অনেক দুর্ঘটনা, মৃত্যু- তারপরও নিরাপদ হয়নি কর্মক্ষেত্র। বকেয়া বেতন কিংবা শ্রম-অধিকার প্রশ্নে এখনও বঞ্চিত শ্রমিক। নিশ্চিত হচ্ছে না ন্যূনতম জীবনমান। কর্মক্ষেত্রে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ খাত নির্মাণশিল্প। গত ১০ বছরে এই খাতে নিহত হয়েছে ১ হাজার ১০২ জন শ্রমিক।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ লেবার স্টাডিজ (বিলস) পরিসংখ্যানে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় ২০২১ সালে ১ হাজার ৫৩ জন নিহত হওয়ার তথ্য দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। বলেছে, দেশে সবচেয়ে বেশি শ্রমিকের প্রাণহানি ঘটেছে পরিবহন, নির্মাণ ও কৃষি এই তিন খাতে।
প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন নির্মাণ শ্রমিকরা। রাজধানীসহ দেশজুড়ে গড়ে উঠছে বিপুলসংখ্যক বহুতল ভবন। এসব ভবন নির্মাণে শ্রমিকদের দুর্ঘটনা এড়াতে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকদের কোনো ধরনের জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জাম সরবরাহ করা হয় না।
বহুতল ভবনে নির্মাণ শ্রমিকরা অরক্ষিত অবস্থায় কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন। এমনকি এসব দুর্ঘটনা থেকে পথচারীরাও রেহাই পাচ্ছেন না। ফলে নির্মাণ শ্রমিকদের পাশাপাশি আশপাশের মানুষ ও ভবনের নিচের পথচারীরা নিরাপত্তাহীনতায় থাকেন। কেউ কেউ মারাত্মকভাবে আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করছেন।
মালিকদের অবহেলা, শ্রমিকদের সচেতনতার অভাব এবং শ্রম আইনের সঠিক বাস্তবায়ন না হওয়া এবং এ আইনের দুর্বলতার কারণে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
১০ বছরে নিহত ১ হাজার ১০২ জন
২০১১ সাল থেকে ২০২১ সাল এই ১০ বছরে নির্মাণ খাতে নিহত হয়েছেন ১ হাজার ১০২ জন শ্রমিক।
২০২১ সালে নির্মাণ খাতে ১৫৪ জন শ্রমিক নিহত হন।
এর আগের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, নির্মাণ খাতে ২০১১ সালে ১১১ জন, ২০১২ সালে ১১৩ জন, ২০১৩ সালে ৯৫ জন, ২০১৪ সালে ১০২ জন, ২০১৫ সালে ৬১ জন, ২০১৬ সালে ৮৫ জন এবং ২০১৭ সালে ১৩৪ জন শ্রমিক নিহত হয়েছেন।
২০১৮ সালে সর্বোচ্চ ১৬১ জন শ্রমিক নিহত হয়েছেন।
২০১৯ সালে নিহত হয়েছেন ৯৪৫ জন শ্রমিক। এরপর ১৫৬ জন শ্রমিক প্রাণ হারান।
২০২০ সালে কর্মক্ষেত্রে বিভিন্ন দুর্ঘটনায় ৭২৯ জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। নির্মাণ খাতে ৮৪ জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়।
জাতীয় বিল্ডিং কোডে কর্মকালীন একজন শ্রমিকের কী কী নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে তার বিস্তারিত উল্লেখ থাকলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তা মানা হয় না। ২০১৪ সালের জাতীয় ভবন নির্মাণ বিধিমালা অনুযায়ী কাজের সময় কাজের শ্রমিকের মাথায় হেলমেট পরা বাধ্যতামূলক করা হয়। যারা কংক্রিটের কাজে যুক্ত, তাদের হাতে গ্লাভস ও চোখের জন্য ক্ষতিকর কাজে চশমা পরিধান করতে হবে। ওয়েল্ডার ও গ্যাস কাটার ব্যবহারের সময় রক্ষামূলক সরঞ্জাম যেমন গ্লাভস, নিরাপত্তা বুট, অ্যাপ্রন ব্যবহার করতে হবে।
ভবনের ওপরে কাজ করার সময় শ্রমিকদের নিরাপত্তায় বেল্ট ব্যবহারও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তবে এর কোনোটিই বাস্তবে দেখা যায় না।
দুর্ঘটনার কারণ
বিলস বলছে, নির্মাণকাজে ভালো সিঁড়ির অভাব ও সিঁড়িতে পর্যাপ্ত আলোর অভাব, এলোমেলোভাবে রড, বালু ও ইট রাখা, কর্মক্ষেত্রে নেট না থাকা অথবা নাজুক নেটের ব্যবহার, কপিকলের ব্যবস্থা না থাকা, হেলমেট, গ্লাভসের ব্যবস্থা না করা, খালি পায়ে কাজ করা, অসাবধানতা ও অসচেতনভাবে আবদ্ধ স্থানে প্রবেশ, প্রচণ্ড রোদে কাজ করা, ত্রুটিপূর্ণ যন্ত্রপাতির ব্যবহার, বিশ্রাম কম; দুর্বল মাচা, দেয়াল বা মাটি চাপা পড়া, ঝুলন্ত অবস্থায় কাজের সময় বেল্ট ব্যবহার না করা, ভালো জুতা বা বুট ব্যবহার না করা, আধুনিক যন্ত্রপাতির অভাব ও ত্রুটিপূর্ণ বৈদ্যুতিক লাইনের কারণে দুর্ঘটনা ঘটছে।
এ ছাড়া ওপর থেকে পড়ে শ্রমিকের অঙ্গহানি ও মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে। মাটিচাপা পড়ে, মাটি বহনকারী গাড়ি দুর্ঘটনা, অগ্নিদগ্ধ হওয়া, বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা, চোখে আঘাত লাগা বা অন্ধ হয়ে যাওয়া, মাথায় আঘাত পাওয়া, হাত-পা কেটে বা ভেঙে যাওয়া ও আবদ্ধ গ্যাসেও মৃত্যুর হার বাড়ছে।
শ্রম আইন অনুযায়ী, কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব নিয়োগকারীর। শ্রমিকের ব্যক্তিগত সুরক্ষা যন্ত্রপাতি সরবরাহ ও ব্যবহার নিশ্চিত করা ছাড়া নিয়োগকারী কাউকে কাজে নিয়োগ করতে পারবেন না।
আইনে এমন বাধ্যবাধকতা থাকলেও রাজধানীর একাধিক নির্মাণাধীন ভবন পরিদর্শন করে দেখা গেছে, গামবুট, হেলমেট, নিরাপত্তা বেল্টসহ নিরাপত্তা উপকরণ ছাড়াই কাজ করছেন শ্রমিকরা।
সংশ্লিষ্টরা যা বলেন
ইমারত নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়ন বাংলাদেশের (ইনসাব) সাধারণ সম্পাদক আবদুর রাজ্জাক বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ এ নির্মাণ সেক্টরে ৩৭ লক্ষাধিক পেশাজীবী জড়িত। শ্রমিকদের নিরাপত্তার স্বার্থে শ্রম আইনে মালিক, শ্রমিক ও স্থানীয় প্রশাসনের প্রতিনিধিদের নিয়ে ‘শিল্প স্বাস্থ্য সেফটি কমিটি’ গঠন করতে বলা হয়েছে। কেন্দ্রীয় পর্যায়ে একটি কমিটি থাকলেও তৃণমূল পর্যায়ে এই কমিটি নেই। ফলে শ্রমিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে শ্রমিকদের নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান বা মালিক পক্ষকে চাপ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।
বিলসের পরিচালক কোহিনূর মাহমুদ বলেন, নির্মাণ খাতের বড় বড় ফার্ম কিছুটা নীতিমালা মেনে চলে। কিন্তু ছোট কিংবা ব্যক্তিমালিকানাধীন ভবনগুলো এই নীতিমালা মানতে চায় না। এ জন্য ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে। প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে। কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। পরিদর্শনের জন্য তাদের পর্যাপ্ত ক্ষমতা দিতে হবে। প্রয়োজনে আইন প্রয়োগ করবে। না হলে এসব ঘটনা এড়ানো যাবে না।
আরও পড়ুন:অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আগামী সাতদিনের মধ্যে ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছেন আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। একইসঙ্গে তিনি বর্তমান সরকারের কাছে আরও সাতটি দাবি তুলে ধরেছেন।
রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব দাবি জানান তিনি।
মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘অনতিবিলম্বে বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ ও বেআইনি সংগঠন ঘোষণা করতে হবে। গত ১৬ বছরে দেশের সব সন্ত্রাসী কার্যক্রমের জন্য একমাত্র ছাত্রলীগ দায়ী। ছাত্র-জনতার বিপ্লবে সারাদেশে যত শিক্ষার্থীকে হত্যা করা হয়েছে, সব করেছে পুলিশ ও ছাত্রলীগের বাহিনী।’
মতবিনিময় সভায় সরকারের প্রতি বিভিন্ন দাবি তুলে ধরে মাহমুদুর রহমান বলেন- ‘ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের জন্য স্বাস্থ্য উপদেষ্টা, অর্থ উপদেষ্টা, শিল্প ও গণপূর্ত উপদেষ্টা এবং প্রধান উপদেষ্টার রাজনৈতিক সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করতে হবে। বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে এক সপ্তাহের মধ্যে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করে নিষিদ্ধ করতে হবে। যমুনা সেতুকে শহীদ আবু সাঈদের নামে নামকরণ করতে হবে, যাতে মানুষ সেখান দিয়ে পার হওয়ার সময় শতাব্দীর পর শতাব্দী আবু সাঈদকে দেখতে পায়।’
তিনি বলেন, ‘২০০৯ সালের পর থেকে ভারতের সঙ্গে যতগুলো চুক্তি হয়েছে তার প্রতিটির ধারা-উপধারা জনসম্মুখে প্রকাশ করতে হবে। জনগণকে জানাতে হবে ভারতের সঙ্গে কী কী চুক্তি হয়েছে এবং সেগুলো পুনর্বিবেচনার জন্য একটি কমিটি গঠন করতে হবে, যেখানে ভারতের ও ফ্যাসিবাদের দোসর থাকতে পারবে না।’
আমার দেশ সম্পাদক বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু এভিনিউকে শহীদ আবরারের নামে নামকরণ করতে হবে। কারণ শহীদ আবরার এই ফ্যাসিবাদ আন্দোলনের প্রথম শহীদ।
‘মনে রাখতে হবে শেখ মুজিব বাংলাদেশের প্রথম স্বৈরাচারী নেতা। আর শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদের আইকন হচ্ছেন শেখ মুজিব।’
দাবি তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে ফ্যাসিস্ট হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের নমিনেশন অনতিবিলম্বে বাতিল করতে হবে। কেননা পুতুলকে নমিনেশন দেয়া হয়েছিল জালিয়াতির মাধ্যমে।
‘আপিল বিভাগের একজন বিচারপতির নেতৃত্বে একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে কারাগারে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম ও বিএনপি নেতা নাসির উদ্দিন পিন্টুর হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করতে হবে।’
আরও পড়ুন:প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি ও বান্দরবানে পর্যটকদের আপাতত ভ্রমণ না করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। আগামী ৮ অক্টোবর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ২৪ দিন এই দুটি জেলা ভ্রমণ থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন।
বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন রোববার বিকেল ৪টায় জানান, অনিবার্য কারণবশত ৮ থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ভ্রমণপ্রত্যাশী পর্যটকদের বান্দরবান পার্বত্য জেলায় ভ্রমণ থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
এর আগে দুপুরে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসন থেকে জারি করা এক নির্দেশনায়ও ৮ থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটিতে ভ্রমণ না করার অনুরোধ জানানো হয়।
রাঙ্গামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান জানান, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে এই নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
অন্যদিকে রাঙ্গামাটির সাজেক ভ্যালিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করেছে জেলা প্রশাসন।
বর্তমান সময় পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে ১০৫টি শিশু নিহত হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে নিহত প্রতিটি শিশুর পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা করে দেয়া হবে।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ রোববার সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, ‘সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় এক কোটি ২০ লাখ বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতা পাচ্ছেন। তাদের ৪৩ ভাগই ভাতা পাওয়ার যোগ্য নয় বলে ইউনিসেফ একটি পরিসংখ্যান দিয়েছে। বিশ্বব্যাংকও বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিয়েছে। এজন্য তালিকাটি যাচাই-বাছাই করা হবে।’
নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সংস্কারের পর নির্বাচন হবে। নির্বাচন নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদে আলোচনা হয়নি। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা চলছে।
সমাজসেবা কার্যালয় ও উপজেলা রোগী কল্যাণ সমিতির মাধ্যমে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থীদের মোট ৮২ লাখ ৭০ হাজার ৮৯৮ টাকার সেবা দেয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন উপদেষ্টা।
বাংলাদেশ পুলিশের দেড়শ’ বছরের পুরনো আইন সংস্কারসহ এটিকে জনবান্ধব বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে যা যা করা দরকার সেসব নিয়ে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সুপারিশ জমা দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান সফর রাজ হোসেন।
রোববার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন।
সফর রাজ হোসেন বলেন, ‘পুলিশকে জনগণের আস্থায় ফিরিয়ে আনতে হবে। বেঁধে দেয়া সময় তিন মাসের মধ্যে সব পর্যায়ের মানুষের মতামত নেয়া হবে। প্রয়োজনে ওয়েবসাইট তৈরি করে সাধারণ মানুষের মতামত চাওয়া হবে।’
এ সময় সেখানে উপস্থিত স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘কমিশনকে কারিগরি সহায়তা দেয়া হবে। তিন মাস পর সুপারিশ পেলেই শুরু হবে পুলিশ বাহিনী পুনর্গঠন ও সংস্কারের কাজ।’
এর আগে গত ৩ অক্টোবর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে পুলিশ সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ কমিটির গেজেট প্রকাশ করা হয়।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আবু মমতাজ সাদ উদ্দিন আহমেদ, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সাবেক অতিরিক্ত সচিব ও সাবেক মহাপরিচালক মোহাম্মদ ইকবাল, সাবেক বিভাগীয় কমিশনার ও যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ হারুন চৌধুরী, সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক শেখ সাজ্জাদ আলী, ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল অফ পুলিশ মো. গোলাম রসুল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক শাহনাজ হুদা এবং মানবাধিকার কর্মী এ এস এম নাসিরউদ্দিন এলান। এছাড়া কমিশনে আরও থাকবেন শিক্ষার্থী প্রতিনিধি।
আরও পড়ুন:সৎ, নীতিবান ও নেতৃত্বের অন্যান্য গুণাবলীসম্পন্ন সেনা কর্মকর্তারা উচ্চতর পদোন্নতির দাবিদার বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি পদোন্নতির জন্য কর্মকর্তাদের পেশাগত দক্ষতা, নেতৃত্বের গুণাবলী, শৃঙ্খলার মান, সততা, বিশ্বস্ততা ও আনুগত্য এবং সর্বোপরি নিযুক্তিগত উপযুক্ততার ওপর গুরুত্বারোপ করতে নির্বাচনি পর্ষদের সদস্যদের নির্দেশনা দেন।
সেনাবাহিনী সদরদপ্তরে রোববার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ‘সেনাসদর নির্বাচনী পর্ষদ-২০২৪’-এর উদ্বোধনকালে এ নির্দেশনা দেন।
প্রথম পর্বের এ পদোন্নতি পর্ষদে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কর্নেল ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদবির যোগ্য কর্মকর্তারা পরবর্তী পদোন্নতির জন্য বিবেচিত হবেন।
পদোন্নতি পর্ষদের উদ্বোধন অনুষ্ঠানের বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টা রাজনৈতিক মতাদর্শের ঊর্ধ্বে থেকে যেসব কর্মকর্তা সামরিক জীবনের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে যোগ্য নেতৃত্ব প্রদানে সফল হয়েছেন, সেসব কর্মকর্তাকে পদোন্নতির জন্য নির্বাচন করার নির্দেশনা দেন।
তিনি বলেন, ‘দেশের ক্রান্তিলগ্নে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে এবং একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে দেশকে এক অস্থিতিশীল পরিস্থিতির হাত থেকে রক্ষা করেছে।’
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আবারও দেশের মানুষের কাছে আস্থার প্রতীক হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
ছাত্র-জনতার বিপ্লবে নিহতদের গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন প্রধান উপদেষ্টা।
অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছালে প্রধান উপদেষ্টাকে স্বাগত জানান সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, প্রধান উপদেষ্টার প্রতিরক্ষা ও জাতীয় সংহতি উন্নয়নবিষয়ক বিশেষ সহকারী, চিফ অব জেনারেল স্টাফ এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার।
অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের পাশাপাশি প্রতিরক্ষা সচিব উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠান শেষে প্রধান উপদেষ্টা সেনাবাহিনীর উপস্থিত কর্মকর্তাদের সঙ্গে ফটোসেশনে অংশ নেয়ার পাশাপাশি পরিদর্শন বইয়ে মন্তব্য লিপিবদ্ধ করেন।
আরও পড়ুন:জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় উজান ও ভাটির দেশগুলোকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
রাজধানীতে রোববার মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘ক্ষমতায়ন: জলবায়ু সহিষ্ণু সমাজের জন্য নারী (ফেজ ২)’ প্রকল্পের ‘অ্যানুয়েল কমিউনিটি অফ প্র্যাকটিস (কপ) নেটওয়ার্ক কনভেনশন’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশ উপদেষ্টা এ আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব উজান ভাটির সবগুলো দেশে সমভাবে পড়বে, যে কারণে ক্ষয়ক্ষতি প্রতিরোধে আঞ্চলিক সহযোগিতা প্রয়োজন। উজানের দেশগুলোকে আগে থেকে মাটির দেশকে বৃষ্টিপাত, স্ট্রাকচারের অবস্থা ও পানি ছাড়ার সময় জানাতে হবে।
তিনি জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগে খাদ্য সংকট এড়াতে সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জিরো কার্বন নির্গমন ও লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ড থেকে অর্থ আনতে হবে।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে নারীরাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় মন্তব্য করে উপদেষ্টা বলেন, অভিযোজনের জাতীয় পরিকল্পনায় নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বাংলাদেশে সুইডেন দূতাবাসের হেড অফ ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন মারিয়া স্ট্রিডসম্যান ও ইউএন উইমেনের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ গীতাঞ্জলি সিং।
অনুষ্ঠানে ‘উইমেন্স ক্লাইমেট অ্যাকশন নেটওয়ার্ক’ ঘোষণা করার পাশাপাশি পাঁচ নারী উদ্যোক্তাকে ‘জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় নারীর ভূমিকা’ শীর্ষক পদক দেয়া হয়।
অনুষ্ঠানে নারীর ক্ষমতায়ন, জলবায়ু সহনশীলতা এবং জেন্ডার সমতার ওপর বিভিন্ন প্যানেল আলোচনা, কর্মশালা ও উপস্থাপনা অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন:ফারজানা মমতাজকে বিদ্যুৎ বিভাগে এবং মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদীকে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে নতুন সচিব হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে সরকার।
পাশাপাশি বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামানকে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে রোববার এ সংক্রান্ত আলাদা প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
বিদ্যুৎ বিভাগের নতুন সচিব হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ফারজানা মমতাজ। তাকে সচিব পদে পদোন্নতির পর এ নিয়োগ দেয়া হয়। বিদ্যুৎ বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. হাবিবুর রহমান আগামী ৯ অক্টোবর অবসরোত্তর ছুটিতে (পিআরএল) যাচ্ছেন। অন্যদিকে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব হয়েছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী। তাকেও সচিব পদে পদোন্নতির পর এ নিয়োগ দিয়ে আলাদা প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
ওএসডি অতিরিক্ত সচিব সুরাইয়া আখতার জাহানকে বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের চেয়ারম্যান করা হয়েছে।
এদিকে নতুন করে ওএসডি করা হয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামানকে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য