সড়কের পাশের খুঁটিতে ফেস্টুনটি টানানো। তাতে লেখা- ‘কুরিয়ান ভাষা শিখতে চাইলে আজই চলে আসুন’। পাশেই দেয়ালে সাঁটানো আরেকটি পোস্টার- ‘এখানে ফরাসি ভাষা শিখানো হয়’।
সিলেটের জিন্দাবাজার এলাকায় এই সড়ক পেরোনোর সময় এসব ফেস্টুন-পোস্টার দেখিয়ে মণিপুরী তরুণ সঞ্জয় সিংহ বললেন, ‘দেশে এখন ইংরেজি ছাড়াও অনেক বিদেশি ভাষা শেখানো হয়। কিন্তু আপসোস, দেশের ভেতরের ক্ষুদ্র ভাষাগুলোয় শিক্ষালাভের কোনো সুযোগ নেই।’
সঞ্জয়ের এই আফসোসের সঙ্গে একমত পোষণ করে বাংলাদেশ মণিপুরী সাহিত্য সংসদের সভাপতি কবি এ কে শেরাম বলেন, ‘আমাদের তো সাংবিধানিক স্বীকৃতিই নেই। আমাদের যে নিজস্ব ভাষা আছে, ঋদ্ধ সংস্কৃতি আছে; তা বাংলাদেশের সংবিধান স্বীকার করেনি। সংবিধানমতে, আমরা উপজাতি। একে তো রাষ্ট্রীয়ভাবে ভাষা শিক্ষার কোনো উদ্যোগ নেই, তার ওপর অর্থনৈতিক উপযোগিতা না থাকায় মণিপুরী তরুণ প্রজন্ম এখন এই ভাষাটা শিখতেও আগ্রহী নয়।’
কেবল মণিপুরী নয়, মাতৃভাষায় শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত দেশের বেশির ভাগ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর শিশুরা। যদিও ২০১০ সালের জাতীয় শিক্ষানীতিতে ‘প্রাথমিক শিক্ষাস্তরে আদিবাসীসহ সব ক্ষুদ্র জাতিসত্তার জন্য স্ব স্ব মাতৃভাষা শিক্ষার ব্যবস্থা করার’ কথা বলা হয়েছে। আর ১৯৯৯ সালে ২১ ফেব্রুয়ারিকে ইউনেস্কো আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণাকালে উল্লেখ করা হয়- সব ভাষাকে পৃষ্ঠপোষকতা, সংরক্ষণ ও সমানাধিকার প্রদানই এই দিবসের উদ্দেশ্য।
বাস্তবতা হলো, এখন পর্যন্ত দেশে উপেক্ষিত ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ভাষা। জাতীয় শিক্ষানীতিতে সব জাতিসত্তার মাতৃভাষায় শিক্ষা প্রদানের সুযোগের কথা বলা হলেও এখন পর্যন্ত তার তেমন বাস্তবায়ন নেই। শিক্ষানীতি প্রণয়নের ১২ বছর পেরিয়েছে। এ পর্যন্ত মাত্র পাঁচটি নৃগোষ্ঠীর ভাষায় প্রাক-প্রাথমিকের কিছু বই প্রকাশ করা হয়েছে।
দেশে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী রয়েছে প্রায় ৪৫টি। এদের অনেকের নিজস্ব ভাষার লিপি ও বর্ণমালা রয়েছে। তবে শিক্ষা ও চর্চার সুযোগ না থাকায় এসব ভাষার বেশির ভাগই হারিয়ে যাচ্ছে।
জানা যায়, ২০১৭ সাল থেকে চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, গারো ও সাদরি ভাষায় সরকারি উদ্যোগে প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত কিছু বই প্রকাশ হয়। তবে প্রশিক্ষিত লোকের অভাবে এসব ভাষায় শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। আর বাকি জনগোষ্ঠীর ভাষায় বই-ই এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে প্রকাশ হয়নি।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের হিসাবমতে, সিলেট বিভাগে এ বছর ত্রিপুরা, গারো ও সাদরি ভাষার ৬৭৫ শিক্ষার্থীকে তাদের মাতৃভাষায় বই দেয়া হয়েছে। তবে সিলেটে মণিপুরী আর খাসিয়া জনগোষ্ঠীই আছে প্রায় দুই লাখ। কিন্তু এই দুই গোষ্ঠীর শিশুরা তাদের মাতৃভাষায় বই পায়নি।
সিলেট বিভাগীয় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. মোসলেম উদ্দিন শনিবার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সরকার এ ব্যাপারে খুবই আন্তরিক। উপজেলা পর্যায় থেকে চাহিদা পাঠালে সরকার বই প্রস্তুত করে চাহিদামাফিক বিতরণ করে।
‘মণিপুরী ভাষা ও কৃষ্টির ঐতিহ্যর কথা তো আমিও জানি। এই ভাষায় এখন পর্যন্ত কেন বই তৈরি হলো না তা আমারও বোধগম্য নয়। আমি বছরখানেক হয় এখানে এসেছি। কালই আমি জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের এ ব্যাপারে চাহিদা তৈরি করতে বলব। আগামী বছরই যাতে মণিপুরীসহ প্রধান কয়েকটি গোষ্ঠীর শিশুরা নিজ ভাষায় বই পায় সে চেষ্টা করব।’
পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলার বাইরে সবচেয়ে বেশি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বাস সিলেট অঞ্চলে। এই বিভাগে প্রায় ৩৭টি ক্ষুদ্র জাতি-গোষ্ঠী রয়েছে। এর মধ্যে চা বাগানেই রয়েছে ২৫-২৬টি জনগোষ্ঠী। তবে সিলেটের ৩৭ জনগোষ্ঠীর মধ্যে এখন পর্যন্ত দু-তিনটি ছাড়া আর কারোরই সরকারিভাবে মাতৃভাষায় শিক্ষালাভের সুযোগ মেলেনি। বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা অবশ্য ক্ষুদ্র পরিসরে এ চেষ্টা চালাচ্ছে।
সিলেটের একটি প্রাচীন জনগোষ্ঠী পাত্র সম্প্রদায়। সিলেট দিল্লির সুলতানের আওতায় যাওয়ার আগে সর্বশেষ রাজা গৌড় গোবিন্দও ছিলেন এই সম্প্রদায়ের। তবে সাম্প্রতিক সময়ে একেবারেই কোণঠাসা অবস্থায় আছে এই জনগোষ্ঠীর বাসিন্দারা। দারিদ্র্য, জমি দখলসহ নানা কারণে বেশিরভাগই দেশ ছেড়েছে। তারপরও সিলেট অঞ্চলে টিকে আছে প্রাত্র সম্প্রদায়ের প্রায় চার হাজার মানুষ। তাদের ভাষার নাম ‘লালেনটার’। কিন্তু সরকারি এই উদ্যোগে পাত্র সম্প্রদায়ের শিশুদের মাতৃভাষায় শিক্ষাদানের কোনো উদ্যোগ নেই।
তবে পাত্র সম্প্রদায় কল্যাণ পরিষদ (পাসকপ) নামে একটি সংগঠন নিজ উদ্যোগে তিনটি কমিউনিটি স্কুল স্থাপন করেছে। সেখানে পাত্র সম্প্রদায়ের শিশুদের লালেনটার ভাষা শেখানো হয়।
পাসকপ সভাপতি গৌরাঙ্গ পাত্র নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের নিজেদের বর্ণমালা নেই। তাই বাংলা হরফে আমরা নিজেদের ভাষায় বই তৈরি করেছি। আমাদের ভাষা শেখানোর জন্য সিলেট সদর ও জৈন্তাপুর উপজেলায় তিনটি কমিউনিটি বিদ্যালয়ও স্থাপন করেছি। সেখানে পাত্র শিশুরা লালেনটার ভাষা শিখতে পারে। তবে সরকারি উদ্যোগ ছাড়া এই কাজ দীর্ঘদিন চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।’
সিলেট বিভাগে খাসিয়া সম্প্রদায়ের প্রায় ৩০ হাজার লোকের বাস। বিভাগে ৭৫টি পুঞ্জি রয়েছে খাসিয়াদের। সিলেটের সীমান্ত লাগোয়া ভারতের খাসিয়া অধ্যুষিত রাজ্য মেঘালয়। সেখানে খাসি ভাষার বইপুস্তক রয়েছে। তবে এখানে এখনো বাংলায়ই পড়তে হয় খাসিয়া শিশুদের। ফলে নিজ ভাষা শিখতে পারছে না খাসিয়া শিশুরা।
খাসি সোশ্যাল কাউন্সিলের প্রচার সম্পাদক সাজু মারচিয়াং এ ব্যাপারে বলেন, ‘আমাদের শিশুরা খাসি ভাষায় কথাই বলতে পারে না। কারণ এই ভাষা শিক্ষার তেমন সুযোগ নেই। বিভিন্ন খাসিয়া পুঞ্জিতে স্থানীয় বাসিন্দাদের দ্বারা পরিচালিত কমিউনিটি বিদ্যালয়ে খাসি ভাষা শেখানোর কিছু উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তবে প্রয়োজনের তুলনায় তা যৎসামান্য।’
সিলেটের ক্ষুদ্র জাতি-গোষ্ঠীর মধ্যে সামাজিক অবস্থানে সবচেয়ে এগিয়ে আছে মণিপুরী সম্প্রদায়। সংখ্যার দিক দিয়েও তারা বেশি। মণিপুরী ভাষা ও সংস্কৃতির রয়েছে সুপ্রাচীন ঐতিহ্য। নিজস্ব লিপিও রয়েছে তাদের। পণ্ডিত অতোম্বাপু শর্মা’র মতে, মণিপুরী ভাষার বয়স অন্যূন সাড়ে তিন হাজার বছর।
প্রতিবেশী ভারতের সংবিধানেও মণিপুরী ভাষা অন্যতম ভাষা হিসেবে স্বীকৃত। তবে বাংলাদেশে সে স্বীকৃতি নেই। সরকারি উদ্যোগে মণিপুরী ভাষার বইও ছাপা হয়নি এখন পর্যন্ত। ফলে মাতৃভাষায় শিক্ষা থেকে বঞ্চিত মণিপুরী শিশুরা।
সিলেট সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে মণিপুরী প্রভাত প্রতিম সিংহ সঙ্গীত। নিজেদের ভাষা বলতে পারলেও পড়তে ও লিখতে পারে না সে।
এ প্রসঙ্গে সঙ্গীতের বাবা সংগ্রাম সিংহ বলেন, ‘শেখার কোনো সুযোগ না থাকায় আমার ছেলে নিজের মাতৃভাষাও পড়তে পারে না। এটা যে কত কষ্টের, তা ভুক্তভোগী ছাড়া কেউ বুঝবে না।
‘এনজিওদের উদ্যোগে মণিপুরী ভাষা শেখার কিছু প্রতিষ্ঠান মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে রয়েছে। তবে এগুলো দাতাদের ফান্ডনির্ভর। ফান্ড শেষ হলে স্কুলের কার্যক্রমও বন্ধ হয়ে যায়।’
‘মণিপুরী ল্যাংগুয়েজ সেন্টার’ নামে কমলগঞ্জে মণিপুরী ভাষা শিক্ষার তিনটি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা এথনিক কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (একডো)।
প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক লক্ষ্মীকান্ত সিংহ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘জাতীয় শিক্ষানীতিতে থাকলেও সরকারিভাবে বেশির ভাগ ক্ষৃদ্র নৃগোষ্ঠীর ভাষা শিক্ষার কোনো ব্যবস্থা নেই। ২০১৫ সাল থেকে আমরা তিনটি স্কুল পরিচালনা করছি। আমরা নিজেরাই বই ছাপাই।
‘বইপুস্তক তৈরির জন্য দক্ষ মানুষ পাওয়া যায় না। মণিপুরী ছাড়া এখানকার অন্য অনেক নৃগোষ্ঠীর ভাষার বর্ণমালাও নেই। শিক্ষকেরও অভাব রয়েছে। ফলে এই কার্যক্রম চালানো খুবই দুরূহ।’
সিলেটের চা বাগানগুলোয় শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর প্রায় তিন লাখ মানুষ। তাদের একসঙ্গে চা-জনগোষ্ঠী বলা হলেও তারা সবাই এক জাতি-গোষ্ঠীর নয়। চা বাগানসংশ্লিষ্ট জনপদে ২৪ থেকে ২৫টি ক্ষুদ্র জাতি-গোষ্ঠীর বাস বলে জানা গেছে। তবে তাদের কারোরই ভাষা শিক্ষার ব্যবস্থা নেই। তাদের ভাষার নিজস্ব বর্ণমালাও নেই।
শিক্ষা ও ব্যবহারের সুযোগ না থাকায় চা জনগোষ্ঠীর অনেক ভাষা হারিয়ে যাচ্ছে বলে জানান মিন্টু দেশেয়ারা। এই জনগোষ্ঠীর তরুণ মিন্টু কাজ করেন একটি ইংরেজি দৈনিকে। নিজে দেশওয়ালি জনজাতির বলে জানান তিনি।
মিন্টু বলেন, ‘ভাষা শিক্ষার তো ব্যবস্থা নেই-ই। এমনকি সংরক্ষণেরও উদ্যোগ নেই। ফলে অনেক ভাষাই এখন বিলুপ্তির পথে। উচ্চারণগত ভিন্নতার কারণে চা বাগানের বাসিন্দারা ভালো বাংলা বলতে পারে না। আবার তাদের নিজস্ব ভাষারও স্বীকৃতি নেই। ফলে বাইরের লোকজনের সঙ্গে কথা বলার সময় তারা এক ধরনের হীনম্মন্যতায় ভোগে। এ কারণে এই জনগোষ্ঠী বাগান থেকে বেরিয়ে আসতে পারছে না।’
ভাষার বর্ণমালা না থাকলেও বই প্রকাশে কোনো সমস্যা নেই বলে মনে করেন মণিপুরী ভাষার কবি এ কে শেরাম। তিনি বলেন, ‘দেশের মধ্যে মণিপুরী, রাখাইন, চাকমা, সাঁওতাল- এরকম পাঁচ-ছয়টি নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীর বর্ণমালা আছে। বাকিদের কেউ বাংলা আবার কেউ ইংরেজি বর্ণমালায় নিজেদের ভাষায় লিখে। যেমন খাসিয়ারা ষেখে ইংরেজি বর্ণমালায়। ফলে বাংলা বা ইংরেজি বর্ণমালা ব্যবহার করেও স্ব স্ব ভাষার বই প্রকাশ করা যায়।
‘সব শিশুকে মাতৃভাষায় শিক্ষা প্রদানে সরকারের ঢিলেমি রয়েছে। আমরা দীর্ঘদিন ধরে এই দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু কাজ হচ্ছে না।’
মাতৃভাষায় শিশুদের শিক্ষালাভের গুরুত্ব উল্লেখ করে শিক্ষাবিদ ডক্টর আবুল ফতেহ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শিশুরা জন্মের পর মায়ের কাছ থেকে যে ভাষা শোনে সেই ভাষায়ই তার স্বপ্ন বোনে। কিন্তু এই ভাষাটা যদি সে না শিখতে পারে, তবে তার স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথ বাধাগ্রস্ত হয়। সে অন্ধকারে হাতড়াতে থাকে।
‘কেউ মাতৃভাষাটা ভালো করে শিখলে তার জন্য অন্য ভাষা শেখাটা সহজ হয়ে যায়। তাই সব শিশুর এই সুযোগ নিশ্চিত করা জরুরি।’
আরও পড়ুন:অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের পর নিরাপত্তাহীনতায় পুনরায় বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময় গারো পাহাড় সীমান্তে মানব পাচারকারী চক্রের দুই সদস্যসহ ৭ জনকে আটক করেছে বিজিবি।
সোমবার (২৫ আগস্ট) সকাল পৌণে সাতটার দিকে শেরপুরের ঝিনাইগাতি উপজেলার নকশি সীমান্ত পথে নকশি ক্যাম্পের টহলরত বজিবি সদস্যরা তাদের আটক করে বিকেলে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
বিষয়টি ২৬ আগষ্ট সকালে বিজিবি পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়।
আটককৃতরা হলো মানব পাচারকারী চক্রের সদস্য নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বুরুঙ্গা গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে রমজান আলী (২৪) ও আসমত আলীর ছেলে রাসেল (১৬)। আটক অনুপ্রবেশকারীরা হলো, নড়াইল জেলার কালিয়া থানার বোমবাঘ গ্রামের শামীম শেখ (২৩), আফসানা খানম (২২), রুমা বেগম (৩২), মিলিনা বিশ্বাস (২৮) ও তিন বছর বয়সী শিশু কাশেম বিশ্বাস।
বিজিবি এক প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানায়, মাথাপিছু ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে গত ২৩ আগস্ট রাতের আধারে নালিতাবাড়ীর সীমান্ত এলাকা দিয়ে অবৈধ পথে নারী এবং শিশুসহ ৫ বাংলাদেশীকে ভারতে পাঠায় মানব পাচারকারী রমজান আলী ও রাসেল। কিন্তু ভারতীয় পুলিশের তৎপরতায় নিরাপত্তাহীনতায় পড়ে এ পাঁচ বাংলাদেশী। এ কারণে ২৫ আগষ্ট সোমবার সকাল পৌণে সাতটার দিকে ঝিনাইগাতির নকশি সীমান্তের কালিমন্দির এলাকা দিয়ে পুনরায় তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এসময় টহলরত বিজিবি সদস্যরা টের পেয়ে সবাইকে আটক করে। পরে মানব পাচারে জড়িত দুইজনের বিরুদ্ধে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে এবং অন্য ৫ জনের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের অপরাধে নালিতাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করা হয় এবং সবাইকে নালিতাবাড়ী থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ময়মনসিংহ বিজিবি’র ৩৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মেহেদী হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিজিবির পক্ষ থেকে এ ধরনের অভিযান চলমান থাকবে।
ঝালকাঠিতে গ্রাহকদের চাহিদা বিবেচনায় এনে ব্রান্ডশপ লোটো ও লি কুপার প্রতিষ্ঠানটি তাদের ১৩২তম ফ্লাগশিপ আউটলেট উদ্বোধন করেছে।
এক্সপ্রেস লেদার প্রোডাক্ট লিঃ এর ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর কাজী জাভেদ ইসলাম সহ কোম্পানির অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের সাথে নিয়ে ফিতা কেটে আউটলেটটি উদ্বোধন করেন ঝালকাঠির পুলিশ সুপার উজ্জ্বল কুমার রায়।
পৌর শহরের সাধনার মোড়ে মঙ্গলবার ২৬ আগষ্ট সকাল ১০টায় লোটো ও লি কুপারের ফ্ল্যাগশিপ আউটলেটদ্বয়ের শুভ উদ্বোধন আনুষ্ঠানে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন পর্যায়ের গ্রাহক ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
ঝালকাঠিতে কোম্পানীর এ যাত্রার প্রথম দিনে স্থানীয় ফ্যাশন সচেতন তরুণ তরুণীরা তাদের পছন্দের পন্য কালেকশন বেছে নিতে ভীর জমায়।
কোম্পানীর পক্ষ থেকে জানানো হয় প্রথম তিনদিনের প্রতিদিন প্রথম ৩০ জন পাবেন ৫০% ছাড়, ২য় ৩০ জন পাবেন ৪০% ছাড়, ৩য় ৩০ জন পাবেন ৩০% ছাড়, ৪র্থ ৩০ জন পাবেন ২০% ছাড় এবং তৎপরবর্তী সকল কাস্টমার পাবেন ১০% ছাড়। এই বিশেষ ছাড় ২৬শে আগষ্ট থেকে শুরু হয়ে ২৮ তারিখ পর্যন্ত চলমান থাকবে
নওগাঁয় সপ্তম শ্রেণীর এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে আটক রেখে ধর্ষণ মামলায় আ: সালাম (৩৮) নামে এক আসামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
রোববার (২৪ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে নওগাঁর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মেহেদী হাসান তালুকদার এ রায় দেন।
যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আ: সালাম সদর উপজেলার বর্ষাইল মধ্যপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ভিকটিম ওই শিক্ষার্থীর পরিবার পত্নীতলা উপজেলায় ভাড়া থাকতেন। ভাঙ্গারী ব্যবসার সুবাদে আসামী আ: সালামও পাশাপাশি একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। ভিকটিম মাদ্রাসায় যাওয়া আসার পথে আ: সালাম বিভিন্ন সময় কু-প্রস্তাব দিতো এবং রাস্তাঘাটে বিরক্ত করতো। বিষয়টি জানাজানি হলে আসামী আ: সালাম ওই ভিকটিমের পরিবারকে গালিগালাজ ও ভয়ভীতি দেখাতো। এরই একপর্যায়ে ২০২২ সালের ১১ জুলাই বিকেল তিনটার দিকে আসামী আ: সালাম একটি বাজার এলাকা থেকে ওই শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে নওগাঁ সদর উপজেলার ভবানীপুর দক্ষিন পাড়া গ্রামের মোজাফ্ফর রহমানের ভাড়া বাড়িতে আটক রেখে একাধিকবার ধর্ষণ করে। বিষয়টি বুঝতে পেরে ওই শিক্ষার্থীর বাবা পত্নীতলা থানায় অভিযোগ করলে র্যাব ওই বাড়ি থেকে আসামিকে গ্রেফতার ও মেয়েকে উদ্ধার করে। পরে তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে ঘটনার সত্যতা থাকায় আসামী আ: সালামসহ চার জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। আদালত ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহন শেষে আজ আ: সালামকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়। বাকি আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় তাদেরকে খালাস দেওয়া হয়।
মামলার এ রায়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রেজাউল করিম সন্তোষ প্রকাশ করেন। আসামী পক্ষের আইনজীবী ফাহমিদা কুলসুম উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানান।
জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার রায়কালী ইউনিয়নের বালুকাপাড়া গ্রামে রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়ে পুনরায় তাকে বিয়ে করায় এক দম্পতিকে দেড় বছর ধরে 'সমাজচ্যুত' করে রাখা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এ বিষয়ে নালিশ দেওয়ার জের ধরে পেটানো হয় দিনমজুর আব্দুল জলিল প্রামানিককে। প্রতিপক্ষের লোকজনের মারধরে এতে তার বাম হাতের হাঁড় ভেঙে গেছে।
এঘটনায় তিনি একটি থানায় অভিযোগ করেছেন। গত মঙ্গলবার রাতে সেটি মামলাটি হিসেবে রের্কড করা হয়। তবে মামলার এজাহারে সমাজচ্যুত করে রাখার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি।
সরেজমিনে বালুকাপাড়া গ্রামে গিয়ে আব্দুল জলিলকে ১৮ মাস ধরে সমাজচ্যুত করে রাখার তথ্য জানা গেছে। আব্দুল জলিলের সমাজচ্যুত করার ঘটনাটি স্থানীয় রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রশীদ মন্ডলও অবগত আছেন। তিনি দুই পক্ষকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকেও সমাজচ্যুত করে রাখার বিষয়টি সমাধান করতে পারেনি।
গ্রামবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পারিবারিক কলহের কারণে আব্দুল জলিল প্রামানিক রাগের মাথায় তার স্ত্রীকে তালাক দেন। এঘটনার ২৯ দিন পর তিনি আবারও স্ত্রীকে বিয়ে করেন। এ ঘটনায় গ্রাম্য মাতব্বরেরা ক্ষুব্ধ হয়ে আব্দুল জলিল প্রামানিকের পরিবারকে সমাজচ্যুত করে রাখেন। সেই সময় জলিল প্রামানিক বিষয়টি আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)কে জানান। ইউএনও রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মণ্ডলকে বিষয়টি সমাধানের দায়িত্ব দেন। ইউপি চেয়ারম্যান উভয়পক্ষকে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে বৈঠকে বসেছিলেন। তবে কার্যত কোন কোনো সমাধান করতে পারেননি। এতে গ্রাম্য মাতব্বরেরা আব্দুল জলিলের ওপর আরও ক্ষুব্ধ হন। সমাজচ্যুত করে রাখা আব্দুল জলিল গত ১৫ আগস্ট রাত আটটার দিকে গ্রামের মসজিদের দিকে রওনা হন। এসময় মাতব্বরেরা তাকে দুই দফায় প্রচন্ড মারধর করেন। এতে তার বাম হাতের হাঁড় ভেঙে যায়। তিনি চিকিৎসা নিয়ে থানায় আট জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
বালুকাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আজিজুল ইসলাম বলেন, দেড় বছর আগে আব্দুল জলিল তার স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। কয়েক দিন পর আবার সংসার শুরু করেন। এনিয়ে গ্রামের মাতব্বরেরা আব্দুল জলিল প্রামানিককে সমাজচ্যুত করেন। এনিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় বৃদ্ধা লুৎফন নেছা বলেন, আমি কাজ করতে পারিনি। আব্দুল জলিলের বউ আমার বাড়িতে এসে জবাই করা মুরগির তরকারি রান্না করে দিয়েছিল। আমি জলিলের বাড়িতে গিয়ে এক বাটি মুরগির মাংসের তরকারি দিয়ে এসেছি। এতে আমাকেও সমাজচ্যুত করার হুমকি দিয়েছিল।
বালুকাপাড়া গ্রামের মোড়ের দোকানি হাফিজার রহমান বলেন, বউকে তালাক দেওয়ার ঘটনায় আব্দুল জলিল প্রামানিককে গ্রামের মাতব্বরেরা সমাজচ্যুত করেছেন। আব্দুল জলিল গ্রামের সামাজিক কোন কর্মকান্ডে অংশ নিতে দেয় না।
আব্দুল জলিল প্রামানিক বলেন, আমি রাগের মাথায় স্ত্রী তালাক দিয়েছিলাম। ২৯ দিন পর আবার বিয়ে পড়ে নিয়েছি। একারণে গ্রামের মাতব্বর রকি খান, মিল্টন খাঁ, আবু সুফিয়ানসহ আরও ১০-১২ জন আমাকে সমাজচ্যুত করেছেন। রাগের মাথায় স্ত্রীক। তালাক দিলে পুনরায় বিয়ে করা যাবে ঢাকার একজন মুফতির মতামত নিয়ে আসার পরও তারা মানেনি। তারা বলছে হিল্লা বিয়ে ছাড়া আমার বিয়ে বৈধ হবে না। তারা আমাকে দীর্ঘ দেড় বছর ধরে গ্রামের মসজিদে নামাজ আদায়ে করতে ও জানাজায় শরিক হতে বা দেননি। মিলাদ মাহফিল দাওয়াত দেওয়ার মাতব্বরদের চাপে পর ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এমনকি গ্রামের কারও জমিতে দিনমজুরি কাজও করতে পারব না বলে লোকজন জানিয়ে দেন। একারণে কেউ আমাকে কাজে নেয় না। সমাজচ্যুত করার জের ধরে মসজিদে যাওয়ার সময় মাতব্বরদের একাংশের লোকজন আমাকে মেরে হাত ভেঙে দিয়েছেন।
গ্রামের মাতব্বদের একজন মো. মিল্টন খাঁ। তিনি আব্দুল জলিলের দায়ের করা মামলার দুই নম্বর আসামি। তাকে তার বাড়িতে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আব্দুল জলিল সমাজ বিরোধী কাজ করেছেন। একারণে গ্রামের লোকজন তাকে সমাজচ্যুত করেছেন। আব্দুল জলিল সমাজ বিরোধী কি কাজ করেছেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আব্দুল জলিল তার স্ত্রীকে তালাক দিয়ে আবার স্ত্রীকে নিয়েছেন। এটা সমাজ বিরোধী কাজ।
আক্কেলপুর রায়কালী ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মন্ডল বলেন, আব্দুল জলিল মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। তিনি রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। এঘটনায় গ্রামের মাতব্বরেরা আব্দুল জলিলকে সমাজচ্যুত করেন। আব্দুল জলিল ইউএনও স্যারের কাছে অভিযোগ দিয়েছিলেন। ইউএনও স্যার আমাকে ঘটনাটি সমাধানের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। উভয়পক্ষকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে বৈঠক করেছি। আব্দুল জলিল যেন সামাজিকভাবে মিশতে পারে সেটি বলেছি। সমাজচ্যুতের ঘটনার জের ধরে আব্দুল জলিলকে মারধর করা হয়েছে। এতে তার বাম হাত ভেঙেছে বলে জেনেছি।
আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, আব্দুল জলিল প্রামানিক থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছিলেন। অভিযোগটি তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় সেটি মামলা হিসেবে রের্কড করা হয়েছে। আসামি আট জনের মধ্যে ইতিমধ্যে আদালত থেকে পাঁচজন আসামি জামিন নিয়েছেন, অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে ২৭,২৪৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে। বিগত ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের একই মাসে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ছিল ২১,৯১৬ কোটি টাকা। জুলাই-২০২৫ মাসে বিগত জুলাই-২০২৪ মাসের তুলনায় ৫,৩৩৩ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। জুলাই ২০২৫ মাসে রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২৪.৩৩%।
জুলাই’২৫ মাসে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক থেকে। এ খাত থেকে আদায় হয়েছে ১১,৩৫২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায়ের পরিমান ছিল ৮,৫৭১ কোটি টাকা। জুলাই ২০২৫ মাসে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ৩২.৪৫%।
আয়কর ও ভ্রমন কর খাতে জুলাই’২৫ মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৬,২৯৫ কোটি টাকা যা জুলাই’২০২৪ মাসের একই খাতে আদায়কৃত ৫,১৭৫ কোটি টাকার চাইতে ১,১২০ কোটি টাকা বেশি। আয়কর ও ভ্রমন করের ক্ষেত্রে জুলাই ২০২৫ মাসের আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২১.৬৫%।
২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে আমদানি ও রপ্তানি খাতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৯,৬০২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায় ছিল ৮,১৭০ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধির হার ১৭.৫২%।
রাজস্ব আদায়ের এ ধারা ভবিষ্যতে অব্যাহত রাখার জন্য আয়কর, মূল্য সংযোজন কর এবং কাস্টমস শুল্ক-কর আদায়ে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারিদের প্রচেষ্টা আরো জোরদার করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নানাবিধ কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
সম্মানিত করদাতাগণ আইনের যথাযথ পরিপালন নিশ্চিত করে যথাযথ পরিমান কর পরিশোধের মাধ্যমে দেশ গড়ার কাজের অন্যতম অংশীদার হবেন মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশাবাদী।
কুমিল্লা নাঙ্গলকোটে ইউপি সদস্য আলাউদ্দিনকে বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামিকে ঢাকার হাতিরঝিল রেল মগবাজার রেলগেট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। শুক্রবার দিনগত রাতে অভিযানটি শেষ করে র্যাব।
গ্রেফতারকৃত আসামী শেখ ফরিদ (৪৫) নাঙ্গলকোট উপজেলার বক্সগঞ্জ আলীয়ারা গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে।
শনিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে কুমিল্লা অশোকতলা এলাকায় র্যাব অফিসে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন
র্যাব ১১ এর কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাদমান ইবনে আলম।
মেজর সাদমান জানান, নাঙ্গলকোটের আলিয়ারা গ্রামে দুই পরিবারের মধ্যে বংশপরম্পরায় একটি বিরোধ চলে আসছিল। গেল গেল ২৫ জুলাই গরুর ঘাস খাওয়া কে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
সেদিন দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৫ জন গুলিবিদ্ধসহ ২৫ জন আহত হয়।
এ ঘটনার রেশ ধরে গেলো ৩ আগস্ট দুপুরে আলিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা আলাউদ্দিন তার চাচাতো ভাইয়ের জানাজার নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা তাকে একটি সিএনজিতে তুলে নিয়ে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে।
পরে এ ঘটনায় ৫ আগস্ট নিহতের ছেলে বাদী হয়ে নাঙ্গলকোট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বিপদসীমা অতিক্রম করায় নির্ধারিত সময়ের আগেই খোলা হয়েছে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সব জলকপাট। সোমবার (৫ আগস্ট) রাত ১২টা ২ মিনিটে হঠাৎ পানি বাড়তে থাকায় জরুরি ভিত্তিতে কেন্দ্রের ১৬টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়।
কর্ণফুলি পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানান, রাতে লেকের পানির উচ্চতা ১০৮.০৫ ফুট ছুঁয়ে গেলে বিপদসীমা অতিক্রম করে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলি নদীতে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, “প্রথমে সোমবার (৪ আগস্ট) বিকেল ৩টায় পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা পরের দিন মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জলকপাট খোলার ঘোষণা দিয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ অতিরিক্ত পানি প্রবাহের কারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই সোমবার রাতেই জলকপাট খুলে দিতে হয়। তবে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
তিনি আরও জানান, কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট বর্তমানে সচল রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে আরও ৩২ হাজার কিউসেক পানি লেক থেকে কর্ণফুলিতে গিয়ে পড়ছে। সবমিলিয়ে পানি নিঃসরণের হার এখন প্রতি সেকেন্ডে ৪১ হাজার কিউসেক।
ভাটি এলাকার জনসাধারণের উদ্দেশে তিনি বলেন, “পানি প্রবাহ বাড়লেও আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে, এবং প্রয়োজনে আমরা আগেভাগেই ব্যবস্থা নেব।”
স্থানীয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও এ বিষয়ে আগেই অবহিত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন কর্তৃপক্ষ।
মন্তব্য