নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য প্রথমবারের মতো এ-সংক্রান্ত আইনের আলোকে ‘সার্চ কমিটি’ গঠন করাকে সরকারের সাহসী উদ্যোগ হিসেবে দেখছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ।
দলটির নেতারা বলছেন, এতে দেশের মানুষের এবং রাজনৈতিক দলগুলোর দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হয়েছে। তারা সার্চ কমিটিকে স্বাগত জানিয়ে আশা প্রকাশ করেন, এ কমিটি একটি শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন জাতিকে উপহার দিতে সফল হবে।
শনিবার সার্চ কমিটি গঠনের পর নিউজবাংলাকে দেয়া প্রতিক্রিয়ায় এমন মতামত তুলে ধরেন আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন আইনের আলোকে সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছে। যারা কমিটিতে স্থান পেয়েছেন তারা সমাজের গণ্যমান্য এবং শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি। সুশীল সমাজের পক্ষ থেকে যে দুজন কমিটিতে থাকছেন, তারা বরেণ্য শ্রদ্ধেয় এবং নিরপেক্ষ ব্যক্তি।
‘আমরা আশা করি এ সার্চ কমিটি আগামী জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে একটি নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য এবং শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠন করতে সফল হবে।’
দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম নির্বাচন কমিশন আইনের আলোকে সার্চ কমিটি গঠন করাকে সাধুবাদ জানান।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার জনগণ এবং দেশের সব রাজনৈতিক দলের আকাঙ্ক্ষা ও প্রত্যাশা অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন গঠন সংক্রান্ত আইন প্রণয়ন করেছে। সেই আইনের আলোকে সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছে। এটি একটি তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি সাহসী উদ্যোগ।’
তিনি বলেন, ‘এ সার্চ কমিটি যে নির্বাচন কমিশন গঠন করবে তা হবে সংবিধানে বর্ণিত আইনের আলোকে প্রথমবারের মতো গঠিত নির্বাচন কমিশন; যা বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম। এই প্রক্রিয়া বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে আরও শক্তিশালী করবে।’
এ সার্চ কমিটি যে নির্বাচন কমিশন গঠন করবে তা বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য এবং শক্তিশালী ভূমিকা পালন করবে বলেও আশা এই আওয়ামী লীগ নেতার।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের ইতিহাসে সব থেকে শক্তিশালী, গ্রহণযোগ্য এবং সফল নির্বাচন কমিশন গঠিত হবে এবার।’
প্রথমবারের মতো আইনের মাধ্যমে সার্চ কমিটি গঠন হওয়ায় সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন।
তিনি বলেন, ‘এটি সরকারের প্রশংসনীয় উদ্যোগ। নির্বাচন কমিশন গঠন সংক্রান্ত আইন এ দেশের আপামর মানুষের দাবি ছিল। সরকার সে দাবি পূরণ করে সার্চ কমিটি করেছে।
‘আশা করি এ সার্চ কমিটি দেশকে একটি শক্তিশালী নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন উপহার দেবে।’
নির্বাচন কমিশন গঠনে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে প্রধান করে সার্চ কমিটি গঠন করে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
রাষ্ট্রপতির পক্ষে শনিবার মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের সই করা প্রজ্ঞাপনে এ কথা বলা হয়েছে, যা গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়েছে।
এই কমিটি ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন, ২০২২’-এর ধারা অনুযায়ী সিইসি ও অন্য কমিশনারদের নিয়োগে আইনে বর্ণিত যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের নাম সুপারিশ করবে।
সার্চ কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান, মহাহিসাব নিরীক্ষক, সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ছহুল হোসাইন ও কথাসাহিত্যিক আনোয়ারা সৈয়দ হক।
আরও পড়ুন:রাজনৈতিক সহিংসতা, দুর্নীতি ও রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগে সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাবিনা আক্তার তুহিন ও মুন্সিগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ ফয়সাল বিপ্লবকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।
সোমবার (২৩ জুন) সকালে ডিবির যুগ্ম কমিশনার (উত্তর) মোহাম্মদ রবিউল হোসেন ভূঁইয়া এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, সাবিনা আক্তার তুহিনের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে দুর্নীতি, রাজনৈতিক সহিংসতায় উসকানি ও সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকাণ্ডে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ অন্যতম। এসব অভিযোগের ভিত্তিতেই নবাবগঞ্জের ষোল্লা ইউনিয়নের গ্রামের বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এর আগে, গতকাল (রবিবার) রাত ১০টার দিকে রাজধানীর ফার্মগেটের মনিপুরীপাড়ার একটি আবাসিক ভবন থেকে ফয়সাল বিপ্লবকে গ্রেপ্তার করে ডিবির আরেকটি দল।
তার বিরুদ্ধে জুলাই আন্দোলন-সংশ্লিষ্ট একটি হত্যা মামলায় সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
ডিবি কর্মকর্তারা জানান, সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সহিংসতা ও হত্যার ঘটনায় তুহিন ও বিপ্লব—উভয়েই গোয়েন্দা নজরদারিতে ছিলেন। বিশেষ করে, গত বছরের জুলাই আন্দোলনের সময় ফয়সাল বিপ্লবের প্রত্যক্ষ ভূমিকা ছিল বলে দাবি পুলিশের।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডিএমপির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, রাজনৈতিক হয়রানির জন্য নয়, যথাযথ প্রমাণ ও মামলার ভিত্তিতেই তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
দুজনেরই রিমান্ড চেয়ে আদালতে আবেদন করা হবে এবং তদন্তে জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারেও অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন ডিবির কর্মকর্তারা।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে আবারও তিন ঘণ্টার কলম বিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছেন কর্মকর্তারা ও কর্মচারীরা।
সোমবার (২৩ জুন) সকাল ৯টা থেকে আগারগাঁওয়ের এনবিআর ভবনে কাফনের কাপড় পরে এই কর্মসূচি শুরু করেন তারা।
এর আগে শনিবার (২১ জুন) এ কর্মসূচি ঘোষণা দেয় এনবিআর কর্মকর্তাদের সংগঠন এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ।
কাউন্সিলের সভাপতি ও অতিরিক্ত কমিশনার হাসান মোহাম্মদ তারেক রিকাবদার এবং সাধারণ সম্পাদক ও অতিরিক্ত কর কমিশনার সহেলা সিদ্দিকা পুনরায় এনবিআরে ‘যুক্তিসংগত সংস্কার’ বাস্তবায়নের দাবি জানান।
তারা বলেন, এনবিআর চেয়ারম্যানকে অবিলম্বে অপসারণ করতে হবে, কারণ তার নেতৃত্ব সংস্কার প্রক্রিয়া শুধু বিলম্বিত হয়েছে।
এর আগেই তাকে এনবিআরের প্রধান কার্যালয়ে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ।
গত ১৯ জুন গঠিত এনবিআর সংস্কার কমিটি নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেছে তারা।
এ প্রসঙ্গে তারা বলেন, রাজস্ব অধ্যাদেশ সংশোধনের লক্ষ্যে এনবিআরের কর, কাস্টমস ও ভ্যাট অনুবিভাগের ছয়জন সদস্য সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কিন্তু উদ্বেগের বিষয়, এ কমিটিতে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের কোনো প্রতিনিধিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি, এমনকি তাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা পর্যন্ত করা হয়নি।
প্রসঙ্গত, ১২ মে জারি করা এক অধ্যাদেশে এনবিআর ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) বাতিল করে সরকার রাজস্ব নীতি বিভাগ এবং রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ নামে দুটি নতুন বিভাগ গঠন করে।
এরপর থেকেই এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে এনবিআর কর্মকর্তারা নানা ধরনের প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে আসছেন।
সংস্কার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে গত ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট অধ্যাদেশ সংশোধনের ঘোষণা দেয় সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার নতুন এই কমিটি গঠন করা হয়।
এদিকে, শিশুমেলা থেকে এনবিআর কার্যালয় পর্যন্ত রাজধানীর আগারগাঁও এলাকায় সব ধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। রবিবার থেকে কার্যকর হওয়া নিষেধাজ্ঞা পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বহাল থাকবে বলে এক গণবিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
আজ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নগর ভবনের সব কক্ষের তালা খুলে দেওয়া হবে। তবে প্রশাসক ও প্রকৌশলীদের কক্ষ তালাবদ্ধই থাকবে।
গতকাল রোববার দুপুরে নগর ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। সেখানে বলা হয়, নাগরিক সেবার স্বার্থে আঞ্চলিক অফিসসহ সংশ্লিষ্ট দফতরগুলো চালু রাখা এবং কর্মরতদের নিজ নিজ দফতরে ফিরে গিয়ে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানানো হয়েছে।
আন্দোলনের সমন্বয়ক ও সাবেক সচিব মশিউর রহমান বলেন, ‘ঢাকাবাসীর পক্ষ থেকে আমরা স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত। একই সঙ্গে নাগরিক সেবা নির্বিঘ্ন রাখতে সংশ্লিষ্ট সব বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিজ নিজ দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানাচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইশরাক হোসেনের শপথ গ্রহণ না করিয়ে আদালত ও সংবিধান লঙ্ঘন করায় স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়ার অপসারণ দাবি করছি।’
মশিউর রহমান বলেন, ‘প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, সচিব, স্বাস্থ্য বিভাগ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ, ভাণ্ডার ও ক্রয়, হিসাব ও অডিট, সমাজ কল্যাণ, আইন, রাজস্ব, সম্পত্তি, পরিবহন, বিদ্যুৎ, যান্ত্রিক, সংস্থাপন, নিরাপত্তা, জনসংযোগ, আইসিটি সেল, নগর পরিকল্পনা বিভাগ এবং আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাদের নিজ নিজ দফতরে থেকে জন্ম-মৃত্যু সনদ, নাগরিক সনদ, ওয়ারিশ সনদ, প্রত্যয়নপত্র, ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়ন, মশক নিধন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধ এবং সড়কবাতি সচল রাখার মতো গুরুত্বপূর্ণ নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে হবে।’
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘কোনও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা, সাবেক সরকারের দোসর বা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর নগরভবন বা আঞ্চলিক কার্যালয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। দেখামাত্র প্রতিহত করা হবে। কোনও কর্মকর্তার দায়িত্ব পালনে গাফিলতি করলে তার বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, গত ১৪ মে নগর ভবনের বেশ কিছু কক্ষে শিকল দিয়ে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেই তালা খুললেও প্রশাসক ও প্রকৌশলীদের কক্ষ বন্ধই থাকবে। আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, নতুন করে কেউ নিয়োগ দিতে চাইলে সেটিও প্রতিহত করা হবে।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, প্রতিটি অঞ্চলে আন্তর্জাতিক খেলা পৌঁছে দিব। এটিকে ঘিরে গড়ে উঠবে স্পোর্টস ইকোসিস্টেম।
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের ভেরিফাইড ফেসবুকে দেওয়া পোস্টে বলা হয়, 'কথা দিয়েছিলাম প্রতিটি অঞ্চলে আন্তর্জাতিক খেলা পৌঁছে দিব। তাকে ঘিরে গড়ে উঠবে স্পোর্টস ইকোসিস্টেম। এই প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে রাজশাহীতে হবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট আর নীলফামারিতে আন্তর্জাতিক ফুটবল। এছাড়াও পরিকল্পনায় আছে খুলনাও।'
পোস্টে আরো বলা হয়েছে, 'প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে দ্রুতই মাঠে বল গড়াবে ইনশাআল্লাহ।'
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) প্রতিনিধি দলের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনের সঙ্গী গণতন্ত্র মঞ্চের লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রোববার রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে আয়োজিত এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও ইকবাল হাসান মাহমুদ চৌধুরী টুকু।
গণতন্ত্র মঞ্চ লিয়াজোঁ কমিটির সদস্য বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকিসহ কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির মিডিয়া সেলের ফেইসবুক পেইজে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
রামপুরা ২৩০/১৩২ কেভি গ্রিড উপকেন্দ্রে ত্রুটির কারণে রাজধানীর বিভিন্নস্থানে বিদ্যুৎ নেই বলে জানিয়েছে পাওয়ার গ্রিড বাংলাদেশ পিএলসি (পিজিসিবি)। এর ফলে ঢাকার একটি বড় অংশ এখন বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছে। ত্রুটি মেরামত করে দ্রুত বিদ্যুৎ সরবরাহের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে পিজিসিবি জানিয়েছে।
আজ রোববার রাত ১০টার দিকে এই ত্রুটি দেখা দেয়। এতে বসুন্ধরা, গুলশান, আফতাবনগর, রামপুরা, মগবাজার, মধুবাগ, ফার্মগেট, রাজাবাজার, কাওরান বাজার, বনানী, হাতিরঝিল, মহাখালী, সেগুনবাগিচা, মগবাজার, তেজগাঁও, ফার্মগেট, বনশ্রীসহ অনেক এলাকা এখন বিদ্যুৎবিহীন।
পিজিসিবির সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) এ বি এম বদরুদ্দোজা খান সুমন বলেন, রামপুরা ২৩০/১৩২ কেভি গ্রিড সাবস্টেশনে রাত ৯টা ৫০ মিনিটে আকস্মিক কারিগরি ত্রুটি দেখা দেয়। এতে ঢাকার একাংশে বিদ্যুৎ সরবরাহে অনাকাঙ্ক্ষিত বিচ্যুতি হয়েছে। পাওয়ার গ্রিডের প্রকৌশলীরা দ্রুত সমস্যা সমাধানে কাজ করছেন বলে তিনি জানান।
সম্ভাব্য দ্রুততম সময়ে সমস্যা সমাধান করা সম্ভব হবে বলে আশা তিনি জানান, রামপুরা গ্রিডের ২৩০ কেভি অংশে সমস্যা হওয়ায় কারণে ডেসকো'র বসুন্ধরা ১৩২/৩৩ কেভি গ্রিডের (আংশিক), পূর্বাচল গ্রিড, বনানী গ্রিড, আফতাবনগর গ্রিড, গুলশান গ্রিড বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। এনএলডিসির সঙ্গে যোগাযোগ করে সঠিক কারণ উদ্ঘাটন এবং দ্রুত বিদ্যুৎ ব্যবস্থা চালুর চেষ্টা চলছে। তবে সব জায়গায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হতে কিছুটা সময় লাগতে পারে বলে তিনি জানান।
বরিশালের নদ-নদী এবং সাগরে হঠাৎ করে ধরা পড়ছে ঝাকে ঝাকে ইলিশ। সেই সঙ্গে ঝিমিয়ে যাওয়া বরিশালের সর্ববৃহৎ পোর্ট রোড মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র আবারও সরগরম হয়ে উঠেছে। ব্যবসায়ীদের দাবি-গত তিনদিন ধরে দৈনিক দুইশ থেকে সাড়ে তিনশ মণ পর্যন্ত ইলিশ আসছে এই পাইকারি মৎস্য আড়তে। তবে সরবরাহের অর্ধেকের বেশি ইলিশ আকারে ছোট দাবি বলে আড়তদারদের।
ইলিশের সরবরাহ বাড়তে শুরু করলেও দাম এখনো নিম্ন আয়ের মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। এক কেজি জাটকা কিনতে এখনো গুণতে হচ্ছে সর্বনিম্ন পাঁচশ টাকা। তবে সরবরাহ বৃদ্ধির ধারাবাহিকতা ঠিক থাকলে চলতি মাসেই ইলিশে দাম আরও কমে বলে আশাবাদী ব্যবসায়ীরা।
সরজমিনে বরিশাল নগরীর পোর্ট রোড ইলিশ মোকামে দেখা যায়, ভোর পাঁচটা বাজার আগে থেকেই আড়তে আসছে একের পর এক ইলিশের ট্রলার। সাগর এবং নদীর মাঝ পোর্ট রোডে নামিয়ে দিয়ে ট্রলার নিয়ে জেলেরা আবার ছুটছেন সাগর এবং নদীতে। তবে বর্তমানে বরিশাল মোকামে আসা অর্ধেক ইলিশ স্থানীয় নদ-নদীর বলে দাবি জানিয়েছেন আড়াতদাররা।
পোর্টরোড আক্তার মৎস্য আড়তের আড়তদার আক্তার হোসেন জানিয়েছেন, গত দুই-তিন দিনের তুলনায় রোববার ইলিশের দাম কিছুটা কম ছিল। কারণ এ কয়দিনে আড়তে ইলিশের সরবরাহ কিছু বেশি হয়েছে। এর পরও এলসি সাইজ অর্থাৎ ৭০০-৯৯৯ গ্রাম ওজনের প্রতিমণ ইলিশ ৭৫-৭৬ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে।
এছাড়া এক কেজি সাইজের ইলিশ প্রতিমণ ৮৮ হাজার, এক কেজির ওপরে ১২শ গ্রাম পর্যন্ত ইলিশ প্রতিমণ ৯২ হাজার, দেড় কেজি ওজনের ইলিশ প্রতিমণ ৯৮ হাজার টাকা, ভেলকা সাইজ অর্থাৎ ৫০০ থেকে ৭০০ গ্রাম প্রতিমণ ৫৮-৬০ হাজার টাকা, ৩০০ থেকে ৫শ গ্রাম ইলিশ প্রতিমণ ৩২ হাজার টাকা এবং জাটকা ইলিশ প্রতিমণ বিক্রি হয়েছে ২০ হাজার টাকা দরে।
মৎস্য আড়তদার ইয়ার হোসেন জানিয়েছেন, পদ্মা সেতু নির্মাণের আগে বরিশালের আড়তে প্রতিদিন ৩-৪ হাজার মণ ইলিশও এসেছে। কিন্তু পদ্মা সেতু চালুর পর সেই পরিমাণ কমে গেছে। তবে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মৎস্য আড়তে কিছুটা ঝামেলা হয়েছে বিধায় গত তিন দিন ধরে নদী এবং সাগরের মাছের ট্রলার বরিশালে আসছে। এ কারণে বরিশালের আড়তে সরবরাহও বেড়েছে।
বরিশাল শহীদ জিয়া মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি জহির সিকদার বলেন, রোববার বরিশালের আড়তে তিনশ মনের বেশি ইলিশ এসেছে। যা চলতি বছরে সর্বোচ্চ। তবে সরবরাহ হওয়া ইলিশের মধ্যে প্রায় আড়াইশ মণই জাটকা। তাছাড়া নদীর থেকে সাগরের ইলিশটাই বেশি আসছে।
তিনি জানান, গত শনিবার বরিশাল পোর্ট রোড মোকামে ২০০ মণ এবং তার আগের দিন শুক্রবার প্রায় দুইশ মণ ইলিশ এসেছে পোর্ট রোডের ইলিশ মোকামে। ফলে গত তিন দিনের ব্যবধানে ইলিশের দাম মণপ্রতি ৫ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকা পর্যন্ত কমেছে। আগামী ২৫ জুন পূর্ণিমার জোঁ রয়েছে। ওইদিন থেকে আরও বেশি মাছ ধরা পড়বে বলে আশাবাদী এই ব্যবসায়ী।
খুঁচরা বাজারে দেখা যায়, আড়তে মাছের সরবরাহ বাড়লেও খুচরা বাজারে তার প্রভাব পড়েনি। সংকটের অজুহাতে এখনো বাড়তি দামেই ইলিশ বিক্রি করছেন বাজারের ব্যবসায়ীরা। ৭০০-৯৯৯ গ্রামের ইলিশ পাইকারী হিসেবে প্রতি কেজির দাম ১৮শ থেকে ১৯শ টাকা হলেও তা বিক্রি করা হচ্ছে ২২শ থেকে আড়াই হাজার টাকায়। একইভাবে কেজি সাইজের ইলিশ প্রতি কেজি ২২শ টাকার পরিবর্তে বিক্রি করা হচ্ছে ২৫শ থেকে ২৮শ টাকায়। আর জাটকা ইলিশ বিক্রি করা হচ্ছে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকায়। বাড়তি দামে ইলিশ বিক্রি করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নিম্ন আয়ের ক্রেতারা।
বরিশাল জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রিপণ কান্তি ঘোষ বলেন, একসময় বরিশালের পোর্ট রোড মৎস্য আড়ত জমজমাট ছিল। তখন দক্ষিণাঞ্চলের নদী এবং সাগরের ইলিশ এখানো আসত। তবে এখন যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নতির কারণে ইলিশ যাচ্ছে পটুয়াখালীর মহিপুর, আলিপুর এবং পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে। তাছাড়া বরিশালের হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জ এলাকার ইলিশ নিয়ে যাওয়া হচ্ছে চাঁদপুরে। বরিশালের আড়তে যা মাছ আসছে তা স্থানীয় নদনদীর মাছ।
তিনি বলেন, মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান অনেকটা সফল হয়েছে। এ সময় প্রচুর ইলিশের পোনা ছেড়েছে। এর সুফল সামনে পাওয়া যাবে। তবে এখনই গত কয়েকদিন ধরে হঠাৎ করেই নদনদীতে বড় সাইজের ইলিশ ধরা পড়তে শুরু করেছে। এটা ভালো লক্ষ্যন। বৃষ্টি এবং বৈরী আবহাওয়ার কারণে ইলিশ ধরা পড়ছে বেশি। ভবিষ্যতে আরও বেশি ইলিশ ধরা পড়লে দামও কমে আসবে বলেন এই কর্মকর্তা।
মন্তব্য