× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
The Prime Minister wants coordination of peoples representatives and bureaucrats in development
google_news print-icon

উন্নয়নে জনপ্রতিনিধি-আমলার সমন্বয় চান প্রধানমন্ত্রী

উন্নয়নে-জনপ্রতিনিধি-আমলার-সমন্বয়-চান-প্রধানমন্ত্রী
ডিসি সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: নিউজবাংলা
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের কিছু নির্বাচনি প্রতিশ্রুতি থাকে জনগণের কাছে। এই প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়ন, তবে অবশ্যই আমি এটা বলব, প্রতিশ্রুতি আসলে যথাযথ কি না, সেটা বিবেচনায় নিয়ে সে ধরনের পরিকল্পনা নেয়া।

দেশের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সংসদ সদস্যসহ স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

পরিবেশ-প্রতিবেশের ক্ষতি হবে- এমন প্রকল্প গ্রহণ না করার পরামর্শ দিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়নে অনিয়ম, দুর্নীতি হচ্ছে কি না তা তদারকিতেও ডিসিদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মঙ্গলবার সকালে জেলা প্রশাসক সম্মেলন-২০২২-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি এসব নির্দেশনা দেন। গণভবন প্রান্ত থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন সরকারপ্রধান।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের নির্বাচিত প্রতিনিধি, সংসদ সদস্য, জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা মেয়র, সিটি করপোরেশন- সবাইকে নিয়ে সমন্বিতভাবে উন্নয়ন পরিকল্পনা করি, প্রকল্প গ্রহণ করি, বাস্তবায়ন করি এবং বাস্তবায়ন যথাযথভাবে হচ্ছে কি না, সেটা যদি আমরা নজর দিই, আমাদের যে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছি, সেটাও যদি যথাযথভাবে আমরা বাস্তবায়ন করি, তাহলে অবশ্যই খুব বেশি দিন লাগবে না। আমরা উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে মর্যাদা পেয়েছি, উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে টিকে থেকে আমরা দেশকে উন্নত করতে পারব।’

চলমান উন্নয়ন প্রকল্প প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের যেসব প্রকল্প চলমান আছে, আমাদের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এসব প্রকল্প গ্রহণ করে এবং সে প্রকল্প বিভিন্ন এলাকায় বাস্তবায়ন হয়। কিন্তু এই প্রকল্পগুলো যথাযথভাবে গ্রহণ করা এবং তার প্রয়োজনীয়তা সাপেক্ষে এবং সেগুলো বাস্তবায়নে কোনো অনিয়ম হচ্ছে কি না, দুর্নীতি হচ্ছে কি না বা মানসম্মত হচ্ছে কি না, সে বিষয়ের ওপর নজরদারির ব্যবস্থা আপনাদের অবশ্যই নিতে হবে।’

জনপ্রতিনিধিরা যেসব নির্বাচনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তা বাস্তবায়নে আমলাদের আন্তরিক থাকতে হবে বলেও জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘তাদের কিছু নির্বাচনি প্রতিশ্রুতি থাকে জনগণের কাছে। এই প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়ন, তবে অবশ্যই আমি এটা বলব, প্রতিশ্রুতি আসলে যথাযথ কি না, সেটা বিবেচনায় নিয়ে সেই ধরনের পরিকল্পনা নেয়া।

‘অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প পরিহার করতে হবে। আর প্রকল্প যেটা নিতে হবে সেটা যেন যথাযথ ও মানুষের সেবামূলক হয় এবং মানুষের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে অবদান রাখতে পারে, সেদিকে লক্ষ্য রেখে কিন্তু করতে হবে। একটা কিছু করার জন্য করা, সেটা যেন না হয়। সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে।’

জেলা-উপজেলা পর্যায়ে মাস্টারপ্ল্যান তৈরির ওপর জোর দিয়েছেন সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, ‘যদি আমরা পরিকল্পিতভাবে কাজ করি, তাহলে আমাদের কোনো সমস্যা থাকে না। একটা জেলার অধীন উপজেলা, একেবারে ওয়ার্ড পর্যন্ত উন্নয়নটা- এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক কিন্তু বিরাট অবদান রাখতে পারেন। সে ক্ষেত্রে সংসদ থেকে শুরু করে সব জনপ্রতিনিধিকে নিয়ে বসে আলোচনা করে কাজ করা যায়, সেটা আরও বেশি কার্যকর হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘উন্নয়নের নামে পরিবেশ যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, প্রতিবেশ যেন নষ্ট না হয়, জীববৈচিত্র্য যেন নষ্ট না হয়, সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে।’

জেলা প্রশাসকদের অর্পিত দায়িত্ব পালনে আন্তরিক হওয়ার তাগিদ দিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমি সরকারে আসার পর সবার বেতন-ভাতা বাড়িয়ে দিয়েছি, সেটা মনে রেখেই আপনারা আপনাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবেন- সেটাই আমি আশা করি।’

এ প্রসঙ্গে জাতির পিতার আদর্শকে সামনে এনে শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ ‍মুজিবুর রহমান নিজেকে একজন জনগণের খাদেম বা সেবক হিসেবে ঘোষণা দিয়েছিলেন। আমিও তার পদাঙ্ক অনুসরণ করে নিজেকে জনগণের একজন সেবক মনে করি। ক্ষমতায় আসা, প্রধানমন্ত্রী হওয়া মানে জনগণের জন্য কাজ করার একটা সুযোগ পাওয়া। যে লক্ষ্য স্থির করেছি, তা বাস্তবায়নে আপনাদের সহযোগিতা একান্তভাবে প্রয়োজন।’

বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উন্নীত হওয়ার বিষয়টি সামনে এনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দায়িত্ব অনেক বেড়ে গেছে এবং আমাদের সামনের দিকে অনেক এগিয়ে যেতে হবে। কারণ বাংলাদেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়তে হবে।’

দেশের অগ্রযাত্রায় করোনাভাইরাস মহামারি প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা প্রতিবছর জেলা প্রশাসক সম্মেলন করতাম। কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারি আমাদের এমন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে যে পর পর দুবার জেলা প্রশাসক সম্মেলন করা সম্ভব হয়নি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় রূপকল্প ২০২১ বাস্তবায়ন করেছি। এখন আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে ২০৪১ বাস্তবায়ন করা।’

সামষ্টিক অর্থনীতির সব সূচকে বাংলাদেশ উন্নতি করেছেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের এই সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে, বাংলাদেশের একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না, দরিদ্র থাকবে না, ভূমিহীন থাকবে না।’

সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে

করোনাভাইরাস মহামারির শঙ্কা নিয়ে জেলা প্রশাসক সম্মেলনেও সতর্ক করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাসের একটা নতুন ভ্যারিয়েন্ট এসে গেছে। এটা আরও বেশি দ্রুত ছড়াচ্ছে। এ বিষয়ে সবাইকে আরও সচেতন হতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।’

ডিসিদের প্রতি নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, ‘জেলা প্রশাসকদের বলব, স্ব-স্ব প্রশাসনে নির্দেশ দিয়ে দেবেন, প্রত্যেকে যেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে। কারণ এই ভ্যারিয়েন্টটা আসলে এমনি মনে হয় খুব বেশি ক্ষতি করবে না। আসলে এটা অনেক ক্ষতি করতে পারে।’

ইতিমধ্যে মৃতের সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এটা যেন আর না বাড়তে পারে, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।’

বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের কেউ ভিক্ষা করবে, এটা লজ্জার

বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ, গণহত্যার শিকার হওয়া কোনো পরিবারের সদস্য ভিক্ষা করে খাবে তা স্বাধীন দেশের জন্য লজ্জার বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘সব থেকে আগে এই কাজটি করতে হবে। আমি আর কখনও দেখতে চাই না কোনাে শহীদ পরিবার, জাতির পিতার চিঠি যার হাতে সে ভিক্ষা করে খাবে। এটা যেন না হয়। আমি সবাইকে আহ্বান জানাব- এ বিষয়টি আপনারা ভালোভাবে দেখবেন।’

‘মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের কেউ ভিক্ষা করবে, এটা আমাদের জন্য মোটেও সম্মানজনক নয়’ উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘আপনাদের এটাও দেখতে হবে, কোথাও কোনো জায়গায় কোনো মুক্তিযোদ্ধা পরিবার, শহীদ পরিবার, বা গণহত্যার শিকার পরিবারের কেউ এ ধরনের দুর্ভোগ পোহাচ্ছে কি না। কারণ এটা অন্তত আমার জন্য খুবই লজ্জাজনক, আমি মনে করি। জানি না, অন্যরা কী ভাববে। কিন্তু আমি নিজে মনে করি, এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক।’

ঝরে পড়া ঠেকাতে স্কুল ফিডিং

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ঝরে পড়া ঠেকাতে স্কুল ফিডিং ব্যবস্থার ওপরে জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আর এ ক্ষেত্রে সমন্বিত উদ্যোগ নিয়ে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

সরকারপ্রধান বলেন, ‘কারও কাছে হাত পেতে অনুদান আর নিতে চাই না। কিন্তু আমাদের যদি একটু উদ্যোগ নেয়া যায়, স্বতঃপ্রণোদিত স্কুল ফিডিং কর্মসূচি আমরা করতে পারি।’

পরীক্ষামূলকভাবে এ ব্যবস্থায় সফলতা এসেছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তবে এটা নির্ভর করে আমাদের প্রশাসনে যারা আছেন, অর্থাৎ জেলা বা উপজেলা বা ইউনিয়নে যারা আছেন, বা আমাদের জনপ্রতিনিধিরা, স্থানীয় বিত্তশালীরা সমন্বিতভাবে কিন্তু কাজটি করা যেতে পারে। এই উদ্যোগ নেয়ার ফলে আমরা দেখেছি, ঝরে পড়াটা কমে যায়।’

উন্নয়নে যোগাযোগের কোনো বিকল্প নেই

অর্থনৈতিক উন্নয়নে সরকারের নেয়া টেকসই মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হলে দেশের অর্থনীতিতে যথেষ্ট অবদান রাখবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘যে কোনো উন্নয়নের ক্ষেত্রে যোগাযোগ ও বিদ্যুৎ অত্যন্ত গুরুত্ব বহন করে। আজ আমরা শতভাগ বিদ্যুৎ দিতে সক্ষম হয়েছি। যোগাযোগের ক্ষেত্রে ব্যাপক প্রকল্প হাতে নিয়েছি। রাজধানী যানজট মুক্ত করতে বেশকিছু প্রকল্প হাতে নিয়েছি। তা ছাড়া কর্ণফুলী টানেল, হয়তো এই অঞ্চলে আমরাই প্রথম তৈরি করছি। কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। আশা করি খুব তাড়াতাড়ি শেষ হবে। পাশাপাশি রাজধানীতে মেট্রোরেল পরীক্ষামূলকভাবে চালু হয়েছে। বাকি কাজগুলোও আমরা করতে পারব।’

উত্তরবঙ্গের সঙ্গে আরও দ্রুত যোগাযোগে আলাদা রেললাইন নির্মাণ করা হচ্ছে বলে জানান সরকারপ্রধান।

তিনি বলেন, ‘আমাদের পদ্মা সেতু নির্মাণও প্রায় শেষ পর্যায়ে। যার ফলে আমাদের দক্ষিণাঞ্চলে যোগাযোগ হবে। রাজধানীর সঙ্গে উত্তরাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলের সংযোগ করা, সেই ব্যবস্থা আমরা করে দিচ্ছি। বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। তাই সারা দেশে সেতু ও সড়ক নির্মাণ করে আমরা যোগাযোগব্যবস্থাকে উন্নত করছি।’

বিশ্বব্যাংক অলাভজনক বলায় বিএনপি দেশে রেল বন্ধ করে দিতে চেয়েছিল জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি সরকারে এসে আবার রেল নিয়ে আলাদা মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করি। আলাদা মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করে রেলকে আলাদাভাবে গুরুত্ব দিয়ে, বাজেট দিয়ে রেলপথ উন্নয়নের ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি আমরা।’

একই সঙ্গে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটে পর দেশে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সংখ্যা আরও বাড়ানো হচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন আমরা কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মর্যাদায় করে দেব। আমাদের সৈয়দপুর বিমানবন্দরকে আঞ্চলিক বিমানবন্দর হিসেবে উন্নত করব।’

গ্রামে নিশ্চিত করতে হবে নাগরিক সেবা

জেলা প্রশাসকদের প্রতি নির্দেশনা দিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আপনারা কাজ করেন মাঠপর্যায়ে। প্রতিটি জেলার দায়িত্ব আপনাদের। গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর দারিদ্র্য দূরীকরণ এবং তাদের স্বাবলম্বী করার জন্য আমাদের যে ব্যাপক পল্লী উন্নয়ন কাজ আমরা নিয়েছি, সেগুলোকে সব থেকে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছি। কারণ দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে হলে আমাদের তৃণমূলের মানুষের জীবনমান উন্নত করতে হবে। সেখানে আমাদের সব থেকে বেশি উন্নয়ন করতে হবে। সেটাই হচ্ছে আমি সব সময় বিশ্বাস করি।’

প্রতিটি ইউনিয়নের সঙ্গে ওয়ার্ড, ওয়ার্ড থেকে গ্রাম পর্যায়ে উন্নয়নের জন্য রাস্তা নির্মাণ থেকে শুরু করে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করে দেয়ার কথাও জানান শেখ হাসিনা।

সব ধরনের নাগরিক সুবিধা যেন প্রান্তিক মানুষ পেতে পারে সেজন্য সরকার ব্যবস্থা নিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এই কাজগুলো যাতে সঠিকভাবে চলে, সেটা দেখতে হবে আমাদের জেলা প্রশাসনকে। কারণ পল্লী উন্নয়ন আমরা সব থেকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকি। বাজেট যেটা আমরা করে দিচ্ছি সেখানেও কিন্তু আমরা জেলা ভিত্তিক বাজেট করে দিচ্ছি। প্রতিটি জেলার কী কী চাহিদা, সেটাকে আমরা বিশেষ বিবেচনায় নিয়ে থাকি। তা ছাড়া কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমার জেন্ডারভিত্তিক বাজেটও তৈরি করছি।’

গ্রামে সব নাগরিক ‍সুবিধা পৌঁছে দেয়া সরকারের অঙ্গীকার জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাতে শহরমুখী হওয়ার প্রবণতা কমে যাবে। গ্রামে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। একেকটা জেলার সার্বিক উন্নয়ন করা আপনাদের (জেলা প্রশাসক) কর্তব্য বলে আমি মনে করি।’

সবাইকে ই-টেন্ডারে আসতে হবে

ই-টেন্ডার বাস্তবায়ন করা যুগান্তকারী উদ্যোগ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন আর টেন্ডার বাক্স নিয়ে মারামারি, কাটাকাটি, গোলাগুলি, বোমাবাজি হচ্ছে না- এটাই বড় কথা। এবং এখনও যদি কোনো মন্ত্রণালয় বাকি থাকে, তাদেরকে আমি বলব, এই ই-টেন্ডারিং পদ্ধতি গ্রহণ করতে।’

জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘মাঠ পর্যায়ের সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে বিভিন্ন উদ্ভাবনী উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসকদের সক্রিয় ভূমিকা অব্যাহত রাখতে হবে। সরকারি সেবা নিতে এসে সাধারণ মানুষ যেন কোনোভাবে হয়রানির শিকার না হয়, সে বিষয়ে সবাইকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে।’

সুশাসন সুসংহত করতে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদেক্ষপ বাস্তবায়ন ও দুর্নীতি প্রতিরোধে জেলা প্রশাসকদের আরও আন্তরিকভাবে কাজ করার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘মানুষের কল্যাণে আপনাদের সব ধরনের ভয়-ভীতি, প্রলোভনের ঊর্ধ্বে থেকে আইনানুগ দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানাচ্ছি।’

আরও পড়ুন:
জনসেবায় ডিসিদের প্রধানমন্ত্রীর ২৪ নির্দেশনা
২৫ কোটি টাকা সাশ্রয়ে প্রধানমন্ত্রীর উচ্ছ্বাস
গৃহহীন আছে কি না খুঁজে বের করুন: প্রধানমন্ত্রী
দুর্ঘটনা রোধে ট্রাফিক নিয়ম পড়ানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
নিন্দুকের ঘেউ ঘেউয়ে কিছু যায়-আসে না: প্রধানমন্ত্রী

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
Another 120 people from Libya have been brought back home

লিবিয়া থেকে আরও ১২৩ জনকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে

লিবিয়া থেকে আরও ১২৩ জনকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে

লিবিয়া থেকে স্বেচ্ছায় দেশে ফেরার আগ্রহ প্রকাশ করা আরও ১২৩ অনিবন্ধিত বাংলাদেশি নাগরিককে গতকাল বৃহস্পতিবার দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এসব বাংলাদেশির সবাই বুরাক এয়ারের একটি বিশেষ চার্টার্ড ফ্লাইটে (ইউজেড ০২২২) সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান।

উল্লেখ্য, প্রত্যাগতদের অধিকাংশই মানবপাচারের শিকার। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে, ত্রিপোলিতে বাংলাদেশ দূতাবাস, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) সমন্বিত উদ্যোগে প্রত্যাবাসন কার্যক্রমটি বাস্তবায়িত হয়েছে।

দেশে ফেরার পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং আইওএম-এর প্রতিনিধিরা তাদের স্বাগত জানান ।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অধিকাংশ বাংলাদেশি সমুদ্রপথে ইউরোপে পৌঁছানোর উদ্দেশে অনিবন্ধিতভাবে লিবিয়ায় প্রবেশ করেছিলেন। লিবিয়ায় অবস্থানকালে তাদের অনেকেই মানব পাচারকারীদের দ্বারা অপহরণ ও নির্যাতনের শিকার হন।

সরকারি কর্মকর্তারা এসব অভিবাসীকে পরামর্শ দেন, যেন তারা অন্যদের এই ধরনের বিপজ্জনক ও অবৈধ পথে বিদেশ গমনের ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন করেন এবং ভবিষ্যতে এমন যাত্রা থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেন।

পুনর্বাসন সহায়তার অংশ হিসেবে আইওএম প্রত্যেককে নগদ ৬ হাজার টাকা, জরুরি খাদ্য সহায়তা, প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা এবং প্রয়োজনে অস্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা করেছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, বর্তমানে লিবিয়ার বিভিন্ন বন্দিশিবিরে আটক থাকা অন্যান্য বাংলাদেশির নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের কাজ চলছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ত্রিপোলিতে বাংলাদেশ দূতাবাস, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং আইওএম যৌথভাবে এ বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছে।

মন্তব্য

তদন্ত কমিশনের সংবাদ সম্মেলন

গুমের শিকার ব‍্যক্তিদের চার ধরনের পরিণতি হতো

গুমের শিকার ব‍্যক্তিদের চার ধরনের পরিণতি হতো

রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই গুম করা হতো বলে জানিয়েছেন গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিটির সভাপতি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী। গুমের শিকার ব্যক্তিদের সম্ভাব্য ৪ ধরনের পরিণতি হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানে সংবাদ সম্মেলনে গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিটির সভাপতি এসব তথ্য জানান। কমিশনে দাখিল করা অভিযোগ বিশ্লেষণে এসব তথ্য দেন তিনি।

তিনি বলেন, গুমের শিকার ব্যক্তিদের সম্ভাব্য যে ৪ ধরনের পরিণতি হয়েছে, তা হলো: ১. গুমের শিকার ব্যক্তিকে হত্যা করা। ২. বিচারের আগেই মিডিয়ার সামনে উপস্থাপন করে জঙ্গি তকমা দিয়ে বাংলাদেশেই বিচারাধীন বা নতুন ফৌজদারি মামলায় গ্রেফতার দেখানো।৩. তাকে সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাঠিয়ে সে দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের মাধ্যমে গ্রেপ্তারের ব্যবস্থা করা। ৪. ভাগ্য সুপ্রসন্ন হলে, অল্পসংখ্যক ক্ষেত্রে মামলা না দিয়ে ছেড়ে দেওয়া।

গুম কমিশনের ২য় অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন গত ৪ জুন প্রধান উপদেষ্টা বরাবর জমা দেওয়ার পর আজ দুপুরে রাজধানীর গুলশানে গুম সংক্রান্ত কমিশন অফ ইনকোয়ারির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মইনুল ইসলাম চৌধুরী এ সব কথা বলেন।

গুম কমিশনের সভাপতি বলেন, বিগত কর্তৃত্ববাদী সরকারের আমলে বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি এবং ভিন্ন মতাবলম্বীদের বিরুদ্ধে পদ্ধতিগত দমননীতির অংশ হিসেবে গুমকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল।

তিনি বলেন, ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পরেও বহু অপরাধী ও তাদের শুভাকাঙ্ক্ষীরা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার কেন্দ্রে থাকায় অনেক জোরালো প্রমাণ ও নিদর্শন ধ্বংস, অনেক ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক অসহযোগিতা, সাক্ষীদের ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ নানারকম ভীতিকর ও আতঙ্কজনক পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। তবুও বহু ভুক্তভোগী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাদের অভিযোগ ও অভিজ্ঞতা জানিয়েছেন। তারা দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বিস্তারিতভাবে সে কাহিনি তুলে ধরেছেন।

গুম সংক্রান্ত কমিশন অফ ইনকোয়ারির সভাপতি আরো বলেন, বিগত সরকারের শাসনামলে গুম একটি সুশৃঙ্খল ও প্রাতিষ্ঠানিক রূপে ‘জঙ্গিবাদবিরোধী’ অভিযানের ছায়াতলে ইসলামি উগ্রবাদের হুমকিকে ব্যবহার করে রাজনৈতিক ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করা, আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন ও শাসন দীর্ঘায়িত করার উদ্দেশে পরিচালিত হয়েছিল। ভুক্তভোগীদের মধ্যে ছিলেন- মেধাবী শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক কর্মী ও সাংবাদিক থেকে সাধারণ জনগণ।

মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, এ প্রক্রিয়ায় তারা ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থাকে অস্ত্র বানিয়েছিল। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও নিরাপত্তা বাহিনীকে রাজনৈতিক প্রভাবাধীন করে এবং নির্যাতন ও গোপন আটকের সংস্কৃতি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে চালু করেছিল। এমনকি সাধারণ নাগরিকদের বেআইনি পন্থায় বারবার ভারতীয় বাহিনীর হাতেও তুলে দেওয়া হয়েছিল।

কমিশন অফ ইনকোয়ারি অ্যাক্টের ধারা ১০ এ(১) ও (২) অনুযায়ী কমিশনে দাখিলকৃত ১৩১টি অভিযোগের বিষয়ে আইন মোতাবেক জিডি রেকর্ডপূর্বক ভিকটিমদের সন্ধান ও উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য পুলিশ মহাপরিদর্শক বরাবর প্রেরণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, গোপন আটক কেন্দ্রের অস্তিত্ব এখন আর অস্বীকার করা যায় না। সকল ক্ষেত্রেই ভুক্তভোগীরা প্রায় একই ধরনের প্রক্রিয়ার শিকার হয়েছেন। পদ্ধতিগত নির্যাতন, সন্ত্রাসী হিসেবে প্রচার, একই ধরনের আইন অনুযায়ী অভিযোগ দায়ের ও একই ধরনের ভাষায় বর্ণনা। বিভিন্ন পটভূমি থেকে আসা ব্যক্তিদের অভিজ্ঞতার এই সামঞ্জস্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যকে স্পষ্ট করে।

তিনি বলেন, প্রতিবেদনে ১৯ শতাংশ ফেরত না আসা ১২ জন ভিকটিমের বিষয়ে অগ্রগতি তুলে ধরেছি, যাদের বিষয়ে প্রাথমিকভাবে অনুসন্ধান সম্পন্ন হয়েছে। তাদের গুমের জন্য কারা দায়ী, তা প্রাথমিকভাবে আমরা শনাক্ত করতে পেরেছি। চলমান অনুসন্ধানের স্বার্থে এই মুহূর্তে এর চেয়ে বেশি প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে না।

ফিরে না আসা ভিকটিমদের বিষয়ে অপরাধী ও গুমের অপরাধ সংঘটনের স্থানসহ নানাবিধ বিষয়ে তথ্যের ঘাটতি বা পুরোনো কললিস্ট না পাওয়াসহ নানারকম বিলম্বঘটিত প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হলেও কমিশন আন্তরিকতার সঙ্গে অনুসন্ধান কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।

প্রতিবেদনে কমিশন সন্ত্রাসবিরোধী যে সব মামলায় অপব্যবহার হয়েছে, তা ন্যায় বিচারের মানদণ্ড বিবেচনায় নিয়ে দ্রুত নিষ্পত্তির ব্যবস্থা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতনের সঙ্গে আলোচনার প্রেক্ষিতে মালয়েশিয়া-ইন্দোনেশিয়ার মতো উপযুক্ত কাউন্টার টেরোরিজম মেথড বের করার জন্য দুটি সুপারিশ করা হয়।

এ সময় গুম সংক্রান্ত কমিশন অফ ইনকোয়ারির সদস্য অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত বিচারক মো. ফরিদ আহমেদ শিবলী, মানবাধিকার কর্মী নূর খান, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কমিশনের সদস্য নাবিলা ইদ্রিস, মানবাধিকার কর্মী ও কমিশনের সদস্য সাজ্জাদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The accused in the murder case

আদালত থেকে পালাল হত্যা মামলার আসামি

আদালত থেকে পালাল হত্যা মামলার আসামি

ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের এজলাস থেকে হাজতখানায় নেওয়ার পথে পুলিশকে মারধর করে পালিয়েছেন হত্যা মামলার এক আসামি।

আসামি শরিফুল ইসলাম (২২) দিনাজপুর জেলার নবাবগঞ্জ থানার হরিপুর গ্রামের মৃত শফিক আহম্মেদের ছেলে। তিনি রাজধানীর খিলগাঁও থানার জিসান হোসেন (১৪) হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি। মামলাটি বর্তমানে সাক্ষ্যগ্রহণের পর্যায়ে রয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১ টার পর সংশ্লিষ্ট আদালতের দায়িত্বে থাকা পুলিশ কনস্টেবল শহিদুল্লাহকে মারধর করে ছুটে পালিয়ে যান আসামি শরিফুল। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের হাজতখানার ইনচার্জ এসআই রিপন।

তিনি বলেন, আসামিকে আদালত থেকে হাজতখানায় নেওয়ার সময় পুলিশকে আঘাত করে তিনি পালিয়ে যায় আসামি শহিদুল।

ডিএমপির প্রসিকিশন বিভাগের এডিসি মাইন উদ্দিন বলেন, আসামির হাতে হাতকড়া পরানো ছিল। তিনি ধাতব কিছু দিয়ে হাতকড়া ঢিলা করে কৌশলে খুলে ফেলে। পরে পুলিশ কনস্টেবলের হাতে আঘাত করে পালিয়ে যায়।

তিনি বলেন, আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি। কোতোয়ালি থানাকে জানানো হয়েছে আসামিকে গ্রেপ্তারের জন্য। তার বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলমান।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The 5th Annual Senate Meeting in the BUP

বিইউপিতে ১৭তম বার্ষিক সিনেট সভা অনুষ্ঠিত

বিইউপিতে ১৭তম বার্ষিক সিনেট সভা অনুষ্ঠিত

১৯ জুন ২০২৫ তারিখে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি) এর ১৭তম বার্ষিক সিনেট সভা বিইউপির বিজয় অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিইউপির উপাচার্য ও সিনেট চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মোঃ মাহ্বুব-উল আলম, বিএসপি, এনডিসি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি, এমফিল, পিএইচডি।

সভার শুরুতে বিইউপির উপাচার্য ও সিনেট চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মোঃ মাহ্বুব-উল আলম বিদায়ী সদস্যদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং নবনিযুক্ত সদস্যদের স্বাগত জানান। পরে বিইউপির ট্রেজারার এয়ার কমডোর মোঃ রেজা এমদাদ খান, জিইউপি, বিইউপি, এনডিসি, পিএসসি, জিডি(পি), ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট ১৩৪ কোটি ৮ লক্ষ টাকা ও ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের ১৩৪ কোটি ৯৭ লক্ষ টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন।

সিনেট সদস্যগণ ট্রেজারার এর বক্তৃতার ওপর আলোচনা করেন এবং সর্বসম্মতিক্রমে বাজেট প্রস্তাব অনুমোদন করেন। এছাড়াও সিনেট সভায় ১৭তম বার্ষিক প্রতিবেদন উপস্থাপিত ও সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদিত হয়। ১৭তম বার্ষিক সিনেট সভাটি সার্বিকভাবে সঞ্চালনা করেন বিইউপির রেজিস্ট্রার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ রাব্বি আহসান, এনডিসি, পিএসসি।

সভায় সিনেট চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মাহ্বুব তাঁর বক্তব্যে বলেন, বিইউপি বয়সে নবীন হলেও এর শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও গবেষকগণের বিভিন্ন প্রতিযোগিতা, সেমিনার, ওয়ার্কশপ ও গবেষণা ভিত্তিক কার্যক্রমের অর্জনসমূহ জাতীয় আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সুনাম বয়ে আনছে। যুগোপযোগী শিক্ষা প্রদান, গবেষণা ও উদ্ভাবনী কার্যক্রমে বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নিত হওয়ার লক্ষ্যে অত্র বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক একটি সুনির্দিষ্ট Academic Strategic Plan –২০৫০ প্রণয়ন করা হয়েছে।

Academic Strategic Plan এর মাধ্যমে পাঠ্যক্রমের আধুনিক মান নির্ধারণ, Outcome Based Education (OBE) কারিকুলাম প্রনয়ণ, গবেষণা, উদ্ভাবন, প্রকাশনা ও গবেষণা সহায়তার সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

মাননীয় উপাচার্য সকলকে অবহিত করেন যে বিইউপি’র গবেষণাভিত্তিক অগ্রযাত্রায় BUP Research Centre (BRC) অংঙ্গীভূত ফ্যাকাল্টি ও অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠানসমূহে গবেষণা, উদ্ভাবন ও পরামর্শমূলক কার্যক্রমে গতিশীলতা আনার লক্ষ্যে কাজ করছে। 'Inspiring Innovation for Advancing Knowledge' শ্লোগানকে ধারণ করে, BUP Research Centre, গবেষকদের মানসম্মত গবেষণায় উৎসাহ দিচ্ছে এবং শিল্প-প্রতিষ্ঠান ও একাডেমিয়ার মধ্যে সংযোগ স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

এছাড়াও তিনি উল্লেখ করেন, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গবেষকদের গবেষণালব্ধ জ্ঞান প্রসারের উদ্দেশ্যে বিইউপি থেকে ৫টি জার্নাল প্রতিবছর নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে যা সকলের মাঝে সমাদৃত। সিনেট চেয়ারম্যান আরও উল্লেখ করেন যে, শিক্ষার্থীদের শিক্ষার পাশাপাশি একজন সুশৃঙ্খল, নৈতিকতা সম্পন্ন সু-নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বিইউপি বদ্ধপরিকর এবং সে লক্ষ্যে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের চারিত্রিক গুণাবলি ও আত্মিক উন্নয়নের লক্ষ্যে সকল প্রোগ্রামের পাঠ্যক্রমে নৈতিক শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে Need Based Education - কেও গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা হচ্ছে। তিনি বলেন যে, আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষার্থীদের মানসম্মত কারিকুলাম ও শিক্ষা পরিবেশের পাশাপাশি বৈচিত্র‍্যময় সাংস্কৃতিক সান্নিধ্যের গুরুত্বকে সামনে রেখে বিইউপি'তে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া, নবপ্রজন্মের মধ্যে নৈতিক মূল্যবোধ, সততা, চরিত্র গঠন ও সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা এবং দেশপ্রেম জাগ্রত করতে পড়াশোনার পাশাপাশি বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য, জাতীয় দিবসগুলোর তাৎপর্য ও মাহাত্ম্য তুলে ধরে বিইউপি’র বিভিন্ন আলোচনা সভা, সিম্পোজিয়াম, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজনের কথা উল্লেখ করেন।

এই সিনেট সভায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ সশস্ত্রবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং বিইউপির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
BNP does not support the electoral college in the presidential election

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ইলেকট্রোরাল কলেজব্যবস্থা সমর্থন করে না বিএনপি

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ইলেকট্রোরাল কলেজব্যবস্থা সমর্থন করে না বিএনপি

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রস্তাবিত ইলেকট্রোরাল কলেজব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করেছে বিএনপি। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘জনগণের ভোটাধিকার হরণে এই ব্যবস্থাকে আরেকটি ছলচাতুরী হিসেবে দেখা হচ্ছে।’

গতকাল বুধবার বিকালে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য কমিশনের যে প্রস্তাব তাতে একটা ইলেক্টোরাল কলেজ করা হবে। এবং প্রায় ওনাদের ভাষ্য অনুযায়ী ৭০ হাজারের মতো ভোটার থাকবে। ইউনিয়ন পর্যায় থেকে শুরু করে স্থানীয় সরকার পর্যায়ের প্রতিনিধিগণ এখানে ভোটার হবেন। এবং রাষ্ট্রপতিকে সৎ, দক্ষ ও অভিজ্ঞ একজন ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেওয়ার জন্য ওখানে প্রস্তাব করা হয়েছে।

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠনের প্রস্তাবে আগের মতোই একমত নয় বিএনপি।

এই কাউন্সিলের জবাবদিহি না থাকায় সমর্থন করে না বিএনপি। এই কাউন্সিলে আরেকটি ভারসাম্যহীন অবস্থা তৈরি হবে বলে মনে করি আমরা।’

স্বাধীন বিচারব্যবস্থার দাবি জানিয়ে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘স্বাধীন বিচারব্যবস্থা হলে ভারসাম্যহীনতা দূর হবে, ফ্যাসিবাদ দমন করবে। প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য, অন্য সাংবিধানিক পদ, সংস্থা স্বাধীন করতে পারলে সমস্যা থাকবে না।’

বিএনপি মনে করে সুশাসন নিশ্চিত করতে ন্যায়পাল করা যেতে পারে। বিদ্যমান ব্যবস্থা বজায় রেখে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ হলে তাদের যোগ করা যেতে পারে, বলেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন আইন সংশোধন করা যেতে পারে। জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। বিএনপি মনে করে, দুদক ও মানবাধিকার কমিশনের মতো প্রতিষ্ঠান শক্তিশালী করতে বিদ্যমান আইনগুলো সংস্কারের প্রয়োজন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Bhawal Chandipur Agrakhola road is like a death

ভাওয়াল-চন্ডিপুর-অগ্রখোলা সড়ক যেন মরণফাঁদ

চরম দুর্ভোগে এলাকাবাসী   
ভাওয়াল-চন্ডিপুর-অগ্রখোলা সড়ক যেন মরণফাঁদ

কেরানীগঞ্জের শাক্তা ও তারানগর ইউনিয়নের বুক চিরে চলা ভাওয়াল-চন্ডিপুর-অগ্রখোলা সড়কের বেহাল দশায় নিত্যদিন ভোগান্তিতে পড়ছে হাজারো মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে সড়কজুড়ে এখন গর্ত আর ধুলাবালি। সামান্য বৃষ্টিতে কাদায় যানবাহন আটকে যায়, আর শুকনো মৌসুমে উড়ে ধূলোর ঝড়।

রাস্তাটির বেহাল অবস্থার কারণে প্রায় প্রতিদিনই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন পথচারী ও যানবাহনের চালকরা। ছোট-বড় গর্তে হোঁচট খেয়ে পড়ে আহত হন অনেক পথচারী। অন্যদিকে, যানবাহন চলাচলের অযোগ্য এই সড়কে প্রতিনিয়তই নষ্ট হয়ে পড়ে ভ্যান, অটোরিকশা, ট্রাকসহ বিভিন্ন গাড়ি। আকিজ ফাউন্ডেশন স্কুল, মেকাইল মাদ্রাসা ও অগ্রখোলা কমিউনিটি হাসপাতালের সামনের অবস্থা এতটাই খারাপ যে মাঝে মাঝেই উল্টে যায় যাত্রী বোঝাই যানবাহন ।

সড়কের করুণ অবস্থার কারণে অনেক চালক ও পথচারী এখন পাশের বেলনা, কলাতিয়া ও নয়াবাজার হয়ে বিকল্প রাস্তায় যাতায়াত করছেন। এতে সময়, অর্থ ও দুর্ভোগ বাড়ছে।

এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন কেরানীগঞ্জ ছাড়াও নবাবগঞ্জ, দোহার, সিরাজদিখানসহ দক্ষিণবঙ্গের হাজার হাজার মানুষ মোহাম্মদপুর হয়ে রাজধানীতে প্রবেশ করে। অথচ বছরের পর বছর ধরে অবহেলায় পড়ে আছে সড়কটি।

স্থানীয় বাসিন্দা কবির হোসেন বলেন, ‘রাস্তাটার অবস্থা এমন যে, অটোরিকশা সিএনজিতে ওঠা মানেই কোমর ভাঙা। মাঝে মাঝেই যানবাহন পড়ে মানুষ আহত হয়। স্কুলের বাচ্চারা পর্যন্ত ভয়ে এই রাস্তায় যেতে চায় না। কোন এমপি-মন্ত্রী একবার এই রাস্তা দিয়ে গেলে বুঝত কষ্টটা কেমন।

একই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পণ্যবাহী ট্রাকচালক রাকিব হাওলাদার। তিনি বলেন, একবার গর্তে পড়লে গাড়ির যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে যায়। ট্রাকে থাকা জিনিসপত্র পড়ে যায়, এভাবে থাকলে এই রাস্তা দিয়ে আর চলাচল করা সম্ভব নয়। এটি দ্রুত সংস্কার করা উচিত।

এ বিষয়ে কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ বলেন, সড়কটি ইতোমধ্যে ডিপিপিতে অনুমোদন পেয়েছে। তাই এখন সংস্কার করা হচ্ছেনা। বছরের শেষ দিকে ২০ ফুট প্রশস্ত করে এবং আরও শক্তিশালী করে কাজ শুরু হবে। তখন রাস্তাটি আরো টেকসই হবে।

এদিকে এলাকাবাসীর দাবি, সংস্কার কাজ শুরুর আগ পর্যন্ত অন্তত গর্ত ভরাট করে সাময়িক চলাচলের উপযোগী করে তুলতে হবে। নইলে প্রতিদিন দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Twenty four bucks the family of four runs a family of four

আড়াইশ টাকা আয়ে চারজনের সংসার চালায় কিশোর তোফাজ্জল!

আড়াইশ টাকা আয়ে চারজনের সংসার চালায় কিশোর তোফাজ্জল!

একটা ভাঙাচোরা বাইসাইকেলই তার ভরসা। এ সাইকেল চালিয়ে ১৫ কিলোমিটার দুরের দুর্গম খাসিয়া পল্লীতে কাজ করে দুই-আড়াইশ টাকা রোজগার করে কিশোর তোফাজ্জল (১৪)। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী ৯নং ইসলামপুর ইউনিয়নের কাঁঠালকান্দী গ্রামের আলী আহমেদ (৬৫) এর ছেলে তোফাজ্জল হোসেন। পরিবারে সে একমাত্র উপার্জনক্ষম। বাবা হার্টের রোগী, বোন আয়েশা খাতুন (২৫) মানসিক ভারসাম্যহীন আর বয়োবৃদ্ধ দাদী সমিতা বিবি (৮২) দীর্ঘদিন ধরে শয্যাশায়ী।

তোফাজ্জল কান্নাজড়িত কন্ঠে এ প্রতিবেদককে বলেন, প্রতিদিনি সকালে ভাঙাচোরা একটি সাইকেল নিয়ে ১৫ কিলোমিটার দুরের খাসিয়া পল্লীতে কাজে যাই। সন্ধ্যায় ফিরি। যা রোজগার হয়, দুবেলাও খেতে পাইনা। এ দুনিয়ায় আল্লাহ ছাড়া আমাদের আর কেউ নাই। প্রতিবেশী ফজল মিয়া, আবু শহীদ এ পরিবারের দুরাবস্থার কথা জানিয়ে বলেন, প্রকৃতই তারা খুব অসহায় ও মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। তিনজনই অসুস্থ। মাঝে মধ্যে আমরা যতটা সম্ভব সহযোগিতা করার চেষ্টা করি।

সরেজমিন তোফাজ্জলদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সরকারি আবাসন প্রকল্পের ছোট্ট একটি ঘরে মেঝেয় জীর্ণ-শীর্ণ কাঁথায় শুয়ে আছেন সমিতা বিবি। অপুষ্টি আর ক্ষুধার যন্ত্রণায় ক্লান্ত। ঠিকমতো কথা বলতে পারছেন না। যা বললেন বোঝা গেলো, ডালভাত খেয়ে ঈদের দিন পার করেছি। ক্ষিদের জ্বালায় রাতে ঘুম আসে না। একরত্তি নাতি আর কিইবা করবে। তবু যা করছে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া। চাল ডাল আনলে ওষুধ আনতে পারে না। তবু প্রায়ই অনাহারে থাকতে হয়। ঈদে চান্দে প্রতিবেশীরা কেউ খাবার দেয়, কেউ সামান্য টাকা-পয়সা দেয়। এইভাবেই টিকে আছি।

স্থানীয়দের সহযোগিতাই একমাত্র ভরসা। মানুষের সাহায্যে দুমুঠো ভাত খেতে পারেন, যদি কেউ সাহায্যে না করে তাহলে না খেয়েই থাকতে হয়। তার বিলাপে চোখে জল চলে আসে। এ যেন দারিদ্র্যের এক করুণ চিত্র। এই অসহায় নারীর জীবন কাটছে অভাব আর কষ্টে। পা ভেঙে এক বছর ধরে শয্যাশায়ী। ছেলে আলী আহমেদও হার্টের রোগী। কোন কাজকর্ম করতে পারেন না। তাই ১৩/১৪ বছরের নাতি তোফাজ্জলের কাঁধেই সংসারের ভার। দুর্গম খাসিয়া পুঞ্জিতে কাজ করে দিনে আয় করে দুই-আড়াইশ টাকা মাত্র। এ টাকায় দুবেলা খাবার যোগানোই মুশকিল। তার ওপর অসুস্থ দাদি, বাবা আর মরার উপর খাঁড়ার ঘা মানসিক প্রতিবন্ধী বড় বোন আয়েশা খাতুন।

ইসলামপুর ইউনিয়নের স্থানীয় ইউপি সদস্য ফারুক আহমেদ জানান, একসময় তাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই ছিলো না। কয়েক বছর আগে সরকারি আবাসন প্রকল্পের মাধ্যমে এ পরিবারের জন্য একটি ঘরের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোফাজ্জলদের দুরাবস্থা জেনে অনেকে খাদ্য সামগ্রী দিয়ে তাদের সহায়তা করছেন। তবে বয়োবৃদ্ধ সমিতা বিবি ও মানসিক প্রতিবন্ধী আয়েশা খাতুনের সুচিকিৎসা ও তোফাজ্জলদের আত্মনির্ভরশীল হওয়ার ব্যবস্থা জরুরি।

মন্তব্য

p
উপরে