পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী শ্রী সাইফুদ্দিন আবদুল্লাহর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন।
বৃহস্পতিবার এই টেলিফোন আলাপের সময় তারা পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে মতবিনিময় করেন বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন চলতি বছর বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে মালয়েশিয়ান পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানান এবং দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার বর্তমান স্তরে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের প্রশংসা করে সাইফুদ্দিন আবদুল্লাহ সম্পর্কটিকে ‘কৌশলগত পর্যায়ে’ উন্নীত করার ওপর জোর দেন।
টেলিফোন আলাপে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের বিষয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের প্রশংসা করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন অর্থনীতির সব সেক্টরে বাংলাদেশি কর্মীদের নিয়োগের সুযোগ উন্মুক্ত করার বিষয়ে মালয়েশিয়া সরকারের সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেন।
তিনি নিরাপদ ও নিয়মিত অভিবাসন চ্যানেলের মাধ্যমে আরও কর্মী পাঠানোর মাধ্যমে মালয়েশিয়ার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও কর্মকাণ্ডে অবদান রাখতে বাংলাদেশ সরকারের প্রস্তুতির কথা জানান। মন্ত্রী মোমেন মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বাংলাদেশ থেকে তথ্যপ্রযুক্তি-প্রশিক্ষিত জনশক্তি নিয়োগের বিষয়টি বিবেচনা করার অনুরোধ জানান।
সাইফুদ্দিন আবদুল্লাহ দুই দেশের আইসিটি কর্তৃপক্ষের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার মাধ্যমে ডিজিটাল অর্থনীতির ক্ষেত্রে সহযোগিতা সম্প্রসারণের ওপর জোর দেন।
রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় সব ক্ষেত্রে মালয়েশিয়ার সহায়ক ভূমিকার প্রশংসা করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে দ্রুত প্রত্যাবাসন শুরু করার জন্য মালয়েশিয়াকে অব্যাহত সমর্থনের অনুরোধ জানান। মোমেন মালয়েশিয়া সরকারকে তাদের অর্ধ মিলিয়নেরও বেশি করোনার টিকা অনুদানের জন্য ধন্যবাদ জানান।
বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ভূমিকার প্রশংসা করে সাইফুদ্দিন বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে ১১ লাখেরও বেশি বাস্তুচ্যুত মানুষকে আশ্রয় দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশাল মানবিক পদক্ষেপের জন্য সমগ্র বিশ্ব কৃতজ্ঞ।’
মোমেন বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও বৈশ্বিক ফোরামে বাংলাদেশি প্রার্থিতার পক্ষে মালয়েশিয়ার সমর্থন চান। মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পারস্পরিক সুবিধার সময়ে বাংলাদেশ সফরে সম্মত হন। এ সময় দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
আরও পড়ুন:হজ ফ্লাইট ৩১ মে উদ্বোধনের কথা থাকলেও তা থেকে সরে গিয়ে ৫ জুন প্রথম এবং সেদিন থেকেই নিয়মিত ফ্লাইটের কথা জানিয়েছেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান।
সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে মঙ্গলবার তিনি এ কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘আগামী ৫ জুন থেকে ফ্লাইট শুরু করতে আমরা বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয়ে পত্র দিয়েছি। ৩১ মের স্লট স্থানান্তর করে ৫ জুনে স্থানান্তর করা হয়েছে।’
গতকাল সোমবারও তিনি বলেছিলেন, ৩১ মে থেকে তারা হজের ফ্লাইট শুরু করবেন। সেদিন উদ্বোধনী একটা ফ্লাইট যাবে, তারপর নিয়মিত ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে ৫ জুন থেকে।
বিষয়টি সবিস্তারে তুলে ধরে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান বলেন, ‘রুট টু মক্কা ইনিশিয়েটিভের আওতায় ২০২২ সালের পবিত্র হজে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সৌদি আরবগামী শতভাগ হজযাত্রীর সৌদি আরবের ইমিগ্রেশন ঢাকায় সম্পন্ন হওয়ার সিদ্ধান্ত রয়েছে। এ বিষয়ে সৌদি কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনার প্রেক্ষিতে আগামী ৩১ মে প্রথম হজ ফ্লাইট পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। এ লক্ষ্যে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় সকল ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।
‘কিন্তু গতকাল রুট টু মক্কা ইনিশিয়েটিভ বাস্তবায়নকারী সৌদি কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে এসে জানান যে, রুট টু মক্কা ইনিশিয়েটিভের জন্য ৪০ জনের সৌদি টিম আগামী ২ জুনের আগে ঢাকায় এসে পৌঁছাতে পারবে না। প্রি-এরাইভাল ইমিগ্রেশন কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় ডিভাইস বা যন্ত্রপাতি এখনো ঢাকায় এসে পৌঁছেনি। এ সকল ডিভাইস বা যন্ত্রপাতি সৌদি টিমের সঙ্গে ঢাকায় আসবে। এগুলো শাহজালালে ইনস্টল করতে কিছু সময় লাগবে। আগের সিদ্ধান্ত অনুসারে ৩১ মে'র প্রথম হজ ফ্লাইট শুরু করা হলে বাংলাদেশের হজযাত্রীদের প্রি-এরাইভাল ইমিগ্রেশন ঢাকায় সম্পন্ন করা সম্ভব হবে না।’
তিনি বলেন, ‘সৌদি বাংলাদেশ দ্বি-পাক্ষিক হজচুক্তি অনুসারে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে হজে গমণকারী বাংলাদেশের সকল হজযাত্রী ডেডিকেটেড হজ ফ্লাইটে সৌদি আরব গমণ করবেন এবং একই সাথে ঢাকায় তাঁদের প্রি-এরাইভাল ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করা হবে।
‘এ অবস্থায় ৩১ তারিখের পরিবর্তে আগামী ৫ জুন থেকে হজ ফ্লাইট শুরু করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়কে ইতোমধ্যে চিঠির মাধ্যমে অনুরোধ করা হয়েছে।’
প্রস্তুত বিমান
৫ জুন থেকে হজ ফ্লাইট শুরু করতে নিজেদের প্রস্তুতির কথাও জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান চলাচল প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী।
মঙ্গলবার তিনি বলেন, ‘৫ জুন হজ ফ্লাইট চালু হলেও আমরা প্রস্তুত। আমাদের প্রস্তুতি আছে। যদি ৫ তারিখ থেকে হয় করতে পারব। ৩১ মের জন্যও আমরা প্রস্তুত আছি। আমাদের এন্ড থেকে আমরা প্রস্তুত।’
স্বাভাবিক সময়ে প্রতি বছর সারা বিশ্বের ২০ থেকে ২৫ লাখ মুসল্লি পবিত্র হজ পালনের সুযোগ পেয়ে থাকেন। কিন্তু করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে গত দুই বছর সৌদি আরবের বাইরের কেউ হজ করার সুযোগ পাননি। পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় সৌদি সরকার এবার সারা বিশ্বের ১০ লাখ মানুষকে হজ পালনের অনুমতি দিচ্ছে।
বাংলাদেশ থেকে এ বছর সাড়ে ৫৭ হাজার মুসল্লি হজব্রত পালনে সৌদি আরবে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় যাবেন ৪ হাজার মুসল্লি। বাকিরা যাবেন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়।
এবার সরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীদের জন্য দুটি প্যাকেজ ঘোষণা করে ধর্ম মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে সর্বোচ্চ প্যাকেজটি হলো ৫ লাখ ২৭ হাজার ৩৪০ টাকা। সর্বনিম্নটি ৪ লাখ ৬২ হাজার ১৫০ টাকার।
বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ পালনে জনপ্রতি ন্যূনতম খরচ ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৭৪৪ টাকা নির্ধারণ করেছে হজ এজেন্সিস অফ বাংলাদেশ (হাব)।
এবার হজ হতে পারে ৮ জুলাই (চাঁদ দেখা সাপেক্ষে)। সৌদি আরবের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী ৫৭ হাজার হজযাত্রীর অর্ধেক বহন করবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। বাকি অর্ধেক করবে সৌদি রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থা সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইনস ও ফ্লাই নাস।
রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠান বিমান এ বছর ৭৫টি ডেডিকেটেড ফ্লাইটের মাধ্যমে ৩১ হাজার যাত্রী বহন করবে। যাত্রী পরিবহনে বিগত বছরগুলোর মতোই বহরে থাকা বোয়িং ৭৭৭ উড়োজাহাজ ব্যবহার করা হবে।
আরও পড়ুন:গত তিন দশকের মধ্যে ফ্রান্সে নারী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ায় এলিজাবেথ বর্নিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেছেন, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিতে তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে প্রস্তুত রয়েছেন তিনি।
ফ্রান্সের নতুন প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়ে সোমবার পাঠানো বার্তায় এ কথা উল্লেখ করেন সরকারপ্রধান। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
অভিনন্দন বার্তায় শেখ হাসিনা বলেন, ‘রাজনীতিবিদ ও প্রশাসক হিসেবে আপনার অভিজ্ঞতা আপনাকে আপনার দায়িত্ব কার্যকরভাবে পালন করতে সাহায্য করবে। প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাঁখোর দ্বিতীয় মেয়াদে আপনার অবদান গুরুত্বপূর্ণ হবে।’
অর্ধশতাব্দী আগে বাংলাদেশ-ফ্রান্স কূটনৈতিক সম্পর্ক তৈরির পর থেকে, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, পানি, উন্নয়ন, বিমান চলাচল, জলবায়ু কর্মকাণ্ড এবং জ্ঞান আদান-প্রদানে গতিশীল সহযোগিতার মাধ্যমে জোরদার হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘অংশীদারত্বের সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিতে আপনার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
ফ্রান্সের নতুন প্রধানমন্ত্রীর সুস্বাস্থ্য ও সাফল্য কামনার পাশাপাশি দেশটির জনগণের শান্তি, অগ্রগতি এবং সমৃদ্ধি কামনা করেন শেখ হাসিনা।
আরও পড়ুন:উত্তাল পদ্মা নদীর বুকে গড়ে তোলা বহুল প্রতীক্ষিত সেতুর নাম থাকছে পদ্মা সেতুই।
গণভবন থেকে বের হয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের মঙ্গলবার এ তথ্য জানিয়েছেন।
সেতুর নাম পদ্মা সেতু থাকছে জানিয়য়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আগামী ২৫ জুন শনিবার সকাল ১০টায় বঙ্গবন্ধুকন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতুর শুভ উদ্বোধন করবেন। তিনি বলছেন, পদ্মা সেতু পদ্মা নদীর নামেই হবে। এখানে অন্য কারও নাম আমি দেব না। বঙ্গবন্ধু পরিবারের কারও নাম এখানে সংযোজন করবেন না।’
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে এ সেতুর সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন ওবায়দুল কাদের।
সেতুর নাম পদ্মা সেতু হবে কি না তা নিয়ে আলোচনা চলছিল বেশ কিছুদিন ধরেই। এক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে সেতুর নামকরণ করা নিয়েও আলোচনা হয়।
তবে এবার সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সেতুর নাম নিয়ে স্পষ্ট তথ্য দিলেন।
পরামর্শক নিয়োগে দুর্নীতি চেষ্টার অভিযোগ তুলে বিশ্বব্যাংক এই সেতু থেকে সরে যাওয়ার পর অর্থায়ন জটিলতায় সেতুটি আদৌ হবে কি না, এ নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিদ্ধান্ত নেন নিজ অর্থে সেতু করার।
এক দশক ধরে দেশের দক্ষিণের মানুষ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে এই সেতুর জন্য। এটি দেশের সবচেয়ে বড় সেতু- বিষয়টি কেবল এমন নয়, এর সঙ্গে জড়িয়েছে রাজনৈতিক, আন্তর্জাতিক বহু ঘটনাপ্রবাহ। যে কারণে সেতুটি নিয়ে আলোচনা আরও বেশি।
এর প্রতিটি স্প্যান বসানো সংবাদ হয়ে এসেছে। গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি, প্রতিটি বাধাবিঘ্ন গণমাধ্যমে সংবাদ শিরোনাম হয়েছে, সামাজিক মাধ্যমে তুলেছে তোলপাড়।
২০২০ সালের ডিসেম্বরে সেতুর সর্বশেষ স্প্যানটি বসানোর পরই জানানে হয় চলতি বছরের জুনে যান চলাচল শুরু করা হবে।
আরও পড়ুন:বহুল প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতু উদ্বোধন করা হবে আগামী ২৫ জুন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওই দিন এ সেতুর উদ্বোধন ঘোষণা করবেন।
মঙ্গলবার গণভবন থেকে বের হয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ তথ্য জানিয়েছেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘আগামী ২৫ জুন শনিবার সকাল ১০টায় বঙ্গবন্ধুকন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতুর শুভ উদ্বোধন করবেন। তিনি বলছেন, পদ্মা সেতু পদ্মা নদীর নামেই হবে। এখানে অন্য কারও নাম আমি দেব না। বঙ্গবন্ধু পরিবারের কারও নাম এখানে সংযোজন করবেন না।’
বিএনপিসহ সবাইকে উদ্বোধনীতে আমন্ত্রণ জানানো হবে বলেও জানান ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘আমন্ত্রণ জানাব সবাইকে। যারা বেশি বিরুদ্ধে বলছে, তাদেরকেও আমন্ত্রণ জানাব। উদ্বোধনের দিনই পদ্মা সেতুতে যান চলাচল শুরু হবে।’
এর আগে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পদ্মা সেতুর সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন ওবায়দুল কাদের।
এক দশক ধরে দেশের দক্ষিণের মানুষ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে এই সেতুর জন্য। এটি দেশের সবচেয়ে বড় সেতু- বিষয়টি কেবল এমন নয়, এর সঙ্গে জড়িয়েছে রাজনৈতিক, আন্তর্জাতিক বহু ঘটনাপ্রবাহ। যে কারণে সেতুটি নিয়ে আলোচনা আরও বেশি।
এর প্রতিটি স্প্যান বসানো সংবাদ হয়ে এসেছে। গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি, প্রতিটি বাধাবিঘ্ন গণমাধ্যমে সংবাদ শিরোনাম হয়েছে, সামাজিক মাধ্যমে তুলেছে তোলপাড়।
২০২০ সালের ডিসেম্বরে সেতুর সর্বশেষ স্প্যানটি বসানোর পরই জানানো হয় চলতি বছরের জুনে যান চলাচল শুরু করা হবে।
পরামর্শক নিয়োগে দুর্নীতিচেষ্টার অভিযোগ তুলে বিশ্বব্যাংক এই সেতু থেকে সরে যাওয়ার পর অর্থায়ন জটিলতায় সেতুটি আদৌ হবে কি না, এ নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিদ্ধান্ত নেন নিজ অর্থে সেতু করার।
তার এই সিদ্ধান্তের পর দেশবরেণ্য অর্থনীতিবিদরা বলেছিলেন, এত বড় প্রকল্প নিজে নিজে করার মতো আর্থিক সামর্থ্য বাংলাদেশের হয়নি। এতে রিজার্ভ চাপে পড়বে, অন্য উন্নয়ন প্রকল্প বাধাগ্রস্ত হবে।
উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা পদ্মা সেতু চলাচলের ক্ষেত্রে কী হারে টোল দিতে হবে তা এরই মধ্যে নির্ধারণ করেছে সরকার। নদী পারাপারে যানবাহনভেদে টোল ঠিক করা হয়েছে সর্বনিম্ন ১০০ টাকা থেকে ৬ হাজার টাকার বেশি।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত কোনো মাঙ্কিপক্স আক্রান্ত রোগী শনাক্ত না হলেও ভাইরাসটি নিয়ে সর্তক রয়েছে সরকার। এরইমধ্যে আইসোলেশন প্রস্তুত করেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ)।
মঙ্গলবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলন শেষে বিএসএমএমইউ ইন্ট্রান মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান সোহেল এম আরাফাত নিউজবাংলাকে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘বিএসএমএমইউ হাসপাতলে আইসোলেশন প্রস্তুত রাখা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি শনাক্ত হয় বা আমরা শনাক্ত করতে পারি তাহলে তাকে ২১ দিনের আইসোলেশনে থাকতে হবে। তার সংস্পর্শে যারা আসছে তাদেরও আইসোলেশনে রাখার ব্যবস্থা করা হবে। চারদিন জ্বর থাকলে ভাইরাসটি প্রতিরোধে টিকা প্রদান করতে হবে। সঠিক সময়ে মধ্যে টিকা দিলে এ রোগ ভালো হয়ে যাবে, কোন ধরনের জটিলতা তৈরি হবে না।’
তিনি বলেন, ‘মাঙ্কিপক্স নিয়ে গুজব বা আতঙ্ক নয়, বরং আমাদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। আমরা সর্তক রয়েছি। ভাইরাসের যদিও কোনো ওষুধ নেই, তবে দুইটা অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ রয়েছে এটা ব্যবহার করা যায়।’
করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে বিএসএমএমইউ হাসপাতাল যেভাবে রোগের চিকিৎসায় সহযোগিতা করে এসেছে, সেভাবেই মাঙ্কিপক্স রোগীদের শনাক্তকরণ এবং চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে কাজ করবে বলে জানায়।
সরকারিভাবে হবে কিনা জানতে চাইলে বিষয়টি পরিষ্কার করে কিছু জানাননি এই চিকিৎসক। তিনি বলছেন এ বিষয় নিয়ে সিন্ডিকেট সভায় আলোচনা হবে এবং প্রধানমন্ত্রী যেভাবে নির্দেশনা দেবেন সেভাবেই বাস্তবায়ন করা হবে।
আফ্রিকা অঞ্চলের এই ভাইরাস গত কিছু দিনে আফ্রিকার বাইরে বিশ্বের ১২ দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। শনাক্ত হয়েছে ৯২ জনের বেশি।
এদিকে এই ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে গত শনিবার দেশের প্রত্যেক বন্দরে সতর্কতা জারি করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
যদিও বলা হচ্ছে, এই ভাইরাস ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি কম।
মাঙ্কিপক্স ভাইরাস সাধারণত মধ্য ও পশ্চিম আফ্রিকার প্রত্যন্ত অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি দেখা যায়।
যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের মতে, এই ভাইরাসে শনাক্ত বেশিরভাগ রোগীই কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সুস্থ হয়ে যান।
আরও পড়ুন:সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞা কিছুটা শিথিল করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বিশেষ প্রয়োজনে ব্যক্তিগত ভ্রমণ জরুরি হলে ব্যাংক কর্মকর্তারা বিদেশে যেতে পারবেন বলে সোমবার রাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ এ সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করেছে।
সব তফসিলী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠানো সার্কুলারে বলা হয়, পবিত্র হজ পালন ও চিকিৎসার প্রয়োজনে ব্যাংক কর্মকর্তারা বিদেশে যেতে পারবেন। এ ছাড়া বাংলাদেশে অবস্থিত ব্যাংকে কর্মরত বিদেশি নাগরিকরা তার নিজ দেশে যেতে পারবেন। পাশাপাশি, বিদেশি ব্যাংকের বাংলাদেশের শাখায় কর্মরত কর্মকর্তারা প্রধান কার্যালয়ে যেতে পারবেন। এ ছাড়া বিদেশি আয়োজক সংস্থার সম্পূর্ণ অর্থায়নে পরিচালিত প্রশিক্ষণ, সভা, সেমিনার, ওয়ার্কশপ ও স্টাডি ট্যুরেও ব্যাংক কর্মকর্তারা অংশ নিতে পারবেন।
এর আগে রোববার বাংলাদেশ ব্যাংক এক সার্কুলারে জানায়, ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যক্তিগত ভ্রমণসহ প্রশিক্ষণ, সভা, সেমিনার, ওয়ার্কশপ ও স্টাডি ট্যুরে যাওয়া পুনরাদেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।
ওই সার্কুলারে আরও বলা হয়, করোনার প্রভাব মোকাবিলা করে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার এবং বহির্বিশ্বে যুদ্ধাবস্থার কারণে বৈশ্বিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় বৈদেশিক মুদ্রার মজুত সুসংহত রাখতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার সরকারের অর্থ বিভাগ থেকে পরিপত্র জারি করে সরকারি কর্মকর্তাদের সব ধরনের বৈদেশিক ভ্রমণ স্থগিত করা হয়।
সৌদি কর্তৃপক্ষ প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে পারেনি জানিয়ে আগামী ৫ জুন থেকে চলতি মৌসুমের হজ ফ্লাইট শুরু করতে বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
সোমবার বিমান সচিবের কাছে এই চিঠি পাঠানো হয়।
এতে বলা হয়েছে, ‘রুট টু মক্কা ইনিশিয়েটিভ’র আওতায় এবারের হজে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সৌদি আরবগামী শতভাগ হজযাত্রীর সৌদি আরবের ইমিগ্রেশন ঢাকায় সম্পন্ন হওয়ার কথা।
কিন্তু সোমবার রুট টু মক্কা ইনিশিয়েটিভ বাস্তবায়নকারী সৌদি কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে এসে জানায়, ৪০ জনের সৌদি টিম ঢাকায় আগামী ২ জুনের আগে পৌঁছাতে পারবে না।
চিঠিতে বলা হয়, প্রি-অ্যারাইভাল ইমিগ্রেশন কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় ডিভাইস/যন্ত্রপাতি এখনও ঢাকায় এসে পৌঁছায়নি। এ সব ডিভাইস/যন্ত্রপাতি সৌদি টিমের সঙ্গে ঢাকায় আসবে। এগুলো হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইনস্টল করতে হবে। এতে কিছু সময় লাগবে।
এতে বলা হয়, ফলে আগামী ৫ তারিখের আগে তাদের পক্ষে ঢাকা থেকে হজযাত্রীদের প্রি-অ্যারাইভাল ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করা সম্ভব হবে না। এ কারণে ৩১ মের পরিবর্তে আগামী ৫ জুন থেকে হজ ফ্লাইট শুরু করা প্রয়োজন।
প্রায় দুই বছর পর এবার বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে হজ পালনের সুযোগ পাচ্ছেন মুসল্লিরা। করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় সৌদি সরকার এবার সারা বিশ্বের ১০ লাখ মানুষকে হজ পালনের অনুমতি দিচ্ছে।
বাংলাদেশ থেকে এ বছর সাড়ে ৫৭ হাজার মুসল্লি হজ পালনে সৌদি আরবে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় যাবেন ৪ হাজার মুসল্লি। বাকিরা যাবেন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়।
এবার সরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীদের জন্য দুটি প্যাকেজ ঘোষণা করে ধর্ম মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে সর্বোচ্চ প্যাকেজটি হলো ৫ লাখ ২৭ হাজার ৩৪০ টাকা। সর্বনিম্নটি ৪ লাখ ৬২ হাজার ১৫০ টাকার।
বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ পালনে জনপ্রতি ন্যূনতম খরচ ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৭৪৪ টাকা নির্ধারণ করেছে হজ এজেন্সিস অফ বাংলাদেশ (হাব)।
এবার হজ হতে পারে ৮ জুলাই (চাঁদ দেখা সাপেক্ষে)। সৌদি আরবের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী ৫৭ হাজার হজযাত্রীর অর্ধেক বহন করবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। বাকি অর্ধেক করবে সৌদি রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থা সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইনস ও ফ্লাই নাস।
রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠান বিমান এ বছর ৭৫টি ডেডিকেটেড ফ্লাইটের মাধ্যমে ৩১ হাজার যাত্রী বহন করবে। যাত্রী পরিবহনে বগত বছরগুলোর মতই বহরে থাকা বোয়িং ৭৭৭ উড়োজাহাজ ব্যবহার করা হবে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য