ময়মনসিংহের সড়কগুলোতে প্রতিদিন ছোটাছুটি করা যানবাহনগুলোর বেশির ভাগই ফিটনেসহীন। এমনকি মহাসড়কেও দাপিয়ে বেড়াচ্ছে গাড়িগুলো। ওই অঞ্চলে সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণও এসব গাড়ি। তবে এ বিষয়ে নির্বিকার সবাই।
নাগরিক আন্দোলনের নেতারা বলছেন, বিআরটিএ ও প্রশাসনের সঙ্গে পরিবহন নেতাদের যোগসাজশে ময়মনসিংহজুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ফিটনেসহীন গাড়ি।
তারা জানান, এ বিভাগের অধীন চারটি জেলার সব যানবাহন চলাচল করে ময়মনসিংহ নগরীর ভেতর দিয়ে। ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, বেপরোয়া গতি ও চালকদের খামখেয়ালিপনার কারণে প্রতিনিয়ত সড়ক দুর্ঘটনায় মানুষ মারা যাচ্ছে।
এসব দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে ফিটনেসহীন যানবাহনকে। অদৃশ্য কারণে নেয়া হচ্ছে না এসব গাড়িসহ মহাসড়কে থ্রি-হুইলার চলাচল বন্ধ করার উদ্যোগ। ফলে গাড়ি চলাচলে হযবরল অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে ময়মনসিংহে। এতে জনদুর্ভোগ পৌঁছেছে চরমে।
স্থানীয় বিআরটিএ কার্যালয় থেকে জানা যায়, ময়মনসিংহ জেলায় বিআরটিএ কর্তৃক নিবন্ধনকৃত যানবাহনের সংখ্যা ৮ হাজার ১৩৬টি। এর মধ্যে ২০২০-২১ অর্থবছরে ১ হাজার ৬৭৪টি যানবাহন রাজস্ব জমা দিয়ে ফিটনেস সার্টিফিকেট নিয়েছে।
বর্তমানে ফিটনেসহীন ৬ হাজার ৫০২টি যানবাহন চলাচল করছে। এই হিসাবে ময়মনসিংহে ৭৯ দশমিক ৯২ শতাংশ যানবাহন ফিটনেসহীন হয়েও যাত্রী নিয়ে চলাচল করছে।
যাত্রীদের অভিযোগ, মালিকরা নিজের স্বার্থে ফিটনেসবিহীন যানবাহন মহাসড়কে নামিয়েছেন। আর এসব বন্ধে রয়েছে বিআরটিএ ও প্রশাসনের গাফিলতি। ট্রাফিক পুলিশেরও আয়ের উৎসে পরিণত হয়েছে ফিটনেসহীন গাড়িগুলো। প্রতিটি গাড়ি থেকেই হাত বাড়িয়ে টাকা নিচ্ছেন তারা। মামলা না দেয়ায় সরকারও পাচ্ছে না রাজস্ব। এসব গাড়িতে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয়।
নগরীর পাটগুদাম বাস টার্মিনালে কথা হয় খোকন নামের একজন বাসযাত্রীর সঙ্গে। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আমি গাজীপুরে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করি। গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের তারাকান্দায় ছুটি কাটিয়ে আবারও কাজে যাচ্ছি। আসা-যাওয়ার সময় কোনটা ঝুঁকিপূর্ণ গাড়ি, আমাদের বোঝার উপায় নেই। অনেক গাড়ির ছাল চামড়া না থাকলেও আমরা বাধ্য হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছি।’
আসাদ নামে আরেকজন যাত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। কিন্তু জনগণের জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে কারও মাথাব্যথা নেই। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন। নয়তো সড়কে আরও বহু মানুষের প্রাণ ঝরবে।’
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, জেলায় ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১২ মাসে ১৫৩টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৫৬ জন। এই সময়ে আহত হয়েছেন অন্তত ১৭৯ জন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ত্রিশাল ও ভালুকা উপজেলায়।
জেলা নাগরিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার নুরুল আমিন কালাম বলেন, ‘ফিটনেসহীন যানবাহন বন্ধ করতে আমরা অনেকবার সংশ্লিষ্টদের বলেছি। তবে কার্যত ফলাফল শূন্য। কার প্রয়োজনে এসব গাড়ি চলাচল অব্যাহত আছে, তা জনসমক্ষে পরিষ্কার করা প্রয়োজন। আমরা মনে করি, ওপরে ঠিকঠাক ভেতরে সদরঘাট- এমন গাড়ি থাকার চেয়ে না থাকা ভালো।’
নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের (নিসকা) জেলা শাখার সভাপতি আব্দুল কাদের চৌধুরী মুন্না জানান, বিআরটিএ, প্রশাসন ও পরিবহন নেতাদের যোগসাজশে এসব গাড়ি রাস্তায় চলছে। পাশাপাশি রয়েছে অনেক অদক্ষ চালক। ফলে অহরহ দুর্ঘটনা ঘটছে।
তিনি বলেন, সড়কে দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করতে হলে ফিটনেসহীন যান চলাচল বন্ধ করার পাশাপাশি থ্রি-হুইলার মহাসড়কে চলাচল বন্ধ করতে হবে। এ ছাড়া চালকদের সচেতনতার মাধ্যমে গাড়ির গতিসীমা নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি।
জেলা মোটর মালিক সমিতির সভাপতি মমতাজ উদ্দিন বলেন, করোনার কারণে যানবাহন মালিকরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এখনও ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া যায়নি। এ কারণে অনেক মালিক রাজস্ব জমা দিয়ে ফিটনেস সার্টিফিকেট নিতে পারেনি। বর্তমানে ফিটনেসবিহীন গাড়ির সংখ্যা কমাতে মালিকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।
বিআরটিএ থেকে ফিটনেসহীন যানবাহনের তালিকা নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন ময়মনসিংহ ট্রাফিক বিভাগের পুলিশ পরিদর্শক (প্রশাসক) সৈয়দ মাহবুবুর রহমান।
তিনি বলেন, সড়কে যানবাহনের ফিটনেসসহ অন্য কাগজপত্র কড়াকড়িভাবে তল্লাশি করা হবে। ঠিকঠাক ফিটনেসসহ সবকিছু ঠিক না থাকলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) ময়মনসিংহের সহকারী পরিচালক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন নিউজবাংলাকে জানান, সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ হচ্ছে ফিটনেসহীন যানবাহন। অনেক গাড়ি ভালো রং করে মহাসড়কে চলাচল করলেও বাস্তবে চলাচলের অযোগ্য। এসব গাড়ি বন্ধে সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন।
তিনি বলেন, গত অর্থবছরে ফিটনেস সার্টিফিকেটসহ অন্যান্য সেবা বাবদ ৭ কোটি ৯১ লাখ ৭ হাজার ৩৪৪ টাকা রাজস্ব আয় হয়েছে। এ ছাড়া অসংখ্য গাড়ি ইচ্ছা করেই ফিটনেস সার্টিফিকেট নবায়ন করছে না। এগুলো নবায়ন হলে কয়েক কোটি টাকার রাজস্ব আয় হবে। এ জন্য যানবাহন মালিকদের বারবার তাগিদ দেয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মো. এনামুল হক বলেন, ফিটনেসহীন যানবাহনের সংখ্যা কমাতে দ্রুত উদ্যোগ নেয়া হবে। এ কাজে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা নেয়া হবে। এতে সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে।
আরও পড়ুন:নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন করোনা আক্রান্ত এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত জেবল হক (৮০) কবিরহাট উপজেলার চাপরাশিরহাট ইউনিয়নের লামছি গ্রামের মৃত গনু মিয়ার ছেলে।
বুধবার (২ জুলাই) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. রাজীব আহমেদ চৌধুরী। এর আগে, গতকাল মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাত ১০টার দিকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে তার মৃত্যু হয়।
ডা. রাজীব আহমেদ চৌধুরী বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। গত মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে ওই বৃদ্ধ হাসপাতালে ভর্তি হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে মারা যান তিনি। এদিকে গত ২৪ ঘন্টায় নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের এক জনের নমুনা পরীক্ষায় একজনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা.মরিয়ম সিমি বলেন, মারা যাওয়া ব্যক্তি সকালে হাসপাতালে ভর্তি হয়। দুপুরে তার করোনা শনাক্ত হওয়ার পর সেখানে রাতে তার মৃত্যু হয়। এখন পর্যন্ত নোয়াখালীতে মোট ৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। কিট সল্পতার কারণে উপজেলা পর্যায়ে করোনা টেস্ট এখনো শুরু করা হয়নি।
সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের নেতৃত্ব নিয়ে চলমান বিরোধের জেরে ক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেমসহ সাংবাদিকদের উপর অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৩০ সাংবাদিক আহত হয়েছেন।
অভিযোগ উঠেছে, ক্লাবের কথিত সভাপতি মাদকাসক্ত আওয়ামী দোসর আবু সাঈদ ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারীর নেতৃত্বে আল ইমরান ও অমিত ঘোষ বাপ্পাসহ ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্তরা এই হামলা চালায়।
সোমবার (৩০ জুন) সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে এই হামলায় ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের সাংবাদিক ও প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম, ভোরের আকাশের সাংবাদিক আমিনুর রহমান, ডিবিসি নিউজের সাংবাদিক বেলাল হোসেন, অনির্বানের সোহরাব হোসেনসহ অন্তত ৩০ সাংবাদিক গুরুতর আহত হয়েছেন।
হামলার শিকার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রেসক্লাবে একটি সভা করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। ঠিক সেই মুহূর্তে আবু সাঈদ ও আব্দুল বারীর নেতৃত্বে আলিপুর থেকে আনা ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্তরা আমাদের উপর পরিকল্পিতভাবে হামলা করে। তাদের হামলায় আমাদের অন্তত ৩০ জন সাংবাদিক ও সদস্য আহত হয়েছেন।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, আবু সাঈদ ও আব্দুল বারী দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে প্রেসক্লাব দখল করে রেখেছেন এবং তাদের মতের বিরুদ্ধে গেলেই এভাবে হামলা ও নির্যাতন চালানো হয়।
এই ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনায় সাতক্ষীরার সাংবাদিক মহলে তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। সাংবাদিকরা অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছেন।
ঘটনার পর থেকে প্রেসক্লাব এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
কুমিল্লার দাউদকান্দি পৌরসভার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। বাজেট ঘোষণা করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও দাউদকান্দি পৌর প্রশাসক রেদওয়ান ইসলাম।
সোমবার (৩০ জুন) দুপুরে পৌরসভা হলরুমে এ বাজেট ঘোষণা করা হয়। বাজেটে সর্বমোট আয় ৪২ কোটি ৯১ লাখ ৫৯ হাজার টাকা ও মোট ব্যয় ৩৬ কোটি ৭৪ হাজার টাকা প্রস্তাব করা হয়। পৌর প্রশাসক রেদওয়ান ইসলাম তার প্রস্তাবিত বাজেটে ২০২৫-২৬ অর্থ বছরে রাজস্ব খাত থেকে ১৩ কোটি ২৩ লাখ ৪১ হাজার ৩ শত ৩১ টাকা ও উন্নয়ন খাত থেকে ২৯ কোটি ৬৮ লাখ ১৮ হাজার ৪৫ টাকা আহরনের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। বাজেটে উদ্ধৃত্ত ধরা হয়েছে ৬ কোটি ১৭ লাখ ২ হাজার ৩ শত ৭৮ টাকা।
এছাড়াও বাজেটে খাতওয়ারী ব্যয়ের হিসেবে দেখা যায় রাজস্ব খাতে ব্যয় ৯ কোটি ৫৯ লাখ ৫৭ হাজার টাকা এবং উন্নয়ন ব্যয় দুই কোটি ১৫ লাখ টাকা ধরা হয়েছে।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.হাবিবুর রহমান,পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম, হিসাবরক্ষক শাহাদাত হোসেনসহ পৌরসভার অন্যান্য কর্মকর্তারা।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে মাদকাসক্ত হয়ে মাতলামি করার প্রতিবাদ করায় ইয়াছিন (৩৮) ও সিপন( ৩২) নামে দুই যুবক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আহতদের মধ্যে একজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং অপরজনকে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
শুক্রবার দিবাগত রাতে উপজেলার মুড়াপাড়া টঙ্গীরঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
গুলিবিদ্ধ ইয়াছিন মুড়াপাড়ার হাউলিপাড়া এলাকার ইদু মিয়ার ছেলে এবং সিপন টঙ্গীরঘাট এলাকার আলাউদ্দিনের ছেলে।
রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তরিকুল ইসলাম জানান, রাত ১১টার দিকে ইয়াছিন তার স্ত্রীকে নিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে খালাতো বোনের বাড়ি যাচ্ছিলেন। পথে স্থানীয় সোহরাব নামের এক যুবক মাদকাসক্ত অবস্থায় তাদের উদ্দেশে গালিগালাজ করলে ইয়াছিন প্রতিবাদ করেন। পরে তিনি খালাতো ভাই সিপনকে নিয়ে স্থানীয় অহিদুল্লার বাড়িতে গিয়ে ঘটনার কথা জানান। সেখানেই সোহরাব ক্ষিপ্ত হয়ে পিস্তল দিয়ে তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে ইয়াছিনের মাথায় ও সিপনের পায়ে গুলি লাগে।
তাদের প্রথমে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সিপনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং ইয়াছিনকে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গুলির খোসা উদ্ধার করেছে এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করেছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
নোয়াখালীতে গ্রাম আদালত সম্পর্কে ব্যাপক সচরতা বৃদ্ধিতে স্থানীয় সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের অংশ গ্রহণের সমন্বিত পরিকল্পনা বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নোয়াখালী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে বুধবার সকাল ১১ টার দিকে (২৫ জুন) জেলা প্রশাসকের কার্যালয় তৃতীয় তলায় মিনি কনফারেন্স হলরুমে কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন, নোয়াখালী জেলা প্রশাসক খন্দকার ইশতিয়াক আহমেদ, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক জালাল উদ্দিন,নোয়াখালী অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ ইয়াসিন, গ্রাম আদালত নোয়াখালী ম্যানেজার আহসানুল্লাহ চৌধুরী মামুনসহ এনজিও প্রতিনিধি, সাংবাদিক, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ,সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের একটি বিচারাধীন মামলার নথি থেকে এজাহারের কপি রহস্যজনকভাবে গায়েব হয়ে গেছে। আদালতের নথি থেকে গুরুত্বপূর্ণ এই কাগজ হারিয়ে যাওয়ার ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে আমলে নিয়ে মামলার বেঞ্চ সহকারী হুমায়ুন কবির ও আসামিপক্ষের আইনজীবী আহসান হাবিব মুকুলকে শোকজ করেছেন বিচারক। তাদের তিন কার্যদিবসের মধ্যে এ বিষয়ে ব্যাখা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আদালত সূত্র জানায়, ঘটনাটি ঘটে গত ২২ জুন যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতে। ওই দিন মামলাটির (এসসি-১৬৬৯/২০১৮) সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য নির্ধারিত ছিল। আদালতে আসামি, রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি ও আসামিপক্ষের আইনজীবী—সবাই উপস্থিত ছিলেন।
সাক্ষ্যগ্রহণ চলাকালে বিচারক মো. সালেহুজ্জামান মামলার নথি পর্যবেক্ষণ করে দেখতে পান, নথিতে মামলার এজাহারের কপি নেই। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি আদালতের বেঞ্চ সহকারীকে বিষয়টি অবগত করলে তিনি জানান, সাক্ষ্য গ্রহণের আগে আইনজীবী আহসান হাবিব মুকুল তার কাছ থেকে নথি নিয়ে গিয়েছিলেন এবং এজাহার দেখে প্রয়োজনীয় তথ্য লিখে নিয়েছিলেন। এরপর তিনি আবার নথি বিচারকের কাছে জমা দেন।
এরপর এজলাসেই বিচারক আইনজীবীর কাছে জিজ্ঞাসা করলে তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে মন্তব্য করেন। ফলে বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। জেলা আইনজীবী সমিতির নেতারাসহ সিনিয়র আইনজীবীরা এজলাসে হাজির হন। একপর্যায় বিচারক ওই দুইজনকে শোকজ করে আগামী ১৩ আগস্ট মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করেন।
বেঞ্চ সহকারী হুমায়ুন কবির বলেন, ‘বিচারক এজলাসে ওঠার আগে আইনজীবী মামলার নথি নিয়েছিলেন। পরে ফেরত দেন। আমি নিজে নথিতে কোনো হেরফের করিনি। আইনজীবী কিংবা আইনজীবীর সহকারীর মাধ্যমে এই ঘটনা ঘটতে পারে।’
অন্যদিকে, আইনজীবী আহসান হাবিব মুকুল জানান, তিনি নথি নিয়েছিলেন ঠিকই, তবে বিচারক এজলাসে চলে আসায় তা যথাযথভাবে বেঞ্চ সহকারীর কাছে ফিরিয়ে দিয়েছেন। তিনি আসামির চালান কপি থেকে তথ্য নিয়েছেন। এজাহার সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলেও দাবি করেন।
যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এম এ গফুর বলেন, ‘ঘটনাটি আমাদের নজরে এসেছে। একজন আইনজীবী এমন কাজ করতে পারেন না। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে পর্যবেক্ষণ করছি।’
আদালত ও আইনজীবী সমিতি সূত্র আরও জানায়, আদালতে থাকা মামলার মুল কপি থেকে মামলার এজাহারের কপি সরিয়ে নিয়ে বাড়তি সুবিধা নেওয়ার সুযোগ নেই। এ ছাড়া এজাহার কপি হারিয়ে গেলেও মামলার বিচারের ক্ষেত্রে প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা নেই। কারণ ওই মামলার এজাহারের ফটোকপি রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলির কাছে সংরক্ষিত থাকে। এর বাইরেও অনেক মাধ্যমে মামলার এজাহারের কপি পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
তবে, মুল নথিতে এজাহারের কপি না থাকাটা সমীচীন নয়। এ বিষয়টি অবশ্যই খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে জানায় সূত্র।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে সংবাদ প্রকাশের জের ধরে মিজানুর রহমান রিপন (৪৮) নামের এক স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীকে মারধর ও লাঞ্চিতের ঘটনা ঘটেছে। মিজানুর রহমান রিপন ফিলিপনগর ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামের আজাহার আলীর ছেলে।
গত রবিবার সন্ধার দিকে দৌলতপুর উপজেলা পরিষদ বাজারে এই ঘটনা ঘটে। মিজানুর রহমান রিপন ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক আমর সংবাদ পত্রিকার দৌলতপুর উপজেলা প্রতিনিধি ও অনলাইন নিউজ পোর্টাল ডেইলি নিউজ বাংলার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হিসেবে কাজ করে আসছেন। এঘটনায় ওই দিন রাতে ভূক্তভুগী নিজে বাদী হয়ে দৌলতপুর থানায় একটি লিখিত এজাহার দায়ের করেন।
এযাহার সূত্রে জানাযায়, গত ৮ জুন উপজেলার তারাগুনিয়া থানার মোড় এলাকার তারাগুনিয়া ক্লিনিকে আখি খাতুন (২২) নামের এক প্রশুতি মায়ের মৃত্যুর ঘটনায় তিনি সহ উপজেলার বেশ কয়েকজন গণমাধ্যম কর্মী সংবাদ প্রকাশ করে। তারি জের ধরে উপজেলা বাজারে থাকা সরকার নিষিদ্ধ ক্লিনিক বেবি নার্সিং হোম এর মালিক আহসান হাবিব কালুর ছোট ছেলে খালিদ হাসান আর্জু উপজেলা বাজারে তাকে মারধর করে।
এবিষয়ে মিজানুর রহমান নামের ওই গণমাধ্যম কর্মী বলেন, গতকাল বিকেলে আমি উপজেলা বাজারে বাড়ির দৈনন্দিন বাজার করছিলাম এসময় খালিদ হাসান আর্জু উপজেলা বাজারের বেবী ক্লিনিক মালিকের ছেলে আমার উপর হামলা চালায়। এসময় সে আমাকে বলে আমার হাসপাতালে যে ডাক্তার আসে সেই ডাক্তারের নামে তুরা নিউজ করেছিস বলে আমার উপর হামলা চালিয়ে বেদড়ক মারধর করে। এঘটনার পর আমি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
গণমাধ্যম কর্মীকে মারধরের বিষয়ে, দৌলতপুর উপজেলার একজন প্রবীন গণমাধ্যম কর্মী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, যে ধরনের ঘটনা ঘটেছে এটি কখনই কাম্য নয়। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যাবস্থা নেওয়া উচিৎ।
এঘটনায় দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি নাজমুল হুদা জানান, এ ব্যাপারে অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
অভিযুক্ত খালিদ হাসান আর্জু
মন্তব্য