× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
Men also need to be careful about loneliness and depression
google_news print-icon

পুরুষের একাকিত্ব-বিষণ্নতা নিয়েও সতর্কতার তাগিদ

পুরুষ
‘ইস্পাত দৃঢ়’ পুরুষ শিথিল সম্পর্ক, নিঃসঙ্গতা এবং কর্মহীনতার কারণে ভুগতে পারেন তীব্র বিষণ্ণতায়। ছবি: সংগৃহীত
জেন্ডার বিশেষজ্ঞ ও সমাজবিজ্ঞানীরা বলছেন, পুরুষতান্ত্রিক ব্যবস্থায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই পরিবারের ভরণ-পোষণের মূল চাপটি বহন করে পুরুষ। তবে এটি পুরুষের সহজাত কোনো প্রবৃত্তি নয়। আর অব্যাহত এই দায়িত্বের বোঝা কখনও কখনও পুরুষকে করে তোলে অসহায়।

ফেসবুক লাইভে এসে আত্মহত্যা করা ব্যবসায়ী আবু মহসিন খান মৃত্যুর আগে তার একাকিত্ব ও নিঃসঙ্গ জীবনের কথা জানিয়েছেন। একসময়ে সফল ব্যবসায়ী ছিলেন জানিয়ে তিনি পরিবার-স্বজনের প্রতি দায়িত্ব পালনের প্রসঙ্গও তোলেন ফেসবুক লাইভে।

বাবা হিসেবে দায়িত্বের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘প্রকৃত বাবারা না খেয়েও সন্তানদের খাওয়ানোর চেষ্টা করে, ফ্যামিলিকে দেয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু ফ্যামিলি অনেক সময় বুঝতে চায় না। নিজেকে আর মানিয়ে নিতে পারলাম না।’

মহসিন খানের নিঃসঙ্গ জীবনের পেছনে প্রচলিত সমাজব্যবস্থার সংকটকেও দায়ী করছেন বিশ্লেষকেরা। তারা বলছেন, প্রচলিত ধারণায় পুরুষকে শক্তিমান ও ক্ষমতাধর হিসেবে দেখা হলেও পুরুষকেও বহুমুখী চাপের শিকার হতে হয়। স্বাভাবিক সক্রিয় জীবনের পর শারীরিক ও মানসিকভাবে তীব্র একাকিত্বের মুখোমুখি হন অসংখ্য পুরুষ।

জেন্ডার বিশেষজ্ঞ ও সমাজবিজ্ঞানীরা বলছেন, পুরুষতান্ত্রিক ব্যবস্থায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই পরিবারের ভরণ-পোষণের মূল চাপটি বহন করে পুরুষ। তবে এটি পুরুষের সহজাত কোনো প্রবৃত্তি নয়। আর অব্যাহত এই দায়িত্বের বোঝা কখনও কখনও পুরুষকে করে তোলে অসহায়। প্রচলিত ধারণায় ‘ইস্পাত দৃঢ়’ পুরুষ শিথিল সম্পর্ক, নিঃসঙ্গতা এবং কর্মহীনতার কারণে ভুগতে পারেন তীব্র বিষণ্ণতায়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. তানিয়া হক বলেন, ‘পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা পুরুষকেই কিন্তু একটা বিশাল নির্যাতনের জায়গায় নিয়ে যাচ্ছে, যেটা পুরুষ নিজেই বুঝতে পারছে না। এর কারণ, তার মধ্যে সব সময় কাজ করে, তাকে আয় করতে হবে, তাকে খরচ করতে হবে। আয়ের জায়গাটা যেন পুরুষের জন্য বরাদ্দ।’

ব্যবসায় ব্যর্থ হওয়া, কাছের মানুষের কাছে টাকা দিয়ে ঠকে যাওয়ার বিষয়গুলো উঠে এসেছে মহসিন খানের লাইভে।

এ প্রসঙ্গে তানিয়া হক বলেন, ‘সে যখন আয় করতে পারছেন না, তখন পুরুষতান্ত্রিক ক্রাইসিস তৈরি হচ্ছে। আমার তো আয় করার কথা ছিল, আমার তো মার্কেট থেকে টাকা তোলার কথা ছিল, আমার তো হাতে টাকা থাকার কথা ছিল– তিনটা জায়গা তাকে ওভারলোডেড করে ফেলে, বার্ডেন করে ফেলে।’

নিজের মধ্যে অতিরিক্ত চাপ নেয়ার পাশাপাশি পুরুষের ভঙ্গুর অবস্থার জন্য আধুনিক ব্যস্ত জীবনকেও দায়ী করেছেন এই জেন্ডার বিশ্লেষক।

ড. তানিয়া হক বলেন, ‘আমাদের কারও কোনো সময় নেই। বেঁচে থাকার লড়াই, নগরজীবনের ব্যস্ততায় আমাদের আসলে পরিবারের সবার খোঁজখবর নেয়ার সুযোগটা অনেক কমে গেছে। নগরজীবন সে সুযোগটা যেমন কমিয়ে দিয়েছে, কোভিডের কারণে সেটা আরও অনেকখানি কমে গেছে। ফলে সামাজিক বন্ধন পারিবারিক বন্ধন এগুলো আর তেমনভাবে ক্রিয়াশীল থাকছে না।’

সামাজিক কাঠামোর মধ্যে বিদ্যমান সমস্যা কোভিডের কারণে আরও বেড়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এই যে পিতৃতন্ত্র, এটা রিয়েলাইজ করতে হবে পুরুষ এবং নারী উভয়কে। এটা শুধু নারীর করলে হবে না। পুরুষের বোঝা উচিত, পিতৃতন্ত্রের সাইড এফেক্ট তাকেও পোহাতে হয়।

‘এই যে কেবল দায়িত্ব, দায়িত্ব আর দায়িত্ব- এর মধ্যে কোন দায়িত্বটা পুরুষের ওপর? সার্বিকভাবে আয়ের দায়িত্বটা পুরুষের ওপর। যদিও শহরে গ্রামে সবখানেই নারীরাও উপার্জন করছেন। তবে নারীরা এখানে অনেক বেশি রিলাক্সড, তাদের কাজ না করলেও হয়। কিন্তু পুরুষরা যেন বাধ্য তাদের আয় করতে হবে, এই বাধ্যবাধকতা কবে শেষ হবে?’

তানিয়া হক বলেন, ‘যে ব্যক্তি আত্মহত্যা করলেন আমরা তার ব্যক্তিগত বিষয়গুলো জানি না, আমরা কখনও জানতে চাইও না। আমার কাছে মনে হয়, এ রিস্ক ফ্যাক্টরগুলো অ্যানালাইসিস হওয়া উচিত। আমাদের রিথিঙ্ক করার সময় এসেছে।’

তবে আত্মহত্যা যেকোনো সমাজে হতে পারে বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ তৌহিদুল হক।

তিনি বলেন, ‘ব্যক্তি মানুষের অধিকারকেন্দ্রিক অনেক দেশে এটা এখন অধিকারের পর্যায়ে চলে গেছে। কিন্তু আমাদের দেশে এসে আমরা আত্মহত্যা মানতে পারি না কেন? কারণ, আমাদের জীবনব্যবস্থা হলো সামষ্টিক। সম্পর্ক, বন্ধনের ভিত্তিতে পরিবারকেন্দ্রিক আবহে থাকতে আমরা পছন্দ করি বা থাকিও।’

তৌহিদুল হকের মতে, একটি পরিবারে নারী ও পুরুষের ভূমিকা কেমন হবে, তা তৈরি হয়েছে অতীত অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে। আর এখানেই সমস্যা দেখছেন তিনি।

এই সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘পুরুষতান্ত্রিক সমাজে আমরা পুরুষকে দেখি তিনি কঠিন একটা অবস্থার মধ্য দিয়ে যাবেন। কোনো অবস্থাতেই তিনি টলবেন না। মানসিকভাবে কাবু হবেন না। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, এই বিষয়গুলো কোনো সহজাত বিষয় না। এগুলো চাপিয়ে দেয়া বিষয়।

‘যে প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আমরা সমাজ দেখি, সমাজকে পরিচালিত করছি এবং নিজেরা বড় হচ্ছি, সেখানে বৈষম্যপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি এবং আবেগের চর্চার বড় একটা জায়গা তৈরি হয়েছে। আর এটিই আত্মহত্যার মতো সিদ্ধান্ত নেয়ার মূল কারণ।’

তৌহিদ বলেন, ‘আমরা অন্যজনকে যেভাবে বিচার করছি, সেই বিচার করার মধ্যে একটা দূরত্ব রয়ে গেছে, একটা বৈষম্য রয়ে গেছে। ফলে অন্যের ইচ্ছে অনিচ্ছেকে আমরা বড় করে দেখছি না।’

একজন ব্যক্তির জীবনের দুটো অবস্থানে সহযোগিতার প্রয়োজন হয় বলে মনে করেন এই সমাজ বিশ্লেষক। তার মতে, ‘একজন ব্যক্তির শৈশব এবং প্রবীণ জীবনে অন্যের সহযোগিতা প্রয়োজন হয়। এ সময় মানুষ অসহায় বোধ করেন।’

জীবনের একটা পর্যায়ে এসে পুরুষের এই ভঙ্গুর বা অসহায় অবস্থার জন্য শুধু পুরুষতান্ত্রিক সমাজের প্রচলিত ধারণাকে এককভাবে দায় দিতে চান না মনোবিদ ড. মাহফুজা খানম। সামাজিক মূল্যবোধের দ্রুত পরিবর্তনকেও এর জন্য দায়ী করছেন তিনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানের অধ্যাপক ড. মাহফুজা খানম বলেন, ‘এটার জন্য শুধু যে পুরুষতান্ত্রিক কালচারকে দায়ী করা যাবে, তা কিন্তু নয়। আমাদের সমাজের যে ভ্যালুস (মূল্যবোধ) সেটা খুব দ্রুত বদলে যাচ্ছে। দ্রুত বদলের অন্যতম কারণ হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে বাইরের সংস্কৃতি আমাদের মধ্যে ঢুকে পড়ছে। এগুলো দ্বারা আমরা ভীষণভাবে প্রভাবিতও হচ্ছি।’

পুরুষ এবং নারী- উভয়ই কর্মমুখী হয়ে পড়ায়, পারিবারিক বন্ধন কিছুটা আলগা হয়ে যাচ্ছে বলে মনে করেন এই মনোবিদ। তার মতে, ‘বাবা-মায়ের সঙ্গে সন্তানের সম্পর্ককে দৃঢ় করতে করতে হবে। বাচ্চা-কাচ্চার ফিজিক্যাল নিডের সঙ্গে সাইকোলোজিক্যাল নিডও পূরণ করতে হবে। আনন্দপূর্ণ সম্পর্কের মধ্যে থাকলে স্ট্রেস অনেকটা কমে আসে।’

জীবনের প্রয়োজনের শারীরিক দূরত্ব বাড়লেও পারিবারিক বন্ধন মজবুত রাখার ওপর জোর দেন মাহফুজা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ব্যবসায় ধস নামা, পরিবার থেকে মেন্টাল সাপোর্ট না পাওয়ার কারণে সেল্ফ ইস্টিম লো হয়ে যায়। ব্যবসায়ী মহসিনের ক্ষেত্রেও এমনটা হয়ে থাকতে পারে।’

জাপানে এমন ঘটনার নজির আছে জানিয়ে এই অধ্যাপক বলেন, ‘কাছের মানুষের মধ্যে যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতা যাতে না আসে, সেদিকে নজর দিতে হবে।’

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগ বিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সালাহউদ্দিন কাউসার বিপ্লব নিউজবাংলাকে বলেন, ‘নারী পুরুষকে আলাদা দৃষ্টিতে না দেখে, সবার মনের যত্ন নিতে হবে। আত্মহত্যার প্রধান কারণ ডিপ্রেশন। যত আত্মহত্যার খবর পাওয়া যায়, তার ৯০ শতাংশ হয় মানসিক রোগের কারণে। মনের চিকিৎসাটা করাটা সবচেয়ে বেশি জরুরি।’

এই চিকিৎসকের পরামর্শ, পরিবার থেকে শুরু করে সমাজ ও রাষ্ট্রীয় পরিসরে মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়ানোর ওপর জোর দিতে হবে।

গবেষণা বলছে, হার্ট অ্যাটাক, কিডনি, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসের মতো অসংক্রামক রোগে আক্রান্তদের বেশিরভাগই পুরুষ। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পুরুষের চাপা স্বভাবই এর মূল কারণ।

আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআর,বি) বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. আলিয়া নাহিদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘নারীর তুলনায় একজন পুরুষ বেশি মানসিক চাপ নেন। স্ট্রেস নেয়ার কারণে অসংক্রামক রোগে তারা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। এ ছাড়া কাজের প্রয়োজনে বেশিরভাগ সময়ে পুরুষ ঘরের বাইরে থাকেন। পরিবেশ কিংবা বায়ুদূষণ এবং বাইরের অস্বাস্থ্যকর খাবারগ্রহণও এর জন্য দায়ী।’

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
Womens participation has increased in the workplace but not in decision making

‘কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণে নয়’

‘কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণে নয়’ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম। ফাইল ছবি
‘সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রেই নারীত্ব নিয়ে রাজনীতি হচ্ছে। সেটা পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র, প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাঙ্গন, ভাগ-বাটোয়ারার ক্ষেত্র, এমনকি ধর্মীয়ভাবেও। পৃথিবীতে এমন কোনো ধর্ম খুঁজে পাওয়া যাবে না, যেখানে প্রতিটি ক্ষেত্রে নারীকে সমান অধিকার দেয়া হয়েছে।’

‘কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বাড়লেও নারীর ক্ষমতায়ন বা সামাজিক মর্যাদা বাড়েনি। দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে সিদ্ধান্ত গ্রহণে নারীর অংশগ্রহণ ও ক্ষমতায়ন জরুরি।

‘অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে রাজনীতিতে নারীদের কথা বলার জায়গাটা তৈরি করে দিতে হবে। সিদ্ধান্ত গ্রহণের জায়গাগুলোতে নারীদের নিয়ে আসতে হবে।’

আন্তর্জাতিক নারী দিবস সামনে রেখে বার্তা সংস্থা ইউএনবিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম।

তিনি বলেন, ‘নারী পরিচয়ের আগে আমার বড় পরিচয় হলো আমি একজন মানুষ। নারী-পুরুষ ভেদাভেদ তৈরি, নারীকে হেয় করা, শারীরিক ও মানসিকভাবে পুরুষের চেয়ে দুর্বল মনে করা হয় আজও।’

পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীদের মূল্যায়ন সম্পর্কে সাদেকা হালিম বলেন, ‘সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি এমন হয়েছে যে সমাজে নারীকে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসেবে দেখা হয়; যদিও বাংলাদেশের সংবিধানে নারী ও পুরুষ সমান। কিন্তু বাস্তবে কোনো দেশই খুঁজে পাওয়া যাবে না, যেখানে নারীকে পুরুষের সমান ভাবা হয়।’

‘সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রেই নারীত্ব নিয়ে রাজনীতি হচ্ছে। সেটা পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র, প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাঙ্গন, ভাগ-বাটোয়ারার ক্ষেত্র, এমনকি ধর্মীয়ভাবেও। পৃথিবীতে এমন কোনো ধর্ম খুঁজে পাওয়া যাবে না, যেখানে প্রতিটি ক্ষেত্রে নারীকে সমান অধিকার দেয়া হয়েছে।’

‘এমনকি নারীর সন্তান জন্ম দেয়ার বিষয় নিয়েও রাজনীতি করা হয়। সন্তান জন্মের পর পরই সন্তানের অধিকার কিভাবে হবে সেটা আমরা ধর্মীয়ভাবে নির্ধারণ করি। বাবা ও মায়ের অধিকার কতটুকু, আমাদের সিভিল ল’তে কতটুকু, শরিয়া ল’তে কতটুকু- এসব বিষয় অনেকটাই পুরুষকেন্দ্রিক। পুরুষকে সব সময় প্রাধান্য দেয়া হয়। পুরুষরাই এ সমাজে নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা পালন করে।’

এই উপমহাদেশে নারীদের ভূমিকা সম্পর্কে ড. সাদেকা হালিম বলেন, ‘ভারত উপমহাদেশে নারীর ক্ষমতায়ন যে এখন হয়েছে তা নয়। অবিভক্ত ভারত উপমহাদেশে নারীরা কিন্তু ইউরোপের নারীদের আগেই ভোটাধিকার পেয়েছিল। ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় নারীরা যুদ্ধে অংশ নিয়েছে, রানি হয়েছে, ট্যাক্স সংগ্রহ করেছে।

‘আধুনিক রাষ্ট্রে পুঁজিবাদের বিস্তার ঘটার সঙ্গে সঙ্গে নারীদের কাজের পরিধি বেড়েছে, কিন্তু নারীদের পণ্য হিসেবে দেখা হচ্ছে। তার কাজকে কাজ হিসেবে আমরা দেখিনি। নারীরা স্ত্রী, মা বা মেয়ে হিসেবে যে ভূমিকা পালন করে সেটিকেও অবমূল্যায়ন করা হয়।

‘কোনো নারী চাকরি করলেও তাকে আমরা প্রশ্ন করি তার স্বামী কী করে। সে যদি স্বামীর থেকে বেশি বেতন পায়, তাহলে পুরুষও হীনম্মন্যতায় ভোগে।’

সমাজের সাধারণ নারীদের অবস্থা বর্ণনা করতে গিয়ে জবি উপাচার্য বলেন, ‘অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন তো নারীদের অনেকেরই হয়েছে। গার্মেন্ট সেক্টর, চিংড়ি মাছের ঘের, কল-কারখানায় নারীরা কাজ করছে। এটি ভারত বা পাকিস্তানের চেয়ে অনেক বেশি। কিন্তু নারীর সামাজিক মর্যাদা কি বেড়েছে? এটা খুবই জটিল একটি বিষয়।

‘চরম দারিদ্র্যের শিকার নারীরা কোনো কিছু ভাবে না, বা ভাবার সুযোগ পায় না। তারা জানে তাদেরই কাজ করতে হবে, ক্ষুধা মেটাতে হবে। তারাই শিশুদের মুখে খাবার তুলে দিচ্ছে। সাধারণ নারীরা অনেক পরিশ্রমী। সামাজিক সমালোচনা গ্রাহ্য না করে তারা চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করছে। কিন্তু সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় তাদের বাদ দেয়া হচ্ছে।’

নারীর সামাজিক নিরাপত্তার বিষয়ে সাদেক হালিম বলেন, ‘আমরা নারীর নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করতে পারিনি। বাংলাদেশে বা প্রবাসে যে পরিমাণ নারী কাজ করে সেখানেও আমরা দেখি যে নারীরা নিরাপদ নয়। এমনকি খুব নিকট আত্মীয়ের মাধ্যমে তারা ধর্ষণের শিকার হয়।’

তিনি বলেন, ‘তবে বাংলাদেশে দীর্ঘ সময় ধরে প্রধানমন্ত্রী নারী, স্পিকার নারী, বিরোধীদলীয় নেত্রী নারী। এবারকার কেবিনেটে একটি উল্লেখযোগ্য অংশ নারী মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী হয়ে আসছেন। এটা ইতিবাচক দিক।

‘সংখ্যার দিক থেকে নারীর অংশগ্রহণ অনেক বেশি, কিন্তু নারীর ক্ষমতায়ন বা সামাজিক মর্যাদার জায়গায় গুণগত মানের দিক থেকে কতটা বদলেছে সেটি বড় বিষয়। যখন নারীরা সিদ্ধান্ত গ্রহণে আসবে, নেতৃত্ব দেবে, তখনই বদলাবে সমাজ।’

আরও পড়ুন:
‘নারীদের ওপর বিনিয়োগ করুন, দ্রুত উন্নতি আনুন’

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Invest in women to accelerate progress
আন্তর্জাতিক নারী দিবস আজ

‘নারীদের ওপর বিনিয়োগ করুন, দ্রুত উন্নতি আনুন’

‘নারীদের ওপর বিনিয়োগ করুন, দ্রুত উন্নতি আনুন’ আন্তর্জাতিক নারী দিবস আজ। ছবি: পিয়াস বিশ্বাস/নিউজবাংলা
আন্তর্জাতিক নারী দিবসের এ বছরের থিম ‘ইনস্পায়ার ইনক্লুশন’, যার লক্ষ্য হচ্ছে নারীদের জন্য এমন পরিবেশ তৈরি করা, যেখানে তারা সমাজে নিজের জায়গা সম্পর্কে জানতে পারে। এর সঙ্গে এ গল্পগুলো সামঞ্জস্যপূর্ণ।

আন্তর্জাতিক নারী দিবস আজ। প্রতি বছর ৮ মার্চ নারীর উন্নয়ন, ক্ষমতায়ন ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় সারা বিশ্বে দিবসটি পালিত হয়।

এ বছর নারী দিবসে জাতিসংঘের প্রতিপাদ্য হল ‘নারীদের ওপর বিনিয়োগ করুন, দ্রুত উন্নতি আনুন।’ এর মাধ্যমে লিঙ্গ সমতা আনতে যে যথেষ্ট অর্থ বিনিয়োগ করা হচ্ছে না সেই বিষয়টাতে মনোযোগ দেয়া হয়েছে।

আন্তর্জাতিক নারী দিবসের এ বছরের থিম ‘ইনস্পায়ার ইনক্লুশন’, যার লক্ষ্য হচ্ছে নারীদের জন্য এমন পরিবেশ তৈরি করা, যেখানে তারা সমাজে নিজের জায়গা সম্পর্কে জানতে পারে। এর সঙ্গে এ গল্পগুলো সামঞ্জস্যপূর্ণ।

দিবসটির উৎপত্তি ২০ শতকের গোড়ার দিকে, যা উত্তর আমেরিকা এবং ইউরোপের শ্রমিক আন্দোলন থেকে উদ্ভূত হয়েছিল। ১৯০৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম জাতীয় নারী দিবস পালন করা হয়।

পরবর্তীতে ১৯১০ সালে মার্কসবাদী তাত্ত্বিক এবং ‘নারী অধিকার’ আন্দোলনের বিশিষ্ট নেত্রী ক্লারা জেটকিন কোপেনহেগেনে আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলনে আন্তর্জাতিক নারী দিবসের প্রস্তাব করেন। ধারণাটি সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদিত হয়েছিল ১৯১১ সালে। যেখানে ১০ লাখেরও বেশি অংশগ্রহণকারী নারীর অধিকারের পক্ষে ছিলেন।

আন্তর্জাতিক নারী দিবস শুধু নারীদের অর্জন উদযাপনের দিন নয়, এটি লিঙ্গ সমতা, এর প্রতিফলন, সমর্থন, এবং বিশ্বজুড়ে নারী এবং মেয়েদের জন্য বাধাগুলো ভেঙে ফেলার পদক্ষেপকে উৎসাহিত করে।

আরও পড়ুন:
সংরক্ষিত আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেলেন যারা
অভিনেত্রীদের ফরম কেনা নিয়ে আওয়ামী লীগে ক্ষোভ
আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চান ১৫৪৯ নারী
রাজনীতি না করেও এমপি হতে চান অভিনেত্রীরা
নেত্রকোনায় ৩ দিনব্যাপী নারী ইজতেমা সমাপ্ত

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The gender identity of the unborn child cannot be revealed

‘মাতৃগর্ভে থাকা শিশুর লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ করা যাবে না’

‘মাতৃগর্ভে থাকা শিশুর লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ করা যাবে না’
হাইকোর্টে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দাখিল করা নীতিমালায় বলা হয়েছে- কোনো ব্যক্তি, হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ল্যাবরেটরি কোনো লেখা বা চিহ্ন বা অন্য কোনো উপায়ে শিশুর লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ করতে পারবে না।

মাতৃগর্ভে থাকা অবস্থায় অনাগত শিশুর লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ করা যাবে না মর্মে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর গঠিত কমিটির প্রতিবেদন হাইকোর্টে দাখিল করা হয়েছে।

বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চে সোমবার এই নীতিমালা দাখিল করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। আদালত এই নীতিমালার ওপর শুনানির জন্য মঙ্গলবার দিন ঠিক করেছে।

আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত।

দাখিল করা নীতিমালায় বলা হয়েছে- কোনো ব্যক্তি, হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ল্যাবরেটরি কোনো লেখা বা চিহ্ন বা অন্য কোনো উপায়ে শিশুর লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ করতে পারবে না। এ বিষয়ে কোনোরকম বিজ্ঞাপন দিতে পারবে না। সরকারের মন্ত্রণালয়গুলো ডাক্তার, নার্স, পরিবার পরিকল্পনা কর্মী, টেকনিশিয়ান কর্মীদের নেতিবাচক ফলাফল সম্পর্কে ট্রেনিং দেবে এবং নৈতিকতা ও পেশাগত আচরণ বিষয়ে ট্রেনিং দেবে।

নীতিমালায় আরও বলা হয়েছে- হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টারসহ মেডিক্যাল সেন্টারগুলো এ সংক্রান্ত সব ধরনের টেস্টের ডাটা সংরক্ষণে রাখবে। হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টারসহ মেডিক্যাল সেন্টারগুলো ডিজিটাল ও প্রিন্ট মাধ্যমে লিঙ্গ সমতা এবং কন্যাশিশুর গুরুত্ব তুলে ধরে বিভিন্ন মেসেজ প্রচার করবে।

এর আগে ২০২০ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি মাতৃগর্ভে থাকা অবস্থায় অনাগত শিশুর লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ রোধে নীতিমালা তৈরি করতে রুল জারি করে হাইকোর্ট।

বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই রুল জারি করেছিলেন।

রুলে অনাগত শিশুর লিঙ্গ পরিচয় রোধে নীতিমালা বা নির্দেশনা তৈরি করতে বিবাদীদের ব্যর্থতা কেন অবৈধ ও আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না এবং অনাগত শিশুর লিঙ্গ পরিচয় নির্ধারণে নীতিমালা তৈরি করতে বিবাদীদের কেন নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে চাওয়া হয়।

হাইকোর্টের ওই রুলের পর নীতিমালা তৈরির জন্য কমিটি গঠন করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

এর আগে ২০২০ সালের ২৬ জানুয়ারি গর্ভের শিশুর লিঙ্গ পরিচয় জানার উদ্দেশ্যে পরীক্ষা ও লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ বন্ধে নির্দেশনা চেয়ে জনস্বার্থে রিট করেন অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
First black president at Harvard University

হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটিতে প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট

হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটিতে প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির নতুন প্রেসিডেন্ট ক্লদিন গে। ছবি: হার্ভার্ড
১৬৪০ সালে প্রতিষ্ঠিত হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয় ক্লদিনকে। তিনি ১৯৯৮ সালে সরকার বিষয়ে হার্ভার্ড থেকে পিএইচডি ডিগ্রি নেন। ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠানটিতে শিক্ষকতা শুরু করেন তিনি।

প্রথমবারের মতো কৃষ্ণাঙ্গ কোনো ব্যক্তিকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বখ্যাত উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি।

স্থানীয় সময় শুক্রবার ক্লদিন গেকে নিয়োগ দেয় প্রতিষ্ঠানটি। বিশ্ববিদ্যালয়টিকে নেতৃত্ব দেয়া দ্বিতীয় নারী ক্লদিন।

সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ম্যাসাচুসেটসের গভর্নর ও হার্ভার্ড গ্র্যাজুয়েট মাউরা হ্যালি শুক্রবার বিকেলে দেয়া ভাষণে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্লদিনের নিয়োগের গুরুত্ব তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট গে, প্রেসিডেন্ট হিসেবে আপনার দায়িত্বপ্রাপ্তি সত্যিই ঐতিহাসিক। আপনার প্রতি আমার শ্রদ্ধা ও সমর্থন।’

প্রেসিডেন্ট পদে ব্যাপক অনুসন্ধানের পর হার্ভার্ডের প্রধান নিয়ন্ত্রক বোর্ড হার্ভার্ড করপোরেশন ক্লদিন গেকে নিয়োগ দেয়।

১৬৪০ সালে প্রতিষ্ঠিত হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয় ক্লদিনকে। তিনি ১৯৯৮ সালে সরকার বিষয়ে হার্ভার্ড থেকে পিএইচডি ডিগ্রি নেন। ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠানটিতে শিক্ষকতা শুরু করেন তিনি।

এর আগে কলা ও বিজ্ঞান অনুষদের ডিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ক্লদিন। তিনি রাজনৈতিক আচরণের ওপর শীর্ষস্থানীয় বিশেষজ্ঞ।

২০১৭ সালে ‘ইনইকোয়ালিটি ইন আমেরিকা ইনিশিয়েটিভ’ নামের উদ্যোগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারপারসন ছিলেন তিনি। এ উদ্যোগের উদ্দেশ্য সামাজিক ও অর্থনৈতিক অসাম্য নিয়ে গবেষণা।

আরও পড়ুন:
কৃষ্ণাঙ্গ ওয়াকারের গায়ে ‘৪৬টি গুলি অথবা ক্ষতচিহ্ন’
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভে প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ নারী গভর্নর

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Prime Minister Sheikh Hasinas leadership has been praised at IMO
মেরিটাইম শিল্পে নারীর ক্ষমতায়ন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্ব আইএমও-তে প্রশংসিত

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্ব আইএমও-তে প্রশংসিত লন্ডনে ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশনে ‘এমপাওয়ারিং উইমেন ইন মেরিটাইম অ্যান্ড ওশান ডিপ্লোম্যাসি’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে নেভিগেশন অফিসার, মেরিন ইঞ্জিনিয়ার এমনকি ক্যাপ্টেনের মতো সিনিয়র ম্যানেজমেন্ট পদসহ বিভিন্ন ভূমিকার জন্য বার্ষিক ১০০ জনেরও বেশি মহিলা নাবিক নিয়োগ করা হয়। এই রূপান্তরমূলক প্রচেষ্টাগুলো পুরুষ-প্রধান সামুদ্রিক শিল্পে লিঙ্গ বৈচিত্র্যের প্রচারে প্রভাব ফেলেছে।’

লন্ডনে একটি উচ্চ পর্যায়ের প্যানেল আলোচনার বক্তারা মেরিন একাডেমিতে নারীদের অন্তর্ভুক্ত করাসহ মেরিটাইম শিল্পে নারীদের উৎসাহিত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করেছেন।

লন্ডনের বাংলাদেশ হাইকমিশনের উদ্যোগে সম্প্রতি ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশনে (আইএমও) ‘এমপাওয়ারিং উইমেন ইন মেরিটাইম অ্যান্ড ওশান ডিপ্লোম্যাসি’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সূত্র: ইউএনবি

যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন। তিনি আইএমও-তে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি এবং উইমেন ইন ডিপ্লোম্যাসি নেটওয়ার্ক (ডব্লিউডিএন), লন্ডনের সভাপতির দায়িত্বে নিয়োজিত।

বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার, আইএমও-তে নিয়োজিত স্থায়ী প্রতিনিধি, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞসহ ১০০ জনেরও বেশি প্রতিনিধি এতে অংশ নেন।

বৈশ্বিক সামুদ্রিক শিল্পে নারীদের কম উপস্থিতির কথা তুলে ধরে হাইকমিশনার তাসনিম বলেন, বিশ্বব্যাপী ১ দশমিক ২ মিলিয়ন সনদপ্রাপ্ত নাবিকের মধ্যে নারী মাত্র ১ দশমিক ২৮ শতাংশ। অন্যদিকে ক্রুজ শিল্পে শ্রমশক্তির মাত্র ২ শতাংশ নারী।

হাইকমিশনার বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেরিন ইন্ডাস্ট্রিতে নারী ক্যাডেট নিয়োগের দূরদর্শী সিদ্ধান্তের জন্য গর্ব বোধ করি। প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে নেভিগেশন অফিসার, মেরিন ইঞ্জিনিয়ার এমনকি ক্যাপ্টেনের মতো সিনিয়র ম্যানেজমেন্ট পদসহ বিভিন্ন ভূমিকার জন্য বার্ষিক ১০০ জনেরও বেশি মহিলা নাবিক নিয়োগ করা হয়।

‘এই রূপান্তরমূলক প্রচেষ্টাগুলো ঐতিহ্যগতভাবে পুরুষ-প্রধান সামুদ্রিক শিল্পে লিঙ্গ বৈচিত্র্যের প্রচারে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছে।’

দূত নারী-পুরুষ সমতা বাড়াতে ও সামুদ্রিক খাতে নারীদের কণ্ঠ জোরদার করতে বিআইএমসিওসহ আইএমও সচিবালয়, আইএমও-এর সহযোগী সদস্য, উইমেনস ইন্টারন্যাশনাল শিপিং অ্যান্ড ট্রেডিং অ্যাসোসিয়েশন (ডব্লিউআইএসটিএ) ইন্টারন্যাশনাল, উইমেন ইন মেরিটাইম অ্যাসোসিয়েশন (ডব্লিউআইএমএএস) এবং নেতৃস্থানীয় শিপিং শিল্প সমিতিগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতায় কাজ করার জন্য ডাব্লিউডিএন-এর দৃঢ় প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী নারী নাবিকসহ নাবিকদের অবদানের ওপর বাংলাদেশ হাইকমিশনের তৈরি একটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়, যা অংশগ্রহণকারীদের বিশেষ মনোযোগ আকর্ষণ করে ও প্রশংসিত হয়।

উচ্চ পর্যায়ের এই আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন- লিগ্যাল অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড এক্সটারনাল রিলেশনস ডিভিশনের ডিরেক্টর ডোরোটা লস্ট সিমিনস্কা, যুক্তরাজ্যে মালদ্বীপের হাইকমিশনার ড. ফারাহ ফয়জল, জর্জিয়ার আইএমও-এর রাষ্ট্রদূত ও জনসংযোগ সোফি কাস্ত্রাভা, অ্যান্টিগুয়া ও বারমুডার হাইকমিশন কারেন-মাই হিল ওবিই, স্টেট ডিপার্টমেন্ট ফর শিপিং অ্যান্ড মেরিটাইম কেনিয়ার প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি রাষ্ট্রদূত ন্যান্সি ডব্লিউ কারিগিথু, আইএমওর মার্শাল আইল্যান্ডের টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার ও কার্গোস অ্যান্ড কন্টেইনার ক্যারেজ অন আইএমও সাব-কমিটির চেয়ার মেরিয়ান অ্যাডামস, আইএমওতে আর্জেন্টিনার জনসংযোগ এবং ইউএস জারেড ব্যাংকসের জনসংযোগ ফার্নান্দা মিলিশে, সৌদি আরবের এপিআর হায়াত আল ইয়াবিস এবং এডিটর অব ম্যাগাজিন লন্ডনের সম্পাদক এলিজাবেথ স্টুয়ার্ট।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Female Dog Handler in Police

পুলিশে নারী ডগ হ্যান্ডলার

পুলিশে নারী ডগ হ্যান্ডলার এপিবিএনে যুক্ত হয়েছেন নারী ডগ হ্যান্ডলার। ছবি: নিউজবাংলা
সাতজন নারী পুলিশ সদস্য বেসিক কেনাইন হ্যান্ডলার ট্রেনিং কোর্সে অংশ নিয়ে নতুন যুগের সূচনা করেছেন।

এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটলিয়নে (এপিবিএন) দেশে প্রথমবারের মতো নারী পুলিশ সদস্যদের ডগ হ্যান্ডলার হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে।

সাতজন নারী পুলিশ সদস্য বেসিক কেনাইন হ্যান্ডলার ট্রেনিং কোর্সে অংশ নিয়ে নতুন এ যুগের সূচনা করেছেন।

নারীদের প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করেছেন যুক্তরাজ্য ও নিউজিল্যান্ডের পেশাদার ডগ স্কোয়াড প্রশিক্ষক টনি ব্রাইসন ও মেলিন ব্রডউইক।

ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস ও এয়ারপোর্ট এপিবিএনের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এ প্রশিক্ষণ কর্মসূচিটি নারী পুলিশ সদস্যরা সফলতার সঙ্গে শেষ করেছেন।

প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের হাতে বৃহস্পতিবার সকালে সমাপনী সনদ তুলে দেন এয়ারপোর্ট এপিবিএন অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি তোফায়েল আহম্মদ, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম ও ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা।

এপিবিএনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) মোহাম্মদ জিয়াউল বলেন, ‘২০১৭ সালে দুইটি ল্যাবরেডর, দুইটি জার্মান শেফার্ড ও চারটি বেলজিয়ান ম্যালিনয়েস জাতের কুকুর এবং ১৬ জন হ্যান্ডলার নিয়ে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের কেনাইন ইউনিট যাত্রা শুরু করে। শুধু বিমানবন্দরের নিরাপত্তা রক্ষায় ডেডিকেটেড এই ডগ স্কোয়াড বিমানবন্দরে আসা যাত্রী, সহযাত্রী এবং তাদের ব্যাগেজ স্ক্রিনিংয়ে ব্যবহৃত হচ্ছে। এ ছাড়াও ক্যানোপি নিরাপত্তা, পার্কিং এরিয়া এবং যানবাহনে বিস্ফোরক পদার্থের উপস্থিতি সার্চ, ব্যাগেজ বেল্ট এলাকার নিরাপত্তা রক্ষা এবং ভিভিআইপি নিরাপত্তা রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে।’

এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের ডগ স্কোয়াডে ২০২৫ সালের মধ্যে কুকুরের সংখ্যা ৬৬টি করার পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে বলে জানান জিয়াউল হক।

তিনি বলেন, ‘তৃতীয় টার্মিনালের সম্ভাব্য বিশাল অপারেশনের কথা মাথায় রেখে এই পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। ২০২৩ সালের মধ্যে ব্রিটেন এবং নেদারল্যান্ডস থেকে আরও অন্তত ১৫টি ডগ এই স্কোয়াডে যুক্ত হবে। বর্তমানে ভগগুলো এক্সপ্লোসিভ সার্চের জন্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হলেও অচিরেই নারকোটিকস ডগ, ট্রাকিং ডগ, কারেন্সি শিফিং ডগও এই বহরে যুক্ত হবে। এ সকল ট্রেনিংয়ে কারিগরি ও লজিস্টিক সাপোর্ট দিয়ে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নকে সহায়তা করবে ঢাকার ইউএস অ্যাম্বাসি।’

পরিপূর্ণ ডগ স্কোয়াড বিমানবন্দরে নাশকতা, মাদক চোরাচালান, স্বর্ণ চোরাচালন, মুদ্রা পাচার রোধে অসামান্য ভূমিকা রাখতে পারে বলে জানান অনুষ্ঠানে উপস্থিত আলোচকরা।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Cowcart procession on Womens Day

নারী দিবসে গরুর গাড়ির শোভাযাত্রা

নারী দিবসে গরুর গাড়ির শোভাযাত্রা আন্তর্জাতিক নারী দিবসে বুধবার যশোরে বের হয় শোভাযাত্রা। ছবি: নিউজবাংলা
গরুর গাড়ির পেছনে পেছনে নারীরা নিজ নিজ সংগঠনের ব্যানারসহ অধিকার সংবলিত বিভিন্ন প্যানা নিয়ে অংশ নেন। শোভাযাত্রাটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পুনরায় কালেক্টরেট চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।

আন্তর্জাতিক নারী দিবসে যশোরে ব্যতিক্রমী গরুর গাড়ির শোভাযাত্রা বের হয়েছে। বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় জেলা সদরের কালেক্টরেট চত্বরে শোভাযাত্রা উদ্বোধন করেন যশোরের জেলা প্রশাসক মো. তমিজুল ইসলাম খান।

জেলা প্রশাসন ও জেলা মহিলা অধিদপ্তর আয়োজিত শোভাযাত্রায় অংশ নেন বিভিন্ন নারী সংগঠনের সদস্যরা। শোভাযাত্রাটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পুনরায় কালেক্টরেট চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।

গরুর গাড়ির পেছনে পেছনে নারীরা নিজ নিজ সংগঠনের ব্যানারসহ অধিকার সংবলিত বিভিন্ন প্যানা নিয়ে অংশ নেন। পরে কালেক্টরেট সম্মেলনের অমিত্রাক্ষর সভাকক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

আরও পড়ুন:
নারীর যথাযথ কাজের সুযোগ আজও হয়নি
ট্রান্সজেন্ডার নারীদের নিয়ে নারী দিবসের আয়োজন
নারী নিরাপত্তা ও পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের সম্মান জানাল আইইউবি
নারী দিবসে বিনামূল্যে মেডিক্যাল ক্যাম্প
মেয়েদের ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার বানিয়ে সংবর্ধনা পেলেন গ্রামপুলিশ মা

মন্তব্য

p
উপরে