দেখে বোঝার উপায় নেই, এটা কী। বোঝা যায়, জঙ্গলের ভেতর কিছু একটা আছে। আরও একটু এগোতেই পুরো বিষয়টি স্পষ্ট হলো। জঙ্গলে ঘেরা পরিত্যক্ত একটি শহীদ মিনার।
এ মিনারের মনে করিয়ে দেয়ার কথা ভাষার কথা, ভাষার জন্য জীবন দেয়ার কথা। মনে করিয়ে দেয়ার কথা ভাষা আন্দোলনের এক গৌরবময় ইতিহাসের কথা।
যে মিনারে একসময় ভাষাশহীদদের স্মরণে চোখের জল পড়েছে, তা আজ পরিত্যক্ত। জঙ্গল আজ আঁকড়ে ধরেছে।
এ শহীদ মিনার ফরিদপুর সরকারি ইয়াছিন কলেজের। মিনারটি কলেজ ক্যাম্পাসের পশ্চিমের এক কোণে পড়ায় তাকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। ক্যাম্পাসের পূর্ব পাশে নারীদের কমনরুমের সঙ্গে নতুন একটি শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে। তবে পুরোনো শহীদ মিনারটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হলেও তার প্রতি আর কোনো সম্মান বা শ্রদ্ধা কাজ করে না কলেজ কর্তৃপক্ষের।
শুধু তা-ই নয়, মিনারটির পাশে সীমানা দেয়ালসংলগ্ন প্রধান সড়কে একটি খাবার হোটেল। তার যত ময়লা-আবর্জনা, সবই ফেলা হয় এই মিনারের পাদদেশে।
ফরিদপুর শহরের টেপাখোলায় অবস্থিত সরকারি ইয়াছিন কলেজ। এটির প্রথম প্রতিষ্ঠা ইয়াছিন মুসলিম হাই স্কুল নামে। এলাকার শিক্ষানুরাগী ইয়াছিন জমাদারের জমি ও অর্থ সাহায্যে এটির প্রতিষ্ঠা। সে সময় স্বল্পসংখ্যক মুসলমানই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণে এগিয়ে আসতেন। তাই ইয়াছিন জমাদারের মতো স্বল্পশিক্ষিত মানুষের পক্ষে এ ধরনের প্রয়াস ছিল অকল্পনীয়।
ইয়াছিন মুসলিম হাই স্কুল ১৯৬৮ সালে স্থানীয় জনগণ এবং শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিদের উদ্যোগে ইয়াছিন কলেজে রূপান্তরিত হয়। ১৯৮৭ সালে এটি সরকারি ইয়াছিন কলেজ, ফরিদপুর নামে পরিচিতি লাভ করে।
কলেজে বর্তমানে প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থী। শিক্ষক ৪০ জন। শিক্ষার্থীদের এইচএসসি এবং অনার্সের চারটি বিষয়ে পাঠদান করা হয়।
১৯৯৯ সালে কলেজে শহীদ মিনারটি নির্মাণ করা হয়। সেখানে শহীদ মিনারে প্রতি বছর একুশে ফেব্রুয়ারিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হতো। ২০১২ সালে কলেজের অফিস কক্ষের পাশে নতুন একটি শহীদ মিনার নির্মাণ করে পূর্বের শহীদ মিনার পরিত্যক্ত ঘোষণা করে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
কলেজের সীমানা দেয়ালসংলগ্ন বাসিন্দা এবং প্রাক্তন শিক্ষার্থী সাংবাদিক এহসান বকাউল রানা বলেন, ‘কষ্ট লাগে। আমি যখন কলেজে পড়েছি, তখনও এই মিনারেই শ্রদ্ধা নিবেদন করেছি। নতুন শহীদ মিনার নির্মাণ করার পর পুরোনোটির কোনো খোঁজ রাখেনি কর্তৃপক্ষ।’
কলেজে এসএসসিতে ভর্তি হতে আসা নতুন শিক্ষার্থী রায়হান রহমান বলেন, ‘এখানে তো জঙ্গল। তার মধ্যে যে একটি শহীদ মিনার আছে, তা বুঝতে পারিনি।’
৬১ বছর বয়সী কলেজের দারোয়ান মজিদ শেখ। প্রায় ৩০ বছর হলো চাকরির বয়স তার। তিনি বলেন, ‘কলেজের গেটের সামনেই শহরের বৃহত্তম গরুর হাট। প্রতি মঙ্গলবার এ হাট বসলে অনেক গরুর বেপারি ভেতরে ঢুকে ওই জঙ্গলে গিয়ে মলমূত্র ত্যাগ করেন। নতুন গেটের নির্মাণকাজ হচ্ছে তাই প্রবেশপথ খোলা।’
কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর মো. ফজলুল হক খান বলেন, ‘আমাদের কলেজে দৃষ্টিনন্দন একটি নতুন শহীদ মিনার তৈরি করা হয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সেখানেই শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।’
কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর শীলা রানী মণ্ডল বলেন, ‘পুরোনো শহীদ মিনারটি ছিল পুরোনো মডেলের। আর তা ছাড়া পুরোনো মিনারটি সামনে তিনতলা ভবন থাকায় তা ক্যাম্পাসের এক কোণে পড়ে গিয়েছে। আর সেখানে নতুন ছয়তলা ভবন পাস হয়ে গেছে। অচিরেই কাজ শুরু হবে। তবে সেটার পরিবর্তে কমনরুমের পাশে নতুন আধুনিক শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে। তবে ভাষা দিবসটি ঘিরে আমাদের পরিকল্পনা আছে পুরোনো মিনারটিকে পরিষ্কার করে রং করার।’
আরও পড়ুন:আমরা মাদক ব্যবসায়ীদের ভােট দেব না, দেখা হলে সালাম দেবা না, কোনো অনুষ্ঠান দাওয়াত দেব না, ওয়াজ মাহফিলসহ ধর্মীয় বা কােন অনুষ্ঠানে অতিথি করবা না। তাহলে তারা আর কোনো উপায় না পেয়ে লজ্জায় পড়ে হলও মাদক ব্যবসা ছাড়বে।
মঙ্গলবার কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলায় এক শিক্ষাবত্তি প্রদান অনুষ্ঠান এসব কথা বলেন কুমিল্লার পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান।
কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার সুয়াগঞ্জ টি এ হাইস্কুল এন্ড কলেজ মাঠে এ আয়ােজন করে আবদুর রহমান মাস্টার ফাউন্ডেশন। কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার ৩৬ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৪৬৯ শিক্ষার্থীকে শিক্ষাবৃত্তির সনদ ও আর্থিক অনুদানের চেক তুলে দেয়া হয়। প্রধান আলােচক ছিলেন ফাউন্ডশনের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মােহাম্মদ আক্তারুজ্জামান রিপন।
১০ বছর ধরে শিক্ষাবত্তি প্রদান করে আসছে ফাউন্ডেশনটি। ২২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ১৪টি মাদ্রাসারসহ মোট ৩৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৭ম থেকে দশম শ্রেণির তিনজন করে ৪৩২ জন এবং ২০২৪ সাথে এসএসসিতে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত ৩৭জনসহ মােট ৪৬৯জনকে শিক্ষা বৃত্তি প্রদান করা হয়েছে।
ইঞ্জিনিয়ার মােহাম্মদ আক্তারুজ্জামান রিপন বলেন, আমাদর সন্তানদের শুধু ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার তৈরি করার জন্য বড় করি। কিন্তু এটা হওয়া উচিৎ নয়। যদি বাবা-মা চায় সন্তান বড় হয়ে ভােলা হবে, ভদ্র হবে, ন্যায়নিষ্ঠাবান ও সৎ পথ থাকব। তাহলে আমাদের সমাজ আয়নার মত সুন্দর হবে।
অনুষ্ঠান বিশষ অতিথি ছিলন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মাে.মােশারফ হাসান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবাইয়া খানম, উপজলা ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাবলু, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহম্মদ আলমগীর ভূঞা। সভাপতিত্ব করেন টি এ হাই স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মােহাম্মদ মােজাম্মেল হক চৌধুরী।
প্রায় এক সপ্তাহ শান্ত থাকার পর মিয়ানমারের ভেতরে ফের গোলাগুলি ও ভারী গোলাবর্ষণের শব্দ পাওয়া গেছে, দফায় দফায় হচ্ছে মর্টার শেলের বিকট শব্দ।
সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত এমন শব্দে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ও হোয়াইক্যং সীমান্ত এবং টেকনাফ পৌরসভায় ১৮-২০টি গ্রাম কেঁপে উঠেছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, হ্নীলার চৌধুরী পাড়া ও হোয়াইক্যং সীমান্ত এবং টেকনাফ পৌরসভার সীমান্তের ওপারে থেমে থেমে গোলাগুলির পাশাপাশি অন্তত ২০ থেকে ৩০টি মর্টারশেল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।
রাখাইন রাজ্যের মংডু শহরের উত্তরে নাকপুরা এলাকা এবং পূর্বে ধনখালী, হাসুরাতা, নাইক্ষ্যংদিয়া, গর্জনদিয়া ও সংক্ষদাবিল এলাকায় সংঘাতের কারণে এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। রাত ১২টার পর থেকে গোলাগুলির শব্দ ভেসে আসছে।
হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী বলেন, ‘দুই মাস ধরে মিয়ানমারের রাখাইনে সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে দেশটির সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) সংঘাত চলছে। উভয়পক্ষে গোলাগুলি, মর্টার শেল, গ্রেনেড বোমা নিক্ষেপের ঘটনা ঘটছে। যে কারণে এর প্রভাব এসে পড়ছে এপারে মানুষের ওপর।’
হ্নীলার বাসিন্দা ইউনুস বলেন, তারাবির নামাজ পড়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। ঠিক রাত ১২টার পর মর্টার শেলের বিকট শব্দে বাড়ি-ঘর কেঁপে উঠল। তখন ভয়ে ঘুম ভেঙে যায়। বেশ কয়েকটি শুনতে পায় মর্টার শেলের শব্দ। এখন সবাই আতঙ্কে আছে।
শাহপরীর দ্বীপ জেটিঘাটের ইজারাদারের টোল আদায়কারী মোহাম্মদ ছিদ্দিক জানান, মঙ্গলবার সেহেরির সময় নাফ নদের ওপারে মিয়ানমার অভ্যন্তর থেকে বেশ কয়েকটি গোলাগুলি ও ভারী গোলাবর্ষণের শব্দ শুনতে পেয়েছে লোকজন। এতে নাফ নদে মাছ ধরতে যাওয়া জেলেরা আতঙ্কে রয়েছেন।
টেকনাফ পৌরসভার প্যানেল মেয়র মুজিবুর রহমান বলেন, রাত ১২টার দিকে বিকট শব্দের মর্টার শেলের বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে টেকনাফ পৌরসভার কয়েকটি গ্রাম। এতে লোকজনের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
বিজিবির টেকনাফ ২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘ওপারে সংঘাতের কারণে মাঝে মাঝে এপারে গোলাগুলির শব্দ ভেসে আসছে। তবে আমরা নজরদারি করছি রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ যেন না করে।’
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ছাত্রী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকাকে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে করা মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাবেক সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামকে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
কুমিল্লার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক আবু বকর সিদ্দিকী মঙ্গলবার এই আদেশ দেন। আগের দিন একই আদালত তাকে এক দিনের রিমান্ড দিয়েছিল।
একই মামলায় অবন্তিকার সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকী দু দিনের রিমান্ডে আছেন।
কুমিল্লার কোতোয়ালি থানার ওসি ফিরোজ হোসেন রিমান্ডের আদেশের তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, দুজনকে গ্রেপ্তারের পর কোতোয়ালি থানায় হস্তান্তর করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। কুমিল্লা জেলা পুলিশের একটি দল ডিএমপির কাছ থেকে দুজনকে রোববার রাতে কুমিল্লায় নিয়ে আসে।
গত শুক্রবার রাতে কুমিল্লার বাসায় অবন্তিকার ফ্যানের সঙ্গে গলায় রশি প্যাঁচানো ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার হয়।
মৃত্যুর আগে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন তিনি, যাতে আত্মহত্যা করতে যাচ্ছেন বলে জানান। আত্মহত্যার জন্য সহপাঠী আম্মান ও সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামকে দায়ী করেন এ শিক্ষার্থী।
অবন্তিকার মৃত্যুর ঘটনায় আম্মান ও দ্বীন ইসলামকে পুলিশ আটক করার কথা শনিবার রাতে জানান ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান।
পাবনা বেড়া উপজেলায় রাতের অন্ধকারে কবরস্থান থেকে ১৫টি কঙ্কাল চুরির অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলার আমিনপুরে সোমবার রাতে নতুন বাজার গোরস্থানে এ ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার সকালে বিষয়টি টের পান স্থানীয়রা।
চুরি হওয়া এক মরদেহের স্বজন মাসুদ রানা বলেন, ‘এটা ভাবতেই অবাক লাগছে। মহাসড়কের পাশে এই কবরস্থান থেকে কঙ্কাল চুরি কোনো সাধারণ ঘটনা নয়। আমাদের দাবি পুলিশ দ্রুত এই ঘটনা উদঘাটন করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবেন।’
আরেক স্বজন জাহিদ হাসান বলেন, ‘এতো দিন আমরা দেখে আসছি আমাদের দেশে বেঁচে থাকা অবস্থায় মানুষের নিরাপত্তা নেই। এখন দেখছি মরে গেলেও মানুষের লাশেরও নিরাপত্তা নেই।’
বিষয়টি নিশ্চিত করে আমিনপুর থানার ওসি হারুন-উর-রশীদ বলেন, রাতের কোনো এক সময় কবর খুঁড়ে কঙ্কাল চুরি করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। আজকে সকালে স্বজনরা কবরস্থানে দোয়া করতে গেলে সেখানে কবর খোঁড়া অবস্থায় দেখতে পান।
বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে ও তদন্ত সাপেক্ষে বিস্তারিত বলা যাবে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:কুমিল্লায় অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে মেয়াদোত্তীর্ণ সফট ড্রিংকস পাউডার তৈরি ও বিক্রির অপরাধে মেসার্স সিয়াম ফুড প্রোডাক্টসকে ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে বিএসটিআই।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে এ অভিযানে অবৈধভাবে তৈরিকৃত মালামাল ধ্বংস এবং সিলগালা করা হয় কারখানা।
কুমিল্লা জেলা প্রশাসন ও বিএসটিআইর যৌথ অভিযানে সোমবার কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার শুভপুর এলাকায় ওই কারখানায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়।
এ সময় অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে মেয়াদোত্তীর্ণ সফট ড্রিংকস পাউডার উৎপাদন ও বিক্রির অপরাধে মেসার্স সিয়াম ফুড প্রোডাক্টসকে বিএসটিআই আইন-২০১৮ এর সংশ্লিষ্ট ধারায় ৬০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়।
এ ছাড়া নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে বিপুল পরিমাণ অবৈধ মালামাল ধ্বংস করা হয় এবং কারখানার উৎপাদন সম্পূর্ণ বন্ধ রাখার নির্দেশ প্রদান করা হয়।
জেলা প্রশাসন কুমিল্লার সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ফরিদুল ইসলামের নেতৃত্বে পরিচালিত এ মোবাইল কোর্টে প্রসিকিউটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বিএসটিআই কুমিল্লার কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম শাকিল।
আরও পড়ুন:বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের এক শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বরগুনায় স্বামীর বাসা থেকে রোববার বিকেলে দেবশ্রী রায়ের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
প্রাণ হারানো দেবশ্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরার জেলার তালা উপজেলায়।
বরগুনা সদর থানার ওসি এ কে মিজানুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পারিবারিক কলহের জেরে দেবশ্রী আত্মহত্যা করেছে। স্বামীর সঙ্গে মনোমালিন্য ছিল বলে জেনেছি আমরা।’
তিনি জানান, এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে পাঠানো হয়েছে।
ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী অধ্যাপক শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘তার বাবার সঙ্গে কথা হয়। ময়নাতদন্তের পর তার মরদেহ গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তার ক্লাস প্রতিনিধি আমাকে জানিয়েছে পারিবারিক কলহের কারণে সে আত্মহত্যা করেছে।’
আরও পড়ুন:বাবা-ছেলের অর্থের দ্বন্দ্ব নিয়ে সালিসে কথা কাটাকাটির জেরে আসামিপক্ষের একজনের হাতে কামড় দিয়েছেন বাদীপক্ষের একজন।
সোমবার সকালে কিশোরগঞ্জের আদালতে আইনজীবী সমিতির ভবনে এ ঘটনা ঘটে।
আহত ব্যক্তিকে কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আর অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদকের হেফাজতে রাখা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলার কূর্শা পশ্চিমপাড়া এলাকার বাসিন্দা রুপালি হাজী। টাকা-পয়সার জন্য তাকে চাপ প্রয়োগ করা হয় বলে অভিযোগ তুলে দুই সন্তান নজরুল ও তাজরুলের নামে তিনি মামলা করেন আদালতে।
এ ছাড়া দীর্ঘদিন প্রবাসে থেকে বাবার কাছে আমানত রাখা টাকা-পয়সার হিসাব দেন না বলে অভিযোগ সন্তানদের। এ বিষয়টি নিয়ে আদালতে সমাধানের জন্য আসে উভয়পক্ষ।
সন্তানদের সঙ্গী হন মেয়ের জামাই শাহিন। আর রুপালি হাজীর সঙ্গী হয়ে আদালতে আসেন অভিযুক্ত হুমায়ুন। সমাধানের আলোচনার এক পর্যায়ে শুরু হয় তর্ক। তর্কের জেরেই ঘটে এমন ঘটনা।
রুপালি হাজীর ছেলে তাজরুল ইসলাম জানান, টাকা পয়সার হিসেব নিয়ে তাদের বাবার সঙ্গে বেশ কিছুদিন যাবৎ দ্বন্দ্ব চলছে। এ নিয়ে তার বাবা তাদের দুই ভাইয়ের নামে মামলা করেছেন। বিষয়টি সমাধানের জন্য তারা আদালতে এসেছিলেন।
তিনি জানান, আদালতে আসার পর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে তর্ক শুরু হলে তাদের বাবার সঙ্গে থাকা এক ভাড়াটে তার ছোট বোন জামাইকে ডান হাতে কামড় দিয়ে মাংস ছিড়ে নিয়ে যায়। তার ছোট বোন জামাই শাহিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
আহত মিনহাজ উদ্দিন শাহিন জানান, তার শ্বশুর রুপালি হাজীর সঙ্গে ছেলেদের ঝামেলা চলছিল। বিষয়টি সামাজিকভাবে সমাধানের জন্য আইনজীবী সমিতিতে এসেছিলেন তিনি। এ সময় তার শ্বশুরের সঙ্গে থাকা একজনকে বাইরে যেতে বলেন তিনি। আর তাতেই তার প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে কামড় দেন তাকে।
অভিযুক্ত হুমায়ুন কবীরের ভাষ্য, রুপালি হাজীর সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে তার ভালো সম্পর্ক। এ জন্য তার সঙ্গে আদালতে এসেছিলেন তিনি। এসে দেখেন রুপালি হাজীর ছেলেরা তার সঙ্গে তর্ক করছে। তিনি তাদেরকে থামতে বললে রুপালি হাজীর মেয়ের জামাই শাহিন তাকে ধরে ফেলেন। এক পর্যায়ে শাহিনকে কামড় দিতে বাধ্য হন তিনি।
কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক মো. মাকসুদুর রহমান জানান, সকালে কামড়ে আহত হয়ে শাহিন নামে একজন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আঘাতটা বেশ গুরুতর।
তিনি বলেন, কামড় দেয়া লোকটা যদি জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তবে আহত ব্যক্তির আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আহত ব্যক্তিকে আমরা প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিয়েছি, বর্তমানে তিনি শঙ্কামুক্ত।
কিশোরগঞ্জের আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম রতন জানান, রুপালী হাজী এবং তার ছেলেদের মধ্যে বিরোধ চলছিল। এ ঘটনায় বাবা বাদী হয়ে তার ছেলেদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। এ বিষয়টি সমাধানের জন্য তারা উভয় পক্ষ কোর্টে এসেছিল। বিভিন্ন বিষয় আলোচনার এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে তর্ক বেধে যায়। তখন রুপালী হাজীর সাথে থাকা হুমায়ুন নামে এক লোক তার ছেলেদের সাথে থাকা মিনহাজ উদ্দীন শাহিনকে (রুপালী হাজীর মেয়ের জামাই) কামড় দেয়।
তিনি বলেন, যেহেতু বাবা-ছেলে বিষয় তাই আমরা সমাধানের চেষ্টা করছি। সমাধান না হলে এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য