প্রবাদ বাক্যই সত্য হলো। মাঘ মাসের প্রথমার্ধেই বাঘ পালানো শীত পড়েছে দেশজুড়ে। তবে এমন শীতে প্রকৃত বাঘদের খবর জানা না গেলেও জেলায় জেলায় মানুষের জীবন এখন বিপর্যস্ত। বিশেষ করে নিম্নবিত্ত মানুষই এর প্রধান ভুক্তভোগী।
দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলীয় তিন জেলার সরেজমিন প্রতিবেদনে বিষয়টি আরও স্পষ্ট।
এর মধ্যে উত্তরাঞ্চলীয় নীলফামারী জেলায় কনকনে শীত আর হিমেল হাওয়ায় জনজীবন এতটাই বিপর্যস্ত যে, সড়কে মানুষের চলাচল কমে গেছে। ঘন কুয়াশায় দিনের বেলায়ও যানবাহন চলছে হেডলাইট জ্বালিয়ে। হাসপাতালগুলোতে শীতজনিত রোগীর সংখ্যাও বেড়েছে।
তারপরও থেমে নেই এ জেলার জনজীবন। জীবিকার তাগিদে বের হতেই হচ্ছে মধ্য ও নিম্নবিত্ত মানুষদের।
আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে, মৃদু শৈত্যপ্রবাহ চলছে নীলফামারী জেলায়। এতে গত কয়েক দিন ধরেই নীলফামারীসহ আশপাশের কয়েকটি জেলায় তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে অবস্থান করছে।
ফলে শীতের পোশাক ছাড়াও অনেকে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। তবে তিস্তাবেষ্টিত এলাকার মানুষজন পড়েছেন সবচেয়ে বিপাকে। শীত নিবারণের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন তারা।
শীতে কাঁপতে কাঁপতে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার খালিশা চাপানী ইউনিয়নের শামসুল ইসলাম বলেন, ‘খুব ঠান্ডা। দিন কাটায় যায়ছে না। হাড্ডিত নাগেছে ঠান্ডা। সাথে বাতাস কাহিল করি ফেলাইছে হামাক। বেলা গড়ি গেইলেও সূর্যের দেখা যায়ছে না।’
সৈয়দপুর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ লোকমান হোসেন জানান, ওই অঞ্চলে এমন অবস্থা আরও কয়েক দিন থাকবে। তবে তাপমাত্রা ওঠানামা করবে এই সময়টিতে। মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহও বিরাজ করতে পারে।
নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালের শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ আব্দুল আউয়াল জানান, শীতের কারণে রোগীর সংখ্যা অন্তত ১০ গুণ বেড়েছে। এর মধ্যে সাধারণ সর্দি-কাশি ছাড়াও ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও বেশি। এ ধরনের আবহাওয়ায় শিশুদের কুসুম গরম পানি, ধুলাবালি থেকে দূরে রাখার পরামর্শ দেন তিনি।
উত্তরাঞ্চলীয় জেলাগুলোর মধ্যে নীলফামারীতে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে দেয়া ৩০ হাজার ১০০ কম্বল বিতরণ করা হয়েছে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে। এ ছাড়া সংসদ সদস্য, উপজেলা, পৌরসভা ও জেলা প্রশাসকের নামে বরাদ্দ হওয়া ৭৩ লাখ ৪৪ হাজার ৩৬৮ টাকার কম্বল সংগ্রহ করে বিতরণের প্রক্রিয়া চলছে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম জানান, ইউনিয়ন পর্যায়ে কম্বল বিতরণের পাশাপাশি শিশুদের শীত নিবারক পোশাকও বিতরণ করা হচ্ছে।
ময়মনসিংহের ফুটপাতে ভিড়
গত কয়েক দিন ধরে ঘন কুয়াশার সঙ্গে কনকনে ঠান্ডা আবহাওয়া বিরাজ করছে ময়মনসিংহেও। এতে এ জেলার খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষজন পড়েছেন বিপদে।
ময়মনসিংহ ও এর আশপাশের জেলাগুলোতে দুপুরে সূর্যের দেখা মিললেও রোদের উত্তাপ নেই বললেই চলে।
এ অবস্থায় শহরের ফুটপাতের দোকানগুলোতে শীতের কাপড় কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। শহরের গাঙ্গিনাড়পাড়, বাসাবাড়ি ও ট্রাংপট্টি এলাকার অস্থায়ী দোকানগুলোতে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।
রোববার বিকেল ৪টার দিকে ময়মনসিংহের ট্রাংপট্টি এলাকায় ফুটপাত থেকে শিশুকন্যার জন্য সোয়েটার কিনছিলেন আমেনা বেগম। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘স্বামী ব্যস্ত থাকায় ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে কম দামে জামা কিনতে এসেছি। কারণ হঠাৎ শীত বেড়ে গেছে।’
বাসাবাড়ি ফুটপাত থেকে জ্যাকেট কেনার সময় আব্দুর রহমান নামের এক শ্রমিক বলেন, ‘বিভিন্ন জায়গায় কাজ করতে বাড়ি থেকে ভোরে রওনা দেই। আগে বেশি শীত না লাগলেও, এখন সকাল ও সন্ধ্যার পর থেকেই খুব শীত নামছে।’
গত এক সপ্তাহ ধরেই শীতের কাপড় কিনতে আসা মানুষের ভিড় বেড়েছে বলে জানান বাসাবাড়ির ফুটপাতের দোকানি ইকরামুল হক।
ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফাল্গুনী নন্দী জানান, জেলা পুলিশ ও পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির উদ্যোগে প্রতি বছরই শীতার্তদের মাঝে পর্যাপ্ত শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়। গত শনিবার রাতেও দুই শতাধিক শীতার্ত ও দরিদ্র মানুষকে শীতবস্ত্র দেয়া হয়েছে। শীতের প্রকোপ না কমা পর্যন্ত এমন কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
বিপর্যস্ত চরাঞ্চল
ফরিদপুরকে বলা হয় দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলাগুলোর বাণিজ্যিক শহর। আশপাশের অঞ্চলসহ এই জেলায়ও এখন তীব্র শীত জেঁকে বসেছে।
এতে জেলার চরভদ্রাসন উপজেলার চরাঞ্চলের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বাড়ছে শীতজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব। শিশু ও বৃদ্ধদের মাঝে এখন কোল্ড ডাইরিয়ার ছড়াছড়ি।
ফরিদপুরের পদ্মা নদীর চরাঞ্চলবাসী, নদী পারের বসতি, বিভিন্ন বেড়িবাঁধ ও উন্মুক্ত ফসলি মাঠের পাশে বসবাসকারীরাই শীতে সবচেয়ে বেশি কাবু হয়েছেন।
চরভদ্রাসনের গাজীরটেক ইউনিয়নের বিন্দু ডাঙ্গী গ্রামের লক্ষ্মী রানী জানান, তার স্বামী চিত্ত হালদার পদ্মা নদীর একজন মৎস্যজীবী। গত তিন দিন ধরে তীব্র শীতের কারণে অসুস্থ হয়ে তিনি নদীতে যেতে পারেননি। তাই সংসারে অভাব দেখা দিয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত কয়েক দিনের তীব্র শীতে পদ্মাতীরের ভাঙনকবলিত ও ছিন্নমূল পরিবারগুলোই সবচেয়ে ভুক্তভোগী। এসব পরিবারের শিশু ও বৃদ্ধদের মধ্যে শীতজনিত রোগ লেগেই আছে। দিনের অধিকাংশ সময় রোদ না থাকায় তারা আরও কাবু হয়ে পড়ছেন। কাবু হয়েছে গৃহপালিত পশুও।
আরও পড়ুন:ছোটবেলা থেকে ইচ্ছা ছিল চ্যালেঞ্জিং পেশা বেছে নেওয়ার। সে ইচ্ছা পূরণ হয়েছে। এক দশকের বেশি সময় ধরে ট্রেনচালক হিসেবে কাজ করছেন ফরিদা আক্তার।
লালমনিরহাট রেল বিভাগে একমাত্র নারী ট্রেনচালক (এলএম) ফরিদা। নানা প্রতিকূলতাকে উপেক্ষা করে দায়িত্ব পালনে অনড় ৪ সন্তানের এ জননী।
মাত্র ১০ মাসের সন্তানকে বাড়িতে রেখে নিয়মিত ট্রেন চালাচ্ছেন ফরিদা। তার এ সাহসিকতা ও আত্মবিশ্বাসে মুগ্ধ রেল বিভাগ।
স্বামী টুটুল ও চার সন্তান নিয়ে লালমনিরহাট রেলওয়ে স্টেশনের সরকারি কোয়ার্টারে বসবাস করেন ফরিদা আক্তার। তার বাড়ি দিনাজপুর জেলায়। টুটুল লালমনিরহাটে বেসরকারি চাকরি করেন।
ফরিদা আক্তার বলেন, ‘কাজটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে আমি বেছে নিয়েছি। ছোট থেকে ইচ্ছা ছিল চ্যালেঞ্জিং পেশায় যাব। ২০১৪ সালে ট্রেনচালক হিসেবে রেল বিভাগে যুক্ত হই।’
তিনি বলেন, ‘পরিবার যদি সাপোর্ট না করে, তাহলে আপনি এ পেশায় আসতে পারবেন না। পাশাপাশি একজন পুরুষ ট্রেনচালকেরও সাপোর্ট প্রয়োজন আছে।
‘একজন নারী ট্রেনচালক হিসেবে সমাজে কে কী বলল, সেটা নিয়ে আমি ভাবি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার দুই মেয়ে ও দুই ছেলে। সবচেয়ে ছোট ১০ মাসের মেয়েকে রেখে আমি ট্রেন চালাতে আসি। কাজে বের হলেও তারা কোনোদিন বিরক্ত হয় না।’
লালমনিরহাট রেলওয়ে স্টেশনে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেন ফরিদা আক্তার। চার সন্তানের মা হয়েও তিনি বেছে নেন ট্রেন চালানোর মতো চ্যালেঞ্জিং পেশা।
শুরুর দিকে একটু ভয় পেলেও এখন ট্রেনের স্টেশন থেকে স্টেশনে ছুটে চলার কাজটিকে ভালোবেসে ফেলেছেন ফরিদা। ২০১৪ সালে চাকরিতে যোগ দিয়ে ১০ বছরের বেশি সময় অতিক্রম করে ফেলেছেন এ নারী।
নারী হওয়ায় দায়িত্ব পালনে তাকে নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়, কিন্তু সেসব নিয়ে কখনও দমে যাননি ফরিদা।
তিনি জানান, ট্রেনের যান্ত্রিক ত্রুটি হলে নিজেই তা সমাধানের চেষ্টা করেন।
লালমনিরহাট রেলওয়ের বিভাগীয় লোকো ইনচার্জ কাজী সুমন বলেন, ‘নারীরা এখন আর ঘরের মধ্যে বন্দি নেই। তারা অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে।
‘নারী চালকদের কাজে কোনো গাফিলতি নেই। ফরিদার মতো নারীরা দেখিয়ে দিচ্ছেন, কোনো পেশাই নারীদের জন্য অসম্ভব নয়।’
আরও পড়ুন:মেহেরপুরে অবৈধভাবে ইটভাটা পরিচালনা এবং পরিবেশ দূষণের ঘটনায় ভ্রাম্যমান আদালত চারটি ইটভাটাকে সাড়ে চার লাখ টাকা জরিমানা করেছে।
ইটভাটাগুলোর কার্যক্রম বন্ধেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গাংনী উপজেলার মটমুড়া ইউনিয়নের শুকুরকান্দি গ্রামে মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে ভ্রাম্যমাণ আদালত চারটি অবৈধ ইটভাটায় অভিযান পরিচালনা করে।
অভিযানটি পরিচালনা করেন গাংনী উপজেলা (ভূমি) সহকারী কমিশনার ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাদ্দাম হোসেন ।
অভিযানে দেখা যায়, ভাটাগুলোতে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছিল না এবং জ্বালানি হিসেবে কাঠ ব্যবহার করা হচ্ছিল। এর ফলে পরিবেশের ওপর গুরুতর প্রভাব পড়ছিল।
ইটভাটাগুলোর মধ্যে থ্রি স্টারকে ১ লাখ টাকা, জনতা ব্রিকসকে ১ লাখ, রুপসা ব্রিকসকে ১ লাখ এবং সমতা ব্রিকসকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের সহযোগিতায় ইটভাটাগুলোর চুলা পানি দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ ছাড়া কাঁচা ইটগুলো পানি দিয়ে নষ্ট করে দেওয়া হয়।
ভ্রাম্যমান আদালত জানিয়েছে, অবৈধ ইটভাটা বন্ধে এ ধরনের অভিযান ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।
আরও পড়ুন:ঢাকার সাভারের আলাদিনস পার্কে গত ৭ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সাবেক শিক্ষার্থীদের সংগঠন সিপিআই এক্স স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের আয়োজনে বার্ষিক পিকনিক ও মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এ বছরের অনুষ্ঠানটি ‘আমরা সবাই একসাথে-এখন ও চিরকাল’ প্রতিপাদ্য নিয়ে উদযাপন করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানটি সিপিআই এক্স স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক নাজিমুজ্জামান হাবলুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।
এতে উপস্থিত ছিলেন প্যারাডাইজ ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আল আমিন ভূঁইয়া, কুমিল্লা পলিটেকনিক ছাত্র সংসদের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট গোলাম মোস্তফা, শান্তি নিবাস প্রোপার্টিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও কুমিল্লা পলিটেকনিক ছাত্র সংসদের সাবেক জেনারেল সেক্রেটারি মো. আবুল কাশেম, সিপিআই ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহজাহান কবির প্রিন্স, ইঞ্জিনিয়ার সাদেকুল আমিন, পিকনিক কমিটির সচিব এমরান হোসেনসহ বিভিন্ন ব্যক্তিত্ব।
অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন জাবেদ হোসেন। এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী কামরুজ্জামান কনক, মো. মাসুদ রানা, ফেরদৌস, নেছার পাটোয়ারি, মিশকাত, মো. সাইদুল ইসলাম মিঠু, মো. শিহাব, কামরুল, প্রান্ত, তুষার ও সাইমুনসহ কুমিল্লা পলিটেকনিকের বিভিন্ন ব্যাচের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা।
অনুষ্ঠানের মাঝামাঝি সময়ে দুপুরে যোগ দেন ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব ও কুমিল্লা পলিটেকনিকের ১৯৮৩-১৯৮৪ সেশনের ছাত্র প্রকৌশলী কাজী সাখাওয়াত হোসেন। তাকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।
বিভিন্ন ইভেন্ট ও পুরস্কার বিতরণ
পিকনিকে বিভিন্ন ইভেন্টের প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সবাইকে পুরস্কৃত করা হয়। এ ছাড়াও সাবেক শিক্ষার্থীর সন্তানদের মধ্যে যারা এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়েছেন, তাদের ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। আয়োজক কমিটির সব পৃষ্ঠপোষকদের ক্রেস্ট ও উপহার প্রদান করা হয়।
র্যাফেল ড্রর পুরস্কার বিতরণ
বার্ষিক মিলনমেলার অংশ হিসেবে আয়োজিত র্যাফেল ড্রর পুরস্কারগুলো ছিল আকর্ষণীয়। প্রথম পুরস্কার হিসেবে ওয়াশিং মেশিন, দ্বিতীয় পুরস্কার হিসেবে ৪৩ ইঞ্চি 4K Smart টিভি, তৃতীয় পুরস্কার হিসেবে অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন, চতুর্থ পুরস্কার হিসেবে ইলেকট্রিক ওভেন এবং আরও ২০টি আকর্ষণীয় পুরস্কার ছিল। র্যাফেল ড্র লটারি টিকিটের মূল্য ছিল ১০০ টাকা।
নতুন কার্যকরী কমিটি ঘোষণা
উৎসবের শেষে নির্বাচন উপকমিটি প্রস্তাবিত ২০২৫-২০২৬ সালের ৪১ সদস্যের কার্যকরী কমিটি ও সাত সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদের নাম ঘোষণা করা হয়।
নতুন কার্যকরী কমিটির সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হন রেজাউল করিম রেজা। এ ছাড়া সাধারণ সম্পাদক হিসেবে গোলাম মোস্তফা (ভিপি) , যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মো. আবুল কাশেম, সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে শাহজাহান কবির প্রিন্স এবং অর্থ সম্পাদক হিসেবে মাসুদ রানা নির্বাচিত হন।
আরও পড়ুন:ঠাকুরগাঁওয়ে বিশেষ অভিযানে সোহেল রানা (৩৩) নামের এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ।
সদর থানা পুলিশ পৌর শহরের গোবিন্দনগরের বিসিক এলাকা থেকে সোমবার ভোররাতে তাকে আটক করে।
পুলিশের দাবি, ওই যুবকের কাছ থেকে অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
আটককৃত সোহেল রানা ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহমানপুর ইউনিয়নের পল্লী বিদ্যুৎ বাজারে ডাচ-বাংলা এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে কর্মরত।
পুলিশ জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে একটি বিশেষ টিম বাড়িতে অভিযান চালিয়ে কক্ষের বিছানার নিচ থেকে বিদেশি পিস্তল উদ্ধার করে।
আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহীদুর রহমান বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা জানতে পারি, তার বাড়িতে অবৈধ অস্ত্র রয়েছে। অভিযান পরিচালনাকালে তার স্বয়ং কক্ষের বিছানার নিচে একটি অস্ত্র পাওয়া গেছে। প্রাথমিকভাবে এটি বিদেশি পিস্তল মনে হয়েছে।
‘একজনকে আটক করে নিয়ে আসা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে প্রয়োজনীয় আইনানুগ কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
এদিকে যুবকের আটক হওয়া নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
ঠাকুরগাঁও পুলিশের অভিযানের বিষয় তুলে ধরে সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে প্রেস ব্রিফিং করেন পুলিশ সুপার (এসপি) শেখ জাহিদুল ইসলাম।
তিনি জানান, আটক যুবকের নামে অস্ত্র আইনে মামলা প্রক্রিয়াধীন। তার কাছ থেকে পাওয়া বন্দুকে কোনো গুলি ছিল না।
প্রাথমিকভাবে আসামি কোনো স্বীকারোক্তি দিয়েছেন কি না কিংবা তার নামে আগে কোনো মামলা আছে কি না জানতে চাইলে এসপি আরও বলেন, ‘তদন্ত শেষে পুরো বিষয়টি আবারও জানানো হবে। তবে আগের কোনো মামলা তার বিরুদ্ধে নেই।’
আরও পড়ুন:জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়েছে রবিবার, যা চলবে ১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
সকাল ৯টায় শুরু হয়ে মোট পাঁচ শিফটে ‘ডি’ ইউনিটের ছাত্রীদের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
পরের দিন সোমবার প্রথম চার শিফটে ‘ডি’ ইউনিটের ছাত্রদের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
তৃতীয় দিন মঙ্গলবার প্রথম দুই শিফটে ‘ই’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম শিফটে ছাত্রীদের এবং দ্বিতীয় শিফটে ছাত্রদের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। একই দিন তৃতীয় শিফট থেকে পঞ্চম শিফট পর্যন্ত ‘এ’ ইউনিটের ছাত্রীদের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
এ ছাড়াও বুধবার পাঁচ শিফটে ‘এ’ ইউনিটের ছাত্রদের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। তারপর বৃহস্পতিবার ছয় শিফটে ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে প্রথম তিন শিফটে ছাত্রীদের এবং পরবর্তী তিন শিফটে ছাত্রদের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
ভর্তি পরীক্ষার শেষ দিন সোমবার প্রথম শিফটে ‘সি১’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে এবং পরের তিন শিফটে ‘বি’ ইউনিটের অন্তর্ভুক্ত সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ভর্তি পরীক্ষা হবে। এর মধ্যে প্রথম দুই শিফটে ছাত্রী এবং তৃতীয় শিফটে ছাত্রদের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
ভর্তি পরীক্ষা উপলক্ষে শনিবার বিকেল পাঁচটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন প্রশাসনিক ভবনে সংবাদ সম্মেলন করে ভর্তি পরীক্ষা শৃঙ্খলা রক্ষা ও নিরাপত্তা কমিটির আহ্বায়ক ও প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম।
তিনি বলেন, ‘পরীক্ষা চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সুষ্ঠু ও স্বাভাবিক রাখতে ভর্তি পরীক্ষা শৃঙ্খলা রক্ষা ও নিরাপত্তা কমিটি ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে।’
সার্বিক নিরাপত্তা দিতে প্রক্টরিয়াল বডির সঙ্গে রোভার স্কাউট সদস্য, সার্বিক শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা রক্ষায় ১৫০ জন পোশাকধারী সশস্ত্র ও সাদা পোশাকধারী পুলিশ ফোর্স এবং অতিরিক্ত ৬০ জন আনসার সদস্য ক্যাম্পাসের বিভিন্ন পয়েন্টে দায়িত্ব পালন করবেন।
ভর্তিচ্ছুদের সহায়তায় বিভিন্ন ভবনে ১২০ জন বিএনসিসি ও রোভার স্কাউট সদস্য শৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকবেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটক (ডেইরি গেট), জয় বাংলা ফটক (প্রান্তিক গেট) ও বিশমাইল ফটক সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে ট্রাফিক পুলিশের ব্যবস্থা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পরীক্ষা চলাকালীন বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা (সিসিটিভি) চালু রাখা হয়েছে।
ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে রাতে পুলিশ টহলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ নামের অভিযানে গাজীপুরে শনিবার রাত থেকে রবিবার সকাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের সমর্থক সন্দেহে ৪০ জনকে আটক করেছে যৌথ বাহিনী।
গাজীপুরের পুলিশ সুপার চৌধুরী জাবের সাদেক জানান, অভিযান পরিচালনা শেষে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ৪০ জনকে আটক করা হয়েছে।
জেলায় শুক্রবার রাতে শিক্ষার্থী ও বেসামরিক নাগরিকদের ওপর সহিংস হামলার পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও দোষীদের বিচারের আওতায় আনতে অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেয়।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে গাজীপুরসহ সারা দেশে শনিবার থেকে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করবে যৌথ বাহিনী, যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলোর সমন্বয়ে শনিবার একটি সভায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
গাজীপুরে আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে শুক্রবার রাতে ছাত্র-জনতার ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় এ অভিযান শুরু হবে বলে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
সভা সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সংশ্লিষ্ট এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার পাশাপাশি সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনতে যৌথ বাহিনীর সমন্বয়ে অপারেশন ডেভিল হান্ট পরিচালনা করা হবে। শনিবার থেকেই গাজীপুর এলাকাসহ সারা দেশে এই অভিযান শুরু হবে।
এ বিষয়ে রবিবার প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে বিস্তারিত জানানো হবে।
এদিকে গাজীপুরে মারধরে আহত সাতজনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, যাদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য