× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
The roar of textile mills
google_news print-icon

বস্ত্রকলগুলোর রমরমা

বস্ত্রকলগুলোর-রমরমা
করোনার প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউ কেটে যাওয়ার পর থেকে পোশাক রপ্তানি বাড়ছে। তার ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ বা পশ্চাদসংযোগ শিল্প হিসেবে বস্ত্র খাতও ভালো ব্যবসা করছে। করোনাভাইরাসের মধ্যেই উৎপাদন সক্ষমতা বাড়াতে নতুন বিনিয়োগের পথে হাঁটছেন বস্ত্র খাতের উদ্যোক্তারা।

রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাকের ওপর ভর করে বস্ত্রকল বা স্পিনিং মিলগুলো এখন রমরমা ব্যবসা করছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এমন সুদিন এর আগে কখনই আসেনি এ খাতে। সাধারণত স্পিনিং মিল বা বস্ত্রকলগুলো ২ থেকে ৩ শতাংশ মুনাফা করলেও গত বছর ৬ থেকে ৭ শতাংশ হয়েছে। কোনো কোনো মিল ১০ শতাংশের বেশিও মুনাফা করেছে।

সে কারণেই করোনাভাইরাসের মধ্যে বস্ত্র খাতে নতুন বিনিয়োগ আসছে। বেশ কয়েকটি স্পিনিং মিলসহ প্রায় ২০টি নতুন বস্ত্রকল স্থাপিত হচ্ছে দেশে। আবার ২৫-৩০টি পুরোনো বস্ত্রকল উৎপাদন সক্ষমতা বাড়াতে বিনিয়োগ করছে। তাতে আনুমানিক ২৫০ কোটি ডলার বা ২০ হাজার কোটি টাকার নতুন বিনিয়োগ হচ্ছে।

মূলত করোনার প্রথম ঢেউয়ের পর থেকেই সুতার চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় স্পিনিং মিলগুলোর ব্যবসা বাড়ছিল। সেই ধারা চলতি বছরও অব্যাহত রয়েছে। করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন বিশ্বব্যাপী বড় ধরনের সমস্যা সৃষ্টি না করলে ২০২২ সালেও এ খাতের ব্যবসা ভালো যাবে বলে জানিয়েছেন স্পিনিং মিল মালিকরা।

বস্ত্রকল মালিকদের সংগঠন বিটিএমএর সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সত্যিই আমাদের খাতে সুদিন চলছে। পোশাক রপ্তানি বাড়ছে। তার ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ বা পশ্চাদসংযোগ শিল্প হিসেবে আমরাও ভালো ব্যবসা করছি। এ ক্ষেত্রে আমরা আসলে ফুটবল মাঠে মিডফিল্ডারের দায়িত্ব পালন করি। পোশাক রপ্তানিকারকরা যে পোশাক রপ্তানি করেন (বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ সদস্যরা) তার কাঁচামাল (সুতা-কাপড়) আমরা জোগান দিই।

‘বিষয়টি এভাবে ব্যাখা করা যেতে পারে: বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ সদস্যরা হলেন মেসি-রোনাল্ডো। আর আমরা বিটিএমএর সদস্যরা হলাম মিডফিল্ডার। আমরা বল জোগান দিচ্ছি বলেই তারা গোল করতে পারছেন। আমরা যদি বল ঠিকঠাক মতো না দিই, তাহলে তারা গোল করতে পারবেন না। দেশেও বিদেশি মুদ্রা আসবে না। রিজার্ভ বাড়বে না।’

করোনাভাইরাসের মধ্যেই উৎপাদন সক্ষমতা বাড়াতে নতুন বিনিয়োগের পথে হাঁটছেন বস্ত্র খাতের উদ্যোক্তারা। মহামারির কারণে ২০২০ সালের প্রথম দিকে বিনিয়োগ সেভাবে হয়নি। তখন কোনো রকমে টিকে থাকার চেষ্টা করেন তারা। তবে ওই বছরের শেষ দিক থেকে বড় বিনিয়োগের ঘোষণা আসতে থাকে।

বস্ত্রকলগুলোর রমরমা


বস্ত্র খাতের উদ্যোক্তারা বলছেন, ইউরোপ ও আমেরিকায় করোনা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তৈরি পোশাকের ক্রয়াদেশ ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সুতা ও কাপড়ের চাহিদাও বাড়তে থাকে। তবে বিদেশি ক্রেতারা আগের চেয়ে কম লিডটাইম (ক্রয়াদেশ থেকে পণ্য জাহাজীকরণ পর্যন্ত সময়) দেওয়ায় সেই চাপ এসে পড়েছে দেশীয় বস্ত্রকলের ওপর। বাড়তি এই চাহিদা আগামী দিনেও বজায় থাকবে। তাই নতুন কারখানার পাশাপাশি ব্যবসা সম্প্রসারণে মনোযোগী হয়েছেন তারা।

বস্ত্রকল মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ) সূত্রে জানা যায়, তাদের সদস্য হওয়ার জন্য ২০২০ সালের নভেম্বর থেকে গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত এক বছরে ২০টি নতুন বস্ত্রকল আবেদন করেছে। কারখানাগুলো চলতি বছর থেকে শুরু করে আগামী দুই বছরে উৎপাদনে আসবে।

নতুন বিনিয়োগের ফলে আগামী দুই বছরে স্পিনিং খাতে ২০ লাখ স্পিন্ডল যোগ হবে। তা ছাড়া কাপড় উৎপাদনের নতুন মিলও আসবে।

প্রচুর বিনিয়োগের কারণ সম্পর্কে বিটিএমএর সভাপতি বলেন, ‘গত ২০ বছরে অনেকগুলো মিল ব্যবসা থেকে বেরিয়ে গেছে। অনেকে আবার আধুনিকায়ন করতে না পেরে পিছিয়ে গেছে। তা ছাড়া পাঁচ বছর পরপর বস্ত্রশিল্পে একটি সংস্কার হয়। সে জন্যই অনেক বিনিয়োগ আসছে। তাতে আমাদের সক্ষমতা বাড়বে।’

মোহাম্মদ আলী খোকন দেশের অন্যতম বৃহৎ স্পিনিং মিল ম্যাকসন্স স্পিনিং মিলস লিমিটেডের চেয়ারম্যান। তিনি নিজেও ২০২০ সালের ডিসেম্বরে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বঙ্গবন্ধু অর্থনৈতিক অঞ্চলে ৩০ একর জমিতে দুই ধাপে ৮৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগের ঘোষণা দেন। তাতে ম্যাকসন্স গ্রুপের তিনটি প্রতিষ্ঠান মেট্রো স্পিনিং, ম্যাকসন্স স্পিনিং এবং ম্যাকসন্স স্পিনিং (ইউনিট-২) গড়ে উঠবে। এসব কারখানায় ভ্যালু অ্যাডেড বা বেশি মূল্য সংযোজিত হয় এমন সুতা, কাপড় ও রাসায়নিক উৎপাদন হবে।

ঢাকার ধামরাইয়ের কালামপুরে ৬৯৫ কোটি টাকা বিনিয়োগে স্পিনিং মিল করছে করিম টেক্স লিমিটেড। ১ লাখ ১০ হাজার স্পিন্ডলের এই কারখানায় দিনে ৮০ টন সুতা উৎপাদিত হবে। চলতি বছরের নভেম্বর-ডিসেম্বর নাগাদ স্পিনিং মিলটি পুরোদমে উৎপাদনে যাবে। এর আগে জুলাই-আগস্টে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হবে।

জানতে চাইলে করিম টেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওয়াহিদ মিয়া বলেন, ‘করোনাকালে বিশ্বব্যাপী টি-শার্ট, ট্রাউজারের মতো নিট পোশাকের চাহিদা ব্যাপকভাবে বেড়েছে। সে কারণে প্রচুর ক্রয়াদেশ আসছে। বাড়তি চাহিদা মেটানোর জন্যই আমরা নতুন বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

ভিয়েলাটেক্স গ্রুপ তাদের স্পিনিং মিলের স্পিন্ডলের সংখ্যা ৪২ হাজার থেকে বাড়িয়ে ১ লাখ ৩২ হাজারে উন্নীত করেছে।

বস্ত্রকলগুলোর রমরমা


ভিয়েলাটেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান কে এম রেজাউল হাসনাত বলেন, ‘করোনাকালে ক্রেতারা লিডটাইম কমিয়ে দিয়েছে। ফলে বিদেশ থেকে সুতা বা কাপড় আমদানি করে রপ্তানি করা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। কারণ জাহাজ কবে আসবে, কেউ বলতে পারছেন না। দুই সপ্তাহ দেরি হলে ক্রয়াদেশ বাতিল হওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই। সে কারণে বস্ত্রকলগুলোয় ক্রয়াদেশ ব্যাপকভাবে বেড়েছে। ভবিষ্যতে বাড়তি এ ব্যবসা বজায় থাকবে ধরে নিয়ে বিনিয়োগ করছেন উদ্যোক্তারা।’

তিনি বলেন, ‘গত অর্থবছরে বস্ত্রকলগুলো ব্যাপকভাবে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছিল। তবে গত বছরের জানুয়ারি থেকে পরিস্থিতি পুরো পাল্টে গেছে। এই পরিমাণ ব্যবসা আগে কখনই আসেনি।’

করোনাভাইরাস সংক্রমণের শুরুর দিকে একের পর এক ক্রয়াদেশ স্থগিত ও বাতিল হওয়ায় সুতা ও কাপড়ের রপ্তানি ব্যাপকভাবে কমে যায়। লকডাউনের কারণে পহেলা বৈশাখ ও ঈদের ব্যবসায় ধস নামে। অবশ্য দুই মাসের ব্যবধানে পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে।

বস্ত্রকল ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাংলাদেশের বস্ত্রকলের সুতার বড় প্রতিযোগী দেশ হচ্ছে ভারত। আর কাপড়ে চীন, ভারত, পাকিস্তানসহ অন্যান্য দেশ। লকডাউনের কারণে বিদেশ থেকে সুতা ও কাপড় আমদানির পরিমাণ ব্যাপকভাবে কমে গেলে দেশীয় বস্ত্রকল সেই ব্যবসা পেয়েছে। তাই করোনার কঠিন সময়ের মধ্যেও ঘুরে দাঁড়ানো তুলনামূলক সহজ হয়েছে।

বিটিএমএর সদস্যভুক্ত ৪৫০টি স্পিনিং, ৮৫০টি উইভিং এবং ১৭০টি ডাইং ও ফিনিশিং কারখানা রয়েছে। স্পিনিং মিল সুতা তৈরি করে। আর উইভিংয়ে সুতা থেকে কাপড়। বস্ত্র খাতে মোট বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় ৭৫ হাজার কোটি টাকা। তাতে নিট পোশাকের প্রয়োজনীয় সুতার ৮০-৮৫ শতাংশ এবং ওভেন পোশাকের প্রয়োজনীয় কাপড়ের ৩৫-৪০ শতাংশ জোগান দিচ্ছে দেশীয় এই প্রতিষ্ঠানগুলো।

বস্ত্রকলগুলো যে ভালো ব্যবসা করছে তার প্রমাণ তাদের আর্থিক প্রতিবেদনেও পাওয়া যায়। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত মালেক স্পিনিং মিল গত ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ৬৪ কোটি ৪৯ লাখ টাকার সুতা বিক্রি করেছে। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে তাদের সুতা বিক্রি ৪৩ শতাংশ বেড়েছে। এই সময়ে প্রতিষ্ঠানটি ৯২ কোটি ১২ লাখ টাকার সুতা বিক্রি করেছে।

ম্যাকসন্স স্পিনিংয়ের বিক্রি বেড়েছে আরও বেশি, ৬২ শতাংশ। এই তিন মাসে ১৫৭ টাকার সুতা বিক্রি করেছে প্রতিষ্ঠানটি। গত অর্থবছরের একই সময়ে বিক্রির পরিমাণ ছিল ৯৭ কোটি টাকা।

বস্ত্রকলগুলোর রমরমা


মতিন স্পিনিংয়ের বিক্রি ১০৬ কোটি থেকে বেড়ে ১৫৬ কোটি টাকা হয়েছে। স্কয়ার টেক্সটাইলের বিক্রি ২৬১ কোটি থেকে বেড়ে হয়েছে ২৮৩ কোটি টাকা।

বিটিএমএ সভাপতি ম্যাকসন্স স্পিনিংয়ের কর্ণধার মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘বস্ত্র খাত খুব ভালোভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। করোনা ধাক্কা কাটিয়ে গত বছরের আগস্ট থেকে ভালো ক্রয়াদেশ আসতে শুরু করে। এখনও সেটা অব্যাহত আছে। রপ্তানিমুখী বস্ত্রকলের গুদামে বর্তমানে সুতা ও কাপড়ের কোনো স্টক নেই।’

তিনি বলেন, ‘করোনার কারণে ২০২০ সালে প্রতিটি মিলেই বিপুল পরিমাণ সুতা অবিক্রীত ছিল। তখন গড়ে সুতার দাম ছিল ২ ডলার ৬০ সেন্ট। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে চাহিদা ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়। ফলে গত বছরের অবিক্রীত সুতা গড়ে এক ডলার বাড়তি দামে বিক্রি করে স্পিনিং মিলগুলো। তাই অধিকাংশ মিল মুনাফা করেছে।’

বিটিএমএ সভাপতি বলেন, ‘সুতার ব্যবসায় মুনাফা অনেকাংশে তুলা কেনার ওপর নির্ভর করে। কম দামে তুলা কিনতে পারলেই বেশি মুনাফা হয়। তৈরি পোশাক খাতে ভালো ক্রয়াদেশ রয়েছে। সে কারণে সুতার চাহিদাও বেশি। বিশ্বব্যাপী ওমিক্রনে আক্রান্তদের মৃত্যুর খবর খুব একটা না থাকায় আশা করছি, চলতি বছরও ভালো ব্যবসা হবে।’

তবে চলমান কোভিড মহামারি পরিস্থিতিতে গ্যাসের দাম বাড়ানো হলে বস্ত্র খাতের পাশাপাশি পোশাক রপ্তানিতে বিপর্যয় দেখা দিতে পারে বলে জানিয়েছেন মোহাম্মদ আলী।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘গত ১০ বছরে গ্যাসের দাম ৩৬২ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। এতে বেড়েছে বিদ্যুতের দাম। বর্তমানে এক কেজি সুতা উৎপাদনে বিদ্যুৎ বিল দিতে হচ্ছে ২০ টাকা। এর মধ্যে গ্যাসের দাম বাড়ানো হলে এক কেজি সুতা উৎপাদনে বিদ্যুৎ ব্যয় আরও বেড়ে যাবে।

‘অথচ এমনিতে বিশ্ববাজারে তুলার অস্থিতিশীল মূল্যের কারণে চাপে রয়েছে বস্ত্র ও পোশাক খাত। কারণ তুলা-সুতার দর যে হারে বেড়েছে, সে হারে মূল্য দিচ্ছে না বিদেশি ক্রেতা ও ব্র্যান্ডগুলো। এ অবস্থায় গ্যাসের দর বাড়ানো হলে বস্ত্র ও পোশাক খাত মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’

গ্যাসের দাম আবারও বাড়ানো হলে দেশে বৈধ ও অবৈধভাবে আসা সুতা ও কাপড়ের সঙ্গে দর প্রতিযোগিতায় টেকা সম্ভব হবে না বলে জানান তিনি।

জানুয়ারির শুরুতে গ্যাসের দাম দ্বিগুণের বেশি বাড়ানোর প্রস্তাব করে জ্বালানি বিভাগ। তবে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) এখনও সে প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি।

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
On the occasion of the martyrdom anniversary of Shaheed President Ziaur Rahman
শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে

জনতা ব্যাংক জাতীয়তাবাদী অফিসার কল্যাণ সমিতির আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠিত

জনতা ব্যাংক জাতীয়তাবাদী অফিসার কল্যাণ সমিতির আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠিত

শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে গত ০২ জুন, সোমবার আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে জনতা ব্যাংক জাতীয়তাবাদী অফিসার কল্যাণ সমিতি।

জনতা ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উক্ত সভায় পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান মুহঃ ফজলুর রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ মজিবর রহমান, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ গোলাম মরতুজা, মোঃ ফয়েজ আলম ও মোঃ আশরাফুল আলম বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। সংগঠনের সভাপতি সাইফুল আবেদিন তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সভা সঞ্চালনায় ছিলেন কার্যকরী সভাপতি শাহ জাহান ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইকবাল হোসেন। অনুষ্ঠানে সংগঠনের সিনিয়র সহসভাপতি এস. এফ. এম. মুনির হোসেন, সহসভাপতি মজিবুর রাহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ ছানোয়ার হোসেনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ ও প্রধান কার্যালয়ের নির্বাহী, কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Return is not obligated to get a credit card and trade license purchased by savings

সঞ্চয়পত্র কেনা, ক্রেডিট কার্ড ও ট্রেড লাইসেন্স নিতে রিটার্ন জমার বাধ্যবাধকতা নেই

সঞ্চয়পত্র কেনা, ক্রেডিট কার্ড ও ট্রেড লাইসেন্স নিতে রিটার্ন জমার বাধ্যবাধকতা নেই

১০ লাখ টাকা পর্যন্ত সঞ্চয়পত্র কেনায় আয়কর রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র দেখাতে হবে না। আবার ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার সময় রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র লাগবে না। ট্রেড লাইসেন্স নিতেও রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র লাগবে না। বাজেটে রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র দাখিলের বাধ্যবাধকতায় কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে।

আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে রিটার্ন জমার প্রমাণপত্রের বাধ্যবাধকতায় এসব পরিবর্তন আনা হয়েছে। এত দিন ৪৬টি সেবায় রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র দেখানোর বাধ্যবাধকতা ছিল।

এখন ১১ ধরনের সেবা নিতে রিটার্ন দাখিলের প্রমাণপত্র দেখাতে হবে না। শুধু কর শনাক্তকরণ নম্বরধারীদের (টিআইএন) সিস্টেম জেনারেটেড প্রত্যয়নপত্র দাখিল করলেই হবে। ওই ১১টি সেবা হলো সিটি করপোরেশন বা পৌরসভা এলাকায় নতুন ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণে; সমবায় সমিতির নিবন্ধন প্রাপ্তিতে; সাধারণ বিমার তালিকাভুক্ত সার্ভেয়ারের নতুন লাইসেন্স গ্রহণে; ক্রেডিট কার্ড গ্রহণ ও নবায়নে; চিকিৎসক, দন্ত চিকিৎসক, আইনজীবী, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট, কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্ট, চার্টার্ড সেক্রেটারি, আইনজীবী ও কর আইনজীবী, অ্যাকচুয়ারি, প্রকৌশলী, স্থপতি, সার্ভেয়ার হিসেবে কোনো স্বীকৃত পেশাজীবী সংস্থার সদস্যপদ গ্রহণে; পাঁচ লাখ টাকার অধিক পোস্ট অফিস সঞ্চয়ী হিসাব খোলায়; এমপিওভুক্তির মাধ্যমে সরকারের কাছ থেকে দশম গ্রেড বা তদূর্ধ্ব পদমর্যাদার কর্মচারীর কোনো অর্থ প্রাপ্তিতে; স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতাদের ক্ষেত্রে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস বা মোবাইল ব্যাংকিং বা ইলেকট্রনিক উপায়ে টাকা স্থানান্তরের মাধ্যমে এবং মোবাইল ফোনের হিসাব রিচার্জের মাধ্যমে কমিশন, ফি বা অন্য কোনো অর্থ প্রাপ্তিতে; স্ট্যাম্প, কোর্ট ও কার্টিজ পেপারের ভেন্ডর বা দলিল লেখক হিসেবে লাইসেন্স নিবন্ধন ও তালিকাভুক্তিতে; ত্রি-চক্র মোটরযানের নিবন্ধন, মালিকানা পরিবর্তন বা ফিটনেস নবায়নে; ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে ই-কমার্স ব্যবসার ক্ষেত্রে লাইসেন্সিং অথরিটির কাছ থেকে লাইসেন্স গ্রহণে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Proposes to increase the special advantage of government employees in the budget

বাজেটে সরকারি কর্মচারীদের বিশেষ সুবিধার পরিমাণ বৃদ্ধির প্রস্তাব

বাজেটে সরকারি কর্মচারীদের বিশেষ সুবিধার পরিমাণ বৃদ্ধির প্রস্তাব

আগামী ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সরকারি কর্মচারীদের জন্য বিশেষ সুবিধার পরিমাণ বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

আজ সোমবার (২ জুন) বাংলাদেশ টেলিভিশনে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ এ কথা বলেন। এটি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম ও দেশের ইতিহাসে ৫৪তম বাজেট।

২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণার সময় অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য মোট ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের প্রস্তাব করছি, যা জিডিপির ১২.৭ শতাংশ। এর মধ্যে পরিচালনসহ অন্যান্য খাতে মোট ৫ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করছি।

তিনি বলেন, এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করতে চাই যে, ২০১৫ সালের পর এখন পর্যন্ত বেতন কাঠামো প্রণীত না হওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে এবারের বাজেটে সরকারি কর্মচারীদের জন্য বিশেষ সুবিধার পরিমাণ বৃদ্ধির প্রস্তাব করছি।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Online shopping will be more expensive

অনলাইন কেনাকাটা হবে আরও ব্যয়বহুল

অনলাইন কেনাকাটা হবে আরও ব্যয়বহুল

ঘরে বসে যেসব ক্রেতারা কেনাকাটা করতে চান, তাদের জন্য অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে কেনাকাটা আগামী অর্থবছর থেকে খানিকটা ব্যয়বহুল হতে পারে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ই-প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে পণ্য বিক্রয় থেকে কমিশনের ওপর ভ্যাট বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করতে চাইছে। সেক্ষেত্রে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে পণ্যের দাম বেশি হতে পারে।

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এই ভ্যাটের হার ছিল ৫ শতাংশ।

জুলাই অভ্যুত্থানে বদলে যাওয়া বাংলাদেশে ভিন্ন বাস্তবতায় এবার সংসদের বাইরে ভিন্ন আঙ্গিকে পেশ হলো বাজেট। এবার সংসদ না থাকায় সংসদের আলোচনা বা বিতর্কের কোনো সুযোগ থাকছে না। উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন নিয়ে অর্থ উপদেষ্টা বাজেট উপস্থাপন করার পর ৩০ জুন তা রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ আকারে কার্যকর করা হবে।

তবে অতীতের রেওয়াজ মেনে বাজেট ঘোষণার পরদিন সংবাদ সম্মেলনে এসে বাজেট নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেবেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। এছাড়া পুরো জুন মাসজুড়ে অংশীজনদের মতামত নেওয়ার কথাও তিনি বলেছেন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Inflation will come down to 5 percent this June Finance Advisor 

চলতি জুনেই মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশে নেমে আসবে : অর্থ উপদেষ্টা 

চলতি জুনেই মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশে নেমে আসবে : অর্থ উপদেষ্টা 

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে বিগত মাসগুলোতে সরকারের ধারাবাহিক সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি অবলম্বন করায় এবং সরকারি ব্যয় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হ্রাস পাওয়ায় মূল্যস্ফীতি হ্রাস পেয়েছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে চলতি জুন মাসেই পয়েন্ট টু পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশে নেমে আসবে।

অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ আজ সোমবার ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেট বক্তৃতায় এ কথা বলেন। তার এ বক্তৃতা বাংলাদেশ টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছে।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, গত বছরের আগস্ট মাসে আমাদের সরকার যখন দেশ পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করে তখন আমাদের সামনে সবচাইতে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল নিয়ন্ত্রণহীন মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরে মানুষকে স্বস্তি দেয়া।

তিনি বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে বিগত মাসগুলোতে আমরা ধারাবাহিকভাবে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি অবলম্বন করেছি। এর ফলে নীতি সুদের হার ১৫০ বেসিস পয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়ে এখন ১০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। মুদ্রানীতির আওতায় গৃহীত কার্যক্রমকে সহায়তা করতে সংকোচনমূলক রাজস্বনীতি অনুসরণ করা হয়েছে। অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমিয়ে আনায় সার্বিকভাবে সরকারি ব্যয় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হ্রাস পেয়েছে। এর ইতিবাচক প্রভাব ইতোমধ্যে দৃশ্যমান হয়ে উঠতে শুরু করেছে। পয়েন্ট টু পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসের ১০.৮৯ শতাংশ থেকে হ্রাস পেয়ে ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে ৯ দশমিক ১৭ শতাংশে নেমে এসেছে। আশার কথা হলো এবারের রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার স্মরণকালের মধ্যে সবচাইতে স্থিতিশীল ছিল। এ ধারা অব্যাহত থাকলে এই জুন মাসেই পয়েন্ট টু পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশের কোঠায় নেমে আসবে। মূল্যস্ফীতির সাথে এ লড়াইয়ের ফলে আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার অন্যান্য বছরের তুলনায় কিছুটা কম হতে পারে।’

মূল্যস্ফীতির নিম্নমুখী ধারা অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে বৈদেশিক মুদ্রার বিপরীতে টাকার বিনিময় হার স্থিতিশীল থাকা জরুরি উল্লেখ করে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল থাকা অত্যাবশ্যক। প্রবাস আয়ের প্রবৃদ্ধি আশাব্যঞ্জক হওয়ায় এবং রপ্তানি স্থিতিশীল থাকায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এপ্রিল মাসে বৃদ্ধি পেয়ে ২৭.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে, যা টাকার বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। সে কারণে আমরা বিগত ১৪ মে তারিখে বাজারভিত্তিক মুদ্রা বিনিময় হার চালু করেছি।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
In the twilight of international finance the new challenge of IMF

আন্তর্জাতিক অর্থব্যবস্থার সন্ধিক্ষণে: আইএমএফের নতুন চ্যালেঞ্জ

আন্তর্জাতিক অর্থব্যবস্থার সন্ধিক্ষণে: আইএমএফের নতুন চ্যালেঞ্জ

১৯৪৪ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী আর্থিক অস্থিরতা সামাল দিতে গঠিত হয় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফ। এর মূল লক্ষ্য ছিল বৈশ্বিক মুদ্রানীতি সমন্বয় সাধন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যকে উৎসাহ দেওয়া এবং উন্নয়নশীল দেশগুলো অর্থনৈতিক বিপর্যয় থেকে রক্ষা করা। বহু দেশ সংকটে পড়ে এই সংস্থার দ্বারস্থ হয়েছে- কেউ সাময়িকভাবে রক্ষা পেয়েছে, কেউ আবার দীর্ঘমেয়াদি ঋণনির্ভরতার ফাঁদে পড়ে গেছে।

আজ, যখন বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ভারসাম্য ক্রমশ পশ্চিমকেন্দ্রীকতা থেকে সরে পূর্ব ও দক্ষিণে ছড়িয়ে পড়ছে, তখন আইএমএফ তার প্রাসঙ্গিকতা ও নৈতিক অবস্থান নিয়ে এক নতুন প্রশ্নের সম্মুখীন।

ঋণ সহায়তা, নাকি ঋণের ফাঁদ?

আইএমএফ সাধারণত এমন শর্তে ঋণ দেয়, যার মধ্যে থাকে কঠোর ব্যয়সংযম, ভর্তুকি হ্রাস, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং বাজারমুখী সংস্কার; কিন্তু এই শর্তগুলো অনেক সময় জনজীবনে মারাত্মক প্রভাব ফেলে। স্থানীয় শিল্প ধসে পড়ে, বৈষম্য বেড়ে যায় এবং সাধারণ মানুষের জীবন আরও কঠিন হয়ে ওঠে। আর্জেন্টিনার অভিজ্ঞতা এর এক উল্লেখযোগ্য উদাহরণ। ২০১৮ সালে আইএমএফ ইতিহাসের বৃহত্তম ঋণ প্যাকেজ ৫৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুমোদন করে। ফল ছিল বিপরীত- মুদ্রাস্ফীতি ৫০ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়, দারিদ্র্য আরও বেড়ে যায় এবং দেশটি আবার মন্দার মুখে পড়ে।

এই অভিজ্ঞতা প্রমাণ করে শুধু অর্থনৈতিক সমীকরণ দিয়ে কোনো দেশের সামাজিক বাস্তবতা নির্ধারণ চলে না।

আইএমএফের নীতিনির্ধারণ কাঠামো এখনো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী শক্তির ভারসাম্যের প্রতিচ্ছবি। উন্নত দেশগুলো (বিশেষত যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন) সংগঠনের ভোটের অধিকাংশ নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে দরিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর অংশগ্রহণ প্রায় অনুপস্থিত। এই গণতান্ত্রিক ঘাটতি আজ দক্ষিণের রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে গভীর অসন্তোষ ও অবিশ্বাসের জন্ম দিচ্ছে।

আন্তর্জাতিক অর্থব্যবস্থার সন্ধিক্ষণে: আইএমএফের নতুন চ্যালেঞ্জ

বিকল্প প্রতিষ্ঠানের উত্থান

এই প্রেক্ষাপটে বিকল্প আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো যেমন- নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (NDB), এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (AIIB) এবং ল্যাটিন আমেরিকান রিজার্ভ ফান্ড (FLAR) নতুন করে আশার আলো দেখাচ্ছে। (NDB) এর সহায়তা তুলনামূলকভাবে শর্তমুক্ত এবং অংশগ্রহণমূলক। এখানে প্রতিটি দেশের ভোটের ও প্রতিনিধিত্বের সমান সুযোগ আছে, যা উন্নয়নশীল দেশগুলো আরও আগ্রহী করে তুলেছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলো এখন শুধু আর্থিক বিকল্প নয়- এরা এক নতুন উন্নয়ন দর্শনের বাহক। সেই দর্শনে উন্নয়ন নির্ধারিত হয় স্থানীয় বাস্তবতা ও প্রয়োজনকে কেন্দ্র করে, বাইরের চাপ বা রূঢ় শর্ত নয়।

বিশ্ব আজ বহুমেরু। অর্থনৈতিক শক্তি ছড়িয়ে পড়ছে নানা অঞ্চলে। এই বাস্তবতায় টিকে থাকতে হলে আইএমএফকে নিজস্ব কাঠামো ও দর্শনে রূপান্তর আনতে হবে। প্রয়োজন গভর্ন্যান্সের সংস্কার, নীতিনির্ধারণে সমান অংশগ্রহণ, এবং সর্বোপরি সহানুভূতিশীল ঋণ নীতিমালা।

আইএমএফ যদি সত্যিই বৈশ্বিক আর্থিক স্থিতিশীলতার অভিভাবক হতে চায়, তাহলে তাকে হতে হবে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক, ন্যায়ভিত্তিক, এবং আঞ্চলিক বাস্তবতাসম্মত এটি শুধু আইএমএফের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার প্রশ্ন নয়; এটি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার ও সার্বিক উন্নয়নের প্রশ্ন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
There is no new surprise in the budget Devpriya Bhattacharya

বাজেটে নতুন চমক থাকছে না: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

বাজেটে নতুন চমক থাকছে না: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য ছবি: সংগৃহীত

জুলাই অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের দুর্নীতি, ব্যাংক জালিয়াতি, করখেলাপি ও পাচার হওয়া অর্থ জব্দ কর তা বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করার পরমর্শ দিয়েছেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। এ সময়ে এবারের বাজেট গতানুগতিক হতে যাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

শনিবার (৩১ মে) রাজধানীর এফডিসিতে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘বিগত সরকারের আমলে দুর্নীতি, ব্যাংক জালিয়াতি, করখেলাপি ও পাচারকৃত অর্থ জব্দের মাধ্যমে বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করলে তা হতে পারে এবারের বাজেটের একটি অভিনব উৎস।’

‘গত সরকারের রেখে যাওয়া বিদেশি ঋণের চাপ খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ছিল। এই সরকারের এই সময়ে অন্যতম সাফল্য ৫০০ কোটি (৫ বিলিয়ন) ডলার পরিশোধ করে বিদেশি ঋণের চাপ কমিয়ে আনা,’ যোগ করেন তিনি।

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘এই ঋণ বিলিয়ন ডলার করে বছর বছর বাড়ছিল। সামগ্রিকভাবে এই সরকারের সাফল্যের জায়গাটা হলো বহির্খাত, রেমিট্যান্স, রপ্তানি, দায়-দেনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা, মজুদ বাড়ানো ও টাকার মূল্যমান স্থিতিশীল রাখা।’

তবে আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট গতানুগতিক হতে যাচ্ছে বলে মনে করেন এই অর্থনীতিবিদ। তিনি বলেন, ‘খেলাপি ঋণ আদায়, পাচার হওয়া অর্থ ফেরত এবং করের আওতা বাড়ানোর মতো নতুন কোনো কিছু না থাকায় এবারের বাজেটে কোনো চমক থাকছে না।’

‘যে প্রকল্পগুলো সরকারের কাছে আছে, তা অতিমূল্যায়িত ও তার ৪০ শতাংশ ব্যয়ই ভুয়া। আগের যে প্রকল্পগুলো থেকে রক্তক্ষরণ হতো, সেগুলো অব্যাহত আছে,’ বলেন তিনি।

সিপিডির এই সম্মানীয় ফেলো বলেন, ‘রাজস্ব ব্যয় সঠিকভাবে না করলে করদাতাদের উৎসাহ থাকে না। আমাদের কর কাঠামো বৈষম্যনির্ভর। আমাদের বৈদেশিক খাতে কিছুটা স্থিতিশীলতা অর্জিত হলেও ব্যক্তি খাতে স্থিতিশীলতা ও বিনিয়োগ এখনো আশানুরূপ অর্জিত হয়নি।’

ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি নামের একটি বিতর্ক সংগঠন এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।

‘রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি করা আসন্ন বাজেটের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত’ শীর্ষক ছায়া সংসদে ময়মনসিংহের আনন্দ মোহন কলেজকে পরাজিত করে ঢাকার বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এন্ড টেকনোলজির বিতার্কিকরা বিজয়ী হন।

মন্তব্য

p
উপরে