আবাসিক হল চালু রেখে সশরীরে পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
জরুরি অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভায় শনিবার বেলা ১১টায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
এ সময় ঘোষিত ও চলমান সেমিস্টার, বর্ষ ফাইনাল এবং ল্যাব পরীক্ষা সশরীরে নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. খোরশেদ আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, শিক্ষার্থীদের সেশনজট ও শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখার কথা চিন্তা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস কার্যক্রম অনলাইনে হবে। তবে ঘোষিত বা চলমান সেমিস্টার/বর্ষ ফাইনাল, ল্যাব পরীক্ষাগুলো স্বাস্থ্যবিধি মেনে আপাতত সশরীরে হবে।
সভায় জানানো হয়, মিডটার্ম পরীক্ষা ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অনলাইনে হবে। পরে মিডটার্মের বিষয়ে বিভাগ সিদ্ধান্ত নেবে।
এ ছাড়া আবাসিক হল খোলা থাকবে। পরীক্ষার রুটিন অনুযায়ী, শিক্ষার্থীদের জন্য পরিবহন সেবাও চালু থাকবে। প্রথম বর্ষে ভর্তি কার্যক্রম যথারীতি চলবে। ক্লাস কার্যক্রমের বিষয়ে পরে জানিয়ে দেয়া হবে।
সরকারি প্রজ্ঞাপন ও শিক্ষার্থীদের সমস্যাগুলো মাথায় রেখে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এসব সিদ্ধান্ত নেয়।
করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় শুক্রবার থেকে আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের নির্দেশ দেয় সরকার। এদিন সংক্রমণ রোধে পাঁচটি জরুরি নির্দেশনা জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
আরও পড়ুন:১৮ বছর পর সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে সিলেট। উজার থেকে নেমে আসা ঢল সুরমার দুই তীর ছাপিয়ে ডুবিয়ে দিয়েছে সিলেট শহর। দীর্ঘদিন নদী খনন না করায় বেশি ভুগতে হচ্ছে শহর ও সে অঞ্চলের সুরমা তীরবর্তী মানুষকে। অথচ ১০ বছরে সিলেটের সুরমা নদী খননে চারটি প্রকল্প নেয়া হয়েছে। উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনাগুলো (ডিপিপি) মন্ত্রাণলয়ে পাঠানো হয়। এরপর তিনবার সমীক্ষাও হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সুরমা খননে নেয়া কোনো প্রকল্পই আলোর মুখ দেখেনি।
সবশেষ ২০২০ সালে আভ্যন্তরীন নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের ড্রেজিং বিভাগ সুরমা খননে ৩ হাজার কোটি টাকার একটি প্রকল্প পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। সেটিও এখন পর্যন্ত পাস হয়নি।
তারও আগে পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে সুরমা খননে তিনটি ডিপিপি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছিল।
সিলেটে চলমান বন্যা ও গত মাসে হাওরে অকাল বন্যায় ফসলহানির পর ফের আলোচনায় এসেছে এই অঞ্চলের প্রধান নদী সুরমা খননের বিষয়টি। এই দুই বন্যার জন্যই সুরমার নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে যাওয়াকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা। সিলেটের দুঃখ হয়ে উঠেছে ভরাট ও দখল হয়ে যাওয়া নদীটি।
দীর্ঘদিনই ধরেই স্থানীয়রা নদী খননের দাবি জানিয়ে আসছেন। এবার উপর্যোপুরি বন্যার পর সরকারের কর্তাব্যক্তিরা বলছেন, সুরমা নদী খনন করা হবে।
গত ১৮ মে সিলেটে বন্যাদুর্গত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্য ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবুল মোমেনও বলেন, ‘সুরমা নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানি আটকে থাকছে। এই নদী খনন করতে হবে।’
আগামী বর্ষার আগেই নদী খনন করা হবে উল্লেখ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সিলেটের নদীগুলো খননের ব্যাপারে আমাদের সরকার ও প্রধানমন্ত্রী খুবই আন্তরিক। আমরা নদী খননের পরিকল্পনা নিয়েছি। আগামী বর্ষার আগেই নদীগুলো খনন করতে হবে।’
তবে এখন পর্যন্ত নদী খনন প্রকল্প মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন না পাওয়ায় বর্ষার আগে আদৌ নদী খনন সম্ভব হবে কী না এ নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
এই সময়ের মধ্যে নদী খনন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সুরমা নদী একদিনে ভরাট হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে পলি জমে এটি এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে। আরও আগেই এ নদী খননের উদ্যোগ নেয়ার প্রয়োজন ছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত মন্ত্রণালয় থেকে নদী খননের প্রকল্পই পাস হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘সরকারি প্রকল্পে যে জটিল আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া, তাতে প্রকল্প পাস হয়ে কাজ শুরু হতেই বছর পেরিয়ে যায়। ফলে আগামী বর্ষার আগে খনন কাজ শেষ হওয়া কোনভাবেই সম্ভব নয়। তবু আমরা চাই, দ্রুততম সময়ের মধ্যে যেন খনন কাজটা শুরু হয়।’
১০ বছরে চার প্রকল্প
২০১২ সালে সুরমা নদী খননে সর্বপ্রথম একটি প্রকল্প নেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। পাউবোর সিলেট সিলেট কার্যালয় থেকে এই প্রকল্প প্রস্তাবনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। প্রস্তাবের পর নদী খননে সমীক্ষা চালানো হয়। সমীক্ষার পর নদী খননে উদ্যোগ নেয়ার কথা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল। তবে এরপর এ ব্যাপারে আর উদ্যোগ নেয়া হয়নি।
২০১৭ সালে ৩০০ কোটি টাকার আরেকটি প্রকল্প পাঠায় পাউবো। আর ২০১৯ সালে সুরমা ও কুশিয়ারা নদী খনন, বাঁধ নির্মাণ ও নদী তীর প্রতিরক্ষার জন্য ২ হাজার ২০০ কোটি টাকার একটি ডিপিপি পাঠায় পাউবো। সেবারও সমীক্ষা চালানো হয়। তবে সমীক্ষাতেই আটকে যায় কার্যক্রম।
এরপর ২০২০ সালে আভ্যন্তরীন নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) সুরমা খননে ৩ হাজার কোটি টাকার একটি প্রকল্প প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। ওই বছর তারা সমীক্ষাও চালায়। তবে এই প্রকল্পও এখন পর্যন্ত মন্ত্রণালয়ে আটকে আছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সিলেট কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী আসিফ আহমদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘নদী খননে আমরা তিনটি ডিপিপি মন্ত্রণালয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু প্রকল্পগুলো পাস হয়নি।’
আর বাংলাদেশ আভ্যন্তরীন নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের ড্রেজিং বিভাগের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (পুর) ছাইদুর রহমান বলেন, ‘আমরা ৩ হাজারের কিছু বেশি টাকার একটা প্রকল্প জমা দিয়েছিলাম। অনেকদিন আগেই এটি পরিকল্পনা কমিশনে জমা হয়েছিল। তবে এখনো পাস হয়নি।’
পাউবোর এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘সুরমা ও কুশিয়ারা ভারত থেকে উৎপত্তি হয়েছে। সুরমার প্রথম ২৫ কিলোমিটার ভারত-বাংলাদেশের সীমান্ত লাইন দিয়ে গেছে। ফলে উৎসমুখ থেকে খননের জন্য যৌথ নদী কমিশন থেকে উদ্যোগ নিতে হবে।
‘যৌথ নদী খনন করতে হলে দুই দেশের যৌথ সম্মতি ও চুক্তির প্রয়োজন হয়। ভারতের সাথে চুক্তি না হওয়ায় এতোদিন আটকে ছিল এ নদী খনন। তবে সম্প্রতি যৌথ নদী প্রটেশনের আওতায় ভারতের সাথে চুক্তি হয়েছে।’
পাউবো না বিআইডব্লিউটিএ- কারা খনন করবে
২০১৯ সালে পাউবোর সিলেট কার্যালয় থেকে সুরমা ও কুশিয়ারা নদী খনন, বাঁধ নির্মাণ ও নদী তীর প্রতিরক্ষার জন্য ২ হাজার ২০০ কোটি টাকার একটি ডিপিপি পাঠানো হয়। এরপর ২০২০ সালে বিআইডব্লিউটিএ সুরমা ও কুশিয়ারা নদীতে সমীক্ষা চালায়।
পাউবোর সিলেট কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী আসিফ আহমদ বলেন, ‘সমীক্ষা করার পর বিআইডব্লিউটিএ থেকে আমাদের জানানো হয়, আমাদের ডিপিপি থেকে খননের বিষয়টি বাদ দেয়ার জন্য। এরপর তারা ড্রেজিংয়ের জন্য আলাদা একটি প্রকল্প প্রস্তবনা পরিকল্পনা কমিশনে জমা দিয়েছে। তারাই সুরমা ও কুশিয়ারা খনন করবে।’
আসিফ আহমদ বলেন, ‘পরে ২০২১ সালে আমরা নদী খননের বিষয়টি বাঁধ দিয়ে ৪ হাজার কোটি টাকার আরেকটি ডিপিপি প্রেরণ করেছি। এটিও এখন সমীক্ষার পর্যায়ে আছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি কিছুদিন আগেও বিআইডব্লিউটিএ’র কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেছিলাম। তারা জানিয়েছেন, তারাই ড্রেজিং করবে।’
এ প্রসঙ্গে বিআইডব্লিউটিএ’র ড্রেজিং বিভাগের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (পুর) ছাইদুর রহমান বলেন, ‘আমরা যেহেতু প্রকল্প জমা দিয়েছি তাহলে আমরাই কাজ করব। কিন্তু আগের বাজেট এখন পুণর্মূল্যায়ন করা লাগতে পারে।’
সুনামগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বর্তমানে যুক্তরাজ্য সফরে থাকায় এ ব্যাপারে তার বক্তব্য জানা যায়নি।
তবে গত ২ মে নিজ নির্বাচনি এলাকায় বন্যায় ফসলহানি পরিদর্শনে এসে তিনি বলেন, ‘অকাল বন্য ও ঢল মোকাবিলায় আগামীতে এই অঞ্চলের নদনদী খনন করা হবে।’
উৎসমুখই ভরাট
প্রায় ২৪৯ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যে সুরমা দেশের দীর্ঘতম নদী। ভারতের বরাক নদী সিলেটের জকিগঞ্জের অমলসীদ এসে সুরমা ও কুশিয়ারা নামে দুই ভাগে বিভক্ত হয়েছে। বাংলাদেশে প্রবেশ করে সুরমা সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা ও কিশোরগঞ্জের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে মেঘনায় মিলিত হয়েছে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) তথ্য মতে, সুরমার উৎসমুখই ভরাট হয়ে গেছে। এ নদীর উৎসমুখের ৩২ কিলোমিটারে জেগেছে ৩৫টি চর।
বাপা সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কীম বলেন, ‘উজান থেকে ঢলের সাথে বালু ও পলি নামে। তাই নিচের দিক খননের চেয়ে উজানে খনন করা বেশি জরুরি।’
কেবল উৎসমুখই নয়, ঢলের সাথে আসা বালিও পলিতে ভরাট হয়ে গেছে প্রায় পুরো সুরমা নদী। শুষ্ক মৌসুমে জকিগঞ্জ থেকে সিলেট পর্যন্ত নদীতে শতাধিক স্থানে জেগে ওঠে চর। দক্ষিণ সুরমা, গোলাপগঞ্জ, কানাইঘাট, টুকেরবাজারসহ কয়েকটি স্থানে নদীর জেগে ওঠা চরে শুষ্ক মৌসুমে সবজি চাষও করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এ সময় বন্ধ হয়ে যায় নৌ যান চলাচল।
প্রায় পুরো নদী ভরাট হয়ে যাওয়ায় ২০১৮ সালে সুনামগঞ্জের কিছু অংশ খনন করা হলেও তাতে কোন সুফল পাওয়া যায়নি।
পুরো নদী খননের দাবি জানিয়ে সুজন সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘কেবল নগরের অংশ নয়, পুরো নদী খনন করতে হবে। না হলে কোন উপকার হবে না।’
আরও পড়ুন:রংপুরের বদরগঞ্জের দামুদারপুর হাটখোলা বাজারে এক পরিবারের সবাইকে অচেতন করে এবং স্বামীর হাত-পা বেঁধে স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে।
ঘটনাটি শুক্রবার গভীর রাতে ঘটলেও শনিবার সন্ধ্যার পর তা জানাজানি হয়।
এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে মিলন হোসেন নামে এক তরুণকে শনিবার রাত ৮টার দিকে আটক করেছে পুলিশ।
গৃহবধূর স্বামীর বরাত দিয়ে বদরগঞ্জ থানার ওসি হাবিবুর রহমান বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন।
ওসি জানান, নির্যাতনের শিকার গৃহবধূর স্বামী আর ঘটনার সঙ্গে জড়িতরা একে অপরের বন্ধু। শুক্রবার দিনের বেলায় সারাদিন তারা একসঙ্গে ঘোরাঘুরি করেন। রাতে ওই গৃহবধূর শাশুড়ি তাদের রান্না করে খাওয়ান। কিন্তু কৌশলে ওই গৃহবধূ, তার শ্বশুর-শাশুড়ি আর স্বামীর খাবারে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে দেয় ধর্ষণে অভিযুক্তরা।
ভাত খাওয়ার পর তারা তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে ঢুলতে থাকেন এবং নিজেদের কক্ষে ঘুমাতে যান। রাত ১টার দিকে ওই গৃহবধূর কক্ষে প্রবেশ করে অভিযুক্ত তিনজন। এ সময় তারা তাদের বন্ধুর হাত-পা রশি দিয়ে বেঁধে মুখে টেপ লাগিয়ে তার প্রায় অচেতন স্ত্রীকে ধর্ষণ করে।
এক পর্যায়ে জ্ঞান ফিরে আসলে ওই গৃহবধূ ও তার স্বামী চিৎকার শুরু করেন। চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে এলে অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়।
শনিবার সকালে ভুক্তভোগী গৃহবধূসহ তার স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়িকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে ধর্ষণের শিকার গৃহবধুকে দিনাজপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
এক প্রতিবেশী বলেন, ‘মধ্যরাতে ওই বাড়িতে কেমন যেন শব্দ হচ্ছিল। কান খাড়া করি শুনি, মানুষের গোঙানি। একটু পর চিৎকার করোছে। যায়া দেখি, বউটা খাটের ওপরে পড়ি আছে। স্বামীটার হাত-পা দড়ি দিয়ে বান্ধা। স্বামী ও স্ত্রী দুইজনই পাগলার মতো কেমন যেন করোছে। তখনও পাশের ঘরোত শাশুড়ি অজ্ঞান হয়া আছে।’
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘ওই পরিবারের সদস্যরা বিষাক্ত কিছু খেয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে ওই গৃহবধূকে তার বাবা উন্নত চিকিৎসার কথা বলে নিয়ে গেছেন।’
নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধুর বাবা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যারা আমার মেয়ের ক্ষতি করছে, তাদের বিচার চাই।’
বদরগঞ্জ থানার ওসি বলেন, ‘বিষয়টি আমরা জানার পরই ঘটনাস্থলে যাই। প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতাও মিলেছে। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে মিলন হোসেন নামে এক তরুণকে আটক করা হয়েছে। জড়িত অন্য ব্যক্তিদের ধরতে পুলিশ মাঠে আছে।’
তিনি জানান, এ ঘটনায় ওই গৃহবধূর স্বামী মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
আরও পড়ুন:খুলনার ডুমুরিয়ায় বজ্রপাতের বিকট শব্দে ভয় পেয়ে একটি একতলা ভবনের ছাদ থেকে পড়ে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে উপজেলার শোভনা ইউনিয়নের বারুইকাটি এলাকায় অনিমেষ মণ্ডলের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
২৫ বছর বয়সী নিহত শ্রমিকের নাম সাগর মণ্ডল। তার বাড়ি খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনি ইউনিয়নের কাশিমনগরে। তিনি পেশায় একজন রাজমিস্ত্রী।
বাড়ির মালিক অনিমেষ মণ্ডল বলেন, ‘বিকেলে আমার একতলা ভবনের ছাদে ওই শ্রমিক কাজ করছিলেন। এ সময় বৃষ্টি আর ঝড়ো বাতাস হচ্ছিল। তখন ভবনের পাশে থাকা একটি তালগাছের ওপর বজ্রপাত হয়। এতে ওই শ্রমিক ভয় পেয়ে দ্রুত নিচে নামার চেষ্টা করেন এবং সিঁড়ির কাছ থেকে পা পিছলে নিচে পড়ে যান। এতে মাথায় প্রচণ্ড আঘাত পেয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান সাগর।’
ডুমুরিয়া থানার ওসি কনি মিঞা জানান, ঘটনাটি জানার পর সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।
এর আগে শনিবার সকালে খুলনা মহানগরীর মিস্ত্রিপাড়া বাজার এলাকায় এক ভবনের ছাদ থেকে পড়ে মো. রেজাউল নামে আরেক শ্রমিক নিহত হন।
আরও পড়ুন:নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী বাজারে সন্ত্রাসীদের ছুরিকাঘাতে এক তরুণ নিহত হয়েছেন।
শনিবার সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে চৌমুহনী বাজারের মেইন রোডে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তিন যুবককে আটক করেছে বেগমগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ।
নিহত ১৮ বছরের আয়মন পৌরসভার গণিপুর গ্রামের নুরনবীর ছেলে। আয়মন তার বাবার সঙ্গে চৌমুহনী বাজারে ওষুধের দোকানে ব্যবসা করতেন।
আটক তরুণরা হলেন ২১ বছরের পাভেল, ২০ বছরের রাকিব ও নীরব। তারা চৌমুহনী পৌরসভার পৌর করিমপুর গ্রামের বাসিন্দা।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে বেগমগঞ্জ মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘গ্রেপ্তার তিন তরুণ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে একাধিক মামলার আসামি। ইতিপূর্বে একটি মামলায় পাভেলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এই ঘটনায় ওই তিন তরুণ আয়মনকে দায়ী করেন।
‘আজ সন্ধ্যায় তারা আয়মনদের ওষুধের দোকানে সামনে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে তার বুকে ছুরিকাঘাত করে। পরে স্থানীয়রা তাকে একটি প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।’
পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে তিন তরুণকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।’
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বেগমগঞ্জ সার্কেল) নাজমুল হাসান রাজিব জানান, আটক রাকিব তার সহযোগীদের নিয়ে তিন মাস আগে আয়মনের কাছে চাঁদা দাবি করেন। তখন তিনি থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। পরে পুলিশ আয়মনের অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে রাকিবকে ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায়।
‘এরপর তিন মাস জেল খেটে রাকিব গত ১৯ মে বৃহস্পতিবার জামিনে বের হন। বের হয়ে প্রতিশোধ নেয়ার জন্য রাকিব ও তার সহযোগী পাভেল এবং রিমন শনিবার রাত পৌনে সাতটার দিকে আয়মনকে ছুরিকাঘাত করেন। পরে স্থানীয়রা তাকে লাইফ কেয়ার হাসপাতালে নেয়ার পথে আয়মন মারা যান।’
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরও জানান, ঘটনার পরপরই তিন ঘাতক পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে একটি জায়গা থেকে তাদের আটক করে। হত্যায় ব্যবহৃত ছুরি জব্দ করা হয়।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশে কোনো জঙ্গি নেই। এ দেশের নাগরিকদের সঙ্গে উগ্রবাদের সম্পর্ক নেই বলে মনে করেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ।
শনিবার শরীয়তপুরে এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
শরীয়তপুর পুলিশ লাইন্স মিলনায়তনে শনিবার দুপুরে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।
সভায় আইজিপি বলেন, ‘উগ্রবাদ একটি বিজাতীয় সংস্কৃতি। বিদেশিরা এই সংস্কৃতির বিস্তার ঘটাতে চেয়েছিল এ দেশে। ৯০ শতাংশ মুসলিমের দেশকে জঙ্গিবাদের মোড়কে যদি সন্ত্রাসী রাষ্ট্র বানানো যায়, তাহলে অস্ত্র ব্যবসা করতে ও আঞ্চলিক রাজনীতিতে তাদের সুবিধা হয়।
‘বঙ্গবন্ধুর রেখে যাওয়া দেশ পরিচালনা করছেন তার সুযোগ্য কন্যা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরামর্শ ও দূরদর্শিতায় আমরা জঙ্গিবাদকে নিশ্চিহ্ন করতে পেরেছি। যদি আমরা উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে ব্যর্থ হতাম, তাহলে উন্নয়নের মহাসড়কে যেতে পারতাম না।’
বিদেশি চক্রান্তের কথা জানিয়ে বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশকে জঙ্গিদের আস্তানা হিসেবে প্রচার করতে চেয়েছিল পশ্চিমা বিশ্ব। এ দেশে আইএসএস ঘাঁটি গাড়ছে এমন তথ্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালায় তারা। অনেক দেশ বাংলাদেশকে অনিরাপদ বলে ঘোষণা দিয়ে তাদের লোকজনকে সরিয়ে নিচ্ছিল। কিন্তু সরকারের কঠোর পদক্ষেপের কারণে সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। এ দেশে বর্তমানে জঙ্গিবাদের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবে না।’
শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক মো. পারভেজ হাসানের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আখতার হোসেন, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার মো. হেলাল মাহমুদ শরীফ, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান ও শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার এস এম আশরাফুজ্জামান।
উগ্রবাদ প্রতিরোধে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিসহ অন্যান্য অংশীজনের করণীয় শীর্ষক এ মতবিনিময় সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান।
সভায় মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসকসহ জনপ্রতিনিধি এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে সাপের কামড়ে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় এ ঘটনা ঘটে। পরে তাকে রাত ৯টায় সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের মেডিক্যাল কর্মকর্তা (আরএমও) রাকিবুল হাসান চয়ন শনিবার বিকেলে নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নিহত আজিজুল ইসলামের বয়স ৩৮ বছর। তিনি উপজেলার আঁধার দীঘি গ্রামের বাসিন্দা।
পরিবারের বরাতে রাকিবুল হাসান জানান, গৃহপালিত পশুর জন্য সন্ধ্যায় গ্রামের উঠানে রাখা খড়ের গাদা থেকে খড় আনতে যান রাকিবুল। সে সময় তাকে বিষধর কোনো পোকা কামড় দিয়েছে বলে মনে হয় আজিজুলের। ওই সময় নিজে হাত বাঁধার চেষ্টাও করেন তিনি। পরে রাতে ব্যথার তীব্রতা বাড়লে তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়।
ক্ষত দেখে তাকে বিষধর সাপে কেটেছে বলে নিশ্চিত করেন চিকিৎসক। তবে হাসপাতালে আসার আগেই মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন:পদ্মা সেতু ব্যবহারের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত হতে আর কয়েক দিন বাকি। জুনের শেষ সপ্তাহের যেকোনো দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বপ্নের এই সেতু উদ্বোধন করবেন বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, ১৫ বছরের মধ্যেই পদ্মা সেতুর নির্মাণ ব্যয় উঠে আসবে।
শনিবার দুপুরে শরীয়তপুর পুলিশ লাইন্সে উগ্রবাদ প্রতিরোধে মতবিনিমিয় সভায় মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এসব কথা বলেন।
সচিব বলেন, জুনের শেষ সপ্তাহের মধ্যে পদ্মা সেতু ব্যবহারের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত হবে। শেষ সপ্তাহের যেকোনো দিন প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধনের দিনক্ষণ ঠিক করবেন। পদ্মা সেতু চালু হলে প্রথম দিকে দেশের জিডিপি ১ দশমিক ৩ শতাংশ বৃদ্ধির কথা বলা হলেও প্রকৃতপক্ষে জিডিপি ২ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে।
তিনি বলেন, ২৫ বছর লাগবে না, ১৫ বছরের মধ্যেই পদ্মা সেতুর নির্মাণ ব্যয় উঠে আসবে।
বিশ্বের সর্বোচ্চ প্রযুক্তি ব্যবহার করে শতভাগ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে পদ্মা সেতু নির্মাণ হয়েছে উল্লেখ করে সচিব বলেন, রিখটার স্কেলে ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে পদ্মা সেতু যানবাহন বোঝাই অবস্থায় থাকলেও কোনো ক্ষতি হবে না। এমনকি পাঁচ হাজার টন ধারণক্ষমতার জাহাজের ধাক্কায়ও পদ্মা সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।
শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও মুন্সীগঞ্জের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েও পদ্মা সেতু করতে সহযোগিতা করেছেন এই এলাকার মানুষ।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ও দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়েও কথা বলেন সরকারের এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, বিশ্বে চলমান অর্থনৈতিক অস্থিরতা মোকাবিলায় সবাইকে মিতব্যয়ী হতে হবে। এক দিনের তেল, গ্যাস দিয়ে দুই দিন রান্না করতে হবে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্ব অর্থনিতিতে মন্দা তৈরি হয়েছে। এখন থেকেই আমাদের সতর্ক হতে হবে এবং দেশবাসীকে বিষয়টি বোঝতে হবে। এই পরিস্থিতিতে ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট দিয়ে চলতে হবে। নয়তো বিপদে পড়তে হবে।
সচিব বলেন, ইন্দোনেশিয়া পাম অয়েল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ায় শিগগিরই তেলের ঘাটতি পূরণ হবে এবং বাজার নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।
পুলিশ হেডকোয়ার্টার ও কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের আয়োজনে উগ্রবাদবিরোধী মতবিনিময় সভায় যোগ দিতে বেলা ১১টায় আকাশপথে ঢাকা থেকে শরীয়তপুর যান মন্ত্রিপরিষদ সচিব আনোয়ারুল ইসলাম।
শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক মো. পারভেজ হাসানের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আকতার হোসেন, পুলিশের মহাপরিদর্শক ড. বেনজীর আহমেদ, র্যাবপ্রধান চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. হেলাল মাহমুদ শরীফ ও ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য