যা ছিল এক হল প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগের আন্দোলন, তা এখন রূপ নিয়েছে উপাচার্যবিরোধী আন্দোলনে। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের এখন একটাই দাবি, উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমদের পদত্যাগ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমদ লিজার পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর গত রোববার হামলা চালায় পুলিশ। তখন দুই পক্ষে সংঘর্ষ বাধে। এরপর থেকেই এ আন্দোলনের দাবি হয়ে ওঠে উপাচার্যের পদত্যাগ। সিরাজুন্নেসা হলের ছাত্রীদের সঙ্গে অন্য শিক্ষার্থীরাও তখন যুক্ত হন এই আন্দোলনে। এমনকি এর আগে ছাত্রীদের আন্দোলনে উপাচার্যের পক্ষে অবস্থান নেয়া ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরাও এখন উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে সরব।
পুলিশের হামলার ঘটনায় বিস্ফোরণ ঘটলেও উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমদের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ দীর্ঘদিনের বলে জানা গেছে। তার বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভক্তি তৈরি, ক্যাম্পাসে কোনো অনুষ্ঠান করতে বাধা প্রদান, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ, বিশ্ববিদ্যালয়ে কুমিল্লার লোকদের নিয়োগে প্রাধান্য, উন্নয়ন প্রকল্পে অনিয়মসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে।
মঙ্গলবার শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর সঙ্গে আলাপ করে এসব অভিযোগের কথা জানা গেছে।
২০১৭ সালের আগস্টে প্রথম দফায় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমদ। এর আগে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। ২০২১ সালের ৩০ জুন উপাচার্য পদে তাকে পুনর্নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি।
উপাচার্যের বিরুদ্ধে ক্ষোভের কারণ সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ইয়াসির সরকার বলেন, ‘উপাচার্য আমাদের কোনো দাবিকে আমলে নেন না। তার একক সিদ্ধান্তে সবকিছু চলে।’
উদাহরণ দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক ভবন তৈরি হচ্ছে। বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের আশু সমস্যা সমাধানে উপাচার্য কোনো উদ্যোগ নিচ্ছেন না।’
তিনি বলেন, ‘২০১৯ সালে আমরা ৪ দফা দাবিতে আন্দোলন করেছিলাম। এর অন্যতম ছিল প্রতিটি একাডেমিক ভবনে আলাদা রিডিং রুম করা। কিন্তু আজ পর্যন্ত তা বাস্তবায়িত হয়নি। আমরা দাবি করেছিলাম সপ্তাহে সাত দিন পাঠাগার খোলা রাখার। সে দাবিও পূরণ হয়নি। এখন সপ্তাহে পাঁচ দিন পাঠাগার খোলা থাকে। শুক্র ও শনিবার বন্ধ থাকে। অথচ এই দুই দিন ক্লাস পরীক্ষা না থাকায় শিক্ষার্থীরা পাঠাগারে এসে পড়তে পারত।’
উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন শিক্ষার্থীদের মতপ্রকাশের সব পথ বন্ধ করে দিয়েছেন উল্লেখ করে এই শিক্ষার্থী বলেন, ‘বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আমরা ক্যাম্পাসে রোড পেইন্টিং করতাম। এই উপাচার্য তা বন্ধ করে দেন। তিনি আমাদের গ্রাফিতি আঁকতে দেন না। দেয়াল লিখন নিষিদ্ধ করেছেন। সব কিছু নিষিদ্ধ করে তিনি স্বৈরাচারী কায়দায় বিশ্ববিদ্যালয় চালাচ্ছেন।’
অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী জাহিদ হোসেন অপূর্ব বলেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০ হাজার শিক্ষার্থী। তাদের খাবারের কোনো ব্যবস্থা নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাফেটেরিয়া আছে মাত্র দুটি।’
তিনি বলেন, ক্যাম্পাসে অনেক টং দোকান ছিল, যেগুলোয় শিক্ষার্থীরা খেতে পারতেন। কিন্তু করোনার পর থেকে উপাচার্য এগুলো বন্ধ করে দেন।
এর কারণ হিসেবে অপূর্ব বলেন, ‘টং দোকানে শিক্ষার্থীরা আড্ডা দিতেন। তারা একত্রিত হতে পারতেন। কিন্তু উপাচার্য তা চান না। শিক্ষার্থীরা একত্রিত হোক, তা তিনি পছন্দ করেন না। তিনি বরং শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করার চেষ্টা করেন।’
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ার দুটি সাইনবোর্ড নিয়েও ক্ষোভ দেখা দেয়। পাশাপাশি দুটি ক্যাফেটেরিয়ার একটিতে ‘সম্মানিত শিক্ষক/ কর্মকর্তাদের’ অন্যটিতে ‘শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের জন্য’ সাইনবোর্ড টানানো হয়। শুধু শিক্ষকদের আগে ‘সম্মানিত’ শব্দ ব্যবহার করে বৈষম্য করা হয়েছে অভিযোগ করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়টির সাবেক শিক্ষার্থীরাও এ নিয়ে ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ক্ষোভের মুখে গত সপ্তাহে সাইনবোর্ড দুটি সরিয়ে নেয়া হয়।
উপাচার্যের কাছে শিক্ষার্থীরা কোনো অভিযোগ নিয়ে গেলে উল্টো হয়রানির শিকার হতেন জানিয়ে স্থাপত্য বিভাগের শিক্ষার্থী সাদিয়া আফরিন বলেন, ‘আমরা কোনো দাবি বা অভিযোগ নিয়ে গেলে তিনি আমাদের রেজাল্ট দেখতে চান। রেজাল্ট খারাপ হলে তিনি আমাদের সঙ্গে আর কথাই বলেন না, বরং অপদস্ত করেন। বিভাগের শিক্ষকদের দিয়ে চাপ প্রয়োগ করান।’
তিনি বলেন, ‘আগে ছাত্রীরা রাত ১০টা পর্যন্ত হলের বাইরে থাকতে পারত। কিন্তু ফরিদ উদ্দিন দায়িত্ব নেয়ার পর ২০১৭ সালে ছাত্রীদের সন্ধ্যার পর হলের বাইরে থাকা নিষিদ্ধ করে দেন। এখন সন্ধ্যা হলেই প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা ক্যাম্পাসে ঘুরে ঘুরে দেখেন কোনো ছাত্রী হলের বাইরে আছে কি না। কেউ বাইরে থাকলে তাকে হেনস্তা করা হয়। অনেক সময় অভিভাকদের কাছেও চিঠি পাঠানো হয়।’
উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো সাংস্কৃতিক আয়োজন করতে দিতেন না উল্লেখ করে পলিটিক্যাল স্ট্যাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী দীক্ষিতা তালুকদার বলেন, ‘তিনি আমাদের কোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করতে দিতেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তন ব্যবহার করতে দিতেন না। কিছুদিন আগে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা বারবিকিউয়ের আয়োজন করতে চেয়েছিল, তাতেও তিনি বাধা দিয়েছেন।’
এই ছাত্রী বলেন, ‘হল প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগসহ তিন দফা দাবি আদায়ে আমরা আন্দোলনে নামলে তিনি দাবি পূরণে এক সপ্তাহের সময় চান। অথচ বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দিতে তিনি এক ঘণ্টারও সময় নেননি। আচমকাই হল বন্ধের ঘোষণা দিয়ে দেন। তার নির্দেশে পুলিশ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে। এমন স্বৈরাচারী ও ব্যর্থ উপাচার্য আমরা চাই না।’
উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অন্যতম নেতা সাব্বির আহমদ অভিযোগ করে বলেন, ‘এই উপাচার্য আমাদের ঐক্য নষ্ট করেছেন। আমরা যতবার দাবি নিয়ে দাঁড়িয়েছি, ততবার তিনি আমাদের মধ্যে বিভক্তি তৈরি করেছেন। ব্যক্তিগতভাবে হয়রানি করেছেন। তার কাছে আমরা আমাদের কোনো অধিকার নিয়ে কথা বলতে পারি না।’
গত বৃহস্পতিবার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমদ লিজার পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনে নামেন ওই হলের ছাত্রীরা। তখন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ নেতারা তাদের আন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এমনকি শনিবার সন্ধ্যায় আন্দোলনকারী ছাত্রীদের উপর ছাত্রলীগ হামলা চালায় বলেও অভিযোগ আছে।
তবে এখন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরাও যোগ দিয়েছেন উপাচার্যবিরোধী আন্দোলনে। মঙ্গলবার উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমদের পদত্যাগ চেয়ে ক্যাম্পাসে মিছিল করে ছাত্রলীগের একটি অংশ। এ ছাড়া সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভেও শরিক হয়েছেন ছাত্রলীগের অনেকে।
শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের কমিটি নেই দীর্ঘদিন ধরে। মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় গত বছরের ১৭ জুন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত করা হয়। এরপর আর নতুন কমিটি দেয়া হয়নি। ক্যাম্পাসে এখন ছাত্রলীগের অন্তত ছয়টি গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে।
এই গ্রুপিং জিইয়ে রাখার পেছনেও উপাচার্যের ইন্ধন রয়েছে অভিযোগ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রলীগ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘উপাচার্যের কারণেই বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের নতুন কমিটি আসছে না। তিনি ছাত্রলীগকে কয়েকটি গ্রুপে বিভক্ত করে রেখেছেন। কমিটি দিলে ঝামেলা হবে এমনটি বুঝিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতাদের।’
তার অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় এক হাজার ২০০ কোটি টাকার উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চলছে। এসবে ব্যাপক লুটপাট হচ্ছে। লুটপাট অব্যাহত রাখা ও নিজের ক্ষমতা একচ্ছত্র করতে ছাত্রলীগের মধ্যে বিভক্তি তৈরি করেছেন ফরিদ উদ্দিন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যেও বিভক্তি জিইয়ে রাখার অভিযোগ রয়েছে উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে।
তবে উপাচার্যের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগের সত্যতা থাকলেও তিনি কিছু ভালো কাজও করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, ‘করোনার কারণে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস পরীক্ষা ব্যাহত হচ্ছে। সেশনজট তৈরি হয়েছে। কিন্তু আমাদের এখানে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পরপরই পরীক্ষা শুরু হয়েছে। নতুন সেমিস্টারের ক্লাসও শুরু হয়েছে। সেশনজট অনেকাংশে কমে এসেছে। যারা পরীক্ষা দিতে চান না, তারা উপাচার্যের ওপর ক্ষুব্ধ।’
তিনি বলেন, ‘উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগিং বন্ধ করেছেন। এ কারণেও কেউ কেউ তার ওপর নাখোশ। তাদের দাবি, র্যাগিংয়ের মাধ্যমে সিনিয়র-জুনিয়র শিক্ষার্থীদের মধ্যে সুসম্পর্ক তৈরি হয়।’
বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের তিনটি গ্রুপ রয়েছে। এগুলো হলো- আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ শিক্ষক পরিষদ’, আওয়ামী-বামপন্থি শিক্ষকদের প্যানেল ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্তচিন্তা চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ’ ও বিএনপি-জামায়াতপন্থি শিক্ষকদের ‘মহান মুক্তিযুদ্ধ, বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ ও ধর্মীয় মূল্যবোধে শ্রদ্ধাশীল শিক্ষক ফোরাম’।
নিজের আধিপত্য বজায় রাখতে শিক্ষকদের এই দ্বন্দ্ব জিইয়ে রাখার অভিযোগ রয়েছে উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমদের বিরুদ্ধে। তবে এ ব্যাপারে কোনো কোনো শিক্ষক প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করতে চাননি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক বলেন, ‘তিনি খুব অহংকারী। কাউকে মূল্যায়ন করেন না। তিনিকে প্রধানমন্ত্রীর কাছের লোক বলে পরিচয় দেন।’
তিনি বলেন, ‘উপাচার্যের বাড়ি কুমিল্লায়। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়কে কুমিল্লাকরণ করছেন নিয়োগ ও বিভিন্ন দায়িত্ব প্রদানের ক্ষেত্রে নিজ এলাকার লোকদের গুরুত্ব দিয়ে।’
এসব অভিযোগ প্রসঙ্গে উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমদের সঙ্গে মঙ্গলবার মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। বাসবভন অবরোধ করে তার পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করছে শিক্ষার্থীরা। ফলে তার সঙ্গে দেখা করা যায়নি।
সোমবার উপাচার্য বলেছিলেন, ‘এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণার মান অনেক উন্নত হয়েছে। করোনাকালেও আমরা অনেক ভালো করেছি। এখন কিছু বহিরাগতের ইন্ধনে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছে। বহিরাগতরাই এতে নেতৃত্ব দিচ্ছে।’
আরও পড়ুন:বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ও প্রযুক্তিবিদদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ একাডেমি অফ সায়েন্স গত ১৮ মে ২০২৫ খ্রিস্টাব্দে, ১৬ তম কাউন্সিল সভায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য, অধ্যাপক ড. এ. বি. এম. বদরুজ্জামানকে ফেলো হিসেবে নির্বাচিত ঘোষণা করেছেন। এই মর্যাদাপূর্ণ সম্মাননা প্রকৌশলবিদ্যায় তাঁর গুরুত্বপূর্ণ অবদান এবং বাংলাদেশ ও দেশের বাইরে তাঁর প্রকৌশল ও বৈজ্ঞানিক মেধাকে স্বীকৃতি দেয়। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগের ডিসটিংগুইশড অধ্যাপক ড. বদরুজ্জামান ১৯৯২ খ্রিস্টাব্দে, যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তাঁর গবেষণার বিষয় ছিল পরিবেশ বিজ্ঞান। তিনি আর্সেনিক কন্টামিনেশন, সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট, সারফেস এন্ড গ্রাউন্ড ওয়াটার কোয়ালিটি মডেলিং, এনভায়রনমেন্টাল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, হেভি মেটাল স্পিসিয়েশন ও ট্রান্সপোর্টেশান ইত্যাদি বিষয়ে গবেষণা করেন। গ্রাউন্ড ওয়াটারের আর্সেনিক দূষণ এবং প্রতিরোধের মডেলের উপর বিশেষ অবদানের জন্য তিনি ২০১২ সালে প্রিন্স সুলতান বিন আব্দুল আজিজ পুরস্কার লাভ করেন। ২০১৯ খ্রিস্টাব্দে তিনি মালয়েশিয়ান ইনভেনশন এন্ড ডিজাইন সোসাইটি কর্তৃক প্রদত্ত আইটেক্স গোল্ড মেডেল লাভ করেন। প্রফেসর বদরুজ্জামান বৈজ্ঞানিক জার্নালগুলোতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রকাশনা করেছেন যা তাঁর গবেষণার ক্ষেত্রে একজন উদীয়মান গবেষক হিসেবে তাঁর পান্ডিত্য নির্দেশ করে। তিনি এখন পর্যন্ত মোট ইমপেক্ট ফ্যাক্টর স্কোর ৪২৫, ৬,০৭৩ টি সাইটেশন, এইচ সূচক ৩১, আই ১০ সূচক ৪৮ সহ চিত্তাকর্ষক মেট্রিকস অর্জন করেছেন। বৈজ্ঞানিক ও প্রকৌশল অনুসন্ধানে তাঁর দূরদৃষ্টি সম্পন্ন নেতৃত্ব এবং পরামর্শ কেবল প্রকৌশল বিদ্যাকে সমৃদ্ধি করেনি বরং গবেষকদের একটি নতুন প্রজন্মকে জ্ঞান এবং আবিষ্কারের সন্ধান শুরু করতে অনুপ্রাণিত করেছে। প্রফেসর বদরুজ্জামান বিভিন্ন কনফারেন্স সেমিনার I ওয়ার্কশপে e³…Zv প্রদানের মাধ্যমে তাঁর জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বিনিময় করে থাকেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের এমআইটিতে, এবং ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস অ্যাট অস্টিন-এ ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে আমন্ত্রিত হয়েছিলেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য
দীর্ঘদিন থেকে চরম অনিশ্চয়তা ও হতাশার মধ্যে দিনাতিপাত করছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) পরিসংখ্যান বিভাগের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীরা। ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের এমএস পরীক্ষার ফোলাফল প্রকাশ করা হয়নি ছয় মাসেও। ফলে উচ্চশিক্ষা, চাকরি ও স্কলারশিপের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন অনেক শিক্ষার্থী। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিভাগীয় সভাপতির অসহযোগিতা ও প্রশাসনিক জটিলতাকে কেন্দ্র করে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে এবং বিভাগজুড়ে তৈরি হয়েছে এক ধরনের অস্থিরতা।
অনুসন্ধানে জানা যায়, স্নাতকোত্তর ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের এমএস পরীক্ষা ২০২২ শুরু হয় ২০২৪ সালের ৩১ অক্টোবর এবং শেষ ১ ডিসেম্বর। এই পরীক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিটির সভাপতি ছিলেন অধ্যাপক ড. সোমা চৌধুরী বিশ্বাস।
কমিটির অন্য সদস্যদের মধ্যে ছিলেন অধ্যাপক মো. মনিরুল ইসলাম, অধ্যাপক মো. রোকনুজ্জামান এবং সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান ভূঞা। পরীক্ষা শেষে চলতি বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি ‘লিভ প্রিপারেটরি টু রিটায়ারমেন্ট’ (এলপিআরে) গমন করেন অধ্যাপক ড. সোমা চৌধুরী বিশ্বাস। ফলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরীক্ষা কমিটির সভাপতির পদটি শূন্য হয়ে যায়।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত নিয়মানুযায়ী, অ্যাকাডেমিক কমিটির মাধ্যমে নতুন সভাপতি নিযুক্ত না হওয়া পর্যন্ত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ সম্ভব নয়। এই পরিস্থিতিতে কমিটির অন্য সদস্যরা দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভাগীয় সভাপতি অধ্যাপক চন্দন কুমার পোদ্দারকে একাধিকবার অনুরোধ করেন বিষয়টি অ্যাকাডেমিক কমিটির সভায় আলোচ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য। তবে তিনি তা করতে অস্বীকৃতি জানান। সংশ্লিষ্টরা জানান, গত ২৪ এপ্রিল এক জরুরি সভায় পরীক্ষা কমিটি বিভাগের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক ও কমিটির সদস্য অধ্যাপক মো. মনিরুল ইসলামকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে মনোনীত করে ফল চূড়ান্তকরণের দায়িত্ব প্রদান করা হয়। তিনি দায়িত্ব পালন করে যথানিয়মে ফলাফল প্রস্তুতও করেন। তবে তা পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দপ্তরে জমা দিলে, অ্যাকাডেমিক কমিটির অনুমোদন ছাড়া সভাপতি মনোনীত হওয়ায় পরীক্ষার ফলাফল গ্রহণ ও প্রকাশে অপারগতা প্রকাশ করে কর্তৃপক্ষ। এতে শিক্ষার্থীরা পড়েছেন চরম দুরবস্থায়।
একাধিক শিক্ষার্থী জানান, তারা উচ্চশিক্ষা, চাকরি ও স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে পারছেন না। অনেকে দীর্ঘদিনের প্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও শুধু ফলাফল না পাওয়ার কারণে সুযোগ হারাচ্ছেন। এছাড়া পূর্ববর্তী ব্যাচের ফলাফল প্রকাশ না হওয়ায় ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডারেও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। ফরম পূরণ এবং স্নাতকোত্তর পরীক্ষাও অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, প্রশাসনিক জটিলতায় তাদের পড়াশোনার স্বাভাবিক অগ্রগতি ব্যাহত হচ্ছে, যা মানসিক চাপে ফেলে দিচ্ছে তাদের। ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী হৃদয় আহমেদ বলেন, ‘আমাদের পরীক্ষা কমিটির সভাপতি অবসরে যাওয়ার পর পদটি শূন্য হয়ে পড়ে। ফলে বাকি সদস্যরা আমাদের ফলাফল প্রকাশ করতে পারছিলেন না। অন্যদিকে, চেয়ারম্যান স্যার জানিয়েছেন, সিনিয়র কোনো সদস্য চাইলে ফল প্রকাশ করতে পারেন; কিন্তু এই বিষয়টি নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে। ফলে ফলাফল না হওয়ায় শুধু আমাদের ব্যাচ নয়,
পরবর্তী ব্যাচগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সোহেল মিয়া নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমাদের ফল প্রকাশে দীর্ঘবিলম্বের মূল কারণ চেয়ারম্যান স্যারের অসহযোগিতা। পরীক্ষা কমিটি প্রায় দুই মাস আগে ফলাফল প্রস্তুত করলেও তা এখনো প্রকাশ করা সম্ভব হয়নি। কারণ, চেয়ারম্যান স্যার অ্যাকাডেমিক মিটিংয়ের মাধ্যমে নতুন পরীক্ষা কমিটি পুনর্গঠন করেননি। মেহরাব সাকিব নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘ফলাফল প্রকাশ না হওয়ায় আমরা অনেক গুরুত্বপূর্ণ চাকরির আবেদন থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। পাশাপাশি এক ধরনের মানসিক অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে সময় পার করছি। শিক্ষক ও প্রশাসনের উচিত এ বিষয়ে
দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পরীক্ষা কমিটির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ড. সোমা চৌধুরী বিশ্বাস বলেন, ‘আমি এলপিআরে ‘অবসর পূর্ব ছুটি’ যাওয়ার সময় পরীক্ষা কমিটির অন্য সদস্যদের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়েছি। সিনিয়র সদস্য হিসেবে আমি মনিরুল ইসলাম স্যারকে ফলাফলে স্বাক্ষরের অনুরোধ করি। তবে তিনি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর থেকে আনুষ্ঠানিক চিঠি না পাওয়া পর্যন্ত স্বাক্ষর করতে অস্বীকৃতি জানান। শিক্ষার্থীদের মধ্যে যে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে, তা এড়ানো যেত যদি বিভাগীয় সভাপতি সময়মতো অ্যাকাডেমিক কমিটির মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতেন।’ বিভাগের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক ও কমিটির সদস্য অধ্যাপক মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘অধ্যাপক চন্দন কুমার পোদ্দারকে একাধিকবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও তিনি অ্যাকাডেমিক কমিটির সভা আহ্বান করেননি। তিনি নতুন সভাপতি নিয়োগের ব্যবস্থা গ্রহণে ইচ্ছাকৃতভাবে অবহেলা করেছেন। যার মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি-বিধান লঙ্ঘন করেছেন। তিনি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে ব্যর্থ হওয়ায় ফল প্রকাশে অনিবার্যভাবে বিলম্বিত হয়েছে। এর মাধ্যমে তিনি শিক্ষার্থীদের কল্যাণ এবং প্রাতিষ্ঠানিক দায়িত্বের প্রতি অসচেতনতা প্রদর্শন করেছেন। আমাদের ইচ্ছে থাকার পরও আমরা ফলাফল প্রকাশ করতে পারিনি। কারণ ভবিষ্যতে আইনি জটিলতা দেখা দিতে পারে।’
৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার (আবশ্যিক ও পদসংশ্লিষ্ট বিষয়) পুনর্নির্ধারিত সময়সূচি প্রকাশ করেছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। প্রকাশিত সূচি অনুযায়ী, আগামী ২৪ জুলাই থেকে ৩ আগস্ট পর্যন্ত আবশ্যিক বিষয় এবং ১০ আগস্ট থেকে ২১ আগস্ট পর্যন্ত পদ-সংশ্লিষ্ট বিষয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
পরীক্ষাগুলো ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহ কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানায় পিএসসি। এর আগে ৪৬তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষা ৮ থেকে ১৯ মে পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। পরে পরীক্ষার্থীদের দাবির মুখে তা স্থগিত করা হয়। গত ৯ মে ৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারির ফল প্রকাশিত হয়। এতে ১০ হাজার ৬৩৮ জন উত্তীর্ণ হন।
২০২৩ সালের ৩০ নভেম্বর ৪৬তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এ বিসিএসে ৩ হাজার ১৪০ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে। সবচেয়ে বেশি নেওয়া হবে স্বাস্থ্য ক্যাডারে সহকারী সার্জন ১ হাজার ৬৮২ জন, সহকারী ডেন্টাল সার্জন ১৬ জন, শিক্ষা ক্যাডারে শিক্ষায় ৫২০ জন, প্রশাসন ক্যাডারে ২৭৪ জন, পররাষ্ট্রে ১০ জন, পুলিশে ৮০ জন, আনসারে ১৪ জন, মৎস্যে ২৬ জন ও গণপূর্তে ৬৫ জনকে নেওয়া হবে। মোট ৩ হাজার ১৪০ শূন্য পদের বিপরীতে ৩ লাখ ৩৮ হাজার আবেদন জমা পড়ে।
এখন থেকে একজন গ্রাহক সর্বাধিক ১০টি মোবাইল ফোন সিম ব্যবহার করতে পারবেন। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গতকাল শনিবার বিটিআরসির এক কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, আগে একজন গ্রাহক সর্বোচ্চ ১৫টি সিম নিবন্ধন করতে পারতেন। তবে নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এখন থেকে সর্বোচ্চ ১০টি সিমই নিবন্ধন করা যাবে।
বিটিআরসি জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক অনুশীলন এবং জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থ বিবেচনা করে একজন গ্রাহকের নামে সর্বোচ্চ নিবন্ধনযোগ্য সিম সংখ্যা ১৫ থেকে দশে কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটও বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। সংস্থাটি আরও জানায়, সর্বোচ্চ ১০টি ব্যক্তিগত সিম নিবন্ধনের সীমা নির্ধারণ করা হলে প্রায় ২৬ লাখ গ্রাহকের মোট ৬৭ লাখ সিম বন্ধ করতে হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বিদেশে উচ্চশিক্ষা অর্জনের স্বপ্ন অনেকেরই থাকে, কিন্তু এই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে প্রয়োজন হয় সঠিক দিকনির্দেশনা ও দক্ষ সহযোগিতার। ঠিক এখানেই NiT Academy Global তার অনন্য ভূমিকা রাখছে। রাজশাহী ভিত্তিক এই প্রতিষ্ঠানটি আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষার সুযোগ করে দিচ্ছে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য। তারা শুধুমাত্র ভিসা প্রসেসিং বা অ্যাপ্লিকেশনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং একজন শিক্ষার্থীর পুরো উচ্চশিক্ষা যাত্রার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পথপ্রদর্শক হিসেবে কাজ করে।
NiT Academy Global শিক্ষার্থীদের প্রথমে উপযুক্ত কোর্স ও বিশ্ববিদ্যালয় বেছে নিতে সহায়তা করে, যা তাদের আগ্রহ ও ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার পরিকল্পনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এরপর শুরু হয় আবেদন প্রক্রিয়া, যেখানে প্রতিটি ডকুমেন্ট প্রস্তুত থেকে শুরু করে আবেদনপত্র সঠিকভাবে জমা দেওয়ার বিষয়েও তারা সহায়তা করে। এছাড়া ভিসা প্রক্রিয়ায় পূর্ণ সহায়তা, সাক্ষাৎকারের প্রস্তুতি এবং প্রয়োজনীয় কনসালটেন্সি সরবরাহ করা হয়। যারা আর্থিকভাবে কিছুটা পিছিয়ে আছেন, তাদের জন্য রয়েছে বৃত্তি সংক্রান্ত পরামর্শ ও সহায়তা।
বিশ্বের বিভিন্ন উন্নত দেশে উচ্চশিক্ষার জন্য NiT Academy Global শিক্ষার্থীদের পাঠানোর ব্যবস্থা করে থাকে। এর মধ্যে রয়েছে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ডেনমার্ক, নেদারল্যান্ডস, জাপান, চীন, ফিনল্যান্ড, রাশিয়া, ফ্রান্স এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত (বিশেষ করে দুবাই)।
NiT Academy Global শুধু একাডেমিক সাপোর্টেই সীমাবদ্ধ নয়, তারা প্রাক-ভ্রমণ সহায়তা, এয়ার টিকেট বুকিং, এয়ারপোর্ট পিকআপ ও হোস্টেল/বাসস্থানের ব্যবস্থাও করে থাকে। এক কথায়, বিদেশে যাওয়ার শুরু থেকে সেখানকার স্থায়ীভাবে থিতু হওয়ার পর্যায় পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে তারা শিক্ষার্থীদের পাশে থাকে।
প্রতিষ্ঠানটির সেবা গ্রহণ করে অনেক শিক্ষার্থী ইতিমধ্যেই বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য স্থান পেয়েছেন। কেউ যুক্তরাজ্যে, কেউ কানাডায়, কেউবা আবার জাপান কিংবা অস্ট্রেলিয়ায় পড়াশোনা করছেন। তাদের সাফল্যই NiT Academy Global-এর কার্যক্রমের সফলতা প্রমাণ করে।
যোগাযোগ:
ফোন: +8801612751894
ইমেইল: [email protected]
ঠিকানা: হাউস-১২২, প্রতিতির রান্নাঘর বিল্ডিং, গণকপাড়া, বোয়ালিয়া, রাজশাহী।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করার অনুমতি বাতিল করেছে এবং বর্তমানে ভর্তি থাকা শিক্ষার্থীদের অন্যত্র স্থানান্তরের নির্দেশ দিয়েছে। অন্যথায় তারা যুক্তরাষ্ট্রে বৈধ অবস্থান হারাতে পারে বলে বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ (ডিএইচএস)। হার্ভার্ড এ সিদ্ধান্তকে অবৈধ ও প্রতিশোধমূলক বলে আখ্যা দিয়েছে।
ওয়াশিংটন থেকে এএফপি জানায়, হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সচিব ক্রিস্টি নোয়েম বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ ভিজিটর প্রোগ্রাম (এসইভিপি) প্রত্যয়ন বাতিলের নির্দেশ দেন।
ডিএইচএসের বিবৃতিতে বলা হয়, হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষ বিদেশি শিক্ষার্থীদের বিষয়ে আগেই চাওয়া কিছু তথ্য সরবরাহে ব্যর্থ হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নোয়েম বলেন, ‘এই প্রশাসন হার্ভার্ডকে জবাবদিহির আওতায় আনছে- যেহেতু তারা সহিংসতা ও ইহুদিবিদ্বেষ ছড়াচ্ছে এবং ক্যাম্পাসে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে সমন্বয় করছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ কোনো অধিকার নয়, বরং একটি সুবিধা, যা তারা অধিক টিউশন ফি নিয়ে বহু বিলিয়ন ডলারের তহবিল ফুলিয়ে তোলার কাজে ব্যবহার করে।’
হার্ভার্ড পাল্টা বিবৃতিতে জানায়, ‘সরকারের এই পদক্ষেপ অবৈধ। আমরা হার্ভার্ডে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ও গবেষকদের উপস্থিতি বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বিশ্বের ১৪০টিরও বেশি দেশ থেকে আসা এসব মানুষ আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় ও পুরো জাতিকে অসামান্যভাবে সমৃদ্ধ করেন।’ হোয়াইট হাউস এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি।
এই সিদ্ধান্তকে ট্রাম্প প্রশাসনের হার্ভার্ডবিরোধী অভিযানের একটি বড় ধাপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরেই ম্যাসাচুসেটসের এই আইভি লিগ বিশ্ববিদ্যালয়টিকে ‘বামপন্থি’ বা ‘মার্কসবাদী’ আদর্শ ছড়ানোর অভিযোগে অভিযুক্ত করে আসছেন। গত মাসে হার্ভার্ড একটি ২.২ বিলিয়ন ডলারের ফেডারেল তহবিল বরাদ্দ স্থগিতাদেশের মুখে পড়ে, কারণ তারা হোয়াইট হাউসের দেওয়া একগুচ্ছ শর্ত প্রত্যাখ্যান করে।
এসব শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন কাঠামো, নিয়োগ নীতি ও ভর্তি পদ্ধতিতে পরিবর্তনের কথা বলা হয়েছিল, যার মধ্যে ছিল বৈচিত্র্য সংক্রান্ত দপ্তরগুলো বন্ধ করা এবং বিদেশি শিক্ষার্থীদের স্ক্রিনিংয়ে অভিবাসন কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করা। হার্ভার্ড পরে এই বরাদ্দ স্থগিতাদেশ ঠেকাতে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা করে।
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ডিআইইউ) এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) যৌথভাবে গবেষণা ও শিক্ষার মান উন্নয়নে একাডেমিক সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য একটি সমঝোতা স্মারক (এমওএ) স্বাক্ষর করেছে। বিশেষ করে পিএইচডি ( ডক্টর অব ফিলোসোফি), এমফিল (মাস্টার অব ফিলোসোফি) ও এম এস (মাস্টার অব সায়েন্স) শিক্ষার্থীদের তত্ত্বাবধানের ক্ষেত্রে এ চুক্তি সহায়ক হবে বলে জানায় প্রতিষ্ঠান দুইটি।
মঙ্গলবার (২০ মে, ২০২৫) জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে একটি আন্তরিক পরিবেশে এই স্বাক্ষর অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আবদুর রবসহ অন্যান্য বিশিষ্ট অতিথি ও কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির পক্ষে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস. এম. মাহবুব উল হক মজুমদার, ফ্যাকাল্টি অব ইনফরমেশন টেকনোলজির ডিন প্রফেসর ডক্টর সৈয়দ আকতার হোসেন, ব্যবসা ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন অনুষদের ডিন প্রফেসর ডক্টর মাসুম ইকবাল, স্বাস্থ্য ও জীবন বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ডক্টর বিলাল হোসেন, মানবিক ও সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক লিজা শারমীন, স্নাতকোত্তর অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. কবিরুল ইসলাম, এক্সটার্নাল অ্যাফেয়ার্সের পরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মিজানুর রহমানসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
এই চুক্তির আওতায় উভয় বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা ও শিক্ষার মানোন্নয়নে একাডেমিক কার্যক্রমে একযোগে কাজ করবে, যার মধ্যে রয়েছে ল্যাব সুবিধা, অনলাইন ডাটা বেস, তথ্য বিশ্লেষণ ব্যবস্থা এবং ভৌত অবকাঠামোর ব্যবহার; যা ভর্তি ও সমাবর্তনের সময় উভয় প্রতিষ্ঠানের জন্য সহায়ক হবে। সমঝোতা স্মারকে উচ্চমানের গবেষণা পরিচালনা, যুগ্মভাবে আন্তর্জাতিক মানের জার্নাল প্রবন্ধ প্রকাশ, যৌথ গবেষণা সম্মেলন আয়োজন এবং পেটেন্টসহ মেধাস্বত্ব উন্নয়নের দিক নির্দেশনা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এছাড়ও শিক্ষার মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে শিক্ষক বিনিময় কর্মসূচিও গবেষণা শিক্ষার্তীদের যৌথ তত্ত্বাবধানকে উৎসাহিত করা হবে বলে জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এই উদ্যোগের জন্য প্রশংসা প্রকাশ করেন এবং বলেন- "এ ধরনের সহযোগিতা ফলপ্রসূ গবেষণার পাশাপাশি উচ্চ পর্যায়ের এইচ -ইনডেক্স সম্পন্ন জার্নালে প্রকাশনা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে।"
তাছাড়া ডিআইইউ-এর উপ-উপাচার্য এই চুক্তি যথাসময়ে বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন যাতে উভয় প্রতিষ্ঠানের একাডেমিক ও গবেষণাগত কার্যক্রমের মানোন্নয়নের পরিধি বৃদ্ধি পায়।
মন্তব্য