কনকনে ঠান্ডা সত্ত্বেও নিজ নিজ গরু ও গরুর গাড়ি নিয়ে সকাল থেকে ঝিনাইদহ সদরের বেতাই গ্রামে জড়ো হতে থাকেন কয়েক হাজার প্রতিযোগী। গরুর গাড়ির দৌড়ের আয়োজন হয় সেখানে।
রোববার দিনভর প্রতিযোগিতা শেষে জয়ী হন যশোরের বাঘারপাড়া থেকে যাওয়া নজরুল মুন্সি। পুরস্কার হিসেবে পেয়ে যান একটি টেলিভিশন।
দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে ঝিনাইদহের মহেশপুরের দোলন হোসেন ও যশোরের রহমত আলী পান বাইসাইকেল ও ফ্যান।
গান্না ইউনিয়নের বেতাই গ্রামে গরুর গাড়িদৌড়ের এই প্রতিযোগিতা হয় প্রতি বছরই। এবারেরটি আয়োজন করেছেন ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আতিকুল হাসান মাসুম। কয়েক হাজার দর্শকের উপস্থিতিতে গ্রাম হয়ে ওঠে উৎসবমুখর।
কালীগঞ্জ উপজেলার ত্রিলোচনপুর গ্রাম থেকে প্রতিযোগিতা দেখতে যান কলেজছাত্র রাব্বি হোসেন।
তিনি বলেন, ‘গ্রামবাংলার ঐহিত্য এই গরুর গাড়ির দৌড়। সত্যিই খুব মনোমুগ্ধকর। মানুষের মাঝে এক ধরনের আনন্দ কাজ করছে। প্রতি বছর এই আয়োজন অব্যাহত রাখা উচিত।’
ঝিনাইদহ শহর থেকে প্রতিযোগিতা দেখতে যাওয়া অন্তর মাহমুদ বলেন, ‘আমরা বন্ধুরা মিলে দেখতে এসেছি। খুবই ভালো লাগছে খেলা দেখতে। গ্রামের মানুষের মধ্যে প্রাণের সঞ্চার হয়েছে। খেলাটা সত্যিই উপভোগ্য। এ জন্য আয়োজকদের আমরা ধন্যবাদ জানাই।’
ঝিনাইদহ সদরের জিয়ালা গ্রাম থেকে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে আসেন কবির হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমরা সারা বছর চাষাবাদ করি। বছরের এ সময়ে অপেক্ষায় থাকি এই খেলায় অংশ নেয়ার জন্য। মানুষ আমাদের খেলা দেখে আনন্দ পায়। তা দেখে আমরাও আনন্দ পাই। আনন্দের জন্যই আমরা প্রতিযোগিতায় অংশ নিই।’
চেয়ারম্যান আতিকুলও জানান, গ্রামবাসীর আনন্দের জন্যই এই প্রতিযোগিতার আয়োজন। আগামীতে আরও বড় পরিসরে আয়োজন হবে বলে তিনি আশা করেছেন।
আরও পড়ুন:‘প্রথমে হাওর জুড়িয়া পানি আইলো, তাড়াহুড়া করিয়া গিয়া ধান কাটলাম। এখন গেল দুই দিনের বৃষ্টিতে ঘরেও পানি আইয়া কাটা ধান নষ্ট করি দিসে। এখন এই ভিজা ধান কিলান কিতা করতাম বুঝিয়া উঠতে পাররাম না।’
এভাবেই নিজের অসহায়ত্বের কথা বলছিলেন সুনামগঞ্জের লালপুর এলাকার কৃষক শফিক।
টানা ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের হাওর ও নদনদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে তা প্রবেশ করছে সুনামগঞ্জের নিম্নাঞ্চল এলাকাগুলোতে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন হাওরের মানুষেরা।
বুধবার সকাল থেকে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় সুনামগঞ্জের নদনদীর পানি কমতে শুরু করলেও এখনও বিপৎসীমার ওপর দিয়েই প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
এদিকে সরেজমিনে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার লালপুর গৌরারং, সাহেববাড়ি ঘাট এলাকায় ঘুরে দেখা যায় অনেক ঘরের মধ্যে পানি ঢুকে পড়েছে। অনেক কাঁচা সড়ক পানিতে ধসে গেছে। ওইসব এলাকায় এখন যোগাযোগের মাধ্যম হয়েছে নৌকা। সেই নৌকা করে ধান নিয়ে রাস্তায় শুকাচ্ছেন স্থানীয় লোকজন।
এ সময় দেখা যায়, যাদের ধান আর ঘর দুটোই পানিতে ডুবে গেছে তারা বেশি বিপাকে পড়েছেন। সামনের দিনগুলো কীভাবে কাটবে সেই শঙ্কায় দিন কাটছে হাওর এলাকার মানুষজনের।
লালপুর এলাকার জামিলা বেগম বলেন, ‘১০ কেয়ার (একর) জমিত ধান করছিলাম। মাত্র দুই কেয়ারের ধান তুলতে পারছি। এখন এই ধানগুলোও ভেজা। তিন দিন ধরি ধানগুলো পানিত ভিজেছে। আজ রোদ ওঠায় রাস্তার নিয়ে শুকাচ্ছি। ধান বেচলে এই টাকা দিয়া সংসার কয়দিনইবা চলব।’
সিলেটের শাহপরান থানায় কাজ করেন হোসেন মিয়া। ঈদের ছুটিতে বাড়ি আসেন তিনি। বাড়িতে এসে মাথায় হাত পড়েছে তার।
তিনি বলেন, ‘বড় শখ করে ধান করেছিলাম। আমার ধানগুলো বৈশাখ মাসেই পাকে। কিন্তু বাড়ি না থাকায় পাকা ধান মাঠেই ছিল। এখন ধান কাটতে বাড়িতে এসে এক দিনও রেস্ট নিতে পারিনি। এরই মধ্যে এক রাতের বৃষ্টি আমার পাকা ধান সব নষ্ট করে দিয়েছে।’
বাজারে পণ্যের দামে দিশেহারা হাওরের ক্ষতিগ্রস্তরা
একে তো ধানের ক্ষতি এর ওপর বাজারে পণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতিতে বিপাকে পড়েছেন হাওরের কৃষকরা। চাল ঘরে থাকলেও তেল, নুন আর সবজি কিনতেই হিমশিম খাচ্ছেন তারা।
গৌরারং এলাকায় ঘরে পানি ঢোকায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন নুর আলী। তিনি বলেন, ‘আমার ধান করার জমি নেই। মানুষের জমির ধান কেটে কিছু ধান পেয়েছিলাম। এর থেকে চাল করেছি। কিন্তু শুধু চাল দিয়ে কী করব। তেল, নুন, সবজিও তো লাগে। তেলের দামও ২০০ টাকা লিটার। দরিদ্ররা বাঁচবে কী করে।’
রথি দাশ নামে আরেক কৃষক বলেন, ‘ধানের দাম সরকার ঠিক করে দিলেও আমরা এই দামে ধান দিতে পারি না। আমাদের থেকে যে দামে ধান নেয়া হয় তা দিয়ে এক মাস ভালো করে খাওয়া যায় না। বাজারে যাইতেও ভয় লাগে। এর মধ্যে পানি বাড়ছে। ছোট ছেলে জাল নিয়ে মাছ ধরতে গেছে। মাছ আনলে ভাত খাইতে পারতাম।’
সুনামগঞ্জ জেলা কৃষি কার্যালয়ের উপপরিচালক বিমল চন্দ্র সোম বলেন, ‘গত তিন দিনের বৃষ্টিতে হাওরের অনেক পাকা ধান পানিতে ডুবে গেছে। এখন পর্যন্ত ৬৫০ হেক্টর জমির পাকা ধান পানিতে ডুবে গেছে।’
সুনামগঞ্জ পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘সব নদীর পানি এখনও বিপৎসীমার ওপর দিয়েই প্রবাহিত হচ্ছে। পানি খুবই ধীরে কমছে। পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে পানি আরও বাড়তে পারে।’
এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করা হচ্ছে। তাদের সহায়তা দেয়া হবে।’
আরও পড়ুন:পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় বাসচাপায় এক কলেজছাত্র নিহত হয়েছে। এর প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা।
মঠবাড়িয়া উপজেলার গুদিঘাটা এলাকায় পিজিএস মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে বুধবার সকাল ১০টার দিকে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
১৮ বছর বয়সী নিহত মো. মিলন তুষখালী মহিউদ্দিন মহারাজ কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তার বাড়ি মঠবাড়িয়া সদর ইউনিয়নের উত্তর মিঠাখালী গ্রামে।
গ্রাম পুলিশের চৌকিদার মফিজ মিয়া জানান, মিলন কলেজে যাওয়ার পথে রাস্তা পার হচ্ছিল। সে সময় চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা রোহান পরিবহনের একটি বাস তাকে চাপা দেয়। এরপর টিকিকাটা ইউনিয়ন পরিষদের সামনে বাস ফেলে চালক পালিয়ে যান।
স্থানীয় লোকজন বাসে আগুন ধরিয়ে দেয়। ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট গিয়ে ২০ মিনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
মিলন নিহতের খবরে পিরোজপুর-মঠবাড়িয়া সড়ক আটকে বিক্ষোভ করেন তার সহপাঠিরা। আধ ঘণ্টা পর পুলিশ তাদের সরিয়ে দেয়।
মঠবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলাম জানান, পুলিশ বাসটি জব্দ করেছে এবং মরদেহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠিয়েছে। তদন্তের পর বাসের চালক ও মালিকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করলে তাদের বুঝিয়ে সরানো হয়েছে।
আরও পড়ুন:ভুল প্রতিপাদ্যের ব্যানারেই বিশ্ব জাদুঘর দিবস-২০২২ পালন করল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি)।
এ বছরের প্রতিপাদ্য ছিল ‘দ্য পাওয়ার অব মিউজিয়ামস’। কিন্তু বুধবারের অনুষ্ঠানের র্যালির ব্যানারে লেখা ছিল ‘দ্য ফিউচার অব মিউজিয়ামস: রিকভার অ্যান্ড ইমাজিন’।
মূলত এ প্রতিপাদ্যটি গত বছরের। সেই প্রতিপাদ্যটিই এবারের অনুষ্ঠানে লেখা হয়েছে, তাও ভুলভাবে।
আন্তর্জাতিক জাদুঘর দিবস ২০২১-এর প্রতিপাদ্য ছিল ‘দ্য ফিউচার অব মিউজিয়ামস: রিকভার অ্যান্ড রিইমাজিন’। যেখানে চবির বুধবারের অনুষ্ঠানে ‘রিইমাজিনের’ জায়গায় লেখা হয়েছে ‘ইমাজিন’। একই ভুল ছিল জাদুঘর দিবসের র্যালির ক্যাপেও।
বুধবার বেলা ১১টায় বিশ্ব জাদুঘর দিবস-২২ উপলক্ষে একটি র্যালি বের হয়। র্যালিটি প্রশাসনিক ভবন থেকে চবি জাদুঘর ভবনের সামনে এসে শেষ হয়। র্যালি শেষে আলোচনা সভা হয়।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরিণ আখতার। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. বেনু কুমার দে।
ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল অব মিউজিয়ামসের (আইসিওএম) আহবানে ১৯৭৭ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক জাদুঘর দিবস পালিত হচ্ছে। ১৯৪৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় আইসিওএম। এর সদস্য হিসেবে বর্তমানে ১০৭ দেশের ২৮ হাজার জাদুঘর যুক্ত রয়েছে। প্রতি বছরই একটি স্লোগান সামনে রেখে এ দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরা হয়। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘দ্যা পাওয়ার অব মিউজিয়ামস’।
তবে জাদুঘর দিবসের প্রতিপাদ্যে এমন ভুল কেন? জানতে চাইলে কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ডিন ও জাদুঘরের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহবুবুল হক বলেন, ‘আমি একটা মিটিংয়ে আছি। কথা বলা সম্ভব না।’
জাদুঘরের সেকশন অফিসার আবদুস শুকুর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এটা আমরা অনেক যাচাই-বাছাই করে ইন্টারনেট থেকে নিয়েছিলাম। তবে আজকে সকালে দেখলাম সেটা পরিবর্তন করেছে। আমরা বিষয়টা জানতাম না। নতুনটা আমরা আজকেই দেখছি।’
জাদুঘর শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ হোসেন বলেন, ‘আমরা দুই দিন আগে ব্যানার ও দাওয়াত কার্ড করেছি। পরশু পর্যন্ত ২২ সালের থিমে আমরা দেখেছিলাম ‘দ্যা ফিউচার অব মিউজিয়ামস: রিকভার অ্যান্ড ইমাজিন’ লেখা ছিল। আজকে আমরা দেখেছি থিম চেঞ্জ হয়েছে।’
সকালে পরিবর্তন করা হয়নি কেন? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সকালে আমাদের নজরে আসেনি। আপনি বলার পর বিষয়টা আমরা দেখলাম।’
চবি আইন অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক জাকির হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এটা খুবই দুঃখজনক। বিশ্ববিদ্যালয় তার যে নির্ধারিত দায়িত্ব, দক্ষতা ও যোগ্যতা এ সমস্ত জায়গা থেকে আস্তে আস্তে সরে যাচ্ছে। এটা যে প্রথমবারের মতো ভুল হয়েছে এমন নয়। এর আগেও হয়েছে।
‘শুধু একটা ঘটনা নয়, একের পর এক ধারবাহিকভাবে এমন ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। তার মানে তাদের যোগ্যতা ও দক্ষতার অভাব রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘একবার ঘটলে সেটা মানবিক ভুল। কিন্তু একই ঘটনা বারবার ঘটা দায়িত্বহীনতার পরিচয়। তারা দায়িত্ব এড়ানোর জন্য বারবার বলে আজকে দেখেছি। এটা দায়িত্বহীনতা।’
আরও পড়ুন:বর্ষার আগেই সিলেটের নদীগুলো খনন করা হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
তিনি বলেন, ‘সিলেটের প্রধান দুই নদী সুরমা ও কুশিয়ারার তলদেশ ভরাট হয়ে গেছে। এই দুই নদী খনন করতে হবে। এ ব্যাপারে আমাদের সরকার ও প্রধানমন্ত্রী খুবই আন্তরিক।’
নগরের চালিবন্দর এলাকায় বুধবার দুপুরে একটি আশ্রয়কেন্দ্রে বন্যাদুর্গতদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘সিলেটে এই মৌসুমে সব সময়ই ঢল নামে। আমরা ছেলেবেলাতেও এমনটি দেখেছি। কিন্তু পানি আটকে থাকত না। চলে যেত। কারণ আমাদের আগে অনেক পুকুর ও দিঘি ছিল। প্রত্যেক বাড়ির সামনে পুকুর ছিল। আর সিলেটকে বলা হতো দিঘির শহর। কিন্তু এখন আমরা নগরের ভেতরের সব পুকুর-দিঘি ভরাট করে বড় বড় বিল্ডিং করেছি। হাওরগুলো ভরাট করে ফেলেছি।
‘এ ছাড়া প্রধান নদীগুলোর তলদেশ ভরাট হয়ে গেছে। খালি মাঠগুলো ভরাট হয়ে গেছে। এ কারণে পানি নামতে পারছে না। যেকোনো দুর্যোগেই সিলেটের জন্য এটা একটি ভয়ের কারণ।’
মন্ত্রী নগরের ভেতরের পুকুর-দিঘিসহ জলাশয়গুলো রক্ষায় সবাইকে আন্তরিক হওয়ার আহ্বান জানান। এ ছাড়া ড্রেনগুলো খনন করা ও আরও বড় করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, প্রাকৃতিক সিস্টেমটাকে নষ্ট করা যাবে না।
বন্যার্তদের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এই পানি বেশি দিন থাকবে না। দ্রুতই নেমে যাবে। ফলে কয়েকটা দিন কষ্ট করতে হবে। এই সময়ে সরকার আপনাদের পাশে আছে।’
ত্রাণ বিতরণকালে উপস্থিত ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুল হক।
এ সময় তিনি বলেন, ‘সিলেটে বন্যাদুর্গত এলাকায় ২৫ লাখ টাকা ও ২০০ টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। প্রয়োজনে আরও বরাদ্দ দেয়া হবে।
‘দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকার প্রস্তুত আছে। আমরা আজকে সিলেটের দুর্গত এলাকা ঘুরে দেখব। প্রশাসনের কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করব। সবার সঙ্গে আলাপ করে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে জানব। এরপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘প্রতি বছরই এই অঞ্চলে ঢল নামে। কিন্তু এবার ব্যাপক আকারে ঢল নামছে। সিলেটের উজানে মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে। ফলে এবার বন্যা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে।’
বন্যা মোকাবিলায় আগামী দিনে এই অঞ্চলের নদ-নদীগুলোর নাব্য ফিরিয়ে আনা হবে বলে জানান এই প্রতিমন্ত্রীও। তিনি বলেন, নদীর পানি ধারণক্ষমতা কমে গেছে। এই নদীগুলো ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের জন্য প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
চালিবন্দরে ত্রাণ বিতরণ শেষে দুই মন্ত্রী মিরাবাজার এলাকার একটি আশ্রয়কেন্দ্রে ত্রাণ বিতরণ করেন। এরপর সিলেট সদর উপজেলার বিভিন্ন বন্যাদুর্গত এলাকা পরিদর্শন করেন।
এ সময় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব মো. কামরুল হাসান, সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার নিশারুল আরিফ, সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিধায়ক রায় চৌধুরী, সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেনসহ উপস্থিত ছিলেন আরও অনেকে।
আরও পড়ুন:বিয়ের দু সপ্তাহের মাথায় স্বামীর সঙ্গে বিয়েবিচ্ছেদ করেন নিহত শিশু সামিউলের মা। এর কারণও ছিল সামিউল। বিয়েবিচ্ছেদের ঘটনায় ক্ষুব্ধ হন ফজলুল হক। তাই প্রতিশোধ নিতে খুন করেন শিশু সামিউলকে।
বুধবার বেলা ১১টার দিকে নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী।
এর আগে মঙ্গলবার সকালে বগুড়ার শাজাহানপুরের লাউয়ের ক্ষেত থেকে ৮ বছরের শিশু সামিউলের গলায় ফাঁস দেয়া মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় বিকেলে সামিউলের সৎ বাবা ফজলুল হককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে ও সহযোগিতা করার অপরাধে অনীতা রাণীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ফজলুল শাজাহানপুরের খরনা ইউনিয়নের কমলাচাপড় গ্রামের এবং অনীতা চেলোগ্রামের বাসিন্দা। তারা একসঙ্গে দিনমজুরের কাজ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে এসপি সুদীপ কুমার জানান, সামিউলের বাবা জাহাঙ্গীরের সঙ্গে সম্পর্ক শেষ করে মা সালেহা বেগম গত এপ্রিল মাসের শেষের দিকে ফজলুল হককে বিয়ে করেন। কিন্তু বিয়ের পর থেকে ফজলুল সৎ ছেলে সামিউলকে মেনে নিতে পারেননি।
তিনি প্রায়ই সামিউলকে সালেহার মা ও বোনের কাছে রেখে আসতে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন। ফজলুল প্রায়ই রাতের বেলা সামিউলকে ঘরের বাইরে রেখে দরজা বন্ধ করে দিতেন। এমনকি খাবার না দিয়ে তাকে অনাহারে রাখতেন। ঈদে সামিউল তার মায়ের সঙ্গে বেড়াতে যেতে চাইলে ফজলুল তাদের মারধর করে সালেহার বোনের বাড়ি পাঠিয়ে দেন।
এসব কারণে গত ১১ মে সালেহা ফজলুলের সঙ্গে বিয়েবিচ্ছেদ করেন। এ ঘটনার পর থেকেই ক্ষুব্ধ হন ফজলুল।
এসপি আরও জানান, পরে ১৬ মে সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সামিউলের মাদ্রাসায় যান ফজলুল। সেখানে গিয়ে সামিউলকে নিয়ে যাওয়ার কথা জানান। কিন্তু মাদ্রাসার নিয়ম অনুযায়ী মায়ের অনুমতি ছাড়া ছাত্রদের বাইরে যাওয়ার নিষেধ থাকায় অসম্মতি জানান মাদ্রাসার শিক্ষক আবু মুছা।
এ সময় পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী অনীতা রানী সামিউলের মা সেজে মোবাইলে কথা বলেন মাদ্রাসা শিক্ষকের সঙ্গে। কথা বলে নিশ্চিত হলে সামিউলকে ফজলুলের সঙ্গে যেতে দেন মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ।
এর পরপরই ফজলুল সামিউলকে মানিকদিপা এলাকার লাউ ক্ষেতে নিয়ে যান। সেখানে সামিউলের গলায় সুতার রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন।
সুদীপ কুমার বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ড ফজলুল একাই করেছে। অনীতা মোবাইলে নকল মা সেজে ফজলুলকে সহযোগিতা করায় অপরাধ করেছে। তবে অনিতা হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে জানতেন না। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দুইজনের নামে মামলার প্রস্তুতি চলছে।’
আরও পড়ুন:খুলনা রেলওয়ের স্টেশনের পাচঁ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে কালোবাজারে টিকিট বিক্রির অভিযোগ এনে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।
স্টেশন মাস্টার মানিক চন্দ্র সরকার গত ১৬ মে খুলনা রেলওয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরিটি করেন।
নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করে খুলনা রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খবির আহমেদ জানিয়েছেন, অভিযোগ তদন্তের অনুমতি চেয়ে আদালতে আবেদন করা হয়েছে।
অভিযুক্তরা হলেন খুলনা রেল স্টেশনের টিএক্সআর বাইতুল ইসলাম, আইডাব্লিউ জাফর মিয়া ও তোতা মিয়া, সহকারী স্টেশন মাস্টার মো. আশিক আহমেদ ও মো. জাকির হোসেন। এছাড়াও অজ্ঞাত পরিচয় ৪/৫ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
সাধারণ ডায়েরিতে বলা হয়েছে, অভিযুক্তরা বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের নামে ভুয়া টিকিটের চাহিদা দিয়ে টিকিট সংগ্রহ করেন। টিকিট না দিলে বহিরাগতদের ডেকে এনে তাকে চাপ দেন। সম্প্রতি তাদের চাহিদা এতটা বেড়েছে যে, টিকিট না পেলে স্টেশন ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, মারধর করার মত অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটানোর পাঁয়তারা করছেন।
অভিযুক্তরা সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে এই ধরনের কর্মকাণ্ডে লিপ্ত রয়েছেন। স্টেশনে শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদে নির্দেশে এই জিডি করা হয়েছে।
ওসি খবির আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সাধারণ ডায়েরিটি তদন্তের অনুমতি চেয়ে আদালতে আবেদন করা হয়েছে। অনুমতি পেলে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
আরও পড়ুন:গোপালগঞ্জ সদরে পানিতে ভাসমান হাত-পা বাঁধা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
উপজেলার মালেঙ্গায় মধুমতী বিলরুট চ্যানেল থেকে বুধবার বেলা ১১টার দিকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত ব্যক্তির নাম বেলাল হোসেন। তিনি কাশিয়ানী উপজেলার কুমরিয়া গ্রামের বসার বিশ্বাসের ছেলে।
এর আগে উলপুর ইউনিয়নের নারী মেম্বার ফারজানা বেগম মরদেহটি ভাসতে দেখে ৯৯৯-এ ফোন দেন।
বৌলতলি পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক এ এইচ এম জসিমউদ্দিন নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। তাকে হত্যা করে মরদেহ গুম করতে হাত-পায়ে ছয়টি ইট বেঁধে পানিতে ডুবিয়ে দেয়া হয়। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’
মন্তব্য