ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলায় যে নির্বাচন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রার্থীদের কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে, ভোট চলাকালে তার ব্যাংক হিসাবে বিপুল পরিমাণ টাকা জমা পড়ার তথ্য পাওয়া গেছে।
অভিযোগের তদন্ত শুরু হলে সেই টাকার সিংহভাগ স্ত্রীর ব্যাংক হিসাবে সরিয়ে নেন সেই নির্বাচন কর্মকর্তা। এর ব্যাখ্যায় তিনি বলছেন, তিনি শ্বশুরকে টাকা ধার দিয়েছিলেন। সেই টাকা ফেরত পেয়ে ব্যাংকে রেখেছিলেন।
গত ২৮ নভেম্বর চরভদ্রাসনের ১১টি ইউনিয়নে ভোট হয়। মনোনয়ন দাখিলের পর থেকে বিভিন্ন প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করার ভয় দেখিয়ে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ উঠতে থাকে সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে।
এক হাজার ৭ ইউনিয়নে ২৮ নভেম্বর ভোটের তারিখ জানিয়ে গত ১৪ অক্টোবর তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। প্রার্থিতা জমা দেয়ার সুযোগ ছিল ২ নভেম্বর পর্যন্ত। মনোনয়নপত্র বাছাই করা হয় ৪ নভেম্বর, প্রত্যাহারের শেষ সময় ছিল ১১ নভেম্বর।
ভোটের পর গত ৩০ ডিসেম্বর প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে গাজীরটেক ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী আহসানুল হক মামুন ও একই ইউপির ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য প্রার্থী আব্দুর রউফ নির্বাচন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঊর্ধ্বতন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন।
তাদের অভিযোগ আমলে নিয়ে দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি কাজ করছে। নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সহকারী সচিব (সংস্থাপন-১) জিলহাজ উদ্দিন ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান তদন্তে নেমে সাইফুলের সোনালী ব্যাংক হিসাবে প্রায় ২৪ লাখ টাকা গচ্ছিত পেয়েছেন।
গত বছরের অক্টোবর মাসের শেষের দিক থেকে ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন দফায় এই টাকা জমা পড়েছে।
সাইফুল ইসলামের সোনালী ব্যাংক শাখায় একটি হিসাব রয়েছে। ভোট চলাকালে কোনো দিন এক লাখ, কোনো দিন দেড় লাখ, কোনো দিন দুই লাখ টাকা জমা রাখা হয়।
এক লাখ বা ৮০ হাজারের মতো ঘুষের টাকাগুলো নির্বাচন অফিসের কর্মচারী দিয়ে ব্যাংক হিসাবে জমা করেছেন এবং দুই লাখ বা আড়াই লাখের মতো অঙ্কগুলো তিনি নিজেই জমা দিয়েছেন।
তদন্ত কর্মকর্তারা ব্যাংকে গচ্ছিত টাকার উৎস জানতে চেয়ে চিঠি দিলে সেই নির্বাচন কর্মকর্তা ২৪ লাখ টাকাই তার পারিবারিক লেনদেনের অর্থ বলেছেন।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, ‘চরভদ্রাসন উপজেলার নির্বাচন অফিসার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের তদন্ত চলছে। তার ব্যাংক হিসাব তলব করা তারই অংশ। আর তার অভিযোগটি তদন্তাধীন। এ জন্য আর কিছু জানাতে পারছি না।’
অভিযোগকারীরা কী বলছেন
গাজীরটেক ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে নৌকা মার্কায় ভোটে লড়া আহসানুল হক মামুন জানান, মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার পর নির্বাচন কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম প্রার্থিতা বাতিল করার ভয় দেখিয়ে প্রথম দফায় নগদ পৌনে দুই লাখ টাকা এবং পরে আরও দুই দফায় ৫০ হাজার টাকা নিয়েছেন।
সাইফুল ইসলামের সোনালী ব্যাংক শাখায় একটি হিসাব রয়েছে। ভোট চলাকালে কোনো দিন এক লাখ, কোনো দিন দেড় লাখ, কোনো দিন দুই লাখ টাকা জমা রাখা হয়। এক লাখ বা ৮০ হাজারের মত ঘুষের টাকাগুলো নির্বাচন অফিসের কর্মচারী দিয়ে ব্যাংক হিসাবে জমা করেছেন এবং দুই লাখ বা আড়াই লাখের মতো অঙ্কগুলো তিনি নিজেই জমা দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘ওই কর্মকর্তা মিথ্যাচার করছেন। তার শ্বশুর টাকা ধার নিয়ে আমার নির্বাচনের সময়ই সেই টাকা ফেরত দিলেন, এই বক্তব্য একেবারে ভিত্তিহীন। আর ওই কর্মকর্তা যদি টাকা ধার নিয়ে থাকবেন, তাহলে সেই টাকা কেন তার স্ত্রীর অ্যাকাউন্টে রাখবেন?’
একই ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য (মেম্বার) পদে নির্বাচনে অংশ নেয়া আব্দুর রউফ জানান, মনোনয়নপত্র দাখিলের দিন কাগজপত্র পরীক্ষা করে সবকিছু ঠিক আছে বলে জানিয়ে দেন নির্বাচন কর্মকর্তা। তবে দুই দিন পর তিনি অফিসে ডেকে নিয়ে মনোনয়নপত্রের কোনো এক স্থানে সই না থাকার কথা বলে প্রার্থিতা বাতিল হয়ে যাবে বলে জানান। এ কথা বলে ৩ নভেম্বর ১৫ হাজার এবং ৪ নভেম্বর আরও ২৫ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছেন।
ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার পদে লড়াই করা শেখ শহীদুল ইসলামের স্ত্রী হাসিনা বেগম জানান, ভোট চলাকালে সড়ক দুর্ঘটনায় তার স্বামীর পা ভেঙে যাওয়ার পর নানা কথা বলে ৪ নভেম্বর ২৫ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছেন সাইফুল ইসলাম।
চরহরিরামপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে লড়াই করা জুলহাস শিকদার জানান, নির্বাচনী প্রচার চলাকালে প্রার্থিতা বাতিল হয়ে যাবে বলে হুমকি দিয়ে ৪ ও ৫ নভেম্বর দুই দফায় ৮০ হাজার টাকা নিয়েছেন।
একই ইউনিয়নের আরেক চেয়ারম্যান প্রার্থী মোহাম্মদ আলীর অভিযোগ করেন তার কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা এবং সদর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আবদুল বারেক মণ্ডলের কাছ থেকে নগদ ৪ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছেন সেই নির্বাচন কর্মকর্তা।
তদন্তের মধ্যে স্ত্রীর হিসাবে টাকা স্থানান্তর
গত ৬ ফেব্রুয়ারি ব্যাংকের সেই টাকার মধ্যে থেকে তার স্ত্রী ফেরদৌসী বেগমের ব্যাংক হিসাবে ২০ লাখ টাকা স্থানান্তর করেন।
সাইফুলের স্ত্রী ফেরদৌসী বেগমও একজন নির্বাচন কর্মকর্তা। তিনি মানিকগঞ্জ জেলার ঘিওর উপজেলায় কর্মরত।
সাইফুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার শ্বশুর আমার কাছ থেকে টাকা ধার নিয়েছিল। সেই পাওনা টাকা আমাকে ফেরত দিলে উক্ত টাকা আমি ব্যাংকে জমা করার পর আবার আমার স্ত্রীর হিসাবে ট্রান্সফার করেছি। আর এর প্রতিবেদন ব্যাংকে জমা দিয়েছি। আর আমি কোনো ঘুষ গ্রহণ করিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘আমার ব্যাংক হিসাবের খবর সাংবাদিকরা জানল কীভাবে? আমি ব্যাংকের বিরুদ্ধে এলিগেশন দেব।’
তার শ্বশুর কী করেন, ২০ লাখ টাকা তিনি কেন কবে ধার নিয়েছিলেন, সেই টাকা সাইফুল কোথায় পেয়েছেন- এসব প্রশ্নের জবাব পাওয়া যায়নি এই নির্বাচন কর্মকর্তা কথা বাড়াতে আগ্রহী না হওয়ায়।
তার স্ত্রী ফেরদৌসী বেগমও একজন নির্বাচন কর্মকর্তা। তিনি মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলায় কর্মরত। তার কাছ থেকেও সেই টাকার বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো কথা বলবেন না বলে ফোন কেটে দেন।
আরও পড়ুন:নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন করোনা আক্রান্ত এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত জেবল হক (৮০) কবিরহাট উপজেলার চাপরাশিরহাট ইউনিয়নের লামছি গ্রামের মৃত গনু মিয়ার ছেলে।
বুধবার (২ জুলাই) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. রাজীব আহমেদ চৌধুরী। এর আগে, গতকাল মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাত ১০টার দিকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে তার মৃত্যু হয়।
ডা. রাজীব আহমেদ চৌধুরী বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। গত মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে ওই বৃদ্ধ হাসপাতালে ভর্তি হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে মারা যান তিনি। এদিকে গত ২৪ ঘন্টায় নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের এক জনের নমুনা পরীক্ষায় একজনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা.মরিয়ম সিমি বলেন, মারা যাওয়া ব্যক্তি সকালে হাসপাতালে ভর্তি হয়। দুপুরে তার করোনা শনাক্ত হওয়ার পর সেখানে রাতে তার মৃত্যু হয়। এখন পর্যন্ত নোয়াখালীতে মোট ৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। কিট সল্পতার কারণে উপজেলা পর্যায়ে করোনা টেস্ট এখনো শুরু করা হয়নি।
সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের নেতৃত্ব নিয়ে চলমান বিরোধের জেরে ক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেমসহ সাংবাদিকদের উপর অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৩০ সাংবাদিক আহত হয়েছেন।
অভিযোগ উঠেছে, ক্লাবের কথিত সভাপতি মাদকাসক্ত আওয়ামী দোসর আবু সাঈদ ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারীর নেতৃত্বে আল ইমরান ও অমিত ঘোষ বাপ্পাসহ ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্তরা এই হামলা চালায়।
সোমবার (৩০ জুন) সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে এই হামলায় ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের সাংবাদিক ও প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম, ভোরের আকাশের সাংবাদিক আমিনুর রহমান, ডিবিসি নিউজের সাংবাদিক বেলাল হোসেন, অনির্বানের সোহরাব হোসেনসহ অন্তত ৩০ সাংবাদিক গুরুতর আহত হয়েছেন।
হামলার শিকার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রেসক্লাবে একটি সভা করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। ঠিক সেই মুহূর্তে আবু সাঈদ ও আব্দুল বারীর নেতৃত্বে আলিপুর থেকে আনা ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্তরা আমাদের উপর পরিকল্পিতভাবে হামলা করে। তাদের হামলায় আমাদের অন্তত ৩০ জন সাংবাদিক ও সদস্য আহত হয়েছেন।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, আবু সাঈদ ও আব্দুল বারী দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে প্রেসক্লাব দখল করে রেখেছেন এবং তাদের মতের বিরুদ্ধে গেলেই এভাবে হামলা ও নির্যাতন চালানো হয়।
এই ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনায় সাতক্ষীরার সাংবাদিক মহলে তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। সাংবাদিকরা অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছেন।
ঘটনার পর থেকে প্রেসক্লাব এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
কুমিল্লার দাউদকান্দি পৌরসভার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। বাজেট ঘোষণা করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও দাউদকান্দি পৌর প্রশাসক রেদওয়ান ইসলাম।
সোমবার (৩০ জুন) দুপুরে পৌরসভা হলরুমে এ বাজেট ঘোষণা করা হয়। বাজেটে সর্বমোট আয় ৪২ কোটি ৯১ লাখ ৫৯ হাজার টাকা ও মোট ব্যয় ৩৬ কোটি ৭৪ হাজার টাকা প্রস্তাব করা হয়। পৌর প্রশাসক রেদওয়ান ইসলাম তার প্রস্তাবিত বাজেটে ২০২৫-২৬ অর্থ বছরে রাজস্ব খাত থেকে ১৩ কোটি ২৩ লাখ ৪১ হাজার ৩ শত ৩১ টাকা ও উন্নয়ন খাত থেকে ২৯ কোটি ৬৮ লাখ ১৮ হাজার ৪৫ টাকা আহরনের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। বাজেটে উদ্ধৃত্ত ধরা হয়েছে ৬ কোটি ১৭ লাখ ২ হাজার ৩ শত ৭৮ টাকা।
এছাড়াও বাজেটে খাতওয়ারী ব্যয়ের হিসেবে দেখা যায় রাজস্ব খাতে ব্যয় ৯ কোটি ৫৯ লাখ ৫৭ হাজার টাকা এবং উন্নয়ন ব্যয় দুই কোটি ১৫ লাখ টাকা ধরা হয়েছে।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.হাবিবুর রহমান,পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম, হিসাবরক্ষক শাহাদাত হোসেনসহ পৌরসভার অন্যান্য কর্মকর্তারা।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে মাদকাসক্ত হয়ে মাতলামি করার প্রতিবাদ করায় ইয়াছিন (৩৮) ও সিপন( ৩২) নামে দুই যুবক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আহতদের মধ্যে একজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং অপরজনকে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
শুক্রবার দিবাগত রাতে উপজেলার মুড়াপাড়া টঙ্গীরঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
গুলিবিদ্ধ ইয়াছিন মুড়াপাড়ার হাউলিপাড়া এলাকার ইদু মিয়ার ছেলে এবং সিপন টঙ্গীরঘাট এলাকার আলাউদ্দিনের ছেলে।
রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তরিকুল ইসলাম জানান, রাত ১১টার দিকে ইয়াছিন তার স্ত্রীকে নিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে খালাতো বোনের বাড়ি যাচ্ছিলেন। পথে স্থানীয় সোহরাব নামের এক যুবক মাদকাসক্ত অবস্থায় তাদের উদ্দেশে গালিগালাজ করলে ইয়াছিন প্রতিবাদ করেন। পরে তিনি খালাতো ভাই সিপনকে নিয়ে স্থানীয় অহিদুল্লার বাড়িতে গিয়ে ঘটনার কথা জানান। সেখানেই সোহরাব ক্ষিপ্ত হয়ে পিস্তল দিয়ে তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে ইয়াছিনের মাথায় ও সিপনের পায়ে গুলি লাগে।
তাদের প্রথমে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সিপনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং ইয়াছিনকে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গুলির খোসা উদ্ধার করেছে এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করেছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
নোয়াখালীতে গ্রাম আদালত সম্পর্কে ব্যাপক সচরতা বৃদ্ধিতে স্থানীয় সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের অংশ গ্রহণের সমন্বিত পরিকল্পনা বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নোয়াখালী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে বুধবার সকাল ১১ টার দিকে (২৫ জুন) জেলা প্রশাসকের কার্যালয় তৃতীয় তলায় মিনি কনফারেন্স হলরুমে কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন, নোয়াখালী জেলা প্রশাসক খন্দকার ইশতিয়াক আহমেদ, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক জালাল উদ্দিন,নোয়াখালী অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ ইয়াসিন, গ্রাম আদালত নোয়াখালী ম্যানেজার আহসানুল্লাহ চৌধুরী মামুনসহ এনজিও প্রতিনিধি, সাংবাদিক, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ,সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের একটি বিচারাধীন মামলার নথি থেকে এজাহারের কপি রহস্যজনকভাবে গায়েব হয়ে গেছে। আদালতের নথি থেকে গুরুত্বপূর্ণ এই কাগজ হারিয়ে যাওয়ার ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে আমলে নিয়ে মামলার বেঞ্চ সহকারী হুমায়ুন কবির ও আসামিপক্ষের আইনজীবী আহসান হাবিব মুকুলকে শোকজ করেছেন বিচারক। তাদের তিন কার্যদিবসের মধ্যে এ বিষয়ে ব্যাখা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আদালত সূত্র জানায়, ঘটনাটি ঘটে গত ২২ জুন যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতে। ওই দিন মামলাটির (এসসি-১৬৬৯/২০১৮) সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য নির্ধারিত ছিল। আদালতে আসামি, রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি ও আসামিপক্ষের আইনজীবী—সবাই উপস্থিত ছিলেন।
সাক্ষ্যগ্রহণ চলাকালে বিচারক মো. সালেহুজ্জামান মামলার নথি পর্যবেক্ষণ করে দেখতে পান, নথিতে মামলার এজাহারের কপি নেই। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি আদালতের বেঞ্চ সহকারীকে বিষয়টি অবগত করলে তিনি জানান, সাক্ষ্য গ্রহণের আগে আইনজীবী আহসান হাবিব মুকুল তার কাছ থেকে নথি নিয়ে গিয়েছিলেন এবং এজাহার দেখে প্রয়োজনীয় তথ্য লিখে নিয়েছিলেন। এরপর তিনি আবার নথি বিচারকের কাছে জমা দেন।
এরপর এজলাসেই বিচারক আইনজীবীর কাছে জিজ্ঞাসা করলে তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে মন্তব্য করেন। ফলে বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। জেলা আইনজীবী সমিতির নেতারাসহ সিনিয়র আইনজীবীরা এজলাসে হাজির হন। একপর্যায় বিচারক ওই দুইজনকে শোকজ করে আগামী ১৩ আগস্ট মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করেন।
বেঞ্চ সহকারী হুমায়ুন কবির বলেন, ‘বিচারক এজলাসে ওঠার আগে আইনজীবী মামলার নথি নিয়েছিলেন। পরে ফেরত দেন। আমি নিজে নথিতে কোনো হেরফের করিনি। আইনজীবী কিংবা আইনজীবীর সহকারীর মাধ্যমে এই ঘটনা ঘটতে পারে।’
অন্যদিকে, আইনজীবী আহসান হাবিব মুকুল জানান, তিনি নথি নিয়েছিলেন ঠিকই, তবে বিচারক এজলাসে চলে আসায় তা যথাযথভাবে বেঞ্চ সহকারীর কাছে ফিরিয়ে দিয়েছেন। তিনি আসামির চালান কপি থেকে তথ্য নিয়েছেন। এজাহার সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলেও দাবি করেন।
যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এম এ গফুর বলেন, ‘ঘটনাটি আমাদের নজরে এসেছে। একজন আইনজীবী এমন কাজ করতে পারেন না। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে পর্যবেক্ষণ করছি।’
আদালত ও আইনজীবী সমিতি সূত্র আরও জানায়, আদালতে থাকা মামলার মুল কপি থেকে মামলার এজাহারের কপি সরিয়ে নিয়ে বাড়তি সুবিধা নেওয়ার সুযোগ নেই। এ ছাড়া এজাহার কপি হারিয়ে গেলেও মামলার বিচারের ক্ষেত্রে প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা নেই। কারণ ওই মামলার এজাহারের ফটোকপি রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলির কাছে সংরক্ষিত থাকে। এর বাইরেও অনেক মাধ্যমে মামলার এজাহারের কপি পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
তবে, মুল নথিতে এজাহারের কপি না থাকাটা সমীচীন নয়। এ বিষয়টি অবশ্যই খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে জানায় সূত্র।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে সংবাদ প্রকাশের জের ধরে মিজানুর রহমান রিপন (৪৮) নামের এক স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীকে মারধর ও লাঞ্চিতের ঘটনা ঘটেছে। মিজানুর রহমান রিপন ফিলিপনগর ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামের আজাহার আলীর ছেলে।
গত রবিবার সন্ধার দিকে দৌলতপুর উপজেলা পরিষদ বাজারে এই ঘটনা ঘটে। মিজানুর রহমান রিপন ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক আমর সংবাদ পত্রিকার দৌলতপুর উপজেলা প্রতিনিধি ও অনলাইন নিউজ পোর্টাল ডেইলি নিউজ বাংলার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হিসেবে কাজ করে আসছেন। এঘটনায় ওই দিন রাতে ভূক্তভুগী নিজে বাদী হয়ে দৌলতপুর থানায় একটি লিখিত এজাহার দায়ের করেন।
এযাহার সূত্রে জানাযায়, গত ৮ জুন উপজেলার তারাগুনিয়া থানার মোড় এলাকার তারাগুনিয়া ক্লিনিকে আখি খাতুন (২২) নামের এক প্রশুতি মায়ের মৃত্যুর ঘটনায় তিনি সহ উপজেলার বেশ কয়েকজন গণমাধ্যম কর্মী সংবাদ প্রকাশ করে। তারি জের ধরে উপজেলা বাজারে থাকা সরকার নিষিদ্ধ ক্লিনিক বেবি নার্সিং হোম এর মালিক আহসান হাবিব কালুর ছোট ছেলে খালিদ হাসান আর্জু উপজেলা বাজারে তাকে মারধর করে।
এবিষয়ে মিজানুর রহমান নামের ওই গণমাধ্যম কর্মী বলেন, গতকাল বিকেলে আমি উপজেলা বাজারে বাড়ির দৈনন্দিন বাজার করছিলাম এসময় খালিদ হাসান আর্জু উপজেলা বাজারের বেবী ক্লিনিক মালিকের ছেলে আমার উপর হামলা চালায়। এসময় সে আমাকে বলে আমার হাসপাতালে যে ডাক্তার আসে সেই ডাক্তারের নামে তুরা নিউজ করেছিস বলে আমার উপর হামলা চালিয়ে বেদড়ক মারধর করে। এঘটনার পর আমি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
গণমাধ্যম কর্মীকে মারধরের বিষয়ে, দৌলতপুর উপজেলার একজন প্রবীন গণমাধ্যম কর্মী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, যে ধরনের ঘটনা ঘটেছে এটি কখনই কাম্য নয়। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যাবস্থা নেওয়া উচিৎ।
এঘটনায় দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি নাজমুল হুদা জানান, এ ব্যাপারে অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
অভিযুক্ত খালিদ হাসান আর্জু
মন্তব্য