এবার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আলু চাষ হচ্ছে রংপুরে। আগাম জাতের এই গ্রানুলা আলু মালয়েশিয়ায় রপ্তানিও শুরু হয়েছে। এরপরও লোকসানের মুখে ওই অঞ্চলের কৃষকরা। উৎপাদন খরচের অর্ধেকও উঠে না আসার শঙ্কায় তারা।
চাষিরা জানান, গ্রানুলা জাতের আগাম আলু চাষ করে বিগত বছরগুলোর ক্ষতি পুষিয়ে নিতে চেয়েছিলেন তারা। কিন্তু মাত্র সাড়ে চার টাকা কেজি দরে এবার আলু বিক্রি করতে হচ্ছে। ফলে প্রতি ২৫ শতক জমিতে গড়ে ১৬ হাজার টাকা করে লোকসান গুনছেন তারা।
এই হিসাবে চলতি মৌসুমে শুধু আগাম আলুতেই প্রায় ১০ কোটি টাকা গচ্ছা যাবে প্রান্তিক আলু চাষিদের।
রংপুর আঞ্চলিক কৃষি অফিসের সূত্র মতে, ওই অঞ্চলে এবার আগাম জাতের আলু চাষ হয়েছে ১১ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে। সেই আলু আরও ২০ দিন আগ থেকেই তুলছেন চাষিরা। ঢাকা-চট্টগ্রামের রপ্তানীকারকরাও আলু সংগ্রহ শুরু করেছেন।
মুন্সিগঞ্জের ওয়াদুদ ট্রেডার্সের কর্ণধার আব্দুল লতিফ বলেন, ‘এই অঞ্চলের আলুর মান ভালো। আমরা আশাবাদী এই আলু নিয়ে। রংপুরে আগাম আলু, তাই চাহিদা অনুযায়ী সংগ্রহ করা হচ্ছে। আশা করছি, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আলু ক্রয় করে তা মালয়েশিয়ায় পাঠাতে পারব।’
ওয়াদুদ ট্রেডার্সের পক্ষে রংপুরের ভুড়ারঘাট এলাকায় আলু কিনছেন হাসান আলী। তিনি জানান, ১৪ টনের ২০০টি ট্রাক চট্টগ্রাম বন্দরে পাঠাতে হবে ২১ জানুয়ারির মধ্যে।
হাসান বলেন, ‘সরাসরি জমি থেকে আমরা আলু কিনছি। আলুর সাইজ সর্বনিম্ন ৭০ গ্রাম। সাড়ে চার টাকা কেজি দরে কিনে দুই কেজির প্যাকেট করে পাঁচটি প্যাকেট একসঙ্গে করা হচ্ছে। এ জন্য ১৭ নারী আর ১২ জন পুরুষ শ্রমিক মোকামে কাজ করছেন।’
রংপুর সদরের ভুরাড়ঘাট এলাকার আলু চাষি হাশেম আলী জানান, স্থানীয় হিসেবে ২৫ শতকে এক দোন জমি। এই পরিমাণ জমি ভাড়া নিয়ে আলু আবাদ করতে কম হলেও ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা খরচ হয়। কিন্তু বর্তমানে তাদের এক দোন জমির আলু মাত্র ৫ থেকে ৭ হাজার টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘বাজারে আলুর দাম নাই। ইম্পোর্টাররা এসে বড় আলুটা নিয়ে যাচ্ছে। তাই ছোট আলুগুলোকে আরও কম দামে বিক্রি করতে হবে।’
একই এলাকার জাহাঙ্গীর আলম বিটুল বলেন, ‘আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হইতেছি। এটা পোষানোর জন্য হয়তো জমি বন্ধক রাখতে হবে। নয়তো গরু ছাগল বিক্রি করা লাগবে। না হলে এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ধার শোধ করা লাগবে। ঋণ করে আলু চাষ করছি। আবার ঋণ করেই শোধ করতে হবে।’
রংপুরের দর্শনা মাঞ্জাই এলাকার আহাম্মদ আলী জানান, এক দোন জমিতে রোপণের সময় আলু লাগে ১৬০ কেজি। আর তিন ধরনের ৬ বস্তা সার ছাড়াও কীটনাশক লাগে ৫-৬ ধরনের।
তিনি বলেন, ‘এবার তো সব জিনিসের দাম বেশি। আমরা খুব কষ্ট করে আলু চাষ করছি। আলু ভালো হইছে। সরকারের কাছে অনুরোধ, আমরা পথে বসতে চাই না। বিদেশোত আলু বেশি করে পাঠাক, দাম যেন বেশি হয়। তাহলে কিছু লাভবান হতে পারব।’
রংপুরের মাহিগঞ্জ সরেয়ারতল এলাকার আলু চাষি রোস্তম আলী জানান, গত বছর ৩ একর জমিতে আলু চাষ করে তার ২ লাখ টাকা লোকসান হয়েছে। তার পরও এবার আলু চাষ করেছেন তিনি।
রোস্তম বলেন, ‘গত বছর এই সময়- যে আলুর দাম ছিল ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজি; সেই আলু এখন সাড়ে চার থেকে ৬ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। মনে হচ্ছে কেউই পুঁজি উঠিয়ে আনতে পারবে না।’
দাম কম কেন
কৃষিসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, আলু নিয়ে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা না থাকা, রপ্তানিযোগ্য ও শিল্পনির্ভর জাত উদ্ভাবন না করা, গুনগত মান পরীক্ষায় পর্যাপ্ত ল্যাব না থাকা, কাঙ্ক্ষিত পরিমাণে রপ্তানি না হওয়ার জন্যই আলুর দাম কম।
এ ছাড়া বেসরকারি পর্যায়ে বীজ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো চাষিদের পরিকল্পনাহীনভাবে আলু চাষে উদ্বুদ্ধ করছে। চাহিদার চেয়ে বেশি উৎপাদন ও সংরক্ষণ ব্যবস্থার অভাব থাকায়ও ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কৃষক।
রংপুর কৃষি বিপণন অফিস এবং কৃষি অফিসে ওই অঞ্চলের পাঁচ জেলায় (রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট ও নীলফামারী) আলুর চাহিদা কত মেট্রিকটন তার সঠিক হিসাব নেই।
রংপুর আঞ্চলিক কৃষি অফিসের অতিরিক্ত উপপরিচালক মাহবুবার রহমান বলেন, ‘গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে এই অঞ্চলে ৯৭ হাজার ৩১৫ হেক্টর জমিতে ২ কোটি ২৬ লাখ ৪ হাজার ৫৯৬ মেট্রিকটন আলু উৎপাদন হয়েছে। এ বছরও একই পরিমাণ জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।
কৃষি বিভাগ বলছে, সব ঠিকঠাক থাকলে এবারও উৎপাদনে লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।
এদিকে কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, গত বছরের আলু এখনও বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণে আছে। এর মাঝেই নতুন আলু আসায় এর দাম কম। চাহিদার চেয়ে উৎপাদন বেশি হওয়ায় দিনে দিনে কদর এবং এর দাম কমে যাচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অন্যান্য বছর সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, রাশিয়ায় আলু রপ্তানি হলেও করোনার সময় তা সম্ভব হয়নি। এবার এখন পর্যন্ত মালয়েশিয়ায় রপ্তানি করতে রংপুরের আলু কেনা হচ্ছে।
বিপণন বিভাগের বক্তব্য
দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আলু চাষ হচ্ছে রংপুর আঞ্চলে। অথচ আলুর বিক্রি নিয়ে নির্দিষ্ট কোনো ছক নেই এই অঞ্চলের বিপণন কেন্দ্রের।
কেন্দ্রের উপপরিচালক আনোয়ারুল হক বলেন, ‘ইমপোর্ট এক্সপোর্ট আমাদের এখানে না থাকায় বিদেশে কী পরিমাণ আলু রপ্তানি হবে সেই তথ্য আমাদের কাছে নেই। আছে কেন্দ্রের কাছে। তবে আলু সংরক্ষণ নিয়ে আমাদের পরিকল্পনা আছে। আমরা মাচাং পদ্ধতিতে আলু সংরক্ষণের জন্য কাজ করছি।’
তিনি জানান, সংরক্ষণের জন্য হাতে নেয়া একটি প্রকল্প এখন চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায়। এটি চালু হলে আলু চাষিরা ভরা মৌসুমে মাচাং পদ্ধতিতে আলু সংরক্ষণ করতে পারবেন। ফলে ভরা মৌসুমে কম দামে আলু বিক্রি করতে হবে না। সময় নিয়ে দাম দেখে কৃষকরা বিক্রি করবেন।
চেম্বারের প্রস্তাব
রংপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি মোস্তফা সারোয়ার টিটু বলেন, ‘ধানের পরই আলুর আবাদ হচ্ছে রংপুরে। ৯৫টি হিমাগার রয়েছে বিভাগে। এরপরও জায়গা সংকুলান হয় না। এ জন্য আলু উৎপাদন নিয়ে সঠিক সিদ্ধান্তে আসতে হবে। কৃষকদের ক্ষতি পুষিয়ে দিতে তাদের ভর্তুকির আওতায় আনতে হবে।’
এ ছাড়া বিদেশে রপ্তানির জন্য দ্রুত পরীক্ষণ ল্যাবও দরকার বলে মনে করেন তিনি। কারণ গুনগত মান ঠিক থাকলে বিদেশে আরও বেশি আলু রপ্তানি হবে। দাম পাবেন চাষিরাও।
আরও পড়ুন:শেরপুরে নালিতাবাড়ী উপজেলার কাটাবাড়ী সীমান্তের বিদ্যুতায়িত হয়ে আরও একটি একটি বন্যহাতি নিহত হয়েছে। বনবিভাগের মধুটিলা রেঞ্জের আওতাধীন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে শনিবার (৫ জুলাই) সকালে বনবিভাগের লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে হাতিটির মরদেহ উদ্ধার করে।
খাদ্যের সন্ধানে পাহাড় থেকে নেমে আসা হাতিটি বৈদ্যুতিক ফাঁদে পড়ে নিহত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে বনবিভাগ।
মধুটিলা রেঞ্জের রেঞ্জার দেওয়ান আলী ঘটনাটি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, হাতিটির শুড়ে পোড়া ক্ষতের দাগ রয়েছে। এটির বয়স ১৫ থেকে ২০ বছর হবে। এটি একটি মাদি হাতি। এ ব্যাপারে পরবর্তী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সাম্প্রতিককালে মধুটিলা রেঞ্জের আওতাধীন এলাকায় খাদ্যের সন্ধানে বন্যহাতি লোকালয়ে নেমে আসার ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। খেতে ফসল না থাকায় হাতির দল বাড়িঘরেও হানা দিচ্ছে। এতে স্থানীয়ভাবে অনেক পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল। যেখানে বন্যহাতির দেহটি পড়ে ছিল, সেখানে কোনো ধরনের বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম না থাকলেও হাতিপাগাড় ক্যাম্পের আশপাশে অনেক বসতি ও বাড়িঘর রয়েছে।
এ নিয়ে চার মাসের কম সময়ের ব্যবধানে মধুটিলা রেঞ্জ এলাকায় তিনটি বন্যহাতির মরদেহ উদ্ধার করল বনবিভাগ।
এর আগে গত ২০ মার্চ পূর্ব সমশ্চুড়া গ্রামের লালনেংগড় এলাকায় বিদ্যুতায়িত হয়ে নিহত একটি বন্যহাতির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তারপর গত ২৯ মে দাওধারা পাহাড় থেকে সদ্যোজাত একটি হাতিশাবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
ঘন ঘন হাতির মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছেন পরিবেশ ও প্রকৃতিপ্রেমীরা।
নিধারঞ্জন কোচ নামে এক অধিকারকর্মী নিজের ফেসবুক ওয়ালে শনিবার নিহত হাতির মরদেহের ছবি পোস্ট করে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে লিখেছেন, ‘আবারো বন্যহাতির মৃত্যু। এর শেষ কোথায়? হাতি-মানুষের দ্বন্দ্ব নিসনে সরকারি উদ্যোগ কী? ক্ষতিপূরণ প্রদানই কি যথেষ্ট? হাতি-মানুষের সহাবস্থানের পথ খুঁজতে খুঁজতে এশিয়ান হাতি নাই হয়ে যাবে!’
সিলেটের ওসমানীনগরে এনা ও ইউনিক পরিবহনের দুটি বাসের সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই একজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন।
শনিবার (৫ জুলাই) সকাল ৬টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কুরুয়া বাজারের পাশে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত রাজু মিয়ার (২৬) বাড়ি ফরিদপুর জেলার তারাকান্দা থানায়। তিনি ইউনিক বাসের হেলপার ছিলেন।
দুর্ঘটনায় আহতদের মধ্যে অন্তত দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সিলেট থেকে ছেড়ে আসা ইউনিক পরিবহনের বাসের সঙ্গে ঢাকা থেকে আসা এনা পরিবহনের বাসটির সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই ইউনিকের হেলপার রাজু মিয়ার নিহত হন। বেপরোয়া গতিতে ভুল পাশ থেকে এসে এনা পরিবহনের ওই কোচটি এ দুর্ঘটনা ঘটায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ফায়াস সার্ভিস, ওসমানীনগর থানা পুলিশ ও শেরপুর হাইওয়ে পুলিশ এসে হতাহতদের উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
দুর্ঘটনার পর কুরুয়া বাজারের দুই পাশে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে কয়েক কিলোমিটার যানজট দেখা দেয়। পরে সকাল সোয়া ১০টার দিকে দুর্ঘটনাকবলিত গাড়ি দুটি সরিয়ে যানজট নিরসন করে পুলিশ।
শেরপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু তাহের দেওয়ান জানান, দুই গাড়ির সংঘর্ষ হলে বিকট শব্দে স্থানীয়রা এগিয়ে গিয়ে প্রাথমিক উদ্ধারকাজ শুরু করেন। পরে স্থানীয় থানা পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তাতে যোগ দেন।
তিনি আরও জানান, হাইওয়ে পুলিশ রাজুর লাশ উদ্ধার করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। বাস দুটিকে রাস্তা থেকে সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়েছে।
কেশবপুরের ঐতিহ্য কালোমুখো হনুমান খাদ্য সংকট ও বন উজাড় হয়ে যাওয়ায় বিভিন্ন এলাকায় চলে যাচ্ছে। প্রয়োজনীয় খাবার না পেয়ে মারাও যাচ্ছে। কালোমুখো হনুমান রক্ষার দাবি উঠেছে।
জানা গেছে, একসময় কেশবপুরে ছিল কালোমুখো হনুমানের অভয়ারণ্য। বন উজাড় হয়ে যাওয়ায় এবং খাদ্য সংকটে সময়ের গতির সঙ্গে কমে যাচ্ছে হনুমান। বর্তমানে ১৮০ থেকে ২০০টি হনুমান কেশবপুরে রয়েছে বলে স্থানীয় বন বিভাগ জানায়। এখান থেকে ৪/৫ বছর আগে ছিল ২৫০ থেকে ৩০০ টি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, দেশ বিভক্তির আগে ভারতের মাড়োয়াররা ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য যশোরের কেশবপুরে বসবাসের পাশাপাশি আসা-যাওয়া করত। এ সময় তাদের যানবাহনে করে দুটি কালোমুখো হনুমান ভারত থেকে কেশবপুরে আসে। সেই থেকে হনুমানের এখানে পত্তন শুরু হয়। ওই এক জোড়া হনুমান থেকে এখানে শত শত হনুমানের কালের আবর্তনে ওরা আজ বিলুপ্তির পথে। একসময় কেশবপুর অঞ্চলে ঘন বনজঙ্গল ছিল। এসব বনের ফল ও লতাপাতা খেয়ে ওরা জীবিকা নির্বাহ করত। বর্তমানে জনসংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি বন উজাড়সহ ঘনবসতি এবং এলাকায় অবৈধ ইটভাটায় গিলে খাচ্ছে এসব বনের কাঠ। এতে উজাড় হচ্ছে বন। এদিকে কেশবপুর উপজেলায় পল্লীবিদ্যুতের তারে কভার সিস্টেম না থাকায় প্রায়ই বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ওরা মারা যাচ্ছে। খাদ্য সংকটের কারণে কেশবপুরের হনুমান দেশের বিভিন্ন এলাকায় চলে যাচ্ছে।
উপজেলা বন বিভাগের কর্মকর্তা মোনায়েম হোসেন বলেন, কেশবপুর এলাকায় বনজঙ্গল কমে যাওয়ার কারণে হনুমানের খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। ওদের রক্ষায় সরকারিভাবে খাদ্য সরবরাহ করা হচ্ছে।
কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেকসোনা খাতুন বলেন, হনুমান রক্ষায় সরকারিভাবে খাদ্য সরবরাহ করা হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন এনজিও ব্যক্তি গত ভাবেও অনেকেই খাদ্য দেয়, যার কারণে ওরা গ্রামাঞ্চল ছেড়ে বর্তমানে শহরে বেশি বিচরণ করছে।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন করোনা আক্রান্ত এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত জেবল হক (৮০) কবিরহাট উপজেলার চাপরাশিরহাট ইউনিয়নের লামছি গ্রামের মৃত গনু মিয়ার ছেলে।
বুধবার (২ জুলাই) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. রাজীব আহমেদ চৌধুরী। এর আগে, গতকাল মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাত ১০টার দিকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে তার মৃত্যু হয়।
ডা. রাজীব আহমেদ চৌধুরী বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। গত মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে ওই বৃদ্ধ হাসপাতালে ভর্তি হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে মারা যান তিনি। এদিকে গত ২৪ ঘন্টায় নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের এক জনের নমুনা পরীক্ষায় একজনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা.মরিয়ম সিমি বলেন, মারা যাওয়া ব্যক্তি সকালে হাসপাতালে ভর্তি হয়। দুপুরে তার করোনা শনাক্ত হওয়ার পর সেখানে রাতে তার মৃত্যু হয়। এখন পর্যন্ত নোয়াখালীতে মোট ৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। কিট সল্পতার কারণে উপজেলা পর্যায়ে করোনা টেস্ট এখনো শুরু করা হয়নি।
সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের নেতৃত্ব নিয়ে চলমান বিরোধের জেরে ক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেমসহ সাংবাদিকদের উপর অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৩০ সাংবাদিক আহত হয়েছেন।
অভিযোগ উঠেছে, ক্লাবের কথিত সভাপতি মাদকাসক্ত আওয়ামী দোসর আবু সাঈদ ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারীর নেতৃত্বে আল ইমরান ও অমিত ঘোষ বাপ্পাসহ ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্তরা এই হামলা চালায়।
সোমবার (৩০ জুন) সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে এই হামলায় ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের সাংবাদিক ও প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম, ভোরের আকাশের সাংবাদিক আমিনুর রহমান, ডিবিসি নিউজের সাংবাদিক বেলাল হোসেন, অনির্বানের সোহরাব হোসেনসহ অন্তত ৩০ সাংবাদিক গুরুতর আহত হয়েছেন।
হামলার শিকার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রেসক্লাবে একটি সভা করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। ঠিক সেই মুহূর্তে আবু সাঈদ ও আব্দুল বারীর নেতৃত্বে আলিপুর থেকে আনা ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্তরা আমাদের উপর পরিকল্পিতভাবে হামলা করে। তাদের হামলায় আমাদের অন্তত ৩০ জন সাংবাদিক ও সদস্য আহত হয়েছেন।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, আবু সাঈদ ও আব্দুল বারী দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে প্রেসক্লাব দখল করে রেখেছেন এবং তাদের মতের বিরুদ্ধে গেলেই এভাবে হামলা ও নির্যাতন চালানো হয়।
এই ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনায় সাতক্ষীরার সাংবাদিক মহলে তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। সাংবাদিকরা অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছেন।
ঘটনার পর থেকে প্রেসক্লাব এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
কুমিল্লার দাউদকান্দি পৌরসভার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। বাজেট ঘোষণা করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও দাউদকান্দি পৌর প্রশাসক রেদওয়ান ইসলাম।
সোমবার (৩০ জুন) দুপুরে পৌরসভা হলরুমে এ বাজেট ঘোষণা করা হয়। বাজেটে সর্বমোট আয় ৪২ কোটি ৯১ লাখ ৫৯ হাজার টাকা ও মোট ব্যয় ৩৬ কোটি ৭৪ হাজার টাকা প্রস্তাব করা হয়। পৌর প্রশাসক রেদওয়ান ইসলাম তার প্রস্তাবিত বাজেটে ২০২৫-২৬ অর্থ বছরে রাজস্ব খাত থেকে ১৩ কোটি ২৩ লাখ ৪১ হাজার ৩ শত ৩১ টাকা ও উন্নয়ন খাত থেকে ২৯ কোটি ৬৮ লাখ ১৮ হাজার ৪৫ টাকা আহরনের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। বাজেটে উদ্ধৃত্ত ধরা হয়েছে ৬ কোটি ১৭ লাখ ২ হাজার ৩ শত ৭৮ টাকা।
এছাড়াও বাজেটে খাতওয়ারী ব্যয়ের হিসেবে দেখা যায় রাজস্ব খাতে ব্যয় ৯ কোটি ৫৯ লাখ ৫৭ হাজার টাকা এবং উন্নয়ন ব্যয় দুই কোটি ১৫ লাখ টাকা ধরা হয়েছে।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.হাবিবুর রহমান,পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম, হিসাবরক্ষক শাহাদাত হোসেনসহ পৌরসভার অন্যান্য কর্মকর্তারা।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে মাদকাসক্ত হয়ে মাতলামি করার প্রতিবাদ করায় ইয়াছিন (৩৮) ও সিপন( ৩২) নামে দুই যুবক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আহতদের মধ্যে একজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং অপরজনকে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
শুক্রবার দিবাগত রাতে উপজেলার মুড়াপাড়া টঙ্গীরঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
গুলিবিদ্ধ ইয়াছিন মুড়াপাড়ার হাউলিপাড়া এলাকার ইদু মিয়ার ছেলে এবং সিপন টঙ্গীরঘাট এলাকার আলাউদ্দিনের ছেলে।
রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তরিকুল ইসলাম জানান, রাত ১১টার দিকে ইয়াছিন তার স্ত্রীকে নিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে খালাতো বোনের বাড়ি যাচ্ছিলেন। পথে স্থানীয় সোহরাব নামের এক যুবক মাদকাসক্ত অবস্থায় তাদের উদ্দেশে গালিগালাজ করলে ইয়াছিন প্রতিবাদ করেন। পরে তিনি খালাতো ভাই সিপনকে নিয়ে স্থানীয় অহিদুল্লার বাড়িতে গিয়ে ঘটনার কথা জানান। সেখানেই সোহরাব ক্ষিপ্ত হয়ে পিস্তল দিয়ে তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে ইয়াছিনের মাথায় ও সিপনের পায়ে গুলি লাগে।
তাদের প্রথমে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সিপনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং ইয়াছিনকে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গুলির খোসা উদ্ধার করেছে এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করেছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
মন্তব্য