তাদের ঠিক প্রথাগত প্রেম ছিল না। ছিল পরস্পরের প্রতি ভালো লাগা, শ্রদ্ধাবোধ, বিশ্বাস আর আকর্ষণ। দুজন দুজনের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিলেন জীবনে চলার পথে সঙ্গী হবেন, একসঙ্গে জীবন কাটাবেন, বিয়ে করে সংসার করবেন; হবেন পরস্পরের প্রতি নির্ভরশীল, বন্ধু ও সহযোগী।
আজকের যুগের মতো হাতে হাত রেখে পার্কে বা রেস্টুরেন্টে মুখোমুখি বসার পরিবেশ-সুযোগ বা ইচ্ছে কোনোটাই ছিল না তাদের। ইচ্ছা ছিল লেখাপড়া শেষে কম-বেশি গুছিয়ে নিয়ে বিয়ে করবেন, কিন্তু বিশেষ পরিস্থিতির কারণে একজনের লেখাপড়া শেষ হওয়ার আগেই তারা বিয়ের পিঁড়িতে বসতে বাধ্য হন। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী এবং দৈনিক সংবাদের প্রয়াত সম্পাদক বজলুর রহমানের প্রেম-বিয়ে-ভালোবাসার গল্পটি এ রকম।
সফল রাজনীতিক, দুবারের কৃষিমন্ত্রী, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী তার প্রেম ও বিয়ের গল্প নিউজবাংলার কাছে তুলে ধরেছেন।
মতিয়া চৌধুরী ও বজলুর রহমানের পরিচয় ষাটের দশকের শুরুতে, বরিশালে। মতিয়া চৌধুরী পিরোজপুরের সন্তান। বজলুর রহমান ময়মনসিংহের। বজলুর রহমান তখন বরিশালে তার গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করছিলেন। থাকতেন শহরের একটি মেসে। সেখানে তার রুমমেট ছিলেন মতিয়া চৌধুরীর ছোট মামা মোস্তফা জামাল হায়দার, যিনি মতিয়া চৌধুরীর চেয়ে মাত্র আট মাসের বড় ছিলেন। এ কারণে মামার সঙ্গে তার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল।
মামার সূত্রেই মামার রুমমেট বজলুর রহমানের সঙ্গে পরিচয় হয় মতিয়ার। পরবর্তী দেখা-সাক্ষাৎগুলোতে ধীরে ধীরে ভালো লাগা গড়ে ওঠে। পরিচয়ের পর থেকেই মতিয়া চৌধুরীদের বাসায় বজলুর রহমানের যাতায়াত বেড়ে যেতে থাকে। বাসার আড্ডার ভিড়ে তারা বুঝে নেন একে অপরের মনের কথা। দুজন সিদ্ধান্ত নেন লেখাপড়া শেষে সুবিধামতো সময়ে বিয়ে করবেন। বিয়ে তারা করেছিলেন, কিন্তু সেটা সুবিধামতো সময়ে হয়নি; বরং ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ সময়ে। ১৯৬৪ সালের ১৮ জুন পারিবারিক আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে তাদের বিয়ে হয়, কিন্তু বিয়ের আগে ঘটে এক নাটকীয় ঘটনা।
ইডেন কলেজে এইচএসসি এবং বিএসসি শেষে ১৯৬৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জীববিজ্ঞানে মাস্টার্সে ভর্তি হন মতিয়া চৌধুরী। ততদিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতিতে মাস্টার্স শেষ করে দৈনিক সংবাদে সহকারী সম্পাদক (অ্যাসিস্ট্যান্ট এডিটর) হিসেবে যোগ দিয়েছেন বজলুর রহমান। দুজনেই ছাত্র ইউনিয়ন করতেন, তবে ক্যাম্পাসে বা রাজপথে তাদের দেখা-সাক্ষাৎ হয়নি বললেই চলে। তাদের ভাব বিনিময় হতো মতিয়া চৌধুরীদের বাসায়।
মতিয়া চৌধুরী আগে থেকে সক্রিয় ছাত্র রাজনীতি করতেন, যা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আরও বেগবান হয়েছে। ১৯৬৩-৬৪ সালে ছাত্র ইউনিয়ন থেকে রোকেয়া হলের ভিপি এবং ১৯৬৪ সালে ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন তিনি। সে সময় যে কয়েকজন ছাত্রনেতা আইয়ুববিরোধী আন্দোলনে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাদের অন্যতম ছিলেন মতিয়া চৌধুরী। তাকে আন্দোলন থেকে কোনোভাবে নিবৃত্ত করতে না পেরে সরকার ভিন্ন পন্থা বেছে নেয়। তার বাবা তৎকালীন পুলিশ কর্মকর্তা মহিউদ্দিন আহমেদ চৌধুরীকে চাপ দিতে শুরু করে সরকার।
একপর্যায়ে মতিয়া চৌধুরীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার হুমকিও দেয়া হয়। এ বিষয়ে মতিয়া জানান, তারা বাবাকে একটি চিঠি দেয়া হয়, যাতে লেখা ছিল ‘কন্ট্রোল ইয়োর ওয়ার্ড (Ward), আদারওয়াইজ ডিপার্টমেন্টাল অ্যাকশন শুড বি টেইকেন এগেইনস্ট ইউ।’
এরপর মতিয়া চৌধুরী সিদ্ধান্ত নেন বাবাকে অভিভাবকের দায়িত্ব থেকে ভারমুক্ত করার। তিনি তার ভাইয়ের মাধ্যমে বজলুর রহমানকে চিঠি পাঠান, যাতে বজলুর রহমান বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসে। চিঠি পেয়ে মতিয়া চৌধুরীর বাসায় বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে হাজির হন বজলুর রহমান। মতিয়া চৌধুরীর বাবা তার সঙ্গে কথা বলেন।
তখন মতিয়া তার বাবাকে জানান, তিনি অভিভাবকত্ব থেকে তাকে মুক্তি দিতে চান। এর প্রতিক্রিয়ায় তার বাবার মুখে কষ্টের ছায়া পড়ে। তিনি বজলুর রহমানের প্রস্তাবে আপত্তি না করে তাকে পারিবারিকভাবে প্রস্তাব পাঠাতে বলেন। পরে বজলুর রহমান অভিভাবকদের নিয়ে মতিয়া চৌধুরীর বাসায় গিয়ে প্রস্তাব দেন। আলাপ-আলোচনা শেষে দুই পরিবারের সম্মতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে ১৯৬৪ সালের ১৮ জুন তাদের বিয়ে হয়।
মতিয়া চৌধুরী জানান, বিয়ের অল্প কিছুদিন পরই তিনি গ্রেপ্তার হন; শুরু হয় ছন্নছাড়া জীবন। রাজনীতি এবং সরকারবিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে পুলিশের গ্রেপ্তার এড়াতে বারবার পালিয়ে বেড়াতে হয়েছে; সংসার সেভাবে করা হয়ে ওঠেনি।
রাজনৈতিক জীবনে মতিয়া চৌধুরীকে ১৫ বার গ্রেপ্তার হতে হয়েছে। এর মধ্যে আইয়ুব শাসনামলে পরপর চারবার জেলে যেতে হয়েছে তাকে। শেষ দুই বছর টানা জেলেই থাকতে হয়েছে। ১৯৬৯ সালে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জাতি স্বৈরশাসকের কবল থেকে মুক্তি পেলে তিনিও মুক্তি পান।
১৯৭৫ সালের পর প্রাণনাশের হুমকিতে বেশ কয়েক মাস কাটিয়েছেন আত্মগোপনে। সেনাশাসক জিয়াউর রহমানের আমলে আবারও জেলে যেতে হয়েছে। টানা পাঁচ মাস কারাগারেই কাটান। এরশাদ সরকারের আমলে ৯ বার যেতে হয়েছে কারাগারে।
১৯৯১ সালে খালেদা জিয়া ক্ষমতাসীন হওয়ার পর আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতিয়া চৌধুরীকেও জেলে যেতে হয়।
ছাত্ররাজনীতি করতে গিয়ে মাস্টার্স শেষ করতে পারেননি। প্রয়োজন হয় অভিভাবক বদলের। রাজপথের আন্দোলন, জেল-জুলুম আর নির্যাতনের দিনগুলোতে বটবৃক্ষের মতোই ছায়া দিয়েছেন জীবনসঙ্গী বজলুর রহমান। ২০০৮ সালে বজলুর রহমানের মৃত্যু এসে বিচ্ছেদ ঘটায় যৌথ পথ চলার।
আরও পড়ুন:৫৫তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বুধবার সকালে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি সকাল ৬টা ১১ মিনিটে স্মৃতিসৌধের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
ওই সময় তিনি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে কয়েক মিনিট নীরবতা পালন করেন।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর একটি চৌকস দল তাকে রাষ্ট্রীয় সালাম জানায়। ওই সময়ে বিউগলে করুণ সুর বাজানো হয়।
শ্রদ্ধা নিবেদনকালে প্রধান বিচারপতি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টারা, তিন বাহিনীর প্রধান, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিদেশি কূটনীতিক এবং উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে প্রধান উপদেষ্টা স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেন।
পরে সর্বস্তরের জনগণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য জাতীয় স্মৃতিসৌধ উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন:চলতি বছরের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে একটি স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাষ্ট্রীয় অতিথিভবন যমুনায় এ ডাকটিকিট অবমুক্ত করা হয়।
এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব ড. মুশফিকুর রহমান ও ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এসএম শাহাবুদ্দিন।
প্রধান উপদেষ্টার গণমাধ্যম শাখা থেকে এমন তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতীয় পর্যায়ে নিজ নিজ ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সাত বিশিষ্ট ব্যক্তির হাতে ‘স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২৫’ তুলে দিয়েছেন।
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মঙ্গলবার সকালে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে দেশের সর্বোচ্চ জাতীয় বেসামরিক এ পুরস্কার প্রদান করেন তিনি।
এবার স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম (মরণোত্তর), সাহিত্যে মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ (মরণোত্তর), সংস্কৃতিতে নভেরা আহমেদ (মরণোত্তর), সমাজসেবায় স্যার ফজলে হাসান আবেদ (মরণোত্তর), মুক্তিযুদ্ধ ও সংস্কৃতিতে মোহাম্মদ মাহবুবুল হক খান ওরফে আজম খান (মরণোত্তর), শিক্ষা ও গবেষণায় বদরুদ্দীন মোহাম্মদ উমর এবং প্রতিবাদী তারুণ্যে আবরার ফাহাদ (মরণোত্তর)।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আবদুর রশীদ পুরস্কার বিতরণ পর্বটি সঞ্চালনা করেন। তিনি পুরস্কার বিজয়ীদের সাইটেশন পাঠ করেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস মঙ্গলবার স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২৫ তুলে দেবেন।
ওই দিন সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এ পুরস্কার দেওয়া হবে।
তথ্য অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে সাতজন বিশিষ্ট ব্যক্তি ২০২৫ সালের স্বাধীনতা পুরস্কার পাচ্ছেন।
গত ১১ মার্চ রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ পুরস্কারের জন্য মনোনীতদের তালিকার প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
যেসব ব্যক্তি এবার স্বাধীনতা পুরুস্কার পাচ্ছেন তারা হলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম (মরণোত্তর), সাহিত্যে মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ (মরণোত্তর), সংস্কৃতিতে নভেরা আহমেদ (মরণোত্তর), সমাজসেবায় স্যার ফজলে হাসান আবেদ (মরণোত্তর), মুক্তিযুদ্ধ ও সংস্কৃতিতে মোহাম্মদ মাহবুবুল হক খান ওরফে আজম খান (মরণোত্তর), শিক্ষা ও গবেষণায় বদরুদ্দীন মোহাম্মদ উমর এবং প্রতিবাদী তারুণ্যে আবরার ফাহাদ (মরণোত্তর)।
আরও পড়ুন:ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ৩ এপ্রিল নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. কামরুজ্জামান রবিবার যে প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেন, তাতে বলা হয়, ‘সরকার আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে ৩ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি ঘোষণা করল। ছুটিকালীন সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে।
‘তবে জরুরি পরিষেবা, যেমন: বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ও অন্যান্য জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, বন্দরসমূহের কার্যক্রম, পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট, ডাক সেবা এবং এ সংশ্লিষ্ট সেবা কাজে নিয়োজিত যানবাহন ও কর্মীগণ এই ছুটির আওতা বহির্ভূত থাকবে।’
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, ‘হাসপাতাল ও জরুরি সেবা এবং এ সেবার সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মীরা এই ছুটির আওতা-বহির্ভূত থাকবে। চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত চিকিৎসক ও কর্মীরা এবং ওষুধসহ চিকিৎসা সরঞ্জামাদি বহনকারী যানবাহন ও কর্মীগণ এই ছুটির আওতা বহির্ভূত থাকবে।
‘জরুরি কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত অফিসসমূহ এই ছুটির আওতা বহির্ভূত থাকবে। ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু রাখার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবে। আদালতের কার্যক্রমের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবেন।’
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, নারীর ক্ষমতায়নে সবার আগে পরিবার থেকে নারীকে সাহস দিতে হবে। যেকোনো সংকটে নারীর পাশে ঢাল হয়ে থাকতে হবে।
তিনি বলেন, পরিবার পাশে না থাকলে রাষ্ট্রের পক্ষে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়ে। পরিবার নারীকে সাহস দিলে রাষ্ট্রও নারীর পাশে থেকে সাহস জোগাতে পারে।
উপদেষ্টা বলেন, ‘নারীর প্রতিবন্ধকতা কখনও শেষ হয় না। সমাজে একটা গোষ্ঠী আছে, যারা নারীকে ক্ষমতায়িত করতে চায় না। দুর্বল নারীকে যত পছন্দ করে, সবলচিত্তের নারীকে তারা পছন্দ করে না। এটাই বাস্তবতা।’
আন্তর্জাতিক নারী দিবসকে (৮ মার্চ) সামনে রেখে জাতীয় বার্তা সংস্থা বাসসকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাতকারে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এসব কথা বলেন।
এবারের নারী দিবসের প্রতিপাদ্য ‘অধিকার, সমতা, ক্ষমতায়ন: নারী ও কন্যার উন্নয়ন’।
উপদেষ্টা বলেন, ‘একজন নারীকে দক্ষ ও যোগ্য করে গড়ে তোলা হলে সে দেশের কাজে ভূমিকা রাখতে পারে। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্র ও পরিবারের পাশাপাশি সমাজেরও দায় রয়েছে। নারীর চলার পথ পুরুষের পাশাপাশি নির্বিঘ্ন ও নির্ভরতার হতে হবে।’
তিনি বলেন, “নারী এখন যে অবস্থানে রয়েছে, সে অবস্থানে থেকে নারী বলে বিতর্কিত নয়, কাজে সে বিতর্কিত হোক, অদক্ষ বলে বিতর্কিত হোক, শুধু নারী বলেই ভূল, নারী বলেই অদক্ষ, এ কথাটা বলা যাবে না। আমি বলব ‘স্কাই ইজ দ্য লিমিট।
“তাই তার চিন্তার গন্ডিটাকে তার পারিপার্শ্বিকতার নেতিবাচক মনোভাবে আটকে না রেখে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে তাদের পাশে নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। অভিভাবককে বুঝতে হবে, ছেলে ও মেয়ে দুজনই পরিবারের সম্পদ। পরিবারের উচিত নারীকে ক্ষমতায়িত করা।”
আরও পড়ুন:চলতি বছর ব্যতিক্রমী কিছু মানুষ ও প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
এ বছর কারা ও কতজন এ পুরস্কার পাচ্ছেন, তা জানাননি উপদেষ্টা।
সচিবালয়ে রবিবার স্বাধীনতা পুরস্কার সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক শেষে তিনি উল্লিখিত বক্তব্য দেন।
উপদেষ্টা বলেন, কমিটি কিছু নাম সুপারিশ করেছে। চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য নামের তালিকা প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে পাঠানো হবে।
দেশের জন্য অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এ বছর ব্যতিক্রমী কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
ওই সময়ে উপস্থিত আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, এর আগে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়ার ক্ষেত্রে দলগত ও গোষ্ঠীগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতো। র্যাবের মতো বিতর্কিত প্রতিষ্ঠানকেও দেশের সর্বোচ্চ এ পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল।
এ বছর ১০ জনের কম ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য