করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার কিছু বেসরকারি স্কুলে ক্লাস নেয়া হচ্ছে সশরীরে।
এমনই একটি স্কুলের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, খরচ মেটাতে পাঠদান চালিয়ে নেয়া হচ্ছে।
করোনার তৃতীয় ঢেউ নিয়ন্ত্রণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটির মেয়াদ আরও বাড়ানোর কথা জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। নতুন ঘোষণা অনুযায়ী ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সশরীরে পাঠদান বন্ধ থাকবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে।
তবে ফুলবাড়ীর বেতদীঘি ইউনিয়নের মাদিলাহাট এলাকার গিয়ে দেখা গেল, ভোরের আলো বিদ্যানিকেতন নামের একটি স্কুলে চলছে ক্লাস। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মুখে নেই মাস্ক।
স্কুলটিতে তৃতীয় শ্রেণিতে ১৮, চতুর্থ শ্রেণিতে ২২ ও পঞ্চম শ্রেণিতে ২৩ শিক্ষার্থীকে দেখা গেছে।
সহকারী শিক্ষক জেবা ফারিয়া জুঁই, মিলন হেসেন ও তিথি মহন্ত জানান, স্বল্প পরিসরেই পাঠদান চলছে।
বিধিনিষেধের বিষয়টি জানা থাকলেও প্রধান শিক্ষকের নির্দেশে ক্লাস নেয়া হচ্ছে বলে জানান তারা।
প্রধান শিক্ষক মাসুদ রানার ফোন নম্বর দিতে রাজি হননি স্কুলের কেউই।
ওই ইউনিয়নের দামারপাড় এলাকার বেসরকারি সংস্থা বেসিক পরিচালিত মালঞ্চা বেসিক স্কুল ও মাদিলাহাট বাজারের সান হিয়া সেমি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলেও চলছে ক্লাস।
মালঞ্চ বেসিক স্কুলে ৩১ জন ও সান হিয়া স্কুলে ৭০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে।
সান হিয়া স্কুলের প্রধান শিক্ষক আবু হেলাল বলেন, ‘করোনার কারণে দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকায় স্কুলের ঘর ভাড়া দিতে হিমশিম খেতে হয়েছে। আয়-রোজগার বন্ধ থাকায় চরম সমস্যায় কাটাতে হয়েছে। তাই এখন ক্ষতি পুষিয়ে নিতে স্বল্প পরিসরে স্কুল খোলা হয়েছে।’
এ বিষয়ে ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রিয়াজ উদ্দিন জানান, খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরও পড়ুন:ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার শুকানপুকুরী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) আওয়ামী লীগের পলাতক চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমানকে কৌশলে পুনর্বাসনের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে প্যানেল চেয়ারম্যান-২ এরশাদ আলীসহ স্থানীয় একাধিক রাজনীতিক ও কিছু ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে।
গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দিন ৫ আগস্ট এ ইউপি চেয়ারম্যান পরিষদ ছেড়ে পালিয়ে যায়।
জনসেবা অব্যাহত রাখতে নিয়ম অনুসারে ইউপি সদস্য সুমন রানাকে প্যানেল চেয়ারম্যান-১ করে বাকি প্যানেল গঠন করা হয়।
বর্তমানে ইউপিতে নাগরিক সেবা অব্যাহত থাকলেও প্যানেল চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কৌশলে অনাস্থা এনে এরশাদ আলীসহ অন্যরা পলাতক চেয়ারম্যানকে পুনর্বাসনের চেষ্টায় আছেন বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।
তাদের ভাষ্য, সম্প্রতি কৌশল জানাজানি হলে ইউনিয়নবাসীর মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এমন বাস্তবতায় যেকোনো সময় ওই ইউনিয়নে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা রয়েছে।
পলাতক চেয়ারম্যানকে পুনর্বাসনের ‘কৌশল’
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, প্রথমে চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক বরাবর শুকানপুকুরী ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান-১ সুমন রানার বিরুদ্ধে অনাস্থার প্রস্তাব এনে একটি আবেদন জমা দেওয়া হয়। সেখানে প্যানেল চেয়ারম্যান-১ সুমন রানার বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতাসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগ উল্লেখ করা হয়। এতে স্বাক্ষর করেন ৯ জন ইউপি সদস্য।
পরে সেই আবেদনের জের ধরে ১৩ জানুয়ারি ইউনিয়ন পরিষদের প্যাডের পাতায় প্যানেল চেয়ারম্যান-২ মো. এরশাদ আলী স্বাক্ষরিত এক পাতার একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণের রেজুলেশন ও অপর একটি পাতায় আটজন ইউপি সদস্যের স্বাক্ষর সংবলিত পাতা সংযুক্ত করা হয়। এ পাতায় সভার স্থান দেখানো হয় ইউনিয়ন পরিষদের হলরুমে।
ওই রেজুলেশনে বলা হয়, ‘অদ্যকার অত্র আলোচনায় শুকানপুকুরী ইউনিয়নের নির্বাচিত চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমানের (পলাতক) মাধ্যমে ইউপির সার্বিক কার্যক্রম পরিচালনা ও সভায় বিস্তর আলোচনা করা হয়। এরপর সভার সভাপতি প্যানেল চেয়ারম্যান-২ এরশাদ আলীর উপস্থিতিতে সদস্যদের জানান, প্যানেল চেয়ারম্যান-১ দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে স্বেচ্ছাচারিতা করে আসছেন, যা জেলা প্রশাসকের বরাবরে অনাস্থার প্রস্তাব আনয়ন করি।
‘তাই ইউনিয়নের নির্বাচিত চেয়ারম্যান আনিছুর রহমানের (পলাতক) মাধ্যমে সার্বিক কার্যক্রম পরিচালনা তথা জনসেবা অব্যাহত রাখা একান্ত জরুরি মর্মে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা প্রয়োজন।’
রেজুলুশনে উল্লেখ করা হয়, সর্বসম্মতিক্রমে পলাতক চেয়ারম্যানের মাধ্যমে পরিষদের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা তথা জনসেবা অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় এবং জেলা প্রশাসক ও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হয়।
প্যানেল চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা নিয়ে দুই ইউপি সদস্যের ভাষ্য
কারণ জানতে এ প্রতিবেদক যোগাযোগ করেন অনাস্থা কাগজে স্বাক্ষর করা দুজন ইউপি সদস্যের সঙ্গে। তারা হলেন মো. আমজাদ ও ধর্ম নারায়ণ রায়।
ইউপি সদস্য আমজাদ বলেন, ‘৪ জানুয়ারি রাত ১০টার দিকে আমার বাড়ির সামনে স্থানীয় সাবেক দুজন সদস্য মোটরসাইকেল নিয়ে আসেন। তারা আমাকে কৌশলে ইউনিয়ন বিএনপির নেতা তরিকুল ইসলামের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে দেখি অন্যান্য ইউপি সদস্যরাসহ বিএনপির ইউনিয়ন পর্যায়ের শীর্ষ স্থানীয় নেতারা উপস্থিত। রাতের খাবারের বিশাল আয়োজনও করা হয়েছে। আমি কোন কিছু বুঝে উঠতে পারছিলাম না।
‘পরে জানানো হলো, আমাকে বর্তমান প্যানেল চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনে স্বাক্ষর করতে হবে। কিন্তু তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলো আনা হয়েছে, তা মিথ্যা। তিনি খুব ভালোভাবে সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করছেন। এসবই আলোচনা হচ্ছে। এরপর এক প্রকার জোর করেই আমাকে রাতের খাবার খাওয়ানো হলো এবং পরিস্থিতির কারণে বাধ্য হয়ে স্বাক্ষর করতে হলো। কিন্তু আমি সিলমোহর দিইনি।’
ইউপি সদস্য ধর্ম নারায়ণ রায় বলেন, ‘একই তারিখে স্থানীয় বাসিন্দা তোষর এবং রফিকুল আমাকে একটা জায়গায় সমস্যার কথা বলে কৌশলে ইউনিয়ন বিএনপি নেতা তরিকুল ইসলামের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে দেখি বিএনপির অন্যান্য রাজনীতিক নেতাসহ অন্যান্য ইউপি সদস্যরা রয়েছেন। আমাকে রাতের খাবারের জন্য বারবার বলা হচ্ছে। কিন্তু কী কারণে এত আদর-আপ্যায়ন, বুঝতে পারছিনা। জিজ্ঞাসা করলেও কোনো উত্তর পাই না।
‘সমাজ রক্ষার্থে সকলের সাথে রাতের খাবার খেলাম। এরপর আমাকে এক প্রকার চাপ দেওয়া হয় প্যানেল চেয়ারম্যান সুমন রানার বিরুদ্ধে অনাস্থা কাগজে স্বাক্ষর করতে। কিন্তু আমি তার সমর্থক। তিনি ভালো মানুষ।’
তিনি আরও বলেন, ‘স্বাক্ষর দিতে প্রথমে রাজি না হলেও পরে তারা সংখ্যাগরিষ্ঠ স্বাক্ষর করেছে। আমি কেন করব না, এ কথা তোলে। অনেকক্ষণ তর্ক-বিতর্কের পর সই করে সেখান থেকে আসতে হয়েছে। পরে আমি লিখিত চিঠি দিয়ে বিষয়টি প্যানেল চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি।’
ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ভবেষ চন্দ্র বর্মণ বলেন, ‘প্যানেল চেয়ারম্যান-১ সুমন রানার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ এনে অনাস্থা আনা হয়েছে, তা আমার কাছে ভিত্তিহীন মনে হয়েছে।’
সচিব আরও বলেন, ‘পরিষদে তিনি (সুমন রানা) সবার সঙ্গে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেন এবং নাগরিক সেবা অব্যাহত রেখেছেন। তার বিরুদ্ধে আমাকেও কেউ কোনো দিন কোনো মৌখিক অভিযোগ দেননি।’
সভার বিষয়ে যা বললেন ইউপি সচিব ও সদস্য
ইউনিয়ন পরিষদ সচিব বলেন, ‘৪ জানুয়ারি, ৭ জানুয়ারি ও ১৩ জানুয়ারি কোনো সভা ইউনিয়ন পরিষদের হলরুমসহ পরিষদের কোনো স্থানে অনুষ্ঠিত হয়নি। যেসব সভার কথা বলা হচ্ছে, তা গোপনে বা প্রকাশ্যে অন্য কোথাও হয়ে থাকতে পারে। তা আমার জানা নাই।’
ইউপি সদস্য ধর্ম নারায়ণ রায় বলেন, ‘১৩ তারিখ সকাল ১১টায় প্যানেল চেয়ারম্যান-২ সভা ডেকেছিল। আমি সময়মতো পরিষদে আসলেও সভা হয়নি।
‘আমি জানতে চাইলে তিনি গোপনে স্থানীয় দুলাল নামের এক লোকের বাসায় মিটিং হবে বলে জানান। কিন্তু আমি সেখানে যাইনি। পরিষদের কাজ শেষে বাড়ি চলে আসি।’
স্থানীয় বাসিন্দা ও অভিযুক্ত প্যানেল চেয়ারম্যানের ভাষ্য
স্থানীয় বাসিন্দা জিলানি হোসেন বলেন, ‘যে চেয়ারম্যান জনগণের ভোটে নির্বাচিত হননি, তিনি জনগণের কথা ভাববেন না, এটাই স্বাভাবিক। তাই তিনি আমাদের দুর্ভোগে ফেলে আজও পর্যন্ত পলাতক রয়েছেন। আমরা নাগরিকসেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছি। আমরা তার পুনর্বাসন চাই না।
‘পরিষদ তাকে ছাড়া বেশ ভালো চলছে। আমরা সুন্দর সেবা পাচ্ছি। শুনছি অনেকে পলাতক চেয়ারম্যানের টাকার কাছে বিক্রি হয়েছে। আমরা নতুন কোনো ষড়যন্ত্র মেনে নেব না।’
এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে প্যানেল চেয়ারম্যান-২ এরশাদ আলী ইউনিয়ন পরিষদে সভা না করা এবং কোনো ব্যক্তির বাসায় বসে সভা করার বিষয়টি স্বীকার করেন।
তিনি জানান, নিরাপত্তাজনিত কারণে পরিষদে সভা করতে পারেননি।
তিনি কেন পলাতক ও বিতর্কিত চেয়ারম্যানকেই পুনর্বাসন করতে চান, এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বর্তমান দায়িত্বরত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তোলেন।
অভিযুক্ত প্যানেল চেয়ারম্যান সুমন রানার কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং পরিষদে নাগরিক সেবা অব্যাহত আছে কি না, তা সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করার আহ্বান জানান।
ইউনিয়ন বিএনপির নেতা তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমার বাড়িতে পরিষদের কোনো বৈঠক হয়নি; সিদ্ধান্তও হয়নি। আমার হাত ভেঙে যাওয়ায় আমি অসুস্থ। তাই রাজনীতিক নেতা ও পরিষদের সদস্যরা দেখতে এসেছিল। এর বেশি কিছু না।’
তবে চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান পলাতক থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক (স্থানীয় সরকার) সরদার মোস্তফা শাহিন বলেন, ‘আবেদনসহ অন্যান্য কাগজ আমি পেয়েছি। উভয় পক্ষকে ডেকে শুনানি করা হবে এবং প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
‘কোনো কৌশলগত বিষয় আছে কি না, তাও খতিয়ে দেখা হবে। তবে নিয়ম-বহির্ভূত কাউকে পুনর্বাসন করার সুযোগ নেই।’
আরও পড়ুন:ঝালকাঠি জেলা ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটি অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ।
সাত সদস্যের এ কমিটিতে পদাধিকার বলে জেলা প্রশাসককে আহ্বায়ক ও জেলা ক্রীড়া কর্মকর্তাকে সদস্য সচিব করা হয়েছে।
কমিটির সদস্য পদে আরও যে পাঁচজনের নাম রয়েছে তারা হলেন ওসমান গনি (ক্রীড়া অনুরাগী), মানিক রায় (কোচ), মো. মামুন (রেফারি), দিবস তালুকদার (ক্রীড়া সাংবাদিক) এবং আরিফুর রহমান (ছাত্র প্রতিনিধি)।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব (যুগ্ম সচিব) মো. আমিনুল ইসলাম এনডিসি স্বাক্ষরিত এক স্মারকে কমিটির অনুমোদনপত্র পাঠানো হয় ঝালকাঠি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে।
এ ছাড়া যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়য়ের সচিব, বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টার একান্ত সচিব, সচিবের একান্ত সচিব, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ চেয়ারম্যানের একান্ত সচিব বরাবর অনুমোদনপত্রের অনুলিপি পাঠানো হয়।
গত ১৯ জানুয়ারি অনুমোদন হওয়া ঝালকাঠি জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাত সদস্যের অ্যাডহক কমিটির অনুমোদনপত্রে লেখা রয়েছে, ‘উপর্যুক্ত বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে জানানো যাচ্ছে যে, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ আইন, ২০১৮ এর ধারা ২ (১৫)-এ উল্লিখিত স্থানীয় ক্রীড়া সংস্থার সংশ্লিষ্ট গঠনতন্ত্র মোতাবেক জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের ওপর অর্পিত ক্ষমতা অনুসরণে ঝালকাঠি জেলার জেলা ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ আইন, ২০১৮ এর ধারা ৮-এ বর্ণিত পরিষদের মাননীয় চেয়ারম্যান কর্তৃক সদয় অনুমোদিত হয়েছে।’
আরও পড়ুন:টানা তিন দিন ধরে নিত্যপ্রয়োজনীয় পানির সংকটে ছিল কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল। তবে সোমবার রাতে নতুন মোটর লাগানোর পর পানির সংকট কেটেছে।
গত তিন দিন পানি না থাকায় ভোগান্তিতে ছিলেন চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনরা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন গড়ে ৩০০ থেকে ৩৫০ জন রোগী চিকিৎসাসেবা নিতে ভর্তি থাকেন হাসপাতালে। ২৫০ শয্যার এ হাসপাতালে রোগী ও স্বজনসহ সহস্রাধিক মানুষ অবস্থান করেন।
প্রতিদিন এখানে ২০ হাজার লিটার পানি প্রয়োজন। হাসপাতালে পানির সংকটের কারণে অন্তত ৩০ জন রোগী অন্যত্র চলে গেছে বলেও খবর পাওয়া যায়।
পানির মোটর বিকল হয়ে যাওয়ায় হাসপাতালটিতে শনিবার বেলা ১১টা থেকে শৌচাগারসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্য পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। পানি সংকটে শৌচাগার থেকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে হাসপাতালে।
টানা দুই দিন বিকল হয়ে যাওয়া মোটরটি সচল করার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয় কর্তৃপক্ষ। এরই মধ্যে ফায়ার সার্ভিস ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের মাধ্যমে পানি সরবরাহের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তাতে প্রয়োজন মেটেনি।
কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের (ভারপ্রাপ্ত) তত্ত্বাবধায়ক ডা. নূর মোহাম্মদ শামসুল আলম বলেন, ‘বিগত তিন দিনে রোগীদের অনেক ভোগান্তি হয়েছে, এটা সত্য। তবে আমরা আমাদের অবস্থান থেকে সমস্যা সমাধানে সর্বোচ্চ চেষ্টাটুকু করেছি।
‘গতকাল রাতে একটি নতুন মোটর লাগানোর পর পানি সরবরাহ স্বাভাবিক হয়েছে।’
আরও পড়ুন:তিন দিনের মাথায় অবশেষে মিয়ানমারে আটকে রাখা বাংলাদেশি তিন পণ্যবাহী জাহাজ ছেড়ে দিয়েছে আরাকান আর্মি।
মিয়ানমার থেকে পণ্য নিয়ে টেকনাফ স্থলবন্দরে আসার পথে নাফ নদীর মোহনা থেকে বৃহস্পতিবার তিনটি কার্গো আটক করা হয়েছিল।
টেকনাফ স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এতেশামুল হক বাহাদুর সোমবার এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এর আগে সকাল ১০টার দিকে আটক কার্গো জাহাজের মধ্যে দুটি বাংলাদেশ-মিয়ানমার নাফ নদের জলসীমা নাইক্ষ্যংদিয়া থেকে টেকনাফ স্থলবন্দরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। অন্যটি সেখানে ছিল।
টেকনাফ স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এতেশামুল হক বাহাদুর বলেন, পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তারা মিটিংয়ে বসেছেন। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।
মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুন থেকে পণ্যবাহী চারটি কার্গো জাহাজ কক্সবাজার জেলার টেকনাফ স্থলবন্দরের উদ্দেশে আসার পথে আরাকান আর্মি আটক করে তাদের জিম্মি করে। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার দুটি করে পর্যায়ক্রমে চারটি কার্গো আটক করে এ সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী।
আরাকান আর্মির সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে ছাড়পত্র নিয়ে গত শনিবার একটি কাঠবাহী কার্গো বন্দরে আসে। তিন দিন পর বাকি তিনটি ছেড়ে দেওয়া হয়।
মিয়ানমারে সংঘাতের মধ্য দিয়ে আরাকান আর্মি রাখাইন রাজ্যের বেশির ভাগ এলাকা দখলে নেয়। এ সংঘাতের প্রভাব পড়েছে টেকনাফ স্থলবন্দরের সীমান্ত বাণিজ্যে। বেশ কিছুদিন ধরে বন্দরের আমদানি-রপ্তানি বন্ধ রয়েছে।
বিচ্ছিন্নভাবে যেসব পণ্য আমদানি হয়, তাও ইয়াঙ্গুন শহর থেকে। এ শহর থেকে আসার পথে নাফ নদীতে প্রবেশ করতে রাখাইন রাজ্যের সীমান্ত হয়ে আসতে হয়।
বন্দর সূত্রে জানা যায়, কার্গো জাহাজগুলোতে ৫০ হাজার বস্তা শুঁটকি, সুপারি, কফিসহ বিভিন্ন পণ্যের আনুমানিক ৫০ কোটি টাকার মালামাল রয়েছে।
আরও পড়ুন:ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে বরাদ্দের বিপরীতে রোগীর খাবার পরিবেশনে অনিয়ম নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলা থেকে তিন সাংবাদিককে খালাস দিয়েছে আদালত।
রংপুর সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবদুল মজিদ সোমবার দুপুর একটার দিকে এ আদেশ দেন।
খালাস পাওয়া তিন সাংবাদিক হলেন জাগোনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি তানভীর হাসান তানু, বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিনিধি আবদুল লতিফ লিটু ও প্রতিদিনের বাংলাদেশের প্রতিনিধি রহিম শুভ।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন আসামিপক্ষের বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল নোমান ও রংপুর জজ কোর্টের আইনজীবী ফাহিম আহম্মেদ।
আইনজীবী আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, ‘আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের বিরুদ্ধে কোনো তথ্য ও প্রমাণাদি উপস্থিত না করতে পারায় আসামিদের খালাস দিয়েছে আদালত। আমরা এ রায়ে খুশি।
‘কারণ ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে সাংবাদিকরা যেন সত্য তুলে ধরতে না পারে, তাদের কলমকে থামাতে এ আইনের অপব্যবহার করা হয়েছে। আমি এ মামলাটির শুরু থেকে সাংবাদিকদের আইনি সহায়তা ও পরামর্শ দিয়ে আসছি। রায়ে আমিও আনন্দিত।’
এদিকে রায়ের খবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানাজানি হওয়ার পর থেকে সাংবাদিকসহ অনেকে মিষ্টি বিতরণ করেছেন।
হাসপাতাল নিয়ে প্রকাশিত সংবাদটি ‘মিথ্যা, ভিত্তিহীন, বানোয়াট এবং জনরোষ সৃষ্টিকারী ও মানহানিকর’ দাবি করে ২০২১ সালের জুলাইয়ে ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহাম্মদ নাদিরুল আজিজ বাদী হয়ে ২০১৮ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫(১)(ক), ২৫(১)(খ), ২৯(১), ৩১(১) ও ৩৫(১) ধারায় মামলাটি করেন।
এ মামলায় তানুকে গ্রেপ্তার করা হলে দেশব্যাপী সাংবাদিকসহ সব মহলে ব্যাপক প্রতিবাদ জানানো হয়। পরে ২০ ঘণ্টার ব্যবধানে সাংবাদিক তানভীর হাসান তানুকে জামিন দেয় আদালত।
এর আগে গত ৫ জুলাই অনলাইন সংবাদমাধ্যম জাগো নিউজে ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে করোনা ওয়ার্ডে রোগীদের খাবার নিয়ে ‘দিনে বরাদ্দ ৩০০ হলেও করোনা রোগীদের খাবার দেয়া হচ্ছে ৭০ টাকার!’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়।
আরও পড়ুন:টানা তিন দিন ধরে নিত্যপ্রয়োজনীয় পানির সংকটে কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল।
পানি না থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনরা।
এদিকে দুই দিন ধরেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, সমস্যাটি সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন গড়ে ৩০০ থেকে ৩৫০ জন রোগী চিকিৎসাসেবা নিতে ভর্তি থাকেন হাসপাতালে। ২৫০ শয্যার এ হাসপাতালে রোগী ও স্বজনসহ সহস্রাধিক মানুষ অবস্থান করছেন। প্রতিদিন এখানে ২০ হাজার লিটার পানি প্রয়োজন।
হাসপাতালটিতে শনিবার বেলা ১১টা থেকে শৌচাগারসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্য পানি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।
সরেজমিনে সোমবার গিয়ে দেখা যায়, রোগী ও তাদের স্বজনরা বাইরে থেকে পানি এনে জরুরি কাজ সারছেন।
এদিকে পানি সংকটে শৌচাগার থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। হাসপাতালের পক্ষ থেকে পানির জন্য বিকল্প কোনো ব্যবস্থাও করা হয়নি।
শৌচাগারে ব্যবহারের জন্য পানিও লোকজনকে কিনে আনতে হচ্ছে। রোগীর স্বজনরা আশপাশের দোকান থেকে কিনে কিংবা অনেক দূর থেকে হেঁটে ফিল্টার ও বাসাবাড়ি থেকে বোতল, বালতিতে করে পানি নিয়ে আসছেন।
বিশুদ্ধ পানি না থাকায় রোগীরা আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
জেলার তাড়াইল উপজেলার রাউতি গ্রামের বাসিন্দা শাহিনুল ইসলাম জানান, গত তিন দিন যাবত তার চাচাত বোনকে নিয়ে কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
তিনি বলেন, ‘আসার পর থেকে দেখলাম বাথরুমে পানি নেই। হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসকের কাছে বলার পর তিনি জানিয়েছিলেন আজকের মধ্যেই সমস্যা সমাধান হবে। কিন্তু আজকে তিন দিন হয়ে গেলেও সমস্যাটি সমাধান হয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রথম দিন কোনো রকম আশপাশে গিয়ে জরুরি প্রয়োজন সেরে এসেছি। দ্বিতীয় দিন রোগীসহ বিপদে পড়েছি। পরে নিচে নেমে অটোরিকশা করে শহরের খরমপট্টি এলাকায় এক আত্মীয়ের বাসায় গিয়ে গোসলসহ প্রয়োজনীয় কাজ সেরে এসেছি।’
কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার কাশোরারচর এলাকার বাসিন্দা আব্দুল কাদির বলেন, ‘একটা সরকারি হাসপাতালের টয়লেটে পানি নেই, এটা হতে পারে? ময়লা আর দুর্গন্ধে আশপাশেও থাকা যাচ্ছে না।’
তিনি বলেন, ‘অসুস্থ মানুষ সুস্থ হওয়ার জন্য হাসপাতালে আসে। আর এই হাসপাতালের যে পরিবেশ, তাতে একজন সুস্থ মানুষও অসুস্থ হতে সময় লাগবে না।’
এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আবুজর গিফারী জানান, রবিবার রাতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে খবর পেয়ে দুটি গাড়িতে করে ৮ হাজার ৬০০ লিটার পানি দেওয়া হয়েছে।
গতকাল রাত ১১ টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সেখানে কাজ করেছেন বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের (ভারপ্রাপ্ত) তত্ত্বাবধায়ক ডা. নূর মোহাম্মদ শামসুল আলম সমস্যার বিষয়টি স্বীকার করে জানান, রবিবার রাতে ফায়ার সার্ভিসের মাধ্যমে যে পরিমাণ পানি আনা হয়েছিল, সে পানি দিয়ে গতকাল রাত থেকে সকাল পর্যন্ত চলছে। এখন আবার জনস্বাস্থ্য থেকে খাবার পানি আনা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ছয় তলায় ১০ ঘোড়ার একটি বড় মোটর রয়েছে। ২০২০ সালে লাগানো মোটরটি প্রায়ই সমস্যা করে। কিন্তু এবার একেবারে বিকল হয়ে যাওয়ায় পানির সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। সমস্যাটি সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:নরসিংদীর রায়পুরায় ট্রেনের ধাক্কায় ইজিবাইক দুমড়েমুচড়ে গিয়ে চালকসহ দুজন নিহত হয়েছেন।
ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে রায়পুরা উপজেলার আমিরগঞ্জ ইউনিয়নের অরক্ষিত হাসনাবাদ রেল ক্রসিংয়ে রোববার রাত সাড়ে আটটার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নরসিংদী রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক মো. জহিরুল ইসলাম বাসসকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
নিহত দুজন হলেন রায়পুরা উপজেলার আদিয়াবাদ ইউনিয়নের নয়াচর এলাকার প্রয়াত আবদুল কাদিরের ছেলে ইজিবাইক চালক বাচ্চু মিয়া (৫০) এবং একই এলাকার কলিম উদ্দিনের ছেলে মন্নাফ মিয়া (৪৮)।
পুলিশ ও স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, একজন যাত্রীসহ ব্যাটারিচালিত একটি ইজিবাইক হাসনাবাদ অরক্ষিত রেল ক্রসিং পার হচ্ছিল। ওই সময় কক্সবাজার থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী একটি ট্রেন ইজিবাইকটিকে ধাক্কা দিলে এটি ছিটকে পড়ে দুমড়েমুচড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই ইজিবাইক চালক বাচ্চু মিয়া ও যাত্রী মন্নাফ মিয়া নিহত হন।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন ধরে হাসনাবাদ রেল ক্রসিংটি অরক্ষিত রয়েছে। কোনো গেটম্যান কিংবা সতর্কতামূলক ব্যবস্থা না থাকায় প্রায়ই এখানে দুর্ঘটনা ঘটে।
নরসিংদী রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘খবর পেয়ে রেলওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ দুটি উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি ও পরিচয় শনাক্ত করেছে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য