প্রতিবন্ধীদের জন্য সুখবর দিল বাংলাদেশ বিজনেস অ্যান্ড ডিজঅ্যাবিলিটি নেটওয়ার্ক- বিবিডিএন। প্রযুক্তির মাধ্যমে চাকরির বাজারে তাদের দক্ষ করে গড়ে তোলার পাশাপাশি চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে বিবিডিএন। সে লক্ষ্যে বুধবার শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী এই মেলা।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে আইএলওর স্কিলস ২১ প্রকল্প এবং এফসিডিওর অর্থায়নে ইনোভেশন টু ইনক্লুশন (আইটুআই) প্রকল্পের সহযোগিতায় এ মেলাটি হচ্ছে। কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকারের এটুআই প্রোগ্রাম এবং বিডিজবস।
উদ্বোধনী বক্তব্যে বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট এবং বিবিডিএন চেয়ারম্যান আরদাশীর কবির বলেন, ‘বাংলাদেশের শ্রমবাজারে প্রতিবন্ধীদের যুক্ত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশন একটি কল্যাণমুখী ট্রাস্ট হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ২০১৩ সালের অধিকার ও সুরক্ষা আইন অনুযায়ী প্রতিবন্ধীদের কর্মক্ষেত্রে যুক্ত করা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।
লিওনার্ড চেশায়ারের কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ জহির-বিন-সিদ্দীক বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, ‘এই প্রকল্পের লক্ষ্য, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং বেসরকারি খাতে তাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা। প্রতিবন্ধীদের জন্য তথ্যের ঘাটতি একটি বড় সমস্যা। এই প্রকল্পের শুরুতে আমরা চিন্তা করেছি কীভাবে প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে প্রতিবন্ধীদের দক্ষতা বাড়ানো যায়, বেসরকারি খাতে তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা যায়।’
‘এই প্রকল্পের আওতায় বিডিজবসের সহায়তায় আইটুআই ক্যারিয়ার অ্যাডভাইজার নামে প্রথমবারের মতো শুধু প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য একটি জব পোর্টালের উদ্বোধন হয়েছে। এখানে প্রতিবন্ধীরা তাদের সুবর্ণ নাগরিক কার্ডের নম্বর দিয়ে নিবন্ধন করতে পারবেন।’
বিডিজবসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহিম মাশরুর বলেন, ‘এটি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে যুগান্তকারী দৃষ্টান্ত এবং একটি মাইলফলক। করোনা মহামারির কবলে পড়ে আমাদের অর্থনৈতিক খাতগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এটা যেমন সত্য, তেমনি প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি একটি আশীর্বাদ; বিশেষ করে প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর জন্য। তারা ঘর থেকে কাজে যোগদানের সুযোগ পাচ্ছেন।’
ফেডারেশন অফ বাংলাদেশ চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, ‘আমরা যারা বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠন আছি, আমাদের একটা নৈতিক দায়িত্ব রয়েছে। যদি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা, তাদের দক্ষতার বিবরণ এবং অবস্থান উল্লেখ করে আমাদের কাছে পাঠানো হয়, তবে অন্যান্য চেম্বার অফ কমার্সের সঙ্গে যোগাযোগ করে দক্ষতাসম্পন্ন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কর্মসংস্থানের উদ্যোগ নেব।’
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা- আইএলওর কান্ট্রি ডিরেক্টর টুওমো পৌটিআইনেন বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে সামাজিক ন্যায়বিচার এবং উপযুক্ত কর্মপরিবেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ চলছে। প্রতিবন্ধকতা যেন তাদের কর্মক্ষম হওয়ার পথে বাধা না হয়ে দাঁড়ায়, সে জন্য আইএলও প্রয়োজন অনুযায়ী দক্ষতার উন্নয়ন, কর্মসংস্থান এবং কর্মক্ষেত্রে শোভন পরিবেশ নিশ্চিতের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার, চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠান এবং কর্মী সংগঠনের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে।’
এস্পায়ার টু ইনোভেট প্রকল্প পরিচালক দেওয়ান মোহাম্মদ হুমায়ন কবির বলেন, ‘আমরা সবাই আজ একটা মঞ্চে একত্রিত হয়েছি। এটি আমাদের প্রতিবন্ধীদের নিয়ে কাজ করার অঙ্গীকারের বহিঃপ্রকাশ। দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৭-১০ শতাংশ প্রতিবন্ধী। যেসব প্রতিবন্ধী ব্যক্তি কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেন, তারা প্রমাণ করে চলেছেন যে তারা সুস্থ ব্যক্তির চেয়েও কোনো অংশে কম নয়। দরকার শুধু সুযোগ।
‘আমি ধন্যবাদ দিতে চাই মেলায় অংশগ্রহণকারী ৬০টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে। যারা প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী কাজের সুযোগ করে দিতে এগিয়ে এসেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার এবং এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা ‘কেউ পিছিয়ে থাকবে না’ সামনে রেখে এটুআই কাজ করে যাচ্ছে।’
কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. ওমর ফারুক বলেন, ‘সরকার কর্তৃক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য যেসব বিশেষ কার্যক্রম গ্রহণ করা হয় তার একটি বড় অংশ শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক পরিচালিত হয়ে থাকে। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সম্পর্কে যে দর্শনটি আমরা মনে-প্রাণে লালন করি, সেটি হচ্ছে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা এই সমাজের অংশ এবং তাদের অধিকার এই সমাজে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে হবে। এ লক্ষ্যে কারিগরি শিক্ষা বোর্ড ডিজঅ্যাবিলিটি ইনক্লুশন অ্যাডভাইজরি গ্রুপ গঠন করেছে। তাদের জন্য রিফ্রেশার ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা আছে।
‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য কারিগরি শিক্ষায় ৫ শতাংশ কোটা আছে। তাদের কর্মসংস্থানের জন্য জব প্লেসমেন্ট সেলে তথ্য রাখা হয়, যেন সেখান থেকে তাদের তথ্য নিয়ে নিয়োগকর্তারা তাদের নিয়োগ দিতে পারেন। প্রতিটি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একজন ফোকাল নিয়োগ দেয়া আছে, যারা এই বিষয় নিয়ে কাজ করেন।’
এস্পায়ার টু ইনোভেটের ন্যাশনাল কনসালট্যান্ট (অ্যাকসেসেবিলিটি) ভাস্কর ভট্টাচার্য বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকারের রাজনৈতিক ইশতেহার, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন এবং এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অনুসারে বাংলাদেশে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য সরকার এবং আমরা সবাই মিলে কাজ করে যাচ্ছি। কেউ পিছিয়ে থাকবে না- এই লক্ষ্য সামনে রেখে আমরা হাতে হাত রেখে কাজ করে যাব। ভবিষ্যতে বাংলাদেশে কোনো প্রতিবন্ধী ২০১৩ সালের অধিকার ও সুরক্ষা আইন অনুযায়ী কর্মের অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে না।’
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. নিজাম উদ্দিনকে সচিব হিসেবে পদোন্নতি দিয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
সোমবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
জনস্বার্থে জারিকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।
বিশিষ্ট মানবাধিকারকর্মী ও ইম্প্যাক্ট ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা-ট্রাস্টি মনসুর আহমেদ চৌধুরী ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-এর ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপারসন নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি বিদায়ী চেয়ারপারসন অ্যাডভোকেট সুলতানা কামালের স্থলাভিষিক্ত হলেন।
আর টিআইবির ট্রাস্টি বোর্ডের নতুন দুই সদস্য হয়েছেন সংস্থাটির প্রতিষ্ঠাকালীন নির্বাহী পরিচালক ব্যারিস্টার মনজুর হাসান এবং নারীর ক্ষমতায়ন, জেন্ডার সমতা ও সুশাসন বিশেষজ্ঞ তাহেরা ইয়াসমিন।
তাছাড়া টিআইবির অডিট কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন সংস্থাটির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ফারুক আহমেদ। অডিট কমিটির অপর সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত কম্পট্রোলার জেনারেল, ডিফেন্স ফাইন্যান্স মোতাহার হোসেইন।
টিআইবি’র নতুন চেয়ারপারসন মনসুর আহমেদ চৌধুরী বহুল আলোচিত ভাসমান হাসপাতাল ‘জীবন তরী’-এর উদ্যোক্তা। মানবাধিকার বিশেষ করে প্রতিবন্ধীদের অধিকারের নিশ্চয়তাসহ তাদের জীবন-মানের সার্বিক উন্নয়নে দীর্ঘদিন ধরে তিনি কাজ করছেন।
‘জাতীয় প্রতিবন্ধী ফোরাম’ গঠনে মনসুর আহমেদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন এবং এর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের প্রতিবন্ধীবিষয়ক কমিটির সদস্য হিসেবে (২০০৯-১২ মেয়াদে) দায়িত্ব পালন করেছেন।
কাজের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি নিরাফাত আনাম মেমোরিয়াল ইনক্লুশন পদক, সিলেট রত্ন পদক, আজীবন সম্মাননা (সিঙ্গার বাংলাদেশ ও চ্যানেল আই) এবং সিনিয়র অশোকা ফেলোশিপ সম্মানে ভূষিত হয়েছেন।
টিআইবি ট্রাস্টি বোর্ডের নতুন সদস্য ব্যারিস্টার মনজুর হাসান বর্তমানে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর পিস অ্যান্ড জাস্টিসের নির্বাহী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। টিআইবির প্রতিষ্ঠাকালীন নির্বাহী পরিচালকের দায়িত্ব পালন ছাড়াও তিনি ব্র্যাকের ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর এবং ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের আন্তর্জাতিক উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বিশেষ অবদানের জন্য তিনি ২০০৩ সালে ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের কাছ থেকে ‘অফিসার অফ দ্য মোস্ট এক্সেলেন্ট অর্ডার অফ দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ার (ওবিই)’ উপাধিতে ভূষিত হন।
বোর্ডের আরেক নতুন সদস্য তাহেরা ইয়াসমিন নারীর ক্ষমতায়ন, জেন্ডার সমতা এবং সুশাসন বিশেষজ্ঞ। তিনি অক্সফাম, কেয়ার এবং জিআইজেড-এর মতো আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে শীর্ষস্থানীয় পদে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি জিআইজেড-এর রুল অব ল’র অপারেশন পরিচালক এবং অ্যাকসেস টু জাস্টিস ফর উইম্যান প্রোগ্রামের সিনিয়র অ্যাডভাইজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বেসরকারি সংস্থা ও উন্নয়ন খাতে স্ট্রাটেজিক প্ল্যানিং ও কর্মসূচি বাস্তবায়ন বিশেষজ্ঞ হিসেবে তিনি সুখ্যাতি অর্জন করেছেন।
প্রসঙ্গত, ট্রাস্টি বোর্ড টিআইবির সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরাম। বোর্ডের অন্যরা হলেন- অধ্যাপক ড. তাসনিম আরেফা সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক; দ্য ডেইলি স্টার প্রকাশক ও সম্পাদক মাহফুজ আনাম, কোষাধ্যক্ষ।
সদস্যবৃন্দ হলেন- সাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ আবুল মোমেন, অধ্যাপক ড. ফখরুল আলম, অ্যাডভোকেট সুস্মিতা চাকমা, সোসাইটি অফ এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট (শেড)-এর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ফিলিপ গাইন, মানবাধিকার ও সমাজকর্মী বনশ্রী পাল এবং ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনাল-এর প্রাক্তন নির্বাহী পরিচালক ফারুক আহমেদ।
আরও পড়ুন:রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের জনবিভাগের সিনিয়র সচিব ড. নাসিমুল গনিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব করা হয়েছে।
রোববার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
ড. নাসিমুল গনি বিসিএস ১৯৮২ ব্যাচের প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা। ২০০৯ সালে তাকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা করা হয়। চার বছর ওএসডি থাকার পর ২০১৩ সালে তাকে চাকরি থেকে অবসর দেয়া হয়।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তাকে সিনিয়র সচিব পদমর্যাদায় রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের জনবিভাগে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়।
৪২তম (বিশেষ) বিসিএস স্বাস্থ্য নিয়োগ পরীক্ষায় লিখিত ও মৌখিক উভয় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও নিয়োগবঞ্চিত এক হাজার ৯১৯ জন চিকিৎসক তাদেরকে দ্রুত নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন।
রোববার ৪২তম (বিশেষ) বিসিএস স্বাস্থ্যে অপেক্ষমাণ চিকিৎসকরা সংবাদ সম্মেলন করে এই দাবি জানান।
‘৪২তম (বিশেষ) বিসিএস স্বাস্থ্য (লিখিত ও মৌখিক) উভয় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও ক্যাডার পদে নিয়োগবঞ্চিত ১৯১৯ জন চিকিৎসককে ন্যায্য নিয়োগ’ শীর্ষক এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে।
সংবাদ সম্মেলনে নিয়োগবঞ্চিত চিকিৎসকরা বলেন, ২০২১ সালে ৪২তম বিসিএসের ফলাফলে পর্যাপ্ত পদ না থাকায় এক হাজার ৯১৯ জন চিকিৎসক দীর্ঘদিন ধরে নিয়োগবঞ্চিত হয়ে আছেন। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরও তারা বৈষম্যের শিকার। স্বাস্থ্য অধিদফতর নীতিগতভাবে দ্রুত দু’হাজার চিকিৎসক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা চাই এক্ষেত্রে ৪২তম বিসিএসের অপেক্ষমাণ চিকিৎসকদের অগ্রাধিকার দেয়া হোক।
তারা বলেন, দেশে উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে চরম চিকিৎসক সংকট রয়েছে। সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে গ্রামীণ জনগোষ্ঠী তাদের মৌলিক অধিকার হিসেবে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। পর্যাপ্ত চিকিৎসক না থাকায় রোগীরা যথাযথ চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন না।
সাধারণ বিসিএসের নিয়োগ প্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষ উল্লেখ করে চিকিৎসকরা বলেন, বর্তমানে ৪৪, ৪৫ ও ৪৬তম বিসিএস প্রক্রিয়াধীন। ৪২তম বিসিএসের পরে আর কোনো চিকিৎসক নিয়োগ হয়নি। তাই দীর্ঘ প্রক্রিয়া এড়িয়ে দ্রুত নিয়োগ দিয়ে চিকিৎসক সংকট নিরসনের দাবি জানাচ্ছি আমরা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ও এবি পার্টির আহ্বায়ক মেজর (অব.) অধ্যাপক ডা. আব্দুল ওহাব মিনার, এবি পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, ডা. ফারজানা সাথী, ডা. মো. রেজওয়ান কবীরসহ ৪২তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ চিকিৎসকরা।
সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি) ৪৭তম বিসিএসের আবেদনের নতুন তারিখ চূড়ান্ত করেছে। গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী- আগামী ২৯ ডিসেম্বর সকাল ১০টা থেকে আবেদন করতে পারবেন প্রার্থীরা। তা চলবে আগামী ২০২৫ সালের ৩১ জানুয়ারি রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত। এবার প্রার্থীদের আবেদন ফি দুশ’ টাকা।
পিএসসির জনসংযোগ কর্মকর্তা এস এম মতিউর রহমান বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
এর আগে বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) পরীক্ষাসহ সব ধরনের সরকারি প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পরীক্ষার আবেদন ফি সর্বোচ্চ ২০০ টাকা নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। বিসিএসে মৌখিক পরীক্ষার নম্বর ২০০ থেকে কমিয়ে ১০০ করা হয়েছে বলেও জানানো হয়।
প্রসঙ্গত, ৪৭তম বিসিএসের আবেদন শুরুর একদিন আগে ৯ ডিসেম্বর (সোমবার) অনলাইনে আবেদন অনিবার্য কারণে স্থগিত করে পিএসসি।
সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা সংস্থানের বিষয় পর্যালোচনা করতে কমিটি গঠন করেছে সরকার। জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫-এর আওতাভুক্ত কর্মচারীদের জন্য প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিবকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের প্রবিধি অনুবিভাগ প্রবিধি-৩ শাখা থেকে এ সংক্রান্ত একটি কমিটি গঠন করে অফিস আদেশ জারি করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সরকারের কর্মে নিয়োজিত জাতীয় বেতন স্কেল, ২০১৫-এর আওতাভুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনুকূলে ‘মহার্ঘ ভাতা’ সংস্থানের বিষয়টি পর্যালোচনা করে সুপারিশ প্রণয়নের লক্ষ্যে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। উপ-সচিব সৈয়দ আলী বিন হাসানের সই করা আদেশে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিবকে আহ্বায়ক করে গঠিত কমিটিতে সদস্য হিসেবে রয়েছেন- জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, মহাহিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সচিব, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সচিব, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ এবং আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের প্রবিধি অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব।
কমিটির কার্যপরিধিতে বলা হয়েছে, কমিটি মহার্ঘ ভাতার প্রযোজ্যতা ও প্রাপ্যতার বিষয় পর্যালোচনা করবে এবং প্রয়োজনীয় সুপারিশ দাখিল করবে। কমিটি প্রয়োজনে এক বা একাধিক কর্মকর্তাকে কো-অপ্ট করতে পারবে।
বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটে বদলি ও রদবদলের ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন জেলার ১২ পুলিশ সুপারকে (এসপি) একযোগে বদলি করা হয়েছে।
বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পুলিশ-১ শাখার উপসচিব আবু সাঈদের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে এই বদলির আদেশ দেয়া হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, পুলিশ অধিদপ্তরের (টিআর) পুলিশ সুপার আবু সাইমকে রংপুরের পুলিশ সুপার, গাইবান্ধার কমান্ড্যান্ট (পুলিশ সুপার) ইন সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টার আবু সায়েম প্রধানকে চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার, পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলমকে ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার, এসবির পুলিশ সুপার জাকির হোসেনকে দিনাজপুরের পুলিশ সুপার, পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার শরিফ উদ্দীনকে বরিশালের পুলিশ সুপার, এসবির পুলিশ সুপার ফারজানা ইসলামকে রাজশাহীর পুলিশ সুপার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
এছাড়া পুলিশ অধিদপ্তরের পুলিশ সুপার ড. চৌধুরী মো. যাবের সাদেককে গাজীপুরের পুলিশ সুপার, এন্টি টেররিজম ইউনিটের ঢাকার পুলিশ সুপার ইয়াছমিন খাতুনকে মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার, এপিবিএন সদর দপ্তরের পুলিশ সুপার নিশাত অ্যাঞ্জেলাকে গাইবান্ধার পুলিশ সুপার, ঢাকা রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ের পুলিশ সুপার আসলাম শাহাজাদাকে হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার, পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার এহতেশামুল হককে ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার এবং এসবির বিশেষ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাফিউল সারোয়ারকে নওগাঁর পুলিশ সুপার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
জনস্বার্থে জারি করা এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।
মন্তব্য