ভারত সরকারের আমলা আইন সংশোধনের প্রস্তাব বাতিলের দাবি জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
রাজ্যের ক্ষমতায় কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের হস্তক্ষেপের অভিযোগ এনে আইন সংশোধন না করতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আবারও চিঠি দিয়েছেন মমতা।
চিঠিতে বলা হয়েছে, প্রস্তাবিত সংশোধনী বাস্তবায়ন হলে দেশের গণতন্ত্র ধ্বংস হয়ে যাবে।
মোদিকে লেখা দ্বিতীয় চিঠিতে মমতা বলেন, ‘আপত্তি সত্ত্বেও আমলা আইন সংশোধনে অনড় কেন্দ্র। আইনের খসড়া প্রস্তাব তৈরি করা হয়েছে। আইন সংশোধনের নতুন খসড়া যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর চরম পরিপন্থি। এই প্রস্তাবিত সংশোধনী দেশের গণতন্ত্র ধ্বংস করে দেবে।’
প্রথম চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছিলেন, ‘কেন্দ্র-রাজ্য সহমতের ভিত্তিতে আইএএস, আইপিএস অফিসারদের নিয়োগ করা হয়। প্রস্তাবিত সংশোধিত আইনে দীর্ঘদিনের সেই প্রক্রিয়া নষ্ট হয়ে যাবে। কেন্দ্রীয় ডেপুটেশন রিজার্ভে ডেপুটেশনের ক্ষেত্রে রাজ্যগুলোয় কেন্দ্রের ক্ষমতা চাপিয়ে দেয়া হবে।’
১৯৫৪ সালের আইএএস ক্যাডার রুল সংশোধনের প্রস্তাব আনে ভারত সরকার। এই আইনের মাধ্যমে আইএএস, আইপিএস আমলাদের নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র-রাজ্য পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে স্থির করা হয়।
রাজ্যের অভিযোগ, আইন সংশোধন করে আমলাদের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে রাখতে চাইছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। আইন সংশোধন হলে রাজ্যে আমলাদের কোথায় নিয়োগ হবে, দায়িত্ব কী হবে, সব ঠিক করে দেবে কেন্দ্র। সেখানে রাজ্যের কোনো ভূমিকা থাকবে না।
সংশোধিত এই আইনে রাজ্যের ক্ষমতা খর্ব করা হয়েছে বলে অভিযোগ মমতার। এর প্রতিবাদ জানিয়ে ১৩ জানুয়ারি মোদিকে প্রথম চিঠি দেন মমতা।
ওই চিঠিতে তিনি লেখেন, ‘এমনিতে দেশে আইএএস, আইপিএস কম। রাজ্যকে অনেক কম অফিসার দিয়ে কাজ চালাতে হয়। তারাই রাজ্যের প্রশাসনিক কাজ, নীতিনির্ধারণ ও প্রাকৃতিক সম্পদের দেখভালের ব্যবস্থা করেন। যত দিন যাচ্ছে, কাজের পরিধি বাড়ছে।
‘কেন্দ্রীয় সরকার নিজের মতো করে আমলাদের ডেপুটেশনে নিলে তা রাজ্যের কাজে মারাত্মক ক্ষতি হবে। কোনো কাজের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে কেন্দ্র ডেপুটেশনে চাইলে, রাজ্য যে পরিকল্পনা করে তা আটকে যাবে। এতে কর্মকর্তার মানসিক উদ্দীপনা ও আত্মবিশ্বাসে নেতাবাচক প্রভাব পড়বে।’
নরেন্দ্র মোদি নিজে দীর্ঘদিন মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন, তিনি বিষয়টি বুঝবেন আশা করে প্রস্তাবিত সংশোধিত আমলা আইন বাতিলের জন্য মোদিকে দ্বিতীয় দফা চিঠি পাঠিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী।
৫ হাজার ডিডব্লিউটির বেশি ধারণক্ষমতা সম্পন্ন সমুদ্রগামী জাহাজ আমদানিতে আরোপিত সাড়ে ৭ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (মূসক) অব্যাহতির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
আজ বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এ প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস সভাপতিত্ব করেন।
পরে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, ৫ হাজার ডিডব্লিউটির বেশি ধারণক্ষমতা সম্পন্ন সমুদ্রগামী জাহাজ আমদানিতে আমদানি পর্যায়ে আরোপিত সাড়ে ৭ শতাংশ মূসক অব্যাহতির সিদ্ধান্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, উপদেষ্টা পরিষদ মনে করছে, এ অব্যাহতির ফলে সরকারি-বেসরকারি উভয় খাতেই জাহাজ সংগ্রহ সহজ হবে, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন ও কর্মসংস্থানে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। এটা শুধু ব্যবসার জন্য নয়, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বাংলাদেশের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
সভায় ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি বাংলাদেশের অবিচল সমর্থনের প্রসঙ্গও গুরুত্ব পায়।
এ বিষয়ে প্রেস সচিব বলেন, আমরা ফিলিস্তিনি প্রশ্নে সবসময়ই স্পষ্ট অবস্থান নিয়েছি। নিউইয়র্কে জাতিসংঘ আয়োজিত ‘হাই লেভেল ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন দ্য পিসফুল সেটেলমেন্ট অব দ্য কোশ্চেন অব প্যালেস্টাইন’ সম্মেলনে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরবেন। এ ছাড়া আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর দোহায় ওআইসির জরুরি সম্মেলনে অংশ নেবেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
সংস্কার কমিশনের অগ্রগতির বিষয়েও বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এ প্রসঙ্গে প্রেস সচিব জানান, এ পর্যন্ত ৫১টি সুপারিশ বাস্তবায়িত হয়েছে, ৩৭টি সুপারিশ আংশিক বাস্তবায়নের পথে এবং বাকি সুপারিশগুলোও বাস্তবায়নাধীন। কিছু সুপারিশ রাজনৈতিক প্রকৃতির, যা নির্বাচিত সরকারের সময় বাস্তবায়ন করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, অনেকে ভুলভাবে মনে করছেন যে সংস্কার হচ্ছে না। আসলে প্রতিটি মন্ত্রণালয় নিয়মিতভাবে বড় বড় সংস্কার করছে। ব্যাংকিং, এনার্জি, রাজস্ব, শ্রম—প্রায় সব খাতেই সংস্কার হয়েছে এবং এগুলো অব্যাহত আছে।
সভায় শ্রম খাতের অগ্রগতি নিয়েও আলোচনা হয়। প্রেস সচিব বলেন, শ্রম কমিশনের ৮২টি সুপারিশের অনেকগুলো ইতোমধ্যেই বাস্তবায়িত হয়েছে। শ্রম আইন সংশোধন হলে বাকি সুপারিশগুলোর বেশিরভাগই কার্যকর হয়ে যাবে। আমাদের শ্রম মন্ত্রণালয় আইএলও’র সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করছে। গত বছর যে ১৮ দফা ত্রিপক্ষীয় চুক্তি হয়েছে, সেটা বড় অর্জন। ওই অনুযায়ী শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধির সিদ্ধান্তও কার্যকর হয়েছে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় পদ্মা নদীতে বেশ কয়েক স্থানে অতি সম্প্রতিকালে তীব্র ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে।গত কয়েক দিনের ভাঙ্গনে উপজেলার জুনিয়াদহ ইউনিয়নের ফয়েজুল্লাপুর, হাটখোলাপাড়া এবং বাহাদুরপুর ইউনিয়নের আড়কান্দি ও মাধবপুর এলাকার বিস্তীর্ণ ফসলি জমিসহ হিন্দুদের ব্যবহৃত শ্মশানঘাটও নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।এতে ৭০--৮০ জনের পান চাষি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে এবং তাদের ৩০০০ পান বরজের সারি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার জুনিয়াদহ ইউনিয়নের ফয়জুল্লাহপুর, হাটখোলাপাড়া ও বাহাদুরপুর ইউনিয়নের আড়কান্দি ও মাধবপুরে গত কয়েকদিন ধরে পদ্মা নদীর পাদদেশে কয়েক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ব্যাপক ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। জুনিয়াদহ ইউপি'র ভাঙ্গন কবলিত এলাকা থেকে পদ্মা নদী রক্ষা বাঁধের রায়টা-মহিষকুন্ডি বেরিবাঁধের দূরত্ব ৫০ মিটারেরও কিছুটা কম। উক্ত এলাকার বসতবাড়িসহ সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন স্থাপনা নিয়ে ভাঙ্গন আতঙ্কে দিন কাটচ্ছে।
গত কয়েক দিনের ভাঙ্গনে ৭০-৮০ জন পান চাষির প্রায় ৩০০০ পিলি পান বরজ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। তাছাড়া এ অঞ্চলে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের সৎকারে ব্যবহৃত একমাত্র শ্মশান ঘাটটিও নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
মবির পন্ডিত, রেজাউল, জামশেদ, রাব্বি, রহমান, কাশেম, নুরা,নাসির, আনেজ, আজগর, আবু, শিহাব নামের কৃষকরা সকলেই ১০০ পিলি করে পানের বরজ হারিয়েছেন।
পানচাষি আবুল আলী জানান, মাধবপুর এলাকায় গত দুই বছর আগে এই সমস্ত বরজ আগুনে পুড়ে গিয়েছিল।এবার তা পদ্মা নদী গ্রাস করলো। আমরা কৃষকরা খুবই অসহায়ভাবে দিন কাটাচ্ছি।
কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশিদুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,বাহাদুরপুর ইউনিয়নের ভাঙ্গনের বিষয়টি আমরা আপনাদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি। অতি শীঘ্রই আমরা সেখানে পরিদর্শনে যাবো।
ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, পদ্মা নদীতে ভাঙ্গনের বিষয়টি আমরা জেনেছি।ক্ষতিগ্রস্ত পান চাষিদের আবেদনের ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
‘চিক্ চিক্ করে বালি, কোথা নাই কাদা, একধারে কাশবন ফুলে ফুলে সাদা’ কাশবনে গেলেই কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই কবিতাটি মনে পড়ে যায়। শরতের বিকেলের স্নিগ্ধতা যেন বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে এই কাশবন। কাশফুলের মাঝে ছবি তোলার হিড়িক পড়ে যায় তরুণ-তরুণীদের। এলোমেলো বাতাসের সাথে খোলা রাস্তায় হেঁটে বেড়ানো, দুইধারে সাদা মেঘের মতন ফুলের মেলা যেন পাগল করে তোলে এখানে ঘুরতে আসা মানুষের।
শরতের এতো রূপ. এতো রঙধনুর রং, এতো নীল আকাশের নীলা, এতো ছায়াপথের আলোছায়া, এতো সূর্য্যাস্তের রক্তরাগ, এতো ভোরের শিশির, এতো কাঁশ ফুলের হেলা দোলা, আর এই বাংলা মা ছাড়া কোথায় পাবো? চোখ জুড়িয়ে যায়, মন জুড়িয়ে যায়, জীবন জুড়িয়ে যায়, সব পেয়েছি আমার এই দেশের সোনার বাংলায়।
আকাশে নরম তুলার মতো শুভ্র মেঘের ভেসে বেড়ানো আর দিগন্তজোড়া প্রান্তরে কাশফুলের মনোরম দৃশ্য দেখে বুঝতে হবে শরতের আবির্ভাব ঘটেছে। এ সময়ে নদীর ধার, জলাভূমি, চরাঞ্চল কিংবা গ্রামের কোনো উঁচু জায়গায় কাশের ঝাড় বেড়ে ওঠে প্রকৃতিকে দেয় এক অপরূপ ভিন্ন সৌন্দর্য। এভাবেই রূপগঞ্জ উপজেলার বালু ও শীতলক্ষ্যা নদীর তীরের কাশফুলের শুভ্রতা নজর কাড়ছে পথচারীদের। সিনথিয়া নামের এক পথচারী জানান, শহর থেকে নদী পথে যাওয়ার সময় হঠাৎ কাশফুলের এমন চোখ ধাঁধানো সৌন্দর্য দেখে না থেমে পারলাম না।
আকাশে ভেসে বেড়াচ্ছে সাদা মেঘের ভেলা। নীল আকাশজুড়ে অলস মেঘের অবাধ বিচরণ। খণ্ড খণ্ড মেঘের নিরুদ্দেশ যাত্রা। রোদের ঝলকানির পাশেই মেঘের ছায়া। মেঘ আর রোদের কানামাছি খেলার মাঝে বৃষ্টিও অংশ নিচ্ছে। এমন দিনে রূপগঞ্জে আপনাকে স্বাগত জানাতে কাশফুল ‘সাদা ডালি’ সাজিয়ে বসে থাকে। ফাঁকা জমিতে শরতের সৌন্দর্যের ডালি সাজিয়ে বসে আছে এ কাশফুল।
সৌন্দর্যে ঐশ্বর্যে প্রকৃতির রূপ লাবণ্যে শরৎরাণীর রূপ বর্ণনায় শ্যামল ছায়া বাংলাদেশের মাঠ-ঘাট, নদী-নালা ও বিলের পাড়ে বালুচরে নীল আকাশে রূপালী তারায় ভরে উঠেছে সাদা কাশবন। মেঘ মুছে যাওয়া বর্ষণ শেষের আকাশে হাজার হাজার তারা ঝিকিমিকি করে জ্বলছে। রোদে ঝল মল করছে চারিদিক। দেখা যাচ্ছে নীল আকাশ স্বচ্ছ সাদা মেঘ। আর সাদা মেঘের ভেলায় ভাসছে কাশফুলের ছোঁয়া। দৃষ্টিনন্দন এ কাশফুলের স্বর্গ রাজ্য এখন রূপগঞ্জের নদীর তীরে ও পূর্বাচলের বালুময় বিস্তৃর্ণ এলাকা। আর এ কাশফুলের ছোঁয়া নিতে সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিনই ছুটে আসছে দর্শনার্থীরা।
বালুর মধ্যে গুচ্ছ গুচ্ছ কাশফুল দেখে মনে হবে, প্রকৃতি আপনার মনের প্রশান্তির জন্য এ রূপে সেজেছে। শেষ প্রান্তের দুদিকে সাজানো কাশফুল দেখে মনে হবে, যেন আপনি দাঁড়িয়ে আছেন কাশফুলের রাজ্যে। যত দূর চোখ যায়, তত দূর কাশ ফুলের শুভ্রতা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কাশবনে এ সৌন্দর্য দেখতে রাজধানী ঢাকাসহ আশপাশের জেলার ভ্রমণ প্রেমীরাও ভিড় করেছে। অনেকে দলবেধে নৌকা বা ট্রলার নিয়েও বেড়াতে যান এ কাশফুলের রাজ্যে। কাঁশফুল কাছে পেলেই ছবি তোলার হিড়িক পড়ে যায়। কেউ সেলফি তুলছেন আবার কেউবা ভিডিও করছেন। সূর্যাস্তের সময় নদীতে গোধূলির লাল, একদৃষ্টে তাকিয়ে থাকার মতো। যে কেউই এর অপার সৌর্ন্দযে নীরব সাক্ষী হতে চাইবে।
কথা হলো কাশফুল দেখতে আসা কয়েকজন দর্শনার্থীর সাথে। রিতা মিতা বিথী জুয়েল তারা তাৎক্ষণিক অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, ‘কাশফুলের কাছে এসে খুবই আনন্দ পাচ্ছি। মনকে পরিষ্কারের জন্য আমরা এখানে আসি। কাশফুলের সান্নিধ্য পাওয়াটা একটু বাড়তি বিনোদন। অবসর সময়টা কাটানোর ভিন্ন একটা স্থান কাশফুলে জেগে এ প্রকৃতি। আরেকটা বিষয় আমাদের খুব ভালো লাগে। সেটা হচ্ছে, এই যে নদী তার পাশে কাশফুলের এ রাজ্য। বিষয়টা দেখতেও বেশ রোমাঞ্চকর।
আজ ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ খ্রিঃ তারিখে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী এবং ল্যাবএইড গ্রুপ, ল্যাবএইড ক্যানসার হাসপাতাল ও ল্যাবএইড সুপার স্পেশালিটি সেন্টারের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্যসেবা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। বাহিনীর সদর দপ্তরে আয়োজিত এই ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন বাহিনীর অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফিদা মাহমুদ এবং ল্যাবএইড মেডিক্যাল সার্ভিসেসের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল আলীম।
এই চুক্তির আওতায় আনসার ব্যাটালিয়ন, অঙ্গীভূত সাধারণ আনসার, ভিডিপি সদস্য এবং তাঁদের পরিবারবর্গ ল্যাবএইড মেডিক্যাল সার্ভিসেসের সারাদেশব্যাপী ৩২টি শাখায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে উন্নত স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণের সুযোগ পাবেন। এর মধ্যে রয়েছে ডোপ টেস্ট, সিটি স্ক্যান, এমআরআই, ইসিজি, আল্ট্রাসনোগ্রাম, ইকো, ইটিটি সহ অত্যাধুনিক চিকিৎসা পরীক্ষা-নিরীক্ষা। পাশাপাশি, হাসপাতালে ভর্তি ও বহির্বিভাগীয় চিকিৎসা সেবায় বিশেষ ছাড়ের সুবিধাও ভোগ করবেন তাঁরা।
বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি ইতোমধ্যেই গ্রামীণ ডিজিটাল হেলথ কেয়ারের সাথে চুক্তির মাধ্যমে সদস্যদের স্বাস্থ্যসেবায় এক নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে। ‘সুখী’ অ্যাপের মাধ্যমে দেশের যেকোন প্রান্ত থেকে সহজে স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণের এই প্রক্রিয়া সদস্যদের মধ্যে সাড়া জাগিয়েছে। ল্যাবএইডের সাথে নতুন এ সহযোগিতা সদস্যদের স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করবে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাহিনীর অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফিদা মাহমুদ বলেন- “ল্যাবএইডের সাথে এ চুক্তি বাহিনীর চিকিৎসা কার্যক্রমের একটি মাইলফলক। এটি কেবল শুরু, ভবিষ্যতে এ কার্যক্রম আরও সম্প্রসারিত করা হবে।”
অন্যদিকে ল্যাবএইড মেডিক্যাল সার্ভিসেসের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল আলীম বলেন- "শিগগিরই সারাদেশে ল্যাবএইডের প্রতিটি শাখায় আনসার ও ভিডিপি সদস্যদের জন্য বিশেষায়িত চিকিৎসা কার্যক্রম চালু করা হবে।”
উভয় পক্ষই ভবিষ্যতে যৌথভাবে স্বাস্থ্যসচেতনতা বৃদ্ধি, নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং উন্নত চিকিৎসা কর্মসূচি বাস্তবায়নের পরিকল্পনা ব্যক্ত করেন। আশা করা হচ্ছে, এর ফলে আনসার ও ভিডিপি সদস্যদের স্বাস্থ্যঝুঁকি হ্রাস পাবে, চিকিৎসা গ্রহণ হবে আরও সহজলভ্য এবং বাহিনীর সামগ্রিক কর্মদক্ষতা বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাহিনীর উপমহাপরিচালক (অপারেশন্স) মোঃ সাইফুল্লাহ রাসেল, উপমহাপরিচালক (প্রশিক্ষণ) মোঃ রফিকুল ইসলামসহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।
'সেবার ব্রতে চাকরি' এই শ্লোগানে ঝালকাঠিতে বাংলাদেশ পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে মেধা, যোগ্যতা ও স্বচ্ছতার মাধ্যমে জুন-২০২৫ এর নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফল ঘোষনা করা হয়েছে। নিয়োগ বোর্ডের সদস্যসহ ঝালকাঠি জেলা পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের পুলিশ সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন।
বুধবার (১০সেপ্টেম্বর) রাতে পরীকায় উত্তীর্ণদের মাঝে পুলিশ লাইনস্ এর ড্রিল শেডে আনুষ্ঠানিক ভাবে চুরান্ত ফলাফল ঘোষনা করেছেন ঝালকাঠির পুলিশ সুপার উজ্জল কুমার রায়। ফলাফল ঘোষনার সময় উত্তীর্ণদের ফুল দিয়ে বরণ করে মিষ্টি খাইয়ে দেয়া হয়। এবারের নিয়োগে শুণ্য পদ অনুযায়ী উত্তীর্ণ ৯ জন ও অপেক্ষমান তালিকার ২ জন প্রার্থীর নাম ঘোষনা করা হয়।
এসময় অভিভাবকরা আবেগপ্রবণ হয়ে তাৎক্ষণিক অনুভূতি ব্যক্ত করেন যে, তারা কৃষক, দিনমজুর, অটোচালক বিভিন্ন পেশার সাথে জড়িত। যদি বাংলাদেশ পুলিশ স্বচ্ছতা, যোগ্যতা এবং মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ না দিতেন তাহলে আজ তাদের সন্তানেরা বাংলাদেশ পুলিশের মত গর্বিত বাহিনীতে চাকরি করার সুযোগ পেত না। মেধা, যোগ্যতা ও স্বচ্ছতার মাধ্যমে তাদের সন্তানদের বাংলাদেশ পুলিশে নিয়োগ দেওয়ায় পুলিশ সুপারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন অভিভাবকরা।
পুলিশ সুপার ফলাফল ঘোষনার পর তার বক্তব্যে উত্তীর্ণদের উদ্দেশ্যে বলেন 'কয়েটি ধাপের পরীক্ষায় চূড়ান্তভাবে যারা উত্তীর্ণ হয়েছে প্রত্যেককে অভিনন্দন জানাই। সেইসাথে সততা, নিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বের সাথে দেশসেবার মনোভাব নিয়ে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে কাজ করার আহবান জানাই।'
প্রশিক্ষণকালীন বিভিন্ন কার্যক্রম নিয়ে সদ্য চাকুরীপ্রাপ্তদেরকে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা প্রদান করেন পুলিশ সুপার।
আলিবাবা.কম, বিশ্বের বৃহত্তম বি-টু-বি ই-কমার্সের শীর্ষস্থানীয় প্ল্যাটফর্ম আগামী ১০ থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর, ২৪তম টেক্সটেক বাংলাদেশ ইন্টারন্যশনাল এক্সপো ২০২৫ ঢাকায় হল-বি: স্টল নং: বিটি১৭ই ও বিটি১৭এফ এ উপস্থিত থাকবে। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সহায়তা করার লক্ষ্যে আলিবাবা.কম বাংলাদেশের এসএমই ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিশেষ করে টেক্সটাইল, পাট ও হস্তশিল্প খাতের উদ্যোক্তাদের, আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্য বিক্রির সুযোগ দেখতে তাদের স্টলে আমন্ত্রণ জানিয়েছে।
১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত আলিবাবা.কম বিশ্বব্যাপী ব্যবসায়ীদের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে এবং পণ্য সংগ্রহ, সরবরাহকারী যাচাই, অনলাইন অর্ডার, পেমেন্ট, ডেলিভারি এবং বিক্রয়োত্তর সহায়তার জন্য এআই নির্ভর সমাধান প্রদান করে। এই এক্সপোতে আলিবাবা.কম স্থানীয় এসএমই ব্যবসায়ীদের রপ্তানির জন্য প্রস্তুত করতে সাহায্য করবে, বিশেষ করে ওয়েস্টার্ন হলিডে’র আগে যা আন্তর্জাতিক ব্যবসার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়।
"বিশ্ব টেক্সটাইল ও হস্তশিল্প বাজারে বাংলাদেশি এসএমইগুলোর বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে," বলেছেন ফনসেল ল্যান, আলিবাবা.কম-এর হেড অফ গ্লোবাল পটেনশিয়াল কান্ট্রিজ। “এই এক্সপোর মাধ্যমে আমাদের লক্ষ্য স্থানীয় বিক্রেতাদেরকে আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের সঙ্গে সংযুক্ত করা এবং তাদের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করা, যাতে তারা ব্যবসা বৃদ্ধি করতে পারে এবং সফলভাবে রপ্তানি করতে পারে।
টেক্সটেক বাংলাদেশ ইন্টারন্যশনাল এক্সপো ২০২৫ বাংলাদেশের বৃহত্তম এবং দীর্ঘস্থায়ী প্ল্যাটফর্ম যেখানে সুতা, কাপড়, ট্রিম এবং আনুষাঙ্গিক পণ্যের উদ্ভাবন প্রদর্শন করা হয়। দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে এটি টেক্সটাইল খাতে নেটওয়ার্কিং, পণ্য সংগ্রহ এবং ব্যবসায়িক উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে।
এই এক্সপোতে আলিবাবা.কম- এর স্টলে, এআই নির্ভর পণ্য অপ্টিমাইজেশন এবং বিপণন কৌশল সম্পর্কে পরামর্শ দেবে, যা বাংলাদেশী এসএমই ব্যবসায়ীদের আত্মবিশ্বাসের সাথে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশ করতে সাহায্য করবে।
খাগড়াছড়ি পানছড়ি উপজেলার দুর্গম পাহাড়ি এলাকার পানি সংকট নিরসনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধানের উপহার সুপেয় পানির সুবিধা পাচ্ছে রেজা মনিপাড়া ও কারিগর পাড়ার ২টি গ্রামের মোট ১১৭ টি পরিবার। বৃহস্পতিবার সকালে সোলার প্যানেলের মাধ্যমে বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহ বাস্তবায়ন প্রকল্পের উদ্বোধন খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাছান মাহমুদ।
এসময় তিনি বলেন, সেনাপ্রধান গত ২৯ মার্চ ২০২৫ তারিখে খাগড়াছড়ি জোনের আওতাধীন রেজামনিপাড়া আর্মি ক্যাম্প পরিদর্শন করেন যেখানে তিনি পূর্বে ক্যাম্প কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। পরিদর্শনকালীন সময়ে এলাকার প্রাক্তন মেম্বার ও কার্বারীদের সাথে মতবিনিময় করেন এবং এলাকার বিভিন্ন সমস্যা সম্পর্কে আলোচনা করেন । এ সময় সম্মানিত সেনাপ্রধান উক্ত এলাকায় বসবাসকারী স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবন যাত্রার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহের প্রকল্প বাস্তবায়নের আশ্বাস প্রদান করেন। তার-ই প্রেক্ষিতে আজ রেজামনিপাড়া এবং কারিগরপাড়া এলাকার সাধারণ মানুষের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহ করা এবং আগামীতেও পাহাড়ে শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি সেনাবাহিনীর এধরণের উন্নয়ন কাজের ধারা অব্যহত থাকবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাসান মাহমুদ, এইচডিএমএস, এএফডব্লিউসি, পিএসসি। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেফালিকা ত্রিপুরা, খাগড়াছড়ি জোন কমান্ডার লে. কর্নেল মোঃ খাদেমুল ইসলাম, পিএসসি, জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার, পুলিশ সুপার মোঃ আরেফিন জুয়েল ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
মন্তব্য