ফেসবুক লাইভে এসে আত্মহত্যা করা ব্যবসায়ী আবু মহসিন খানের শেষ দিনগুলো কাটছিল নিঃসঙ্গতায়। ফেসবুক লাইভে তিনি তার একাকিত্বের কথা জানিয়েছেন। তাকে যারা দেখেছেন, তাদের সঙ্গে কথা বলেও জানা গেছে, সচ্ছলতার অভাব না থাকলেও বন্ধুপরিজনহীন জীবন কাটছিল তার।
ধানমন্ডি সাত নম্বর সড়কের ২৫ নম্বর বাসায় ১২ তলা একটি ভবনের ছয় তলায় থাকতেন আবু মহসিন খান। ভবনের ম্যানেজার আব্দুর রহিম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি ছয় মাস ধরে এখানে আছি। এই বাসাটা স্যারের (মহসিন) নিজের কেনা ফ্ল্যাট। আমি গত ছয় মাসের কথা বলতে পারি। তিনি একাই থাকতেন এই বাসায়। স্যার বাসার সবকিছু একাই হ্যান্ডেল করতেন। কাউকে তার বাসায় যেতে দেখা যায়নি।’
ছয় তলায় ফাইভ-এ ফ্ল্যাটটি এখন ফাঁকা। মৃত্যুর এক দিন পর বৃহস্পতিবার সেখানে গিয়ে দেখা যায় গৃহকর্মীরা বাসাটির ধুলা পরিষ্কার করছেন। ভবনের এক পরিচ্ছন্নতাকর্মী বলেন, ‘আমি প্রায় তিন বছর ধরে এই বাড়ির সিঁড়ি মুছি। গত তিন বছর ধরে দেখতেছি তিনি একাই থাকেন এই বাসায়। আমি তো ভেতরে যাইতাম না। তাই বলতে পারব না, ভেতরে কী হতো।’
বৃহস্পতিবার বেলা ২টা থেকে আত্মীয়স্বজন মহসিনকে শেষবারের মতো দেখতে আসা শুরু করেন। তবে তার আত্মীয়স্বজনের সংখ্যা হাতে গোনা। ৮২ বছর বয়সী মহসিনের বাবা তাকে দেখতে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন। সেখানে দেখা যায় তার ছোট দুই ভাইকেও।
মহসিনের একাকী চলাচল
ব্যবসায়ী আবু মহসিন খান নিজ বাসা থেকে বেরিয়ে মাঝে মাঝে বাইরে হাঁটতে বেরোতেন। একাই যেতেন জুতায় কালি করাতে, খাবার কিনতে।
২৫ নম্বর ভবনের বিপরীত পাশের একটি চায়ের দোকানি মো. রতন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘উনি একা একা বের হয়ে মুদি কেনাকাটা করতেন। জুতা কালি করতে আসতেন। সঙ্গে কাউকে দেখি নাই কোনো দিন। মাঝে মাঝে বাসার সামনে দিয়ে একাই ঘুরে বেড়াতেন।’
চায়ের দোকানের পাশেই ফুটপাতে বসেন মুচি রণজিত। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘স্যার আমার কাছে জুতা কালি করাতে আসতেন। দেখতাম মাঝে মাঝে বাইরে একা একা ঘোরাফেরা করতেন।’
নাম প্রকাশ না করে মহসিনের পাশের ফ্ল্যাটের এক প্রতিবেশী নারী জানান, আসা-যাওয়ার পথে তার সঙ্গে দেখা হলে কুশল বিনিময় হতো। তাকে দেখে তার কখনও মনে হয়নি, আত্মহত্যা করার মতো বিষণ্নতায় ভুগছেন।
ভবনের কয়েকজন চালক জানান, মহসিন সবার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতেন। চালক রানা নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘স্যার খুব ভালো মানুষ ছিলেন। সবার সাথে হাসিখুশি মুখে কথা বলতেন। বাসায় কেউ থাকত না তার সঙ্গে। মাঝে মাঝে তার ভাইয়ের বাসা থেকে খাবার আসত। তিনি একা একা গাড়ি চালিয়ে খাবার আনতেন। অসুস্থ থাকলে খাবার অর্ডার দিয়ে আনাতেন। একটা ছেলে মাঝে মাঝে এসে তার গাড়ি ধুয়ে দিত। বাসা পরিষ্কার করে দিত।’
রানা বলেন, ‘চালকদের জন্য এই ভবনে আলাদা লিফট। তবে তিনি লিফটে উঠলে আমাদের তার লিফটে ওঠাতেন।’
মহসিন খানের জামাতা চিত্রনায়ক রিয়াজ বলেন, ‘আমরাই খাবার পাঠাতাম। এ ছাড়া তিনি বাইরে থেকে খাবার অর্ডার করে আনতেন। কতদিন আগে থেকে ক্যানসার সেটা মনে করতে পারছি না। তবে বছর দুয়েক আগে তার অপারেশন করা হয় ক্যানসারের। আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অনেকবার বলেছি। তবে তিনি থাকেননি।’
মহসিন খানের ছোট ভাই আবু হাসান মো. ওয়াহিদুজ্জামান লিপু বলেন, ‘ওনার একাকিত্ব ওনাকে খেয়ে ফেলেছে। মানুষ একা বাঁচতে পারে না। একটা মানুষ তিন থেকে চার বছর একটা ফ্ল্যাটে একা থাকেন। তার ওয়াইফ, ছেলে দেশের বাইরে। উনি ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। ওনার অপারেশনও হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে একটা গ্যাপ তৈরি হয়ে গিয়েছিল, কারণ উনি দেশের বাইরেই বেশি ছিলেন। আপনার সঙ্গে আমার গ্যাপ থাকলে আপনার কিছুই আমি জানতে পারব না। ওনার সঙ্গে আমাদের আট বছরের একটা গ্যাপ ছিল। মাঝে মধ্যে কথা হতো, কিন্তু ওরকম যে সবকিছু শেয়ার করবে, সে সুযোগ ছিল না। গ্যাপ হয়ে গেলে শেয়ার করার অবস্থাটা থাকে না।
‘ওনার ক্লোজ ছিল ওনার ছেলেমেয়ে। মেয়ের হাজবেন্ড কতটা ক্লোজ ছিল, আমি জানি না। মেয়ের হাজবেন্ডের সঙ্গে তো আর এত কিছু শেয়ার করা যাবে না। আপনি আপনার সন্তানের সঙ্গে যেভাবে সবকিছু শেয়ার করতে পারবেন, অন্যদের সঙ্গে পারবেন না। বাবাও বেঁচে আছেন। বাবা স্ট্রোক করা রোগী। ওনাকে ঘটনা জানানোর আগে প্রেশার, সুগার লেভেল মেপে জানাতে হয়েছে। ওনাকে জানানোটাই অনেক কষ্ট হয়েছে।’
আবু হাসান মো. ওয়াহিদুজ্জামান লিপু জানান, ক্যানসারের কারণে মহসিন খানের একটি কিডনি অস্ত্রোপচার করে ফেলে দিতে হয়েছিল। অস্ট্রেলিয়ায় এ অস্ত্রোপচার হয়।
কী ধরনের ক্যানসার ছিল জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কী ক্যানসার ছিল সেটা আমি বলতে পারব না। আমি কিছুই জানি না।’
মহসিন খান তার ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছিলেন বলে জানা যায়। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে লিপু বলেন, ‘তার ব্যবসা কীভাবে বন্ধ হয়ে গেল, এটা আমি বলতে পারব না। কারণ ওনার সঙ্গে আট বছরের গ্যাপ। উনি কোথায় ব্যবসা করতেন, কীভাবে করতেন, কিছুই জানি না।’
আট বছরের যোগাযোগহীনতা কীভাবে তৈরি হলো, জানতে চাইলে লিপু বলেন, ‘উনি বেশির ভাগ সময় দেশের বাইরে ছিলেন। আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া। এখন আপনি যদি দেশের বাইরে থাকেন, তাহলে আপনার সঙ্গে আমার তো যোগাযোগটা থাকবে না। উনি তিন বছর থাকতেন বিদেশে, এর পর দেশে ১০ দিন থাকতেন, আবার চলে যেতেন।’
শেষ চার বছর দেশেই ছিলেন মহসিন
শেষ চার বছর মহসিন খান দেশে ছিলেন জানিয়ে লিপু বলেন, ‘ওনার ছেলে আর ওয়াইফ তিন-চার বছর আগে শেষ দেশে এসেছিলেন। তারা অস্ট্রেলিয়া থাকেন। উনি স্বাধীনচেতা মানুষ তো, বাসাতেই থাকতেন। আমরা দূর থেকে যতটুকু সাপোর্ট দিতে পেরেছি, দিয়েছি। খাবার-দাবার রান্না করে দিয়ে যাওয়া এতটুকু আমরা করতে পেরেছি। এই ফ্ল্যাটটা ওনার নিজের। উনি অন্য কোথাও থাকতেই চাইতেন না। ওনার মোহাম্মদপুরেও ফ্ল্যাট আছে, কলাবাগানেও আছে।’
তৈরি পোশাক মহসিন খানের পারিবারিক ব্যবসা। তার বাবা ১৯৮২ সাল থেকে দুটি পোশাক কারখানার মালিক। মহসিন খান পরে উনি পৃথক ব্যবসা শুরু করেন।
বুধবার রাত ৯টার দিকে নিজ ফ্ল্যাটে ফেসবুক লাইভে এসে মহসিন খান মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করে আত্মহত্যা করেন। তার আগে তিনি তার নিঃসঙ্গতা, পরিবার নিয়ে হতাশার কথা জানান। এক নিকটাত্মীয়ের মৃত্যুর কথা উল্লেখ করে দুঃখও প্রকাশ করেন তিনি।
আরও পড়ুন:ঈদুল আজহায় টানা ছুটির মাঝে বৃষ্টি হওয়ায় ঢাকার বাতাস মোটামুটি স্বাস্থ্যকর ছিল। তবে গত কয়েকদিন ধরে বৃষ্টিহীন শুষ্ক পরিবেশ আর ক্রমেই রাজধানীর পুরনো ভিড় বাড়তে থাকায় দূষণও বাড়ছে সমান তালে।
রবিবার (১৫ জুন) সকাল ৯টার দিকে দেখা যায়, বিশ্বের দূষিত শহরগুলোর তালিকায় ফের শীর্ষস্থানগুলোতে জায়গা করে নিয়েছে ঢাকা। এ সময়ে ১৪২ একিউআই স্কোর নিয়ে বিশ্বের দ্বিতীয় দূষিত বাতাসের শহর ছিল বাংলাদেশের রাজধানী, সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য যা অস্বাস্থ্যকর।
এ সময় ১৫৩ স্কোর নিয়ে শীর্ষ দূষিত শহর ছিল ইন্দোনেশিয়ার মেদান। এ ছাড়া ১২৬ ও ১২৪ স্কোর নিয়ে ঢাকার পরেই ছিল যথাক্রমে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই ও মিসরের কায়রো।
কণা দূষণের একিউআই মান যদি ০ থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকে, তবে তা ‘ভালো’ হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০-এর মধ্যে হলে সেটি ‘মাঝারি’।
একিউআই স্কোর ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ বলে গণ্য করা হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এ ছাড়া ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরেই বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় ভুগছে। শীতকালে এখানকার বায়ুমান সাধারণত সবচেয়ে খারাপ থাকে, আর বর্ষাকালে তুলনামূলকভাবে উন্নত হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর বিশ্বে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এসব মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো স্ট্রোক, হৃদরোগ, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট (সিওপিডি), ফুসফুসের ক্যান্সার এবং শ্বাসযন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ।
রাজধানীর উত্তরায় র্যাব পরিচয়ে মোবাইল আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠান ‘নগদের’ এক পরিবেশকের এক কোটি ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (১৪ জুন) সকাল ৮টা ৫২ মিনিটে উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরের ১২ নম্বর সড়কে এই ঘটনা ঘটেছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সূত্র এমন তথ্য নিশ্চিত করেছে।
পুলিশ সূত্রে জানায়, ‘আব্দুল খালেক নয়ন নগদের একজন পরিবেশক। তিনি উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরের একটি ফ্লাটে থাকেন। শনিবার সকালে তিনি তার চারজন এমপ্লয়িকে দুইটি মোটরসাইকেলযোগে বাসার পাশেই পরিবেশক অফিসে পাঠাচ্ছিলেন। সাথে এক কোটি টাকার বেশি ছিল।’
‘তাদের বহনকারী মোটরসাইকেল দুটি বারো নম্বর রোড ক্রস করে যখন তেরো নম্বর রোডে ঢুকছিল, তখন ওৎপেতে থাকা একটি কালো রংয়ের মাইক্রোবাস তাদের গতি রোধ করে। মাইক্রোবাস থেকে র্যাবের পোশাক পরিহিত তিন থেকে চারজন নেমে এসে টাকার ব্যাগ বহনকারী মোটরসাইকেল আরোহীদের ধাওয়া করে।’
পুলিশ আরও জানায়, এদের মধ্যে একজন আরোহী দৌড়ে পালিয়ে গেলেও তিনজনকে টাকার ব্যাগসহ তারা মাইক্রোবাসে তুলে নেয়। পরবর্তীতে তারা উত্তরা সতেরো নম্বর সেক্টরে নগদ মাইক্রোবাস থেকে তাদের ফেলে দিয়ে টাকার ব্যাগ সহ পালিয়ে যায়।
যোগাযোগ করা হলে উত্তরা ডিভিশনের ডেপুটি কমিশনার মইদুল ইসলাম ইউএনবিকে জানান, ‘ঘটনার পরপরই তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। সিসিটিভির ফোটেজ সংগ্রহ করেছেন। ছিনতাইকারীদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।’
ঈদ উপলক্ষে লম্বা ছুটিতে বেশ কিছুদিন ধরে একপ্রকার ফাঁকা হয়ে গেছে শহর ঢাকা। সড়কগুলোতে নেই যানবাহনের চাপ; স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালতও বন্ধ; রাস্তায় লোকজনও হাতেগোনা। এই অবস্থায় গত কয়েকদিন বৃষ্টি কমে গেলেও রাজধানীর বাতাসের মানে খুব বেশি অবনতি হয়নি।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) সকাল ১০টার দিকে ঢাকার বাতাসের একিউআই স্কোর ছিল মাত্র ৬৬। আর দূষিত শহরের তালিকায় ঢাকার অবস্থান আরও অবাক হওয়ার মতো। প্রতিনিয়ত বায়ুদূষণে শীর্ষ শহরগুলোর তালিকায় জায়গা করে নিলেও ঢাকার অবস্থান আজ ৫৫তম।
কণা দূষণের একিউআই মান যদি ০ থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকে, তবে তা ‘ভালো’ হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০-এর মধ্যে হলে সেটি ‘মাঝারি’। ঢাকার বাতাস আজ মাঝারি হলেও ‘ভালো’ থেকে খুব বেশি দূরে নয়।
এই সময়ে ৬৭ একিউআই স্কোর নিয়ে দূষিত শহরের তালিকার ৫২তম স্থানে ছিল স্পেনের বার্সেলোনা, ৫০তম স্থানে সুইজারল্যান্ডের বেয়ার্ন, ৬৮ স্কোর নিয়ে ৪৯তম স্থানে যুক্তরাষ্ট্রের সল্ট লেক সিটি, ৭০ ও ৭১ স্কোর নিয়ে ৪৪ ও ৪৩তম স্থানে নিউইয়র্ক ও ওয়াশিংটন ডিসি, ৭৩ স্কোর নিয়ে ৩৮তম স্থানে কানাডার টরেন্টো, ৮০ স্কোর নিয়ে ২৭তম দূষিত শহর শিকাগো, ৯৯ স্কোর নিয়ে ১৫তম স্থানে ইতালির রোম এবং ১২৮ স্কোর নিয়ে তালিকার সপ্তম স্থানে রয়েছে মিলান।
তবে ১৬৮ একিউইউ স্কোর নিয়ে এই সময়ে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহর ছিল ভারতের দিল্লি। ১৬২, ১৫৬ ও ১৩৭ স্কোর নিয়ে এর পরের তিন দূষিত শহর যথাক্রমে ইরাকের বাগদাদ, পাকিস্তানের লাহোর ও সৌদি আরবের রিয়াদ।
একিউআই স্কোর ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ বলে গণ্য করা হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এ ছাড়া ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরেই বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় ভুগছে। শীতকালে এখানকার বায়ুমান সাধারণত সবচেয়ে খারাপ থাকে, আর বর্ষাকালে তুলনামূলকভাবে উন্নত হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর বিশ্বে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এসব মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো স্ট্রোক, হৃদরোগ, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট (সিওপিডি), ফুসফুসের ক্যান্সার এবং শ্বাসযন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ।
এডিস মশার বিস্তার রোধে তাৎক্ষণিক ফল পেতে ১৪ জুন থেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন(ডিএসসিসি) এলাকায় দ্বিগুণহারে কীটনাশক প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এডিস মশার বিস্তার রোধে করণীয় নির্ধারণ ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও করোনা প্রতিরোধে ডিএসসিসি প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়ার সভাপতিত্বে আজ রাজধানীর ওয়াসা ভবনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এক সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়।
সভায় অ্যাডাল্টিসাইডিং কার্যক্রমে (ফগার মেশিন দ্বারা পরিচালিত) বর্তমানে ব্যবহৃত ৩০ লিটার কীটনাশকের পরিবর্তে দ্বিগুণ পরিমাণ অর্থাৎ ৬০ লিটার কীটনাশক প্রতিদিন ব্যবহারের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এ ছাড়া অঞ্চলভিত্তিক ডেঙ্গু মনিটরিং টিম গঠন ও জনবল ঘাটতি পূরণে উদ্যোগসহ জনগুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
সভায় মশক কর্মীদের সকাল ও বিকেলে নিয়মিত উপস্থিতি নিশ্চিত করা, সঠিক অনুপাতে কীটনাশক প্রয়োগ যাচাই, মোবাইল কোর্ট পরিচালনা এবং মশক কর্মী দ্বারা বাড়ির ভিতর, আঙিনা ও ছাদের জমানো পানিসহ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিতকরণে আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাকে আহ্বায়ক এবং সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে সদস্য সচিব করে অঞ্চল ভিত্তিক ডেঙ্গু মনিটরিং টিম গঠনের সিদ্ধান্ত হয়।
এছাড়া, ডেঙ্গু ও করোনা বিষয়ে ডিএসসিসি সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফারিয়া ফয়েজকে ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা হিসেবে মনোনীত করা হয়।
সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চলতি মাসের মধ্যে কীটতত্ত্ববিদদের সমন্বয়ে নগর ভবনে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে এবং প্রতিদিনের ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের হালনাগাদ তথ্য ডিএসসিসির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। মশক নিধনে জনবল ঘাটতি পূরণে নিয়োগ প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখাসহ ডেঙ্গু ও করোনা রোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সভায় ডিএসসিসি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. মো. জিল্লুর রহমান, সচিব মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর মো. মাহাবুবুর রহমান তালুকদার, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নিশাত পারভীনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানাধীন বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ।
আজ মঙ্গলবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) এ কে এম মেহেদী হাসান গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
গ্রেপ্তাররা হলেন- সেলিম (৪৫), রফিক (৪০), সাদ্দাম (৩০), উজ্জ্বল (৩২) ও শামীম (২৫)।
গতকাল সোমবার (৯জুন) মোহাম্মদপুর থানা এলাকার বিভিন্ন স্থানে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এদের মধ্যে রয়েছে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ১জন, মাদক মামলায় ১জন, দূস্যতার মামলায় ১জন এবং অন্যান্য মামলায় ২জন।
গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
রাজধানীর পল্লবী থানার মিল্লাত ক্যাম্প এলাকায় পূর্বশত্রুতার জেরে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে পুলিশ খবর পেয়ে তার মরদেহ উদ্ধার করেছে।
নিহত ওই যুবকের নাম রাকিবুল হাসান সানি (২৯)। ভোর ৪টা থেকে ৫টার মধ্যেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও মাদক চক্রে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা সকাল সাতটার দিকে খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করেছি। পরে মরদেহ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে এবং পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ জানানো হবে।’
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাদক বিক্রির আধিপত্য বিস্তার ও দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের লোকজন তাকে হত্যা করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে রাতের আঁধারে হত্যাকারীরা কীভাবে ঘটনাটি ঘটিয়েছে; তা এখনও স্পষ্ট নয়।
নিহতের পরিবারের দাবি, সানি একজন অটোরিকশাচালক ছিলেন। পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, গেল রমজান মাসেও একটি সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী চক্র তার ওপর হামলা চালিয়েছিল।
ঘটনার পর থেকে মিল্লাত ক্যাম্প এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে এবং এলাকায় পুলিশ ও সিআইডি সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন।
গতকাল শনিবার পবিত্র ঈদুল আজহার দিনে বন্ধ থাকার পর আজ রোববার থেকে ফের চালু হয়েছে মেট্রোরেল। তবে মেট্রোতে কোরবানির পশুর চামড়া, কাঁচা বা রান্না করা মাংস পরিবহন করা যাবে না।
রোববার সকাল ৮টা থেকে মেট্রোরেল চলাচল শুরু হয়।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) সূত্রে জানা যায়, আজ (রোববার) প্রতি ৩০ মিনিট পরপর ট্রেন চলছে। আগামীকাল সোমবার থেকে মেট্রোরেল সরকারি ছুটির দিনের সময়সূচি অনুযায়ী চলাচল করবে।
গত মঙ্গলবার ডিএমটিসিএলের পরিচালক (প্রশাসন) এ কে এম খায়রুল আলমের স্বাক্ষর করা এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, মেট্রোরেলে কোরবানির পশুর চামড়া, কাঁচা বা রান্না করা মাংস পরিবহন করা যাবে না। মেট্রো স্টেশনের প্রতিটি গেটে যাত্রীদের যথাযথভাবে তল্লাশি করা হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কোনো যাত্রীর কাছে কাঁচা বা রান্না করা মাংস পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিক তার মেট্রো স্টেশনে প্রবেশ আটকে দেওয়া হবে। মেট্রোরেলের নিরাপত্তা কর্মীদের এসব নির্দেশনা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতেও বিজ্ঞপ্তিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মন্তব্য