শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলায় মর্মাহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। এ ঘটনায় তিনি দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তবে পুলিশের ওই অ্যাকশনের সঙ্গে তার ন্যূনতম সংশ্লিষ্টতা নেই বলে জানিয়েছেন উপাচার্য।
নিজ বাসভবনে বুধবার সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘যে ঘটনা ঘটেছে, পুলিশ হামলা করেছে, সাউন্ড গ্রেনেড, রাবার বুলেট মেরেছে, এই ঘটনায় আমি মর্মাহত। এজন্য আমি দুঃখ প্রকাশ করছি। কোন পরিস্থিতিতে পুলিশ অ্যাটাক করল, তদন্ত কমিটি তা খতিয়ে দেখবে।’
‘এ ঘটনায় আমরা একটা তদন্ত কমিটি করেছি। তারা যদি উপাচার্যের কোনো দোষ খুঁজে পায়, সরকারও তদন্ত কমিটি করতে পারে। এতেও যদি কোনো দোষ মিলে তখন তারা যে সিদ্ধান্ত দেবে না মেনে নেব। এখানে রাখঢাকের কিছু নেই।’
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়ে উপাচার্য বলেন, ‘প্রতিদিন শিক্ষক প্রতিনিধিরা গালিগালাজ সহ্য করে আলোচনা করার প্রস্তাব করছেন, কিন্তু শিক্ষার্থীরা তা প্রত্যাখ্যান করছে। এ ছাড়া সমস্যা সমাধানের চূড়ান্ত সময়ে এসে কারা সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি তৈরি করে পুলিশকে চড়াও হতে বাধ্য করেছিল, তা তদন্তে কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।’
তিনি জানান, সরকার তদন্ত কমিটি করে কোনো সুপারিশ করলে সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নেবেন।
শিক্ষার্থীদের প্রতি ভালোবাসার কথা উল্লেখ করে উপাচার্য জানান, সব দাবি মেনে নেয়া হয়েছে। বিভ্রান্ত না হয়ে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার সহায়তার আহ্বানও জানান তিনি।
উপাচার্যের পদত্যাগ চেয়ে রোববার রাত থেকে বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের একাংশ বুধবার দুপুর থেকে আমরণ অনশনে বসেছেন।
শিক্ষকরা রাতে অনশনরত শিক্ষার্থীদের কাছে গিয়ে আলোচনার প্রস্তাব দিলেও তারা তা প্রত্যাখান করেন।
অনশনে অংশ নেয়া জাহিদুল ইসলাম দুপুরে বলেন, ‘উপাচার্য রীতিমতো আমাদের সঙ্গে হাসি-তামাশা করছেন। আমাদের প্রতি তার কোনো সংবেদনশীলতা নেই। আমরা ১২টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিলাম। তিনি তাতে গুরুত্ব না দিয়ে বরং মিডিয়ায় আমাদের নামে মিথ্যাচার করছেন।
‘ফলে তিনি উপাচার্য পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন। এখন আমরা তার পদত্যাগ চাই। উপচার্য পদত্যাগ করার আগ পর্যন্ত আমাদের অনশন চলবে। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আমরা অনশনে থাকব।’
যেভাবে আন্দোলন শুরু
এক হল প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগের আন্দোলন গত রোববার থেকে রূপ নিয়েছে উপাচার্যবিরোধী আন্দোলনে। ওই প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগের পর শিক্ষার্থীদের এখন একটাই দাবি, উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমদের পদত্যাগ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন লিজার বিরুদ্ধে খাবারের খারাপ মান, অব্যবস্থাপনা ও দুর্ব্যবহারের অভিযোগ আনেন আবাসিক শিক্ষার্থীরা। তারা প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে গত বৃহস্পতিবার রাত (১৩ জানুয়ারি) থেকে বিক্ষোভ শুরু করেন।
শুক্রবার সন্ধ্যায় ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়ে সরে গেলেও দাবি পূরণ না হওয়ায় শনিবার সন্ধ্যায় ফের বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সড়ক আটকে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করেন।
এরপর মধ্যরাতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেন তারা। রোববার সকাল থেকে আবারও ক্যাম্পাসে শুরু হয় বিক্ষোভ।
বিকেলে তারা উপাচার্য ফরিদ উদ্দিনকে অবরুদ্ধ করলে পুলিশ তাদের লাঠিপেটা করে। শিক্ষার্থীরাও ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে। এরপর শুরু হয় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। এ সময় পুলিশ রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে।
এর মধ্যেই পুলিশ উপাচার্যকে বের করে তার বাসভবনে নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ উপদেষ্টা অধ্যাপক জহির উদ্দিন আহমেদ গুলিবিদ্ধ হন। আহত হন পুলিশ, শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ অন্তত ৫০ জন।
সে রাতেই জরুরি সিন্ডিকেট সভা ডেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়। শিক্ষার্থীদের পরদিন দুপুর ১২টার মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ।
ওই সভা শেষে জানানো হয়, প্রাধ্যক্ষ জাফরিনের পদত্যাগ করেছেন।
এরপর পুলিশ ডেকে হামলা চালানোর অভিযোগ তুলে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে সেই রাত থেকে ফের বিক্ষোভে নামেন শিক্ষার্থীরা। তারা হল ছেড়ে যাবেন না বলেও জানান।
মঙ্গলবার রাতে তারা ঘোষণা দেন, বুধবার দুপুর ১২টার মধ্যে দাবি না মানা হলে আমরণ অনশনে বসবেন।
বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে দাবি পূরণ না হওয়ায় ২৪ শিক্ষার্থী বুধবার বেলা ৩টা থেকে অনশন শুরু করেন। তাদের এই কর্মসূচিতে সমর্থন দেন আন্দোলনে থাকা অন্য শিক্ষার্থীরাও।
আরও পড়ুন:জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে সংবাদ সম্মেলন করতে আসা সংগঠনটির নেতাকর্মীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন।
মঙ্গলবার দুপুরে ছাত্র ফেডারেশনের দপ্তর সম্পাদক অনুপম রায় রূপক স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই নিন্দা-প্রতিবাদ জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে তারা হামলার প্রতিবাদ ও গণতান্ত্রিক ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠায় ছাত্র সমাজের বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানায়।
ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মশিউর রহমান খান রিচার্ড ও সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, ‘স্বৈরাচার সরকারকে টিকিয়ে রাখতে ক্যাম্পাসগুলোকে সন্ত্রাসের অভয়ারণ্যে পরিণত করেছে ছাত্রলীগ। ক্যাম্পাসে ন্যূনতম গণতান্ত্রিক চর্চার পথ রুদ্ধ করেছে তারা। তারই ধারাবাহিকতায় গতকাল ও আজ ছাত্রদলের ওপর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করেছে ছাত্রলীগ।’
ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘ছাত্রলীগ ক্যাম্পাসকে সন্ত্রাসের যে অভয়ারণ্যে পরিণত করেছে তার বিপরীতে গণতান্ত্রিক ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠায় ছাত্রসমাজের বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তোলার বিকল্প নেই। আমরা ছাত্র সমাজের সেই বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তোলার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটে শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ মঙ্গলবার। এই নির্বাচনে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন নীল দল ও বিএনপি-জামায়াতপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল প্যানেল জমা দিয়েছে।
সকাল ৯টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ভোট গ্রহণ চলবে। প্রায় এক হাজার ৪৭০ জন শিক্ষক ভোট দেবেন। কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মমতাজ উদ্দিন আহমেদ নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করবেন।
আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের প্যানেল
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আ ক ম জামাল উদ্দীন; টেলিভিশন, ফিল্ম অ্যান্ড ফটোগ্রাফি বিভাগের অধ্যাপক আবু জাফর মো. শফিউল আলম ভূঁইয়া, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক আবদুল বাছির, ব্যাংকিং অ্যান্ড ইনস্যুরেন্স বিভাগের অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মাহমুদ, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ইসতিয়াক মঈন সৈয়দ, প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এ কে এম মাহবুব হাসান, ক্লিনিক্যাল ফার্মেসি অ্যান্ড ফার্মাকোলজি বিভাগের অধ্যাপক এস এম আবদুর রহমান, ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক কে এম সাইফুল ইসলাম খান, গণিত বিভাগের অধ্যাপক চন্দ্রনাথ পোদ্দার, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জিনাত হুদা, আবহাওয়া বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক তৌহিদা রশিদ, অঙ্কন ও চিত্রায়ণ বিভাগের অধ্যাপক নিসার হোসেন, ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক ফিরোজ আহমেদ, ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ফিরোজা ইয়াসমীন, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মিহির লাল সাহা, ইসলাম শিক্ষা বিভাগের অধ্যাপক মুহাম্মদ আবদুর রশীদ এবং শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান।
নীল দলের প্যানেলে আরও আছেন- অর্গানাইজেশন স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড লিডারশিপ বিভাগের অধ্যাপক মুহাম্মাদ আবদুল মঈন, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ ফিরোজ জামান, পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন, ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের অধ্যাপক মো. আকরাম হোসেন, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক মো. আবদুর রহিম, ফলিত গণিত বিভাগের অধ্যাপক আবদুস ছামাদ, ডিজাস্টার সায়েন্স অ্যান্ড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স বিভাগের অধ্যাপক মো. জিল্লুর রহমান, অপরাধবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মো. জিয়াউর রহমান, পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া, মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক মো. মাসুদুর রহমান, অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. মিজানুর রহমান, শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক মো. রফিকুল ইসলাম, ফলিত গণিত বিভাগের অধ্যাপক মো. শফিকুল ইসলাম, রোবটিকস অ্যান্ড মেকাট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক লাফিফা জামাল, ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সিকদার মনোয়ার মুর্শেদ ওরফে সৌরভ সিকদার, আইন বিভাগের অধ্যাপক সীমা জামান এবং কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু৷
বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের প্যানেল
রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক আবদুস সালাম, অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আল-আমিন, ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের অধ্যাপক আশেকুল আলম রানা, প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ইয়ারুল কবীর, ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের অধ্যাপক এ এফ এম মোস্তাফিজুর রহমান, ফার্মাসিউটিক্যাল কেমিস্ট্রি বিভাগের অধ্যাপক এ টি এম জাফরুল আযম, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক এ বি এম শহিদুল ইসলাম, নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এস এম আরিফ মাহমুদ, তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক এস এম মোস্তফা আল মামুন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান, মৃৎশিল্প বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক দেবাশীষ পাল, পালি অ্যান্ড বুড্ডিস্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক দিলীপ কুমার বড়ুয়া, আইন বিভাগের অধ্যাপক নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ এবং প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মামুন আহমেদ, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আল মোজাদ্দেদী আলফেছানী, ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান, দর্শন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ দাউদ খান, মৎস্যবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ মামুন চৌধুরী; মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক মো. আখতার হোসেন খান, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মো. আবদুল করিম, ফার্মাসিউটিক্যাল কেমিস্ট্রি বিভাগের অধ্যাপক মো. আবদুল মজিদ, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মো. আমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া; মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক মো. জাকির হোসেন খান, সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক মো. নুরুল ইসলাম, ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক মো. মহিউদ্দিন, পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান, ফার্মাসিউটিক্যাল কেমিস্ট্রি বিভাগের অধ্যাপক মো. শাহ এমরান, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক মো. সিরাজুল ইসলাম, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক মো. হুমায়ুন কবীর, গ্রাফিক ডিজাইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রেজা আসাদ আল হুদা অনুপম, শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমদ, মনোবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সৈয়দ তানভীর রহমান এবং ইসলাম শিক্ষা বিভাগের অধ্যাপক হাফিজ মুজতাবা রিজা আহমাদ।
বিতর্কে নীলদল
নীল দলের প্যানেলে প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে বিতর্ক উঠেছে। বিতর্কিত একাধিক শিক্ষক মনোনয়ন পাওয়া এবং প্রভাবশালী কয়েকজন শিক্ষক বাদ পড়ায় শিক্ষকদের মাঝে এক ধরনের চাপা ক্ষোভ কাজ করছে।
নীল দলের শিক্ষকরা বলছেন, সিনেট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্লাটফর্ম। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলছেন এরকম অনেক শিক্ষক নীল দলে আছেন। বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে এসব শিক্ষককে অন্তর্ভুক্ত করে একটি শক্তিশালী প্যানেল দেয়া যেত।
সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক সাদেকা হালিম এ বিষয়ে বলেন, ‘প্যানেলে অনেক নাম এসেছে যাদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ আছে। অনেকে মন্তব্য করেছেন যৌন হয়রানির অভিযোগ এলেই কি ক্যান্ডিডেট হতে পারবে না? আমি বলি, অবশ্যই হতে পারবে না। কারণ কিছু না ঘটলে তো আর তারা অভিযোগ করতে পারে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন দৈন্যদশা হয়নি যে অভিযুক্ত শিক্ষকদের প্যানেলে দিতে হবে। এটি কাম্য ছিল না।’
জানা যায়, গত ১১ মে ৩৫ সদস্যের সিনেট প্যানেল ঘোষণা করে নীল দল। সেখানে মনোনয়ন পাওয়াদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন বিষয়ে অভিযোগ রয়েছে। তাদের মধ্যে ফার্মেসি অনুষদের সাবেক ডিন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল ফার্মেসি ও ফার্মাকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এসএম আব্দুর রহমানের বিরুদ্ধে অনুষদের তহবিল তছরুপের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) মামলা চলমান।
এছাড়াও প্যানেলের দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ রয়েছে। লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান তাদের একজন।
এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড রিসার্চের (নিটার) নারী সহকর্মীদের হেনস্তা ও যৌন হয়রানির অভিযোগ রয়েছে। গত বছরের নভেম্বরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামানের কাছে তার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানিসহ নানা অনিয়মের ফিরিস্তি তুলে ধরে নিটারের ৩৭ জন শিক্ষক লিখিত অভিযোগ দেন। সেই অভিযোগের এখনো কিনারা হয়নি।
অন্যদিকে প্যানেলে মনোনয়ন পাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আকরাম হোসেনের বিরুদ্ধে ২৬ এপ্রিল বিভাগেরই এক ছাত্রী অভিযোগ করেন, তার ‘কুপ্রস্তাবে’ রাজি না হওয়ায় স্নাতক-স্নাতকোত্তরে প্রথম হয়েও শিক্ষক হিসেবে তিনি নিয়োগ পাননি। এমন অভিযোগ উত্থাপিত হওয়ার পর দুজন প্রভাষক নিয়োগে ওই বিভাগের নিয়োগ বোর্ডের করা সুপারিশ স্থগিত করে সিন্ডিকেট। একইসঙ্গে অভিযোগটি খতিয়ে দেখতে বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়নবিরোধী সেলে পাঠানো হয়েছে।
এছাড়াও শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নিজামুল হক ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে শিক্ষক হওয়ার যোগ্যতা না থাকা এবং পিএইচডি নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। এছাড়া তিনি জালিয়াতি, প্রতারণা ও অনৈতিক উপায়ে অর্থবিত্তের মালিক হয়েছেন বলেও অভিযোগ আছে।
বিতর্কিতদের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ বলেন, ‘কারও বিরুদ্ধে যদি অভিযোগ থেকে থাকে তাহলে তাকে বাদ দিয়ে আরও কয়েকজনকে নমিনেশন দেয়া যেত।’
জানা যায়, গত ১০ মে নীল দলের এক সভায় প্যানেলের প্রার্থী মনোনীত করা হয়। অলিখিত নিয়ম অনুযায়ী, প্যানেল চূড়ান্ত করার আগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে থাকা নীল দলের জ্যেষ্ঠ শিক্ষকদের দেখানো হয়। কিন্তু এই প্যানেলের ব্যাপারে নীল দলের দু’বারের আহ্বায়ক ও বর্তমান উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদকে জানানো হয়নি।
এ বিষয়ে অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ বলেন, ‘নীল দলের সভায় প্যানেল নিয়ে আলোচনা হয়েছে শুনেছি। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দলেরই নেয়ার কথা। আমরা তো এই দল থেকেই প্রশাসনে। বিষয়টি সবার সঙ্গে আলাপ করে নিলে আজ যে প্রশ্ন উঠছে সেটি হতো না। তখন এটি আমাদের জন্য সম্মানের হতো।’
সার্বিক বিষয়ে নীল দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আব্দুস সামাদ বলেন, ‘যেসব শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তা এখনো প্রমাণ হয়নি। প্যানেল মূলত দলের পক্ষ থেকে চূড়ান্ত করা হয়। এটা দলের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত। এই জায়গায় আমার এককভাবে কিছু করার নেই।’
উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে বিটিসি, সমতুল্য ও প্রতিবন্ধী কোটায় ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের অনলাইন রেজিস্ট্রেশন শুরু হচ্ছে মঙ্গলবার। যা চলবে আগামী ৩১ মে পর্যন্ত।
সোমবার ঢাকা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক আবু তালেব মো. মোয়াজ্জেম হোসেনের সই করা অফিস আদেশ থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
আদেশে বলা হয়, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে বিটিসির মাধ্যমে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম শুরু হবে ২৪ মে, যা চলবে ৩১ মে পর্যন্ত। এ সময়ের মধ্যে প্রতিষ্ঠান থেকে অনলাইনে e-SIF ফরম পূরণ করে রেজিস্ট্রেশন শেষ করতে হবে।
আরও বলা হয়, এ ছাড়া সমতূল্য ও প্রতিবন্ধী কোটায় ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের ২৩ মে পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে বোর্ড রেজিস্ট্রেশন শেষ করবে।
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কলেজ বিটিসির মাধ্যমে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন শেষ করতে না পারলে পরে সৃষ্ট কোনো জটিলতায় বোর্ড কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না বলেও অফিস আদেশে বলা হয়।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইন্সটিটিউটের অধীনে স্প্যানিশ ল্যাঙ্গুয়েজ চালুর প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। বিশেষ এক প্রোগ্রামের আওতায় এ কোর্সটি চালু করবে স্পেন দূতাবাস। কোর্স চালুর বিষয়ে সব ধরনের সুযোগ সুবিধা দেবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
রোববার স্প্যানিশ ল্যাঙ্গুয়েজ কোর্স অন্তর্ভুক্তিকরণ বিষয়ে স্পেন দূতাবাসের সঙ্গে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আলোচনা হয়। এ উপলক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদের সঙ্গে ওই দূতাবাসের উপ-প্রধান অ্যামিলিয়া সেলেমিন রেদোন্দো সৌজন্য সাক্ষাত করেন।
এ সময় আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক খন্দকার মোন্তাসির হাসান সহ অন্যান্য শিক্ষক, পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) ও স্পেন দূতাবাসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের পরিচালক খন্দকার মোন্তাসির হাসান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘স্প্যানিশ দূতাবাসের একটি বিশেষ প্রোগ্রামের আওতায় এ কোর্সটি চালু হবে। স্প্যানিশ একজন শিক্ষক আসবেন। ওরা ফ্যাকাল্টি দেবে আর আমরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সুযোগ সুবিধা দেব।’
তিনি জানান, স্প্যানিশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা ডরমেটরির সুযোগ সুবিধা, আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের ক্লাসরুম-অফিস দেখার জন্য এসেছিলেন।
তিনি বলেন, ‘জুনের শেষ সপ্তাহের মধ্যে আমরা ফাইনাল প্রপোজাল দিয়ে দেব। সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবরের মধ্যে তাদের ফিডব্যাক জানাবে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী বছরের প্রথম থেকে চালু হবে স্প্যানিশ ভাষা শিক্ষা কোর্স।’
খন্দকার মোন্তাসির আরও বলেন, ‘প্রথমত আমরা ডিপ্লোমা কোর্স হিসেবে চালু করবো। পরে এটিকে স্নাতক কোর্স হিসেবে চালু করা হবে।’
স্প্যানিশ ফ্যাকাল্টি মেম্বারের সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে দূতাবাসের উপ-প্রধান ও কর্মকর্তারা ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদের সঙ্গে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডে-কেয়ার সেন্টার ও ডরমেটরি ভবন পরিদর্শন করেন।
এর আগে ২০২১ সালের ৩ নভেম্বর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ইমদাদুল হকের সঙ্গে স্পেন দূতাবাসের উপ-প্রধান অ্যামিলিয়া সেলেমিন রেদোন্দো স্প্যানিশ ভাষা চালুর বিষয়ে প্রথমবারের মতো সৌজন্য সাক্ষাত করেছিলেন।
আরও পড়ুন:দেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়োগের জন্য ন্যূনতম যোগ্যতা নির্ধারণ করে আসছে নীতিমালা। এ জন্য একটি অভিন্ন নির্দেশিকার খসড়া তৈরি করেছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।
রোববার ইউজিসি ভবনে আন্তবিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী নেতাদের সঙ্গে ‘পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের কর্মচারীদের নিয়োগ ও পদোন্নতি সংক্রান্ত যুগোপযোগী নীতিমালা তৈরির ক্ষেত্রে ন্যূনতম যোগ্যতা নির্ধারণ নির্দেশিকা-২০২২’-এর খসড়া চূড়ান্তকরণে এক পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় ইউজিসি চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ও নীতিমালাসংক্রান্ত কমিটির আহ্বায়ক ড. দিল আফরোজা বেগম বলেন, ‘প্রথমবারের মতো ইউজিসি দেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে জনবল নিয়োগে অভিন্ন নির্দেশিকার খসড়া করেছে। এর মাধ্যমে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোয় জনবল নিয়োগে একটি নির্দিষ্ট মানদণ্ড নির্ধারণ করে দেয়া হবে। এই মানদণ্ড অনুসরণ করে জনবল নিয়োগ দেয়া হলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় নিয়োগ প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছ হবে।’
সভায় উপস্থিত ছিলেন ইউজিসি ও সংশ্লিষ্ট কমিটির সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ, অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের, অর্থ ও হিসাব বিভাগের উপপরিচালক মো. মোস্তাফিজার রহমান, বাংলাদেশ আন্তবিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স ফেডারেশনের সভাপতি মো. আমিরুল ইসলাম, মহাসচিব মীর মো. মোর্শেদুর রহমান, বাংলাদেশ আন্তবিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি মহিউদ্দিন খন্দকার ও মহাসচিব মো. হাসানুজ্জামান এবং বাংলাদেশ আন্তবিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ফেডারেশনের সহসভাপতি প্রকৌশলী সৈয়দ মোহাম্মদ ইকরামসহ আরও অনেকে।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের নিয়োগ ও পদোন্নতি/পদোন্নয়নের ক্ষেত্রে ন্যূনতম যোগ্যতা নির্ধারণ করে দিয়েছে ইউজিসি, যা ইতোমধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিয়েছে।
ইউজিসি নির্দেশিকাটি প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়কে অনুসরণের জন্য পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন:বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের জন্য তিনটি অগ্রিম ইনক্রিমেন্ট দেয়ার বিষয়ে দ্রুত প্রজ্ঞাপন জারির দাবি জানিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষক সমিতির নেতারা।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আবুল কালাম মো. লুৎফর রহমানের সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে রোববার এ দাবি জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সরকারি কলেজের শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের পিএইচডি অর্জনের জন্য তিনটি অগ্রিম ইনক্রিমেন্ট দেয়া সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন ২০২১ সালের ১১ অক্টোবর অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বাস্তবায়ন অনুবিভাগের মাধ্যমে জারি হয়। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য অনুরূপ ইনক্রিমেন্টের বিষয়ে একই বছরের ২৯ নভেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠায়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ইনক্রিমেন্টের বিষয়টি অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হলে বর্তমানে তা প্রক্রিয়াধীন আছে বলে চলতি বছরের ১৮ মে ইউজিসির এক চিঠিতে জানানো হয়।
জবির শিক্ষক সমিতির নেতারা মনে করেন, বিশ্ববিদ্যালয় হল গবেষণার তীর্থস্থান। জ্ঞান আহরণ, নতুন জ্ঞানের সৃষ্টি ও বিতরণ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম প্রধান কাজ। নিরন্তর গবেষণা নতুন উদ্ভাবনের দ্বার উন্মোচিত করে এবং পিএইচডি গবেষণা এই দ্বার উন্মোচনের কলাকৌশল শিক্ষণের প্রধানতম সোপান হিসেবে কাজ করে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নেতারা জানান, আমরা মনে করি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণ ও শেখ হাসিনা ঘোষিত জ্ঞানভিত্তিক সমাজব্যবস্থা প্রবর্তনে দেশে একটি গবেষণাবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি এবং গবেষণা মনস্ক বিজ্ঞানী তৈরির জন্য এই প্রণোদনা দেয়া খুব জরুরি ও অত্যাবশ্যক।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উপেক্ষা করে শুধু সরকারি কলেজের শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারি করা প্রজ্ঞাপনটি হতাশাজনক এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
জবির শিক্ষক নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ইউজিসি শিক্ষকদের সম্মান রক্ষায় বিষয়টি সুরাহা না করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ইনক্রিমেন্ট দেয়ার সব কার্যক্রম স্থগিত রাখার নির্দেশনাসংক্রান্ত চিঠি পাঠানোর বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি গভীর উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা প্রকাশ করছে।
আরও পড়ুন:ব্রিটিশ কাউন্সিলের টিএমটিই প্রকল্পের অধীনে প্রাথমিক শিক্ষকদের তৃতীয় গ্রুপের ইংরেজি প্রশিক্ষণের গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন হয়েছে।
ব্রিটিশ কাউন্সিল থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে রোববার এ তথ্য জানা যায়।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এবং দ্য ব্রিটিশ কাউন্সিল ‘ট্রেইনিং অফ মাস্টার ট্রেইনার্স ইন ইংলিশ (টিএমটিই)’ প্রকল্পের অধীনে এ প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়।
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে শিক্ষকরা ১৪ সপ্তাহ এ প্রশিক্ষণ নেন। প্রশিক্ষণ শেষে শিক্ষকদের সনদ দেয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ বছর তৃতীয়বারের মতো এই গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হলো। ঢাকা, গাজীপুর, শেরপুর, যশোর, বরিশাল, গোপালগঞ্জ, রংপুর, দিনাজপুর, রাজশাহী ও মৌলভীবাজারের প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে (পিটিআই) এই প্রশিক্ষণ হয়।
ঢাকা পিটিআইতে গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (ডিপিই) মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম।
টিএমটিই প্রকল্পে মূলত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুই হাজারের বেশি শিক্ষককে বিভিন্ন গ্রুপে ভাগ করে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। ইংরেজি ভাষার দক্ষতা বাড়ানোর পাশাপাশি শিক্ষাদান কৌশল শেখাতে এটি বড় আয়োজন।
এবার ১০টি জেলা থেকে চার শরও বেশি প্রাথমিক শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দিয়েছে ব্রিটিশ কাউন্সিল।
মন্তব্য