জনবসতি থেকে কিছুটা দূরে নির্জন এলাকায় গেলেই চোখে পড়বে ছোট ছোট সাদা রঙের ঢিবি। দেখতে সুন্দর হলেও মাটি, ইট ও কাঠের গুঁড়া দিয়ে বানানো এসব ঢিবি মূলত বন উজাড়ের মাধ্যম।
স্থানীয়রা এটিকে চুলা বা চুল্লি বলেই চেনে। নির্বিচারে কেটে আনা মণকে মণ গাছ এসব চুল্লিতে পুড়িয়ে বানানো হয় কয়লা। আর নির্গত ধোঁয়ার কুণ্ডলী দূষণ ছড়াচ্ছে পরিবেশে। পাশাপাশি হুমকিতে পড়ছে জনজীবন ও জৈববৈচিত্র্য।
এসব চুল্লির মালিকরা স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় প্রতিবাদ করার সাহস পায় না কেউই। জনপ্রতিনিধিদেরও সুর নরম। তবে বন বিভাগের পক্ষ থেকে দ্রুত এসব চুল্লি ভেঙে ফেলার আশ্বাস দেয়া হয়েছে।
নিউজবাংলার অনুসন্ধানে ঢাকার ধামরাই উপজেলার দুটি ইউনিয়নে এমন ২০টির মতো চুল্লির সন্ধান পাওয়া গেছে। বনের কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরির এমন প্রক্রিয়া অনেকের কাছে নতুন মনে হলেও এসব এলাকার বাসিন্দাদের কাছে পুরোনো।
বাইশাকান্দা ইউনিয়নের গোলাকান্দা গ্রামে আটটি চুল্লির মালিক হারুন অর রশিদ। আর বালিয়া ইউনিয়নের বাস্তা গ্রামে আরও ছয়টি চুল্লির মালিক নাহিদ রানা ও মো. ইমরান।
দক্ষিণ গাঁওতারা এলাকায় দুটি চুল্লির মালিক নুরুল ইসলাম। চুল্লিগুলোর সামনে কেটে রাখা হয়েছে কাঠের স্তূপ। প্রতিটি চুল্লিতে ২০০ থেকে ৩০০ মণ কাঠ দিয়ে আগুন দেয়ার পর খোলা অংশটি বন্ধ করে দেয়া হয়। এরপর টানা প্রায় এক সপ্তাহ ধরে কাঠ পোড়ানো শেষ হলে কয়লা বের করা হয়। একেকটি চুল্লি থেকে প্রায় ৫০ হাজার টাকার কয়লা পাওয়া যায়।
স্থানীয়রা জানান, যখন কাঠ পোড়ানো শুরু হয়, তখন চুল্লি থেকে ধোঁয়ার কুণ্ডলী বের হতে থাকে। এতে আশপাশের পুরো এলাকা আচ্ছন্ন হয়ে যায়। সে সময় রাস্তা দিয়ে চলতে গেলে চোখ জ্বালাপোড়া করে, শ্বাসকষ্টও দেখা দেয়।
ধামরাই পরিবেশ আন্দোলনের আহ্বায়ক সিয়াম সারোয়ার জামিল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এসব কয়লা কারখানা পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরূপ। একে তো নির্বিচারে গাছ কেটে বনভূমি উজাড় করে এখানে পোড়ানো হচ্ছে, অন্যদিকে ধোঁয়া পরিবেশে বিরূপ প্রভাব ফেলছে। এ বিষয়ে প্রশাসনকে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’
বালিয়া ইউনিয়নের গ্রামের চুল্লির মালিক নাহিদ রানার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমারডা অবৈধ। সব অবৈধ ব্যবসা এগনা। যেমনে চালাইতে পারি চালাই। না পারলে বন্ধ থাকব।’
নাহিদের সঙ্গী আরেক মালিক মো. ইমরান বলেন, ‘ওহানে যা আছে আমাগো দুইজনেরই। পাঁচটা চুলা আছে। কতগুলা কয়লা হয় হিসাব নাই। একেক সময় একেক রকম বাইর হয়। কাঠ এইগলা বিভিন্ন জায়গা থাইকা ব্যাপারী আইসা দিয়া যায়।’
আর্থিক সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে এই অবৈধ ব্যবসা চালাচ্ছেন এমন প্রশ্নে বলেন, ‘ওইসব ব্যাপারে আমি কিছু বলতে পারলাম না। ওইগলা সব আমার পার্টনার নাহিদ জানে।’
দক্ষিণ গাঁওতারা এলাকার নুরুল ইসলাম নামে আরেকজন চুল্লির মালিক বলেন, ‘লিখিত কোনো অনুমতি নেই। অনুমতি সবারই মুখে মুখে আছে। পরিবেশের ক্ষতি তো একটু হইবই।’
বাইশাকান্দা ইউনিয়নের গোলাকান্দা গ্রামে হারুন অর রশিদের চুল্লির তথ্য সংগ্রহের সময় তার লোকজন বিদ্রূপ করে বলেন, ‘ছবি তুইলা নিয়া যান গা। আপনারা নিউজ করলে কী হইব?’
তবে চুল্লির মালিক হারুন অর রশিদকে অনেকবার ফোন করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
বালিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মজিবর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এটার বিরুদ্ধে ওই গ্রামের লোকজনকে আইডিয়া দিছি। তারা এসবের বিরুদ্ধে গণস্বাক্ষরও নিয়েছে। ওরা যারা (চুল্লির মালিক) কাজ করতেছে ওরা আমাদেরই লোক। আমাদেরই কর্মী। এই জন্য চাচ্ছি অন্যদের মাধ্যমে জিনিসগুলা বন্ধ করে দেয়া যায় কি না।’
ধামরাই উপজেলা বন কর্মকর্তা মোতালেব আল মামুন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দুই বছর আগে আমরা ভাইঙা দিয়েছিলাম। পরে আমার বদলি হওয়ায় আমি চলে গিয়েছিলাম। সম্প্রতি আমি আবার এখানে জয়েন করেছি। আমি ইউএনও স্যারকে জানিয়ে এটা ভেঙে দেব। আগামী সপ্তাহে ইনশাল্লাহ আমরা ওটা ভেঙে দেয়ার ব্যবস্থা করব।’
বিএনপির ডাকা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ শুরুর আগের রাতে দিনাজপুরের কাহরোল উপজেলায় একটি ধানবোঝাই করা চলন্ত ট্রাকে পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করেছে দুর্বৃত্তরা। এতে ট্রাকটি আংশিক পুড়ে গেলেও আগুনে দগ্ধ হয়েছেন ট্রাকটির চালক।
দিনাজপুর-পঞ্চগড় মহাসড়কের কাহরোল উপজেলার রামপুরা বাজারে শনিবার রাত ২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে কাহারোল থানার ওসি ফারুকুল ইসলাম জানান, পঞ্চগড়ের বোদা থেকে একটি ট্রাক দিনাজপুর শহরের দিকে আসছিল। শনিবার রাত ২টার দিকে পথিমধ্যে কাহারোল উপজেলার রামপুরা বাজারে পৌঁছলে একটি মোটরসাইকেলে তিনজন ব্যক্তি হেলমেট পরে এসে ট্রাকের সামনে ঢিল ছুড়ে। ওই সময় ট্রাকটির গতি একটু কমালে তারা পেট্রলবোমা মেরে পালিয়ে যায়। ঢিলে ট্রাকের হেলপার মফিজুল ইসলাম ও পেট্রলবোমার আগুনে চালক আনিস রহমানের ডান পা কিছুটা পুড়ে গেছে।
তিনি আরও জানান, খবর পেয়ে কাহারোল ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ট্রাকের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। পেট্রলবোমার আগুনে ট্রাকটির সামনের কেবিন ও কিছু ধান পুড়ে গেছে। আহত চালক ও হেলপারকে কাহারোল উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
কাহারোল থানার ওসি ফারুকুল ইসলাম জানান, দুর্বৃত্তদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ময়মনসিংহের ছয়টি সংসদীয় আসনের প্রার্থীদের মধ্যে ১১ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। শনিবার যাচাই বাছাইয়ে বিভিন্ন ত্রুটি ধরা পড়ায় মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়।
মনোনয়ন বাতিল হওয়া সবাই স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন। তারা হলেন- ময়মনসিংহ-১ (হালুয়াঘাট-ধোবাউড়া) সংসদীয় আসনের ফারুক আহমেদ খান, ময়মনসিংহ-২ (ফুলপুর-তারাকান্দা) আসনের মোহাম্মদ আবু বক্কর ছিদ্দিক, ময়মনসিংহ-৩ (গৌরীপুর) আসনে এ.কে.এম আবদুর রফিক ও মোশাররফ হোসেন আজাদ, ময়মনসিংহ-৫ (মুক্তাগাছা) আসনের বদর উদ্দিন আহমেদ, মো. নজরুল ইসলাম ও মো. ফয়জুর রহমান, ময়মনসিংহ-৬ (ফুলবাড়িয়া) আসনের ডা. খন্দকার রফিকুল ইসলাম, মো. আবদুল মান্নান আকন্দ, মো. জাহাঙ্গীর আলম খান ও সেলিমা বেগম।
সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার মো. সফিকুল ইসলাম শনিবার রাতে নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক মো. মোস্তাফিজার রহমানের নেতৃত্বে ১১টি সংসদীয় আসনের মধ্যে প্রথম দিন ছয়টি আসনের প্রার্থীদের যাচাই-বাছাই অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন ত্রুটি ধরা পড়ায় ওই ১১ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। রোববার বাকি আসনগুলোর প্রার্থীদের যাচাই-বাছাই শেষ করা হবে।’
এর আগে ৩০ নভেম্বর মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ছিল। ময়মনসিংহের ১১টি আসনে মোট ১০৬ প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের ১১, দুই সংসদ সদস্যসহ আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র ২৯, জাতীয় পার্টির ১১, জাসদের ৭, তৃণমূল বিএনপির ৬, বিএনপির সাবেক দুই এমপিসহ স্বতন্ত্র ৯ এবং অন্য দলের ৩৪ প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিয়েছেন।
নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হবে ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর, মনোনয়ন আপিল ও নিষ্পত্তি ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৭ ডিসেম্বর। প্রতীক বরাদ্দ হবে ১৮ ডিসেম্বর এবং নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা ১৮ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত চলবে। ৭ জানুয়ারি ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
শেরপুরে আলাদা সড়ক দুর্ঘটনায় তিনজন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছে আরও একজন।
জেলার শ্রীবরদীর ষাটকাকড়া ও নবীনগরে শনিবার সন্ধ্যায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো তিনজন হলেন শ্রীবরদী উপজেলার রানীশিমুল সিংগার ভিটার ২১ বছর বয়সী লাভলু, ঝিনাইগাতী উপজেলার তারাগাও বটতলার ২৩ বছর বয়সী মেহেদী এবং পৌরশহরের নওহাটার বাসিন্দা ফারুক হোসেন। তিনি গাজিরখামার ইউনিয়ন ভূমি অফিসের নায়েব।
শ্রীবরদী থানার ওসি কাইয়ুম খান সিদ্দিক জানান, শনিবার সন্ধ্যায় লাভলু ও মেহেদীসহ তিনজন একই মোটরসাইকেলে বাড়ি থেকে বের হয়। মোটরসাইকেলটি ষাটকাকড়া এলাকায় একটি মোড় ঘুরার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তালগাছের সঙ্গে মোটরসাইকেলটির ধাক্কা লাগে। এতে ঘটনাস্থলেই লাভলু ও মেহেদী নিহত হন।
তিনি আরও জানান, আহত হয় আবু হানিফ নামে এক শিশু। শিশুটিকে স্থানীয়রা আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে শ্রীবরদী উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করে। শিশুটি এখন শ্রীবরদী উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
শ্রীবরদী থানার ওসি জানান, দুজনের মরদেহ ও মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।
শেরপুর সদর থানার ওসি বছির আহমেদ বাদল জানান, শনিবার সন্ধ্যায় জেলা সদরের ভাতশালা থেকে মোটরসাইকেলে শহরের নওহাটার বাসায় ফেরার পথে নবীনগরে এক ইটবোঝাই ট্রলি মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দেয়। এতে ফারুক হোসেন গুরুতর আহত হন। তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রথমে শেরপুর জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে। ময়মনসিংহ নেয়ার পথেই শনিবার রাত ১০টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
তিনি আরও জানান, এ বিষয়ে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন:নওগাঁয় এক কলেজ ছাত্রী নিহতের মামলায় প্রেমিক ও তার বাবাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
নওগাঁ সদর মডেল থানার ওসি ফয়সাল বিন আহসান শনিবার সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এর আগে গ্রেপ্তার দুজনকে শুক্রবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
তিনি জানান, নওগাঁর সদর উপজেলার তিলকপুর ইউনিয়নের নারায়ণপুর গ্রামের তুলশীগঙ্গা নদীর বেড়িবাঁধের পাশ থেকে গত মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে ২২ বছর বয়সী তাবাসসুম আক্তার রিংকু নামের এক কলেজ ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত তাবাসুম আক্তার রিংকু জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর উপজেলার রায়কালি ইউনিয়নের পুন্ডুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় রায়কালী টেকনিক্যাল বিএম কলেজের এইচএসসি ভোকেশনাল ব্যাচের ছাত্রী ছিলেন।
এ ঘটনার পর দিন দুপুরে নিহতের মা শাহিনা বেগম বাদি হয়ে নওগাঁ সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
মামলার চারদিন পর থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর উপজেলার মাটিয়াকুরি গ্রামের আলাউদ্দীনের ছেলে নাঈম হোসেন ও তার বাবা আলাউদ্দীন আলীকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তার দুজনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বলে জানান ওসি। এ সম্পর্কে তিনি জানান, নিহত রিংকু ও নাঈমের দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তাদের প্রেমে পরিবারে বাঁধা হয়ে দাঁড়ালে গত ২৭ নভেম্বর সকালে তারা কোর্ট ম্যারেজ করার জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়ে একটি অটোরিকশা করে রাজশাহী কোর্টের উদ্দেশ্যে রওনা হয়।
দুজনের মধ্যে নওগাঁ কোর্টে অথবা রাজশাহীতে কোর্টে বিয়ে করা নিয়ে তর্ক-বিতর্ক আর ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে সদর উপজেলার চকগৌড়ি মেইন রাস্তায় অটোরিকশা থেকে রিংকু পড়ে যায়। এতে মাথা ও হাত পায়ে গুরুতর যখম হলে তাকে বাঁচানোর জন্য নাঈম দ্রুত মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তার অবস্থা খারাপ দেখে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন।
নাঈম ভয় পেয়ে তার বাবা আলাউদ্দীনের সঙ্গে আলোচনা করলে তার বাবা রাজশাহী ইসলামী ব্যাংক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেয় তাকে। এরপর নাঈম দ্রুত একটি অ্যাম্বুলেন্স যোগে রিংকুকে রাজশাহী ইসলামী ব্যাংক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন।
নাঈম ও তার বাবা ভয় পেয়ে রিংকুর মরদেহ রাতের আঁধারে তিলকপুর ইউনিয়নের নারায়ণপুর গ্রামের তুলশীগঙ্গা নদীর বেড়িবাঁধের পাশে ফেলে পালিয়ে যায়।
নওগাঁ সদর মডেল থানার ওসি ফয়সাল বিন আহসান বলেন, ‘এ ঘটনায় দুই জায়গায় অভিযান চালিয়ে বাবা ও ছেলেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আদালতে তারা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন। আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’
আরও পড়ুন:পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ইউএনওর গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে এলজিইডির এক প্রকৌশলী নিহত হয়েছেন; আহত হয়েছেন ইউএনওসহ তিনজন কর্মকর্তা।
জেলার সদর উপজেলার সাতমেড়া ইউনিয়নের চেকরমারী এলাকার অমরখানা চাওয়াই সেতু সংলগ্ন পঞ্চগড়-বাংলাবান্ধা জাতীয় মহাসড়কে শনিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো আবু সাঈদ তেঁতুলিয়া উপজেলা এলজিইডির সাবেক উপজেলা প্রকৌশলী ও বর্তমানে ঠাকুরগাঁও পীরগঞ্জ উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি দিনাজপুর জেলার কাহারোল উপজেলায়।
আহত তিনজন হলেন তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফজলে রাব্বি, উপজেলা সমাজসেবা অফিসার আল আমিন ও আইসিটি সহকারী প্রোগ্রামার নবিউল করিম সরকার।
সদর থানার ওসি প্রদীপ কুমার রায় এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে তিনি জানান, শনিবার গভীর রাতে নিজেই সরকারি গাড়ি নিয়ে তিন বন্ধুকে সঙ্গে করে পঞ্চগড়ে যাচ্ছিলেন তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফজলে রাব্বি। ওই সময় অমরখানা সেতু সংলগ্ন চেকরমারী এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাড়িটি সড়কের পাশে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে খাদে পড়ে যায় এবং ঘটনাস্থলে প্রকৌশলী আবু সাঈদ নিহত হন।
পঞ্চগড় ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা আহতদের পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করান। উপজেলা সমাজসেবা অফিসার আল আমিনের অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম ও পুলিশ সুপার এসএম সিরাজুল হুদা রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
গাড়িটি উদ্ধারের চেষ্টা চলছে বলে জানান ওসি প্রদীপ কুমার রায়।
আরও পড়ুন:কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলায় ব্রহ্মপুত্র নদে ধরা পড়েছে ৮৫ কেজি ওজনের বাঘাইড় মাছ, এটি এক লাখ দুই হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে।
সীমান্তবর্তী ইউনিয়ন সাহেবের আলগার ব্রহ্মপুত্র নদে শনিবার দুপুরে ওই ইউনিয়নের কাজিয়ার চরের জেলে মহুবর রহমানের জালে মাছটি ধরা পড়ে।
পরে শনিবার বিকেলে জেলে মহুবর এ বাঘাইড় মাছটি বিক্রির জন্য উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের বাজারে নিয়ে এলে মাছ ব্যবসায়ী মন্টু মাছটি কিনে নেন।
জেলে মহুবর রহমান বলেন, ‘নিয়মিত নদ-নদীতে মাছ ধরে সংসার চলে। শনিবার মাছ ধরতে গিয়ে জালের মধ্যে একটি বিশালাকৃতির বাঘাইড় মাছ আটকে যায়। ওই সময় অনেক কষ্টে কয়েকজনসহ মাছটি ধরে ফেলি। বিকেলে হাতিয়া বাজারে মন্টুর কাছে এক হাজার ২০০ টাকা কেজি দরে মাছটা বিক্রি করছি।’
মাছ ব্যবসায়ী মন্টু বলেন, ‘মাছটি এক লাখ দুই হাজার টাকা দিয়ে ক্রয় করে নিই। পরে ঢাকার এক ব্যবসায়ীর কাছে এক হাজার ৩০০ টাকা কেজি দরে মাছটি বিক্রি করি।’
কুড়িগ্রাম জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মুক্তাদির খান বলেন, ‘বর্তমানে ব্রহ্মপুত্র নদে ছোট-বড় বিভিন্ন আকারের বাঘাইড় মাছ ধরা পড়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে।’
আরও পড়ুন:নওগাঁর মহাদেবপুরে একটি ট্রাকে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেছে।
উপজেলার নওগাঁ-রাজশাহী মহাসড়কে শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে হাট চকগৌরি এলাকায় ট্রাকটিতে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এতে ইঞ্জিনসহ ট্রাকটির সামনের অংশ পুড়ে গেছে।
মহাদেবপুর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের দলপ্রধান আশরাফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘ট্রাকটি হাট চকগৌরি এলাকার একটি সেতুর পশ্চিম পাশে দাঁড়িয়ে ছিল। ট্রাকে কোনো মালামাল ছিল না। দুর্বৃত্তরা রাত সাড়ে ১০টার দিকে ট্রাকটির সামনের অংশে আগুন ধরিয়ে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে মহাদেবপুর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই স্থানীয়রা আগুন নিভিয়ে ফেলেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আগুনে ট্রাকের ইঞ্জিনসহ সামনের দিকে বেশ কিছু অংশ পুড়ে গেছে। এ ঘটনায় কেউ হতাহত হননি।’
বিষয়টি নিয়ে কথা হলে মহাদেবপুর থানার ওসি মোজাফফর হোসেন বলেন, ‘আগুনে ট্রাকের সামনের অংশ পুড়ে গেছে। আমাদের ধারণা, অবরোধ সমর্থকরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে ঘটনায় জড়িতদের আটক করা হবে। কারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সে বিষয়ে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য