জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ব্লগার নাজিমুদ্দিন সামাদ হত্যা মামলায় আনসার আল ইসলামের সামরিক শাখার প্রধান চাকরিচ্যুত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত।
ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান সোমবার পুলিশের দেয়া অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে এই পরোয়ানা জারি করেন।
বৃহস্পতিবার সংশ্লিষ্ট আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী গোলাম ছারোয়ার খান জাকির নিউজবাংলাকে বলেন, ‘১৭ জানুয়ারি আদালত ৯ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গ্রহণ করে। পলাতক থাকায় মেজর জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আদালত। ২৩ ফেব্রুয়ারি গ্রেপ্তারসংক্রান্ত তামিল প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ ধার্য করা হয়েছে।’
পরোয়ানা জারি হওয়া অপর চার আসামি হলেন- আকরাম হোসেন, মো. ওয়ালিউল্লাহ, সাব্বিরুল হক চৌধুরী ও জুনেদ আহাম্মেদ।
অপর চার আসামি রশিদুন নবী ভূইয়া, মোজাম্মেল হুসাইন, আরাফাত রহমান ও শেখ আব্দুল্লাহ কারাগারে রয়েছেন বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে।
২০১৬ সালের ৬ এপ্রিল রাতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস শেষে পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়ায় মেসে ফেরার পথে লক্ষ্মীবাজারের একরামপুর মোড়ে খুন হন ব্লগার নাজিমুদ্দিন। এ ঘটনায় পরদিন সূত্রাপুর থানার এসআই নুরুল ইসলাম মামলা করেন। ২০২০ সালের ২০ আগস্ট বহিষ্কৃত মেজর সৈয়দ মো. জিয়াউল হক জিয়াসহ ৯ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট।
নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশনে ‘অশালীন পোশাক’ পরার অভিযোগ তুলে তরুণীকে হেনস্তাকারীদের গ্রেপ্তার করে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সমাবেশ করেছে ‘নিপীড়নের বিরুদ্ধে শাহবাগ’ নামের একটি প্লাটফর্ম।
শনিবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশ বক্তারা এই ঘটনার পেছনে রাজনৈতিক এজেন্ডা রয়েছে বলে দাবি করেন। এসব রুখে দিতে প্রগতিশীল জাতি তৈরিতে তারা পাড়া-মহল্লায় সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপনেরও দাবি জানান।
সমাবেশে জীবন জয়ন্ত বলেন, ‘কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠি শালীনতা বা অশালীনতা নির্ধারণ করে দিতে পারে না। এমনকি রাষ্ট্রও এটি নির্ধারণ করে দিতে পারে না। এই ধরনের ঘটনায় নিরব থেকে হয়তো নির্বাচনি বৈতরণী পার হওয়া যেতে পারে, কিন্তু বাংলাদেশের অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং সামাজিক মুক্তির জন্য যে কার্যক্রম পরিচালনা করা দরকার সেটি করা যাবে না।’
এই আইনজীবী আরও বলেন, ‘নারীর রক্ত ও সম্ভ্রমের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, সে বাংলাদেশে নারীকে ঘরে আটকে দেয়ার যে চেষ্টা, তা কোনো দিনও সফল হবে না।’
উন্নয়নকর্মী ও কলামিস্ট মুশফিকা লাইজু বলেন, ‘এই ঘটনা একটি সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের মতো। একটা ধর্মান্ধগোষ্ঠী নারীদেরকে প্রশিক্ষণ দিয়ে নারীদের বিরুদ্ধে লাগিয়ে দিয়ে বুঝাতে চাইছে, শুধু তারা না, নারীরাও নারীদের বিপক্ষে। মনে করা হচ্ছে, নারীরা নারীদের বিরুদ্ধে। আসলে নারীরা নারীদের বিরুদ্ধে না, পুরুষতন্ত্রই নারীদের বিরুদ্ধে। প্রতিবাদ আমরা অনেক করেছি, এখন থেকে প্রতিহত করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘যখন কোনো নারী হিজাব পরে, তখন আমরা বলি এটা তাদের চয়েজ। কিন্তু তারা আমাদের পছন্দ দেখেন না। আমরা রাষ্ট্রকে ও প্রশাসনকে বলব, আপনার এই ধরনের বিষয়গুলোর শাস্তি নিশ্চিত করুন। এতে হয়তো তারা সম্পূর্ণ শুধরে যাবে না, তবে ভয় পাবে।’
যুব ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক খান আসাদুজ্জামান মাসুম বলেন, ‘প্রতিদিন কোনো না কোনো নারী নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন। এভাবে দাঁড়াতে আমাদের ইচ্ছে করে না। আমরা বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছি।
‘রাষ্ট্রীয় বাহিনী কর্তৃক নারীরা যখন নির্যাতিত হয়, তখন রাষ্ট্রীয় বাহিনীর বাইরে যারা, তারা আরও আস্ফালন পায়। তারই ধারাবাহিকতায় নরসিংদীর এই ঘটনা। হিজাব পরিহিত ওই নারীর সাথে ওই কুলাঙ্গার পুরুষদের একটি যোগসূত্র আছে। এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়।’
সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নারী আন্দোলনের নেত্রী শাশ্বতী বিপ্লব, ডা. মুজাহিদুল ইসলাম রিপনসহ অন্যরা।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। সে ভিডিওতে দেখা যায়, নরসিংদী রেলস্টেশনে এক নারীকে ‘অশ্লীল পোশাক’ পরার অভিযোগ তুলে অন্য নারীসহ কয়েকজন মিলে হেনস্তা করেন।
ঘটনাটির ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় প্রশাসন গতকাল শুক্রবার রেলস্টেশন এলাকা পরিদর্শন করে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন। পরে রাতেই একজনকে আটকের তথ্য জানায় জেরা ডিবি পুলিশ।
ইসমাইল হোসেন নামের ওই ব্যক্তিকে শনিবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন:ভর্তুকি দিয়ে হলেও বন্ধ রাষ্ট্রায়ত্ত চিনিকলগুলো অবিলম্বে চালুর দাবি জানিয়েছে পাটকল চিনিকল রক্ষায় শ্রমিক-কৃষক-ছাত্র-জনতা ঐক্য পরিষদ।
রাজধানীর সেগুনবাগিচার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে শনিবার এক সেমিনারে এ দাবি জানান সংগঠনের নেতারা।
সেমিনারে বলা হয়, আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে চিনি একটি কৌশলগত খাদ্যপণ্য। বিশ্ব পরিস্থিতির সঙ্গে এর সরাসরি সম্পর্ক। ফলে দাম এবং সরবরাহের ক্ষেত্রে সব সময় একটা অনিশ্চয়তা কাজ করে। এ থেকে স্বস্তি পেতে সাময়িক লোকসান হলেও ভর্তুকি দিয়ে এসব চিনিকলগুলো বাঁচিয়ে রাখা জরুরি।
একই সঙ্গে সর্বোচ্চ মনোযোগ দিয়ে এর ব্যবস্থাপনা শক্তিশালী করা, লোকসান কমানো এবং জনস্বার্থ বিবেচনায় এর বিকাশ ঘটানো প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটেই এ বিষয়ে সরকারের কার্যকর পদক্ষেপ দেখতে চান তারা। সেটি না করা হলে দেশের ১৭ কোটি ভোক্তাকে এর চরম খেসারত দিতে হবে বলেও দাবি করেন তারা।
সেমিনারে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এম এম আকাশ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আনু মুহাম্মদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খান, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল বাসদের রাজেকুজ্জামান রতন ও বাংলাদেশ পাটকল শ্রমিক কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম।
সেমিনারে ভোজ্যতেল, জ্বালানি তেল ও গমের পর চিনির বাজারেও অস্থিরতা সৃষ্টির আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়।
বক্তারা বলেন, ২০২০ সালের শেষ দিকে দেশের ১৫টি রাষ্ট্রীয় চিনিকলের মধ্যে ছয়টি রাষ্ট্রীয় চিনিকল বন্ধের ঘোষণা আসে। ২০২০-এর মাড়াই মৌসুমের পাবনা চিনিকল, কুষ্টিয়া চিনিকল, রংপুর চিনিকল, পঞ্চগড় চিনিকল, শ্যামপুর চিনিকল, সেতাবগঞ্জ চিনিকলের আখ মাড়াই বন্ধ করে উৎপাদিত চিনি পার্শ্ববর্তী চিনিকলগুলোয় মাড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
বন্ধ হওয়ার পর থেকে দুটি মাড়াই মৌসুম চলে গেল। এ বছরের নভেম্বরে তৃতীয় মাড়াই মৌসুম শুরু হবে।
এরই মধ্যে রাশিয়া-ইউক্রেন আগ্রাসন শুরুর পর বিশ্বজুড়ে তীব্র জ্বালানি সংকট শুরু হয়েছে। এর সঙ্গে শুরু হয়েছে আসন্ন তীব্র খাদ্য সংকটের অশনিসংকেত। এ বছরের শুরু থেকে জ্বালানি তেলের মূল্য শুধু বাড়েনি, বেড়েছে ভোজ্যতেলের দামও। দুটি বৃহৎ গম রপ্তানিকারক দেশ ইউক্রেন-রাশিয়ার গম উৎপাদন ও গুদামজাতকরণ হুমকির মুখে গমের দাম বেড়ে গেছে।
এদিকে আন্তর্জাতিক বাজারে গমের চাহিদা বৃদ্ধি এবং মূল্য বেড়ে যাওয়ায় ভারত গম রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছে। এখন চিনির দাম বেড়ে গেলে চিনি রপ্তানিতে ভারত কোনো প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে না সে বিষয়েও কোনো নিশ্চয়তা নেই। ইতোমধ্যে সর্বোচ্চ চিনি উৎপাদনকারী দেশ ব্রাজিলের চিনিকলগুলো চিনি রপ্তানির চুক্তি বাতিল করে আখ থেকে ইথানল উৎপাদন করে রপ্তানি করতে চুক্তিবদ্ধ হচ্ছে। বিশ্বজুড়ে সব ধরনের জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ায় আখ থেকে উৎপাদিত বায়োফুয়েলের চাহিদা বেড়েছে।
ফলে চিনির চেয়ে আখ থেকে ইথানল উৎপাদন অধিক লাভজনক হয়ে উঠছে। এ পরিস্থিতিতে চিনির বাজারে সংকট ঘনীভূত হবে এবং এ কারণে চিনির দাম বাড়ার যথেষ্ট আশঙ্কা রয়েছে।
বক্তারা বলেন, ডলারের দাম বাড়ছে হু হু করে। ফলে চিনির মতো অপরিহার্য খাদ্য আমদানি আরও ব্যয়বহুল হয়ে উঠেছে। সবদিক থেকে চিনির দামের ওপর ঊর্ধ্বগতি চাপ শুধু এখন অপেক্ষার বিষয়।
সেমিনারে উপস্থাপিত মূল প্রবন্ধে বলা হয়, চিনিকলগুলো বন্ধ রাখার পর দেশের চিনির উৎপাদন পরপর দুই বছর ৪১ শতাংশ ও ৫৩ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। অথচ বৈশ্বিক এই অস্থির পরিস্থিতির মধ্যেও এ সময়ে ভারতে ৪০ ও ৬৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। অর্থাৎ ভারতে চিনিশিল্পের বিকাশ ঘটলেও দেশের চিনিশিল্প মাথা তুলে দাঁড়াতে পারছে না।
সেমিনার থেকে আগামী অর্থবছরের বাজেটে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার জন্য সাত দফা সুপারিশ করা হয়।
১. বন্ধ করে দেয়ার ছয়টি মিল পুনরায় চালু করা।
২. চিনি ও খাদ্যশিল্প করপোরেশনের হিসাব অনুযায়ী স্থগিত মিলগুলো পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ১৫ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ব্যয় হবে। মিলগুলো বসিয়ে না রেখে এবং যন্ত্রপাতি নষ্ট হতে না দিয়ে অবিলম্বে মিলগুলো চালুর উদ্যোগ নেয়া।
৩. বকেয়া বেতন-ভাতা ১৩ কোটি ১১ লাখ টাকা, পিএফ বকেয়া ১১১ কোটি ৬৩ লাখ টাকা, গ্রাচুইটি বকেয়া ২৮৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা অবিলম্বে পরিশোধ করার জন্য বাজেটে বরাদ্দ রাখতে হবে।
৪. আখ ক্রয়ের জন্য ২৫ শতাংশ ভর্তুকি দিতে হবে।
৫. আখ চাষের জন্য ১৫টি চিনিকল সবগুলো চিনিকলসংলগ্ন এলাকায় আগের মতো ঋণ দিতে হবে।
৬. মিলগুলোর পুঞ্জিভূত ৩ হাজার ৮৫ কোটি টাকা মওকুফ করতে হবে।
৭. মিলগুলো পুনরায় চালুর পর সেগুলোকে কীভাবে লাভজনক করা যায়, তার সুদূরপ্রসারী কর্মপরিকল্পনা নিতে হবে।
আরও পড়ুন:মালয়েশিয়ায় শ্রম বাজার বন্ধের মূল অন্তরায় হিসেবে ২৫ প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে গঠিত সিন্ডিকেট দায়ী করেছেন বায়রা সিন্ডিকেটবিরোধী মহাজোট। তারা বলেছে, দ্রুত এ সিন্ডিকেট ভেঙে দিতে হবে। অন্যথায় মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানো অনেক ব্যয় বহুল হয়ে পড়বে এবং শ্রমবাজার খুলতে সময়সাপেক্ষ হবে।
দীর্ঘদিন ধরে মালয়েশিয়া শ্রম বাজার বন্ধ থাকায় বাংলাদেশে ডলারের ওপর এক ধরনের চাপ সৃষ্টি হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন বক্তারা।
রাজধানীর একটি হোটেলে গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন।
মালয়েশিয়া শ্রমবাজারে কোনো সিন্ডিকেটকে অনুমোদন না দিয়ে বাংলাদেশের কম্পিটিশন আইন অনুযায়ী এবং মালয়েশিয়ায় অন্যান্য শ্রমিক প্রেরণকারী ১৩টি সোর্স কান্ট্রির ন্যায় বাংলাদেশের ‘সকল বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সির জন্য শ্রমবাজার উন্মুক্ত করণ’ শীর্ষক গোল টেবিলের আয়োজন করে বায়রা সিন্ডিকেটবিরোধী মহাজোট।
বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিতে মালয়েশিয়ায় শ্রমবাজার চালু বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই (এমওইউ) হয়েছে প্রায় পাঁচ মাস আগে। এত দিনেও বাংলাদেশিদের জন্য মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। থমকে আছে পুরো প্রক্রিয়াটি।
গোলটেবিলে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাংবাদিক ও অভিবাসন বিশেষজ্ঞ শরিফুল হাসান।
তিনি প্রবন্ধে বলেন, ‘শুধুমাত্র মালয়েশিয়া নয়, আমাদের পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ করতে হলে প্রযুক্তিবান্ধব পদ্ধতি গড়ে তুলতে হবে। এমন একটা পদ্ধতি থাকতে হবে যাতে যেকোনো বিদেশি নিয়োগকর্তা বাংলাদেশের সব বৈধ লাইসেন্সধারী রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে তাদের চাহিদা অনুযায়ী কর্মী সংগ্রহ করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের সব বৈধ লাইসেন্সধারী এজেন্সিকে একটি ডিজিটাল প্লাটফর্মে নিয়ে আসতে হবে।
‘পৃথিবীর যেকোনো দেশে থেকে নিয়োগ কর্তা বা রিক্রুটিং এজেন্সি তাদের পছন্দ ও চাহিদা সেখানে দেবেন। এরপর ডিজিটাল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশ দূতাবাস সেটি অনুমোদন দেবে। পরে বাংলাদেশ হাই কমিশন সেগুলো প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ও বিএমইটিতে অনুমোদের জন্য পাঠাবে। এরপর ডাটাবেজ থেকে কর্মী যাবেন। ফলে পুরো প্রক্রিয়াটি ডিজিটালাইজড হবে যাতে উভয়পক্ষ যেকোনো সময় পুরো বিষয়টি মনিটর করতে পারবে।’
মূল প্রবন্ধের সুর ধরে বক্তারা বলেন, মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠাতে ২৫ জনের যে সিন্ডিকেট তৈরি হয়েছে সেটি ভেঙে ফেলতে হবে। এটি ভাঙতে না পারলে বিদেশে শ্রমবাজার আরও সংকীর্ণ হবে।
বাংলাদেশি ২৫ রিক্রুটিং এজেন্সি সিন্ডিকেটের অপতৎপরতার কারণেই গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর স্বাক্ষরিত চুক্তির কার্যক্রম স্থগিত ও বাংলাদেশিদের জন্য মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার আটকে আছে বলে অভিযোগ করেন তারা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের দেশের প্রধান চালিকা শক্তিই আমাদের জনগণ। এ শক্তিকে কাজে লাগাতে হবে। বর্তমান বিশ্ব মন্দার বাজারে আমাদের প্রধান শক্তি বিদেশে শ্রমবাজার। আমাদের জনশক্তি। দেশের এই অগ্রগতির পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান হলো শ্রমবাজার।’
স্বল্প ব্যয়, ন্যায্য মজুরি ও নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত করতে সিস্টেম পরিবর্তনের কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি একে আজাদ বলেন, ‘সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর পক্ষে আমরাও আছি। এই সিন্ডিকেটের বাইরে গিয়ে সবাই যাতে উন্মুক্তভাবে প্রতিযোগিতামূলকভাবে বিদেশে লোক পাঠাতে পারি।
‘রপ্তানি পোশাকের পরেই দেশের বৈদেশি মুদ্রার অর্জনের দ্বিতীয় ধাপ হলো এই অভিবাসন। এই খাত থেকে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা আসছে। তবে আপনাদের দাবি আদায়ে আরও ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’
বায়রার সাবেক মহাসচিব আলী হায়দার চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ইউনিক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহা. নূর আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা, সেন্টার ফর এনআরবির চেয়ারপারসন এমএস সেকিল চৌধুরী, ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত, বায়রার সাবেক মহাসচিব শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমান।
আরও পড়ুন:এই মুহূর্তে গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্য না বাড়াতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।
শনিবার বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাবের ওপর রাজধানীর মতিঝিলে এফবিসিসিআই মিলনায়তনে সংগঠনটি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানান তিনি।
জসিম উদ্দিন বলেন, ‘বৈশ্বিক অন্তরীণ পরিস্থিতিতে চরম অসময় যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির সময় এটা নয়। যে চেষ্টা হচ্ছে, সেটি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। সরকারকে বেকায়দায় ফেলার শামিল।
‘সময় থাকতে সরকারকে তা বুঝতে হবে। বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়লে সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়বে। এর প্রভাব পড়বে জনজীবনের ওপর। এটা চলতে থাকলে দেশে অরাজক পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। তার দায়ভার তখন সরকারকে নিতে হবে।’
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘এরপরও যদি দাম বাড়ানোর চেষ্টা করা হয়, তাহলে সেটি ব্যবসায়ীদের ওপর না চাপিয়ে বিদ্যুৎ খাতের তহবিল থেকে ভর্তুকির মাধ্যমে সমন্বয় করা হোক।’
তিনি বলেন, ‘এই দুঃসময়ে পাইকারি পর্যায়ে গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাবে বহুমাত্রিক মূল্যস্ফীতি উস্কে দিয়ে এর বহুমুখী নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার উদ্ভব হবে দেশে। ফলে কৃষি শিল্প সেবা এবং সার্বিকভাবে সাধারণের জীবন ও জীবিকা নির্বাহের ক্ষেত্রে অচলাবস্থার সৃষ্টি করবে। সর্বোপরি অর্থনৈতিক উন্নয়নের চলমান ধারা মারাত্মক প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হবে।
‘দেশ এখন স্বল্প উন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে পদার্পণ করেছে। ২০৩০ সাল নাগাদ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) নিয়ে কাজ করছে সরকার। এই উন্নয়নশীল দেশে পদার্পণ এবং এসডিজির লক্ষ্য বাস্তবায়নে ব্যবসায়ীদের সর্বাগ্রে ভূমিকা রাখতে হবে।’
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘এসডিজি ৭ অনুযায়ী ভোক্তা স্বার্থ সংরক্ষণ এবং জনগণের জীবন ও জীবিকার প্রয়োজনে
সবার জন্য সুলভ উন্নত নিরবিচ্ছিন্ন এবং টেকসই জ্বালানি ও বিদ্যুৎ নিশ্চিত করতে সরকার বদ্ধপরিকর। কিন্তু জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাত বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বার্ক) আইনের বিধান অনুযায়ী স্বচ্ছতা, মানসম্মত দক্ষতা ও জবাবদিহিতা সহকারে সুচারুভাবে পরিচালিত হচ্ছে না।
‘বরং এই খাতে সর্বত্র অদক্ষতা, যথেচ্ছ অনিয়ম, অস্বচ্ছতা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে এবং আইনের বিপরীতে পরিচালিত হচ্ছে। এ অবস্থায় সমগ্র বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ব্যবস্থার আমূল সংস্কার না করে এ খাতে বিরাজমান অব্যবস্থাপনার অহেতুক দায়ভার জাতীয় অর্থনীতি এবং জনগণের জীবন ও জীবিকা নির্বাহের সকল ক্ষেত্রে সংক্রমিত করা কোনোভাবেই সমীচীন হবে না।’
তবে করোনার সংকট ময় পরিস্থিতি প্রশমিত হলে এবং ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধ পরিস্থিতি বন্ধ হওয়ার পর দাম বাড়ানোর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করলে ব্যবসায়ীদের সেক্ষেত্রে আপত্তি থাকবে না বলেও দাবি করেন এফবিসিসিআই সভাপতি।
জসিম উদ্দিন বলেন, ‘কুইক রেন্টালের এক সময় প্রয়োজনীতা ছিল। এখন আর তার প্রয়োজনীয়তা নেই। কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করা উচিত। অদক্ষ বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো বন্ধ করা উচিত। গ্যাসচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র গুলো অকার্যকর অবস্থায় পড়ে আছে। সরকার সেদিকে মনোযোগ না দিয়ে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। সরকারের ভুল পরিকল্পনার খেসারত শিল্প খাত বহন করতে পারে না।’
তিনি বলেন, ‘বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি না করে এখন সরকারের উচিত হবে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের আমূল সংস্কার আনা। অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা। বিদ্যুতের অতিরিক্ত উৎপাদন বন্ধ করে অহেতুক খরচ কমিয়ে আনা। এর জন্য ব্যবসায়ীরা সরকারকে সব ধরনের সহযোগিতা দেবে।’
বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্য বাড়ানোর চেষ্টার পেছনে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে দাবি করেননেশনাল অ্যাসোসিয়েশন অফ স্মল অ্যান্ড কটেজ ইন্ডাস্ট্রিজ বাংলাদেশ সভাপতি মির্জা নুরুল গনি শোভন। তিনি দাবি করেন, এর থেকে সরে আসতে হলে দরকার গণতান্ত্রিক সরকারের রাজনৈতিক দূরদর্শী সিদ্ধান্ত। এর বাইরে আমলাতন্ত্রের সিদ্ধান্তে কোন কাজ হবে না।
বাংলাদেশ চেম্বার অফ ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি আনোয়ার উল আলম চৌধুরী পারভেজ বলেন, ‘দেশে এখন ডলার সংকট চলছে। ইউক্রেন রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে পণ্যের দাম বাড়ছে। এখন যদি বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি করা হয়, উৎপাদন খরচ বাড়বে। যার প্রভাব পড়বে ভোক্তার ওপর। এখন বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির সময় নয়।’
রিহাব সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন বলেন, ‘বিশ্ববাজারে ঝড় চলছে। এ অবস্থায় ইচ্ছামত দাম বাড়িয়ে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য কে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেবেন না।’
বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতি কাটিয়ে আমরা রপ্তানিতে বেশ ভালো করতে ছিলাম। এ অবস্থায় বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানো হলে রপ্তানিকারকদের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে। এতে বিশ্ববাজারে রপ্তানি প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে পড়বে দেশের পোশাক খাতের উদ্যোক্তারা।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি মো. সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান, সাবেক সভাপতি আনোয়ার উল আলম চৌধুরী পারভেজ, বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, বিটিএমএ সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন, সাবেক সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন, এমসিসিআইর সাবেক সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, ব্যারিস্টার নিহাদ কবির, বিএসএমএর সভাপতি মনোয়ার হোসেন, বিসিএমএর সভাপতি মো. আলমগীর কবিরসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
আরও পড়ুন:রাজধানীর জুরাইন এলাকায় বালুভর্তি ট্রাকের চাপায় মো. রাসেল নামের এক শ্রমিক নিহত হয়েছেন।
জুরাইনের কমিশনার রোডে শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
রাসেল ওই ট্রাক থেকে বালু নামাতে এসেছিলেন। তার বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে রাসেলকে নিয়ে আসা একজন জানান, রাতে বালু নামানোর জন্য ট্রাকটি পেছনের দিকে যাচ্ছিল। ওই সময় বৈদ্যুতিক খুঁটি ও ট্রাকের মাঝে চাপা পড়ে গুরুতর আহত হন রাসেল। পরে দ্রুত ঢামেক হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে জানান।
ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া জানান, বালুশ্রমিকের মরদেহ জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি কদমতলী থানাকে জানানো হয়েছে।
গত কয়েক দিনের ভ্যাপসা গরমে নাভিশ্বাস উঠছিল। জ্যৈষ্ঠের এই খরতাপ থেকে মুক্তি পেতে বৃষ্টির প্রতীক্ষায় ছিল মানুষ। তাদের সে প্রতীক্ষার অবসান হয়েছে।
শনিবার ভোররাত থেকে সকাল পর্যন্ত অবিরাম বর্ষণ দেখেছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ। এতে প্রাণে স্বস্তি ফিরলেও অস্বস্তি হয়ে আসে আংশিক বা পুরোপুরি ডুবে যাওয়া সড়ক।
রাজধানীর মিরপুর ১০ ও ১৩ নম্বর, মধ্য বাড্ডাসহ বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা গেছে।
মিরপুর ১০ নম্বর গোলচক্কর এলাকায় সড়ক পুরোপুরি পানিতে ডুবে গেছে। সেখান দিয়ে যানবাহনগুলোকে ধীরে ধীরে চলতে হয়েছে।
মিরপুর-১৩ নম্বরে বনফুল আদিবাসী গ্রিন হার্ট কলেজ ও স্কলাস্টিকার সামনের সড়কে জলাবদ্ধতা দেখা যায়।
একই অবস্থা দেখা গেছে হারম্যান মেইনার কলেজ সংলগ্ন সড়কে।
এর বাইরে মধ্য বাড্ডাসহ বিভিন্ন সড়কে পানি জমেছে।
অফিসমুখী মানুষের ভোগান্তি
সরকারি চাকরিজীবীদের সাপ্তাহিক ছুটির দিন হলেও শনিবার কর্মস্থলে যেতে হয়েছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের। বৃষ্টির মধ্যে ঘর থেকে বেরিয়ে গন্তব্যে যেতে যানবাহন পেতে সমস্যা হয়েছে অনেকের। কেউ কেউ জলাবদ্ধ সড়ক ধরে হাঁটতে বাধ্য হয়েছেন।
২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাস
আবহাওয়া অধিদপ্তরের শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়, মর্তবান উপসাগর ও তৎসংলগ্ন মিয়ানমারে সৃষ্টি লঘুচাপটি ঘনীভূত হয়ে প্রথমে সুস্পষ্ট লঘুচাপ এবং পরবর্তী সময়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে।
এটি উত্তর-পূর্ব দিকে সরে গিয়ে মিয়ানমার উপকূলের দিকে অগ্রসর হতে পারে। অপর একটি লঘুচাপের বর্ধিতাংশ বিহার, পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল হয়ে উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।
পূর্বাভাসে উল্লেখ করা হয়, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গা, চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গা এবং খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে বিজলি চমকানোসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে।
আরও পড়ুন:ঢাকার সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে দুই লঞ্চের মাঝখানের ফাঁকা জায়গা থেকে ভাসমান অবস্থায় অজ্ঞাত এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ওই মরদেহ উদ্ধারের পর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় পুলিশ।
নৌ-পুলিশের সদরঘাট নৌ-থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কাইয়ুম আলী সরদার নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, সকাল সাড়ে ৯টার দিকে টার্মিনাল থেকে খবর পেয়ে মরদেহটি উদ্ধারে যায় সদরঘাট নৌ-থানার একটি টিম। মরদেহ উদ্ধার করে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়।
লঞ্চের কর্মচারীরা ধোয়ামোছার সময় ওই নারীর মরদেহ ভেসে থাকতে দেখেন বলে জানান ওসি।
প্রত্যক্ষদর্শী নাজমুন নাহার মুনা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সকালে লঞ্চের কয়েকজন একটা মরদেহ দেখতে পায়। তখন সেখানকার লোকজন ওই মরদেহের কোমরে বাঁধা বেল্টে বাঁশ দিয়ে আটকে রাখতে বলে। মরদেহের মাথায় ব্যান্ডেজ করা ছিল। মনে হয়েছে স্কুলড্রেস পরা, কেউ হয়তো মারধর করে ফেলে রেখে গেছে।’
সদরঘাট নৌ-থানার ডিউটি অফিসার জানান, মরদেহটি পানিতে ভাসমান অবস্থায় ছিল। সকালে উদ্ধার করে সাড়ে ১০টার দিকে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। লোকজন বলছে, ওই নারী পাগল ছিলেন। তার গলায় তাবিজ ও হাতে চুড়ি পাওয়া গেছে।
স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের প্রধান ডোম শ্যামল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মরদেহটি শুক্রবার বেলা ১টার দিকে মর্গে আসে। তবে কোনো আত্মীয়স্বজন মরদেহ নেয়ার জন্য আসেননি৷ মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে মর্গে রাখা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য