নারায়ণগঞ্জে আলোচিত কিশোর তানভীর মোহাম্মদ ত্বকী হত্যার তদন্ত চলাকালেই এই হত্যায় আওয়ামী লীগ নেতা শামীম ওসমানের ভাতিজা আজমেরী ওসমানের সংশ্লিষ্টতার কথা জানায় র্যাব। তার কথিত টর্চার সেলে হানা দিয়ে রক্তমাখা শার্ট উদ্ধারের ঘটনাটি টেলিভিশনে লাইভ সম্প্রচারও হয়।
তখন আত্মগোপনে আজমেরী। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঘোষণা দেয়, তাকে ধরে এনে বিচারের মুখোমুখি করা হবে।
সেই হত্যার পর প্রায় ৯ বছর ধরে প্রকাশ্যে নেই আজমেরী। কিন্তু দাপট কি কমেছে?
সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জের একটি স্থানীয় দৈনিকে ত্বকী হত্যা মামলার অভিযোগপত্রে আজমেরীর সংশ্লিষ্টতা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের পর সেই পত্রিকা অফিসে একদল তরুণের হামলার পর শামীম ওসমানের ভাতিজার বিষয়টি আবার আলোচনায় এসেছে।
এই হামলা চালানোর পর নারায়ণগঞ্জজুড়ে আবার আলোচনা হচ্ছে, আজমেরী কি আবার তার ত্রাসের পুরোনো স্মৃতি ফিরিয়ে আনতে চাইছেন?
যদি তার বিরুদ্ধে তথ্য-প্রমাণ পাওয়াই যায়, তাহলে আজমেরীকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কেন গ্রেপ্তার করছে না- এমন প্রশ্ন আবার বড় হচ্ছে।
রাজধানী লাগোয়া বন্দরনগরে আজমেরীর পরিবারের প্রভাব কমলেও এখনও সেটি যথেষ্ট গুরুত্ব বহন করে। তবে সদ্যসমাপ্ত সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আগে-পরে ক্ষমতাসীন দল ও তার সহযোগী সংগঠনগুলো থেকে শামীম ওসমান অনুসারী নেতাদের সরিয়ে দিয়ে আওয়ামী লীগ এই বার্তা দিয়েছে যে, ওসমান পরিবারের একাধিপত্য তারাও আর রাখতে চাইছে না। এর মধ্যে ‘সময়ের নারায়ণগঞ্জ পত্রিকা’য় এই হামলা হয়।
পত্রিকাটির সাংবাদিকরা অভিযোগ করছেন, হামলাকারীরা তাদের আজমেরীকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জন্য শাসাচ্ছিলেন। এ কারণেই এই হামলায় শামীম ওসমানের ভাতিজার সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ জোরালো হয়েছে।
নাগরিক কমিটির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ধীমান সাহা জুয়েল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রশাসনের দুর্বলতার কারণে তাদের নাকের ডগায় বসে আজমেরী ওসমান বাহিনী গণমাধ্যমের ওপর হামলা করার সাহস পায়। এর বাইরেও তারা নানা অপরাধ সংঘটিত করছে। আমরা প্রশাসনকে বলতে চাই, আপনাদের মেরুদণ্ড সোজা রেখে এ শহরের সন্ত্রাসীদের ধরে বিচারের আওতায় আনুন।’
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি এ বি সিদ্দিক বলেন, ‘তারা এতটাই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে পত্রিকা অফিসে হামলা করে সংবাদপত্রের মুখ বন্ধ করতে চায়। ঘটনার কয়েক দিন পার হয়ে গেল, কিন্তু হামলার নেতৃত্বকারীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে। কারণ আজমেরী বাহিনীকে থামানো না গেলে সামনে আরও বড় ঘটনা ঘটতে পারে।’
ত্বকীর বাবা রফিউর রাব্বি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ শহরে যারাই ত্বকী হত্যার বিচার চেয়েছে, তাদের ওপর হামলা করা হয়েছে। তারা এতটাই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে, যাদের বিরুদ্ধে লিখেছে, তাদের ওপর হামলা করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘ত্বকী হত্যার মামলার গ্রেপ্তার আসামি সুলতান শওকত ভ্রমরের আদালতে দেয়া ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে যেহেতু আজমেরী ওসমানের নাম এসেছে, সেহেতু তাকে ও সহযোগীদেরও আইনের আওতায় এনে বিচার শুরু করার দাবি জানাচ্ছি।’
পত্রিকা অফিসে হামলার ঘটনায় যাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, তারা সবাই আজমেরীর অনুসারী। তবে মামলায় আজমেরীকে আসামি করা হয়নি।
সদর মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক আজিজুল হক জানান, পত্রিকা অফিসে হামলা, ভাংচুর, সংবাদকর্মীদের প্রাণনাশের হুমকি ও দেড় লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতির অভিযোগে করা মামলাটি গত সোমবার ডিবিতে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ কারণে মামলার তদন্ত ও গ্রেপ্তারের বিষয়টি দেখবে জেলা গোয়েদা (ডিবি) পুলিশ।
নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিবি শাখা) জাহিদ পারভেজ নিউজবাংলাকে জানান, ‘হামলার ঘটনায় এ পর্যন্ত ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যারা পলাতক রয়েছে তাদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’
ত্বকী হত্যার ঘটনায় র্যাবের খসড়া অভিযোগপত্র নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় গত ১২ ফেব্রুয়ারি দুপুরে চাষাঢ়ায় প্রেসিডেন্ট রোডে সিরাজ ম্যানশনের চারতলায় নারায়ণগঞ্জে স্থানীয় দৈনিক সময়ের নারায়ণগঞ্জ পত্রিকা অফিসে হামলা চালায় একদল যুবক।
অর্ধশতাধিক মোটরসাইকেলে পত্রিকা অফিসে গিয়ে সাংবাদিকদের হত্যার হুমকি দিয়ে সিসি ক্যামেরা ভাংচুর করে ডিভাইস নিয়ে যায় তারা। এ ঘটনায় ওই পত্রিকার সম্পাদক জাবেদ হোসেন জুয়েল সদর থানায় ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছেন।
সময়ের নারায়ণগঞ্জের প্রকাশক ও সম্পাদক জাবেদ আহমেদ জুয়েল বলেন, ‘সম্প্রতি ত্বকী হত্যা নিয়ে সর্বত্র আলোচনা হচ্ছে। ১১ ফেব্রুয়ারি র্যাবের সেই প্রকাশিত খসড়া চার্জশিট নিয়ে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়। কপিটি গণমাধ্যম কর্মীদের সরবরাহ করেন ত্বকীর বাবা রফিউর রাব্বি। সময় নারায়ণগঞ্জ পত্রিকায় সেটি হুবহু তুলে ধরা হয়। এ কারণে পত্রিকা অফিসে হামলা চালিয়েছে আজমেরী ওসমানের অনুসারী।
আজমেরী প্রকাশ্যেই
ত্বকী হত্যায় আজমেরীর সম্পৃক্ততার কথা র্যাব জানিয়েছিল প্রকাশ্যেই। সে সময় তিনি কয়েক বছর আত্মগোপনে থাকলেও সম্প্রতি আবার প্রকাশ্যে এসেছেন।
২০১৮ সালের ২ ডিসেম্বর হারুন অর রশীদ নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার হিসেবে যোগ দেয়ার পর আজমেরী আবার এক বছরের জন্য উধাও হয়ে যান। ২০১৯ সালের ৩ নভেম্বর হারুন বদলি হওয়ার পর তিনি আবার ফিরে আসেন।
২০১৯ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর শহরের আমলাপাড়া এলাকার বাচ্চু নামে এক ব্যক্তিকে মারধর ও চাঁদাবাজির অভিযোগে আজমেরীর বিরুদ্ধে সদর মডেল থানায় মামলা হয়।
তখন পুলিশ আজমেরীর বাসায় অভিযান চালিয়ে তার দুই সহযোগীকে গ্রেপ্তার করে। কিন্তু তাকে না পাওয়ার কথা জানায়।
আজমেরী তার বাড়ি আল্লামা ইকবাল রোড (কলেজ রোড) থেকে নিজে গাড়ি চালিয়ে বের হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়কে ঘোরেন। সঙ্গে থাকে বেশ কিছু মোটরসাইকেল। গাড়িটি সড়কে চলার সময় বিকট শব্দে গান বাজানো হয়। তখন দূর থেকেই স্থানীয়রা বুঝতে পারে, আজমেরীর বহর যাচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজমেরী কোনো পাড়া-মহল্লায় গেলে আগেই সেখানে অবস্থান করেন তার সহযোগীরা। তিনি গাড়ি থেকে নামার পর অন্যরা মাথা নিচু রাখেন। এটা অনেকটা সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থার মতো।
ব্যবসায়ীদের তথ্য বলছে, নগরীর গার্মেন্টসের ঝুট সেক্টরে আজমেরী ঘনিষ্ঠদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
আজমেরীর ঘনিষ্ঠদের মধ্যে বর্তমানে নাছির শহরে বেশ পরিচিত। তিনিই পত্রিকা অফিসে হামলা মামলার প্রধান আসামি।
আগে নাছিরের অবস্থানে ছিলেন তরিকুল ইসলাম লিমন নামে একজন। গত বছর একটি মামলায় গ্রেপ্তারের পর জামিনে বের হয়, তবে তাকে আগের মতো দেখা যায় না।
ত্বকী হত্যায় সম্পৃক্ততার তথ্য
২০১৩ সালের ৬ মার্চ বিকেলে তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী শহরের শায়েস্তাখান সড়কের বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয়। দুদিন পর শহরের চারারগোপ এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে তার ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় মামলার পর গত আট বছরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে। তারা হলেন রিফাত বিন ওসমান, সুলতান শওকত ভ্রমর, ইউসুফ হোসেন লিটন, সালেহ রহমান সীমান্ত ও তায়েবউদ্দিন আহমেদ জ্যাকি। এরা সবাই আজমেরী ওসমানের ঘনিষ্ঠজন ও অনুসারী ছিলেন।
ওই বছরের ১২ নভেম্বর আজমেরী ওসমানের সহযোগী সুলতান শওকত ভ্রমর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেন, আজমেরী ওসমানের নেতৃত্বে ত্বকীকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়।
হত্যার এক বছরের মাথায় ২০১৪ সালের ৫ মার্চ সংবাদ সম্মেলন করে মামলার তদন্ত সংস্থা র্যাবের তৎকালীন অতিরিক্ত মহাপরিচালক জিয়াউল আহসান জানান, আজমেরী ওসমানসহ ১১ জন ত্বকী হত্যায় অংশ নেন।
একটি খসড়া অভিযোগপত্র তৈরি করার কথাও জানান সেই র্যাব কর্মকর্তা। তবে গত আট বছরে আদালতে প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি। গ্রেপ্তারও হয়নি আজমেরী।
যদি আজমেরীর সম্পৃক্ততা থাকবে, তাহলে কেন তাকে গ্রেপ্তার হয়নি এমন প্রশ্নে র্যাব-১১-এর অধিনায়ক তানভীর মোহাম্মদ পাশার কাছ থেকে জবাব পাওয়া যায়নি।
তিনি বলেন, ‘চার্জশিট দেয়ার জন্য তদন্ত কর্মকর্তা কাজ করছেন। মামলাটি চাঞ্চল্যকর হওয়ায় আমরা বিভিন্ন বিষয় খতিয়ে তদন্ত করছি, যাতে ঘটনার আগের ও পরের কারণগুলো প্রতিবেদনে উল্লেখ করা যায়। ঘটনার সঙ্গে যার যার সম্পৃক্ততা পাওয়া যাবে, তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।
কবে অভিযোগপত্র চূড়ান্ত করা হবে- এ বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তা মশিউর রহমানের কাছে প্রশ্ন রাখলে তিনি কোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে রাজি হননি।
আজমেরীকে আইনের আওতায় না আনায় তিনি ও তার সহযোগীরা এখন আবার পেশিশক্তি দেখাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন নারায়ণগঞ্জ মানবাধিকার কমিশনের সভাপতি মাহাবুবুর রহমান মাসুম। তিনি বলেন, ‘নগরীর পাড়া-মহল্লার রংবাজ, মাদক ও চাঁদাবাজি মামলার আসামিসহ যাদের নিজের রাজনৈতিক পরিচয় নেই, তারা আজমেরীর সঙ্গে যোগ দেয়। তারা নানাভাবে ভয় দেখায় স্থানীয়দের। ব্যবসায়ীদের হুমকি দেয়া হয়।’
আরও পড়ুন:অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের পর নিরাপত্তাহীনতায় পুনরায় বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময় গারো পাহাড় সীমান্তে মানব পাচারকারী চক্রের দুই সদস্যসহ ৭ জনকে আটক করেছে বিজিবি।
সোমবার (২৫ আগস্ট) সকাল পৌণে সাতটার দিকে শেরপুরের ঝিনাইগাতি উপজেলার নকশি সীমান্ত পথে নকশি ক্যাম্পের টহলরত বজিবি সদস্যরা তাদের আটক করে বিকেলে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
বিষয়টি ২৬ আগষ্ট সকালে বিজিবি পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়।
আটককৃতরা হলো মানব পাচারকারী চক্রের সদস্য নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বুরুঙ্গা গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে রমজান আলী (২৪) ও আসমত আলীর ছেলে রাসেল (১৬)। আটক অনুপ্রবেশকারীরা হলো, নড়াইল জেলার কালিয়া থানার বোমবাঘ গ্রামের শামীম শেখ (২৩), আফসানা খানম (২২), রুমা বেগম (৩২), মিলিনা বিশ্বাস (২৮) ও তিন বছর বয়সী শিশু কাশেম বিশ্বাস।
বিজিবি এক প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানায়, মাথাপিছু ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে গত ২৩ আগস্ট রাতের আধারে নালিতাবাড়ীর সীমান্ত এলাকা দিয়ে অবৈধ পথে নারী এবং শিশুসহ ৫ বাংলাদেশীকে ভারতে পাঠায় মানব পাচারকারী রমজান আলী ও রাসেল। কিন্তু ভারতীয় পুলিশের তৎপরতায় নিরাপত্তাহীনতায় পড়ে এ পাঁচ বাংলাদেশী। এ কারণে ২৫ আগষ্ট সোমবার সকাল পৌণে সাতটার দিকে ঝিনাইগাতির নকশি সীমান্তের কালিমন্দির এলাকা দিয়ে পুনরায় তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এসময় টহলরত বিজিবি সদস্যরা টের পেয়ে সবাইকে আটক করে। পরে মানব পাচারে জড়িত দুইজনের বিরুদ্ধে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে এবং অন্য ৫ জনের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের অপরাধে নালিতাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করা হয় এবং সবাইকে নালিতাবাড়ী থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ময়মনসিংহ বিজিবি’র ৩৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মেহেদী হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিজিবির পক্ষ থেকে এ ধরনের অভিযান চলমান থাকবে।
ঝালকাঠিতে গ্রাহকদের চাহিদা বিবেচনায় এনে ব্রান্ডশপ লোটো ও লি কুপার প্রতিষ্ঠানটি তাদের ১৩২তম ফ্লাগশিপ আউটলেট উদ্বোধন করেছে।
এক্সপ্রেস লেদার প্রোডাক্ট লিঃ এর ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর কাজী জাভেদ ইসলাম সহ কোম্পানির অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের সাথে নিয়ে ফিতা কেটে আউটলেটটি উদ্বোধন করেন ঝালকাঠির পুলিশ সুপার উজ্জ্বল কুমার রায়।
পৌর শহরের সাধনার মোড়ে মঙ্গলবার ২৬ আগষ্ট সকাল ১০টায় লোটো ও লি কুপারের ফ্ল্যাগশিপ আউটলেটদ্বয়ের শুভ উদ্বোধন আনুষ্ঠানে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন পর্যায়ের গ্রাহক ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
ঝালকাঠিতে কোম্পানীর এ যাত্রার প্রথম দিনে স্থানীয় ফ্যাশন সচেতন তরুণ তরুণীরা তাদের পছন্দের পন্য কালেকশন বেছে নিতে ভীর জমায়।
কোম্পানীর পক্ষ থেকে জানানো হয় প্রথম তিনদিনের প্রতিদিন প্রথম ৩০ জন পাবেন ৫০% ছাড়, ২য় ৩০ জন পাবেন ৪০% ছাড়, ৩য় ৩০ জন পাবেন ৩০% ছাড়, ৪র্থ ৩০ জন পাবেন ২০% ছাড় এবং তৎপরবর্তী সকল কাস্টমার পাবেন ১০% ছাড়। এই বিশেষ ছাড় ২৬শে আগষ্ট থেকে শুরু হয়ে ২৮ তারিখ পর্যন্ত চলমান থাকবে
নওগাঁয় সপ্তম শ্রেণীর এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে আটক রেখে ধর্ষণ মামলায় আ: সালাম (৩৮) নামে এক আসামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
রোববার (২৪ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে নওগাঁর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মেহেদী হাসান তালুকদার এ রায় দেন।
যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আ: সালাম সদর উপজেলার বর্ষাইল মধ্যপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ভিকটিম ওই শিক্ষার্থীর পরিবার পত্নীতলা উপজেলায় ভাড়া থাকতেন। ভাঙ্গারী ব্যবসার সুবাদে আসামী আ: সালামও পাশাপাশি একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। ভিকটিম মাদ্রাসায় যাওয়া আসার পথে আ: সালাম বিভিন্ন সময় কু-প্রস্তাব দিতো এবং রাস্তাঘাটে বিরক্ত করতো। বিষয়টি জানাজানি হলে আসামী আ: সালাম ওই ভিকটিমের পরিবারকে গালিগালাজ ও ভয়ভীতি দেখাতো। এরই একপর্যায়ে ২০২২ সালের ১১ জুলাই বিকেল তিনটার দিকে আসামী আ: সালাম একটি বাজার এলাকা থেকে ওই শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে নওগাঁ সদর উপজেলার ভবানীপুর দক্ষিন পাড়া গ্রামের মোজাফ্ফর রহমানের ভাড়া বাড়িতে আটক রেখে একাধিকবার ধর্ষণ করে। বিষয়টি বুঝতে পেরে ওই শিক্ষার্থীর বাবা পত্নীতলা থানায় অভিযোগ করলে র্যাব ওই বাড়ি থেকে আসামিকে গ্রেফতার ও মেয়েকে উদ্ধার করে। পরে তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে ঘটনার সত্যতা থাকায় আসামী আ: সালামসহ চার জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। আদালত ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহন শেষে আজ আ: সালামকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়। বাকি আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় তাদেরকে খালাস দেওয়া হয়।
মামলার এ রায়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রেজাউল করিম সন্তোষ প্রকাশ করেন। আসামী পক্ষের আইনজীবী ফাহমিদা কুলসুম উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানান।
জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার রায়কালী ইউনিয়নের বালুকাপাড়া গ্রামে রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়ে পুনরায় তাকে বিয়ে করায় এক দম্পতিকে দেড় বছর ধরে 'সমাজচ্যুত' করে রাখা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এ বিষয়ে নালিশ দেওয়ার জের ধরে পেটানো হয় দিনমজুর আব্দুল জলিল প্রামানিককে। প্রতিপক্ষের লোকজনের মারধরে এতে তার বাম হাতের হাঁড় ভেঙে গেছে।
এঘটনায় তিনি একটি থানায় অভিযোগ করেছেন। গত মঙ্গলবার রাতে সেটি মামলাটি হিসেবে রের্কড করা হয়। তবে মামলার এজাহারে সমাজচ্যুত করে রাখার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি।
সরেজমিনে বালুকাপাড়া গ্রামে গিয়ে আব্দুল জলিলকে ১৮ মাস ধরে সমাজচ্যুত করে রাখার তথ্য জানা গেছে। আব্দুল জলিলের সমাজচ্যুত করার ঘটনাটি স্থানীয় রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রশীদ মন্ডলও অবগত আছেন। তিনি দুই পক্ষকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকেও সমাজচ্যুত করে রাখার বিষয়টি সমাধান করতে পারেনি।
গ্রামবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পারিবারিক কলহের কারণে আব্দুল জলিল প্রামানিক রাগের মাথায় তার স্ত্রীকে তালাক দেন। এঘটনার ২৯ দিন পর তিনি আবারও স্ত্রীকে বিয়ে করেন। এ ঘটনায় গ্রাম্য মাতব্বরেরা ক্ষুব্ধ হয়ে আব্দুল জলিল প্রামানিকের পরিবারকে সমাজচ্যুত করে রাখেন। সেই সময় জলিল প্রামানিক বিষয়টি আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)কে জানান। ইউএনও রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মণ্ডলকে বিষয়টি সমাধানের দায়িত্ব দেন। ইউপি চেয়ারম্যান উভয়পক্ষকে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে বৈঠকে বসেছিলেন। তবে কার্যত কোন কোনো সমাধান করতে পারেননি। এতে গ্রাম্য মাতব্বরেরা আব্দুল জলিলের ওপর আরও ক্ষুব্ধ হন। সমাজচ্যুত করে রাখা আব্দুল জলিল গত ১৫ আগস্ট রাত আটটার দিকে গ্রামের মসজিদের দিকে রওনা হন। এসময় মাতব্বরেরা তাকে দুই দফায় প্রচন্ড মারধর করেন। এতে তার বাম হাতের হাঁড় ভেঙে যায়। তিনি চিকিৎসা নিয়ে থানায় আট জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
বালুকাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আজিজুল ইসলাম বলেন, দেড় বছর আগে আব্দুল জলিল তার স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। কয়েক দিন পর আবার সংসার শুরু করেন। এনিয়ে গ্রামের মাতব্বরেরা আব্দুল জলিল প্রামানিককে সমাজচ্যুত করেন। এনিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় বৃদ্ধা লুৎফন নেছা বলেন, আমি কাজ করতে পারিনি। আব্দুল জলিলের বউ আমার বাড়িতে এসে জবাই করা মুরগির তরকারি রান্না করে দিয়েছিল। আমি জলিলের বাড়িতে গিয়ে এক বাটি মুরগির মাংসের তরকারি দিয়ে এসেছি। এতে আমাকেও সমাজচ্যুত করার হুমকি দিয়েছিল।
বালুকাপাড়া গ্রামের মোড়ের দোকানি হাফিজার রহমান বলেন, বউকে তালাক দেওয়ার ঘটনায় আব্দুল জলিল প্রামানিককে গ্রামের মাতব্বরেরা সমাজচ্যুত করেছেন। আব্দুল জলিল গ্রামের সামাজিক কোন কর্মকান্ডে অংশ নিতে দেয় না।
আব্দুল জলিল প্রামানিক বলেন, আমি রাগের মাথায় স্ত্রী তালাক দিয়েছিলাম। ২৯ দিন পর আবার বিয়ে পড়ে নিয়েছি। একারণে গ্রামের মাতব্বর রকি খান, মিল্টন খাঁ, আবু সুফিয়ানসহ আরও ১০-১২ জন আমাকে সমাজচ্যুত করেছেন। রাগের মাথায় স্ত্রীক। তালাক দিলে পুনরায় বিয়ে করা যাবে ঢাকার একজন মুফতির মতামত নিয়ে আসার পরও তারা মানেনি। তারা বলছে হিল্লা বিয়ে ছাড়া আমার বিয়ে বৈধ হবে না। তারা আমাকে দীর্ঘ দেড় বছর ধরে গ্রামের মসজিদে নামাজ আদায়ে করতে ও জানাজায় শরিক হতে বা দেননি। মিলাদ মাহফিল দাওয়াত দেওয়ার মাতব্বরদের চাপে পর ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এমনকি গ্রামের কারও জমিতে দিনমজুরি কাজও করতে পারব না বলে লোকজন জানিয়ে দেন। একারণে কেউ আমাকে কাজে নেয় না। সমাজচ্যুত করার জের ধরে মসজিদে যাওয়ার সময় মাতব্বরদের একাংশের লোকজন আমাকে মেরে হাত ভেঙে দিয়েছেন।
গ্রামের মাতব্বদের একজন মো. মিল্টন খাঁ। তিনি আব্দুল জলিলের দায়ের করা মামলার দুই নম্বর আসামি। তাকে তার বাড়িতে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আব্দুল জলিল সমাজ বিরোধী কাজ করেছেন। একারণে গ্রামের লোকজন তাকে সমাজচ্যুত করেছেন। আব্দুল জলিল সমাজ বিরোধী কি কাজ করেছেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আব্দুল জলিল তার স্ত্রীকে তালাক দিয়ে আবার স্ত্রীকে নিয়েছেন। এটা সমাজ বিরোধী কাজ।
আক্কেলপুর রায়কালী ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মন্ডল বলেন, আব্দুল জলিল মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। তিনি রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। এঘটনায় গ্রামের মাতব্বরেরা আব্দুল জলিলকে সমাজচ্যুত করেন। আব্দুল জলিল ইউএনও স্যারের কাছে অভিযোগ দিয়েছিলেন। ইউএনও স্যার আমাকে ঘটনাটি সমাধানের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। উভয়পক্ষকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে বৈঠক করেছি। আব্দুল জলিল যেন সামাজিকভাবে মিশতে পারে সেটি বলেছি। সমাজচ্যুতের ঘটনার জের ধরে আব্দুল জলিলকে মারধর করা হয়েছে। এতে তার বাম হাত ভেঙেছে বলে জেনেছি।
আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, আব্দুল জলিল প্রামানিক থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছিলেন। অভিযোগটি তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় সেটি মামলা হিসেবে রের্কড করা হয়েছে। আসামি আট জনের মধ্যে ইতিমধ্যে আদালত থেকে পাঁচজন আসামি জামিন নিয়েছেন, অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে ২৭,২৪৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে। বিগত ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের একই মাসে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ছিল ২১,৯১৬ কোটি টাকা। জুলাই-২০২৫ মাসে বিগত জুলাই-২০২৪ মাসের তুলনায় ৫,৩৩৩ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। জুলাই ২০২৫ মাসে রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২৪.৩৩%।
জুলাই’২৫ মাসে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক থেকে। এ খাত থেকে আদায় হয়েছে ১১,৩৫২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায়ের পরিমান ছিল ৮,৫৭১ কোটি টাকা। জুলাই ২০২৫ মাসে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ৩২.৪৫%।
আয়কর ও ভ্রমন কর খাতে জুলাই’২৫ মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৬,২৯৫ কোটি টাকা যা জুলাই’২০২৪ মাসের একই খাতে আদায়কৃত ৫,১৭৫ কোটি টাকার চাইতে ১,১২০ কোটি টাকা বেশি। আয়কর ও ভ্রমন করের ক্ষেত্রে জুলাই ২০২৫ মাসের আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২১.৬৫%।
২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে আমদানি ও রপ্তানি খাতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৯,৬০২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায় ছিল ৮,১৭০ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধির হার ১৭.৫২%।
রাজস্ব আদায়ের এ ধারা ভবিষ্যতে অব্যাহত রাখার জন্য আয়কর, মূল্য সংযোজন কর এবং কাস্টমস শুল্ক-কর আদায়ে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারিদের প্রচেষ্টা আরো জোরদার করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নানাবিধ কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
সম্মানিত করদাতাগণ আইনের যথাযথ পরিপালন নিশ্চিত করে যথাযথ পরিমান কর পরিশোধের মাধ্যমে দেশ গড়ার কাজের অন্যতম অংশীদার হবেন মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশাবাদী।
কুমিল্লা নাঙ্গলকোটে ইউপি সদস্য আলাউদ্দিনকে বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামিকে ঢাকার হাতিরঝিল রেল মগবাজার রেলগেট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। শুক্রবার দিনগত রাতে অভিযানটি শেষ করে র্যাব।
গ্রেফতারকৃত আসামী শেখ ফরিদ (৪৫) নাঙ্গলকোট উপজেলার বক্সগঞ্জ আলীয়ারা গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে।
শনিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে কুমিল্লা অশোকতলা এলাকায় র্যাব অফিসে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন
র্যাব ১১ এর কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাদমান ইবনে আলম।
মেজর সাদমান জানান, নাঙ্গলকোটের আলিয়ারা গ্রামে দুই পরিবারের মধ্যে বংশপরম্পরায় একটি বিরোধ চলে আসছিল। গেল গেল ২৫ জুলাই গরুর ঘাস খাওয়া কে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
সেদিন দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৫ জন গুলিবিদ্ধসহ ২৫ জন আহত হয়।
এ ঘটনার রেশ ধরে গেলো ৩ আগস্ট দুপুরে আলিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা আলাউদ্দিন তার চাচাতো ভাইয়ের জানাজার নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা তাকে একটি সিএনজিতে তুলে নিয়ে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে।
পরে এ ঘটনায় ৫ আগস্ট নিহতের ছেলে বাদী হয়ে নাঙ্গলকোট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বিপদসীমা অতিক্রম করায় নির্ধারিত সময়ের আগেই খোলা হয়েছে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সব জলকপাট। সোমবার (৫ আগস্ট) রাত ১২টা ২ মিনিটে হঠাৎ পানি বাড়তে থাকায় জরুরি ভিত্তিতে কেন্দ্রের ১৬টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়।
কর্ণফুলি পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানান, রাতে লেকের পানির উচ্চতা ১০৮.০৫ ফুট ছুঁয়ে গেলে বিপদসীমা অতিক্রম করে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলি নদীতে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, “প্রথমে সোমবার (৪ আগস্ট) বিকেল ৩টায় পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা পরের দিন মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জলকপাট খোলার ঘোষণা দিয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ অতিরিক্ত পানি প্রবাহের কারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই সোমবার রাতেই জলকপাট খুলে দিতে হয়। তবে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
তিনি আরও জানান, কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট বর্তমানে সচল রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে আরও ৩২ হাজার কিউসেক পানি লেক থেকে কর্ণফুলিতে গিয়ে পড়ছে। সবমিলিয়ে পানি নিঃসরণের হার এখন প্রতি সেকেন্ডে ৪১ হাজার কিউসেক।
ভাটি এলাকার জনসাধারণের উদ্দেশে তিনি বলেন, “পানি প্রবাহ বাড়লেও আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে, এবং প্রয়োজনে আমরা আগেভাগেই ব্যবস্থা নেব।”
স্থানীয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও এ বিষয়ে আগেই অবহিত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন কর্তৃপক্ষ।
মন্তব্য