বারবার উৎপাদনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েও তা রাখতে পারছে না বহুল আলোচিত রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বা বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি (প্রা.) লিমিটেড।
প্রথম দফায় উৎপাদনে যাওয়ার লক্ষ্য পূরণ না হওয়ায় প্রথম ইউনিটের কমিশনিং তারিখ ঠিক হয় ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর এবং দ্বিতীয় ইউনিটের কমিশনিং চূড়ান্ত করা হয় ২৬ মার্চ। কিন্তু এ দফায়ও সেই লক্ষ্যের কাছে পৌঁছাতে পারেনি দুই দেশের এই যৌথ কোম্পানি।
এখন প্রকল্পের মূল ঠিকাদার ভারতীয় কোম্পানি ভেল আগামী ২৬ মার্চ প্রথম ইউনিটের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এদিকে বারবার বিদ্যুৎকেন্দ্র চালুর লক্ষ্যে পৌঁছাতে না পারায় হতাশা প্রকাশ করেছেন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক। এ জন্য তিনি চলমান করোনা মহামারির পরিস্থিতিকে দায়ী করেছেন।
প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী কাজী আফসার উদ্দীন আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সংকট হয়ে গেছে কোভিড-১৯ পরিস্থিতির জন্য। লোক ঠিকমতো আসতে পারছে না বা লোক যখন যাচ্ছে তখন তাদের নিজস্ব শিডিউল মতো আসতে দেয়া হচ্ছে না। তারা যখন আসতে চাচ্ছে, তখন তাদের সময়মতো ভারত থেকে আসতে দেয়া হচ্ছে না। শুধু ভারত নয়, ইউরোপের বিভিন্ন দেশও এর সঙ্গে সম্পর্কিত। এর মধ্যে আছে স্পেন, পোল্যান্ড, জার্মানি। সেখান থেকেও বিশেষজ্ঞরা সময়মতো আসছেন না। জার্মানি থেকে লোকবল যা আসার কথা ছিল, তা আসছে না।’
ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানান, গত ১৬ ডিসেম্বর বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট কমিশনিংয়ের তারিখ নির্ধারিত ছিল। এ জন্য গত আগস্ট থেকে প্রস্তুতি চলছিল। কিন্তু লোকবল ঠিকমতো আসতে পারেনি। বাংলাদেশ ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে রেখেছিল। কিন্তু বিভিন্ন দেশ তাদের কর্মীদের ভ্রমণের অনুমতি দেয়নি।
তিনি বলেন, ‘এগুলো তো বিশেষজ্ঞদের কাজ। এগুলো আমাদের স্থানীয় লোক দিয়ে করা যায় না। আমাদের লোক হয়তো তাদের হেল্পার হিসেবে কাজ করতে পারবে। কিন্তু কাজের সময় বিদেশি এই বিশেষজ্ঞদের সশরীরে উপস্থিত থাকতে হয়।’
তিনি বলেন, ‘সরঞ্জাম আসছে। কিন্তু তা লোকবলের অভাবে সংযোজন করা যাচ্ছে না। এর মূল কারণ হলো কোভিড-১৯। এখন যখন আমরা সব গুছিয়ে নিয়েছি, তখন আবার এই ওমিক্রন ঝামেলাটা শুরু হলো।
‘ভারতীয়দের ক্ষেত্রে আমরা যখনই আমাদের হাইকশিনকে বলেছি, তখনই তারা ভিসা করে রেখেছে। কিন্তু ওদের ওখানে এন্ট্রি হচ্ছে না। আমরা চিঠি লিখেছি। তারা আমাদের জানিয়েছে, ভারতের সাব কোম্পানিগুলো তাদের মূল কোম্পানি ভেলকে সহায়তা করছে না। এই নিয়ে ভেলের সঙ্গে তাদের দ্বন্দ্ব লেগে যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আবার দেখা যাচ্ছে, আমরা আসতে বলছি ১৮ জনকে। তারা আসছে চারজন। আমরা বললাম, বাকিরা কোথায়? তারা বলল, আসবে। পরের সপ্তাহে এলো আরও পাঁচজন। পরের সপ্তাহে হয়তো এলো আরও চারজন। বাকিরা এলো না। এই যে আসা-না আসা, এটাই হলো মহাসংকট।’
তিনি বলেন, ভারতের চেয়ে বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি ভালো। ফলে এখানে বিশেষজ্ঞ কর্মীদের আসতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানান, বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের উপকরণ, যেমন- এফজিডি ও চিমনি এবং কোল লোডার ও শিপ আনলোডার এসে পৌঁছেছে। তেল সরবরাহকারী সরকারি প্রতিষ্ঠান যমুনার সঙ্গে চুক্তি করে তেল এনে মজুদ করা হয়েছে। কেননা কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র কমিশনিং করতে তেল ও কয়লা দুটিই লাগে। এসব উপকরণ বসিয়ে রাখা হয়েছে।
দেশের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে সুন্দরবনসংলগ্ন বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার সাপমারি-কাটাখালী ও কৈর্গদাশকাঠী এলাকায় ১ হাজার ৮৩৪ একর জমির ওপরে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের এই কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। সরকারের অগ্রাধিকার প্রকল্পের মধ্যে এটি একটি। ২০১২ সালের ২৯ জানুয়ারি এই প্রকল্প যৌথভাবে বাস্তবায়নের জন্য চুক্তি করে বাংলাদেশ ও ভারত।
বিদ্যুৎ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, এর আগে এই কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ২০১০ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে একটি সমঝোতাও সই হয়। দুই দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি বিপিডিবি ও এনটিপিসি যৌথ কোম্পানি গঠন করে। ২০১৩ সালের ১ আগস্ট বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র পায়।
২০১৫ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি দরপত্র আহ্বান করে চুক্তি স্বাক্ষর করা হয় ২০১৬ সালের ১২ জুলাই। ইক্যুইটি বিনিয়োগ সমানভাগে ধরে মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্রজেক্ট রামপাল বাস্তবায়নে গঠন করা হয় বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেড (বিআইএফপিসিএল)।
১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি ইউনিট নিয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির নির্মাণ প্রক্রিয়া শুরু হয় ২০১৭ সালের ২৪ এপ্রিল। বাস্তবায়নকারী কোম্পানি বিআইএফপিসিএলের তথ্য অনুযায়ী, কাজ শুরুর তারিখ থেকে ৪১ মাসের মধ্যে প্রকল্প শেষ করতে হবে। সে হিসাবে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরেই রামপালের বিদ্যুৎকেন্দ্রটির উৎপাদন সক্ষম হয়ে ওঠার কথা ছিল।
বিদ্যুৎ খাতের সরকারি নীতি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও রামপাল প্রকল্পের তত্ত্বাবধানকারী সংস্থা পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসাইন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রামপালের কাজ চলছে। তবে কয়লার বিষয়টি এখনও সুরাহা ওভাবে হয়নি। আশা করছি, ওটা হয়ে যাবে। আমরা আগেই ঠিক করে রেখেছি ইন্দোনেশিয়া কিংবা অস্ট্রেলিয়া থেকে আমরা কয়লা নেব। আমাদের লক্ষ্য ডিসেম্বরে প্রথম ইউনিট শুরু করা। সে লক্ষ্যে কাজ চলছে।’
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, মূল কাজ শেষ করতে দেরি হলেও ভূমি উন্নয়নকাজ, সীমানা প্রাচীর ও স্লোপ প্রোটেকশন কাজ, মূল বিদ্যুৎকেন্দ্রের ফেসিং কাজ, নির্মাণকাজের বিদ্যুৎলাইন, নির্মাণকাজের পানিসহ বেশ কিছু কাজের পুরোটাই শেষ হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দুটি ইউনিট মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ৬৮ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। তবে একটি ইউনিটের কাজ ৮০ শতাংশ শেষ।
বাংলাদেশ ও ভারত সরকারে যৌথ বিনিয়োগে রামপাল কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ১৬ হাজার কোটি টাকা। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) এবং ভারতের ন্যাশনাল থার্মাল পাওয়ার করপোরেশন (এনটিপিসি) যৌথ কোম্পানি গঠন করে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।
আরও পড়ুন:বান্দরবানের রুমায় সেনাবাহিনীর একটি টহল দল কেএনএফের (কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট) সদর দপ্তরসহ একটি গোপন প্রশিক্ষণ ক্যাম্পের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।
বৃহস্পতিবার রুমা উপজেলার ছিলোপি পাড়া এলাকায় ওই অভিযানের সময় পুঁতে রাখা আইইডি (ইম্প্রোভাইসড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) বিস্ফোরণে এক সেনা সদস্য গুরুতর আহত হন।
সেনাসদস্যকে আশংকাজনক অবস্থায় হেলিকপ্টারে করে চট্টগ্রাম সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে তিনি মারা যান।
৩০ বছর বয়সী নিহত সৈনিকের নাম তুজাম।
বৃহস্পতিবার বিকেলে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
আইএসপিআর জানায়, কেএনএফের প্রশিক্ষণ ক্যাম্প এলাকার আশেপাশে বসবাসকারী স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সেখানে অভিযান চালায় সেনাবাহিনী।
রুমা সেনা জোনের একটি টহল দল কেএনএফ প্রশিক্ষণ ক্যাম্পের কাছাকাছি পৌঁছালে কেএনএফের সশস্ত্র সন্ত্রাসী দলটি পালিয়ে যায়।
তবে আনুমানিক ৯টা ২০ মিনিটের দিকে সন্ত্রাসীদের বিক্ষিপ্তভাবে পুঁতে রাখা আইইডি (ইম্প্রোভাইসড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) বিস্ফোরণে এক সেনাসদস্য আহত হন।
সাধারণ জনগণের নিরাপত্তার স্বার্থে সেনাবাহিনীর বিশেষায়িত দল এ ধরনের আরও সম্ভাব্য আইইডি সনাক্ত ও নিষ্ক্রিয়করণ প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে দেশের জন্য আত্মোৎসর্গকারী সেনা সদস্যকে শহীদ এবং তার মৃত্যুকে অনাকাঙ্খিত উল্লেখ করা হয়। বলা হয়, এ ঘটনায় সেনাবাহিনী প্রধান গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং শহীদ সৈনিকের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন।
আইএসপিআর আরও জানায়, সাম্প্রতিক সময়ে কেএনএফ সন্ত্রাসীরা বান্দরবানের রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচি উপজেলার পাহাড়ি জনপদে ক্রমাগত হত্যা, অপহরণ, জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির মতো মানবাধিকার লঙ্ঘনমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অরাজকতা সৃষ্টি করছে।
তাদের এ ধরণের মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রতিহত করতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর রয়েছে।
আরও পড়ুন:ঘন ঘন মোবাইল সেট পরিবর্তন যাদের ফ্যাশনের অংশ তাদের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে দুঃসংবাদ দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত মোবাইল সেটের ওপর ভ্যাট বাড়ানোর প্রস্তাব করায় বাড়তে পারে এ পণ্যটির দাম।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট পেশ করার সময় এই প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী।
তবে মোবাইলের চার্জার উৎপাদন ও আমদানিতে কোনো পরিবর্তন না আনায় পণ্যটির দাম অপরিবর্তিত থাকবে।
বর্তমানে দেশে মোবাইল ফোন সেট উৎপাদনে ভ্যাট অব্যাহতি রয়েছে। তবে প্রস্তাবিত বাজেটে ২ শতাংশ ভ্যাট বসানোর কথা বলেছেন অর্থমন্ত্রী।
এছাড়া যেসব প্রতিষ্ঠান মুঠোফোন সংযোজন করে, তাদের ক্ষেত্রে দুভাবে ভ্যাট আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে।
কমপক্ষে দুটি যন্ত্রাংশ দেশে উৎপাদন করে মোবাইল ফোন বানালে বর্তমানে ৩ শতাংশ হারে ভ্যাট দিতে হয়। প্রস্তাবিত বাজেটে তা বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে।
আর আমদানি করা যন্ত্রাংশ অ্যাসেম্বল করে তৈরি মোবাইল সেটের ওপর ভ্যাট ৩ শতাংশ থেকে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
২০১৭-১৮ সাল থেকে স্যামসাং, অপো, ভিভো, শাওমি, রিয়েলমি, টেকনোসহ ১৫টি কোম্পানি বাংলাদেশে মোবাইল উত্পাদন করে আসছে।
আরও পড়ুন:চিত্রনায়ক আকবর হোসেন পাঠানের (ফারুক) মৃত্যুতে শূন্য হওয়া ঢাকা-১৭ শূন্য আসনে আগামী ১৭ জুলাই উপনির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে এ উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম।
ইসি সচিব বলেন, ‘মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ১৫ জুন, মনোনয়নপত্র বাছাই ১৮ জুন, প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৫ জুন এবং ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ১৭ জুলাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘ব্যালটের মাধ্যমে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে এ উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে।’
দীর্ঘদিন নানান শারীরিক জটিলতায় ভুগে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে ১৫ মে মৃত্যু হয় ফারুকের। এরপর আসনটি শূন্য ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে সংসদ সচিবালয়।
সংসদের কোনো আসন শূন্য হলে নব্বই দিনের মধ্যে উপনির্বাচন করতে হয়। এই হিসাবে আসনটিতে ১২ আগস্টের মধ্যে উপনির্বাচন করার বাধ্যবাধকতা ছিল।
আরও পড়ুন:দেশের সব বিভাগে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বা দাবদাহ বয়ে যাচ্ছে জানিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, এ অবস্থা অব্যাহত থাকতে পারে।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে এমন বার্তা দিয়েছে।
পূর্বাভাসে সিনপটিক অবস্থা নিয়ে বলা হয়, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে।
দিনভর আবহাওয়া কেমন থাকবে, তা নিয়ে জানানো হয, ঢাকা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যান্য জায়গায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
তাপপ্রবাহ বা দাবদাহের বিষয়ে বলা হয়, চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, কুমিল্লা, চাঁদপুর, নোয়াখালী ও ফেনী জেলা এবং রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।
তাপমাত্রার বিষয়ে পূর্বাভাসে বলা হয়, রংপুর, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং দেশের অন্যান্য জায়গায় তা অপরিবর্তিত থাকতে পারে। সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
ঢাকায় বাতাসের গতি ও দিক নিয়ে বলা হয়, দক্ষিণ/দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় বাতাসের গতিবেগ ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার।
ঢাকায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা ৪২ মিনিটে সূর্য অস্ত যাবে জানিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, ঢাকায় শুক্রবার সূর্যোদয় ভোর ৫টা ১১ মিনিটে।
পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার অবস্থা নিয়ে জানানো হয়, দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু টেকনাফ উপকূল পর্যন্ত অগ্রসর হতে পারে।
আরও পড়ুন:প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফোন করেছেন তুরস্কে সদ্য অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান।
বুধবার রাতে দুই দেশের সরকারপ্রধান ও রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যে এ ফোনালাপ হয়।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইংয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বুধবার রাত সোয়া ১১টার দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফোন কল দেন রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। দুই নেতা কুশল বিনিময়ের পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয়ে ১০ মিনিট কথা বলেছেন।
বার্তা সংস্থা বাসসের প্রতিবেদনে জানানো হয়, ফোনালাপে দ্বিতীয় দফায় অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী এরদোয়ানকে অভিনন্দন জানিয়েছেন শেখ হাসিনা। তুরস্কের জনগণ যোগ্য নেতা নির্বাচন করায় তার সন্তোষের কথা জানান প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের সময়ের মতো ভবিষ্যতেও দৃঢ়ভাবে তুরস্কের ভ্রাতৃপ্রতিম জনগণের পাশে দাঁড়াবে বাংলাদেশের মানুষ।
দ্বিতীয় দফা জয়ের পর তুরস্কের উচ্ছ্বসিত জনগণের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করায় বাংলাদেশের ভ্রাতৃপ্রতিম জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এরদোয়ান।
বাংলাদেশের জনগণকে ধন্যবাদ জানিয়ে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও জোরদার করার বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তুরস্কের রাষ্ট্রপ্রধান। বাংলাদেশের সঙ্গে তুরস্কের বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে অন্য মাত্রায় নিতে শেখ হাসিনার সঙ্গে কাজ অব্যাহত রাখার ইচ্ছার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।
তার এ বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান ও তার পরিবারের প্রতি শুভকামনা জানান। একই সঙ্গে এরদোয়ানের নেতৃত্বে তুরস্কের জনগণের শান্তি, উন্নতি ও সমৃদ্ধি যাতে অব্যাহত থাকে, সেই কামনা করেন।
আরও পড়ুন:দেশের সাতটি বেসরকারি ব্যাংককে ‘নেতিবাচক’ রেটিং দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক ঋণমান প্রদানকারী সংস্থা মুডি’স ইনভেস্টর সার্ভিস। এর মধ্যে ছয়টির ‘দীর্ঘমেয়াদী ডিপোজিট’ ও ‘ইস্যুয়ার রেটিং’ অবনমন এবং আরেকটি ব্যাংকের প্রথম রেটিং করা হয়েছে, যা নেতিবাচক বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
বুধবার এক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর রেটিং বা ঋণমান কমানোর কথা জানায় মুডি’স।
রেটিং কমানো ব্যাংকগুলো হলো- ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড, দ্য সিটি ব্যাংক লিমিটেড, ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড, ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড, এনসিসি ব্যাংক লিমিটেড ও প্রিমিয়ার ব্যাংক লিমিটেড। আর মার্কেন্টাইল ব্যাংক লিমিটেডের রেটিং নিশ্চিত করা হয়েছে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়।
২০২২ সালের ডিসেম্বরে এসব ব্যাংকের রেটিং পুনর্মূল্যায়নের ঘোষণা দিয়েছিল মুডি’স। পর্যালোচনার পর বুধবার নতুন রেটিংয়ের ঘোষণা এল।
মঙ্গলবার বাংলাদেশের ঋণমান কমানোর ঘোষণা দিলেও তাদের পূর্বাভাস স্থিতিশীল রাখে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ঋণমান প্রদানকারী এ সংস্থাটি।
২০২২ সালের ১২ ডিসেম্বর মুডি’স জানায়, দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশের সর্বভৌম রেটিং ‘বিএ৩’ থেকে পুনর্মূল্যায়ন করতে এসব ব্যাংকের রেটিং পুনর্মূল্যায়ন করা হচ্ছে।
সে সময় সংস্থাটি জানিয়েছিল, বাংলাদেশের সার্বভৌম রেটিংয়ে ব্যাংক খাতের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে। ব্যাংকের ঋণ দেয়ার সক্ষমতা সরকারের সক্ষমতাতেও প্রভাব ফেলে।
সংস্থাটি বলেছিল, পুনর্মূল্যায়নের সময় বেশ কিছু বিষয় তারা বিবেচনায় নেবে; বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভও এর মধ্যে রয়েছে। পরিস্থিতির উন্নয়নে বাংলাদেশ ব্যাংকের পদক্ষেপগুলোও এক্ষেত্রে বিবেচনায় নেয়া হবে।
প্রতিষ্ঠানের সার্বিক আর্থিক অবস্থার ওপর রেটিং নিতে ব্যাংকগুলো আন্তর্জাতিক রেটিং সংস্থাগুলোর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়। রেটিং পাওয়ার জন্য একটি নির্দিষ্ট ফি দিয়ে থাকে ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানগুলো। মুডি’স-এর সঙ্গে চুক্তি করেছিল বলে বাংলাদেশের শুধু এ সাত ব্যাংকেরই রেটিং করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
মুডি’স-এর রেটিং বা ঋণমান একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা প্রকাশ ও আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা নির্ধারণে সহায়ক হয়।
বিবৃতিতে মুডি’স জানিয়েছে, সাত ব্যাংকের মধ্যে চারটির ‘বেজলাইন ক্রেডিট অ্যাসেসমেন্ট’ করা হয়েছে। আর এনসিসি ও প্রিমিয়ার ব্যাংকের রেটিং বি৩ থেকে বি২ এবং মার্কেন্টাইল ব্যাংকের দীর্ঘমেয়াদী আমানত ও ইস্যুয়ার রেটিং বি২ করা হয়েছে।
অপরদিকে এবারের রেটিং মূল্যায়নের প্রভাব সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের (সিএএ১ নেগেটিভ, সিএএ২) রেটিংয়ে পড়েনি বলে বিবৃতিতে বলা হয়।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণার আগে বাংলাদেশের ঋণমান সূচক কমানোর ব্যাখ্যায় বেশ কিছু কারণ তুলে ধরে মুডি’স। এর মধ্যে ডলারের সংকট অব্যাহত থাকা, বিদেশি মুদ্রার মজুদ কমে যাওয়ায় বৈদেশিক লেনেদেনে চাপ তৈরি হওয়া ও আমদানি কার্যক্রম ব্যাহত, রাজস্ব আহরণে পিছিয়ে থাকা এবং জ্বালানি সরবরাহে ঘাটতি দেখা দেয়ার মতো বিষয় রয়েছে বলে জানায় প্রতিষ্ঠানটি।
বিবৃতিতে মুডি’স বলছে, আগের মতোই একাধিক বিনিময় হার ও বেঁধে দেয়া সুদের হারের সীমা বহাল থাকায় তা সাধারণ কার্যক্রমকে বিঘ্নিত করছে।
দেশের রিজার্ভের পরিমাণ ৩০ বিলিয়ন ডলারের ওপরে যেতে আরও দুই থেকে তিন বছর লাগবে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
আরও পড়ুন:সরকারি ব্যয়ে আকাশ পথে বিজনেস ক্লাসে (প্রথম শ্রেণি) বিদেশ ভ্রমণ স্থগিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সংক্রান্ত সারসংক্ষেপে বুধবার স্বাক্ষর করেছেন তিনি। কোভিড-পরবর্তী অর্থনীতি পুনরুদ্ধার ও বৈশ্বিক সংকটের প্রেক্ষাপটে নানামুখী পদক্ষেপের আওতায় এই নির্দেশনা দিয়েছেন সরকার প্রধান।
প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব এম. এম. ইমরুল কায়েস বুধবার এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সরকারি খরচে আকাশ পথে বিজনেস ক্লাসে বিদেশ ভ্রমণ স্থগিত করা হয়েছে। আজ (বুধবার) এ সংক্রান্ত সারসংক্ষেপে প্রধানমন্ত্রী সই করেছেন। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এই সুবিধা স্থগিত থাকবে।
এদিকে বৃহস্পতিবার ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য বাজেট ঘোষণা করতে যাচ্ছে সরকার। এবারের বাজেটে ডলার সংকট, রিজার্ভ কমে যাওয়া ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বিষয়টি বিবেচনায় রাখা হয়েছে। মূলত ডলারের ব্যয় কমাতেই সরকারি খরচে আকাশ পথে বিজনেস ক্লাসে বিদেশ ভ্রমণ স্থগিত করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ কমাতে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফর বন্ধের নির্দেশ দিয়ে গত বছরের ১২ মে একটি পরিপত্র জারি করেছিল অর্থ মন্ত্রণালয়।
পরে ওই বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর এক আদেশে সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণের শর্ত কিছুটা শিথিল করা হয়। সীমিত আকারে কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিয়ে কর্মকর্তাদের বিদেশে যাওয়ার সুযোগ দিয়ে আদেশ জারি করে অর্থ মন্ত্রণালয়। ৯ নভেম্বর আবারও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার।
মন্তব্য