সৌদি আরবের আল কাসিমে করোনাভাইরাসের টিকা দেয়ার কথা বলে ডেকে নিয়ে এক বাংলাদেশি যুবককে গলা কেটে হত্যার অভিযোগ উঠেছে পাকিস্তানি কয়েকজন যুবকের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দুই পাকিস্তানির পাশাপাশি এক বাংলাদেশিকে আটক করেছে দেশটির পুলিশ। আটক পাকিস্তানিরা বশিরকে হত্যার কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছেন নিহতের ভাই।
সৌদি আরবের আল কাসিম শহরের বরাইদা এলাকায় রোববার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
খুন হওয়া ২৪ বছর বয়সী বাংলাদেশি যুবকের নাম বশির আহমেদ। তিনি কুমিল্লা চান্দিনার তুলাতলি গ্রামের মোহাম্মদ সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে।
গত মঙ্গলবার রাতে বশিরকে হত্যার ঘটনাটি জানতে পারে পরিবার।
বৃহস্পতিবার সকালে নিহত বশিরের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, পরিবারে চলছে শোকের মাতম। ছেলের মৃত্যুর খবরে মা কমলা বিবি বার বার বিলাপ করে মূর্ছা যাচ্ছিলেন। প্রতিবেশীরা এসেছেন, চোখের জল ফেলছেন তারাও।
পরিবারের লোকজন জানায়, পাঁচ বছর আগে সৌদিতে যান বশির। চার ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট তিনি। সেখানে যে কোম্পানিতে কাজ করতেন, সে কোম্পানির কয়েকজনের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয় বশিরের। তারা ছিল পাকিস্তানি।
বন্ধুত্বের সুবাদে কােম্পানির একটি ক্যাম্পে একসঙ্গেই থাকতেন তারা। রোববার রাতে পাকিস্তানি বন্ধুরা ওই শহরের কােনো এক নির্জন জায়গায় নিয়ে গলা কেটে হত্যা করে বশিরকে। রাতে ক্যাম্পে না ফেরায় কাছের একটি থানায় যােগাযাগ করে বশিরের স্বজনরা।
নিহত বশিরের বড় ভাইও সৌদিপ্রবাসী, নাম মোজাম্মেল হক। তিনি নিউজবাংলাকে জানান, বশির যে ক্যাম্পে থাকতেন, সেখানে কয়েকজন পাকিস্তানিও থাকতেন। রোববার রাতে পাকিস্তানি কয়েকজন শ্রমিক বশিরকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর থেকেই তার আর খোঁজ পাওয়া যায়নি
তিনি বলেন, ‘বশির গত কয়েক মাস বাড়িতে টাকা পাঠায়নি। টাকাগুলো তার কাছেই ছিল। ওই টাকার লোভে পাকিস্তানি যুবকরা কৌশলে ক্যাম্প থেকে ডেকে নিয়ে আমার ভাইকে হত্যা করেছে।
‘রাতে বশির ফিরে না আসলে, তাদের জিজ্ঞেস করলে তারা কেউ বলে বশির হসপিটালে গেছে, কেউ বলে হোটেলে খেতে গেছে। আবার কেউ বলে দূরে ঘুরতে গেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পরে আমি বিষয়টি পুলিশকে জানাই। পুলিশ পাকিস্তানি দুই যুবককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদে ওই দুই যুবক হত্যার কথা স্বীকার করেছে।’
এ বিষয়ে চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশরাফুন নাহার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সৌদিতে বশির আহমেদ নামের একজনকে খুন করা হয়েছে বলে শুনেছি। বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। নিহতের পরিবার আমাদের সঙ্গে যােগাযাগ করলে আর্থিক সহায়তা পাওয়ার জন্য আমরা সহযাগিতা করব।’
আরও পড়ুন:সিলেটের কানাইঘাট সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের চেষ্টার অভিযোগে করা মামলায় জামিন পেয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারক এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, তবে অন্য মামলা থাকায় কারাগারেই থাকতে হচ্ছে তাকে।
মানিককে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আদালতে তুলে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করে পুলিশ। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর নির্দেশ দেয়।
অন্যদিকে মানিকের আইনজীবী আদালতে এ মামলায় জামিন আবেদন করলে সেটি মঞ্জুর করে আদালত, তবে তার নামে অন্য মামলা থাকায় সিলেট কারাগারেই রাখা হচ্ছে তাকে। পরবর্তী সময়ে তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হবে।
সিলেট সদর কোর্ট ইন্সপেক্টর মো. জমশেদ আলী জানান, সকাল ৯টার দিকে কড়া নিরাপত্তায় সাবেক বিচারক শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে আদালতে আনা হয়।
গত ২৩ আগস্ট রাতে সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার দনা সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় কয়েকজন যুবকের সহায়তায় একটি জঙ্গল থেকে শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে আটক করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। পরের দিন সকালে তাকে কানাইঘাট থানায় হস্তান্তর করা হয়।
৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ওই দিন বিকালে আদালতে হাজির করলে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন সিলেটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-১ আলমগীর হোসাইন। পরে পাসপোর্ট আইনে মানিকের নামে কানাইঘাট থানায় মামলা করা হয়। ১৭ সেপ্টেম্বর কানাইঘাটের মামলায় মানিকের আদালতে হাজিরার দিন ঠিক করেছিলেন আদালত।
গত ২৪ আগস্ট আদালতে নেয়ার সময় বিচারক মানিককে মারধর করে বিক্ষুব্ধ জনতা। পরে আদালত থেকে কারাগারে নিয়ে যাওয়ার পর সন্ধ্যায় অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার শরীরে অস্ত্রোপচার করা হয়।
দীর্ঘ সময় ধরে হার্টের সমস্যার পাশাপাশি ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভুগছিলেন শামসুদ্দিন মানিক। ১০ বছর আগে বাইপাস সার্জারি করিয়েছিলেন তিনি।
ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় ১২ সেপ্টেম্বর মানিককে হাসপাতাল থেকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে নেয়া হয়।
আরও পড়ুন:রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসানকে কক্সবাজারের টেকনাফ থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন চৌধুরী জানান, সোমবার বিকেলে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রাজারবাগ পুলিশ লাইনসের উপপরিদর্শক মো. জয়নাল হোসেন ভূঁইয়ার ছেলে ইমাম হাসান তাইমকে গুলি করে হত্যা মামলার আসামি যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান। টেকনাফে অবস্থানের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর তাকে গ্রেপ্তার করে জেলা পুলিশের হেফাজতে আনা হয়।
পুলিশের এ কর্মকর্তা আরও জানান, বিষয়টি ঢাকায় সংশ্লিষ্ট থানাকে অবিহত করা হয়েছে। সেখান থেকে পুলিশের একটি দল কক্সবাজারে আসছে। তারাই আবুল হাসানকে ঢাকা নিয়ে যাবে।
নিহত তাইম নারায়ণগঞ্জ সরকারি আদমজী নগর এম. ডব্লিউ কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
গত ২০ আগস্ট নিহত তাইমের মা পারভীন আক্তার ওয়ারী বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ ইকবাল হোসেনসহ ৫ জনের নামে এ মামলা করেন।
মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে আছেন পুলিশের এডিসি শাকিল মোহাম্মদ শামীম ও এসি তানজিল আহমেদ।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, গত ২০ জুলাই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে সরকার কারফিউ জারি করে। ওই দিন দুপুর ১২টা থেকে দুইটা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল ছিল। ওই সময় তাইম তার দুই বন্ধুর সাথে যাত্রাবাড়ীর কাজলা এলাকায় চা পান করতে যান। সে সময় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীরা বিক্ষোভ করছিলেন।
বিক্ষোভের সময় ডিসি ইকবাল হোসেন, শামীম ও তানজিল আহমেদের নির্দেশে জাকির হোসেন ও তার সঙ্গীরা বিক্ষোভকারীদের ওপর টিয়ার গ্যাসের শেল, সাউন্ড গ্রেনেড, রাবার বুলেট ও গুলি ছোড়েন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, প্রাণ ভয়ে আন্দোলনকারীরা এলোপাতাড়ি ছোটাছুটি করতে থাকেন। তাইম ও তার দুই বন্ধু লিটন চা স্টোরের ভেতর ঢুকে দোকানের শাটার টেনে দেন, কিন্তু শাটারের নিচের দিকে আধা হাত খোলা ছিল। সেখানে অবস্থানকারীদের পুলিশ টেনে বের করেন।
গুলি থেকে বাঁচতে চাইলে দৌড় দিতে বলেন জাকির হোসেন। তখন তাইম সবার আগে দৌড় দেন। জাকির গুলি করেন। বিনা চিকিৎসায় সেখানেই মৃত্যু হয় তাইমের।
আরও পড়ুন:ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়ায় মঙ্গলবার সকালে দুটি কারখানার শ্রমিকদের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও সংঘর্ষ হয়েছে।
এ ঘটনায় এক নারী পোশাকশ্রমিক নিহত ও অন্তত ২০ শ্রমিক আহত হয়েছেন।
আশুলিয়ার জিরাবো এলাকায় মাসকট গার্মেন্টস লিমিটেড নামের তৈরি পোশাক কারখানার সামনে ওই ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো রোকেয়া বেগম মাসকট গার্মেন্টস লিমিটেড নামের কারখানার সহকারী সেলাই মেশিন অপারেটর ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশের ভাষ্য, আজ সকালে মাসকট গার্মেন্টসের শ্রমিকরা কাজ না করে কারখানার বাইরে চলে আসেন। ওই সময় তাদের কারখানার সামনে রেডিয়্যান্ট গার্মেন্টসের কাজ বন্ধ করতে মাসকট কারখানার শ্রমিকরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকেন। একপর্যায়ে দুই গার্মেন্টসের শ্রমিকরাই সংঘর্ষে লিপ্ত হয়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকেন। ইটপাটকেলের আঘাতে মাসকট কারখানার রোকেয়া বেগমের মৃত্যু হয়।
সংঘর্ষে উভয় পক্ষের আরও অন্তত ২০ শ্রমিক আহত হন। তাদের নিকটস্থ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক জানান, সকালে মাসকট কারখানার শ্রমিকরা তাদের সামনের সম্ভবত রেডিয়্যান্ট নামের একটি কারখানায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। ওই সময় ইটপাটকেলের আঘাতে এক নারী শ্রমিক নিহত হন।
তিনি আরও জানান, ঘটনাস্থলে শিল্প পুলিশসহ জেলা পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত আছেন।
আরও পড়ুন:ট্যুরিস্ট ভিসায় ভারতে গিয়ে ফেসবুকে পোস্টের মাধ্যমে ও লাইভে এসে ভারতবিরোধী কথা বলায় আলমগীর শেখ নামে এক যুবককে আটক করে ভিসা বাতিল করেছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ।
সোমবার লালমনিরহাটে বুড়িমারী স্থল বন্দরের ইমিগ্রেশন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আহসান হাবীব বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সূত্র: ইউএনবি
আলমগীর শেখ লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার জুম্মাপাড়া এলাকার নুরু শেখের ছেলে।
ইমিগ্রেশন পুলিশ সূত্র জানায়, ৩ সেপ্টেম্বর ট্যুরিস্ট ভিসায় ভারতে যান আলমগীর। সেখানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভারতবিরোধী পোস্ট ও লাইভ করেন। বিষয়টি নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের নজরে এলে তারা আলমগীরকে চিহ্নিত করেন।
চ্যাংড়াবান্ধা ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে রোববার সন্ধ্যায় বাংলাদেশে ফেরত আসার সময় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তারপর ভিসা বাতিল করে বুড়িমারী ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ।
আলমগীর শেখ ভারতের আগ্রায় তাজমহলে ঘুরতে গিয়ে ফেসবুক লাইভে বলেন, ‘১৯৭১ সালে ভারত আমাদের অনেক সহযোগিতা করছেন, পাশাপাশি পাকিস্তান থেকে আমাদের ভাগ করে দিয়েছেন। এবার বাংলাদেশের জনগণ মিলে আমরা ভারতকে ভাগ করতে চাই। মনিপুরের জয় হোক। পাশাপাশি আমার বাংলা আমি ফেরত চাই।’
এছাড়াও লাইভে পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা ও আসাম রাজ্য বাংলাদেশের কাছে ফেরত দিতে বলেন তিনি।
আরও পড়ুন:কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্তে পদ্মা নদীর ভাঙনে ভারতীয় সীমান্তে বিলীন হওয়া প্রায় ২০০ একর জমির মালিকানা ফিরে পেতে যাচ্ছেন বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট জমির মালিকরা।
রোববার অনুষ্ঠিত দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সৌজন্য বৈঠকে বিবাদমান জমি নিয়ে আলোচনায় পুনরায় জরিপ করে মালিকানা প্রকৃত মালিকদের বুঝিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সূত্র: ইউএনবি
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ৪৭ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মাহবুব মুর্শেদ রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘বিজিবি-বিএসএফ বৈঠকে বিবাদমান জমি পুনরায় জরিপ করে প্রকৃত মালিকদের ফিরিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’
বিবাদমান জমিগুলো ভারত সীমান্তে দৌলতপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের পদ্মা নদীঘেঁষা চল্লিশপাড়া এলাকায়।
স্থানীয়রা জানান, পদ্মা নদীর ভাঙনে এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগে চল্লিশপাড়া বর্ডার আউট পোস্টের (বিওপি) পিলার ১৫৭/এমপি থেকে ৮৫/১০-এস এলাকা পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার সীমানা এলোমেলো হয়ে গেছে।
বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, গত ১০ ফেব্রুয়ারি উভয় দেশের সার্ভেয়ার, বিজিবি ও বিএসএফের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভারতের অভ্যন্তরে বাংলাদেশের আনুমানিক ২০০ একর জমি এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতের আনুমানিক ৪০ একর জমির গরমিল পাওয়া যায়।
বিএসএফের আহ্বানে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বাংলাদেশের দৌলতপুর উপজেলার মহিষকুন্ডির জামালপুর বিওপির সীমান্ত পিলার ১৫২/৭-এস থেকে আনুমানিক ১৫০ গজ ভারতের অভ্যন্তরে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় রোববার দুপুরে। এতে বিবাদমান জমি নিয়ে আলোচনা করা হয়। এছাড়াও সীমান্তে হত্যা বন্ধ ও মাদক পাচার রোধে বৈঠকে গুরুত্বারোপ করা হয়।
অনুষ্ঠানে বিজিবির পক্ষে কুষ্টিয়ার বিজিবি ৪৭ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মাহবুব মুর্শেদ রহমান এবং বিএসএফের পক্ষে রওশনবাগ ব্যাটালিয়নের কমান্ড্যান্ট বিক্রম দেব সিং নেতৃত্ব দেন।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহবুব মুর্শেদ রহমান বলেন, ‘গত ১০ ফেব্রুয়ারি সার্ভেতে বাংলাদেশের পাওনা প্রায় ২০০ একর জমি ও ভারতের পাওনা প্রায় ৪০ একর জমির গরমিল পাওয়া গেছে। এটা আগামী অক্টোবর মাসে সুবিধাজনক সময়ে উভয় দেশের সার্ভেয়ার, বিজিবি ও বিএসএফের উপস্থিতিতে পুনরায় জরিপ করে জমির প্রকৃত মালিকদের কাছে হস্তান্তর করতে উভয় ব্যাটালিয়ন কমান্ডাররা ঐকমত্যে পৌঁছেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘মূলত সীমান্তের বিবাদমান অংশটি নদী এলাকায়। পদ্মার ভাঙন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে দুই দেশের সঠিক সীমানা নির্ধারণে জটিলতা ছিল। দুই দেশের প্রচেষ্টায় তা সমাধানে সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। দ্রুত সঠিক সীমানা নির্ধারণ করা হবে। তবে জমি বুঝে না পাওয়া পর্যন্ত কেউ তা ব্যবহার করতে পারবে না।’
সীমান্তে বিএসএফকে বাংলাদেশি নাগরিক হত্যার বিষয়ে কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়েছে বলে জানান মাহবুব মুর্শেদ।
তিনি বলেন, ‘নিরীহ বাংলাদেশি নাগরিকদের সীমান্তে আটক না করা, ভারত থেকে বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য ও নিষিদ্ধ কোনো পণ্য যাতে বাংলাদেশে পাচার হতে না পারে এবং আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে সীমান্তবর্তী জনসাধারণ যাতে অবৈধভাবে দুই দেশের সীমান্তের পূজামণ্ডপে যাওয়া-আসা করতে না পারে সেসব বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে যমুনা নদীর তীররক্ষা বাঁধে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে উপজেলার মেঘাই পুরাতন তীররক্ষা বাঁধের ৭০ মিটার এলাকা ইতোমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
রোববার সন্ধ্যা ৭টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী নাজমুল হোসাইন।
এর আগে, সন্ধ্যার কিছু সময় আগে উপজেলার মেঘাই পুরাতন বাঁধ এলাকায় ভাঙন শুরু দেখা দেয়। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ভাঙন নিয়ন্ত্রণে জিও ব্যাগ ডাম্পিং শুরু করেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা।
মেঘাই ঘাট এলাকার শামীমুর রহমান বলেন, নদীর প্রবল স্রোতের কারণে বাঁধের বোল্ডারগুলো খসে পড়তে শুরু করে। এ ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। হঠাৎ এমন ভাঙন দেখা দেয়ায় অনেক মানুষ নদীর পাড়ে ভিড় জমায়। তারা দ্রুত বাঁধ মেরামতের দাবি জানিয়েছেন।
স্থানীয় কৃষক কুরমান আলী বলেন, পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে নদীভাঙন দেখা দিয়েছে। অনেক স্থানে ফসলি জমিও ভেঙে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙনের সময় শুধু জিও ব্যাগ ফেলে। আমরা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি। এটা অব্যাহত থাকলে এলাকার অনেকেই বাড়ি-ঘরসহ ভিটেহারা হবে।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী নাজমুল হোসাইন বলেন, ‘পানি বিপৎসীমার অনেক নিচে থাকার পরও প্রবল স্রোত তৈরি হয়ে বাঁধের তলদেশ থেকে মাটি সরে যাওয়ায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে বাঁধের ৭০ মিটার এলাকা নদীগর্ভে ধসে গেছে। খবর পেয়ে সেখানে দ্রুত জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধ করা হয়। ইতোমধ্যে ভাঙন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পাশাপাশি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরাও ভাঙন মেরামতের কাজে অংশ নেন। একই সঙ্গে কাজটি সেনা সদস্যরা তদারকি করছেন। আশা করছি সেখানে আর ভাঙার আশঙ্কা নেই। তবে শুষ্ক মৌসুমে ধসে যাওয়া অংশ পুরোপুরি মেরামত করা হবে।’
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা ও সাবেক কৃষিমন্ত্রী আব্দুস শহীদের দখলে থাকা পাঁচ একরের বেশি জায়গা উদ্ধার করেছে বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ।
রোববার সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ১৩১ জন শ্রমিক নিয়ে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের স্টুডেন্ট ডরমিটরির সামনে লাউয়াছড়ার জায়গা উদ্ধারে অভিযান পরিচালনা করে বন বিভাগ।
অভিযানে উপস্থিত ছিলেন বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম, সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) জামিল মোহাম্মদ খান, রেঞ্জ কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।
বনবিভাগ জানায়, জায়গাটি দখল করে রেখেছিলেন সাবেক কৃষিমন্ত্রী আব্দুস শহীদ। ২০১৮ সাল থেকে বন বিভাগ বেশ কয়েকবার উদ্যোগ নিয়েও আব্দুস শহীদের দখল থেকে বনের ওই জমি উদ্ধার করতে ব্যর্থ হয়।
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমরা জায়গাটি উদ্ধার করেছি। এখানে পাঁচ একরের বেশি জায়গা বেদখল হয়ে ছিল। সেখানে কিছু জায়গায় লেবু গাছ আর কিছু জায়গা ফাঁকা পড়ে ছিলো। আমরা সেই জায়গাগুলোতে বন্যপ্রাণীর উপযোগী গাছের চারা লাগিয়েছি।’
মন্তব্য