অপেক্ষা যেন ফুরোয় না। এক এক করে ৩০ দিন পেরিয়ে গেছে। নিখোঁজ স্বজনদের পথ চেয়ে আছেন পরিবারের লোকজন। এক মাসেও না ফেরায় স্বজনরা মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে গেছেন, তারা ফিরবেন না। তারপরও চান সন্ধান, অন্তত লাশ কোথায় সেটি নিশ্চিত হতে সুগন্ধা নদীর পারে কাটে অনেকের সময়।
গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর ঢাকা থেকে বরগুনাগামী অভিযান-১০ লঞ্চ ঝালকাঠির পোনাবালিয়া ইউনিয়নের দেউরী এলাকায় সুগন্ধা নদীতে পৌঁছালে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এক মাস পার হয়েছে।
এক মাস পার হয়েছে, এখন পর্যন্ত ৩০ জনের নিখোঁজ থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। আর শনাক্ত হয়নি ২৪ লাশের পরিচয়। পরিচয় শনাক্তে ডিএনএ নমুনা দিয়ে অপেক্ষায় রয়েছেন স্বনজরা।
বরগুনা জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, সুগন্ধা ট্র্যাজেডিতে এখন পর্যন্ত ৪৮ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ২৪ ডিসেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৪১ জনের মরদেহ উদ্ধার হয়। আর চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও ছয়জন মারা যান।
চলতি মাসের ২ ও ৩ তারিখ ঢাকায় চিকিৎসাধীন দগ্ধ দুজন ও সবশেষ ২১ জানুয়ারি আরও একজন নারী ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান।
প্রশাসনের হিসাবে, ঘটনার পর বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দগ্ধ ও আহত হয়ে ভর্তি হয়েছিলেন ১০১ জন। এদের মধ্যে ১৯ জনকে ঢাকা মেডিক্যালের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়েছিল। যাদের মধ্যে এখন পর্যন্ত চার জনের মৃত্যু হয়েছে। বাকিরা নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র (আইসিইউতে) চিকিৎসাধীন।
নিহত ৪৮ জনের মধ্যে সনাক্ত না হওয়ায় ২৩ জনকে বরগুনায় ও একজনকে ঝালকাঠিতে দাফন করে জেলা প্রশাসন। বাকি ২৪ জনের মরদেহ শনাক্ত করে নিয়ে যান স্বজনরা।
ঘটনার পর বরগুনা জেলা প্রশাসন নিখোঁজ ব্যক্তিদের তালিকা করে। ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত জেলা প্রশাসনকে ৩০ জনের নিখোঁজ থাকার তথ্য দিয়েছেন স্বজনরা।
গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর সিআইডির ফরেনসিক বিভাগ ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ শুরু করে। তিন দিনের নিখোঁজ ৩০ জনের বিপরীতে ৪৮ জন স্বজনের নমুনা সংগ্রহ করে দলটি।
সে সময় সিআইডির নমুনা পরীক্ষক রবিউল ইসলাম জানিয়েছিলেন, পরীক্ষার ফল পেতে এক মাসের বেশি সময় লাগতে পারে।
ঘটনার এক মাস পূর্ণ হলেও নিখোঁজ ব্যক্তিদের কোনো তথ্য জানতে পারেননি স্বজনরা। এখনো অনেকেই শোক কাটিয়ে উঠতে পারেননি।
এ ছাড়া পরিবারের কর্মক্ষম ব্যক্তিদের হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন অনেকে। এদের মধ্যে কয়েকজন নারী ও শিশু রয়েছেন, যারা অভিভাবকহীন অবস্থায় আত্মীয়—স্বজনদের আশ্রয়ে রয়েছেন।
বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার চরদুয়ানী ইউনিয়নে ছোট টেংরা গ্রামের আফজাল হোসেনের মেয়ে ফজিলা আক্তার পপির এখনো খোঁজ মেলেনি। পপির মেয়ে লামিয়া তার নানা আফজাল হোসেনের কাছে রয়েছেন এক মাস থেকে। ১১ বছরের লামিয়া অপেক্ষা করছেন মা আসবে কবে।
আফজাল বলেন, ‘মেয়ে হারানোর শোক আর নাতনির ভবিষ্যৎ নিয়ে আমি চিন্তিত। আমি মারা গেলে আমার নাতনিকে কে দেখভাল করবে?’
বরগুনা সদর উপজেলা বুড়িরচর ইউনিয়নের হাকিম শরীফ, তার স্ত্রী পাখী বেগম ও শিশুসন্তান নাসরুল্লাহ এখনও নিখোঁজ।
হাকিম শরীফের তিন সন্তান ১৮ বছরের হাফসা বেগম, ১৪ বছরের সুমাইয়া আক্তার ও ১০ বছরের ফজলুল হক এখন অভিভাকহীন।
তাদের দেখভাল ও ভরণ পোষণের জোগান দেয়ার কেউ নেই।
হাফসা বলেন, ‘আত্মীয়-স্বজনদের সহায়তায় এহন মোগো তিন ভাইবুইনের খাওন পরন চলে। এই রহম কতদিন কেডা মোগো দ্যাকপে। কেউ আইস্যা এট্টু খোঁজ নেয়নাই, মোরা খাই নাকি না খাইয়া থাহি।’
বরগুনা সদর উপজেলার মোল্লাহোরা গ্রামের বাসিন্দা সুমন সরদার। ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তার স্ত্রী তাসলিমা, দুই মেয়ে সুমাইয়া আক্তার ও সুমনা আক্তার এখনো নিখোঁজ।
সুমন বলেন, ‘যাগো কবর দিয়া দেছে হেইয়ার মইদে মোর বউ মাইয়া পোলার কবর আছে কিনা, এহন খালি হেইডা জানতে অপেক্ষা করতে আছি। কবরডাও যদি দেহাইয়া দেতে পারত হেরা, তয় মুই কতকুন কাইন্দা কাইট্টা শান্ত্বনা পাইতাম।’
জেলা প্রশাসন জানায়, নিহদের মধ্যে শনাক্ত হওয়া ২৪ পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়েছে। তবে নিখোঁজ ব্যক্তিদের স্বজনদের কোনো সহায়তা এখনো দেয়া হয়নি।
বরগুনা জেলা নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন কামাল মনে করেন, লঞ্চে আগুনের ঘটনায় নিখোঁজ পরিবারগুলোর মধ্যে যারা অসহায় আছেন, রাষ্ট্রের উচিত তাদেরকে আর্থিক ও সামাজিক সুরক্ষা দেয়া।
তিনি বলেন, ‘এ ঘটনায় নিখোঁজ হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারগুলোর মধ্যে অনেক নারী ও শিশু এখন অভিভাবকহীন, কেউ কেউ আর্থিক টানপড়েনে মানবেতন জীবনযাপন করছেন। আমি মনে করি এই পরিবারগুলোর সুরক্ষায় রাষ্ট্রের পদক্ষেপ নেয়া জরুরি।’
বরগুনার জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘শনাক্ত হওয়া মরদেহের স্বজনদের আমরা প্রাথমিকভাবে ২৫ হাজার করে টাকা আর্থিক সহায়তা দিয়েছি। আমরা ডিএনএ পরীক্ষার নমুনা পেলেই ঠিক কতজন নিখোঁজ আছে, এটা শনাক্ত ও নিখোঁজ ব্যক্তিদেও পরিবারগুলোকে চিহ্নিত করতে পারব।
‘এরপর ‘সোশ্যাল সেফটি নেটের আওতায়’ বিশেষভাবে তাদের সহায়তার আওতায় আনা হবে। তবে তাদের সহায়তায় এখনো পর্যন্ত আলাদা কোনো কার্যক্রমের নির্দেশনা এখনো পাওয়া যায়নি।’
আরও পড়ুন:
চলতি গ্রীষ্ম মৌসুমের শুরু থেকেই উচ্চ তাপমাত্রায় আলোচনায় রয়েছে চুয়াডাঙ্গা জেলা। মৃদু, মাঝারি, তীব্র থেকে অতি তীব্র তাপমাত্রা দেখছে জেলাবাসী। মাঝে তাপমাত্রা সামান্য কমলেও ফের অতি তীব্র তাপপ্রবাহে পুড়ছে দেশের পশ্চিমের এই জেলা।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস জানায়, বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তার মানে জেলায় আবারও অতি তীব্র তাপপ্রবাহের কবলে পড়েছে এই জেলা।
আগের দিন বুধবারও এখানে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে। ওইদিন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তার আগের দিন তাপমাত্রা নেমেছিল ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। সেই তীব্র তাপপ্রবাহ বৃহস্পতিবার এসে অতি তীব্র তাপপ্রবাহে রূপ নিয়েছে।
জেলা জুড়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহে জনজীবনে অস্বস্তি আরও বেড়েছে। স্বস্তি মিলছে না কোথাও। তীব্র গরমে একটু স্বস্তি পেতে দিনের অধিকাংশ সময় মানুষ গাছের ছায়ায় আশ্রয় নিচ্ছে।
গরমের প্রভাবে বাড়ছে রোগবালাই। গরমজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে হাসপাতালে। তীব্র তাপদাহে ব্যাহত হচ্ছে কৃষিকাজ। শ্রমজীবী খেটে খাওয়া মানুষ কাজে যেতে পারছে না। নষ্ট হচ্ছে ধান, কলা, আম, লিচুসহ মৌসুমী ফসল।
গোপালপুর গ্রামের কৃষক হান্নান আলী বলেন, ‘এই তাপে মাটে উঠতি ফসল নষ্ট হয়ি যাচ্চি। আর রোদির তাতে মাটে দাঁড়ানু যাচ্চি না। ধানের ক্ষেতে বেশি সেচ লাগচি। তাও আবার দিনের বেলায় পাম্পে পানি উটচি না। রাতি দিতি হচ্চি।’
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, ‘আজ (বৃহস্পতিবার) তাপমাত্রা কয়েক ডিগ্রি বেড়েছে। জেলায় তীব্র তাপপ্রবাহ রূপ নিয়েছে অতি তীব্র তাপপ্রবাহে। সহসা বৃষ্টি হওয়ার কোনো পূর্বাভাস নেই। চলতি এপ্রিল মাসের শেষ দিন পর্যন্ত আবহাওয়ার এমন পরিস্থিতি থাকতে পারে।
আরও পড়ুন:কক্সবাজারের টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপে ঘরে ঢুকে এক নারী ও তার মেয়েকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
গত সোমবারের ঘটনায় বৃহস্পতিবার টেকনাফ মডেল থানায় অভিযোগটি করেন ছেনুয়ারা বেগম নামের নারী।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, গত সোমবার রাত দুইটার দিকে শাহপরীর দ্বীপের পূর্ব উত্তরপাড়া এলাকার নুর মোহাম্মদের স্ত্রী ছেনুয়ারা বেগমের ঘরের দরজা ভেঙে আয়ুব খানের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১৫ জন প্রবেশ করেন। তারা ছেনুয়ারা ও তার মেয়ের হাত-পা বেঁধে মুখে কাপড় ঢুকিয়ে এলোপাতাড়ি লাথি ও ঘুষি মারেন। একপর্যায়ে মা ও মেয়ে উভয়কে বিবস্ত্র করেন আইয়ুব ও তার লোকজন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, হামলাকারীরা ভয়ভীতি প্রদর্শন করে স্বর্ণ ও টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যান। যাওয়ার সময় তাদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের বিষয়ে কাউকে জানানো হলে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চলে যান৷
এ বিষয়ে ছেনুয়ারা বেগম বলেন, ‘সন্ত্রাসী আয়ুব খানের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১৫ জন যুবক আমার বাড়িতে ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রবেশ করে। পরে বাড়ি থেকে আমাকে জোরপূর্বক কয়েকজন লোক বের করে রশি দিয়ে বেঁধে রাখে এবং আমার মেয়েকে নির্যাতন করে স্বর্ণ ও টাকা নিয়ে যায়। তাদের বিরুদ্ধে ঘটে যাওয়া বিষয়ে কাউকে বললে মেরে ফেলা হবে বলে চলে যায়।’
থানায় অভিযোগের পর আয়ুব হুমকি দিয়েছে জানিয়ে ছেনুয়ারা বলেন, ‘সেই আয়ুব খান মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বলে, মামলা হলে কী হবে? জামিন নিয়ে বাহির হয়ে আমাকে আর আমার মেয়েকে মেরে ফেলা হবে বলে প্রাণনাশের হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। এ বিষয়ে আমি টেকনাফ মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি।’
এ বিষয়ে সাবরাং ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য রেজাউল করিম রেজু বলেন, ‘আমি বিষয়টি শুনেছি এবং সঠিক তদন্ত করে পুলিশকে সহযোগিতা করব।’
অভিযোগ তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ সোহেল বলেন, ‘আমি ঘটনার সত্যতা পেয়েছি এবং আমি মামলা করার জন্য ওসি বরাবর সুপারিশ করেছি।’
টেকনাফ মডেল থানার ওসি ওসমান গণি বলেন, ‘আরও গভীরভাবে তদন্ত করে দোষীদের গ্রেপ্তার করা হবে।’
আরও পড়ুন:চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে সোনামসজিদ স্থলবন্দরে দ্বায়িত্ব পালনকালে এক ট্রাফিক পুলিশ সদস্যের মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে মারা যাওয়া ওই ট্রাফিক ইন্সপেক্টরের নাম রুহুল আমিন। যশোরের বেলাপোল পৌরসভার শর্শার কোরবান আলীর ছেলে তিনি।
শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) সাজ্জাদ হোসেন জানান, সোনামসজিদ স্থলবন্দরের পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেডের মধ্যে ট্রাক পরিদর্শন শেষে দুপুর পৌনে ১টার দিকে নিজ অফিস কক্ষে ফিরে অসুস্থ হয়ে পড়েন রুহুল আমিন। এ সময় তাকে তার সহকর্মীরা দ্রুত শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে, চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষনা করেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিভিল সার্জন এসএম মাহমুদুর রশিদ জানান, ট্রাফিক ইন্সপেক্টর রুহুল আমিনকে উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে যখন নিয়ে আসা হয়, তার আগেই তার মৃত্য হয়েছে।
তিনি বলেন, হাসপাতালে যারা নিয়ে এসেছিলেন তারা বলেছেন তিনি তৃষ্ণার্ত ছিলেন, পানি খেতে চেয়ে ছিলেন। তবে তার মৃত্যু যে হিট স্ট্রোকে হয়েছে এটা নিশ্চিত করে এখনই বলা যাবে না।
মাহমুদুর রশিদ বলেন, এখন যেহেতু প্রচণ্ড গরম চলছে তাই এটার প্রভাব থাকতেও পারে। সেই সাথে তার আগের অন্য কোনো রোগের ইতিহাসও আমাদের জানা নাই। তাই হিট স্ট্রোকে মৃত্যু হয়েছে, এ সিদ্ধান্ত এখনই নেয়া যাবে না।
রাজশাহীর বাগমারায় ভাড়া বাসায় আটকে রেখে এক মাস ধরে এক তরুণীকে ধর্ষণ ও নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার রাতে উপজেলার তাহেরপুর পৌর এলাকার হরিফলার মোড়ের একটি বাসা থেকে ওই তরুণীকে উদ্ধার ও এ ঘটনায় অভিযুক্ত একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
আটক রাজু হোসেন (২৫) পেশায় চা দোকানি। তিনি তাহেরপুর পৌরসভার হরিফলা মহল্লার আবদুর রাজ্জাক শাহের ছেলে।
পুলিশ জানায়, অসুস্থ অবস্থায় তরুণীকে বাগমারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়ার পর রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) স্থানান্তর করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, ওই তরুণীর বাড়ি ফরিদপুর জেলায়। ফোনে রাজুর সঙ্গে তার পরিচয় ও প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত ২৪ মার্চ বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ফোনে ভুক্তভোগী তরুণীকে তাহেরপুরে নিয়ে আসেন রাজু। পরে তাকে নিয়ে ভাড়া বাসায় ওঠেন রাজু। সেখানে আটকে রেখে এক মাস ধরে রাজু ওই তরুণীকে ভয় দেখিয়ে ও মারধর করে ধর্ষণ করেন।
এক পর্যায়ে নির্যাতনের শিকার তরুণী অসুস্থ হয়ে পড়লে পাশের বাড়ির লোকজন টের পেয়ে স্থানীয় কাউন্সিলরকে জানান। তিনি থানায় খবর দিলে বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে পুলিশ ওই বাসা থেকে তরুণীকে উদ্ধার করে। পরে ওই এলাকা থেকে রাজুকে আটক করে পুলিশ। রাতেই তরুণী বাদী হয়ে অপহরণ, ধর্ষণ ও নির্যাতনের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে একটি মামলা করেন।
রাজশাহী জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও মুখপাত্র রফিকুল আলম জানান, মেয়েটার ওপর পাশবিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। আটক তরুণের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। পুলিশ তদন্ত করছে। তদন্ত শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে পদ্মা নদীতে বুধবার রাতের আঁধারে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সময় দুটি ড্রেজার জব্দ করেছে নৌ-পুলিশ।
মাওয়া নৌ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, রাতের আঁধারে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের খবর পেয়ে উপজেলার মেদিনীমণ্ডল ইউনিয়নের যশিলদিয়ায় বুধবার রাত দেড়টার দিকে পদ্মা নদীতে অভিযান চালানো হয়। ওই সময় নিয়ম অমান্য করে বালু উত্তোলন করায় ওই দুটি ড্রেজার জব্দ করা হয়।
তিনি আরও জানান, ড্রেজার জব্দ করার সময় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। জব্দকৃত ড্রেজার দুটির বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মেহেরপুরের গাংনীতে সেচ পাম্পের সুইচ দিতে গিয়ে বিদুৎস্পৃষ্ট হয়ে আবদুল হান্নান (৭৫) নামের কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলার বামন্দী ইউনিয়নের দেবীপুর দক্ষিণপাড়ায় বৃহস্পতিবার সকাল নয়টার দিকে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে।
প্রাণ হারানো আবদুল হান্নান দেবীপুর দক্ষিণপাড়ার খোদা বক্সের ছেলে।
এসব তথ্য নিশ্চিত করে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য হিরোক আহমেদ বলেন, ‘আজ সকালে আবদুল হান্নান নিজ গ্রামের মাঠে অবস্থিত সেচ পাম্পের সুইচ দিতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টের শিকার হয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন। পরে স্থানীয়রা মরদেহটি ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে নিজ বাড়ি দেবীপুরে নিয়ে আসে।’
বামন্দী পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) শরীফুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘বিদুৎস্পৃষ্টে মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে এসে প্রাথমিক তদন্ত শেষ করেছি। বতর্মানে মরদেহটি পরিবারের কাছে রয়েছে।’
নাটোরের বড়াইগ্রামে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে এক ভ্যানচালক নিহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার আগ্রান ঈদগাহ মাঠ এলাকায় বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কের এই দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ওই ভ্যানের এক যাত্রী।
নিহত মোজাহার আলী একই উপজেলার পারকোল গ্রামের মৃত শাহাদত আলীর ছেলে।
বনপাড়া হাইওয়ে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আলীমুল ইসলাম জানান, মহাসড়ক পার হওয়ার সময় দ্রুতগতির একটি ট্রাক ভ্যানটিকে চাপা দিয়ে চলে যায়। এতে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই ভ্যানচালক মোজাহার মারা যান। সেই সাথে ভানযাত্রী মিজান শেখ আহত হন।
তিনি বলেন, পরে স্থানীয়রা আহত মিজানকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
মন্তব্য