নারায়ণগঞ্জে আলোচিত কিশোর তানভীর মোহাম্মদ ত্বকী হত্যার তদন্ত চলাকালেই এই হত্যায় আওয়ামী লীগ নেতা শামীম ওসমানের ভাতিজা আজমেরী ওসমানের সংশ্লিষ্টতার কথা জানায় র্যাব। তার কথিত টর্চার সেলে হানা দিয়ে রক্তমাখা শার্ট উদ্ধারের ঘটনাটি টেলিভিশনে লাইভ সম্প্রচারও হয়।
তখন আত্মগোপনে আজমেরী। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঘোষণা দেয়, তাকে ধরে এনে বিচারের মুখোমুখি করা হবে।
সেই হত্যার পর প্রায় ৯ বছর ধরে প্রকাশ্যে নেই আজমেরী। কিন্তু দাপট কি কমেছে?
সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জের একটি স্থানীয় দৈনিকে ত্বকী হত্যা মামলার অভিযোগপত্রে আজমেরীর সংশ্লিষ্টতা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের পর সেই পত্রিকা অফিসে একদল তরুণের হামলার পর শামীম ওসমানের ভাতিজার বিষয়টি আবার আলোচনায় এসেছে।
এই হামলা চালানোর পর নারায়ণগঞ্জজুড়ে আবার আলোচনা হচ্ছে, আজমেরী কি আবার তার ত্রাসের পুরোনো স্মৃতি ফিরিয়ে আনতে চাইছেন?
যদি তার বিরুদ্ধে তথ্য-প্রমাণ পাওয়াই যায়, তাহলে আজমেরীকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কেন গ্রেপ্তার করছে না- এমন প্রশ্ন আবার বড় হচ্ছে।
রাজধানী লাগোয়া বন্দরনগরে আজমেরীর পরিবারের প্রভাব কমলেও এখনও সেটি যথেষ্ট গুরুত্ব বহন করে। তবে সদ্যসমাপ্ত সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আগে-পরে ক্ষমতাসীন দল ও তার সহযোগী সংগঠনগুলো থেকে শামীম ওসমান অনুসারী নেতাদের সরিয়ে দিয়ে আওয়ামী লীগ এই বার্তা দিয়েছে যে, ওসমান পরিবারের একাধিপত্য তারাও আর রাখতে চাইছে না। এর মধ্যে ‘সময়ের নারায়ণগঞ্জ পত্রিকা’য় এই হামলা হয়।
পত্রিকাটির সাংবাদিকরা অভিযোগ করছেন, হামলাকারীরা তাদের আজমেরীকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জন্য শাসাচ্ছিলেন। এ কারণেই এই হামলায় শামীম ওসমানের ভাতিজার সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ জোরালো হয়েছে।
নাগরিক কমিটির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ধীমান সাহা জুয়েল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রশাসনের দুর্বলতার কারণে তাদের নাকের ডগায় বসে আজমেরী ওসমান বাহিনী গণমাধ্যমের ওপর হামলা করার সাহস পায়। এর বাইরেও তারা নানা অপরাধ সংঘটিত করছে। আমরা প্রশাসনকে বলতে চাই, আপনাদের মেরুদণ্ড সোজা রেখে এ শহরের সন্ত্রাসীদের ধরে বিচারের আওতায় আনুন।’
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি এ বি সিদ্দিক বলেন, ‘তারা এতটাই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে পত্রিকা অফিসে হামলা করে সংবাদপত্রের মুখ বন্ধ করতে চায়। ঘটনার কয়েক দিন পার হয়ে গেল, কিন্তু হামলার নেতৃত্বকারীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে। কারণ আজমেরী বাহিনীকে থামানো না গেলে সামনে আরও বড় ঘটনা ঘটতে পারে।’
ত্বকীর বাবা রফিউর রাব্বি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ শহরে যারাই ত্বকী হত্যার বিচার চেয়েছে, তাদের ওপর হামলা করা হয়েছে। তারা এতটাই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে, যাদের বিরুদ্ধে লিখেছে, তাদের ওপর হামলা করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘ত্বকী হত্যার মামলার গ্রেপ্তার আসামি সুলতান শওকত ভ্রমরের আদালতে দেয়া ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে যেহেতু আজমেরী ওসমানের নাম এসেছে, সেহেতু তাকে ও সহযোগীদেরও আইনের আওতায় এনে বিচার শুরু করার দাবি জানাচ্ছি।’
পত্রিকা অফিসে হামলার ঘটনায় যাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, তারা সবাই আজমেরীর অনুসারী। তবে মামলায় আজমেরীকে আসামি করা হয়নি।
সদর মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক আজিজুল হক জানান, পত্রিকা অফিসে হামলা, ভাংচুর, সংবাদকর্মীদের প্রাণনাশের হুমকি ও দেড় লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতির অভিযোগে করা মামলাটি গত সোমবার ডিবিতে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ কারণে মামলার তদন্ত ও গ্রেপ্তারের বিষয়টি দেখবে জেলা গোয়েদা (ডিবি) পুলিশ।
নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিবি শাখা) জাহিদ পারভেজ নিউজবাংলাকে জানান, ‘হামলার ঘটনায় এ পর্যন্ত ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যারা পলাতক রয়েছে তাদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’
ত্বকী হত্যার ঘটনায় র্যাবের খসড়া অভিযোগপত্র নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় গত ১২ ফেব্রুয়ারি দুপুরে চাষাঢ়ায় প্রেসিডেন্ট রোডে সিরাজ ম্যানশনের চারতলায় নারায়ণগঞ্জে স্থানীয় দৈনিক সময়ের নারায়ণগঞ্জ পত্রিকা অফিসে হামলা চালায় একদল যুবক।
অর্ধশতাধিক মোটরসাইকেলে পত্রিকা অফিসে গিয়ে সাংবাদিকদের হত্যার হুমকি দিয়ে সিসি ক্যামেরা ভাংচুর করে ডিভাইস নিয়ে যায় তারা। এ ঘটনায় ওই পত্রিকার সম্পাদক জাবেদ হোসেন জুয়েল সদর থানায় ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছেন।
সময়ের নারায়ণগঞ্জের প্রকাশক ও সম্পাদক জাবেদ আহমেদ জুয়েল বলেন, ‘সম্প্রতি ত্বকী হত্যা নিয়ে সর্বত্র আলোচনা হচ্ছে। ১১ ফেব্রুয়ারি র্যাবের সেই প্রকাশিত খসড়া চার্জশিট নিয়ে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়। কপিটি গণমাধ্যম কর্মীদের সরবরাহ করেন ত্বকীর বাবা রফিউর রাব্বি। সময় নারায়ণগঞ্জ পত্রিকায় সেটি হুবহু তুলে ধরা হয়। এ কারণে পত্রিকা অফিসে হামলা চালিয়েছে আজমেরী ওসমানের অনুসারী।
আজমেরী প্রকাশ্যেই
ত্বকী হত্যায় আজমেরীর সম্পৃক্ততার কথা র্যাব জানিয়েছিল প্রকাশ্যেই। সে সময় তিনি কয়েক বছর আত্মগোপনে থাকলেও সম্প্রতি আবার প্রকাশ্যে এসেছেন।
২০১৮ সালের ২ ডিসেম্বর হারুন অর রশীদ নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার হিসেবে যোগ দেয়ার পর আজমেরী আবার এক বছরের জন্য উধাও হয়ে যান। ২০১৯ সালের ৩ নভেম্বর হারুন বদলি হওয়ার পর তিনি আবার ফিরে আসেন।
২০১৯ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর শহরের আমলাপাড়া এলাকার বাচ্চু নামে এক ব্যক্তিকে মারধর ও চাঁদাবাজির অভিযোগে আজমেরীর বিরুদ্ধে সদর মডেল থানায় মামলা হয়।
তখন পুলিশ আজমেরীর বাসায় অভিযান চালিয়ে তার দুই সহযোগীকে গ্রেপ্তার করে। কিন্তু তাকে না পাওয়ার কথা জানায়।
আজমেরী তার বাড়ি আল্লামা ইকবাল রোড (কলেজ রোড) থেকে নিজে গাড়ি চালিয়ে বের হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়কে ঘোরেন। সঙ্গে থাকে বেশ কিছু মোটরসাইকেল। গাড়িটি সড়কে চলার সময় বিকট শব্দে গান বাজানো হয়। তখন দূর থেকেই স্থানীয়রা বুঝতে পারে, আজমেরীর বহর যাচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজমেরী কোনো পাড়া-মহল্লায় গেলে আগেই সেখানে অবস্থান করেন তার সহযোগীরা। তিনি গাড়ি থেকে নামার পর অন্যরা মাথা নিচু রাখেন। এটা অনেকটা সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থার মতো।
ব্যবসায়ীদের তথ্য বলছে, নগরীর গার্মেন্টসের ঝুট সেক্টরে আজমেরী ঘনিষ্ঠদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
আজমেরীর ঘনিষ্ঠদের মধ্যে বর্তমানে নাছির শহরে বেশ পরিচিত। তিনিই পত্রিকা অফিসে হামলা মামলার প্রধান আসামি।
আগে নাছিরের অবস্থানে ছিলেন তরিকুল ইসলাম লিমন নামে একজন। গত বছর একটি মামলায় গ্রেপ্তারের পর জামিনে বের হয়, তবে তাকে আগের মতো দেখা যায় না।
ত্বকী হত্যায় সম্পৃক্ততার তথ্য
২০১৩ সালের ৬ মার্চ বিকেলে তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী শহরের শায়েস্তাখান সড়কের বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয়। দুদিন পর শহরের চারারগোপ এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে তার ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় মামলার পর গত আট বছরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে। তারা হলেন রিফাত বিন ওসমান, সুলতান শওকত ভ্রমর, ইউসুফ হোসেন লিটন, সালেহ রহমান সীমান্ত ও তায়েবউদ্দিন আহমেদ জ্যাকি। এরা সবাই আজমেরী ওসমানের ঘনিষ্ঠজন ও অনুসারী ছিলেন।
ওই বছরের ১২ নভেম্বর আজমেরী ওসমানের সহযোগী সুলতান শওকত ভ্রমর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেন, আজমেরী ওসমানের নেতৃত্বে ত্বকীকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়।
হত্যার এক বছরের মাথায় ২০১৪ সালের ৫ মার্চ সংবাদ সম্মেলন করে মামলার তদন্ত সংস্থা র্যাবের তৎকালীন অতিরিক্ত মহাপরিচালক জিয়াউল আহসান জানান, আজমেরী ওসমানসহ ১১ জন ত্বকী হত্যায় অংশ নেন।
একটি খসড়া অভিযোগপত্র তৈরি করার কথাও জানান সেই র্যাব কর্মকর্তা। তবে গত আট বছরে আদালতে প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি। গ্রেপ্তারও হয়নি আজমেরী।
যদি আজমেরীর সম্পৃক্ততা থাকবে, তাহলে কেন তাকে গ্রেপ্তার হয়নি এমন প্রশ্নে র্যাব-১১-এর অধিনায়ক তানভীর মোহাম্মদ পাশার কাছ থেকে জবাব পাওয়া যায়নি।
তিনি বলেন, ‘চার্জশিট দেয়ার জন্য তদন্ত কর্মকর্তা কাজ করছেন। মামলাটি চাঞ্চল্যকর হওয়ায় আমরা বিভিন্ন বিষয় খতিয়ে তদন্ত করছি, যাতে ঘটনার আগের ও পরের কারণগুলো প্রতিবেদনে উল্লেখ করা যায়। ঘটনার সঙ্গে যার যার সম্পৃক্ততা পাওয়া যাবে, তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।
কবে অভিযোগপত্র চূড়ান্ত করা হবে- এ বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তা মশিউর রহমানের কাছে প্রশ্ন রাখলে তিনি কোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে রাজি হননি।
আজমেরীকে আইনের আওতায় না আনায় তিনি ও তার সহযোগীরা এখন আবার পেশিশক্তি দেখাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন নারায়ণগঞ্জ মানবাধিকার কমিশনের সভাপতি মাহাবুবুর রহমান মাসুম। তিনি বলেন, ‘নগরীর পাড়া-মহল্লার রংবাজ, মাদক ও চাঁদাবাজি মামলার আসামিসহ যাদের নিজের রাজনৈতিক পরিচয় নেই, তারা আজমেরীর সঙ্গে যোগ দেয়। তারা নানাভাবে ভয় দেখায় স্থানীয়দের। ব্যবসায়ীদের হুমকি দেয়া হয়।’
আরও পড়ুন:মানিকগঞ্জের শিবালয়ে স্থানীয় মোহামেডান ইয়ুথ ক্লাবের উদ্যোগে শহীদ জিয়া স্মৃতি ফুটবল টুর্ণামেন্ট শুরু হয়েছে । উক্ত খেলা উদ্বোধন করেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ( বিএনপি) কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির ১ নং সদস্য , জেলা বিএনপির সাবেক সাধারন সম্পাদক এসএ জিন্নাহ কবির ।
শনিবার (৫ জুলাই) বিকাল ৪ টায় শিবালয় সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে শহীদ জিয়া স্মৃতি ফুটবল টুর্ণামেন্ট উদ্বোধন করা হয় ।
বিশেষ অতিথি ছিলেন, মানিকগঞ্জ জেলা যুবদলের আহবায়ক কাজী মোস্তাক হোসেন দিপু, জেলা বিএনপির সাবেক কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ও উপজেলা বিএনপি'র সহ-সভাপতি এবং জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য মো: লোকমান হোসেন, উপজেলা বিএনপি সভাপতি রহমত আলী লাভলু, সম্পাদক মিজানুর রহমান লিটন, সাংগঠনিক সম্পাদক নাসির উদ্দিন, জেলা কৃষকদলের সহ-সভাপতি মাসুদুর রহমান মাসুদ,জেলা বিএনপির সাবেক প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক ও দৌলতপুর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মো: ফেরদৌস রহমান, উপজেলা যুবদলের আহবায়ক মো: হোসেন আলী, উপজেলা সেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক মো: শহিদুল ইসলাম ।
এছাড়া উপস্থিত ঘিওর উপজেলা বিএনপির স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক মো: রাজা মিয়া মেম্বার, জেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক আসিফ ইকবাল রনি, জেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক আখতারুজ্জামান আক্তার, জেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক মামিনুল ইসলাম মমিন, জেলা যুবদলের সদস্য মোসলেম উদ্দিন,জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিব খান অয়ন, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম জিহাদ প্রমূখ । সভাপতিত্ব করেন,মোহামেডান ইয়ুথ ক্লাবের ইঞ্জিনিয়ার মহিদুর রহমান কাজল ।
প্রধান অতিথি এসএ জিন্নাহ কবির বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়া রহমান এবং বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া এদেশে প্রথম ফুটবল খেলাকে আন্তর্জার্তিক পর্যায়ে নিয়ে যান। তাদের চেষ্টায় সার্ফ ফুটবল টুর্ণামেন্ট আয়োজন করার সম্ভব হয়। মাদক মুক্ত সমাজ গড়তে যুব সমাজকে খেলার মাঠে আনতে হবে । মাদক মুক্ত সমাজ গড়তে হলে খেলাধুলার বিকল্প নাই ।
স্থানীয় মোহামেডান ইয়ুথ ক্লাব আয়োজিত টুর্ণামেন্টে নক-আউট পদ্ধতিতে আটটি দল অংশ নিচ্ছে। উদ্বোধনী খেলায় টাইব্রেকারে মানিকগঞ্জ কৈট্রা ফিউচার ফুটবল একাডেমী ৫-৪ গোলে পাবনার নবযুগ মিলন সমিতিকে হারায়। রেফারি ছিলেন আবুল কালাম।
শেরপুরে নালিতাবাড়ী উপজেলার কাটাবাড়ী সীমান্তের বিদ্যুতায়িত হয়ে আরও একটি একটি বন্যহাতি নিহত হয়েছে। বনবিভাগের মধুটিলা রেঞ্জের আওতাধীন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে শনিবার (৫ জুলাই) সকালে বনবিভাগের লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে হাতিটির মরদেহ উদ্ধার করে।
খাদ্যের সন্ধানে পাহাড় থেকে নেমে আসা হাতিটি বৈদ্যুতিক ফাঁদে পড়ে নিহত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে বনবিভাগ।
মধুটিলা রেঞ্জের রেঞ্জার দেওয়ান আলী ঘটনাটি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, হাতিটির শুড়ে পোড়া ক্ষতের দাগ রয়েছে। এটির বয়স ১৫ থেকে ২০ বছর হবে। এটি একটি মাদি হাতি। এ ব্যাপারে পরবর্তী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সাম্প্রতিককালে মধুটিলা রেঞ্জের আওতাধীন এলাকায় খাদ্যের সন্ধানে বন্যহাতি লোকালয়ে নেমে আসার ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। খেতে ফসল না থাকায় হাতির দল বাড়িঘরেও হানা দিচ্ছে। এতে স্থানীয়ভাবে অনেক পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল। যেখানে বন্যহাতির দেহটি পড়ে ছিল, সেখানে কোনো ধরনের বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম না থাকলেও হাতিপাগাড় ক্যাম্পের আশপাশে অনেক বসতি ও বাড়িঘর রয়েছে।
এ নিয়ে চার মাসের কম সময়ের ব্যবধানে মধুটিলা রেঞ্জ এলাকায় তিনটি বন্যহাতির মরদেহ উদ্ধার করল বনবিভাগ।
এর আগে গত ২০ মার্চ পূর্ব সমশ্চুড়া গ্রামের লালনেংগড় এলাকায় বিদ্যুতায়িত হয়ে নিহত একটি বন্যহাতির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তারপর গত ২৯ মে দাওধারা পাহাড় থেকে সদ্যোজাত একটি হাতিশাবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
ঘন ঘন হাতির মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছেন পরিবেশ ও প্রকৃতিপ্রেমীরা।
নিধারঞ্জন কোচ নামে এক অধিকারকর্মী নিজের ফেসবুক ওয়ালে শনিবার নিহত হাতির মরদেহের ছবি পোস্ট করে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে লিখেছেন, ‘আবারো বন্যহাতির মৃত্যু। এর শেষ কোথায়? হাতি-মানুষের দ্বন্দ্ব নিসনে সরকারি উদ্যোগ কী? ক্ষতিপূরণ প্রদানই কি যথেষ্ট? হাতি-মানুষের সহাবস্থানের পথ খুঁজতে খুঁজতে এশিয়ান হাতি নাই হয়ে যাবে!’
সিলেটের ওসমানীনগরে এনা ও ইউনিক পরিবহনের দুটি বাসের সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই একজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন।
শনিবার (৫ জুলাই) সকাল ৬টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কুরুয়া বাজারের পাশে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত রাজু মিয়ার (২৬) বাড়ি ফরিদপুর জেলার তারাকান্দা থানায়। তিনি ইউনিক বাসের হেলপার ছিলেন।
দুর্ঘটনায় আহতদের মধ্যে অন্তত দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সিলেট থেকে ছেড়ে আসা ইউনিক পরিবহনের বাসের সঙ্গে ঢাকা থেকে আসা এনা পরিবহনের বাসটির সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই ইউনিকের হেলপার রাজু মিয়ার নিহত হন। বেপরোয়া গতিতে ভুল পাশ থেকে এসে এনা পরিবহনের ওই কোচটি এ দুর্ঘটনা ঘটায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ফায়াস সার্ভিস, ওসমানীনগর থানা পুলিশ ও শেরপুর হাইওয়ে পুলিশ এসে হতাহতদের উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
দুর্ঘটনার পর কুরুয়া বাজারের দুই পাশে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে কয়েক কিলোমিটার যানজট দেখা দেয়। পরে সকাল সোয়া ১০টার দিকে দুর্ঘটনাকবলিত গাড়ি দুটি সরিয়ে যানজট নিরসন করে পুলিশ।
শেরপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু তাহের দেওয়ান জানান, দুই গাড়ির সংঘর্ষ হলে বিকট শব্দে স্থানীয়রা এগিয়ে গিয়ে প্রাথমিক উদ্ধারকাজ শুরু করেন। পরে স্থানীয় থানা পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তাতে যোগ দেন।
তিনি আরও জানান, হাইওয়ে পুলিশ রাজুর লাশ উদ্ধার করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। বাস দুটিকে রাস্তা থেকে সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়েছে।
কেশবপুরের ঐতিহ্য কালোমুখো হনুমান খাদ্য সংকট ও বন উজাড় হয়ে যাওয়ায় বিভিন্ন এলাকায় চলে যাচ্ছে। প্রয়োজনীয় খাবার না পেয়ে মারাও যাচ্ছে। কালোমুখো হনুমান রক্ষার দাবি উঠেছে।
জানা গেছে, একসময় কেশবপুরে ছিল কালোমুখো হনুমানের অভয়ারণ্য। বন উজাড় হয়ে যাওয়ায় এবং খাদ্য সংকটে সময়ের গতির সঙ্গে কমে যাচ্ছে হনুমান। বর্তমানে ১৮০ থেকে ২০০টি হনুমান কেশবপুরে রয়েছে বলে স্থানীয় বন বিভাগ জানায়। এখান থেকে ৪/৫ বছর আগে ছিল ২৫০ থেকে ৩০০ টি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, দেশ বিভক্তির আগে ভারতের মাড়োয়াররা ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য যশোরের কেশবপুরে বসবাসের পাশাপাশি আসা-যাওয়া করত। এ সময় তাদের যানবাহনে করে দুটি কালোমুখো হনুমান ভারত থেকে কেশবপুরে আসে। সেই থেকে হনুমানের এখানে পত্তন শুরু হয়। ওই এক জোড়া হনুমান থেকে এখানে শত শত হনুমানের কালের আবর্তনে ওরা আজ বিলুপ্তির পথে। একসময় কেশবপুর অঞ্চলে ঘন বনজঙ্গল ছিল। এসব বনের ফল ও লতাপাতা খেয়ে ওরা জীবিকা নির্বাহ করত। বর্তমানে জনসংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি বন উজাড়সহ ঘনবসতি এবং এলাকায় অবৈধ ইটভাটায় গিলে খাচ্ছে এসব বনের কাঠ। এতে উজাড় হচ্ছে বন। এদিকে কেশবপুর উপজেলায় পল্লীবিদ্যুতের তারে কভার সিস্টেম না থাকায় প্রায়ই বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ওরা মারা যাচ্ছে। খাদ্য সংকটের কারণে কেশবপুরের হনুমান দেশের বিভিন্ন এলাকায় চলে যাচ্ছে।
উপজেলা বন বিভাগের কর্মকর্তা মোনায়েম হোসেন বলেন, কেশবপুর এলাকায় বনজঙ্গল কমে যাওয়ার কারণে হনুমানের খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। ওদের রক্ষায় সরকারিভাবে খাদ্য সরবরাহ করা হচ্ছে।
কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেকসোনা খাতুন বলেন, হনুমান রক্ষায় সরকারিভাবে খাদ্য সরবরাহ করা হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন এনজিও ব্যক্তি গত ভাবেও অনেকেই খাদ্য দেয়, যার কারণে ওরা গ্রামাঞ্চল ছেড়ে বর্তমানে শহরে বেশি বিচরণ করছে।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন করোনা আক্রান্ত এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত জেবল হক (৮০) কবিরহাট উপজেলার চাপরাশিরহাট ইউনিয়নের লামছি গ্রামের মৃত গনু মিয়ার ছেলে।
বুধবার (২ জুলাই) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. রাজীব আহমেদ চৌধুরী। এর আগে, গতকাল মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাত ১০টার দিকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে তার মৃত্যু হয়।
ডা. রাজীব আহমেদ চৌধুরী বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। গত মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে ওই বৃদ্ধ হাসপাতালে ভর্তি হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে মারা যান তিনি। এদিকে গত ২৪ ঘন্টায় নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের এক জনের নমুনা পরীক্ষায় একজনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা.মরিয়ম সিমি বলেন, মারা যাওয়া ব্যক্তি সকালে হাসপাতালে ভর্তি হয়। দুপুরে তার করোনা শনাক্ত হওয়ার পর সেখানে রাতে তার মৃত্যু হয়। এখন পর্যন্ত নোয়াখালীতে মোট ৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। কিট সল্পতার কারণে উপজেলা পর্যায়ে করোনা টেস্ট এখনো শুরু করা হয়নি।
সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের নেতৃত্ব নিয়ে চলমান বিরোধের জেরে ক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেমসহ সাংবাদিকদের উপর অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৩০ সাংবাদিক আহত হয়েছেন।
অভিযোগ উঠেছে, ক্লাবের কথিত সভাপতি মাদকাসক্ত আওয়ামী দোসর আবু সাঈদ ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারীর নেতৃত্বে আল ইমরান ও অমিত ঘোষ বাপ্পাসহ ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্তরা এই হামলা চালায়।
সোমবার (৩০ জুন) সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে এই হামলায় ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের সাংবাদিক ও প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম, ভোরের আকাশের সাংবাদিক আমিনুর রহমান, ডিবিসি নিউজের সাংবাদিক বেলাল হোসেন, অনির্বানের সোহরাব হোসেনসহ অন্তত ৩০ সাংবাদিক গুরুতর আহত হয়েছেন।
হামলার শিকার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রেসক্লাবে একটি সভা করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। ঠিক সেই মুহূর্তে আবু সাঈদ ও আব্দুল বারীর নেতৃত্বে আলিপুর থেকে আনা ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্তরা আমাদের উপর পরিকল্পিতভাবে হামলা করে। তাদের হামলায় আমাদের অন্তত ৩০ জন সাংবাদিক ও সদস্য আহত হয়েছেন।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, আবু সাঈদ ও আব্দুল বারী দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে প্রেসক্লাব দখল করে রেখেছেন এবং তাদের মতের বিরুদ্ধে গেলেই এভাবে হামলা ও নির্যাতন চালানো হয়।
এই ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনায় সাতক্ষীরার সাংবাদিক মহলে তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। সাংবাদিকরা অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছেন।
ঘটনার পর থেকে প্রেসক্লাব এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
কুমিল্লার দাউদকান্দি পৌরসভার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। বাজেট ঘোষণা করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও দাউদকান্দি পৌর প্রশাসক রেদওয়ান ইসলাম।
সোমবার (৩০ জুন) দুপুরে পৌরসভা হলরুমে এ বাজেট ঘোষণা করা হয়। বাজেটে সর্বমোট আয় ৪২ কোটি ৯১ লাখ ৫৯ হাজার টাকা ও মোট ব্যয় ৩৬ কোটি ৭৪ হাজার টাকা প্রস্তাব করা হয়। পৌর প্রশাসক রেদওয়ান ইসলাম তার প্রস্তাবিত বাজেটে ২০২৫-২৬ অর্থ বছরে রাজস্ব খাত থেকে ১৩ কোটি ২৩ লাখ ৪১ হাজার ৩ শত ৩১ টাকা ও উন্নয়ন খাত থেকে ২৯ কোটি ৬৮ লাখ ১৮ হাজার ৪৫ টাকা আহরনের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। বাজেটে উদ্ধৃত্ত ধরা হয়েছে ৬ কোটি ১৭ লাখ ২ হাজার ৩ শত ৭৮ টাকা।
এছাড়াও বাজেটে খাতওয়ারী ব্যয়ের হিসেবে দেখা যায় রাজস্ব খাতে ব্যয় ৯ কোটি ৫৯ লাখ ৫৭ হাজার টাকা এবং উন্নয়ন ব্যয় দুই কোটি ১৫ লাখ টাকা ধরা হয়েছে।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.হাবিবুর রহমান,পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম, হিসাবরক্ষক শাহাদাত হোসেনসহ পৌরসভার অন্যান্য কর্মকর্তারা।
মন্তব্য