দেশে করোনা সংক্রমণ লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে চলেছে। এক দিনের ব্যবধানে শনাক্ত রোগী বেড়েছে প্রায় দুই হাজার। একই সঙ্গে শনাক্ত হার ৩ শতাংশের বেশি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ।
মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত পূবর্বর্তী ২৪ ঘণ্টায় ৮ হাজার ৪০৭ জনের শরীরে নতুন করে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এ সময়কালে করোনা সংক্রমণে মারা গেছে ১০ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে মঙ্গলবার পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে উল্লেখ করা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ২৪টি ল্যাবে ৩৫ হাজার ৫৪টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ২৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ। মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৬৯ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৭৫ জন সুস্থ হয়েছে। মোট সুস্থ হয়েছে ১৫ লাখ ৫৩ হাজার ৭৯৫ জন। সুস্থতার হার ৯৫ দশমিক ১৬ শতাংশ।
সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ১০ জনের মধ্যে একজন বাদে সবাই হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। তাদের মধ্যে আটজন পুরুষ ও দুজন নারী।
বিভাগওয়ারী এই দশজনের মধ্যে সাতজনই ঢাকার। এ ছাড়া চট্টগ্রাম, খুলনা ও ময়মনসিংহে একজন করে মারা গেছেন। এদের মধ্যে ষাটোর্ধ্ব ৪, সত্তরোর্ধ্ব ও ৮০ বছরের বেশি বয়সী দুজন।
দেশে জানুয়ারি থেকেই করোনা সংক্রমণ ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। আর নতুন করে শনাক্ত হওয়া করোনা রোগীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঢাকা বিভাগের।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর গত সোমবার জানায়, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ৬ হাজার ৬৭৬ জনের দেহে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে, যা ১৮ আগস্টের পর সর্বোচ্চ। আক্রান্তদের মধ্যে এই সময়ে মৃত্যু হয়েছে ১০ জনের। বেড়েছে শনাক্ত হারও।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, দেশে এ পর্যন্ত করোনার সংক্রমণ ধরা পড়েছে ১৬ লাখ ২৪ হাজার ৩২৭ জনের দেহে। এর মধ্যে মারা গেছেন ২৮ হাজার ১৫৪ জন।
সোমবার সকাল পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা করা হয় ৩১ হাজার ৯৮০টি। শনাক্তের হার ২০ দশমিক ৮৮ শতাংশ, যা ১১ আগস্টের পর সর্বোচ্চ।
সপ্তাহ ব্যবধানে বেড়েছে শনাক্ত-মৃত্যু
করোনা সংক্রমণ এক সপ্তাহ ব্যবধানে (১০ জানুয়ারি থেকে ১৬ জানুয়ারি) মৃত্যু বেড়েছে ৬৮ শতাংশ ও শনাক্তের সংখ্যা বেড়েছে ২৯ দশমিক ৯ শতাংশ। আগের সপ্তাহ (৩ জানুয়ারি থেকে ৯ জানুয়ারি) পর্যন্ত শনাক্ত হয়েছিল ৭ হাজার ২৩৪ জন।
গত ৪ অক্টোবর দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ন্ত্রণে আসার পর ৭ জানুয়ারি প্রথমবারের মতো শনাক্তের হার ৫ শতাংশ ছাড়ায়। এরপর প্রতিদিনই শনাক্তের হার বেড়েছে। এক দিন ছাড়া রোগীর সংখ্যাও বেড়েছে প্রতিদিন। চলতি বছরের প্রথম ১৭ দিনে করোনা শনাক্তের হার ৭ গুণ বেড়েছে।
আরও পড়ুন:আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে সন্ত্রাসীরা যাতে অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানি করতে না পারে, সেদিকে কঠোর নজরদারি থাকবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) নবনিযুক্ত কমিশনার হাবিবুর রহমান।
রাজধানীর মিন্টো রোডে সোমবার বেলা ১১টার দিকে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে মিট দ্য প্রেসে তিনি এ কথা জানান।
কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর প্রথমবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন ডিএমপি কমিশনার।
হাবিবুর রহমান বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানি হয়ে থাকে। আসছে নির্বাচনে যাতে কেউ বা কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠী অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানি করতে না পারে। ডিএমপির পুলিশ সদস্যদের যথেষ্ট সাহস ও শক্তি রয়েছে। এটি আমাদের গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ।’
রাজধানীকে নিরাপদ রাখতে যা যা করা প্রয়োজন ডিএমপি সবকিছুই করবে বলে জানান তিনি।
কিছুদিন আগে তেজগাঁওয়ে সন্ত্রাসীদের গুলিতে একজন নিহত হওয়ার প্রসঙ্গ টেনে এমন পরিস্থিতিতে নতুন কমিশনার হিসেবে হাবিবুর রহমান কী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আপনারা জানেন যে জামিন একটি বিচারিক প্রক্রিয়া। এ প্রক্রিয়ায় একজন অপরাধী আদালত থেকে বিচার পেতে পারে, কিন্তু পুলিশের তখনই কিছু করার থাকে, যখন কোনো ব্যক্তি অপরাধে জড়িয়ে পড়ে বা অপরাধ করতে উদ্বুদ্ধ করে বা অপরাধ সংঘটন করে থাকে।
‘সে ক্ষেত্রে আমি বলতে চাই, একজন অপরাধী সে ছোট হোক বা বড় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বদ্ধপরিকর আমরা। যারা জামিনে বেরিয়ে আসছে তাদেরকেও কঠোর মনিটরিংয়ে রাখার জন্য পুলিশের সব ইউনিটে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’
সাইবার অপরাধের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই ছাপিয়ে আজ আমাদের নতুন সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে সাইবার ক্রাইম। সাইবার ক্রাইম নিয়ন্ত্রণে ডিএমপি বিভিন্ন তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে; বিভিন্ন কর্মপন্থা গ্রহণ করেছে।’
ডিএমপির জনবল প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের জনবল রয়েছে ৩৪ হাজার। সেটি যদি রাজধানীর দুই কোটি ২৪ লক্ষ জনগণের জন্য ভাগ করি তাহলে আমাদের জনবল খুব কম।’
ঢাকাতে যেকোনো উপায়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সর্বাত্মক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান নবনিযুক্ত এ কমিশনার।
আরও পড়ুন:রাজনৈতিক সংগঠনগুলো অনুমতি ছাড়া কোনো সভা-সমাবেশ করলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান।
ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সোমবার আয়োজিত মিট দ্য প্রেসে তিনি এ কথা জানান।
বিএনপি বলেছে তারা ঢাকায় অনুমতি ছাড়াই সভা সমাবেশ করবে। যদি অনুমতি না নেয় তাহলে ডিএমপি কী ধরনের ভূমিকা নেবে জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘আজকেও বিরোধী দলের একটি প্রোগ্রাম রয়েছে। তারা আমাদের কাছ থেকে অনুমতি নিয়েছে। আমরা যেভাবে অনুমতি দিয়েছি, সেই অনুমতি মেনে নিয়েই তারা কাজ করছে।
‘কোনো সংগঠন যদি অনুমতি ছাড়া কোনো কিছু করতে চায়, ডিএমপির অধ্যাদেশে যেই নিয়মকানুন রয়েছে, সেই নিয়মকানুন ভঙ্গ যদি করতে চায় এবং করে, নির্ভয়ে, নির্বিঘ্নে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’
বিএনপি এর আগে অবরোধ করেছে। সামনে যদি আবারও অবরোধে যায় তাহলে কী ব্যবস্থা নেবেন জানতে চাইলে কমিশনার বলেন, ‘আমরা বলেছি ডিএমপির অধ্যাদেশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।’
মুন্সীগঞ্জে আলাদা ঘটনায় একদিনে দুই অটোরিকশা চালকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
সিরাজদিখান ও লৌহজং উপজেলা থেকে সোমবার সকালে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
সিরাজদিখান উপজেলার বালুচর ইউনিয়নের খাসকান্দি এলাকার এনআরবি নামক একটি ইট ভাটার পাশে সোমবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে একটি মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে থানায় খবর দেয় স্থানীয়রা।
প্রাণ হারানো মোহাম্মদ নেকবর হোসেন উপজেলার বাসাইল ইউনিয়নের চরগুলগুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা।
বালুচর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ওয়াসিম আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, রোববার বিকেলে অটোরিকশা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হন নেকবর। স্বজনরা রাতে বিভিন্ন স্থানে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পায়নি।
এদিকে সোমবার সকালে মুন্সীগঞ্জ লৌহজং উপজেলার দক্ষিণ হলুদিয়া এলাকায় একটি পুকুরে মরদেহ ভাসতে দেখে পুলিশকে জানায় স্থানীয়রা।
প্রাণ হারানো মো. মোস্তফাও রোববার রাতে অটোরিকশা নিয়ে বের হয়ে আর বাড়িতে ফিরেননি বলে জানায় পুলিশ।
সিরাজদিখান থানার ওসি মো. মুজাহিদুল ইসলাম ও লৌহজং থানার ওসি খোন্দকার ইমাম জানান, পুলিশ ধারণা করছে দুই ব্যক্তিকে হত্যা করে অটোরিকশা ছিনতাই করেছে দুর্বৃত্তরা। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
পুলিশের সাময়িক বরখাস্তকৃত অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশীদকেন্দ্রিক ঘটনায় যার যতটুকু অপরাধ ঠিক ততটুকু শাস্তি দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন নবনিযুক্ত ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান।
রাজধানীর মিন্টো রোডে সোমবার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
হাবিবুর রহমান কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর প্রথমবার সাংবাদিকদের সঙ্গে মিট দ্য প্রেস আয়োজন করে ডিএমপি।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘বাংলাদেশ পুলিশ একটি সুশৃঙ্খল বাহিনী। বাহিনীর যে নিয়মকানুন আছে, সেই নিয়মকানুনের মধ্যে চলে এবং চলবে। ঘটনা সংঘটিত হওয়ার পরে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।’
তিনি বলেন, “স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। সেই কমিটির রেজাল্টের ওপর ভিত্তি করে পুলিশের পক্ষ থেকে অপরাধ থাকলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমাদের মন্ত্রী মহোদয় বলেছেন, ‘যতটুকু অপরাধ করবে ঠিক ততটুকু শাস্তি দেয়া হবে।’ তার সঙ্গে সুর মিলিয়ে আমিও একই কথা বলতে চাই, যতটুকু অপরাধ করবে ঠিক ততটুকু শাস্তি দেয়া হবে।”
রাষ্ট্রপতির এপিএস আজিজুল হক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘তার যে ডিপার্টমেন্ট আছে সেটিও সরকারি বিধি-বিধান মোতাবেক ব্যবস্থা নেবে। আমি মনে করি জড়িত দুজন সরকারি ডিপার্টমেন্ট ও দুজনই ক্যাডার কর্মকর্তা। সেখানে দুজনের নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ রয়েছে। যার যার দায়িত্ব সেই সেই পালন করবে আমি মনে করি।’
সাধারণ মানুষকে তল্লাশির নামে পকেটে ইয়াবা ঢুকিয়ে দেয়া, মামলা ছাড়া ধরে এনে টাকা-পয়সা আদায়ের অভিযোগ রয়েছে পুলিশের বিরুদ্ধে। কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর ডিএমপির কোনো সদস্য অপরাধে জড়ালে কী উদ্যোগ নেবেন জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘অপরাধী পুলিশ হোক আর পুলিশের বাবা হোক, সে অপরাধী। পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
প্রেক্ষাপট
এডিসি হারুন গত ৯ সেপ্টেম্বর রাতে নারী পুলিশ কর্মকর্তা সানজিদার সঙ্গে শাহবাগ মোড়ের ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালে যান। ওই সময় সানজিদার স্বামী রাষ্ট্রপতির এপিএস মামুন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই নেতাকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে যান।
ওই সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে এডিসি হারুনের বাগবিতণ্ডা হয়। পরে সেখানে যোগ দেন এ দুই ছাত্রলীগ নেতাও। একপর্যায়ে এডিসি হারুন পুলিশ এনে তাদের শাহবাগ থানায় তুলে নিয়ে নির্যাতন করেন। পরে ওই দুইজনকে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এডিসি হারুনের নেতৃত্বে মারধর করা হয় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন নাঈম এবং বিজ্ঞানবিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদকে।
ওই ঘটনায় তদন্ত কমিটি করে ডিএমপি। এডিসি হারুনকে করা হয়েছে সাময়িক বরখাস্ত,তবে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ ও পুলিশ কর্মকর্তা সানজিদা পুরো ঘটনার দায় দিয়েছেন তার স্বামী মামুনকে। তিনি বলেছেন, তার স্বামীই প্রথমে হামলা চালান।
আরও পড়ুন:বিভিন্ন সময় সীমান্ত অতিক্রম করার অপরাধে মিয়ানমারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হওয়া ২৯ বাংলাদেশিকে দেশে ফেরত আনা হচ্ছে।
ওই দেশে দায়ের করা মামলায় সেখানে কারাভোগ শেষ হওয়ায় তাদের ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
টেকনাফ-২ বিজিবি উপঅধিনায়ক মেজর মাসুদ রানা সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, বিভিন্ন সময় মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) ও নৌ-বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হওয়া ২৯ বাংলাদেশি নাগরিকের কারাভোগ শেষ হয়েছে। বিজিবির উদ্যোগে মঙ্গলবার তাদের দেশে ফিরিয়ে আনা হবে।
মাসুদ রানা বলেন, ‘মঙ্গলবার সকালে মিয়ানমারের মংডুতে অধিনায়ক পর্যায়ে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে তাদের ফিরিয়ে আনা হবে। এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিস্তারিত জানানো হবে।’
গণতান্ত্রিক নির্বাচন ব্যবস্থায় বাধাদানকারীদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি নিয়ে পুলিশ মোটেও চিন্তিত নয় বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান।
ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সোমবার বেলা ১১টার দিকে মতবিনিময় সভায় এ মন্তব্য করেন নবনিযুক্ত কমিশনার।
যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি নিয়ে পুলিশে আতঙ্ক রয়েছে বলে কিছু সংবাদমাধ্যমে সম্প্রতি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এমন বাস্তবতায় ডিএমপি কমিশনারের কাছে জানতে চাওয়া হয়, ভিসা নীতি নিয়ে পুলিশের মধ্যে কোনো অস্থিরতা আছে কি না।
জবাবে ডিএমপির প্রধান বলেন, ‘একটি দেশের ভিসা নীতি কী হবে, সেটা নিয়ে আমরা মোটেও চিন্তিত নই।’
কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পাওয়ায় সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান হাবিবুর রহমান। তার প্রতি আস্থা রাখায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জানান ধন্যবাদ।
ডিএমপির দায়িত্বের বিষয়ে কমিশনার বলেন, ‘ঢাকার দুই কোটি ২৪ লাখ লোকের নিরাপত্তা দিয়ে থাকি। ঢাকা সবচেয়ে বড় মেগা শহর। এই শহরের নিরাপত্তা বড় চ্যালেঞ্জ। তারপরও যোগ্যতার সাথে এই শহরের সমস্যা নিরসনের চেষ্টা করছি।’
তিনি বলেন, ‘ট্র্যাডিশনাল ক্রাইম থেকে ঢাকা বদলে গেছে। অপরাধের নতুন সংস্করণ হিসেবে সাইবার ক্রাইম বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। ঢাকার এখনকার চিত্র ভিন্ন। যানজটের নগরী ঢাকার রাস্তার পরিমাণ অনেক কম।
‘কাজেই যানজট বড় সমস্যা। এ ছাড়া মাদক, সাইবার ক্রাইম ও নির্বাচনকে সামনে রেখে অস্ত্রের ঝনঝনানি নিয়ন্ত্রণ রাখাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ।’
ডিএমপির সক্ষমতা নিয়ে কমিশনার বলেন, ‘ডিএমপি অত্যন্ত দক্ষ। এমনকি বিদেশের সাথে তুলনা করলেও আমরা আমাদের পুলিশিংয়ে অনেক দক্ষতার পরিচয় দিয়েছি। এই মেগা শহরকে নিরাপদ শহর গড়ে তোলার জন্য সবার সহযোগিতা দরকার। এ জন্য বিট ও কমিউনিটি পুলিশিং ঠিক রেখে বেটার ঢাকা গড়ে তোলার চেষ্টা করব। যেকোনো প্রয়োজনে পুলিশ প্রস্তুত থাকবে।’
বিভিন্ন অপরাধে পুলিশের জড়িয়ে পড়া প্রসঙ্গে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘পুলিশ হোক, পুলিশের বাবা হোক, অপরাধী অপরাধীই। তার বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিয়ে থাকি, নেব।’
আরও পড়ুন:দেশের সব বিভাগে বৃষ্টির আভাস দিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, দেশজুড়ে কমতে পারে তাপমাত্রা।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি সোমবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এমন বার্তা দিয়েছে।
পূর্বাভাসে সিনপটিক অবস্থা নিয়ে বলা হয়, বিহার ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি বর্তমানে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমি বায়ুর অক্ষ পূর্ব উত্তর প্রদেশ, বিহার, সুস্পষ্ট লঘুচাপের কেন্দ্রস্থল ও বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে।
বৃষ্টিপাতের বিষয়ে পূর্বাভাসে জানানো হয়, রংপুর, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গা এবং রাজশাহী, ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে।
তাপমাত্রার বিষয়ে পূর্বাভাসে জানানো হয়, সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।
মন্তব্য