উন্নয়ন, সাহসিকতা ও সততা—এই তিন গুণ দিয়ে নবনির্বাচিত মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী নারায়ণগঞ্জবাসীর মন জয়ের পাশাপাশি আস্থা অর্জনে সফল হয়েছেন বলে মনে করেন নগরের বিশিষ্টজনরা।
তারই ধারাবাহিকতায় এই হ্যাটট্রিক জয় এসেছে বলে মনে করেন তারা। কিন্তু ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে আইভী ভোটযুদ্ধে পাস করলেও এই জয় নৌকার নয় বলে অভিমত তাদের।
রোববার অনুষ্ঠিত হয়েছে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোট। সেই ভোটে মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হাতি প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমূর আলম খন্দকারকে উড়িয়ে দিয়ে বিজয় ছিনিয়ে নেন আইভী। ব্যবধান ছিল ৬৬ হাজার ৯৩১ ভোট। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট না হলে এই ব্যবধান আরও বড় হতে পারত বলেও বিজয়ের পর নিজের প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছেন মেয়র আইভী।
আইভীর পথটি অবশ্য মোটেও সহজ ছিল না। তার কারণ নারায়ণগঞ্জের ভোটের সমীকরণ। এখানকার হিসাব-নিকাশ দেশের আর ১০টি এলাকার চেয়ে ভিন্ন। এই জেলার রাজনীতিতে প্রভাবশালী ওসমান পরিবারের সঙ্গে তার প্রকাশ্য বিরোধ মানুষের মুখে মুখে ফেরে। আর সেই বিরোধ হয়ে ওঠে নির্বাচনে মূল আলোচ্য বিষয়।
২০১৬ সালে সিটি নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহারের অনুমতি এলে আওয়ামী লীগ আস্থা রাখেন আইভীর ওপর। সেই নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থী বিএনপি নেতা সাখাওয়াত হোসেনকে ৭৪ হাজার ভোটের ব্যবধানে হারান আইভী।
নারায়ণগঞ্জ পৌরসভাকে সিটি করপোরেশনের মর্যাদা দেয়ার পর প্রথম নির্বাচন হয় ২০১১ সালে। সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পরিবারের সদস্য হলেও দলের সমর্থন বঞ্চিত হন আইভী। কিন্তু তৎকালীন পৌর মেয়র স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে মাঠে থাকেন। প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত হেভিওয়েট প্রার্থী শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে। নির্বাচনের মাঠে পারিবারিক দ্বন্দ্ব হয়ে ওঠে প্রকাশ্য। নির্বাচনে কী হবে না হবে তা নিয়ে জল্পনা-কল্পনার শেষ ছিল না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত লাখো ভোটের ব্যবধানে শামীম ওসমানকে পরাস্ত করে নারায়ণগঞ্জের ইতিহাসের প্রথম মেয়র নির্বাচিত হন আইভী।
এমনকি তার আগে যে পৌরসভা ছিল, তারও নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। এখন পর্যন্ত নির্বাচনে অংশ নিয়ে পরাজয়ের স্বাদ নিতে হয়নি আইভীকে। ওই সময়ের জেলা বিএনপির সহসভাপতি নূর ইসলামকে হারিয়ে পৌরসভার নেতৃত্ব নেন তিনি।
সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, ‘সব কটি নির্বাচন ছিল চ্যালেঞ্জিং। এটিও তার চেয়ে কম নয়। একেকটার ধরন একেক রকম। আমি এত চ্যালেঞ্জের কথা বলতে চাই না। নির্বাচন মানেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা-প্রতিযোগিতা।’
কোন জাদুমন্ত্রে তিনি নারায়ণগঞ্জবাসীকে মুগ্ধ করে রেখেছেন, জয় নিশ্চিত হওয়ার পর প্রশ্নটি রাখা হয় সেলিনা হায়াৎ আইভীর কাছে।
মৃদু হেসে নবনির্বাচিত এই মেয়র বলেন, ‘আমার যত কিছু হয়েছে বা অতীতেও যে বিজয় হয়েছে, সব কিছুর মূলে কিন্তু আমার জনশক্তি, জনস্রোত এবং জনসমর্থন। জনসমর্থন যদি না থাকত, তাহলে আমি নারায়ণগঞ্জে দাঁড়িয়ে থাকতে পারতাম না।’
কেন এই জনসমর্থন তার ব্যাখ্যাও দাঁড় করিয়েছেন নৌকা প্রতীকের এই বিজয়ী।
আইভী বলেন, ‘এটা সত্যি যে, জনগণের যে আস্থা আমার প্রতি, তার কারণ মানুষকে কখনও মিথ্যে বলিনি, কখনও অযথা আশ্বাস দিইনি। আমি গতানুগতিকের বাইরে গিয়ে যে আপনাদের সঙ্গে মিশেছি, কাজ করেছি, যেটা পেরেছি সেটা করেছি, যেটা পারিনি সেটা বলিনি। সবচেয়ে বড় কথা হলো নিঃস্বার্থভাবে মানুষকে ভালোবেসেছি, মানুষ প্রতিবারই আমাকে প্রতিদান দিয়েছে।’
আইভীর এই সাফল্যকে উন্নয়ন, সাহসিকতা ও সততার মেলবন্ধন মনে করে নারায়ণগঞ্জে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সাধারণ সম্পাদক ধীমান সাহা জুয়েল বলেন, ‘এটা খুব সহজ জিনিস। প্রথমত তার কাজ, এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। বিগত দিনে তিনি মানুষের কল্যাণে অনেক কাজ করেছেন। এটি উন্নয়ন বলি বা অন্য যেভাবেই সংজ্ঞায়িত করি। এটা নগরবাসীর কাছে মুখ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
সাফল্যের দ্বিতীয় কারণ হিসেবে ধীমান সাহা বলছেন, সেলিনা হায়াৎ আইভীর সততার কথা।
তিনি বলেন, ‘এসব কাজের পেছনে তার সততা ছিল। একটা মানুষ শতভাগ সৎ হয় না। তিনি ৯৯ পার্সেন্ট সৎ ছিলেন। এটা নগরবাসী দেখেছে। তার কাজের মধ্যে স্বচ্ছতা ছিল, সততা ছিল। সততার পাশাপাশি জবাবদিহিও ছিল।
‘আমরা দেখেছি, মেয়র আইভীর পেছনে প্রতিপক্ষের অন্তত ১০০টা ক্যামেরা লাগানো ছিল। এখানে আমি আক্ষরিক ক্যামেরার কথা বলছি না, দৃষ্টিকে বুঝিয়েছি। এত কিছুর পরও তিনি তার কাজটি করে গেছেন। তাই সততা ও স্বচ্ছতার বিষয়ে আমার কিছু বলার আছে বলে মনে হয় না।’
আইভীর ‘সাহস’ তাকে অন্য একটি উচ্চতায় নিয়েছে বলেও মত তার।
ধীমান সাহা জুয়েল বলেন, ‘কোনো একটি কাজ করতে গিয়ে যদি একটা বিল্ডিং ভাঙতে হয় বা কারও একটু ক্ষতি হয়ে যায়, তারপরও দশজনের কল্যাণের জন্য কাজটা তিনি করেছেন। এই সাহসটা অন্য কোনো জনপ্রতিনিধির মধ্যে দেখা যায় না।’
নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী শামীম ওসমানের সঙ্গে বিরোধের প্রসঙ্গ টেনে ধীমান সাহা বলেন, ‘সাহস দুই ধরনের। একটি হচ্ছে কাজ করার সাহস। আরেকটি হচ্ছে নারায়ণগঞ্জের একটি অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করার যে সাহস। সৎ থেকে, কাজ করে, শুভ শক্তির সঙ্গে থেকে অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করা। অশুভ শক্তি প্রতিটা জেলায়ই আছে। প্রতিটা জেলায়ই একাধিক অশুভ শক্তি থাকে। পাশাপাশি শুভ শক্তিও থাকে। শুভ শক্তিদের যে সম্মিলন, অশুভ শক্তিকে পরাভূত করার যে সাহস, লড়াই করার যে সাহস, তা আইভীর মধ্যে আছে।’
আর তাই আইভী জনমানুষের হৃদয়ে আছে জানিয়ে ধীমান সাহা জুয়েল বলেন, ‘গতকাল এর প্রতিফলন আমরা দেখেছি, মানুষের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে।’
নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল করিম দীপু মনে করেন উন্নয়ন, সন্ত্রাস বিরোধিতা আর তরুণদের কাছে টানতে পারার ক্ষমতার দিক বিবেচনায় নিলে, অন্য যে কোনো প্রার্থীর চেয়ে এগিয়ে সেলিনা হায়াৎ আইভী।
তিনি বলেন, ‘এটা স্থানীয় সরকার নির্বাচন। এখানে মানুষ উন্নয়ন চায়। এখানে উন্নয়নের জয় হয়েছে। উনি দৃশ্যমান উন্নয়ন অনেক করেছেন, আমরা দেখেছি।’
দীপু বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জের বাস্তবতায় সন্ত্রাসবিরোধী যে অবস্থান, সেটা একটা ব্যাপার। তিনি একজন ভিশনারি মেয়র। ছোট করে হলেও ভবিষ্যতে কী কী করবেন তার ঘোষণা দিয়েছেন। তার মধ্যে ছিল সবুজবান্ধব নগরী গড়া, যেটাকে আমরা বলছি গ্রিন কনসেপ্ট।’
গ্রিন কনসেপ্টই তরুণদের কাছে টানার কৌশল বলে মনে করেন এই বিশ্লেষক। তিনি বলেন, ‘আমরা যারা বয়স্ক ভোটার, তারা এতটা বুঝি না। আমরা হয়তো গ্রিন কনসেপ্ট মানে গাছ লাগানো বুঝি। কিন্তু যারা তরুণ ভোটার, তাদের জন্য বিষয়টা জরুরি। তারা এই বিষয়গুলো আমলে নিয়েছে বলে আমি মনে করি।’
আইভীর পারিবারিক পরিচয়কেও বড় করে দেখছেন দীপু। তিনি বলেন, ‘তার পরিবারের ভক্ত যারা আছেন, তারা সংখ্যায় বিশাল, যারা ওনার বাইরে যাবে না।’
বন্দরকে মূল শহরের সঙ্গে সংযুক্ত করতে শীতলক্ষ্যা নদীতে সেতু তৈরি নারায়ণগঞ্জবাসীর প্রাণের দাবি। অন্তত নির্বাচনের মাঠে মানুষের সঙ্গে কথা বলে তার গুরুত্ব বোঝা গেছে।
জাহিদুল করিম দীপু বলেন, ‘আমাদের ছোটবেলা থেকে একটা দাবি ছিল কদম রসুল ব্রিজ। তিনি এর ব্যাপারে বলেছেন, আগামী তিন মাসের মধ্যে ব্রিজটির কাজের উদ্বোধন হবে বলে আশা করছেন।’
এ ছাড়া সামাজিক বাস্তবতায় নারীদের অকুণ্ঠ সমর্থন পেয়েছেন সেলিনা হায়াৎ আইভী।
তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে তার পাস করাকে নৌকার বিজয় বলতে নারাজ তিনি। বলেন, ‘সাংস্কৃতিক জোট একটা লিফলেট করেছে, যেখানে কোনো মার্কা নেই। বর্তমান যে অবস্থা, সেখানে বিভিন্ন কারণে মানুষের নৌকা প্রতীকের প্রতি অনীহা আছে। কিন্তু আইভী এর ঊর্ধ্বে। লিফলেটেও বলা হয়েছে, আইভীকে সর্বস্তরের মানুষ ভোট দিবে এবং সেভাবেই আইভীর জয় হবে।’
নারায়ণগঞ্জের সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বি বলেন, ‘মানুষ আইভীকে ভোট দিয়েছে দুর্বৃত্তায়নের বিরুদ্ধে তার সাহসিকতা ও গত ১০ বছরে যে দৃশ্যমান উন্নয়ন করেছেন সে জন্য।’
সব গুণ বাদ রেখে সেলিনা হায়াৎ আইভীর নারায়ণগঞ্জবাসীর উন্নয়নে নিবেদিতপ্রাণ হয়ে কাজ করাকে এগিয়ে রাখলেন নারায়ণগঞ্জ মহিলা পরিষদের সভাপতি লক্ষ্মী চক্রবর্তী।
তিনি বলেন, ‘যেটা দৃশ্যমান দেখি, যেটা অনুভব করি, সেটা হলো কাজ। নিজের কর্মক্ষেত্র দিয়েই তো মানুষের পরিচয়। কাজই তাকে আর সবার চেয়ে এগিয়ে রেখেছে। সিটি করপোরেশন বলি, ইউনিয়ন পরিষদ সবখানেই তো পাবলিক ফাংশন। মানুষ আসলে কাজ দিয়েই মূল্যায়ন করে।’
আরও পড়ুন:অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের পর নিরাপত্তাহীনতায় পুনরায় বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময় গারো পাহাড় সীমান্তে মানব পাচারকারী চক্রের দুই সদস্যসহ ৭ জনকে আটক করেছে বিজিবি।
সোমবার (২৫ আগস্ট) সকাল পৌণে সাতটার দিকে শেরপুরের ঝিনাইগাতি উপজেলার নকশি সীমান্ত পথে নকশি ক্যাম্পের টহলরত বজিবি সদস্যরা তাদের আটক করে বিকেলে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
বিষয়টি ২৬ আগষ্ট সকালে বিজিবি পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়।
আটককৃতরা হলো মানব পাচারকারী চক্রের সদস্য নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বুরুঙ্গা গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে রমজান আলী (২৪) ও আসমত আলীর ছেলে রাসেল (১৬)। আটক অনুপ্রবেশকারীরা হলো, নড়াইল জেলার কালিয়া থানার বোমবাঘ গ্রামের শামীম শেখ (২৩), আফসানা খানম (২২), রুমা বেগম (৩২), মিলিনা বিশ্বাস (২৮) ও তিন বছর বয়সী শিশু কাশেম বিশ্বাস।
বিজিবি এক প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানায়, মাথাপিছু ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে গত ২৩ আগস্ট রাতের আধারে নালিতাবাড়ীর সীমান্ত এলাকা দিয়ে অবৈধ পথে নারী এবং শিশুসহ ৫ বাংলাদেশীকে ভারতে পাঠায় মানব পাচারকারী রমজান আলী ও রাসেল। কিন্তু ভারতীয় পুলিশের তৎপরতায় নিরাপত্তাহীনতায় পড়ে এ পাঁচ বাংলাদেশী। এ কারণে ২৫ আগষ্ট সোমবার সকাল পৌণে সাতটার দিকে ঝিনাইগাতির নকশি সীমান্তের কালিমন্দির এলাকা দিয়ে পুনরায় তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এসময় টহলরত বিজিবি সদস্যরা টের পেয়ে সবাইকে আটক করে। পরে মানব পাচারে জড়িত দুইজনের বিরুদ্ধে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে এবং অন্য ৫ জনের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের অপরাধে নালিতাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করা হয় এবং সবাইকে নালিতাবাড়ী থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ময়মনসিংহ বিজিবি’র ৩৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মেহেদী হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিজিবির পক্ষ থেকে এ ধরনের অভিযান চলমান থাকবে।
ঝালকাঠিতে গ্রাহকদের চাহিদা বিবেচনায় এনে ব্রান্ডশপ লোটো ও লি কুপার প্রতিষ্ঠানটি তাদের ১৩২তম ফ্লাগশিপ আউটলেট উদ্বোধন করেছে।
এক্সপ্রেস লেদার প্রোডাক্ট লিঃ এর ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর কাজী জাভেদ ইসলাম সহ কোম্পানির অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের সাথে নিয়ে ফিতা কেটে আউটলেটটি উদ্বোধন করেন ঝালকাঠির পুলিশ সুপার উজ্জ্বল কুমার রায়।
পৌর শহরের সাধনার মোড়ে মঙ্গলবার ২৬ আগষ্ট সকাল ১০টায় লোটো ও লি কুপারের ফ্ল্যাগশিপ আউটলেটদ্বয়ের শুভ উদ্বোধন আনুষ্ঠানে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন পর্যায়ের গ্রাহক ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
ঝালকাঠিতে কোম্পানীর এ যাত্রার প্রথম দিনে স্থানীয় ফ্যাশন সচেতন তরুণ তরুণীরা তাদের পছন্দের পন্য কালেকশন বেছে নিতে ভীর জমায়।
কোম্পানীর পক্ষ থেকে জানানো হয় প্রথম তিনদিনের প্রতিদিন প্রথম ৩০ জন পাবেন ৫০% ছাড়, ২য় ৩০ জন পাবেন ৪০% ছাড়, ৩য় ৩০ জন পাবেন ৩০% ছাড়, ৪র্থ ৩০ জন পাবেন ২০% ছাড় এবং তৎপরবর্তী সকল কাস্টমার পাবেন ১০% ছাড়। এই বিশেষ ছাড় ২৬শে আগষ্ট থেকে শুরু হয়ে ২৮ তারিখ পর্যন্ত চলমান থাকবে
নওগাঁয় সপ্তম শ্রেণীর এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে আটক রেখে ধর্ষণ মামলায় আ: সালাম (৩৮) নামে এক আসামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
রোববার (২৪ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে নওগাঁর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মেহেদী হাসান তালুকদার এ রায় দেন।
যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আ: সালাম সদর উপজেলার বর্ষাইল মধ্যপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ভিকটিম ওই শিক্ষার্থীর পরিবার পত্নীতলা উপজেলায় ভাড়া থাকতেন। ভাঙ্গারী ব্যবসার সুবাদে আসামী আ: সালামও পাশাপাশি একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। ভিকটিম মাদ্রাসায় যাওয়া আসার পথে আ: সালাম বিভিন্ন সময় কু-প্রস্তাব দিতো এবং রাস্তাঘাটে বিরক্ত করতো। বিষয়টি জানাজানি হলে আসামী আ: সালাম ওই ভিকটিমের পরিবারকে গালিগালাজ ও ভয়ভীতি দেখাতো। এরই একপর্যায়ে ২০২২ সালের ১১ জুলাই বিকেল তিনটার দিকে আসামী আ: সালাম একটি বাজার এলাকা থেকে ওই শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে নওগাঁ সদর উপজেলার ভবানীপুর দক্ষিন পাড়া গ্রামের মোজাফ্ফর রহমানের ভাড়া বাড়িতে আটক রেখে একাধিকবার ধর্ষণ করে। বিষয়টি বুঝতে পেরে ওই শিক্ষার্থীর বাবা পত্নীতলা থানায় অভিযোগ করলে র্যাব ওই বাড়ি থেকে আসামিকে গ্রেফতার ও মেয়েকে উদ্ধার করে। পরে তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে ঘটনার সত্যতা থাকায় আসামী আ: সালামসহ চার জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। আদালত ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহন শেষে আজ আ: সালামকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়। বাকি আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় তাদেরকে খালাস দেওয়া হয়।
মামলার এ রায়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রেজাউল করিম সন্তোষ প্রকাশ করেন। আসামী পক্ষের আইনজীবী ফাহমিদা কুলসুম উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানান।
জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার রায়কালী ইউনিয়নের বালুকাপাড়া গ্রামে রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়ে পুনরায় তাকে বিয়ে করায় এক দম্পতিকে দেড় বছর ধরে 'সমাজচ্যুত' করে রাখা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এ বিষয়ে নালিশ দেওয়ার জের ধরে পেটানো হয় দিনমজুর আব্দুল জলিল প্রামানিককে। প্রতিপক্ষের লোকজনের মারধরে এতে তার বাম হাতের হাঁড় ভেঙে গেছে।
এঘটনায় তিনি একটি থানায় অভিযোগ করেছেন। গত মঙ্গলবার রাতে সেটি মামলাটি হিসেবে রের্কড করা হয়। তবে মামলার এজাহারে সমাজচ্যুত করে রাখার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি।
সরেজমিনে বালুকাপাড়া গ্রামে গিয়ে আব্দুল জলিলকে ১৮ মাস ধরে সমাজচ্যুত করে রাখার তথ্য জানা গেছে। আব্দুল জলিলের সমাজচ্যুত করার ঘটনাটি স্থানীয় রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রশীদ মন্ডলও অবগত আছেন। তিনি দুই পক্ষকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকেও সমাজচ্যুত করে রাখার বিষয়টি সমাধান করতে পারেনি।
গ্রামবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পারিবারিক কলহের কারণে আব্দুল জলিল প্রামানিক রাগের মাথায় তার স্ত্রীকে তালাক দেন। এঘটনার ২৯ দিন পর তিনি আবারও স্ত্রীকে বিয়ে করেন। এ ঘটনায় গ্রাম্য মাতব্বরেরা ক্ষুব্ধ হয়ে আব্দুল জলিল প্রামানিকের পরিবারকে সমাজচ্যুত করে রাখেন। সেই সময় জলিল প্রামানিক বিষয়টি আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)কে জানান। ইউএনও রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মণ্ডলকে বিষয়টি সমাধানের দায়িত্ব দেন। ইউপি চেয়ারম্যান উভয়পক্ষকে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে বৈঠকে বসেছিলেন। তবে কার্যত কোন কোনো সমাধান করতে পারেননি। এতে গ্রাম্য মাতব্বরেরা আব্দুল জলিলের ওপর আরও ক্ষুব্ধ হন। সমাজচ্যুত করে রাখা আব্দুল জলিল গত ১৫ আগস্ট রাত আটটার দিকে গ্রামের মসজিদের দিকে রওনা হন। এসময় মাতব্বরেরা তাকে দুই দফায় প্রচন্ড মারধর করেন। এতে তার বাম হাতের হাঁড় ভেঙে যায়। তিনি চিকিৎসা নিয়ে থানায় আট জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
বালুকাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আজিজুল ইসলাম বলেন, দেড় বছর আগে আব্দুল জলিল তার স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। কয়েক দিন পর আবার সংসার শুরু করেন। এনিয়ে গ্রামের মাতব্বরেরা আব্দুল জলিল প্রামানিককে সমাজচ্যুত করেন। এনিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় বৃদ্ধা লুৎফন নেছা বলেন, আমি কাজ করতে পারিনি। আব্দুল জলিলের বউ আমার বাড়িতে এসে জবাই করা মুরগির তরকারি রান্না করে দিয়েছিল। আমি জলিলের বাড়িতে গিয়ে এক বাটি মুরগির মাংসের তরকারি দিয়ে এসেছি। এতে আমাকেও সমাজচ্যুত করার হুমকি দিয়েছিল।
বালুকাপাড়া গ্রামের মোড়ের দোকানি হাফিজার রহমান বলেন, বউকে তালাক দেওয়ার ঘটনায় আব্দুল জলিল প্রামানিককে গ্রামের মাতব্বরেরা সমাজচ্যুত করেছেন। আব্দুল জলিল গ্রামের সামাজিক কোন কর্মকান্ডে অংশ নিতে দেয় না।
আব্দুল জলিল প্রামানিক বলেন, আমি রাগের মাথায় স্ত্রী তালাক দিয়েছিলাম। ২৯ দিন পর আবার বিয়ে পড়ে নিয়েছি। একারণে গ্রামের মাতব্বর রকি খান, মিল্টন খাঁ, আবু সুফিয়ানসহ আরও ১০-১২ জন আমাকে সমাজচ্যুত করেছেন। রাগের মাথায় স্ত্রীক। তালাক দিলে পুনরায় বিয়ে করা যাবে ঢাকার একজন মুফতির মতামত নিয়ে আসার পরও তারা মানেনি। তারা বলছে হিল্লা বিয়ে ছাড়া আমার বিয়ে বৈধ হবে না। তারা আমাকে দীর্ঘ দেড় বছর ধরে গ্রামের মসজিদে নামাজ আদায়ে করতে ও জানাজায় শরিক হতে বা দেননি। মিলাদ মাহফিল দাওয়াত দেওয়ার মাতব্বরদের চাপে পর ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এমনকি গ্রামের কারও জমিতে দিনমজুরি কাজও করতে পারব না বলে লোকজন জানিয়ে দেন। একারণে কেউ আমাকে কাজে নেয় না। সমাজচ্যুত করার জের ধরে মসজিদে যাওয়ার সময় মাতব্বরদের একাংশের লোকজন আমাকে মেরে হাত ভেঙে দিয়েছেন।
গ্রামের মাতব্বদের একজন মো. মিল্টন খাঁ। তিনি আব্দুল জলিলের দায়ের করা মামলার দুই নম্বর আসামি। তাকে তার বাড়িতে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আব্দুল জলিল সমাজ বিরোধী কাজ করেছেন। একারণে গ্রামের লোকজন তাকে সমাজচ্যুত করেছেন। আব্দুল জলিল সমাজ বিরোধী কি কাজ করেছেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আব্দুল জলিল তার স্ত্রীকে তালাক দিয়ে আবার স্ত্রীকে নিয়েছেন। এটা সমাজ বিরোধী কাজ।
আক্কেলপুর রায়কালী ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মন্ডল বলেন, আব্দুল জলিল মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। তিনি রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। এঘটনায় গ্রামের মাতব্বরেরা আব্দুল জলিলকে সমাজচ্যুত করেন। আব্দুল জলিল ইউএনও স্যারের কাছে অভিযোগ দিয়েছিলেন। ইউএনও স্যার আমাকে ঘটনাটি সমাধানের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। উভয়পক্ষকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে বৈঠক করেছি। আব্দুল জলিল যেন সামাজিকভাবে মিশতে পারে সেটি বলেছি। সমাজচ্যুতের ঘটনার জের ধরে আব্দুল জলিলকে মারধর করা হয়েছে। এতে তার বাম হাত ভেঙেছে বলে জেনেছি।
আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, আব্দুল জলিল প্রামানিক থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছিলেন। অভিযোগটি তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় সেটি মামলা হিসেবে রের্কড করা হয়েছে। আসামি আট জনের মধ্যে ইতিমধ্যে আদালত থেকে পাঁচজন আসামি জামিন নিয়েছেন, অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে ২৭,২৪৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে। বিগত ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের একই মাসে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ছিল ২১,৯১৬ কোটি টাকা। জুলাই-২০২৫ মাসে বিগত জুলাই-২০২৪ মাসের তুলনায় ৫,৩৩৩ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। জুলাই ২০২৫ মাসে রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২৪.৩৩%।
জুলাই’২৫ মাসে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক থেকে। এ খাত থেকে আদায় হয়েছে ১১,৩৫২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায়ের পরিমান ছিল ৮,৫৭১ কোটি টাকা। জুলাই ২০২৫ মাসে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ৩২.৪৫%।
আয়কর ও ভ্রমন কর খাতে জুলাই’২৫ মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৬,২৯৫ কোটি টাকা যা জুলাই’২০২৪ মাসের একই খাতে আদায়কৃত ৫,১৭৫ কোটি টাকার চাইতে ১,১২০ কোটি টাকা বেশি। আয়কর ও ভ্রমন করের ক্ষেত্রে জুলাই ২০২৫ মাসের আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২১.৬৫%।
২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে আমদানি ও রপ্তানি খাতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৯,৬০২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায় ছিল ৮,১৭০ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধির হার ১৭.৫২%।
রাজস্ব আদায়ের এ ধারা ভবিষ্যতে অব্যাহত রাখার জন্য আয়কর, মূল্য সংযোজন কর এবং কাস্টমস শুল্ক-কর আদায়ে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারিদের প্রচেষ্টা আরো জোরদার করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নানাবিধ কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
সম্মানিত করদাতাগণ আইনের যথাযথ পরিপালন নিশ্চিত করে যথাযথ পরিমান কর পরিশোধের মাধ্যমে দেশ গড়ার কাজের অন্যতম অংশীদার হবেন মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশাবাদী।
কুমিল্লা নাঙ্গলকোটে ইউপি সদস্য আলাউদ্দিনকে বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামিকে ঢাকার হাতিরঝিল রেল মগবাজার রেলগেট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। শুক্রবার দিনগত রাতে অভিযানটি শেষ করে র্যাব।
গ্রেফতারকৃত আসামী শেখ ফরিদ (৪৫) নাঙ্গলকোট উপজেলার বক্সগঞ্জ আলীয়ারা গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে।
শনিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে কুমিল্লা অশোকতলা এলাকায় র্যাব অফিসে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন
র্যাব ১১ এর কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাদমান ইবনে আলম।
মেজর সাদমান জানান, নাঙ্গলকোটের আলিয়ারা গ্রামে দুই পরিবারের মধ্যে বংশপরম্পরায় একটি বিরোধ চলে আসছিল। গেল গেল ২৫ জুলাই গরুর ঘাস খাওয়া কে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
সেদিন দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৫ জন গুলিবিদ্ধসহ ২৫ জন আহত হয়।
এ ঘটনার রেশ ধরে গেলো ৩ আগস্ট দুপুরে আলিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা আলাউদ্দিন তার চাচাতো ভাইয়ের জানাজার নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা তাকে একটি সিএনজিতে তুলে নিয়ে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে।
পরে এ ঘটনায় ৫ আগস্ট নিহতের ছেলে বাদী হয়ে নাঙ্গলকোট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বিপদসীমা অতিক্রম করায় নির্ধারিত সময়ের আগেই খোলা হয়েছে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সব জলকপাট। সোমবার (৫ আগস্ট) রাত ১২টা ২ মিনিটে হঠাৎ পানি বাড়তে থাকায় জরুরি ভিত্তিতে কেন্দ্রের ১৬টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়।
কর্ণফুলি পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানান, রাতে লেকের পানির উচ্চতা ১০৮.০৫ ফুট ছুঁয়ে গেলে বিপদসীমা অতিক্রম করে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলি নদীতে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, “প্রথমে সোমবার (৪ আগস্ট) বিকেল ৩টায় পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা পরের দিন মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জলকপাট খোলার ঘোষণা দিয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ অতিরিক্ত পানি প্রবাহের কারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই সোমবার রাতেই জলকপাট খুলে দিতে হয়। তবে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
তিনি আরও জানান, কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট বর্তমানে সচল রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে আরও ৩২ হাজার কিউসেক পানি লেক থেকে কর্ণফুলিতে গিয়ে পড়ছে। সবমিলিয়ে পানি নিঃসরণের হার এখন প্রতি সেকেন্ডে ৪১ হাজার কিউসেক।
ভাটি এলাকার জনসাধারণের উদ্দেশে তিনি বলেন, “পানি প্রবাহ বাড়লেও আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে, এবং প্রয়োজনে আমরা আগেভাগেই ব্যবস্থা নেব।”
স্থানীয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও এ বিষয়ে আগেই অবহিত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন কর্তৃপক্ষ।
মন্তব্য