শীত কিছুটা কমেছে। খসে পড়েছে কুয়াশার ঘোমটা। পাতা ঝরা দিন মনে করিয়ে দিচ্ছে, বসন্ত এসে গেছে। এসেছে বাঙালির ঋতুরাজ।
পলাশ-শিমুলও ফুটছে নিশ্চয়ই কোথাও। কোকিলও ডাকছে কী! সুনামগঞ্জের তাহিরপুর শিমুল বাগানে রীতিমত পর্যটকদের ভিড় লেগেছে। তবে নগরে এসবের দেখা মেলা ভার। ধুলোময় আর রুক্ষ্ম নগরে বসন্তের এমন রূপ মানুষের কাছে বড় অচেনা।
তবে এ ধুলিধূসর ঋতু কী করে বাঙালির প্রেমের ঋতু হয়ে গেল? গাছপালার মস্তক মুণ্ডিত করে দেয় যে ঋতু, যে কী না চৌচির করে দেয় ফসলের মাঠ- তা নিয়ে এত আদিখ্যেতাইবা কেন?- এসব প্রশ্নের উত্তর পাওয়া কঠিন।
তবে বসন্তের সঙ্গে কামের একটি যুগসূত্র পাওয়া যায় পুরাণে। হিন্দু পুরাণে কামদেবের যে বৈশিষ্ট্যের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে- কামদেবের সঙ্গীরা হলো, একটি কোকিল, একটি হাতি, ভ্রমরের দল, বসন্ত ঋতু ও মলয় বাতাস। কামদেবের উৎসব হলো, হোলি বা বসন্ত।
এ দিকে প্রেমের সঙ্গে কামের একটি সম্পর্ক তো রয়েছেই। নইলে কী আর চন্ডিদাস লিখেন, ‘প্রতি অঙ্গ লাগি কাঁদে প্রতি অঙ্গ মোর’।
বসন্তকে এমন মহিমান্বিত করে তোলার পেছনে রয়েছেন এই কবিরাই। বাঙালির প্রধান কবিদের প্রায় সকলেই গেয়েছেন বসন্তের বন্দনাগীত। আরও অনেককিছুর মত এক্ষত্রেও অগ্রভাগে আছেন জোড়াসাঁকোর দেবেন্দ্রনাথের কনিষ্ট পুত্র। বসন্ত যখন জাগ্রত দ্বারে তখন রবীন্দ্রনাথের পরামর্শ- ‘আজি খুলিয়ো হৃদয়দল খুলিয়ো’। আর কবি নজরুল লিখেছেন, ‘আসিবে তুমি জানি প্রিয়, আনন্দে বনে বসন্ত এলো’।
বসন্ত নিয়ে এই আধিখ্যেতার একটি যুক্তি অবশ্য দিয়েছেন কবি মহাদেব সাহা। তার যুক্তি- ‘শীত, হিম, কুয়াশা, জড়তা মানুষকে আচ্ছন্ন করে ফেলে। বসন্ত হচ্ছে তা থেকে মুক্তি, শীতের পর প্রথম আনন্দ শিহরণ।’
এই মুক্তি আর আনন্দ শিহরণের ঋতু শুরু হচ্ছে আজ। আজ পহেলা ফাল্গুন। আজ ‘বসন্ত এসে গেছে’ গাওয়ার দিন।
কেবল বসন্ত নয়, আজ ভালোবাসাবাসিরও দিন। ভ্যালেন্টাইন ডে। রাধাকষ্ণের দেশে, লাইলী-মজনু আর দেবদাস-পাবর্তীর দেশে, রাস উৎসব আর দোলপূর্ণিমার দেশে দূর দেশ থেকে ভালোবাসার বার্তা নিয়ে এদেশেও পেঁছে গেছেন সেনট ভ্যালেন্টাইন।
১৪ এপ্রিল ভালোবাসার দিন। গত বছরের মতো এবারও বসন্ত আর ভালোবাসা মিলেমিশে একাকার।
আজ বসন্তের রঙে ভালোবাসায় মাতবেন সবাই। বিশ্ববিদ্যালয়, পার্ক, রেস্টুরেন্ট কিংবা সড়ক আজ হয়ে উঠবে প্রেমকানন। ধুলোময় নগরও আজ রঙিন হয়ে উঠবে বর্ণিল সাজ আর উচ্ছ্বাসে।
তবে আজ হৃদয়হীন হয়ে উঠবেন ফুল দোকানিরা। ফুলের দাম বাড়িয়ে দিবেন কয়েকগুণ। রোববারও সিলেটে একটি গোলাপ ৪০ টাকা বিক্রি হতে দেখা গেছে। রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষও ‘ভ্যালেন্টাইন স্পেশাল মেনু’র বরাতে খাবারের দাম বাড়িয়ে দেবেন।
ব্যবসায়ীদের কাজ অবশ্য সবকিছুতেই ব্যবসা খোঁজা। তাত্ত্বিকদের কেউ কেউ অবশ্য বলে থাকেন, এই যে ভালোবাসা নিয়ে এতো মাতামাতি, ভালোবাসার দিবস, এসবে বাণিজ্যই নাকি মূল। তবে ভালোবাসায় এ সবে কিছু আসে যায় না। ভালোবাসায়ই গোলাপ ফুটবে। কোকিল ডাকবে।
তবে ভালোবাসার জন্য এত উতলা, এতটা উদগ্রীব থাকে মানুষ। যার জন্য তোলপাড় হৃদয়ে, এ পথ কিন্তু মোটেই কুসুমাস্তীর্ন নয়।
কহলিল জিব্রানের ‘প্রফেট’কে ভালোবাসা সম্পর্কে বলতে বলা হয়েছিল।
জবাবে ‘প্রফেট’ বলেছিলেন- ‘যখন ভালোবাসা তোমাদের ইশারায় ডাকে, তখন তাকে অনুসরণ কর, যদিও তার পথ কঠিন এবং আরোহণযোগ্য নয়। ...ভালোবাসা তোমাদের যেমন মুকুট পড়াবে তেমনি ক্রুশবিদ্ধ করবে তোমায়’।
রবীন্দ্রনাথ তো প্রশ্ন করেই বসেছেন- ‘ভালোবেসে যদি সুখ নাহি, তবে মিছে কেন ভালোবাসা। সে কি কেবলই যাতনাময়’।
যাতনা আছে। বেদনা আছে। আছে বিরহ। একইসঙ্গে ভালোবাসায় সুখও আছে, আছে অপার আনন্দ। ক্রমেই বিচ্ছিন্ন আর একলা হয়ে যাওয়ার সময়ে, আরেকজনের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠার আনন্দ কেবল প্রেমেই আছে।
চারদিকে এত হিংসা, এত সংঘাত, রাষ্ট্র থেকে রাষ্ট্রে, সম্প্রদায় থেকে সম্প্রদায়ে, মানুষে-মানুষে ক্রোধ, ঘৃণা আর বিদ্বেষের চর্চা থেকে মুক্তি এনে দিতে পারে কেবল প্রেম আর ভালোবাসা।
তাই ফাগুনের এই রঙিন দিনটা ভালোবাসার হোক, হোক প্রেমের। শিল্পী কবীর সুমনের সঙ্গে গলা মিলিয়ে গাওয়া যেতেই পারে,
‘এই প্রেমহীন সময়ে বলছি তোমায় ভালোবাসি
এই অন্ধকারেই চল জোনাকি ডেকে নিয়ে আসি।
এই পাথরে পাথর যুগে বলছি তোমায় চুমু খাও
বড় শুকিয়ে যচ্ছে সব, ঠোঁটে ঠোঁট আদরে ভেজাও।’
আরও পড়ুন:সিলেটের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলংয়ে পরিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা (Ecologically Critical Area-ECA) থেকে অবৈধভাবে চলছে বালু ও পাথর উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে হুমকিতে পড়েছে ওই এলাকার পরিবেশ। বিনষ্ট হচ্ছে জীববৈচিত্র্য।
জাফলংয়ে ইসিএ থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগ পেয়ে সোমবার অভিযান চালায় টাস্কফোর্স। এ সময় বালুবাহী পাঁচটি নৌকা জব্দ করা হয়। এছাড়া এসব নৌকার মালিকদের দেড় লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
পরিবেশ অধিদপ্তর, বিজিবি, উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ যৌথভাবে সোমবার দুপুরে এই অভিযান চালায়।
গোয়াইনঘাট উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. তানভীর হোসেন জানান, সোমবার জাফলংয়ের পরিবেশ সংকটাপন্ন এলাকায় পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালকের নেতৃত্বে তাদের একটি টিম, বিজিবি ও গোয়াইনঘাট থানা পুলিশের অংশগ্রহণে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়।
অভিযানে বালুবাহী পাঁচটি নৌকা আটক করে মামলা দেয়া হয়। এছাড়া এসব নৌকার পরিচালকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় মোট ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেয় ভ্রাম্যমাণ আদালত।
পরিবেশ রক্ষায় এমন অভিযান নিয়মিত পরিচালিত হবে বলে জানান তানভীর হোসেন।
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং দেশের প্রধান পর্যটন কেন্দ্রগুলোর একটি। কিন্তু এই পর্যটন কেন্দ্র এখন পরিণত হয়েছে দেশের অন্যতম বৃহৎ পাথর কোয়ারিতে। অনিয়ন্ত্রিত পাথর ও বালু উত্তোলনের ফলে পর্যটন কেন্দ্রটির সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি হুমকিতে পড়ছে পরিবেশও।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৫ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি জাফলংকে পরিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষণা করে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়।
এর আগে পরিবেশ আইনজীবী সমিতির (বেলা) এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে জাফলংকে ইসিএ ঘোষণার নির্দেশনা দেয় আদালত।
ইসিএ ঘোষণার পর জাফলং থেকে সব ধরনের বালু ও পাথর উত্তোলন নিষিদ্ধ করে প্রশাসন। তবে নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও একটি গোষ্ঠী বালু ও পাথর উত্তোলনের মাধ্যমে জাফলংয়ের পরিবেশ বিনষ্ট করে চলেছে।
হত্যার রাজনীতি করতে বিএনপি কিলিং এজেন্ট নিয়োগ করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।
মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলা সদরে ঈদগাহ ময়দানে সোমবার দুপুরে উপজেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে বর্তমান সরকারের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রার বিবরণ জনগণের মাঝে পৌছে দেয়া এবং আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের তৃণমূল প্রতিনিধি ও নেতাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে দিকনির্দেশনামূলক মতবিনিময় সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।
বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘বিএনপি হিট অ্যান্ড রান করে কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে চায়। প্রকৃতপক্ষে বিএনপি কিলিং এজেন্ট নিয়োগ করেছে। বিএনপি জামাত যদি বিভিন্নভাবে বাংলাদেশের একজন মানুষের ওপর আঘাত হানে বা হত্যা করে, তাহলে আমরা ক্লিলিং এজেন্টদেরকে প্রতিরোধ ও প্রতিহত করব।’
তিনি বলেন, ‘স্যাংশন দিয়ে কোনো লাভ নেই, সকল ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করে স্বচ্ছতার সঙ্গে নির্বাচনের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে আবার ক্ষমতায় আনব। বিএনপিকে মোকাবেলা করেই বাংলাদেশে সাংবিধানিকভাবে নির্বিঘ্নে ও স্বাধীন-সার্বভৌম নির্বাচন কমিশনের অধীনে আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার ব্যবস্থা করব। যাতে সুষ্ঠ, স্বচ্ছ, অবাধ ও নিরপেক্ষ ভাবে বাংলাদেশের মানুষ শান্তিতে ও স্বস্তিতে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারে।’
উপস্থিত নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমরা কারও ভয়ে ভীত হয়ে নয়, জামাত-শিবির ও বিএনপি, এমনকি অশুভ শক্তি ও অশুভ রাজনীতির বিপক্ষে এবং সাম্প্রদায়িক শক্তির বিপক্ষে আপনারা লড়াই করতে অভ্যস্ত। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের বিপক্ষের শক্তি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের নেতা-কর্মীদের আঘাত করে আওয়ামী লীগকে প্রতিহত করা যায় না।
‘আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্ত ছড়িয়ে, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের রক্তচক্ষু ও মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে কেউ টিকে থাকতে পারেনি । খুনি জিয়া ও মোস্তাকরা উৎখাত হয়ে গেছে। জাতীর পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করার পরও জাতীর পিতার আদর্শের সুযোগ্য সন্তান জননেত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের দায়িত্ব নিয়ে ২১ বছর লড়াই সংগ্রাম করে টিকে আছেন।’
রাজৈর উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সেকান্দার আলী শেকের সভাপতিত্বে এ মতবিনিময় সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন আহম্মেদ মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক কাজল কৃষ্ণ দে, পৌর মেয়র নাজমা রশীদসহ আরও অনেকে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির (চরমোনাই পীর) সৈয়দ রেজাউল করীম বলেছেন, ‘দেশের ১২টা বেজে গেছে। এ সরকারের অধীনে আর কোন নির্বাচন নয়, ক্ষমতাপ্রেমীদের মসনদ ভেঙে এবার বঙ্গোপসাগরে ফেলা হবে।’
জাতীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন, নির্বাচনের কমিশনারের পদত্যাগ; বিদ্যুৎ, গ্যাস ও নিত্য পণ্য দ্রব্যমূল্যের দাম কমানোসহ বিভিন্ন দাবিতে সোমবার বিকেলে মুন্সিগঞ্জে আয়োজিত ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জেলা সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
সোমবার মুন্সিগঞ্জ শহরের কৃষিব্যাংক সংলগ্ন সড়কে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেন দলটির কয়েক হাজার নেতা-কর্মী।
রেজাউল করিম বলেন, ‘বর্তমান সরকার অবৈধ সরকার। এ সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়নি। তবে আমাদেরকে ধোকা দিয়ে বোকা বানিয়ে আবারও সরকার ক্ষমতায় যাবে- এই স্বপ্ন বাংলার মাটিতে আর বাস্তবায়ন হবে না। তারা বলে থাকে- আমরা দেশপ্রেমিক, আমরা জনগণ প্রেমিক। এগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। আমাদের দাবি আগামী নির্বাচন হবে সুষ্ঠু, যে নির্বাচন হবে স্বচ্ছ, যে নির্বাচন থাকবে প্রশ্নের উর্ধ্বে। বিভিন্ন দেশেও একই কথা বলছে। আমেরিকাও বলছে, বাংলাদেশ একটি সুন্দর, নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে হবে। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বলেন- বিদেশীরা তাদের ওপর হস্তক্ষেপ করে। আপনারা যদি সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিস্থিতি তৈরি করেন, তাহলে তারা আর এসব কথা বলার সাহস পায় না।’
ভিসা নীতি দেশের জন্য লজ্জাজনক উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে ভিসা স্যাংশনসহ বিভিন্ন কার্যক্রম চলছে। ভিসা স্যাংশন বাংলাদেশের জন্য লজ্জাজনক। এভাবে একটি দেশ চলতে পারে না। তাই এর পরিবর্তন দরকার। চোরের দিক থেকে, দুর্নীতিবাজের দিক থেকে এ দেশ পাঁচবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, এ অবস্থা আমরা আর দেখতে চাই না। তাই দেশ ও জাতির কল্যাণের জন্য এক নীতি, আদর্শ দরকার; যার নাম ইসলাম।
‘ইসলামী নীতি, আদর্শের মাধ্যমে সারা বিশ্বে শান্তি আসবে। এ শান্তির পক্ষে আমরা সবাই একত্রিত হব। যারা ক্ষমতাপ্রেমিক রয়েছে, আমরা দেশ প্রেমিকরা একত্রিত হয়ে এদের মসনদকে ভেঙে বঙ্গোপসাগরে নিক্ষেপ করা হবে।’
সমাবেশে ইসলামী আন্দোলন মুন্সীগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি আতিকুর রহমানের সভাপতিত্বে ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি মুফতি শাহাদাত হোসেনের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় মহাসচিব মাওলানা ইউনুস আহমেদসহ জেলা কমিটির নেতৃবৃন্দ।
আরও পড়ুন:ঢাকার সাভারে নেশাদ্রব্য খাইয়ে নয় বছরের এক শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে প্রতিবেশী এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ওই শিশুকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আসামিকে সোমবার দুপুরে পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠিয়েছে সাভার মডেল থানা পুলিশ।
গ্রেপ্তার ৪০ বছর বয়সী ভ্যানচালক মো. আরিফ সাভারের ছায়াবিথী এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করেন।
এর আগে রবিবার শিশুটির মা বাদী হয়ে আসামির বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করলে ওই রাতেই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
শিশুটির পরিবারের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, রোববার দুপুর থেকেই মেয়েকে খুঁজে পাচ্ছিলেন না তার মা। পরে প্রতিবেশী আরিফের ঘরের সামনে মেয়ের জুতা দেখে ভিতরে প্রবেশ করেন তিনি। তখন মেয়েকে অজ্ঞান অবস্থায় দেখতে পেয়ে তাকে উদ্ধার করে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। সেখান থেকে শিশুটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন চিকিৎসকরা।
সাভার মডেল থানার এসআই শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘ভুক্তভোগীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলে প্রাথমিকভাবে ধর্ষণচেষ্টার আলামত পেয়েছি। শিশুটিকে নেশাদ্রব্য তাড়ি খাইয়ে অচেতন করে লুকিয়ে রেখেছিল আরিফ। কিন্তু ধর্ষণ করার আগেই শিশুটির মা তার খোঁজ পায় বলে ধারণা করছি। শিশুটিকে ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে অপহরণ ও ধর্ষণচেষ্টার মামলা করা হয়েছে। তবে রিপোর্টে যদি ধর্ষণের প্রমাণ মেলে তাহলে মামলাটি ধর্ষণ মামলায় রূপান্তরিত হবে।’
কুমিল্লায় অটোরিকশা ছিনতাই করে চালক সঞ্জিত চন্দ্র দেবনাথকে হত্যার ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার দেবপুর এলাকা থেকে রোববার রাতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার পাঁচজন হলেন কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বড়ইয়াকুড়ি গ্রামের ২৫ বছর বয়সী মো. নুর ইসলাম, দেবিদ্বার উপজেলার বারেরা গ্রামের ২৪ বছর বয়সী মো. মিজান, মুরাদনগর উপজেলার বড়কুইয়া গ্রামের ২৩ বছর বয়সী শিপন মিয়া, চাঁদপুর জেলার কচুয়া উপজেলার পনশাহী গ্রামের ৩৫ বছর বয়সী মো. মিজানুর রহমান ও চাঁদপুর জেলার কচুয়া উপজেলার ৩৭ বছর বয়সী মো. মোখলেছ।
প্রাণ হারানো ৫৮ বছর বয়সী সঞ্জিত চন্দ্র দেবনাথ কুমিল্লা বুড়িচং উপজেলার শাহদৌলতপুর গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন।
কুমিল্লা র্যাব-১১ এর অধিনায়ক স্কোয়াড্রন লিডার একেএম মনিরুল আলম তার কার্যালয়ে সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সাংবাদিকদের এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃতরা আন্তজেলা ডাকাতদলের সদস্য। তারা এর আগেও একাধিক অটো ছিনতাই করেছে। তাদের পরবর্তী টার্গেট ছিল নোয়াখালী অঞ্চলে একটি স্বর্ণের দোকানে ডাকাতি করা এবং পরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পণ্যবাহী বাহন ছিনতাই করা। চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতির আগে তারা সূক্ষ্মভাবে পরিকল্পনা করে, তবে তার আগেই তারা ধরা পড়েছে।
‘তাদের নামে চুরি, ছিনতাইসহ একাধিক মামলা রয়েছে। রোববার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার দেবপুর এলাকায় ডাকাতির প্রস্তুতিকালে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। ওই সময় আরও অন্তত তিন থেকে চারজন পালিয়ে যায়। তারা প্রাথমিকভাবে খুনের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।’
র্যাব কর্মকর্তা একেএম মনিরুল আলম বলেন, ‘গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে ছোরা, চাকু, ক্রিজ, স্টিলের পাইপ, পাইপ গিয়ার, টাকা ও মোবাইল ফোন জব্দ উদ্ধার করা হয়।’
এর আগে গত ২৫ সেপ্টেম্বর সঞ্জিত চন্দ্র দেবনাথের অটোরিকশায় গ্রেপ্তারকৃতরা ২০০ টাকা ভাড়ায় ক্যান্টনমেন্ট থেকে কংশনগর যাওয়ার জন্য অটোরিকশায় চড়ে। পথে সঞ্জিতকে হত্যা করে অটোরিকশা নিয়ে পালিয়ে যান তারা। পরে ২৯ সেপ্টেম্বর দুপুরে কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের রামপুর এলাকার একটি জলাশয়ে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহত সঞ্জিতের ছেলে অর্পণ দেবনাথ অজ্ঞাতদের আসামি করে বুড়িচং থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
আরও পড়ুন:কক্সবাজারের উখিয়ায় আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) প্রধানের একান্ত সহকারী এরশাদ প্রকাশ নোমান চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
উপজেলার কুতুপালং থেকে রোববার রাত একটার দিকে তাকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব-১৫-এর অধিনায়ক লেফট্যানেন্ট কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উখিয়ার কুতুপালং থেকে এরশাদকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার নামে বিভিন্ন অপরাধে একাধিক মামলা রয়েছে। এ ছাড়াও তিনি আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি প্রধান আতা উল্লাহ আবু জুনুনীর একান্ত সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘এরশাদের নেতৃত্বে ও নির্দেশনায় বিভিন্ন ক্যাম্পে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা হচ্ছিল। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন দেশের অর্থ সরবারহকারীদের সঙ্গে আসার অর্থ সম্বনয় করে আসছিলেন।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আল মামুন সরকারের মৃত্যু হয়েছে।
ফুলবাড়িয়ায় নিজ বাসায় সোমবার সকালে ঘুমন্ত অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তার বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর।
আল মামুন সরকারে এপিএস সোহাগ জানান, আল মামুন সরকার দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগসহ নানা রোগে ভুগছিলেন। চিকিৎসা শেষে গত কিছুদিন যাবত তিনি আগের চেয়ে স্বাভাবিক চলাফেরা করছিলেন। রোববারও সংবাদ সম্মেলন করাসহ পরিষদের যাবতীয় কাজে অংশ নেন। সোমবার সকালে ঘুমন্ত অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
তিনি আরও জানান, সোমবার আসরের পর জেলা ঈদগাহ মাঠে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। পরে তাকে শেরপুর কবরস্থানে দাফন করা হবে।
এদিকে আল-মামুন সরকারের মৃত্যুতে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী শোক প্রকাশ করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। মন্ত্রীর পিআরও ড. রেজাউল করিম এ তথ্য জানিয়েছেন।
কে ছিলেন আল মামুন সরকার
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া আল-মামুন সরকার একজন সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তিনি দলের তৃণমূল পর্যায় থেকে ওঠে আসা একজন নেতা। তিনি ১৯৬৯ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগে যোগদানের মাধ্যমে ছাত্র রজনীতিতে যোগ দেন। মুক্তিযুদ্ধের পর তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহকুমা ছাত্রলীগের কোষাধ্যক্ষ (অর্থ বিষয়ক সম্পাদক) নির্বাচিত হন। পরে তিনি পর পর দুইবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন।
তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ ছাত্র-ছাত্রী সংসদের ভিপি ছিলেন, পর্যায়ক্রমে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদস্য, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কৃষকলীগের আহ্বায়ক ছিলেন।
আল-মামুন সরকার ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি সমাজসেবায় রাষ্ট্রীয় সম্মাননা পেয়েছেন। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন।
আল-মামুন সরকার ১৯৮৯ সালে ভারতের দিল্লীতে অনুষ্ঠিত এশীয় যুব সম্মেলনে বাংলাদেশের বেসরকারি প্রতিনিধি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। তাছাড়া তিনি ২০১৫ সালে জাতিসংঘের ৭০তম সাধারণ পরিষদ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৭ সদস্য বিশিষ্ট বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসাবে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগদান করেন। ২০১৭ সালে তিনি একজন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে অর্থমন্ত্রণালয়ের এনবিআর প্রদত্ত সম্মানজনক ‘টেকস কার্ড’ লাভ করেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য