ময়ূরের নাচ কিংবা পেখম মেলার দৃশ্য দেখে মুগ্ধ হন যে কেউ। তা দেখার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতেও রাজি অনেকে। আর যদি দেখা যায় একসঙ্গে শতাধিক ময়ূরের দলবেঁধে ঘোরাঘুরি ও বাহারি নাচন, তাহলে তো কথাই নেই।
ঠিক এমন দৃশ্য উপভোগ করা যাবে কুমিল্লার হোমনা উপজেলার বাবরকান্দি গ্রামের যুবক শাহ আলীর গড়ে তোলা ময়ূরের খামারে।
শখের বসেই এক জোড়া ময়ূর কিনেছিলেন তিনি। সেই এক জোড়া ময়ূর থেকে বাণিজ্যিক খামার গড়ে তুলেছেন, যেখানে ময়ূরের সংখ্যা এখন শতাধিক। ময়ূর বিক্রি করে নিজের ও পরিবারের সচ্ছলতা এনেছেন বাবরকান্দির এ যুবক। স্বপ্ন দেখছেন খামারটিকে আরও বড় করবেন।
নিউজবাংলাকে শতাধিক ময়ূরের এ খামার গড়ে তোলার গল্প জানান শাহ আলী। ২০১৯ সালের শেষ দিকের ঘটনা; সেই সময় নিজের জমানো ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা দিয়ে ময়ূরের জোড়াটি কিনেছিলেন। ওই ময়ূর প্রথমে ২৪টি ডিম দেয়। সেখান থেকে ১৭টির বাচ্চা হয়। এগুলো লালন-পালনের জন্য ৮০ হাজার টাকা ব্যয়ে একটি শেড নির্মাণ করেন।
২০২০ সালের শেষ দিকে এসে ময়ূর বিক্রি শুরু করেন। এক জোড়া ময়ূর ৫০ হাজার থেকে শুরু করে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করেন। ২০২০-২১ সালে ২০ লাখ টাকার ময়ূর বিক্রি করেছেন। এতে তার মুনাফা হয়েছে ১০ লাখ টাকা।
তিনি জানান, বর্তমানে খামারে ১০৫টি ময়ূর আছে। যার বাজারমূল্য ৩০ লাখ টাকা। এগুলোর মধ্যে কিছু আছে ছোট এবং বেশ কয়েকটা ডিম দেবে। চলতি বছরের জুন-জুলাইয়ের দিকে বেচাবিক্রি শুরু করবেন।
ময়ূর কী খায় এবং এই ময়ূর কারা কেনেন- এমন প্রশ্নে শাহ আলী বলেন, ‘ময়ূর সাধারণত নরম ঘাস খায়। এ ছাড়া মুরগির জন্য যেসব দানাদার খাবার বাজারে পাওয়া যায়, সেসব খাবার খায়। আমার ফার্মের পাশে কৃষিজমিতে প্রচুর সবুজ ঘাস জন্মে। সেগুলো তুলে এনে খেতে দিই।
‘মূলত যারা শৌখিন বা শিল্পপতি আছেন, তারা ময়ূর কেনেন। তাদের ব্যক্তিগত চিড়িয়াখানায় লালন-পালন করেন।’
খামার নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার খামারে এখন ভেড়া ও তিতির পাখিও আছে। তবে যেহেতু কম খরচে ময়ূর লালন-পালন করা যায় এবং মুনাফাও ভালো, তাই খামার আরও বড় করার পরিকল্পনা আছে।’
এখন যারা ময়ূরের খামার করতে আগ্রহী, তাদের প্রথমে অভিজ্ঞতা অর্জন জরুরি বলে মনে করেন এ খামারি।
বলেন, ‘যারাই ময়ূর খামার করতে চায় আমি মনে করি, প্রথমে তাদের অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হবে। এ জন্য তারা হয় কোনো খামারে স্বেচ্ছাশ্রম দেবে, না হয় নিজের বাসায় এক-দুই জোড়া ময়ূর পালন করবে। এভাবে বছর দু-এক পর খামার করলে ভালো করতে পারবে।’
এদিকে নিজের খামারের ময়ূরের নাচে মুগ্ধ তিনি নিজেই। তিনি বলেন, ‘যখন আমি একা থাকি ময়ূরগুলোকে দেখি। এগুলো পেখম তুলে নাচে, ডাকে। তখন খুব ভালো লাগে।’
‘ময়ূর খুব ভীতু স্বভাবের প্রাণী। একটুতেই ভয় পায় এরা। তবে আমি যখন একা এগুলোর কাছে আসি, তখন আমার আশপাশে ঘুরঘুর করে।’
কুমিল্লায় এটিই একমাত্র ময়ূর খামার জানিয়ে কুমিল্লা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘কুমিল্লায় শাহ আলীর ময়ূর খামার ছাড়া আর কোনো ময়ূর খামার নেই।
‘নিঃসন্দেহে ময়ূর খামার একটি ভালো উদ্যােগ। আমরা তাকে সাধুবাদ জানাই। কোনো বেকার যুবক যদি এমন উদ্যােগ নেয়, আমরা তাকে স্বাগত জানাব। প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।’
আরও পড়ুন:সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার চিনাকান্দি সীমান্তে রোববার অভিযান চালিয়ে ২২ হাজার ৫৪০ কেজি ভারতীয় আপেল জব্দ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
বাহিনীটির সুনামগঞ্জ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ কে এম জাকারিয়া কাদির স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বিজিবির সুনামগঞ্জ ব্যাটালিয়ন (২৮ বিজিবি) কর্তৃক দায়িত্বপূর্ণ বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার চিনাকান্দি সীমান্তে অভিযান পরিচালনা করে ১ কোটি ৩৬ লক্ষাধিক টাকা মূল্যের ২২ হাজার ৫৪০ কেজি ভারতীয় আপেলসহ দুটি ট্রাক জব্দ করা হয়েছে।
‘অদ্য ১৩ অক্টোবর, ২০২৪ তারিখ ১৫৩০ ঘটিকায় বিজিবির সুনামগঞ্জ ব্যাটালিয়নের (২৮ বিজিবি) অধীনস্থ চিনাকান্দি বিওপির (সীমান্ত চৌকি) কমান্ডার জেসিও সুবেদার ওবায়দুর রহমানের নেতৃত্বে বিজিবির একটি টহলদল গোপন তথ্যের ভিত্তিতে দায়িত্বপূর্ণ বিশ্বম্ভরপুর উপজেলাধীন ধনপুর ইউনিয়নের ঝিগাতলা নামক স্থানে চোরাচালানবিরোধী অভিযান পরিচালনা করে মালিকবিহীন ২২ হাজার ৫৪০ কেজি ভারতীয় আপেলসহ দুটি বড় ট্রাক জব্দ করতে সক্ষম হয়েছে।
‘জব্দকৃত মালামালের আনুমানিক সিজার মূল্য ১ কোটি ৩৬ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। জব্দকৃত আপেল ও ট্রাক সুনামগঞ্জ কাস্টমস অফিসে জমা করার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’
সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডে পতিত সরকারের প্রভাবশালী লোক জড়িত ছিল মর্মে প্রাথমিক তদন্তে নাম এসেছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।
রোববার সুনামগঞ্জ পৌর শহরের পুরনো বাস স্টেশনের একটি হোটেলে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলায় বাদীপক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনিরকে ২৯ সেপ্টেম্বর নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
শিশির মনির বলেন, ‘ঘটনার ১২ বছর পর টাস্কফোর্স গঠন করে এটি তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। রিপোর্ট প্রদানের জন্য সরকারকে ছয় মাস সময় দেয়া হয়েছে। এতে গণমাধ্যম, সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের নাম এসেছে। বেশকিছু সংবেদনশীল মানুষ এর সঙ্গে জড়িত বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা পাওয়া গেছে।
‘তদন্তটি এখন প্রপার ডাইমেনশনে আছে। মামলাটি যে জায়গায় গেছে এখন সরকার আর কোনো বাধা দিচ্ছে না। আপাতত কোনো বাধা নেই, উদ্দেশ্যের কোনো সংকট নেই, সরকারের আগ্রহের কোনো ঘাটতি নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘সাগর-রুনির মরদেহে দুই ব্যক্তির ডিএনএ পাওয়া গেছে। এখন এদের খোঁজা হচ্ছে। আশা করছি এই দুই ব্যক্তির তথ্যও আপনারা জানতে পারবেন।
‘শুধু সরকারের দায়িত্বে ছিলেন তা নয়, সরকারের পাশে থেকে যারা সহযোগিতা করেছেন তাদের মধ্যেও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নাম এসেছে। আপাতত তদন্ত চলা অবস্থায় সুনির্দিষ্ট ব্যক্তির নাম বলায় আইনগত বাধা আছে, তাই বলছি না। তবে ইন্ডিকেশন আছে, ইশারাই যথেষ্ট আমার মনে হয়।’
আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির আরও বলেন, ‘বেশ কয়েকটি রিপোর্ট আছে। সেগুলো পরীক্ষা করা হচ্ছে। আগামীকাল মিটিং আছে। সেই মিটিংয়ে হয়তো আরেকটু ক্লিয়ার হওয়া যাবে।’
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শামস উদ্দিন, জেলা জামায়াতের আমীর মোহাম্মদ তোফায়েল আহমদ, সুনামগঞ্জের প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।
প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া বাসায় খুন হন সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি। তাদের একমাত্র ছেলে পাঁচ বছর বয়সী মাহির সরওয়ার মেঘ সেই সময় বাসায় ছিল।
সাগর বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল মাছরাঙা টিভিতে এবং রুনি এটিএন বাংলায় কর্মরত ছিলেন। হত্যার ঘটনায় আলী রোমান শেরেবাংলা থানায় মামলা করেন।
মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য এ পর্যন্ত ১১১ বার সময় বাড়ানো হয়েছে। পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ১৫ অক্টোবর দিন ধার্য রয়েছে।
আরও পড়ুন:রাজধানীর অদূরে সাভারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শিক্ষার্থী হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি শওকত হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সাভার মডেল থানার ওসি জুয়েল মিয়া জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শনিবার সন্ধ্যায় তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়নের যাদুরচর গ্রাম থেকে শওকত হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
শওকত হোসেন সাভারের তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়নের যাদুরচর গ্রামের মৃত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। তিনি সাভার উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি। এছাড়াও তিনি সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ভাকুর্তা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লিয়াকত হোসেনের বড় ভাই।
শওকত হোসেনের বিরুদ্ধে ১৯ আগস্ট শিক্ষার্থী সাজ্জাদ হত্যার ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।
সারাদেশে এবার দুর্গাপূজা অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে সম্প্রীতির সম্পর্ক বজায় রেখে উৎসবমুখর পরিবেশে এবার দুর্গাপূজা পালন করেছে। পূজা নিয়ে পরাজিত শক্তির সব অপকৌশল রুখে দিয়েছে বিএনপি।
রোববার দুপুরে মহম্মদপুর উপজেলার হাটবাড়িয়ার নিজ বাড়িতে দূর্গাপুজা উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরি।
বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, ‘মাগুরায় এবার দুর্গাপূজায় জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ বিভিন্ন পূজা মণ্ডপে পরিদর্শন করেছেন। জেলার কোথাও কোন স্থানে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে জেলায় এবার দুর্গাপূজা সম্পন্ন হয়েছে। সব সম্প্রদায়ের মানুষের সঙ্গে সম্প্রতি বজায় রেখে আমরা চলতে চাই।’
সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির নেতা মনোয়ার হোসেন খান, সাবেক জেলা কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক খান হাসান ইমাম সুজা, মিথুন রায় চৌধুরি, আলমগীর হোসেন, সদর থানা বিএনপির আহ্বায়ক কুতুব উদ্দিন কুতুব, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আশরাফুজ্জামান শামীম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে দেশে আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২১৪ জন।
এদিকে নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৬৬০ জন ডেঙ্গু রোগী। এই সংখ্যাসহ চলতি বছরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন মোট ৪২ হাজার ৪৭০ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে রোববার পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে চারজনের মৃত্যু হয়। তাদের মধ্যে দুজন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ও একজন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকার। বাকি একজন ময়মনসিংহ বিভাগের।
একই সময়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৬৬০ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে ঢাকা সিটি করপোরেশনে ৩২৮ ও বাকিরা ঢাকার বাইরে সারা দেশে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। একই সময়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৬৯৭ জন। আর জানুয়ারি থেকে রোববার ১৩ অক্টোবর রোববার পর্যন্ত হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে ছাড়পত্র পেয়েছেন মোট ৩৮ হাজার ৬৪৬ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, হাসপাতালে নতুন ভর্তিদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ৩২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৫৭ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১১১, ঢাকা উত্তর সিটিতে ২০৭, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ১২১ ও খুলনা বিভাগে ৭১ জন রয়েছেন।
আরও পড়ুন:ভারত থেকে বিপুল পরিমাণ ডিম আমদানি সত্ত্বেও বাজারে এর ইতিবাচক প্রভাব নেই। সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যে দেশের বাজারে ডিমের দাম কমছে না।
বিক্রেতারা জানিয়েছেন, ভারত থেকে আমদানি করা ডিমগুলো সাদা রঙের এবং এসব ডিম সাধারণত কিনে থাকেন বেকারি ব্যবসায়ীরা। সাধারণ ভোক্তারা বাদামি রঙের ডিম বেশি পছন্দ করেন। বর্তমানে পাইকারি বাজারে প্রতি পিস ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪ টাকার উপরে।
আমদানি করা পণ্য সাধারণত পাইকারি বাজারে দাম কমাতে প্রভাব রাখে। তবে এবার ডিমের ক্ষেত্রে ভিন্ন চিত্র দেখা যাচ্ছে।
রোববার যশোরের বেনাপোল ও নাভারণ বাজারে সরেজমিনে দেখা গেছে, পাইকাররা প্রতি পিস ডিম বিক্রি করছেন ১৪ টাকা ৫০ পয়সা দরে। ভারত থেকে ডিম আমদানি হলেও পাইকারি বাজারে এর কোনো প্রভাব দেখা যাচ্ছে না।
সাদা ডিম ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, সাদা ডিমের দাম কিছুটা কম থাকায় বেকারিতে এর চাহিদা একটু বেশি থাকে। অন্যদিকে সাধারণ ভোক্তার কাছে বাদামি রঙের ডিমের চাহিদা একটু বেশি। তাই সাদা ডিম আমদানি হলেও ভোক্তা পর্যায়ে ডিমের দাম কমছে না।
বেনাপোলের প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. বিনয় কৃষ্ণ জানান, ভারত থেকে আমদানি করা ডিমের পরিমাণ চাহিদার তুলনায় অনেক কম। সাদা ডিমের দাম কম থাকায় বেকারিতে এর চাহিদা বেশি। কিন্তু দেশে বাদামি ডিমের চাহিদা বেশি। বাদামি ডিমের ওজন ৬০ থেকে ৬৫ গ্রাম হয়ে থাকে, আর সাদা ডিমের ওজন হয় ৫০ থেকে ৫৫ গ্রাম। ভারত থেকে আমদানি করা ডিমের বিক্রয় যথাযথভাবে না হলে পরবর্তী সময়ে আমদানিতে আগ্রহ কমতে পারে।
বেনাপোল ডিম ব্যবসায়ী মো. নজরুল ইসলাম জানান, বর্তমানে ডিমের পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে এবং চাহিদাও ভালো। তবে বাড়তি দরে ডিম কিনতে হচ্ছে, যার প্রভাব পাইকারি ও খুচরা বাজারে পড়ছে।
শার্শার নাভারণ এলাকার বাসিন্দা মো. আব্দুল মান্নান বলেছেন, ‘ভারত থেকে ডিম আমদানি করে লাভ কী? খুচরা দোকানগুলোতে ভারত থেকে আমদানি করা ডিম পাওয়া যাচ্ছে না। বাধ্য হয়ে বাদামি রঙের ডিম ১৫ টাকা করে কিনতে হচ্ছে। চাহিদাকে পুঁজি করে অসাধু ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছে। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা দরকার।’
বেনাপোলের খুচরা ডিম ব্যবসায়ী রাসেল বলেন, ‘সিন্ডিকেট ডিমের দাম নির্ধারণ করে থাকে। দীর্ঘদিন ধরে ডিমের বাজার চড়া। এসএমএসের মাধ্যমে সিন্ডিকেট চক্র এর দর নির্ধারণ করে, যাতে নজর দেয়া প্রয়োজন।
‘ব্যবসায়ীদের ডিম কেনা ও বিক্রিমূল্য খতিয়ে দেখতে হবে এবং পাইকারি ও খুচরা বাজারে সমানতালে অভিযান পরিচালনা করতে হবে। বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা না থাকায় ডিমসহ সব কিছুর দাম অনেক বেশি।’
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণের শার্শা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নুসরাত ইয়াছমিন জানান, তারা নিয়মিত কার্যক্রমের পাশাপাশি অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করছেন। ক্রয়-বিক্রয় রসিদ, মূল্য তালিকা, বাড়তি দামে পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে কিনা সবকিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। ডিমের দামে কোনো কারসাজি হচ্ছে কিনা তাও যাচাই করা হবে।
আরও পড়ুন:বঙ্গোপসাগরে কক্সবাজারের কুতুবদিয়ার বহির্নোঙরে এলপিজিবাহী ‘সোফিয়া’ নামের লাইটারেজ জাহাজে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
এ ঘটনায় জাহাজে থাকা ৩১ জন ক্রুকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
আগুনে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
রাতে ঘটনার পরপরই খবর পেয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ এবং ক্রুদের উদ্ধারকাজ শুরু করে নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ডের কয়েকটি জাহাজ। উদ্ধারকাজে অংশ নেয় মেটাল শার্ক ও চারটি অগ্নিনির্বাপণী ও উদ্ধারকারী দল।
বঙ্গোপসাগরের কুতুবদিয়া উপকূলের পশ্চিমে বহির্নোঙর এলাকায় শনিবার রাত পৌনে একটার দিকে আগুনের ঘটনা ঘটে বলে জানান কোস্ট গার্ড পূর্ব জোনের গণমাধ্যম কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার খন্দকার মুনিফ তকি।
আগুনের সূত্রপাত কীভাবে ঘটেছে, তা নিশ্চিত করতে না পারলেও হতাহতের কোনো ঘটনা নেই বলে জানান তিনি।
কোস্ট গার্ডের এ কর্মকর্তা জানান, জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরে যাচ্ছিল, তবে কোন দেশ থেকে এলপিজি বহন করে আনছিল, তা নিশ্চিত নন তিনি।
মুনিফ তকি বলেন, “এলপিজি বহনকারী ‘সোফিয়া’ নামের লাইটারেজ জাহাজটি কুতুবদিয়া উপকূলের পশ্চিমে বঙ্গোপসাগরে নোঙর করেছিল। শনিবার মধ্যরাতে জাহাজটিতে আকস্মিক আগুন লেগে যায়। এতে আগুন ভয়াবহ রূপ নিয়ে ছড়িয়ে পড়ে।
“কুতুবদিয়ার উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে পৌঁছায় নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ডের কয়েকটি জাহাজ। দুর্ঘটনা কবলিত জাহাজটির আগুন নিয়ন্ত্রণ ও ক্রুদের উদ্ধারকাজ চালায় কোস্ট গার্ডের দুটি জাহাজ এবং নৌবাহিনীর পাঁচটি অত্যাধুনিক জাহাজ।”
সোয়া ১১ ঘণ্টা চেষ্টার পর রোববার দুপুর ১২টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে, তবে জাহাজটির ভেতরে পুনরায় অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি এড়াতে কোস্ট গার্ড ও নৌবাহিনীর সদস্যরা কাজ চালাচ্ছেন।
কোস্ট গার্ডের গণমাধ্যম কর্মকর্তা বলেন, ‘জাহাজটিতে মোট ৩১ জন ক্রু ছিল। তাদের সবাইকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
‘তাদের উদ্ধারের পর প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে চট্টগ্রামের হোটেল আগ্রাবাদে রাখা হয়েছে।’
এটি নিছক দুর্ঘটনা নাকি কোনো ধরনের নাশকতা, তা জানতে কোস্ট গার্ডসহ সংশ্লিষ্টরা খোঁজখবর নিচ্ছে বলে জানান খন্দকার মুনিফ তকি।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য