নামে অবৈধ গ্যাস সংযোগ গ্রহণসহ অসংখ্য অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমনকি পটুয়াখালীতে অবস্থানকালে দুদকের পরিচয়ে বিভিন্ন ব্যক্তিকে হয়রানির অভিযোগও পাওয়া গেছে।

৫. ২০২০ সালের ১০ মার্চ কক্সবাজারে একজন সার্ভেয়ারের বাসায় অভিযান চালিয়ে র‌্যাব ঘুষের ৯৩ লাখ ৬০ হাজার ১৫০ টাকা জব্দ করে। সেই টাকা তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে শরীফ উদ্দিনের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হয়। আলামত হিসেবে জব্দ করা টাকা তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত না করে বছর মাস নিজের হেফাজতে রেখেছেন।

দুদক কর্মকর্তার ক্ষমতার অপব্যবহার, রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা হয়নি ঘুষের ৯৩ লাখ টাকা’ শিরোনামে গত অক্টোবর জাতীয় দৈনিকে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। প্রতিবেদনটি হাইকোর্টের দৃষ্টিগোচরে এলে সুয়োমোটো রুল জারি করা হয়। এরপর আদালত শরীফের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দেয়।

জব্দ করা অর্থ জমা না করার বিষয়ে শরীফ যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন তাও অগ্রহণযোগ্যজব্দকৃত অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংক বা ট্রেজারিতে জমা করার সুনির্দিষ্ট বিধান আছে এবং ধরনের মামলায় সকলেই তা অনুসরণ করে।

৬. শরীফ উদ্দিন একটি মামলায় অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে তার জবানবন্দি গ্রহণের জন্য তার দপ্তরে ডেকে এনে নির্মমভাবে প্রহার করেছেন, রকম একটি অভিযোগ দুদকে আসে। দুদকের তদন্তে তা প্রমাণিতও হয়েছে। ধরনের বহু অভিযোগ রয়েছে। বহু ব্যক্তি তার কাছে নিগৃহীত হয়েছেন।

শরীফের বেপরোয়া মনোভাবের জন্য কেউ প্রকাশ্যে বা লিখিতভাবে অভিযোগ জানাতে সাহস করেননি বলেও দুদকের ব্যাখ্যায় বলা হয়।

২০২০ সালের ১০ মার্চ মো. ইদ্রিস নামে এক সিআইপিকে (কমার্শিয়ালি ইম্পরটেন্ট পারসন) জনাব শরীফ উদ্দিন চট্টগ্রামে দুদকের জেলা কার্যালয়ে এনে মারধর করার সুষ্পষ্ট অভিযোগ রয়েছে।

২০২০ সালের ১০ মার্চ কক্সবাজারে একজন সার্ভেয়ারের বাসায় অভিযান চালিয়ে র‌্যাব ঘুষের ৯৩ লাখ ৬০ হাজার ১৫০ টাকা জব্দ করে। সেই টাকা তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে শরীফ উদ্দিনের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হয়। আলামত হিসেবে জব্দ করা টাকা তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত না করে ১ বছর ৪ মাস নিজের হেফাজতে রেখেছেন। দুদক কর্মকর্তার ক্ষমতার অপব্যবহার, রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা হয়নি ঘুষের ৯৩ লাখ টাকা’ শিরোনামে গত ৭ অক্টোবর জাতীয় দৈনিকে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। প্রতিবেদনটি হাইকোর্টের দৃষ্টিগোচরে এলে সুয়োমোটো রুল জারি করা হয়। এরপর আদালত শরীফের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দেয়।

৭. চট্টগ্রাম দুদক কার্যালয়ে শরীফ উদ্দিন তিন বছর চাকরি করার পর আরও ২০ জন কর্মচারীর সঙ্গে তাকে বদলি করা হয়। এই আদেশ তিনি ছাড়া সবাই যথাসময়ে কার্যকর করেন। কিন্তু এই আদেশের বিরুদ্ধে তার পক্ষে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার শহিদুল ইসলাম লিটন নামে একজন মানবাধিকারকর্মী (যে প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা ভুয়া) হাইকোর্টে রিট করেন।

হাইকোর্ট রিট খারিজ করা সত্ত্বেও কয়েকটি জাতীয় চট্টগ্রামের স্থানীয় পত্রিকায় ‘হাইকোর্টের আদেশের প্রেক্ষিতে বদলি আদেশ স্থগিত’ শিরোনামে অসত্য সংবাদ প্রকাশিত হয়। পরে সংবাদপত্রগুলো দুঃখ প্রকাশ করে তা আদালতকে জানায়।

কয়েকটি জাতীয় স্থানীয় কয়েকটি দৈনিকে আসা খবর আদালতের নজরে এলে হাইকোর্টের বিচারপতি বিষয়ে উষ্মা প্রকাশ করে দুদক আইনজীবীর উদ্দেশ্যে বলেন, ‘এটি আরেক দুর্নীতি, এটি তদন্ত করেন’

বদলি স্থগিত সংক্রান্ত ভুয়া কপি সরবরাহ করা এবং তার ভিত্তিতে ভুল সংবাদ পরিবেশন করার পেছনে জড়িতদের বের করতে দুদককে তদন্ত করতে বলেছে আদালত। বিচারক বলেছেন, এই ঘটনার সুবিধাভোগী হতেন শরীফ উদ্দিন।

৮. শরীফ উদ্দিনকে ২০২১ সালের ১৬ জুন চট্টগ্রাম-থেকে পটুয়াখালীতে বদলি করা হয়। অন্য সকলেই যথাসময়ে আদেশ পালন করলেও শরীফ উদ্দিন একমাস পর ১৭ জুলাই ই-মেইলযোগে যোগদানের কথা জানান, পরে ১০ আগস্ট সশরীরে পটুয়াখালীতে উপস্থিত হন। এই বিলম্বের কারণ হিসাবে লকডাউন বলে তিনি উল্লেখ করেন।

দুদক বলেছে, ‘ইমেইলে যোগদান তো তিনি বদলি আদেশ প্রাপ্তির পর নির্ধারিত সময়ে করতে পারতেন। বিলম্বে যোগদান করে তিনি কমিশনের আদেশ অবজ্ঞা করেছেন।’

৯. বদলির পর কর্মস্থল ত্যাগের সঙ্গে সঙ্গে সব রেকর্ডপত্রসহ নথি যথাযথভাবে বুঝিয়ে দেয়ার বিধান রয়েছে। তা সত্ত্বেও শরীফ উদ্দিন চট্টগ্রাম কার্যালয়ে তার দায়িত্বে থাকা অনুসন্ধান তদন্তের নথি হস্তান্তর করেননি। প্রায় তিন মাস পর তাকে পটুয়াখালী থেকে ডেকে নিয়ে আসা হলে গত ২৯ আগস্ট তিনি নথি হস্তান্তর করেন। এই তিন মাস নথিগুলোর অনুসন্ধান বা তদন্ত করা সম্ভব হয়নি।

শরীফ উদ্দিনের বার্ষিক মূল্যায়ন বা এসিআরে কেন তার কার্যক্রমকে ‘অতি উত্তম’ বলা হয়েছিল- সে প্রশ্নে সচিব বলেন, ‘সম্ভবত ২০১৪ সালে তিনি যোগ দিয়েছিলেন। স্বভাবগত কারণে তাদের উৎসাহিত করার জন্য এবং তখন যেসব কাজকর্ম করেছেন, সেটির মূল্যায়ন করা হয়েছিল (এসিআরে অতি উত্তম লেখা হয়েছিল)।

১০. রোহিঙ্গাদের এনআইডি পাসপোর্ট প্রদান বিষয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়েছেন তিনি। সেই দলে শরীফ উদ্দিন ছিল সর্বকনিষ্ট সদস্য। একজন পরিচালকের নেতৃত্বে ঢাকা চট্টগ্রামের সদস্যের সমন্বয়ে দলটি গঠন করা হয়। তবে সর্বকনিষ্ট সদস্য হওয়া সত্ত্বেও তিনি বিভ্রান্ত করে চলেছেন যে, তিনি সব উদঘাটন করেছেন।

১১. কক্সবাজার জেলার জমি অধিগ্রহণ বিষয়ে ২০২০ সালের ১০ মার্চ দুদকের চট্টগ্রাম কার্যালয়ে শরীফ উদ্দিন যে প্রতিবেদন দিয়েছেন, তাতে কমিশন বিধিমালা ২০০৭ এর বিধি-১০(৪) এর নির্দেশনা অনুসৃত হয়নি।

প্রতিটি ঘটনায় কে, কখন, কীভাবে কী অপরাধ করেছে এবং অপরাধটি সংগঠনের সঙ্গে আসামিদের দায় সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করা হয়নি। আসামিদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত ক্রিমিনাল চার্জ সমর্থনে সাক্ষ্য প্রমাণাদি সুস্পষ্টকরণ করা হয়নি। যাদেরকে অভিযোগের দায় হতে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়েছে, তাদেরকে কেন অব্যাহতি প্রদান করা হবে, তার ব্যাখ্যা প্রতিবেদনে প্রতিফলিত হয়নি। এছাড়াও অনেক ত্রুটি বিচ্যুতি দায়সাড়া গোছের প্রতিবেদনের কারণে কমিশন কর্তৃক তা বিবেচিত হয়নি। পরে দুই সদস্যের টিম গঠন করে মামলাটির পুনঃতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।

১২. স্বাস্থ্য খাতের সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, বদলি, নিয়োগ বাণিজ্য, ক্লিনিক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতি নিয়ে শরীফ উদ্দিনের জমা দেয়া অনুসন্ধান প্রতিবেদনের সঙ্গে তার তদারককারী কর্মকর্তাই দ্বিমত পোষণ করেছেন।

বিশেষ করে টেন্ডারে অনিয়ম সংক্রান্তে মালামালের গুণগত মানের তথ্য, জড়িত ব্যক্তিদের সুনির্দিষ্ট সম্পৃক্ততা, মূল্যায়ন কমিটির দায়-দায়িত্ব, আর্থিক বছর, সরকারি জমিতে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের দায়-দায়িত্ব নির্ধারণ করা হয়নি। পরে দুই সদস্যের অনুসন্ধান দল গঠন করে নতুন করে অনুসন্ধান করতে বলা হয়েছে।

১৩. শরীফ উদ্দিন ২০১৭ সালে কর্ণফুলী গ্যাসের বিভিন্ন অভিযোগের তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার পর কেডিসিএল কর্তৃপক্ষকে তার আপন ছোট ভাই শিহাব উদ্দিন সবুজকে কোনো বিজ্ঞাপন ছাড়াই ২০১৮ সালের আগস্ট ডাটা এন্ট্রি অপারেটর পদে চাকরি দেন। বর্তমানে আইটি ডিপার্টমেন্টে কর্মরত আছেন। এরপর ভাইয়ের চাকরি স্থায়ী বরতে সবাইকে চাপ দিচ্ছিলেন। তিনি সেখানে তার আত্মীয় মুহাম্মদ শাহাব উদ্দিনকে জাল সনদের মাধ্যমে ড্রাইভার পদে চাকরি দিয়েছেন। নিয়ে এখন তদন্ত চলছে।

এক নিকটাত্মীয়কে প্রভাব খাটিয়ে নিয়ম বহির্ভুতভাবে কর্ণফুলী গ্যাসে চাকরি দেয়া, অবৈধ অর্থ উপার্জন, অনুসন্ধানের নামে অভিযোগে সংশ্লেষ না থাকা সত্ত্বেও বিভিন্ন ব্যক্তিকে নোটিশ প্রদান করে ডেকে এনে হয়রানি করা অর্থ আদায় করা, প্রভাব খাটিয়ে নিজের শাশুড়ির নামে অবৈধ গ্যাস সংযোগ গ্রহণসহ অসংখ্য অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমনকি পটুয়াখালীতে অবস্থানকালে দুদকের পরিচয়ে বিভিন্ন ব্যক্তিকে হয়রানির অভিযোগও পাওয়া গেছে।

শরীফের অভিযোগ খণ্ডন

দুদক সচিব বলেন, ‘অপরাধ ও কর্মের দায় থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য শরীফ উদ্দিন কিছু মামলাকে গুরুত্বপূর্ণ মামলা বলে প্রচার করে সেই মামলা/ অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অতি গুরুত্বপূর্ণ হিসাবে মূল্যায়ন করেছেন। গুরুত্বপূর্ণ ও প্রভাবশালী ব্যক্তি হিসাবে দাবি করে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দিয়েছেন, তাই প্রভাবশালীদের চাপে তাকে অন্যায়ভাবে তাকে অপসারণ করা হয়েছে মর্মে তিনি দাবি করেছেন এবং মিডিয়ায় তাই প্রচার করা হয়েছে, যা প্রকৃত ঘটনা নয়।

‘কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের কিছু মামলায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দুর্নীতি উদ্ঘাটনের কারণে তাদের প্রভাবে তাকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়েছে এটা মোটেও সত্য নয়।’

দুদকের ব্যাখ্যায় বলা হয়, ‘বাস্তবতা বিবেচনায় কক্সবাজার ও চট্টগ্রামে কর্মরত জেলা পর্যায়ের ব্যক্তিদের আর কতটুকুই বা প্রভাব থাকতে পারে! কমিশনের প্রায় সকল অনুসন্ধান ও তদন্তকারী কর্মচারী চট্টগ্রাম বা কক্সবাজারের সংশ্লিষ্ট মামলায় উল্লিখিত অভিযুক্ত বা আসামি অপেক্ষা অনেক গুরুত্বপূর্ণ/ উঁচু পদ পদবির ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন। আদালতে বিচারের পর তাদের সাজাও হয়েছে। কিন্তু তারা কেউ এ ধরনের অভিযোগ উত্থাপন করেননি। তাদের কারও কারণে কমিশনকে এভাবে বিব্রত হতে হয় না।’

প্রশ্নের মুখোমুখি দুদক সচিব

লিখিত ব্যাখ্যা উপস্থাপন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে পড়েন দুদক সচিব।

তিনি বলেন, ‘দুর্নীতির তদন্তে প্রভাবশালীদের নাম আসায় তাদের চাপে শরীফকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে বলে যেসব বলা হচ্ছে, তা মোটেও সত্য নয়।...চাকরিবিধি না মানার কারণে তাঁর বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।’

অন্য এক প্রশ্নে মাহবুব হোসেন বলেন, ‘কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের কিছু মামলায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দুর্নীতি উদ্ঘাটনের কারণে তাদের প্রভাবে তাঁকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়েছে, এটা মোটেও সত্য নয়। দুর্নীতি দমন কমিশন কোনো প্রভাব আমলে নেয় না এবং প্রভাবিত হয়ে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে না।’

আরেক প্রশ্নে দুদক সচিব বলেন, ‘আপনি কমিশনের নিয়ম মানবেন না, অনুমোদন ছাড়া ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করবেন। আমার কোনো কিছুই আপনি মানবেন না, কমিশন কেন আপনাকে রাখবে? তিনি যদি চাকরিবিধি না মানেন, অফিস ব্যবস্থাপনা না মানেন, তাহলে তো হার্ডলাইনে যেতেই হবে।’

শরীফ উদ্দিনের বার্ষিক মূল্যায়ন বা এসিআরে কেন তার কার্যক্রমকে ‘অতি উত্তম’ বলা হয়েছিল- সে প্রশ্নে সচিব বলেন, ‘সম্ভবত ২০১৪ সালে তিনি যোগ দিয়েছিলেন। স্বভাবগত কারণে তাদের উৎসাহিত করার জন্য এবং তখন যেসব কাজকর্ম করেছেন, সেটির মূল্যায়ন করা হয়েছিল (এসিআরে অতি উত্তম লেখা হয়েছিল)।

‘পরবর্তী সময়ে যেসব তথ্য-উপাত্ত আপনাদের দিয়েছি, আপনি আজ যে অবস্থানে আছেন, এক দিন পর, দুই দিন পর সে অবস্থানে থাকবেন কি না, তা আপনিও জানেন না, আমিও জানি না। তার সিকোয়েন্সিয়াল যে মূল্যায়ন, সেটা তো আমলে নিতে হবে।

‘এটা তো আমার চাকরির পার্ট, শুধু ওই একটা দেখে, বাকি সব ওভারলুক করার তো সুযোগ নেই।’

আরও পড়ুন:
শরীফের নিরাপত্তা, চাকরিচ্যুতির বিষয়ে আদেশ চেয়ে ১০ আইনজীবীর চিঠি
পিবিআইয়ের জমি অধিগ্রহণ জালিয়াতি যেভাবে প্রকাশ্যে আনেন শরীফ
শরীফকে দুদকে পুনর্বহালের দাবি ‘জাগ্রত ছাত্র সমাজের’
শরীফের বাসায় আইয়ুবের যাওয়ার প্রমাণ সিসিটিভির ফুটেজে
প্রভাবশালীদের রোষানলের শিকার: শরীফ উদ্দিন

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
Live to appeal hearing next Sunday in the August 28 grenade attack case

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় লিভ টু আপিল শুনানি আগামী রোববার

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় লিভ টু আপিল শুনানি আগামী রোববার

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা লিভ টু আপিল আগামী রোববার শুনানির জন্য কার্যতালিকায় আসবে।

আসামি পক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, আজ জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের বেঞ্চে শুনানির জন্য আপিলটি ছিলো। কিন্তু এই মামলায় হাইকোর্টের অথর জাজ বিচারপতি একেএম আসাদুজ্জামান আজ আপিল বিভাগের বেঞ্চে ছিলেন।

নিয়ম অনুযায়ী হাইকোর্টে রায় দানকারী বিচারপতি একই মামলা আপিল বেঞ্চে শুনানি গ্রহণ করতে পারেন না।

এজন্য আগামী রোববার পুনর্গঠিত বেঞ্চে আপিলটি শুনানির জন্য কার্যতালিকায় আসবে। আদালত বিষয়টিতে আজ নট টুডে আদেশ দিয়েছেন।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর গুলিস্তান এলাকায় আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় ২৪ জন নিহত ও বহু মানুষ আহত হন। ওই গ্রেনেড হামলার ঘটনায় মতিঝিল থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দুটি মামলা হয়। ২০০৮ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় সিআইডি এই মামলার তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র দিলে শুরু হয় বিচার।

তবে, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর এই মামলায় অধিকতর তদন্তে আসামির তালিকায় যুক্ত করা হয় বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ৩০ জনকে।

দীর্ঘ বিচারিক কার্যক্রম শেষে ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন আলোচিত মামলার রায় দেন।

আলোচিত ওই রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামিরা হলেন- আব্দুস সালাম পিন্টুর ভাই মাওলানা তাজউদ্দিন, হুজি’র সাবেক আমির ও ইসলামিক ডেমোক্রেটিক পার্টির আহ্বায়ক মাওলানা শেখ আবদুস সালাম, কাশ্মীরি জঙ্গি আব্দুল মাজেদ ভাট, আবদুল মালেক ওরফে গোলাম মোস্তফা, মাওলানা শওকত ওসমান, মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান, মাওলানা আবু সাঈদ ওরফে ডা. জাফর, আবুল কালাম আজাদ ওরফে বুলবুল, মো. জাহাঙ্গীর আলম, হাফেজ মাওলানা আবু তাহের, হোসাইন আহম্মেদ তামিম, মঈন উদ্দিন শেখ ওরফে মুফতি মঈন, মো. রফিকুল ইসলাম, মো. উজ্জল, এনএসআই-এর সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম ও হানিফ পরিবহনের মালিক মোহাম্মদ হানিফ।

বিচারিক আদালতের রায়ে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন ও ১১ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। সে রায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামীরা হলেন- খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, বিএনপি’র সাবেক সংসদ সদস্য শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ, হুজি সদস্য হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, শাহাদাৎ উল্লাহ ওরফে জুয়েল, মাওলানা আবদুর রউফ, মাওলানা সাব্বির আহমেদ, আরিফ হাসান ওরফে সুমন, আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম মাওলাদার, মো. আরিফুল ইসলাম, মহিবুল মুত্তাকিন ওরফে মুত্তাকিন, আনিসুল মুরছালিন ওরফে মুরছালিন, মো. খলিল ওরফে খলিলুর রহমান, জাহাঙ্গীর আলম বদর, মো. ইকবাল ওরফে ইকবাল হোসেন, লিটন ওরফে মাওলানা লিটন, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আব্দুল হাই ও রাতুল আহমেদ ওরফে রাতুল বাবু।

এছাড়া, বিচারিক আদালতের রায়ে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজি) মো. আশরাফুল হুদা ও শহিদুল হক, বিএনপি চেয়ারপারসন ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ভাগ্নে লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (অব.) সাইফুল ইসলাম ডিউক, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) সাইফুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার, ডিজিএফআই-এর মেজর জেনারেল (অব.) এটিএম আমিন, ডিএমপি’র সাবেক উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) খান সাঈদ হাসান, আরেক সাবেক উপ-কমিশনার (পূর্ব) ওবায়দুর রহমান খান, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক খোদা বক্স চৌধুরী, সিআইডি’র সাবেক বিশেষ সুপার মো. রুহুল আমিন, সাবেক এএসপি আবদুর রশিদ ও সাবেক এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমানকে দুই বছর করে কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাস করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

এই মামলার আরেকটি ধারায় খোদা বক্স চৌধুরী, রুহুল আমিন, আবদুর রশিদ ও মুন্সি আতিকুর রহমানকে তিন বছর করে কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ছয় মাস করে কারাদণ্ড দেন আদালত।

বিচারিক আদালতে এই রায়ের দেড় মাসের মাথায় ২০১৮ সালের ২৭ নভেম্বর মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্তদের ডেথ রেফারেন্সসহ মামলার নথি হাইকোর্টে আসে। ২০২২ সালের ৫ ডিসেম্বর থেকে ডেথ রেফারেন্স এবং আসামিদের আপিল ও জেল আপিল শুনানি শুরু হয়। বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানি চলছিল।

তবে ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর হাইকোর্ট বেঞ্চ পুনর্গঠন হলে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানি হয়। শুনানি শেষে গত ১ ডিসেম্বর হাইকোর্ট এই মামলার সব আসামীকে খালাস দিয়ে রায় দেন। সে রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।

মন্তব্য

দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভূমিকম্প

দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভূমিকম্প প্রতীকী ছবি
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএসের ডেটা অনুযায়ী, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল মিয়ানমারের সাগাইংয়ের ১৬ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে।

ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে।

ভূমিকম্পটি শুক্রবার দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে অনুভূত হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএসের ডেটা অনুযায়ী, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল মিয়ানমারের সাগাইংয়ের ১৬ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে।

এ ভূমিকম্পে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

আরও পড়ুন:
জাপানে শক্তিশালী ভূমিকম্প, সুনামি সতর্কতা
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প
চীনে ভূমিকম্পে নিহত ৫৩, আহত ৬২
ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প
বছরের শুরুতেই ভূমিকম্পে কাঁপল সিলেট

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The United States will pay and 1 million for the Rohingya

রোহিঙ্গাদের জন্য ৭৩ মিলিয়ন ডলার দেবে যুক্তরাষ্ট্র

রোহিঙ্গাদের জন্য ৭৩ মিলিয়ন ডলার দেবে যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গা ক্যাম্প। ছবি: বাসস
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এক্সে একটি পোস্টে বলেন, ‘বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিওইএফ) মাধ্যমে এ খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তা ১০ লাখেরও বেশি মানুষের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তা প্রদান করবে। এটা গুরুত্বপূর্ণ যে, আমাদের আন্তর্জাতিক অংশীদাররা এ ধরনের জীবন রক্ষাকারী সহায়তার মাধ্যমে বোঝা ভাগ করে নেওয়ার সঙ্গে যুক্ত।’

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত বৃহত্তম জনগোষ্ঠী রোহিঙ্গাদের সাহায্য কমে যাওয়ার ফলে সংকট আরও গভীর হওয়ার উদ্বেগের মধ্যে ট্রাম্প প্রশাসন বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, তারা জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির মাধ্যমে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য ৭৩ মিলিয়ন (সাত কোটি ৩০ লাখ) ডলার নতুন আর্থিক সহায়তা দেবে।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এক্সে একটি পোস্টে বলেন, ‘বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিওইএফ) মাধ্যমে এ খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তা ১০ লাখেরও বেশি মানুষের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তা প্রদান করবে।

‘এটা গুরুত্বপূর্ণ যে, আমাদের আন্তর্জাতিক অংশীদাররা এ ধরনের জীবন রক্ষাকারী সহায়তার মাধ্যমে বোঝা ভাগ করে নেওয়ার সঙ্গে যুক্ত।’

সিনহুয়া জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তার প্রশাসন ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ এজেন্ডার অংশ হিসেবে বিদেশি সহায়তায় ব্যাপক কাটছাঁট এবং ফেডারেল ব্যয় ব্যাপকভাবে হ্রাস এবং যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কিছু অংশ ভেঙে ফেলার বিস্তৃত প্রচেষ্টার মধ্যেই এ অনুদান দেওয়া হলো।

জাতিসংঘের দুটি সংস্থা সতর্ক করে দিয়েছিল যে, তহবিলের ঘাটতি গত আট বছর ধরে প্রতিবেশী মিয়ানমারে সহিংসতার কারণে পালিয়ে আসা বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য রেশনের পরিমাণ কমিয়ে দেবে।

রোহিঙ্গারা আশঙ্কা করছেন, তহবিল হ্রাসের ফলে ক্ষুধা পরিস্থিতির অবনতি হবে। গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্যসেবা এবং জ্বালানি হ্রাস পাবে।

পররাষ্ট্র দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সবচেয়ে বড় সহায়তা প্রদানকারী দেশ ছিল। প্রায় ২ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দিয়ে আসছে দেশটি। কিন্তু জানুয়ারিতে ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর সাম্প্রতিক তহবিল স্থগিত করার ফলে কমপক্ষে পাঁচটি হাসপাতাল তাদের সেবা কমিয়ে ফেলতে বাধ্য হয়েছে।

ট্রাম্প ও বিলিয়নেয়ার মিত্র ইলন মাস্ক প্রধান মার্কিন বৈদেশিক সাহায্য সংস্থা ইউএসএআইডি বন্ধ করে দিয়েছেন এবং এর অবশিষ্টাংশগুলোকে পররাষ্ট্র দপ্তরের সঙ্গে একীভূত করেছেন। শত শত কর্মী এবং ঠিকাদারকে বরখাস্ত করেছেন এবং কোটি কোটি ডলারের পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছেন, যার ওপর বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষ নির্ভরশীল।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ফেব্রুয়ারিতে সমস্ত জীবন রক্ষাকারী সহায়তা এবং এ ধরনের সহায়তা প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় যুক্তিসঙ্গত প্রশাসনিক খরচ মওকুফ করেছিলেন।

ওয়াশিংটন টাইমস জানায়, এ মাসের শুরুতে ইউএসএআইডি ভেঙে দেওয়ার তত্ত্বাবধানকারী ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তা রোহিঙ্গাদের জন্য পর্যায়ক্রমে সাহায্য বন্ধের প্রস্তাব করেছিলেন।

জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের জন্য খাদ্য সহায়তা হ্রাস করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করেছে।

কক্সবাজার উপকূলের বিভিন্ন শিবিরের বাসিন্দারা এখন জনপ্রতি মাসিক ১২ ডলার করে খাদ্য বরাদ্দ পাবেন, যা আগের ১২ দশমিক ৫০ ডলার থেকে কম।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, ‘ডব্লিউএফপি একটি চিঠিতে এই সিদ্ধান্তের কথা আমাদের জানিয়েছে, যা ১ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে।’

তিনি আরও বলেন, ভাসানচরে বসবাসকারী রোহিঙ্গারা জনপ্রতি ১৩ ডলার করে পাবে, যা কক্সবাজারের তুলনায় এক ডলার বেশি।

বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের জন্য খাদ্য সহায়তা কমানোর পরিকল্পনা ডব্লিউএফপি পূর্বে জানানোর পর এ পরিবর্তন এসেছে।

গত ৫ মার্চ বাংলাদেশের শরণার্থী কমিশন ডব্লিউএফপি থেকে একটি চিঠি পায়, যেখানে বলা হয়, তহবিল সংকটের কারণে এপ্রিল থেকে রোহিঙ্গাদের জন্য মাসিক খাদ্য বরাদ্দ জনপ্রতি ১২ দশমিক ৫০ ডলার থেকে কমিয়ে ৬ ডলার করা হবে।

চিঠিতে শরণার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য ব্যবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।

গত ১৪ মার্চ জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেন।

তার সফরের সময় তাকে ছয় ডলারে রোহিঙ্গারা কী খাবার পাবে তার বিস্তারিত বিবরণ উপস্থাপন করা হয়েছিল। সে সময় অপর্যাপ্ত পরিমাণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছিল।

আরও পড়ুন:
ঢাকা-বেইজিংয়ের মধ্যে ৯ চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর
ঋণের সুদহার কমাতে ইতিবাচক সাড়া চীনের, পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনায় সহযোগিতার আশ্বাস
২৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল রিজার্ভ
রোহিঙ্গাবাহী নৌকাডুবি: উদ্ধার ২৫, বিজিবি সদস্যসহ নিখোঁজ অনেকে
যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে সতর্কতা যুক্তরাজ্য ও জার্মানির

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The government is working to implement the demands of the workers Home Ministry

শ্রমিকদের দাবি বাস্তবায়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে: স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

শ্রমিকদের দাবি বাস্তবায়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে: স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের লোগো। ফাইল ছবি
বিবৃতিতে বলা হয়, ‌‘গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন শিল্প কলকারখানার শ্রমিকদের পাওনা বেতন-ভাতাদিসহ যৌক্তিক দাবির ব্যাপারে সরকার অত্যন্ত আন্তরিক ও একমত। শ্রমিকদের যৌক্তিক দাবি বাস্তবায়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে এবং এ ব্যাপারে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এ বিষয়ে মালিকপক্ষ ও বিজিএমইএকে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে এবং তাদের কর্মকাণ্ড মনিটর করা হচ্ছে।’

গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন শিল্পকারখানার শ্রমিকদের পাওনা বেতন-ভাতাসহ যৌক্তিক দাবির ব্যাপারে সরকার আন্তরিক ও একমত বলে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, শ্রমিকদের যৌক্তিক দাবি বাস্তবায়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‌‘গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন শিল্প কলকারখানার শ্রমিকদের পাওনা বেতন-ভাতাদিসহ যৌক্তিক দাবির ব্যাপারে সরকার অত্যন্ত আন্তরিক ও একমত। শ্রমিকদের যৌক্তিক দাবি বাস্তবায়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে এবং এ ব্যাপারে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এ বিষয়ে মালিকপক্ষ ও বিজিএমইএকে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে এবং তাদের কর্মকাণ্ড মনিটর করা হচ্ছে।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘অন্যায্য ও অযৌক্তিক দাবির নামে গার্মেন্টস শিল্পে অস্থিরতা সৃষ্টি, অবরোধ করে যান চলাচল বন্ধ, নৈরাজ্য ও সহিংসতা কোনোভাবেই কাম্য নয় এবং তা কখনোই মেনে নেয়া হবে না।

‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় সরকার তা কঠোরভাবে প্রতিহত করবে। গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন শিল্প কলকারখানায় সুষ্ঠু ও নিরাপদ পরিবেশ বজায় রাখা এবং দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে সরকার এ বিষয়ে মালিকপক্ষ ও শ্রমিকপক্ষ উভয়ের সহযোগিতা কামনা করছে।’

আরও পড়ুন:
গাজীপুরে শ্রমিক বিক্ষোভ, ছুটির পর চালু বিভিন্ন কারখানা
বকেয়া বেতন পরিশোধের আশ্বাস, রেলের অস্থায়ী শ্রমিকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার
ঈদ বোনাসসহ বিভিন্ন দাবিতে গাজীপুরে শ্রমিক বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ
ঐতিহ্য ও আভিজাত্যে মোড়া লা রিভের ঈদ কালেকশন
টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ধর্মঘট টেকনাফ স্থলবন্দরের শ্রমিকদের

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Environment adviser

আন্তসীমান্ত বায়ুদূষণ রোধে পদক্ষেপের আহ্বান পরিবেশ উপদেষ্টার

আন্তসীমান্ত বায়ুদূষণ রোধে পদক্ষেপের আহ্বান পরিবেশ উপদেষ্টার পরিবেশ, বন, জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। ছবি: ইউএনবি
তিনি দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর কাঠমান্ডু রোডম্যাপ ও অন্যান্য সমঝোতার কথা উল্লেখ করে বলেন, এগুলো যথেষ্ট নয়, আরও জোরালো উদ্যোগ প্রয়োজন।

পরিবেশ, বন, জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, আন্তসীমান্ত বায়ুদূষণ মোকাবিলায় কার্যকর আঞ্চলিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। বাংলাদেশের বায়ুদূষণের ৩০-৩৫ শতাংশ আসে প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে। তাই এ সমস্যা সমাধানে রাজনৈতিক আলোচনার গণ্ডি পেরিয়ে বাস্তব পদক্ষেপ ও আঞ্চলিক সহযোগিতা জরুরি।

তিনি দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর কাঠমান্ডু রোডম্যাপ ও অন্যান্য সমঝোতার কথা উল্লেখ করে বলেন, এগুলো যথেষ্ট নয়, আরও জোরালো উদ্যোগ প্রয়োজন।

কলম্বিয়ার কার্টাগেনায় অনুষ্ঠিত ডব্লিউএইচওর দ্বিতীয় বৈশ্বিক সম্মেলনের বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া সাইড ইভেন্টে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে বৃহস্পতিবার ভোরে পরিবেশ উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

ঢাকাস্থ বাসভবন থেকে সংযুক্ত হয়ে তিনি বাংলাদেশের বায়ুদূষণ সমস্যা, বিশেষ করে ঢাকার ভয়াবহ পরিস্থিতির কথা তুলে ধরেন।

উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশের বহুমাত্রিক বায়ুদূষণ সমস্যা মোকাবিলায় বায়ুমান নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা চূড়ান্ত করা হয়েছে, যা ডব্লিউএইচওর অন্তর্বর্তীকালীন লক্ষ্যমাত্রার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এ আইনি বিধিমালায় দূষণকারী খাতগুলোর জন্য নির্দিষ্ট মানদণ্ড নির্ধারণ করা হয়েছে এবং অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণের কাঠামো তৈরি করা হয়েছে।

তিনি জানান, ২০২৪ সালে চূড়ান্ত হওয়া জাতীয় বায়ুমান ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনার বাস্তবায়ন রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে পিছিয়ে ছিল, তবে এখন তা কার্যকরভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে। পরিকল্পনার লক্ষ্য হলো মানুষের দূষণজনিত ঝুঁকি কমানো ও পরিষ্কার বায়ুর দিন বৃদ্ধির মাধ্যমে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা।

পরিবেশ উপদেষ্টা আরও জানান, বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় বাংলাদেশ ক্লিন এয়ার প্রকল্প চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে, যা সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে শিগগিরই বাস্তবায়ন শুরু হবে। এ প্রকল্প নিয়ন্ত্রক কাঠামো শক্তিশালী করা, আইন প্রয়োগ জোরদার করা, শিল্প কারখানায় দূষণ পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা সম্প্রসারণ এবং গণপরিবহন খাত আধুনিকায়নের ওপর গুরুত্ব দেবে।

তিনি ঢাকার আশেপাশের এলাকাগুলোকে ইটভাটামুক্ত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করার পরিকল্পনার কথা জানান, যেখানে ইটভাটা স্থাপন নিষিদ্ধ থাকবে।

এ ছাড়া ২০২৫ সালের মে থেকে পুরনো বাস ধাপে ধাপে তুলে দেওয়া হবে, যা পরিবেশ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ যৌথভাবে বাস্তবায়ন করবে।

তিনি বায়ুদূষণের অন্যতম প্রধান কারণ ধুলাবালি দূষণ রোধে ঢাকা শহরের খোলা সড়কগুলোতে সবুজায়নের উদ্যোগ এবং রাস্তা পরিস্কারে আরও শ্রমিক নিয়োগের পরিকল্পনার কথা জানান।

উপদেষ্টা জানান, অবৈধ ইটভাটা উচ্ছেদ অভিযানের ফলে এরই মধ্যে বায়ুমানের কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে এ অগ্রগতি ধরে রাখতে কঠোর নজরদারি ও খাতগুলোর আধুনিকায়ন জরুরি।

রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ মানুষ বায়ুদূষণের কারণে মারা যায় এবং ঢাকার মতো দূষিত শহরগুলোতে মানুষের গড় আয়ু ৫-৭ বছর কমে যাচ্ছে। এই সংকট আমাদের সবার জন্য, আমাদের শিশু, বাবা-মা এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য হুমকি। নিষ্ক্রিয়তার মূল্য অনেক বেশি। আমাদের এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমি আশাবাদী। কারণ আমি বিশ্বাস করি, এ সমস্যার সমাধান সম্ভব। প্রযুক্তি ও বিকল্প ব্যবস্থা আমাদের হাতে রয়েছে, শুধু প্রতিশ্রুতি ও বাস্তবায়ন দরকার।

‘বায়ুদূষণ শুধুই পরিবেশগত ইস্যু নয়, এটি মানবিক সংকট।’

সম্মেলনে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের মন্ত্রী পর্যায়ের প্রতিনিধি, পরিবেশ ও জ্বালানি খাতের নীতিনির্ধারক, আন্তর্জাতিক ও উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধি, গবেষক, স্থানীয় প্রশাসন, পরিবহন ও শিল্প খাতের বিশেষজ্ঞ এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

তারা দক্ষিণ এশিয়ায় বায়ুদূষণ রোধে যৌথভাবে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেন।

আরও পড়ুন:
‘অস্বাস্থ্যকর বাতাস’ নিয়ে বিশ্বে পঞ্চম দূষিত শহর ঢাকা
বায়ুদূষণে বিশ্বে প্রতিদিন ২ হাজার শিশুর মৃত্যু: প্রতিবেদন
ছুটির দিনে বাতাসের নিম্ন মানে সপ্তম ঢাকা
সংবেদনশীল জনগোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর ঢাকার বাতাস
ছুটির দিনে মানে উন্নতি, তবু ‘অস্বাস্থ্যকর’ ঢাকার বাতাস

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Holy Lilatul Kadar today

পবিত্র ‘লাইলাতুল কদর’ আজ

পবিত্র ‘লাইলাতুল কদর’ আজ প্রতীকী ছবি
মহান আল্লাহ লাইলাতুল কদরের রাতকে অনন্য মর্যাদা দিয়েছেন। হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও এ রাতের ইবাদত উত্তম।

পবিত্র লাইলাতুল কদর বা শবে কদর বৃহস্পতিবার। এর অর্থ ‘অতিশয় সম্মানিত ও মহিমান্বিত রাত’ বা ‘পবিত্র রজনী’।

আজ সন্ধ্যার পর থেকে শুরু হবে কদরের রজনী।

যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে সারা দেশে রাতটি পালন করা হবে।

মহান আল্লাহ লাইলাতুল কদরের রাতকে অনন্য মর্যাদা দিয়েছেন। হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও এ রাতের ইবাদত উত্তম।

এ রাতে আল্লাহর অশেষ রহমত ও নিয়ামত বর্ষণ করা হয়। নির্ধারণ করা হয় মানবজাতির ভাগ্য।

৬১০ সালে কদরের রাতেই মক্কার নূর পর্বতের হেরা গুহায় ধ্যানরত মহানবী হযরত মুহাম্মদের (সা.) কাছে সর্বপ্রথম সুরা আলাকের পাঁচ আয়াত নাজিল হয়। এরপর আল্লাহর নির্দেশে ফেরেশতা জিবরাইল (আ.)-এর বহনকৃত ওহির মাধ্যমে পরবর্তী ২৩ বছর ধরে মুহাম্মদ (সা.)-এর কাছে বিভিন্ন প্রয়োজনীয়তা এবং ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নির্দিষ্ট আয়াত আকারে বিভিন্ন সুরা নাজিল করা হয়।

পবিত্র কুরআনে আল্লাহ ঘোষণা করেন, ‘নিশ্চয়ই আমি তা (কোরআন) অবতীর্ণ করেছি কদরের রাতে। আর কদরের রাত সম্বন্ধে তুমি কি জানো? কদরের রাত হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। সে রাতে ফেরেশতারা ও রুহ অবতীর্ণ হয় প্রত্যেক কাজে তাদের প্রতিপালকের অনুমতিক্রমে।

‘শান্তিই শান্তি, বিরাজ করে ঊষার আবির্ভাব পর্যন্ত। (সূরা আল- কদর, আয়াত ১-৫)।’

হাদিসে বর্ণিত আছে, মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) রমজান মাসের শেষ ১০ দিন ইতিকাফ করতেন এবং বলতেন, ‘তোমরা রমজানের শেষ ১০ রাতে লাইলাতুল কদর সন্ধান করো (বুখারি ও মুসলিম)।’

মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় পবিত্র রাতটি ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে কাটিয়ে দেন। কামনা করেন মহান রবের অসীম রহমত, নাজাত, বরকত ও মাগফিরাত।

এরই ধারাবাহিকতায় আজ রাত থেকে পরের দিন ভোররাত পর্যন্ত মসজিদসহ বাসা-বাড়িতে এবাদত বন্দেগিতে মশগুল থাকবেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। নফল নামাজ, পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, জিকির-আসকার, দোয়া, মিলাদ মাহফিল ও আখেরি মোনাজাত করবেন তারা।

এই উপলক্ষে শুক্রবার সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এ উপলক্ষে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমসহ দেশের সব মসজিদে রাতব্যাপী ওয়াজ মাহফিল, ধর্মীয় বয়ান ও আখেরি মোনাজাতের আয়োজন করা হয়েছে।

এ ছাড়া দেশের সব মসজিদেই তারাবির নামাজের পর থেকে ওয়াজ মাহফিল, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল ও বিশেষ মোনাজাতের আয়োজন থাকবে।

পবিত্র লাইলাতুল কদর/শবে কদর উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এবং বাংলাদেশ বেতার ও বেসরকারি রেডিওগুলো বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার করবে।

এ ছাড়া সংবাদপত্রগুলোতে বিশেষ নিবন্ধ প্রকাশ করা হবে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The chief adviser to create a clear roadmap to build a prosperous Asia

সমৃদ্ধ এশিয়া গড়তে সুস্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরির আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

সমৃদ্ধ এশিয়া গড়তে সুস্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরির আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার চীনের হাইনানে বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া (বিএফএ) সম্মেলনে বৃহস্পতিবার বক্তব্য দেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: পিআইডি
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘পরিবর্তনশীল এ বিশ্বে এশীয় দেশগুলোর ভাগ্য পরস্পরের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। আমাদের অবশ্যই একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরি করতে হবে যা অভিন্ন ভবিষ্যৎ এবং যৌথ সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যাবে।’

এশীয় দেশগুলোকে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ ও যৌথ সমৃদ্ধির জন্য সুস্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরির আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

চীনের হাইনানে বৃহস্পতিবার বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া (বিএফএ) সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘পরিবর্তনশীল এ বিশ্বে এশীয় দেশগুলোর ভাগ্য পরস্পরের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। আমাদের অবশ্যই একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরি করতে হবে যা অভিন্ন ভবিষ্যৎ এবং যৌথ সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যাবে।’

আর্থিক সহযোগিতা প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এশিয়াকে অবশ্যই একটি টেকসই অর্থায়ন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে এবং আঞ্চলিক উন্নয়ন ব্যাংক (এমডিবি) ও অনুরূপ প্রতিষ্ঠানগুলোর এ প্রচেষ্টায় নেতৃত্ব দেওয়া উচিত।

তিনি বলেন, ‘আমাদের এমন নির্ভরযোগ্য তহবিল দরকার যা আমাদের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ও ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণ করবে।’

বাণিজ্য সহযোগিতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এশিয়া এখনও বিশ্বের অন্যতম কম সংযুক্ত অঞ্চল।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘এ দুর্বল সংযুক্তি বিনিয়োগ ও বাণিজ্যকে বাধাগ্রস্ত করছে। আমাদের অবশ্যই বাণিজ্য সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য দ্রুত কাজ করতে হবে।’

খাদ্য ও কৃষি সহযোগিতা বিষয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, এশীয় দেশগুলোকে অবশ্যই সম্পদ-সাশ্রয়ী কৃষিকে উৎসাহিত এবং খাদ্য নিরাপত্তার জন্য স্থানীয় উৎপাদন বাড়াতে হবে।

তিনি বলেন, ‘আমাদের আমদানির ওপর নির্ভরতা কমাতে হবে। স্বনির্ভরতা অর্জন করতে হবে। টেকসই প্রযুক্তিভিত্তিক কৃষি সমাধান ও জলবায়ুবান্ধব চাষাবাদের ক্ষেত্রে উদ্ভাবন বাড়ানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‌এশিয়াকে অবশ্যই একটি শক্তিশালী প্রযুক্তি ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে হবে, যা পুনর্গঠনমূলক, সমবণ্টনমূলক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক হবে।

তিনি বলেন,‘আমাদের জ্ঞান, তথ্য ভাগ করে নিতে হবে এবং প্রযুক্তি ইনকিউবেশন ও উদ্ভাবনে বিনিয়োগ করতে হবে। ডিজিটাল সমাধানে সহযোগিতা আমাদের অগ্রগতিকে ত্বরান্বিত করবে।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘পরিশেষে বলব আমাদের সম্মিলিত কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রে মেধা সম্পদ ও যুবশক্তিকে রাখতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই একটি নতুন সভ্যতার ভিত্তি স্থাপন করতে হবে—একটি আত্মরক্ষা ও আত্মস্থায়ী সমাজ। আমাদের শূন্য-বর্জ্যের জীবনধারার ওপর ভিত্তি করে একটি পাল্টা সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে। ভোগ সীমিত রাখতে হবে মৌলিক প্রয়োজনের মধ্যে।

‘আমাদের অর্থনীতিকে সামাজিক ব্যবসার ওপর ভিত্তি করে গড়ে তুলতে হবে, যা ভবিষ্যতের ব্যবসায়িক কাঠামো হিসেবে উদ্ভাসিত হবে, যেখানে উদ্ভাবন, লক্ষ্য ও দায়িত্ববোধ একীভূত থাকবে।’

অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, বোয়াও ফোরাম ও অন্যান্য অনুরূপ উদ্যোগগুলোকে যুবসমাজ ও উদ্যোক্তাদের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করতে হবে, যেন আগামী প্রজন্মের জন্য এশিয়াকে আরও উন্নত করা যায়।

আরও পড়ুন:
চীনের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধান উপদেষ্টা
জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা প্রধান উপদেষ্টার
স্টারলিংকের ইন্টারনেট বাণিজ্যিকভাবে চালু করতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ
দেশবিরোধী আন্দোলনে উসকানিদাতাদের গ্রেপ্তার করা হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ডাকটিকিট অবমুক্ত করলেন প্রধান উপদেষ্টা

মন্তব্য

p
উপরে