২০২০ সালের মাঝামাঝি থেকে ২০২১ সালের অক্টোবর পর্যন্ত পুঁজিবাজারে সূচকের ব্যাপক উত্থানের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দর বৃদ্ধি পাওয়া বেক্সিমকো লিমিটেডের দর এখন ক্রমাগত কমছে।
দর কমছে একই গ্রুপের আরও তিন কোম্পানি বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, আইএফআইসি ব্যাংক ও শাইনপুকুর সিরামিকসের শেয়ারেরও। সুকুক বন্ড তালিকাভুক্তির পরদিনই নেমে গেছে অভিহিত মূল্যের নিচে।
এর মধ্যে বেক্সিমকো লিমিটেড তার সর্বোচ্চ দরের তুলনায় ২২ শতাংশের বেশি, বেক্সিমকো ফার্মা প্রায় ২৫ শতাংশ, আইএফআইসি ব্যাংক প্রায় ২০ শতাংশ এবং শাইনপুকুর ৩৫ শতাংশের বেশি দর হারিয়েছে। তালিকাভুক্ত হয়েই সুকুক বন্ড দর হারিয়েছে ১৮ শতাংশের বেশি।
২০২০ সালের ১৯ জুলাই বেক্সিমকোর একেকটি শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৩ টাকায়। গত ১৪ নভেম্বর তা সর্বোচ্চ ১৮৭ টাকা ৯০ পয়সায় লেনদেন হয়। কিন্তু সেদিনই দর হারানো শুরু।
নতুন বছরে নতুন আমেজে পুঁজিবাজার। প্রতিদিনই অল্প অল্প করে বাড়ছে সূচক আর লেনদেন। নতুন বছরের প্রথম লেনদেন ৩ জানুয়ারি থেকে ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত সূচক বেড়েছে ২০২ পয়েন্ট। এ সময়ে স্বল্প মূলধনি কোম্পানির উত্থানের পাশাপাশি বিমা, প্রকৌশল, বস্ত্র খাতকে এগিয়ে আসতে দেখা গেছে। এমন সময়েও বেক্সিমকো গ্রুপের পিছিয়ে পড়া পুঁজিবাজারে নতুন আলোচনা তৈরি করেছে।
কোম্পানির শেয়ারদর অস্বাভাবিক হারে বাড়লে স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষ সাধারণত কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়। তবে কমার ক্ষেত্রে এমন নোটিশ দেয়ার ঘটনা সাধারণত ঘটে না। আর বেক্সিমকো গ্রুপের শেয়ারদর যখন তরতর করে বাড়ছিল, সে সময় কারণ দর্শানোর নোটিশও দেয়া হয়নি। অবশ্য এটাও ঠিক কোম্পানির মূল্য সংবেদনশীল সব তথ্য ছিল প্রকাশিত।
২০২০ সালের মে থেকে পুঁজিবাজারে যে উত্থান শুরু হয়, তাতে বেক্সিমকো গ্রুপের শেয়ারগুলোতে ব্যাপক চাঙাভাব দেখা দেয়। দাম আরও বাড়বে- এমন খবরে বিনিয়োগকারীরাও বাড়তি দাম দিয়েই শেয়ার কিনছিলেন। গত কয়েক মাস ক্রমাগতভাবে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগও বাড়ছিল কয়েকটি কোম্পানিতে।
বেক্সিমকো লিমিটেড করোনার সময় যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসা মাস্ক, পিপিইর মতো সরঞ্জাম সরবরাহের কাজ পেয়েছে। এ জন্য তারা পিপিই পার্ক স্থাপন করেছে। চুক্তি অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র এই পার্ক থেকে বছরে পাঁচ হাজার কোটি টাকার পণ্য নেবে।
আবার কোম্পানিটি দুটি সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র করছে। আগামী বছরের শেষ দিকে কেন্দ্র দুটি উৎপাদনে আসবে। এই কেন্দ্রে অর্থায়নের জন্য তিন হাজার কোটি টাকার সুকুক বন্ড ছাড়া হয়েছে। এরই মধ্যে সব টাকা তোলা হয়েছে।
বেক্সিমকো ফার্মার দর বৃদ্ধিতে দুটি মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছিল। ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে করোনার ৩ কোটি ৪০ লাখ টিকা আনতে সরকার যে চুক্তি করে, তাতে বেক্সিমকো ফার্মাকে করা হয় লোকাল এজেন্ট। প্রতি টিকার জন্য তারা এক ডলার করে পাবে সরকারের কাছ থেকে। পাশাপাশি বহুজাতিক কোম্পানি সানোফি এভেনটিসের ৩৫ শতাংশ শেয়ার কোম্পানিটি কিনে নিয়েছে।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ব্র্যাক ইপিএল ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের সাবেক প্রধান গবেষণা কর্মকর্তা দেবব্রুত কুমার সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, বেক্সিমকো গ্রুপ পুঁজিবাজারে নানা কারণে আলোচিত। গত দেড় বছরে শেয়ারদর অনেক বেড়েছে। এখন মূল্য সমন্বয় হওয়া উচিত।
আইএফআইসি ব্যাংকের শেয়ারদর বৃদ্ধিতেও কাজ করে একটি সংবাদ। শ্রীলঙ্কান একটি ব্যাংকে এই ব্যাংকটির শেয়ার রয়েছে। সেই শেয়ার তারা বিক্রি করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই শেয়ার বিক্রি হলে বিপুল পরিমাণ মুনাফার আশা করা হচ্ছে।
তবে শাইনপুকুর সিরামিকসের ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীরা আকৃষ্ট হবে- এমন প্রকাশিত কোনো মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছিল না।
২০২০ সালের মে থেকে পুঁজিবাজারে যে উত্থান শুরু হয়, তাতে বেক্সিমকো গ্রুপের শেয়ারগুলোতে ব্যাপক চাঙাভাব দেখা দেয়। দাম আরও বাড়বে- এমন খবরে বিনিয়োগকারীরাও বাড়তি দাম দিয়েই শেয়ার কিনছিলেন। গত কয়েক মাস ক্রমাগতভাবে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগও বাড়ছিল কয়েকটি কোম্পানিতে।
গত ৫ অক্টোবর বেক্সিমকো ফার্মার শেয়ারদর বেড়ে হয় ২৫৫ টাকা ৪০ পয়সা। সেদিন থেকেই দরপতন শুরু। বর্তমান দর ১৯২ টাকা ৭০ পয়সা। এই কয় দিনে শেয়ারদর কমেছে ৬২ টাকা ৭০ পয়সা বা ২৪ দশমিক ৫৪ শতাংশ।
তবে বেক্সিমকো লিমিটেড নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে, বেক্সিমকো ফার্মা ও শাইনপুকুর সিরামিকস অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ থেকে এবং আইএফআইসি ব্যাংক অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে দর হারাতে শুরু করে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ব্র্যাক ইপিএল ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের সাবেক প্রধান গবেষণা কর্মকর্তা দেবব্রুত কুমার সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বেক্সিমকো গ্রুপ পুঁজিবাজারে নানা কারণে আলোচিত। গত দেড় বছরে শেয়ারদর অনেক বেড়েছে। এখন মূল্য সমন্বয় হওয়া উচিত।’
তিনি বলেন, ‘বেক্সিমকো লিমিটেডের নতুন প্রোডাক্ট সুকুক নিয়ে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ কম। কারণ, এখানে আস্থার জায়গাটি এখনও তৈরি হয়নি। কিন্তু সুকুকে যেসব শর্ত দেয়া হয়েছে সবগুলোই আকর্ষণীয়। বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে অন্তত এক বছর অপেক্ষা করতে হবে বলে মনে হয়। যখন সুযোগ-সুবিধাগুলো দৃশ্যমান হবে তখন বিনিয়োগকারীরাও এটিতে আকৃষ্ট হবেন।’
বেক্সিমকো লিমিটেড
২০২০ সালের ১৯ জুলাই বেক্সিমকোর একেকটি শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৩ টাকায়। গত ১৪ নভেম্বর তা সর্বোচ্চ ১৮৭ টাকা ৯০ পয়সায় লেনদেন হয়। কিন্তু সেদিনই দর হারানো শুরু।
এরপর থেকে মোট ৪৩ কর্মদিবস লেনদেন হয়েছে পুঁজিবাজারে। এর মধ্যে ২৬ দিন দর কমেছে, ১৭ দিন বেড়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বেড়েছে খুবই কম পরিমাণে। কিন্তু দর হারিয়েছে শতকরা হিসাবে।
কোম্পানিটির শেয়ারদর বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ১৪৪ টাকা ১০ পয়সা, যা গত ১৯ অক্টোবরের পর সর্বনিম্ন।
গত ১১ নভেম্বর থেকে কোম্পানিটির একেকটি শেয়ার দর হারিয়েছে ৪০ টাকা ৯০ পয়সা বা ২২ দশমিক ১০ শতাংশ।
এই সময়ে কোম্পানিটির বেশ কয়েকটি ইতিবাচক খবর অবশ্য এসেছে। দুটি সৌর বিদ্যুৎুকেন্দ্র করতে সুকুক বন্ড ছেড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা তারা পেয়েছে। সেই বন্ডের লেনদেনও পুঁজিবাজারে শুরু হয়েছে।
এর মধ্যে কোম্পানিটির ৩ কোটি শেয়ার মালিকপক্ষ পুঁজিবাজার থেকে কিনে নিয়েছে।
বেক্সিমকো ফার্মা
ভারত থেকে করোনার টিকা আনতে মধ্যস্থতা, বহুজাতিক কোম্পানি সানোফি এভেনটিসের শেয়ার কেনার খবরে শেয়ারদর বাড়তে শুরু করে ২০২০ সালের জুন থেকে। সে সময় শেয়ারটি বিক্রি হয়েছে ৬৬ টাকা করে।
গত ৫ অক্টোবর শেয়ারদর বেড়ে হয় ২৫৫ টাকা ৪০ পয়সা। সেদিন থেকেই দরপতন শুরু। বর্তমান দর ১৯২ টাকা ৭০ পয়সা। এই কয় দিনে শেয়ারদর কমেছে ৬২ টাকা ৭০ পয়সা বা ২৪ দশমিক ৫৪ শতাংশ।
আইএফআইসি ব্যাংক
ব্যাংকটির শেয়ারদর বাড়তে শুরু করে গত বছরের ৩ মে থেকে। সেদিন শেয়ারপ্রতি দর ছিল ৯ টাকা ৮০ পয়সা।
যেখান থেকে ছয় মাসের যাত্রায় শেয়ারদর ১১৭ শতাংশ বেড়ে গত ১৮ নভেম্বর দাঁড়ায় ২১ টাকা ৭০ পয়সা। এরপর থেকেই কমছে দাম। ১৭ টাকা ৫০ পয়সায়।
সর্বোচ্চ দর থেকে কোম্পানিটির একেকটি শেয়ার হারিয়েছে ৪ টাকা ২০ পয়সা। শতকরা হিসেবে দাম কমেছে ১৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
শাইনপুকুর সিরামিকস
২০২০ সালের ৩ আগস্ট কোম্পানিটির একেকটি শেয়ার বিক্রি হয়েছে ৮ টাকায়। কোম্পানির দৃশ্যত কোনো উন্নতি তা থাকলেও শেয়ারদর ক্রমে বাড়তে বাড়তে গত ৭ অক্টোবর দাম দাঁড়ায় ৪৫ টাকা ৪০ পয়সা।
গত ৭ অক্টোবর থেকে দর হারাচ্ছে কোম্পানিটি। বর্তমান দাম ২৯ টাকা ২০ পয়সা। সর্বোচ্চ দর থেকে দাম কমেছে ১৬ টাকা ২০ পয়সা বা ৩৫ দশমিক ৬৮ শতাংশ।
সুকুক বন্ড দ্বিতীয় দিনেই অভিহিত মূল্যের নিচে
এই বন্ডটি নিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি বেশ উচ্ছ্বসিত। ইক্যুইটিনির্ভর পুঁজিবাজারে এই বন্ডগুলো লেনদেন ব্যাপকভাবে বাড়াবে বলে আশা করা হচ্ছিল।
এর মধ্যে বেক্সিমকো লিমিটেডের আনা সুকুক বন্ড শুরুতেই হোঁচট খেয়েছে। ১০০ টাকা অভিহিত মূল্যের বন্ডের প্রতিটি ইউনিট বছর শেষে কমপক্ষে ৯ টাকা লভ্যাংশ দেবে- এটা নিশ্চিত। তবে বেক্সিমকো লিমিটেডের লভ্যাংশ ১০ শতাংশের বেশি হলে যতটুকু বেশি হবে, তার ১০ শতাংশ সুকুকের লভ্যাংশে যোগ হবে।
সুকুক বন্ডের লেনদেন ১১০ টাকায় শুরু হলেও চার কর্মদিবসে তা সেখান থেকে কমে গেছে ১৮ টাকা ৫০ পয়সা। দ্বিতীয় দিনেই তা অভিহিত মূল্যের নিচে নেমে আসে। মঙ্গলবার তা দাঁড়িয়েছে ৯১ টাকা ৫০ পয়সা। সর্বনিম্ন নেমেছিল ৯১ টাকা।
গত ৩০ জুন সমাপ্ত অর্থবছরে বেক্সিমকো লিমিটেড লভ্যাংশ দিয়েছে ৩৫ শতাংশ। অর্থাৎ ১০ শতাংশের চেয়ে ২৫ শতাংশ বেশি। আগামী বছরও একই হারে লভ্যাংশ দিলে এই ২৫ শতাংশের ১০ শতাংশ হিসাবে আড়াই শতাংশ সুকুকের লভ্যাংশে যোগ হবে। তখন লভ্যাংশ হবে ১১ দশমিক ৫ শতাংশ।
এর পাশাপাশি বন্ডের ২০ শতাংশ বিনিয়োগ প্রত্যাহার করে নেয়া যাবে। কেউ চাইলে নগদে ফেরত পাবেন, কেউ চাইলে শেয়ার নিতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে বেক্সিমকো লিমিটেডের একেকটি শেয়ার পাওয়া যাবে ২৫ শতাংশ কম টাকায়। অর্থাৎ এই শেয়ার বিক্রি করে তার প্রকৃত মুনাফা থাকবে ৩৩ শতাংশ।
সব মিলিয়ে বন্ডটি থেকে বছরে ১৬ থেকে ১৯ শতাংশ মুনাফা করা সম্ভব হতে পারে।
তবে বন্ডের লেনদেন ১১০ টাকায় শুরু হলেও চার কর্মদিবসে তা সেখান থেকে কমে গেছে ১৮ টাকা ৫০ পয়সা। দ্বিতীয় দিনেই তা অভিহিত মূল্যের নিচে নেমে আসে। মঙ্গলবার তা দাঁড়িয়েছে ৯১ টাকা ৫০ পয়সা। সর্বনিম্ন নেমেছিল ৯১ টাকা।
আরও পড়ুন:শেষ কার্যদিবসে ঢাকার পুঁজিবাজারে লেনদেন চলছে উত্থানে, বেড়েছে প্রধান সূচক। অন্যদিকে বিগত দিনের মতো এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘন্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৮ পয়েন্ট।
এর বাইরে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসএসের উত্থান দশমিকের ঘরে থাকলেও ব্লু-চিপ শেয়ারের সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২ পয়েন্ট।
সূচক কিছুটা বাড়লেও বিগত কয়েকদিনের টানা পতনে লেনদেন অনেকটাই কমে এসেছে। এতদিন প্রথমার্ধে লেনদেন ২০০ কোটি ছাড়িয়ে গেলেও, এদিন লেনদেন হয়েছে ১৫০ কোটিরও কম।
দাম বেড়েছে লেনদেন অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৬১ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৩২ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
এদিকে এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার। লেনদেনের প্রথমার্ধে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সার্বিক সূচক হারিয়েছে ৭৩ পয়েন্ট।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ৩৩ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ৬৬ কোম্পানির হয়েছে দরপতন, অপরিবর্তিত আছে ২৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
পুঁজিবাজারের প্রথম দুই ঘন্টায় সিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজারে চলতি সপ্তাহ মোটেই ভালো কাটছে না বিনিয়োগকারীদের। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে সূচকের পতনের পর নববর্ষের ছুটি শেষে দ্বিতীয় কার্যদিবসেও বড় পতনের মুখে পড়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রাম—দেশের উভয় পুঁজিবাজার। এদিন কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৩৭ পয়েন্ট। মন্দাবস্থা চলছে বাকি দুই সূচকেও। শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস ১০ এবং বাছাইকৃত শেয়ারের ব্লু-চিপ সূচক কমেছে ১৮ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৭টি কোম্পানির মধ্যে সিংহভাগের দরপতন হয়েছে। আজ ৯৮টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর হারিয়েছে ২৫৫টি কোম্পানি এবং অপরিবর্তিত ছিল ৪৪টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসেবে ‘এ’, ‘বি’ ও ‘জেড’—তিন ক্যাটাগরিতেই প্রধান্য পেয়েছে দর কমা কোম্পানির সংখ্যা। বিশেষ করে ‘বি’ ক্যাটাগরির ৮৩টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে মাত্র ১১টির এবং কমেছে ৬৭টির; আর লেনদেন অপরিবর্তিত ছিল ৫টি কোম্পানির।
লেনদেন হওয়া ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে বেশিরভাগেরই দাম ছিল নিম্নমুখী। মাত্র ৭টি কোম্পানির ইউনিটের দাম বৃদ্ধি হয়েছে, কমেছে ২৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৫টির।
ডিএসইর ব্লক মার্কেটে আজ ২৬টি কোম্পানির মোট ৪৮ কোটি ৯৩ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ২৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে মারিকো বাংলাদেশ।
ডিএসইতে সূচক কমলেও গতদিনের তুলনায় বেড়েছে লেনদেন। সারা দিনে মোট ৪৪৬ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে, গতদিন যার পরিমাণ ছিল ৪১৪ কোটি টাকা।
৯.৯৪ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ারের তালিকায় আছে রংপুর ফাউন্ড্রি লিমিটেড। ১৪২.৯০ টাকায় লেনদেন শুরু হয়ে দিন শেষে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়ে হয়েছে ১৫৭.১০ টাকা।
অন্যদিকে, ৯.৯৬ শতাংশ দর হারিয়ে আজ একেবারে তলানিতে ঠাঁই হয়েছে খান ব্রাদার্সের। প্রতিটি শেয়ার ১৩৪.৫০ টাকা দরে লেনদেন শুরু হলেও দিন শেষে দাম কমে ১২১.১০ টাকায় ক্রয়-বিক্রয় হয়েছে।
চট্টগ্রামেও বড় পতন
.ঢাকার মতো চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সূচকের বড় পতন হয়েছে। সারা দিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ১০০ পয়েন্ট।
লেনদেন অংশ নেওয়া ২১১টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৫৪টির, বিপরীতে দাম কমেছে ১৩৫টির এবং ২২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম ছিল অপরিবর্তিত।
সূচকের পাশাপাশি সিএসইতি আজ লেনদেনও কমেছে। গত কার্যদিবসে ১৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হলেও মঙ্গলবার তা কমে ৭ কোটি টাকায় নেমেছে।
এদিন ৯.৯৫ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে আর্থিক মূল্যে শীর্ষ শেয়ার হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে ইস্টার্ন ক্যাবলস লিমিটেড। অপরদিকে ৯.৭৭ শতাংশ দর হারিয়ে তলানিতে নেমেছে দেশবন্ধু পলিমার লিমিটেড।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে আবারও সূচকের পতন ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে। দুই পুঁজিবাজারে সবকটি সূচক কমলেও বেড়েছে সামগ্রিক লেনদেন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ২ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়া ভিত্তিক ডিএসএস ১ পয়েন্ট এবং ডিএস-৩০ কমেছে আধা পয়েন্টের বেশি।
সূচক কমলেও গতদিনের তুলনায় বেড়েছে লেনদেন। ডিএসইতে মোট ৪৮২ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা আগেরদিন ছিল ৪৫১ কোটি টাকা।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের। ৩৯৫ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৫০, বিপরীতে দাম কমেছে ১৮৬ কোম্পানির। সারাদিনের লেনদনে দাম অপরিবর্তিত ছিল ৫৯ কোম্পানির শেয়ারের।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ এবং জেড ক্যাটাগরির বেশিরভাগ শেয়ারেরই দাম ছিল নিম্নমুখী। বি ক্যাটাগরিতে দাম বেড়েছে অধিকাংশ শেয়ারের। মধ্যম মানের শেয়ারের এই ক্যাটাগরিতে লেনদেন হওয়া ৮২ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৩৯, কমেছে ৩৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে তালিকাভুক্ত ৩৬ কোম্পানির ২৪টিরই দাম ছিল উর্ধ্বমুখী। দাম কমেছে ৪ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮ কোম্পানির।
ব্লক মার্কেটে লেনদেন হওয়া ২৬ কোম্পানির ২৬ কোটি ৯২ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। এরমধ্যে ব্যাংক এশিয়া সর্বোচ্চ ১০ কোটি ৭৮ লাখ টাকার শেয়ার ব্লক মার্কেটে বিক্রি করেছে।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে ১০ শতাংশ দাম বেড়ে শীর্ষে আছে প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড। অন্যদিকে ৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ দাম হারিয়ে তলানিতে তাল্লু স্পিনিং মিলস।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকার মতো পতন হয়েছে চট্টগ্রামের সূচকেও। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১ পয়েন্টের বেশি।
তবে সূচক কমলেও লেনদেন বেড়েছে সিএসই'র বাজারে। সারাদিনে সিএসইতে মোট ৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গতদিন ছিল ৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।
লেনদেনে অংশ নেয়া ১৯৩ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৮৬, কমেছে ৭৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ২৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষে আছে পদ্মা ইসলামি লাইফ ইনস্যুরেন্স লিমিটেড এবং ৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ দাম কমে তলানিতে বিচ হ্যাচারি লিমিটেড।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার ঢাকার পুঁজিবাজারে প্রধান সূচকের উত্থান হলেও সার্বিক সূচক কমেছে চট্টগ্রামে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের শুরুতেই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস ১ ও বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপের সূচক কমেছে ১১ পয়েন্ট।
লেনদেনে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ২৩১, কমেছে ৬৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
শুরুর প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১৩০ কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১৩ পয়েন্ট।
লেনদেন হওয়া ৭০ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৪০, কমেছে ১৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ১১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টায় মোট লেনদেন ৭৩ লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
আরও পড়ুন:টানা দুই দিন উত্থানের পর তৃতীয় দিন মঙ্গলবারও ঢাকার পুঁজিবাজারে বইছে সুবাতাস।
সূচক বৃদ্ধির পাশাপাশি লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় শেয়ার ও ইউনিট ক্রয়-বিক্রয় ছাড়িয়েছে ৩০০ কোটি টাকা।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৪৭ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক ডিএসইএস এবং ব্লু-চিপ কোম্পানির সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট করে।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির বেশির ভাগেরই দাম বেড়েছে। ১০৯ কোম্পানির দরপতন এবং ৫৩ কোম্পানির দাম অপরিবর্তিত থাকার বিপরীতে দাম বেড়েছে ২৩০ কোম্পানির।
ঢাকার মতো চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারেও বইছে চনমনে হাওয়া। লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১০২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৫৭ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৮৭, কমেছে ৫১ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৯ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে সিএসইতে ৮ কোটি ৮০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস রবিবারের লেনদেনে সূচকের উত্থান হয়েছে ঢাকার পুঁজিবাজারে; বেড়েছে সবকটি সূচক।
অন্যদিকে চট্টগ্রামে পতন দিয়ে শুরু হয়েছে লেনদেন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরিয়াহভিত্তিক ডিএসইএসের উত্থান দশমিকের নিচে এবং বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপ সূচকের উত্থান হয়েছে ৫ পয়েন্ট।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় দাম বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের। দরবৃদ্ধির ২৪৫ কোম্পানির বিপরীতে দর কমেছে ৮৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৫৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ডিএসইতে দিনের শুরুতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১৯০ কোটি টাকা।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ৫ পয়েন্ট। সূচক কমলেও বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেন হওয়া ১০২ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৫৫, কমেছে ২৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম দুই ঘণ্টায় লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন:গত সপ্তাহের উত্থানের ধারা ধরে রেখে এ সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রবিবার ঢাকা ও চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন হয়েছে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের শুরুতেই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএসের উত্থান দশমিকের নিচে থাকলেও বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপের সূচক বেড়েছে ৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৬৯, কমেছে ৮৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
শুরুর ৩০ মিনিটে ডিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ৫০ কোটি টাকা। ঢাকার মতোই চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ২২, কমেছে ৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম আধা ঘণ্টায় মোট লেনদেন ৩০ লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য