রেলের শহর নীলফামারীর সৈয়দপুরে ছোট-বড় মিলিয়ে ৫০০ লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর সঙ্গে জড়িত প্রায় পাঁচ হাজার শ্রমিক; যাদের নেই কোনো প্রাতিষ্ঠানিক জ্ঞান কিংবা প্রশিক্ষণ। পুরোনো যন্ত্র ব্যবহার করেই তারা তৈরি করছেন কৃষিতে ও শিল্প-কারখানায় ব্যবহৃত মেশিনের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ।
বাংলাদেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পক্ষেত্রে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং সম্ভাবনাময় খাত। সরকার এ খাতটিকে রপ্তানিমুখী করতে বিশেষ উদ্যোগ নিলেও এ খাত বিকাশে কোনো সহযোগিতা পাচ্ছেন না এখানকার উদ্যোক্তারা।
তারা বলছেন, নির্দিষ্ট জোন না থাকা, অর্থনৈতিক সমস্যা এবং সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে এ শহরের লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পের বিকাশ ঘটছে না।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এ শিল্পের বিকাশে দেশের বৃহত্তম রেলওয়ে কারখানায় সাবকন্ট্রাক্ট হিসেবে যন্ত্রাংশ সরবরাহ, সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক থেকে ঋণপ্রাপ্তিতে সহজলভ্যতা, কারিগরি ও প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণ, আধুনিক মেশিনের ব্যবহার এবং লাইট ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের জন্য নির্দিষ্ট জোন স্থাপন করা প্রয়োজন।
তারা মনে করেন, এসব সুবিধা নিশ্চিত করা হলে একদিকে যেমন এ শিল্পের বিকাশ ঘটবে, অন্যদিকে লাভবান হবে সরকার। আর চীন কিংবা জাপান থেকে হালকা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে উৎপাদিত যন্ত্র আমদানি করার প্রয়োজন হবে না, বরং বাংলাদেশই রপ্তানি করতে পারবে এসব যন্ত্রাংশ।
সৈয়দপুর শহর ঘুরে দেখা গেছে, শহরের যত্রতত্র ভাড়া দোকানঘর কিংবা বাড়ি-ঘরে লাইট ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের যন্ত্র তৈরিতে ব্যস্ত শ্রমিকরা। কোনো দোকানে ৫ জন, কোথাও ১০ জন আবার কোথাও ১৫ জন নিয়ে চলছে তাদের এই কর্মযজ্ঞ।
এই পেশায় সংসার চলে শ্রমিক ইমরান হোসেনের। স্বামী-স্ত্রী আর দুই সন্তান নিয়ে চারজনের সংসার চালাতে হয় তাকে। এখন দিন হাজিরা হিসেবে পান ৭০০ টাকা।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘সপ্তাহে ৩০ টাকা নিয়ে কাজ শুরু করেছিলাম। এরপর দৈনিক ৩০০ টাকা থেকে এখন দৈনিক ৭০০ টাকা পাচ্ছি। এই দিয়েই আমার সংসার চলে।’
যে শিল্পে তিনি কাজ করেন, এর ওপর তার নেই কোনো প্রশিক্ষণ বা প্রাতিষ্ঠানিক জ্ঞান। তার ভাষ্য, ‘আমাদের হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ বা প্রাতিষ্ঠানিক কোনো জ্ঞান নেই। বাবা এই কাজ করেছিলেন, আমিও দেখে দেখে শিখেছি। ভারী ভারী মেশিনে কাজ করতে হচ্ছে এখন।’
আরেক শ্রমিক সুলতান আলী বলেন, ‘অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে আমাদের কাজ করতে হয়। কারণ এখন যে মেশিনগুলো ব্যবহার হচ্ছে তা অত্যন্ত পুরোনো। মান্ধাতা আমলের মেশিন।’
এ সময় হতাশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘অনেক সময় দুর্ঘটনায় পড়তে হয়। কেউ আমাদের খবর রাখেন না। কোনো সুযোগ-সুবিধাও পাই না।’
ফয়সাল ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কসের স্বত্বাধিকারী মঈন আনসারী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের এখানকার যন্ত্রের অনেক চাহিদা রয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রামেও যায়। কিন্তু আমরা সরবরাহ করতে পারি না।
অর্থনৈতিক সংকটের বিষয় উল্লেখ তিনি বলেন, ‘দিনে দিনে কাঁচামালের মূল্য বাড়ছে, সে হিসেবে অর্থ সংকুলান হয় না। যে জিনিস ৬০ টাকায় কিনতাম, এখন সেটি ১০০ টাকায় কিনতে হয়। যত ব্যবসায়ী আছেন, সবাই নানা সংকটে পড়েছেন। যেভাবে চলছে, তাতে ভবিষ্যতে আমরা অন্ধকার দেখছি।’
শুধু অভিজ্ঞতা দিয়ে মেশিন তৈরি করা হয় জানিয়ে ব্যবসায়ী সানি খান বলেন, ‘জুট মিল, ময়দা মিল, তামাক ফ্যাক্টরি, টেক্সটাইল মিলে এক্সপেয়ার পার্টস রিপেয়ার বা নতুন করে বানিয়ে দেয়া হয়। কাজের অভিজ্ঞতা থেকে খড় কাটা, সুতা বানানো, ধান ভাঙা মেশিনসহ বিভিন্ন উপকরণ তৈরি করছি।
‘এ ছাড়া ভারত বা চীনের যন্ত্রও আমরা মেরামত কিংবা নতুন করে তৈরি করে দেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘দেশের বৃহৎ রেলকারখানা সৈয়দপুরে অবস্থিত। এখানকার কাজ আমরা করতে পারি না। অন্যরা কাজ পায় তারা আমাদের দেয়, সেগুলো আমরা তৈরি করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দেই। অথচ এই কাজ আমাদের পাওয়ার কথা।’
এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে সরকারের সহযোগিতা চান মাসুম ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের স্বত্বাধিকারী ও বাংলাদেশ লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নুর উদ্দিন দুলাল। নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই শিল্পটাকে টিকিয়ে রাখতে হলে সবার আগে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। কারণ হাজার হাজার মানুষ এর সঙ্গে জড়িত। আমরা সরকারকে দিচ্ছি, কিন্তু আমরা পাচ্ছি না।
‘আমরা ব্যাংক ঋণ পাই না, এর জন্য মর্গেজ চায়। এটা তো আমার নেই। আমরা খোলামেলা জায়গায় ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছি।’
এই শিল্পের জন্য নির্দিষ্ট জোনের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এই এলাকায় যদি নির্দিষ্ট একটি জোন করে দেয়া হয়, তাহলে এক বাউন্ডারিতে কাজ করতে পারব এবং এক পল্লিতে থাকতে পারব। আমরা মান্ধাতা আমলের যন্ত্র ব্যবহার করছি, অথচ লেটেস্ট টেকনোলজি এসেছে, কিন্তু আমরা ব্যবহার করতে পারছি না। এটাতে সরকারকে সহায়তা করতে হবে।’
কৃষিতে আমাদের কত ভূমিকা অথচ আমরা পিছিয়ে রয়েছি। আমাদের উৎপাদিত মেশিন দেশের বিভিন্ন জায়গায় যাচ্ছে। সরকার যে মেশিন ৬০ থেকে ৭০ লাখ দিয়ে কিনে আনছে, বিদেশ থেকে ওই মেশিন আমরা ৮ থেকে ১০ লাখ টাকায় তৈরি করে দিতে পারি। ফলে সরকারের অনেক টাকা সাশ্রয় হবে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং মালিক সমিতির পরিচালক ও সৈয়দপুর পৌরসভার কাউন্সিলর এরশাদ হোসেন পাপ্পু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রাজধানী ঢাকার ধোলাইখালের পর সৈয়দপুরের অবস্থান। এই শহরে এই শিল্পের সঙ্গে ৫০০ প্রতিষ্ঠানে পাঁচ হাজার শ্রমিক জড়িত। অথচ তারা আজ উপেক্ষিত।’
আফসোস নিয়ে তিনি বলেন, ‘কৃষিতে আমাদের কত ভূমিকা অথচ আমরা পিছিয়ে রয়েছি। আমাদের উৎপাদিত মেশিন দেশের বিভিন্ন জায়গায় যাচ্ছে। সরকার যে মেশিন ৬০ থেকে ৭০ লাখ টাকা দিয়ে কিনে আনছে বিদেশ থেকে, ওই মেশিন আমরা ৮ থেকে ১০ লাখ টাকায় তৈরি করে দিতে পারি। ফলে সরকারের অনেক টাকা সাশ্রয় হবে।’
‘আমাদের শিল্প সম্প্রসারণ হলে মেশিন আমদানি নয়, বরং বাংলাদেশ রপ্তানি করতে পারবে।’
জানতে চাইলে বিসিক শিল্পনগরীর কর্মকর্তা মশিউর রহমান বলেন, ‘লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পের জন্য বেশকিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। বিশেষ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড, রেলওয়ে, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডসহ বিভিন্ন দপ্তরে সাবকন্ট্রাক্টের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ঋণের বিষয়ে ব্যাংকগুলোর সঙ্গে সমন্বয়ের চেষ্টা করা হচ্ছে।’
‘নির্দিষ্ট একটি জোনের যে বিষয়টি এসেছে, এটি নিয়ে আমরা ভাবছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে এটি সম্ভব কি না, দ্রুত এর উদ্যোগ নেয়া হবে।’
শেরপুরে নালিতাবাড়ী উপজেলার কাটাবাড়ী সীমান্তের বিদ্যুতায়িত হয়ে আরও একটি একটি বন্যহাতি নিহত হয়েছে। বনবিভাগের মধুটিলা রেঞ্জের আওতাধীন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে শনিবার (৫ জুলাই) সকালে বনবিভাগের লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে হাতিটির মরদেহ উদ্ধার করে।
খাদ্যের সন্ধানে পাহাড় থেকে নেমে আসা হাতিটি বৈদ্যুতিক ফাঁদে পড়ে নিহত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে বনবিভাগ।
মধুটিলা রেঞ্জের রেঞ্জার দেওয়ান আলী ঘটনাটি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, হাতিটির শুড়ে পোড়া ক্ষতের দাগ রয়েছে। এটির বয়স ১৫ থেকে ২০ বছর হবে। এটি একটি মাদি হাতি। এ ব্যাপারে পরবর্তী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সাম্প্রতিককালে মধুটিলা রেঞ্জের আওতাধীন এলাকায় খাদ্যের সন্ধানে বন্যহাতি লোকালয়ে নেমে আসার ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। খেতে ফসল না থাকায় হাতির দল বাড়িঘরেও হানা দিচ্ছে। এতে স্থানীয়ভাবে অনেক পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল। যেখানে বন্যহাতির দেহটি পড়ে ছিল, সেখানে কোনো ধরনের বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম না থাকলেও হাতিপাগাড় ক্যাম্পের আশপাশে অনেক বসতি ও বাড়িঘর রয়েছে।
এ নিয়ে চার মাসের কম সময়ের ব্যবধানে মধুটিলা রেঞ্জ এলাকায় তিনটি বন্যহাতির মরদেহ উদ্ধার করল বনবিভাগ।
এর আগে গত ২০ মার্চ পূর্ব সমশ্চুড়া গ্রামের লালনেংগড় এলাকায় বিদ্যুতায়িত হয়ে নিহত একটি বন্যহাতির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তারপর গত ২৯ মে দাওধারা পাহাড় থেকে সদ্যোজাত একটি হাতিশাবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
ঘন ঘন হাতির মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছেন পরিবেশ ও প্রকৃতিপ্রেমীরা।
নিধারঞ্জন কোচ নামে এক অধিকারকর্মী নিজের ফেসবুক ওয়ালে শনিবার নিহত হাতির মরদেহের ছবি পোস্ট করে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে লিখেছেন, ‘আবারো বন্যহাতির মৃত্যু। এর শেষ কোথায়? হাতি-মানুষের দ্বন্দ্ব নিসনে সরকারি উদ্যোগ কী? ক্ষতিপূরণ প্রদানই কি যথেষ্ট? হাতি-মানুষের সহাবস্থানের পথ খুঁজতে খুঁজতে এশিয়ান হাতি নাই হয়ে যাবে!’
সিলেটের ওসমানীনগরে এনা ও ইউনিক পরিবহনের দুটি বাসের সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই একজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন।
শনিবার (৫ জুলাই) সকাল ৬টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কুরুয়া বাজারের পাশে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত রাজু মিয়ার (২৬) বাড়ি ফরিদপুর জেলার তারাকান্দা থানায়। তিনি ইউনিক বাসের হেলপার ছিলেন।
দুর্ঘটনায় আহতদের মধ্যে অন্তত দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সিলেট থেকে ছেড়ে আসা ইউনিক পরিবহনের বাসের সঙ্গে ঢাকা থেকে আসা এনা পরিবহনের বাসটির সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই ইউনিকের হেলপার রাজু মিয়ার নিহত হন। বেপরোয়া গতিতে ভুল পাশ থেকে এসে এনা পরিবহনের ওই কোচটি এ দুর্ঘটনা ঘটায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ফায়াস সার্ভিস, ওসমানীনগর থানা পুলিশ ও শেরপুর হাইওয়ে পুলিশ এসে হতাহতদের উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
দুর্ঘটনার পর কুরুয়া বাজারের দুই পাশে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে কয়েক কিলোমিটার যানজট দেখা দেয়। পরে সকাল সোয়া ১০টার দিকে দুর্ঘটনাকবলিত গাড়ি দুটি সরিয়ে যানজট নিরসন করে পুলিশ।
শেরপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু তাহের দেওয়ান জানান, দুই গাড়ির সংঘর্ষ হলে বিকট শব্দে স্থানীয়রা এগিয়ে গিয়ে প্রাথমিক উদ্ধারকাজ শুরু করেন। পরে স্থানীয় থানা পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তাতে যোগ দেন।
তিনি আরও জানান, হাইওয়ে পুলিশ রাজুর লাশ উদ্ধার করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। বাস দুটিকে রাস্তা থেকে সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়েছে।
কেশবপুরের ঐতিহ্য কালোমুখো হনুমান খাদ্য সংকট ও বন উজাড় হয়ে যাওয়ায় বিভিন্ন এলাকায় চলে যাচ্ছে। প্রয়োজনীয় খাবার না পেয়ে মারাও যাচ্ছে। কালোমুখো হনুমান রক্ষার দাবি উঠেছে।
জানা গেছে, একসময় কেশবপুরে ছিল কালোমুখো হনুমানের অভয়ারণ্য। বন উজাড় হয়ে যাওয়ায় এবং খাদ্য সংকটে সময়ের গতির সঙ্গে কমে যাচ্ছে হনুমান। বর্তমানে ১৮০ থেকে ২০০টি হনুমান কেশবপুরে রয়েছে বলে স্থানীয় বন বিভাগ জানায়। এখান থেকে ৪/৫ বছর আগে ছিল ২৫০ থেকে ৩০০ টি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, দেশ বিভক্তির আগে ভারতের মাড়োয়াররা ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য যশোরের কেশবপুরে বসবাসের পাশাপাশি আসা-যাওয়া করত। এ সময় তাদের যানবাহনে করে দুটি কালোমুখো হনুমান ভারত থেকে কেশবপুরে আসে। সেই থেকে হনুমানের এখানে পত্তন শুরু হয়। ওই এক জোড়া হনুমান থেকে এখানে শত শত হনুমানের কালের আবর্তনে ওরা আজ বিলুপ্তির পথে। একসময় কেশবপুর অঞ্চলে ঘন বনজঙ্গল ছিল। এসব বনের ফল ও লতাপাতা খেয়ে ওরা জীবিকা নির্বাহ করত। বর্তমানে জনসংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি বন উজাড়সহ ঘনবসতি এবং এলাকায় অবৈধ ইটভাটায় গিলে খাচ্ছে এসব বনের কাঠ। এতে উজাড় হচ্ছে বন। এদিকে কেশবপুর উপজেলায় পল্লীবিদ্যুতের তারে কভার সিস্টেম না থাকায় প্রায়ই বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ওরা মারা যাচ্ছে। খাদ্য সংকটের কারণে কেশবপুরের হনুমান দেশের বিভিন্ন এলাকায় চলে যাচ্ছে।
উপজেলা বন বিভাগের কর্মকর্তা মোনায়েম হোসেন বলেন, কেশবপুর এলাকায় বনজঙ্গল কমে যাওয়ার কারণে হনুমানের খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। ওদের রক্ষায় সরকারিভাবে খাদ্য সরবরাহ করা হচ্ছে।
কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেকসোনা খাতুন বলেন, হনুমান রক্ষায় সরকারিভাবে খাদ্য সরবরাহ করা হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন এনজিও ব্যক্তি গত ভাবেও অনেকেই খাদ্য দেয়, যার কারণে ওরা গ্রামাঞ্চল ছেড়ে বর্তমানে শহরে বেশি বিচরণ করছে।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন করোনা আক্রান্ত এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত জেবল হক (৮০) কবিরহাট উপজেলার চাপরাশিরহাট ইউনিয়নের লামছি গ্রামের মৃত গনু মিয়ার ছেলে।
বুধবার (২ জুলাই) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. রাজীব আহমেদ চৌধুরী। এর আগে, গতকাল মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাত ১০টার দিকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে তার মৃত্যু হয়।
ডা. রাজীব আহমেদ চৌধুরী বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। গত মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে ওই বৃদ্ধ হাসপাতালে ভর্তি হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে মারা যান তিনি। এদিকে গত ২৪ ঘন্টায় নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের এক জনের নমুনা পরীক্ষায় একজনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা.মরিয়ম সিমি বলেন, মারা যাওয়া ব্যক্তি সকালে হাসপাতালে ভর্তি হয়। দুপুরে তার করোনা শনাক্ত হওয়ার পর সেখানে রাতে তার মৃত্যু হয়। এখন পর্যন্ত নোয়াখালীতে মোট ৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। কিট সল্পতার কারণে উপজেলা পর্যায়ে করোনা টেস্ট এখনো শুরু করা হয়নি।
সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের নেতৃত্ব নিয়ে চলমান বিরোধের জেরে ক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেমসহ সাংবাদিকদের উপর অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৩০ সাংবাদিক আহত হয়েছেন।
অভিযোগ উঠেছে, ক্লাবের কথিত সভাপতি মাদকাসক্ত আওয়ামী দোসর আবু সাঈদ ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারীর নেতৃত্বে আল ইমরান ও অমিত ঘোষ বাপ্পাসহ ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্তরা এই হামলা চালায়।
সোমবার (৩০ জুন) সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে এই হামলায় ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের সাংবাদিক ও প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম, ভোরের আকাশের সাংবাদিক আমিনুর রহমান, ডিবিসি নিউজের সাংবাদিক বেলাল হোসেন, অনির্বানের সোহরাব হোসেনসহ অন্তত ৩০ সাংবাদিক গুরুতর আহত হয়েছেন।
হামলার শিকার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রেসক্লাবে একটি সভা করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। ঠিক সেই মুহূর্তে আবু সাঈদ ও আব্দুল বারীর নেতৃত্বে আলিপুর থেকে আনা ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্তরা আমাদের উপর পরিকল্পিতভাবে হামলা করে। তাদের হামলায় আমাদের অন্তত ৩০ জন সাংবাদিক ও সদস্য আহত হয়েছেন।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, আবু সাঈদ ও আব্দুল বারী দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে প্রেসক্লাব দখল করে রেখেছেন এবং তাদের মতের বিরুদ্ধে গেলেই এভাবে হামলা ও নির্যাতন চালানো হয়।
এই ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনায় সাতক্ষীরার সাংবাদিক মহলে তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। সাংবাদিকরা অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছেন।
ঘটনার পর থেকে প্রেসক্লাব এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
কুমিল্লার দাউদকান্দি পৌরসভার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। বাজেট ঘোষণা করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও দাউদকান্দি পৌর প্রশাসক রেদওয়ান ইসলাম।
সোমবার (৩০ জুন) দুপুরে পৌরসভা হলরুমে এ বাজেট ঘোষণা করা হয়। বাজেটে সর্বমোট আয় ৪২ কোটি ৯১ লাখ ৫৯ হাজার টাকা ও মোট ব্যয় ৩৬ কোটি ৭৪ হাজার টাকা প্রস্তাব করা হয়। পৌর প্রশাসক রেদওয়ান ইসলাম তার প্রস্তাবিত বাজেটে ২০২৫-২৬ অর্থ বছরে রাজস্ব খাত থেকে ১৩ কোটি ২৩ লাখ ৪১ হাজার ৩ শত ৩১ টাকা ও উন্নয়ন খাত থেকে ২৯ কোটি ৬৮ লাখ ১৮ হাজার ৪৫ টাকা আহরনের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। বাজেটে উদ্ধৃত্ত ধরা হয়েছে ৬ কোটি ১৭ লাখ ২ হাজার ৩ শত ৭৮ টাকা।
এছাড়াও বাজেটে খাতওয়ারী ব্যয়ের হিসেবে দেখা যায় রাজস্ব খাতে ব্যয় ৯ কোটি ৫৯ লাখ ৫৭ হাজার টাকা এবং উন্নয়ন ব্যয় দুই কোটি ১৫ লাখ টাকা ধরা হয়েছে।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.হাবিবুর রহমান,পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম, হিসাবরক্ষক শাহাদাত হোসেনসহ পৌরসভার অন্যান্য কর্মকর্তারা।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে মাদকাসক্ত হয়ে মাতলামি করার প্রতিবাদ করায় ইয়াছিন (৩৮) ও সিপন( ৩২) নামে দুই যুবক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আহতদের মধ্যে একজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং অপরজনকে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
শুক্রবার দিবাগত রাতে উপজেলার মুড়াপাড়া টঙ্গীরঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
গুলিবিদ্ধ ইয়াছিন মুড়াপাড়ার হাউলিপাড়া এলাকার ইদু মিয়ার ছেলে এবং সিপন টঙ্গীরঘাট এলাকার আলাউদ্দিনের ছেলে।
রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তরিকুল ইসলাম জানান, রাত ১১টার দিকে ইয়াছিন তার স্ত্রীকে নিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে খালাতো বোনের বাড়ি যাচ্ছিলেন। পথে স্থানীয় সোহরাব নামের এক যুবক মাদকাসক্ত অবস্থায় তাদের উদ্দেশে গালিগালাজ করলে ইয়াছিন প্রতিবাদ করেন। পরে তিনি খালাতো ভাই সিপনকে নিয়ে স্থানীয় অহিদুল্লার বাড়িতে গিয়ে ঘটনার কথা জানান। সেখানেই সোহরাব ক্ষিপ্ত হয়ে পিস্তল দিয়ে তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে ইয়াছিনের মাথায় ও সিপনের পায়ে গুলি লাগে।
তাদের প্রথমে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সিপনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং ইয়াছিনকে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গুলির খোসা উদ্ধার করেছে এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করেছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
মন্তব্য