× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
Victims of the wrath of influential people Sharif Uddin
google_news print-icon

প্রভাবশালীদের রোষানলের শিকার: শরীফ উদ্দিন

প্রভাবশালীদের-রোষানলের-শিকার-শরীফ-উদ্দিন
দুদক থেকে চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিন। ছবি: নিউজবাংলা
‘চাকরি থেকে অপসারণের মতো কোনো কাজ আমি করিনি। চট্টগ্রামে সাড়ে তিন বছর কর্মরত ছিলাম। সেখানে অতি গুরুত্বপূর্ণ ও চাঞ্চল্যকর কিছু মামলা এবং অনুসন্ধান করেছি। এসব করতে গিয়ে একটি প্রভাবশালী মহলের রোষানলে পড়ি। সর্বশেষ ৩০ জানুয়ারি বাসায় এসে হুমকি দেয়। একপর্যায়ে তারা এটাও বলে, এক সপ্তাহের মধ্যে চাকরি খেয়ে নেবে। কাকতালীয় হলেও সত্য, ১৬ দিনের মাথায় আমাকে অপসারিত হতে হলো।’

আলোচিত নানা দুর্নীতির ঘটনা তদন্ত করে প্রশংসা কুড়ানো দুদক কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিন চৌধুরী বিশ্বাস করতে পারছেন না তাকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়েছে। নিউজবাংলাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, চাকরি থেকে অপসারণের মতো কোনো কাজ তিনি করেননি। তিনি প্রভাবশালীদের রোষানলের শিকার হয়েছেন।

শরীফ দুর্নীতি দমন কমিশনের চট্টগ্রাম কার্যালয়ে থাকার সময় নানা তদন্ত চালিয়ে আলোচিত হন। তাকে সেখান থেকে বদলি করা হয় পটুয়াখালীতে। বুধবার রাতে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয় তাকে।

বৃহস্পতিবার শরীফের আদেশটি গণমাধ্যমে আসার পর তোলপাড় পড়ে যায়। দুদকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এই আদেশকে সরকারি চাকরিবিধি, দুদকের চাকরিবিধি ও মানবাধিকার পরিপন্থি আখ্যা দিয়ে তা প্রত্যাহারের দাবিতে সংস্থাটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধনও করেন।

পরে দুদক সচিব মাহবুব হোসেন দাবি করেন, শরীফের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ আছে। তিনটি অভিযোগের তদন্ত চলছে। আরও ৭ থেকে ১০টি অভিযোগ রয়েছে। তবে এগুলো প্রকাশ্যে বলবেন না তিনি।

শরীফ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাকে যে চাকরি থেকে অপসারণ করা হবে, এটা আমি এক সেকেন্ডের জন্যও আঁচ করতে পারিনি।

‘১৬ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে আমি পটুয়াখালীতে অফিস করছিলাম। ওই সময় আমার এক সহকর্মী জানান, একটি চিঠি এসেছে। বলা হয়, দ্রুত এটি রিসিভ করে ঢাকায় পাঠাতে হবে। তখনই চিঠিটি রিসিভ করে সবকিছু বুঝিয়ে দিয়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশে চলে আসি।’

শরীফ বলেন, ‘চাকরি থেকে অপসারণের মতো কোনো কাজ আমি করিনি। চট্টগ্রামে সাড়ে তিন বছর কর্মরত ছিলাম। সেখানে অতি গুরুত্বপূর্ণ ও চাঞ্চল্যকর কিছু মামলা এবং অনুসন্ধান করেছি। এসব করতে গিয়ে একটি প্রভাবশালী মহলের রোষানলে পড়ি।

‘সর্বশেষ ৩০ জানুয়ারি বাসায় এসে হুমকি দেয়। একপর্যায়ে তারা এটাও বলে, এক সপ্তাহের মধ্যে চাকরি খেয়ে নেবে। কাকতালীয় হলেও সত্য, ১৬ দিনের মাথায় আমাকে অপসারিত হতে হলো।’

কোন সে প্রভাবশালী মহল?

এই প্রশ্নের জবাব দিতে চান না শরীফ। বলেন, ‘তারা কারা, সেটি আমি বলব না। কক্সবাজারে তিনটি প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণের অনিয়ম দুর্নীতি নিয়ে আমি একটি মামলা করি। যার তদন্ত ও চার্জশিট আমি জমা দিয়েছিলাম। ওই প্রকল্পসংশ্লিষ্ট একশ্রেণির টাউট-দালাল রয়েছে। এ চক্রটি কক্সবাজারে খুব বিখ্যাত ও প্রভাবশালী। এদের মধ্যে রাজনীতিক নেতা, পুলিশ, অ্যাডমিন ও সাংবাদিক আছে। এখান থেকে সবাই কমিশন পায়।

প্রভাবশালীদের রোষানলের শিকার: শরীফ উদ্দিন
শরীফ উদ্দিনের চাকরিচ্যুতির প্রতিবাদে সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে বৃহস্পতিবার প্রতিষ্ঠানটির কর্মীরা মানববন্ধন করেন। ছবি: সংগৃহীত

‘র‌্যাব ও ডিজিএফআই ২০২০ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি ভূমি অফিসের দুজন সার্ভেয়ারের বাসায় অভিযান চালিয়ে সাত বস্তার চেয়ে বেশি আলামত ও প্রায় নগদ ৯৩ লাখ ৬০ হাজার ১৫০ টাকা জব্দ করে৷ ওই নথিগুলো যাচাই করে আমি প্রমাণ পেয়েছি, এই টাউট সিন্ডিকেট চক্রটি কক্সবাজার এলএ অফিস নিয়ন্ত্রণ করে।

‘অনুসন্ধানে যাদের নাম এসেছে, তার মধ্যে ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছি। যাদের অনেকেই কোর্টে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। সেখান থেকে যাদের নাম এসেছে তাদের সম্পদ অনুসন্ধানের সুপারিশ করেছি।’

শরীফ জানান, তিনি পটুয়াখালীতে বদলি হওয়ার দিন চট্টগ্রামে রিপোর্ট জমা দেন। বলেন, ‘তখন থেকেই তারা বুঝে গেছে এই মামলা থেকে তারা রেহাই পাবে না। যদিও এর আগে তারা আমার সঙ্গে সমাঝোতার চেষ্টা করে। কিন্তু আমি তাতে রাজি হইনি।’

দুদকের অপসারিত উপপরিচালকের ধারণা, এই চক্রটিই তাকে সরানোর পেছনে লেগেছিল।

কক্সবাজার-বান্দরবানে ভোটার নিবন্ধন ইস্যু

এই প্রকল্প নিয়েও অনুসন্ধান করেছিলেন শরীফ। তার চাকরি থেকে অপসারণের পেছনে এ বিষয়টিও কাজ করে থাকতে পারে বলে ধারণা তার।

তিনি বলেন, ‘কক্সবাজার ও বান্দরবানে ৩২টি উপজেলাকে ইসি স্পেশালাইজড জোন অফ রোহিঙ্গা করে। এসব উপজেলায় ভোটার নিবন্ধন করার সময় খুব যাচাই-বাছাই করা হয়। এটিকে পুঁজি করে এখানকার পলিটিশিয়ান ও জনপ্রতিনিধিরা রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব পাইয়ে দিত।

‘আমি দীর্ঘদিন তাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করতে গিয়ে সফল হয়েছে। একপর্যায়ে ২০টি মামলা করি। সবগুলোই আমি অনুসন্ধান করে রিপোর্ট দিয়েছি। বেশির ভাগ মামলার বাদীও আমি।

‘চট্টগ্রাম থেকে বদলির পরদিন সর্বশেষ ২০২১ সালের ১৭ জুন যে মামলা করি, সেখানে নির্বাচন কমিশনের একজন সিনিয়র লেভেলের কর্মকর্তা থেকে শুরু করে অনেকজনকে আসামি করা হয়েছে। কক্সবাজারে ঈদগা উপজেলার আউলিয়াবাদ এলাকা আছে যেখানে ১৭০০-১৮০০ লোককের বাস। যাদের অধিকাংশই রোহিঙ্গা। এখান থেকে প্রতিনিয়ত মধ্যপ্রাচ্যে প্রচুর লোক যায়। মাদকের সঙ্গে জড়িত যারা মাদক ও সন্ত্রাসী অর্থায়নের সঙ্গেও জড়িত এ চক্রটি। এ বিষটি ধরে ফেলার কারণে যেদিন আমি বদলি হয়েছি, সেদিন এ চক্রটি এবং কক্সবাজার প্রেস ক্লাবের নেতা আব্বাস ফেসবুকে লেখালেখি করে। তারা আমার বিরুদ্ধে প্রচারণা ও সরিয়ে দেয়ার জন্য ফান্ডিংও করে।’

কর্ণফুলী গ্যাস সংযোগ প্রকল্প

শরীফুল বলেন, ‘কর্ণফুলী গ্যাস সংযোগ ও নিয়ম নিয়ে অনিয়ম দুর্নীতির বিষয় উদ্ঘাটন করে মামলাও করেছি। এক সাবেক এমপিপুত্রও এর সঙ্গে জড়িত ছিল। তারা বাড়ি এমডি আইয়ুব খান চৌধুরীর পাশেই। এই আইয়ুব খান মনে করেছে এ বিষয়গুলো আমি তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করেছি। কারণ তার দুই ছেলে সেখানে চাকরি করে। সে মনে করেছে পটুয়াখালী যাওয়ার পরও আমি তার বিরুদ্ধে লেগে আছি। এ ক্ষোভ থেকে সে গত ৩০ জানুয়ারি আমাকে হুমকি ও চাকরি থেকে সরানোর হুমকি দেয়।’

স্বাস্থ্য খাত বিষয়

শরীফুল বলেন, ‘চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য খাত নিয়েও আমি দুর্নীতি-অনিয়ম খুঁজে বের করেছি। চট্টগ্রামের বিএমএ নেতারা আমার পেছনে উঠেপড়ে লাগে। কক্সবাজারে ৫০ কোটির বেশি টাকা জব্দ করেছি। সেখানের এক কাউন্সিলর জাভেদ কায়সার মোহাম্মাদ নোবেলের ২৫ কোটি টাকা জব্দ করেছি। এসব চক্র একত্রিত হয় আমাকে সরানোর জন্য।

‘আমি পটুয়াখালীতে বদলি হওয়ার দুই মাস পর ২০২১ সালের ২১ জানুয়ারি থেকে কমিশনে আমার বিরুদ্ধে টানা একের পর এক অভিযোগ করা হয়েছে। সবগুলোই কক্সবাজারকেন্দ্রিক। অভিযোগের পর আমাকে যখন কমিশনে ডাকা হয়, তখন তাদের অভিযোগগুলোর ভাষা দেখেই আমি বুঝতাম সব একই চক্রের কাজ। অথচ এর আগে চট্টগ্রামে যখন ছিলাম আমার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগই পড়েনি।’

‘দুদকের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়, তুলে ধরেছি’

দুদক সচিবের দাবি, সংস্থাটির ভাবমূর্তি রক্ষায় শরীফুলকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়েছে।

দুদকের কোন ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছেন- এমন প্রশ্ন ছিল শরীফুলের কাছে। জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি রোহিঙ্গা আইডি পাসপোর্ট নিয়ে ২০টি মামলা করেছি। ৫০ কোটি টাকা জব্দ করেছি। আমি ইমেজ ক্ষুণ্ন করার মতো কোনো কাজ করিনি। বরং বৃদ্ধি করেছি বলে মনে করি।

‘দেশের স্বার্থে দেশপ্রেম নিয়ে কাজ করেছি। আমি মামলা করার সুপারিশ করেছি। আমি খুব কম নথিই নথিভুক্ত করেছি। দুদকের কাজ মামলা করে কোর্টে তদন্ত উপস্থাপন করা। আমি তো শুধু সুপারিশ করেছি, মামলা করার এখতিয়ার তো কমিশনের।’

অভিযানে উদ্ধার টাকা জমা না দেয়া প্রসঙ্গ

দুর্নীতি অভিযানে জব্দ করা টাকা জমা না দেয়ার যে অভিযোগ উঠেছে, সেটিও খণ্ডন করেছেন শরীফুল। তিনি বলেন, ‘১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ র‌্যাব টাকাসহ ইনভেন্ট্রি করেনি। কোভিডকালীন মামলা হওয়ার পর এ টাকা আমি এনে অফিসে রেখেছি। এটা আমার উপপরিচালক (ডিডি) জানতেন। জব্দকৃত সব টাকা ও নথি ভল্টে রাখতাম। দুদকের বিধিতে বলা নেই কতদিনের মধ্যে এই টাকা জমা দিতে হবে। যদিও এখন বুঝেছি টাকা জমা দিয়ে দিলে ভালো হতো।

‘কিন্তু আট মাসে ৩০ লাখ টাকার বেশি ইনভেন্ট্রি করতে পারিনি। বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে কথা বলি টাকাটি কীভাবে জমা দেয়া যায়। তারা বলে, যদি চালান না থাকে টাকাগুলো একটি ভল্টে রেখে তাদের দিয়ে দিলে তা জমা নেবে।

‘তখন আমি বললাম, দুই-তিন বছর পর যখন মামলাটার ট্রায়াল শুরু হবে তখন তো এটা নষ্ট হয়ে যাবে। ভেতরে কী আছে কেউ জানবে না। এই সেন্সে যে টাকাটা তো সার্কুলেট করতে হবে মার্কেটে। মার্কেটে সার্কুলেট করলে যখন মামলাটার ট্রায়াল শুরু হবে তখন সমপরিমাণ অর্থ কোর্টে দেবে।

‘পরে কক্সবাজার জেলার স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে আলাপ করছি যে, স্যার এটা কী করা যায়। তখন উনি বললেন যে, ‘আপনি চার্জশিটে দিয়ে দিলে আলামতগুলো প্রডিউস করতে পারেন।’

-আপনি কমিশনকে জানিয়েছিলেন?

‘না, আমার এখানে কমিশন বলতে আমার ডিডি। আমার সুপারভাইজার উনি। টাকা যে আমার কাছে সঞ্চিত ছিল তিনি জানতেন। আমি কক্সবাজার থেকে যখন টাকাটা নিয়ে এসেছি স্যাররা তো আমাকে ডেকে বলেছেনও যে, আসো শরীফ কীভাবে টাকাটা জমা দেয়া যায়? আমি বলেছি স্যার, এভাবে এন্ট্রি করেন। আমি একা, তদন্ত করব, অনুসন্ধান করব, গ্রেপ্তার করব, রিমান্ডে নেব, আমার তো কোনো বডি নেই।

-কেন বডি নেই, আপনাদের অফিসের লোকজন ছিল না?

না, আমাদের কোনো অ্যাসাইন নেই, তদন্ত কর্মকর্তা একা। আমাকে ওরা অফিশিয়ালি সাহায্য করতে বাধ্য। কারণ আমার তো কোনো লোকবল নেই।

সবচেয়ে দুঃখজনক ব্যাপার আমি বলি, কারণ এখানে তো কর্মকর্তা আরও আছে।

চট্টগ্রাম জেলার দুদকের সমন্বিত কার্যালয়-২ দায়িত্বে থাকাকালীন আমার কাছে ১৩০টা নথি ছিল। চাঞ্চল্যকর নথি, বড় বড় নথি। এসবের কারণে আমি চট্টগ্রামের সাড়ে তিন বছরে ছুটি কাটাতে পারিনি। নথির প্রেশারে আমার হাইপারটেনশন হয়ে গেছে। আমি এখন ১০-১২টা ওষুধ খাই। আমি ঘুমাতে পারিনি। সর্বাবস্থায় যাওয়ার আগে আমি চার্জশিটে উল্লেখ করে গিয়েছিলাম যে, এই টাকাটা আমার কাছে আছে, ভল্টে আছে। আমি যাওয়ার সময়, যখন আমাকে রিলিজ দেয়া হয়েছে, আমি টাকাটা বুঝিয়ে দিয়ে আসছি। আমার তো স্বাক্ষর আছে, আমি তো ডিডি স্যারকে টাকাটা বুঝিয়ে দিয়ে আসছি।

যখন আমি চলে আসছি, তখন কথাবার্তা মামলার বর্তমান তদন্তকারী কর্মকর্তা গত দুয়েক মাস আগে বাংলাদেশ ব্যাংকে ট্রেজারিতে জমা দিয়েছে।

এই টাকাটা জমা দিতে ওনার সাত-আট মাস লেগেছে। এগুলো ছাড়াও তো আমাদের যে বড় বড় ট্র্যাপ কেইসের টাকাটা- সেগুলো তো এখনও আমাদের অফিসে আছে।

আমি যে টাকাটা একেবারে আত্মসাৎ করে ফেলেছি- ভাই এটা সুযোগ আছে আমার?

আপনার বিরুদ্ধে বলা হচ্ছে যে আপনি নামে-বেনামে বাড়ি করেছেন বা ফ্ল্যাট নিয়েছেন, আপনার স্ত্রীর নামে, শ্বশুরের নামে?

শ্বশুরের কথা আমি বলব না, কারণ উনি বাংলাদেশের বিখ্যাত মুক্তিযোদ্ধা। আমার বিয়ের দুই মাস পরেই উনি মারা গেছেন। আমার শ্বশুরবাড়ির সবাই বড় বড় চাকরি করে, আমার শালা-সম্বন্ধিরা বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন, গুগলে চাকরি করেন। হিউজ টাকা ওরা উপার্জন করেন। আমার চাকরির পর যদি কোনো সম্পদ নিয়ে থাকি আমার স্ত্রীর নামে, তাহলে আপনারা যাই পাবেন- আমি হেবা করে দেব। বিনা টাকায় আমি হেবা করে দেব।

আমি অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন করেছি কি না, যদি তদন্ত করে পাওয়া যায়... আমিও আরেকটু বলে রাখি, আমরা চার ভাই। আমি চাকরিতে জয়েন করার আগে ৪৫ হাজার টাকা স্যালারি পেতাম, আমি ভেটেরিনারি ডাক্তার। আমার বাবা মারা গেছেন এই কোভিডকালে। বাবার পেনশনের ২৫ লাখ টাকা থেকে শুরু করে যাবতীয় টাকা সব আমার কাছে আছে। এবং আমরা চার ভাই স্টাবলিশড।

আপনি বাবা মারা যাওয়ার পর আপনার ভাইকে রেলওয়েতে চাকরি পাইয়ে দিতে রেলে হস্তক্ষেপ করেছেন এমন অভিযোগ আছে।

নো, প্রশ্নই ওঠে না। আমার ভাই তো এখনও ওই চাকরি করতে পারেনি। একমাত্র বাংলাদেশ রেলওয়েতে আছে পোষ্য কোটায় নিয়োগ দেয়া। আমার বাবা কর্তব্যরত অবস্থায় মারা গেছেন। এটার তদন্ত কমিটি হয়েছে। কমিটি থেকে তদন্ত রিপোর্ট ঢাকায় যায়। কেউ মারা গেলে তার উপযুক্ত কোনো ছেলে থাকলে চাকরিটা তাকে দেয়া হয়। আর যদি না থাকে তাহলে সে যেই লেভেলের, তাকে ওই লেভেলের একটা চাকরি দেবে।

তো সে (ভাই) মাস্টার্স কমম্প্লিট করছে। তাকে তো আর চতুর্থ শ্রেণির জন্য দেয়া যায় না। তো সে তৃতীয় শ্রেণির জন্য আবেদন করছে। এটা প্রক্রিয়াধীন, ঢাকা থেকে ডিজি মহোদয় অনুমতি দিয়েছেন। এখন তো তার চাকরি হয়নি, কোনো পোষ্য কোটায়ও হয়নি। এখানে আমি কীভাবে ইন্টারফেয়ার করলাম?

আপনি দুদকের কর্মকর্তা হিসেবে কোনো প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করেছিলেন কি না।

দুদকের কর্মকর্তা হিসেবেও কোনো প্রভাব খাটায়নি। কীভাবে প্রভাব বিস্তার করব? আমি তো বুঝছি না। হ্যাঁ, এটা ঠিক আমি রেলওয়ে পরিবারের সন্তান। আমাকে সবাই চেনেন, কারণ আমি রেলওয়ের তদন্ত অনুসন্ধান করেছি। ৮৬৩ জন খালাসি নিয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতি- এটা তো যেমন তেমন বিষয় না। ৮৬৩ জন খালাসি নিয়োগে অনিয়ম-দুর্নীতির মামলা করেছি, সেখানে তো জিএমও আসামি, এজিএমও আসামি, অনেকে আসামি। সেখানে এটা উদ্ধার করেছি আমি।

আমি যদি মামলা করি, তাহলে তো ওরা আমার বিরুদ্ধে লাগবেই। আমি কীভাবে প্রভাব বিস্তার করলাম? আমি তো ওদের পক্ষ নিয়ে আমার ভাইকে সেখানে দিতে পারতাম।

আপনি বর্তমান পরিস্থিতিতে নিরপত্তাহীনতায় আছেন কি না?

৩০ জানুয়ারি যে হুমকি দেয়া হয়েছিল বাসায় এসে, আসলে এটা নিয়ে আমি জিডি করেছি। সেখানে বেশ কিছু স্লাং ওয়ার্ড ছিল। এরপর হুমকির বিষয়টি আমি মাননীয় কমিশনার স্যারকে জানিয়েছি। তো এরপর ১৬ দিনের মধ্যে তো চাকরি থেকেই রিমুভ হয়ে গেলাম।

রিমুভেলের দিন বিকেলে আমি কিছু বিষয় জেনেছিলেম, আমার তো বন্ধু-বান্ধব রয়েছে, তো এক ধরনের ডিজএভিয়ারেন্সের বিষয় এখানে আছে। ক্ষতি করার বিষয় আছে। আর যেহেতু চাকরি করাকালীন সময়ে হুমকি দিয়েছে সে, চাকরি না থাকলে কী হবে?

আর একটা জিনিস কি, আমি যে মামলাগুলো করেছি বা নথিগুলো দিয়েছি- এগুলোর ভবিষ্যৎ কী হবে তাহলে? আমি তো নেই এখন।

ওদের জন্য একটা সুবিধা আছে। শরীফকে যদি কোনোভাবে অ্যাসল্ট করা যায় বা তার কোনো ক্ষতি করা যায়। এটা তো ওদের সুবিধা। কারণ এটা তো ওদের ইউনিটি। সবকিছুই এখানে হতে পারে।

হুমকি পাওয়ার পর কমিশনকে যেহেতু জানিয়েছেন, কমিশন আপনাকে কোনো ধরনের সাপোর্ট করেছে?

হ্যাঁ, ডিডি স্যার আমাকে ডাকিয়েছিলেন। আমি লিখিত স্টেটমেন্ট দিয়েছি।

হুমকি আপনার বাসায় এসে দেয়া হয়েছিল বলছেন। এর বাইরে অন্য কোনোভাবে অন্য কারও কোনো হুমকি ছিল?

একটাই কথা বলি, স্রোতের প্রতিকূলে গেলে বিভিন্ন বাধা-বিপত্তি আসবেই। এটা ধরে নিয়েই সাহসিকতার সঙ্গে কাজ করেছি। আসলে এগুলো তো ডকুমেন্টারিয়েল বিষয় না, এটা স্বাভাবিক থাকবে। আমরা তো এই দেশের নাগরিক। আর একটার সঙ্গে আরেকটা যোগসূত্র রয়েছে। বিশেষ করে কক্সবাজারকেন্দ্রিক এটার যোগসূত্র রয়েছে।

আপনি এখন অনেকটা আত্মগোপনে থেকে দিন কাটাচ্ছেন...

আত্মগোপনে ঠিক না, একটু লুকিয়ে আছি আরকি। কারণ ভালো লাগে না। আমি তো আসলে চাকরির বয়স তো আমার খুব কম, মাত্র সাত বছর। তো এই বয়সে আমার জন্য ধাক্কাটা একটু হয়ে গেল আরকি। মানে আমার মনে হয় আমি সাংবিধানিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছি।

যত যা-ই বলি না কেন, আমি তো দুদকের একজন কর্মীই ছিলাম। আমি তো দুদকের একজন স্টাফ হিসেবে দুদকের ইমেজের বাইরে যাওয়ার কখনও সুযোগ নেই। মাননীয় কমিশনার স্যার সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, আমি এটা রিভিও করব। সর্বোপরি কমিশনার স্যারও হয়তো বুঝবেন জিনিসটা।

আপনি কমিশনে রিভিউ আবেদন করবেন নাকি উচ্চ আদালতে যাবেন?

না, আইনত যা যা করা লাগে, আমি তা তা করব। কারণ আমার তো চাকরি করতে হবে। আমি তো সমাজের কাছে একেবারে অপদস্ত হয়ে গেলাম।

সাংবিধানিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হওয়া বলতে আপনি কী বোঝাতে চাচ্ছেন?

দেখুন, বাংলাদেশের সাংবিধানিক আইনের ১৩৫-এ বলা আছে, প্রজাতন্ত্রের কোনো কর্মচারীকে যদি আপনি চাকরি থেকে বহিষ্কার করতে চান, তাহলে অবশ্যই তাকে কারণ দর্শানোর সুযোগ দিতে হবে। আমাদের দুদকের ৫৪-২ যে বিধিটা আছে, স্থায়ী কর্মচারীর ক্ষেত্রে একেবারে বাদ দেয়া, আমার মনে হয় বিধিটা এখনও সাব-জুডিশিয়ারি। এই বিধি নিয়ে মাননীয় চেম্বার বিচারপতি আমাদের পক্ষে রায় দিয়েছেন। তবে আপিল বিভাগ বোধহয় এটা স্টে করছে।

এই বিধির প্রথম শিকার আপনিই?

হ্যাঁ, এটা আমার ক্ষেত্রেই প্রথম।

আপনার চাকরিচ্যুতির পর আপনার সহকর্মীরা আন্দোলনে নেমেছেন, এটা নিয়ে কিছু বলবেন?

আসলে এ বিষয়ে কোনো কথাই বলতে চাচ্ছি না। আমি তো এখন চাকরিতে নেই। তবে সিনিয়র কলিগ এবং স্যাররা আমার প্রতি যে পরিমাণ সহমর্মিতা ও আন্তরিকতা দেখিয়েছেন- এটা আসলে প্রত্যাশা ছিল না। দুদকের কর্মকর্তারা, আমরা যারা আছি, এটা আসলে রাষ্ট্রের একটা সেনসিটিভ প্রতিষ্ঠান। এটা কেন হলো তা আসলে আমি বুঝতে পারিনি। ওনারা ওনাদের জায়গা থেকে করেছেন হয় তো।

পটুয়াখালীতে গিয়ে কী করেছেন?

পটুয়াখালীতে আমি প্রায় আট মাস ছিলাম তো, খুব কম ছুটিই আমাকে দেয়া হতো। ওখানে ফাইলের তেমন কোনো কাজ করতাম না, ফাইল আমাকে দেয়া হতো না।

ঢাকায় সচিব বলেছিলেন আপনাকে অপসারণের আগে কয়েকবার ডাকা হয়েছে, আসলে কয়বার ডাকা হয়েছে?

হ্যাঁ, আমাকে তিনবার ডেকেছিলেন। আমাদের তিনটা ডিপি তো, এই তিনটায় মাননীয় চেয়ারম্যান স্যার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। আমি ওনাকে সন্তুষ্ট করার মতো উত্তর দিয়েছি। আমাদের ডিপার্টমেন্ট প্রসিডিউর যেগুলা, সেগুলো তদন্ত চলতেছে। এখনও তদন্ত চলে, মনে হয় একটা রিপোর্ট দেয়নি। পটুয়াখালীতে যাওয়ার পর পরই ডিপিগুলো হয়েছে, সবগুলো চট্টগ্রাম-২ কেন্দ্রিক।

আপনি এখন অনেকটা নীরবে থাকতে চাচ্ছেন?

হ্যাঁ। কারণ আমি ভেটেরিনারিতে পড়াশোনা করেছি তো, বেসরকারি চাকরি করব। কারণ আমার তো রিজিক লাগবে। রিজিকের মালিক তো আল্লাহ। আর আইনি লড়ায়ও চালিয়ে যাব, আইনি লড়াই চালিয়ে যাব এই জন্যই যে কারণ আমার প্রতি অবিচার করা হয়েছে। আমি এটা অবিচারের ফল দেখতে চাই, আমি অন্তত চাকরিতে যোগদান করতে চাই।

আমি একজন ডিএডি, আমি রাষ্ট্রীয় একটি প্রতিষ্ঠানকে বিতর্কিত করব, আল্লাহ না করুক- আমার তো এর আগে মৃত্যু হওয়া শ্রেয়। আমার মাদার প্রতিষ্ঠানকে যদি বিতর্কিত করি, আমি তো থাকলাম না। কারণ দুদকের ইমেজ ই তো আমার ইমেজ। আর আমি বিতর্কিত করেছি কি না, চট্টগ্রামের সাংবাদিকরা আর কক্সবাজারের সাংবাদিকরা এটা ভালো বলতে পারবেন।

আরও পড়ুন:
সেই অধ্যক্ষকে সন্দীপে বদলি
শরীফের চাকরিচ্যুতি কি প্রভাবশালীদের কারণে: টিআইবি
শরীফের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ: দুদক সচিব
সাড়া জাগানো দুদক কর্মকর্তা চাকরিচ্যুত
মালির স্ত্রী সাজা পেলেন দুর্নীতির মামলায়

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
I will not be in any position in the post government government in February
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যমে ড. ইউনূসের নিবন্ধ

ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন, পরবর্তী সরকারের কোনো পদে আমি থাকব না

ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন, পরবর্তী সরকারের কোনো পদে আমি থাকব না

যুক্তরাষ্ট্রের ইউটাহভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডেসারাট নিউজে নিবন্ধ লিখেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এতে গত বছর বাংলাদেশের গণঅভ্যুত্থান, অন্তর্বর্তী সরকার প্রধানের দায়িত্ব গ্রহণ, সংস্কারসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিস্তারিত বলেছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার নিবন্ধটি প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যমটি। এতে প্রফেসর ইউনূস জানিয়েছেন, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে। আর নির্বাচন শেষেই তিনি রাষ্ট্রের সব দায়িত্ব ছেড়ে দেবেন। নির্বাচনে যে সরকার গঠিত হবে সেটির কোনো পদেই থাকবেন না বলে স্পষ্ট করেছেন তিনি।

ড. ইউনূস লিখেছেন, ‘আমি স্পষ্ট করেছি : জাতীয় নির্বাচন আগামী ফেব্রুয়ারিতে হবে। এরপর যে সরকার আসবে সেখানে নির্বাচিত বা নিযুক্ত করা কোনো পদে আমি থাকব না।’

তিনি বলেছেন, ‘আমার সরকারের মূল লক্ষ্য হলো একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজন করা। যেখানে রাজনৈতিক দলগুলো ভোটারদের সঙ্গে তাদের পরিকল্পনাগুলো বলতে পারবে। আমাদের মিশন হলো, সব বৈধ ভোটার যেন তাদের ভোট দিতে পারে, যারা প্রবাসে আছেন তারাও। এটি একটি বড় কাজ। কিন্তু আমরা কাজটি সম্পন্ন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

প্রফেসর ইউনূসের নিবন্ধটি হুবহু তুলে ধরা হলো:

এক বছর আগে, এই মাসেই বাংলাদেশের হাজার হাজার সাহসী ও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ শিক্ষার্থী, যাদের পেছনে ছিল সমাজের সব স্তরের অগণিত মানুষের সমর্থন, আমাদের জাতির ইতিহাসে একটি অন্ধকার অধ্যায়ের অবসান ঘটিয়েছিল। শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ, যা শেষ পর্যন্ত নিষ্ঠুরভাবে দমন করা হয়েছিল, তার মাধ্যমেই তারা একজন স্বৈরাচারকে ৫ আগস্ট দেশ ছাড়তে বাধ্য করে।

এরপর যে ক্ষমতার শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছিল, তাতে ছাত্রনেতারা আমাকে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্ব দিতে অনুরোধ জানায়। এই সরকারের দায়িত্ব ছিল দেশকে স্থিতিশীল করা এবং গণতন্ত্রের নতুন পথ তৈরি করা। শুরুতে আমি রাজি হইনি। কিন্তু যখন তারা জোর করল, তখন আমি তরুণদের জীবন উৎস্বর্গের কথা ভাবলাম, আমি তাদের ফিরিয়ে দিতে পারলাম না। ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট, সুশীল সমাজের নেতাদের নিয়ে গঠিত একটি উপদেষ্টা পরিষেদের সঙ্গে আমি প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ গ্রহণ করি।

এই গণআন্দোলন শুরু হয়েছিল সরকারি চাকরিতে ন্যায্যতা নিশ্চিত করা থেকে। এর মাধ্যমে বিশ্বের প্রথম ‘জেনারেশন জেড’ বিপ্লবের সূত্রপাত হয়েছিল। এই বিপ্লব তরুণদের জন্য একটি আদর্শ হয়ে উঠেছে, যা দেখায় কীভাবে তারা মানবজাতির সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলো—যুদ্ধ, জলবায়ু পরিবর্তন, দারিদ্র্য, বেকারত্ব এবং বৈষম্য—মোকাবিলার জন্য এগিয়ে আসতে পারে।

আমরা ভাগ্যবান যে তারা ‘তাদের পালা আসার জন্য’ অপেক্ষা করেনি। যখন সভ্যতা অনেক দিক থেকে ভুল পথে চালিত হচ্ছে, তখন তারা বুঝতে পেরেছিল যে এখনই পদক্ষেপ নেওয়ার সময়।

স্বৈরাচার থেকে গণতন্ত্রে আমাদের উত্তরণের একটি স্পষ্ট প্রমাণ ছিল যখন দ্য ইকোনমিস্ট সাময়িকী বাংলাদেশকে তাদের ‘২০২৪ সালের সেরা দেশ’ হিসেবে ঘোষণা করে। আমরা তখন অর্থনীতি পুনর্গঠন, নির্বাচনের প্রস্তুতি এবং চুরি যাওয়া বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের সম্পদ উদ্ধারে এতটাই ব্যস্ত ছিলাম যে, আমরা তখনো বুঝতে পারিনি বিশ্ব আমাদের এই অগ্রগতিকে কতটা গুরুত্বের সঙ্গে লক্ষ্য করছে। ডেসারেট নিউজ আমাদের এই যাত্রার চমৎকার কাভারেজ দিয়েছে, যা আমরা গভীরভাবে উপলব্ধি করি।

আমাদের অন্যতম প্রধান অগ্রাধিকার ছিল গণঅভ্যুত্থানে যারা নির্মমভাবে নিহত হয়েছিল এবং যারা গুরুতর আহত হয়েছিল—সেই হাজার হাজার পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করা। এরসঙ্গে আমরা বিগত সরকার ও তার সহযোগীদের লুট করা অর্থ উদ্ধারেও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছি।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের তথ্য অনুযায়ী, গত ১৫ বছরে সাবেক স্বৈরাচারী সরকার বছরে ১০ থেকে ১৫ বিলিয়ন ডলার আত্মসাৎ করেছে। এই অর্থ পুনরুদ্ধার করার জন্য যুদ্ধ করাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

যখন আমি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করি, তখন অব্যবস্থার মাত্রা দেখে আমি হতবাক হয়ে যাই। পুলিশ তাদের দায়িত্ব পালন করছিল না। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাচ্ছিল। অর্থনীতি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল। গণতন্ত্র ভেঙে পড়েছিল।

সরকারি কর্মচারীরা, যারা ক্ষমতাসীন দলের প্রতি যথেষ্ট আনুগত্য না দেখানোর কারণে পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত হয়েছিলেন, তারা ন্যায়বিচার চেয়েছিলেন।

ধীরে ধীরে আমরা পুনর্গঠন শুরু করেছি। যেসব রাজনৈতিক দল স্বৈরাচারের প্রতিরোধ করেছিল, তাদের পাশাপাশি নতুন গঠিত দলগুলোও নতুন ধারণা, শক্তি এবং কর্মপ্রচেষ্টা নিয়ে এগিয়ে এসেছে। সশস্ত্র বাহিনী, যারা ৫ আগস্ট বিক্ষোভকারীদের ওপর গণহত্যা চালাতে দেয়নি, তারা তাদের পেশাদারিত্ব বজায় রেখেছে এবং আইন-শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধারে সহায়তা করেছে।

আমি এটি স্পষ্ট করে দিয়েছি: আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আমি এরপরের সরকারের কোনো নির্বাচিত বা নিযুক্ত পদে থাকব না।

আমাদের প্রশাসনের মূল লক্ষ্য হলো একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন সম্পন্ন করা, যেখানে রাজনৈতিক দলগুলো ভোটারদের কাছে তাদের বক্তব্য তুলে ধরতে পারবে। বিদেশে বসবাসকারী নাগরিকসহ সব যোগ্য নাগরিককে ভোট দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া একটি বিশাল কাজ। কিন্তু আমরা এটি সম্পন্ন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

আমরা আমাদের পররাষ্ট্রনীতিতেও পরিবর্তন এনেছি। যেন আমাদের প্রতিবেশী এবং বৈশ্বিক অংশীদারদের সঙ্গে ইতিবাচক সম্পর্ক জোরদার করা যায়।

বিশ্বের অষ্টম বৃহত্তম জনসংখ্যার দেশ হিসেবে, বাংলাদেশ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির একটি মূল কেন্দ্র হতে পারে এবং হওয়া উচিতও। আমরা বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞ।

রুবিওরে সঙ্গে সম্প্রতি আমার একটি ফলপ্রসূ এবং বন্ধুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে, যা আমাদের উভয় দেশের বাণিজ্যের জন্য ইতিবাচক ছিল।

যুক্তরাজ্য, জাপান, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, বিশ্বব্যাংক গোষ্ঠী এবং জাতিসংঘও আমাদের সহায়তা করার জন্য এগিয়ে এসেছে। আমরা এই পথে একা নই।

নির্বাচনের প্রস্তুতির পাশাপাশি বিশেষজ্ঞ, রাজনৈতিক দল এবং নাগরিকদের নিয়ে একটি ব্যাপক সংস্কার প্রস্তাব তৈরি করেছি। সম্ভবত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো একটি সাংবিধানিক সংশোধনী আনা। যা এমন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করবে যাতে বাংলাদেশ আর কখনো স্বৈরাচারী শাসনে ফিরে না যায়।

বাংলাদেশ যদি শেষ পর্যন্ত এমন একটি দেশে পরিণত হয় যেখানে দেশের সব মানুষ নিরাপত্তা ও মর্যাদার সঙ্গে বসবাস করতে পারবে। তবে তা হবে লাখ লাখ বাংলাদেশির দৃঢ়তা, কল্পনা এবং সাহসের ফল।

এই গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে আমাদের সঙ্গে যারা আছেন তাদের সকলের দায়িত্ব রয়েছে। তারাই আমাদের সর্বোত্তম আশা—এবং সম্ভবত আমাদের শেষ আশা।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Authorization of Visa Exemption Agreement with Pakistan

পাকিস্তানের সঙ্গে ভিসা অব্যাহতি চুক্তি অনুমোদন

পাকিস্তানের সঙ্গে ভিসা অব্যাহতি চুক্তি অনুমোদন

সরকারি এবং কূটনীতিক পাসপোর্টে পারস্পারিক ভিসা অব্যাহতি সুবিধা পেতে পাকিস্তানের সঙ্গে চুক্তির অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।

পরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এ তথ্য জানান।

প্রেস সচিব বলেন, ‘পাকিস্তানের মতো এ রকম চুক্তি আমরা আরও ৩১টি দেশের সঙ্গে করেছি। এই চুক্তি পাঁচ বছরের জন্য করা হবে । এর ফলে যারা অফিসিয়াল পাসপোর্ট এবং কূটনীতিক পাসপোর্ট ব্যবহার করছেন, তারা এখন বিনা ভিসায় পাকিস্তান সফর করতে পারবেন। একইভাবে পাকিস্তানের যারা অফিসিয়াল এবং কূটনীতিক পাসপোর্ট ব্যবহার করছেন— তারাও বাংলাদেশে সফর করতে পারবেন কোন ভিসা ছাড়াই। এটা একটা স্ট্যান্ডার্ড প্র্যাকটিস।’

উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানান, এ বিষয়ে পাকিস্তান সরকারের সম্মতি পাওয়া গেছে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Authorization of the draft of the Revenue Policy and Revenue Management Amendment Ordinance

রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা (সংশোধন) অধ্যাদেশের খসড়ার অনুমোদন

রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা (সংশোধন) অধ্যাদেশের খসড়ার অনুমোদন

উপদেষ্টা পরিষদের ৩৯তম বৈঠকে আজ ‘রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন হয়েছে।

ঢাকার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়।

বৈঠকে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের কূটনৈতিক ও অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীগণের পারস্পরিক ভিসা অব্যাহতি চুক্তির খসড়া অনুমোদন করা হয়।

এছাড়া, উপদেষ্টা পরিষদকে সংস্কার কমিশনসমূহের সুপারিশ বাস্তবায়ন অগ্রগতি সম্পর্কে অবহিত করা হয়।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The Ministry of Social Welfare wants to work through the coordination team to speed up the pace the new secretary of the ministry

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় যে গতিতে এগোচ্ছে আরও গতি বাড়াতে সমন্বয় টিমের মাধ্যমে কাজ করতে চাই: মন্ত্রণালয়ের নতুন সচিব

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় যে গতিতে এগোচ্ছে আরও গতি বাড়াতে সমন্বয় টিমের মাধ্যমে কাজ করতে চাই: মন্ত্রণালয়ের নতুন সচিব

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নতুন সচিব ড. মোহাম্মদ আবু ইউছুফ উপস্থিত সকলের প্রতি শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেছেন, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় যে গতিতে এগোচ্ছে আরও গতি বাড়াতে সমন্বয় টিমের মাধ্যমে কাজ করতে চাই। আমি সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যাবতীয় সেবা দরিদ্র, দুঃস্থ, অসহায়, অসচ্ছল মানুষের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দিতে সকলের সহযোগিতা চাই। এজন্য আমরা সবাই একসাথে কাজ করবো।
তিনি আজ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের সাথে পরিচিতি ও মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
নতুন সচিব বলেন,
আমি এই মন্ত্রণালয়ের সুনাম কাজের মাধ্যমে, আইন কানুন মেনে মানুষের সেবা দ্রুত নিশ্চিত করতে আপনাদের সহযোগিতা চাই। তিনি বলেন, সচিবের রুম আপনাদের জন্য সার্বক্ষণিক খোলা থাকবে এবং ফাইল দ্রুত নিষ্পত্তি করে কাজের যথার্থতা নিশ্চিত করবেন। আপনারা নির্ভয়ে কাজ করবেন, আমার সার্বিক সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। পাশাপাশি আমিও আপনাদের থেকে শিখতে চাই এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The Ministry of Youth and Sports is going to organize the National Policy Competition 2021

জাতীয় নীতি প্রতিযোগিতা ২০২৫ আয়োজন করতে যাচ্ছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়

জাতীয় নীতি প্রতিযোগিতা ২০২৫ আয়োজন করতে যাচ্ছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দেশের নয়টি সরকারি এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে আয়োজন করা হচ্ছে জাতীয় নীতি প্রতিযোগিতা ২০২৫। জাতীয় নীতি প্রতিযোগিতা ২০২৫ এর প্রতিপাদ্য "বাংলাদেশ ২.০: তারুণ্যের নেতৃত্বে আগামীর পথে " নির্ধারণ করা হয়েছে। এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীরা ধারণাপত্র জমা দিয়ে শুরু করবে এবং নির্বাচিত দলসমূহ পূর্ণাঙ্গ নীতিপত্র প্রস্তুত ও উপস্থাপনা করবে। বিজয়ীরা পুরস্কৃত হওয়ার পাশাপাশি তাদের নীতি প্রস্তাবগুলো সরকারিভাবে পলিসি প্রণয়নের ক্ষেত্রে বিবেচনায় নেওয়া সুযোগ সৃষ্টি করা হবে।

নীতি প্রতিযোগিতার বিষয়গুলো হল-

১. রাজনীতিতে তরুণদের অংশগ্রহণ ও গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ

২. জুলাই পরবর্তীতে সময়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি: জাতীয় স্বার্থ ও বৈদেশিক সম্পর্কের পুনঃসংজ্ঞায়ন

৩. নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ: শিক্ষা ও দক্ষতার রূপান্তর

৪.দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি প্রতিষ্ঠা ও সাংস্কৃতিক সংযোগ: জুলাই অভ্যুত্থানের পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশী তরুণদের ভূমিকা

৫. গুজব প্রতিরোধে বাংলাদেশের করণীয় ও বাংলাদেশের বৈশ্বিক ভাবমূর্তি

৬. জুলাই গণভুত্থান ও সাংবিধানিক পুনর্গঠন: তরুণদের আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ

৭.বাংলাদেশের এলডিসি থেকে উত্তরণ: সম্ভাবনার ব্যবহার ও নতুন চ্যালেঞ্জের মোকাবেলা প্রস্তুতি

৮. সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা অর্জনের পথে: ব্যবস্থা পুনর্গঠন ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ

৯. চতুর্থ শিল্প বিপ্লব: বাংলাদেশের উদ্বোধনী সম্ভাবনা ও প্রয়োগের ক্ষেত্র

  1. কৃষি, নদী উন্নয়নের গতিপথ: বঙ্গীয় ব-দ্বীপের পুনরাবিষ্কার।

রাষ্ট্রের নীতি নির্ধারণী বিষয়সহ রাষ্ট্র পরিচালনার সকল ক্ষেত্রে তারুণ্যের অন্তর্ভুক্তি ও অংশগ্রহণ অপরিহার্য। আমাদের কাঙ্ক্ষিত দীর্ঘমেয়াদি পরিবর্তনের জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন নীতিগতভাবে অগ্রসর হওয়া। তরুণদের চিন্তাপ্রক্রিয়া, মননশীলতা এবং গবেষণাধর্মী সক্ষমতাকে সামনে রেখে এক নতুন পরিবর্তনের সূচনা করা সম্ভব আর সেটি হতে হবে রাষ্ট্রের নীতি নির্ধারণী প্রক্রিয়ায় তারুণ্যের অন্তর্ভুক্তির মধ্য দিয়ে।

এ সময় যুব ও ক্রীড়া সচিব বলেন, এই প্রতিযোগিতা কেবল একটি প্রতিযোগিতা নয় এটি আগামী প্রজন্মের নেতৃত্বে বিনিয়োগ। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, তরুণদের বুদ্ধিবৃত্তিক অংশগ্রহণই আমাদের রাষ্ট্রকে দীর্ঘমেয়াদি টেকসই উন্নয়নের পথে এগিয়ে নেবে এবং বাংলাদেশ ২.০-কে বাস্তবায়নের ভিত্তি গড়ে তুলবে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Jatiya Sangsad Election September 7 published a list of draft polling booths

জাতীয় সংসদ নির্বাচন: ১০ সেপ্টেম্বর খসড়া ভোট কেন্দ্রের তালিকা প্রকাশ

জাতীয় সংসদ নির্বাচন: ১০ সেপ্টেম্বর খসড়া ভোট কেন্দ্রের তালিকা প্রকাশ

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আগামী ১০ সেপ্টেম্বর খসড়া ভোটকেন্দ্রের তালিকা প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
আজ বুধবার ইসির উপ-সচিব মো. মাহবুব আলম শাহ স্বাক্ষরিত একটি চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে, যা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র স্থাপন ও ব্যবস্থাপনা নীতিমালা-২০২৫’ কমিশনে অনুমোদিত হয়েছে এবং তা ২৬ জুন ২০২৫ তারিখে বাংলাদেশ গেজেটের অতিরিক্ত সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছে। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২-এর অনুচ্ছেদ ৮ (১) ও (২) অনুযায়ী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটকেন্দ্রের তালিকা সংরক্ষণ ও চূড়ান্তকরণের জন্য গেজেটে কমপক্ষে ২৫ দিন পূর্বে তা প্রকাশ করার বিধান রয়েছে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে এলাকা ভিত্তিক ভোটকেন্দ্রের খসড়া তালিকা প্রকাশ, এই তালিকার ওপর দাবি/আপত্তি গ্রহণ এবং তা নিষ্পত্তির মাধ্যমে নীতিমালা অনুযায়ী চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুতের নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
কমিশন নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী : খসড়া ভোটকেন্দ্রের তালিকা প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর, দাবি/আপত্তি গ্রহণের শেষ তারিখ: ২৫ সেপ্টেম্বর, দাবি/আপত্তি নিষ্পত্তির শেষ তারিখ: ১২ অক্টোবর, সম্ভাব্য চূড়ান্ত ভোটকেন্দ্রের তালিকা প্রস্তুত ও প্রকাশ: ২০ অক্টোবর।
উল্লেখিত সময়সূচি অনুযায়ী এবং ভোটকেন্দ্র স্থাপন নীতিমালা অনুসারে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করতে জেলা পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে নির্ধারিত ছকের আলোকে খসড়া ও সম্ভাব্য চূড়ান্ত ভোটকেন্দ্রের সংখ্যাগত তথ্য (সফটকপিসহ) আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার মাধ্যমে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্বাচন সহায়তা-১ শাখায় পাঠাতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The species of indigenous fish must be protected by identifying reservoirs across the country Fisheries and Livestock Advisors

সারাদেশে জলাশয়গুলো চিহ্নিত করে দেশি মাছের প্রজাতি রক্ষা করতে হবে: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

সারাদেশে জলাশয়গুলো চিহ্নিত করে দেশি মাছের প্রজাতি রক্ষা করতে হবে: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, সারাদেশ জলাশয়গুলো চিহ্নিত করে দেশি মাছের প্রজাতি রক্ষা করতে হবে। তিনি বলেন, বিভিন্ন জলাশয়ে মাছের নানান প্রজাতি রয়েছে। এসব জলাশয় চিহ্নিত করে দেশীয় প্রজাতির মাছ সংরক্ষণ ও বৃদ্ধি করতে হবে।

উপদেষ্টা বুধবার (২০ আগষ্ট) রাজধানীর ফার্মগেটে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলে 'টেকসই মৎস্যসম্পদ ব্যবস্থাপনায় অভয়াশ্রমের গুরুত্ব ও ভবিষ্যত করণীয়' -শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন। সেমিনারটির আয়োজন করে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই)।

সারাদেশে জলাশয়গুলো চিহ্নিত করে দেশি মাছের প্রজাতি রক্ষা করতে হবে: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, অভয়াশ্রম গড়ে তোলা ও রক্ষা করা মৎস্যসম্পদ উৎপাদনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেননা মুক্ত জলাশয়ের পরিমাণ দিন দিন আশঙ্কাজনক হারে কমছে।

এর পেছনের কারণ হিসেবে তিনি বলেন, এখানে আগে নীতি-নির্ধারণীতে হয়তোবা মনোযোগ কমছিল। তাই আমরা এখাতে গুরুত্ব দিচ্ছি। আমাদের মুক্ত জলাশয় গড়ে তুলতে যা করণীয় তা করতেই হবে।

জিনগত বিলুপ্তি রোধ করা দরকার উল্লেখ করে মৎস্য উপদেষ্টা বলেন, মাছের প্রজাতিগুলো রক্ষা করা এটি শুধু বাংলাদেশের জন্য নয় বরং আন্তর্জাতিক মৎস্যসম্পদের প্রয়োজনে করতে হবে। কারণ আমরা প্রাকৃতিকভাবে এমন স্থানে রয়েছি যেখানে মাছ না খেয়ে বাঁচার উপায় নেই।

৪১ প্রজাতির মাছ ফিরিয়ে আনা হয়েছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, দেশে ৬৪ প্রজাতির মাছ বিলুপ্তপ্রায় হয়ে গিয়েছিল। সেখানে বিএফআরআইর গবেষণার ফলে ৪১ প্রজাতির মাছ ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।

মাছ শিকারে বিষ ও বিদ্যুতের ব্যবহারকে উদ্বেগের কারণ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মানুষ কত নিষ্ঠুর তারা মাছ শিকারে বিষ ও বিদ্যুতের ব্যবহার করছে। এটি হচ্ছে মানুষের লোভ ও তাৎক্ষণিক লাভের কারণে।

প্লাস্টিকদূষণ মারাত্মক আকার ধারণ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মৎস্যসম্পদ ধ্বংসের পেছনে পানি ও প্লাস্টিকদূষণ অন্যতম ক্ষতির কারণ। সম্প্রতি প্লাস্টিক বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে কোন সমঝোতায় আসতে পারেনি। প্লাস্টিক চুক্তি মানুষের পক্ষে ও প্রকৃতির জন্য ক্ষতিকর হওয়ায় বাংলাদেশও স্বাক্ষর না করে চলে এসেছে।

বিএফআরআইর মহাপরিচালক ড. অনুরাধা ভদ্রের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন মন্ত্রণালয়ের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) মো. তোফাজ্জেল হোসেন, সম্মানিত অতিথি ছিলেন মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের চেয়ারম্যান ফারাহ শাম্মী ও মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবদুর রউফ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএফআরআইর ঊধ্বর্তন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. মশিউর রহমান। এসময় বিএফআরআই এর বিজ্ঞানীবৃন্দ, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, মৎস্যজীবী ও সুধীজন উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য

p
উপরে